13-04-2020, 10:51 PM
পর্ব-১৮
------------------------------------
কথাটা শেষ করার আগেই.....টুপ করে একটা দিয়ে দিলো।
:-----থ্যাংক ইউ।(আমি)
:-----হয়েছে এখন যাও।নয়তো আমার তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছা করবে না।(নিলা)
:-----আচ্ছা বাই।
:-----আর হ্যাঁ বাড়িতে গিয়ে অবশ্যই একটা কল করবে।
:-----হুমম ওকে।
:-----আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো
:-----আচ্ছা আজ তাহলে যাই।
:-----হুমম।
নিলাদের বাসার সামনে থেকে চলে আসলাম। অনেক রাত হয়ে গেছে। তাই আল-আমীনকে ওর বাসায় ড্রপ করে আমি বাসায় চলে আসলাম। খুব ক্লান্ত লাগছে। সারাদিন অনেক কাজের চাপ ছিলো। এই রে নিলাকে কল করতে একদম ভুলে গেছিলাম। যাই একটা কল করে জানিয়ে দিই। টুং টুং করে কল দিলাম একটা।
:-----হ্যালো।(নিলা)
:-----একটু আগেই পৌছে গিয়েছি।(আমি)
:-----আমি জানতাম তোমার মনে থাকবে না কল করার কথা।
:-----আরে রাগ করো কেনো।তোমার কথা মনে না থাকলে কার কথা মনে থাকবে।
:-----হয়েছে।
:-----আরে সত্যি।
:-----আচ্ছা এখন কি করছো
:-----আমি তো আমার সুইট সুইট দুইটা বাবুর আম্মুর সাথে কথা বলছি।তুমি কি করছো নিলা পরী।
:-----আমি আমার সুইট সুইট দুইটা বাবুর পিচ্চু আব্বুটার সাথে কথা বলছি।
:-----তাই নাকি।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তাহলে ঘুমাও আজ।
:-----তুমিও ঘুমাও।
:-----হুমম।
নিলার সাথে কথা শেষ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। খুব ক্লান্ত থাকায় শুতেই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম।।পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলো মোবাইলের শব্দে। আরে এখনো তো সকালে হতে কিছুক্ষন বাকি আছে। কোনো বিপদ হলো না তো। এতো সকালে তো কল করার কথা না।
:-----উমম হ্যালো।(আমি)
:-----এখনো ঘুম শেষ হয়নি।(নিলা)
:-----না এখনো তো সকাল হয় নাই।
:-----তা তো আমি জানি।
:-----তাহলে এতো সকালে আমার ঘুমের চোদ্দটা কেনো বাজালে।
:-----হাঁটতে যাবো।
:-----হাঁটতে যাবে মানে।
:-----মানে হালকা শীতের সকালে খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাঁটবো।তুমি আর আমি।
:-----না এখন খালি পায়ে হাঁটতে পারবো না।ঠান্ডা লাগবে অনেক।
:-----আচ্ছা রাখছি তোমার আসতে হবে না।
:-----আরে হ্যালো হ্যালো.....(যাহ ফোনটা কেটে দিলো)
ধ্যাত প্রেমে এতো পেরা আগে জানলে আমি চোখ বন্ধ করে রাস্তায় বের হতাম। কিছুই করার নেই। উঠেই নিলাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম দিলাম। খুব শীত করছে। কি করার বলুন। নিলার বাসার সামনে এসে নিলাকে কল করলাম।
:-----হ্যালো।(নিলা)
:-----কোথায় তুমি।(আমি)
:-----কেনো কল করেছো।যাও ঘুমাও।
:-----আরে নিলা পরী রাগ করো কেনো।বারান্দায় এসে দেখো আমি তোমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।(আমি)
:-----মিথ্যা কথা।
:-----আরে না তোমার সাথে মিথ্যা বলবো।আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা।
:-----সত্যিই এসেছো।
:-----আরে হ্যাঁ।
:-----আচ্ছা দুই মিনিট দাঁড়াও আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।
:-----আসো।
একটু পরে নিলা বেরিয়ে আসলো। যাক আমার এতো সকালে আসার লাভ টা এখন পেলাম। শীতের সকালে নিলাকে খুব মায়াবি লাগছে লাগছে। প্রেমে পড়ে গেলাম আবারও।
:-----ওই ওভাবে কি দেখছো।(নিলা)
:-----তোমাকে দেখি।(আমি)
:-----আগে দেখোনি।
:-----যতবার দেখি ততবারই নতুন করে প্রেমে পড়ে যাই।
:-----কি যে বলো না তুমি।(কিছুটা লজ্জা)
:-----চলো।(আমি)
:-----হুমম চলো।
হালকা শীতের সকাল। তাই রাস্তায় মানুষ কম। বড় একটা মাঠের কাছে বাইকটা রাখলাম। মাঠটা পুরো সবুজ ঘাসে ছেয়ে গেছে। হালকা শিশিরের বিন্দুতে মাঠটা খুব সুন্দর লাগছে। নিলা আর আমি খালি পায়ে হাঁটছি।নিলা আমার হাত ধরে হালকা জড়িয়ে হাঁটা শুরু করলো। অনুভূতিটা বলে বোঝানো যাবে না। দুজনেই হাঁটছি।
:-----খুশি হয়েছো।(আমি)
:-----ভিশন।আমি কখনো ভাবিনি কেউ আমাকে এমন একটা সকাল উপহার দেবে।থ্যাংক ইউ আকাশ ।থ্যাংক ইউ সো মাচ।(নিলা)
:-----ওভাবে বলার কি আছে।
:-----তবুও।তোমার সাথে এভাবে হাঁটা।তোমার পাশে তোমার কাঁধে মাথা রেখে।সব কিছুই স্বপ্নের মতো লাগছে।আমি আসলেই খুব ভাগ্যবতী।(কান্না ই করে দিলো)
:-----আরে পাগলী কান্না করো কেনো।আমি আছি তো তোমার সাথে।
:-----সারাজীবন এভাবেই থাকবে তো।
:-----হুমম।কখনো ছেড়ে যাবো না।
এদিকে পাগলীটা কান্না করেই চলেছে। আরো কিছুক্ষণ হেঁটে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। কলেজে ও তো আবার যেতে হবে।
:-----যাও রেডি হও।আমি একটু পরে আসছি।(আমি)
:-----হুমম বাই।তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু।(নিলা)
:-----হুমম।
আমি বাসায় চলে আসলাম।
:-----কিরে এতো সকালে কোথায় গিয়েছিলি।(আম্মু)
:-----ঘুরতে গিয়েছিলাম একটু।(আমি)
:-----নিলার সাথে নাকি বন্ধু।
:-----বন্ধু নিয়ে এতো সকালে কোথায় যাবো।নিলাকে নিয়েই একটু হাঁটতে গিয়েছিলাম।
:-----ওহ ভালো করেছিস।এখন ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।
:-----হুমম যাচ্ছি।
তারপরে ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের জন্যে রেডি হচ্ছি এমন সময় আপুর আগমন।
:-----নিলাকে পেয়ে তো আমাকে একেবারে ভুলেই গেলি।এখন কলেজে ও নিয়ে যাস না।(আপু)
:-----তোর জন্যে তো গাড়ি আছে ই।(আমি)
:-----গাড়ি দিয়ে একা এক যেতে ভালো লাগে নাকি।
:-----তাহলে কি করবো।
:-----আমাকে আর নিলা গাড়ি করে নিয়ে যাবি।
:-----হুমম।আমি তো আপনাদের ড্রাইভার।
:-----হুমম্।ড্রাইভার ই।এবার খুশি।
:-----বাহ্ আমাকে এখন ড্রাইভার বানিয়ে দিলি।(আমি)
:-----ড্রাইভার সাহেব গাড়ি বের করেন।(বলেই আপু চলে গেলো)
কি করার ই বা আছে গাড়ি নিয়েই বের হতে হলো। আমাকে ড্রাইভার বানিয়ে দিলো। আপুকে নিয়ে বের হলাম। নিলাদের বাসার সামনে থেকে নিলাকে পিক করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
:-----তোরা ভেতরে যা।আমি পার্ক করে আসছি।(আমি)
:-----হুমম।ড্রাইভার তুই পার্ক করে আয়।(আপু)
:-----এখন কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।(আমি)
:-----আচ্ছা আর বলবো না।(আপু)
গাড়িটা পার্ক করে ক্যাম্পাসে যেতে লাগলাম। একটু অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিলাম। এই রে ধপাস্ করে পড়ে গেলাম। কারো সাথে ধাক্কা লেগে গেলো। কানের বারোটা বাজাবে এখন। যেহেতু আমি অন্যমনস্ক ছিলাম তাই কথাগুলো আমারই শুনতেই হবে।
:-----এই যে মিষ্টার।(কথা থামিয়ে)
:-----মিষ্টার আকাশ।(আমি)
:-----যেই লয় ই হোন না কেনো।চোখে কি দেখতে পান না।(মেয়েটি)
:-----হুমম।পাবো না কেনো।দিব্যি দেখতে পাই।(আমি)
:-----তাহলে ধাক্কা খেলেন কেনো।(মেয়েটি)
:-----আরে আমি ইচ্ছা করে ধাক্কা খেয়েছি নাকি।(আমি)
:-----তাহলে কেনো খেয়েছেন।(মেয়েটি)
:-----হঠাৎ করে লেগে গেছে।সরি।(আমি)
:-----সরি বললেই সব সমাধান হয়।(মেয়েটা)
:-----আরে রুপু তুই।(নিলা)
যাক নিলা এসে গেছে। এই যাত্রায় বেঁচে যাবো।
:-----আরে নিলা আপু তুমি।(রুপু মেয়েটার নাম)
:-----তুই এই কলেজে কি করিছ।(নিলা)
:-----নিউ এডমিশন।(রুপু)
:-----ওহ।তা এতো ঝগড়া করছিস কেনো।(নিলা)
:-----এই ছেলেটা আমাকে ধাক্কা মেরেছে।(রুপু)
:-----এইসব বাজে ছেলেদের আর কোনো কাজ নাই।সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ধাক্কা খেতে ইচ্ছা করে ওনাদের।(নিলা)
আরিব্বাস নিলা দেখি দল বদল করলো। আমি তো পুরাই অবাক।
:-----ছেলেটাকে তো আমার খুব পছন্দ হয়েছে আপু।(রুপু নামের মেয়েটা বলে উঠলো)
:-----ওকে চিনিস।(নিলা)
:-----না।আজকেই তো প্রথম কলেজে আসলাম।(রুপু)
:-----এটা তোর দুলাভাই।(নিলা)
:-----ঠিক বুঝলাম না।(রুপু)
:-----আমি তোর কি হই।
:-----আপু।
:-----আপুর জামাই তো অবশ্যই তোর দুলাভাই হবে।
:-----কিহ।সত্যিই।
:-----হুমম।এই পাগল টাকে মানুষ করার দায়িত্ব আমার উপরে।
:-----সরি আপু।
:-----ইটস ওকে।
যাক নিলা বাঁচিয়ে দিলো। আমার কানগুলো।
:-----হাই আমি রুপু।(রুপু)
:-----আমি আকাশ।ধাক্কা টা আমি ইচ্ছা করে দিইনি।তাই সরিম।(আমি)
:-----ইটস ওকে দুলাভাই।(বলেই হো হো করে হাসতে শুরু করলো)
নিলা কিছুক্ষন ওই মেয়েটার সাথে কথা বললো। তারপরে কয়টা ক্লাস করলাম। নিলাকে ওর বাসায় ড্রপ করে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
:-----এই আকাশ শোন।(আম্মু)
:-----হুমম বলো।(আমি)
:-----ঝিনাত আজ সন্ধ্যার ট্রেনে আমাদের এখানে বেড়াতে আসবে।তুই গিয়ে নিয়ে আসিস।।
:-----আমারই যেতে হবে।
:-----হুমম।তোর আব্বুর কাজ আছে।তাই তোর ই যেতে হবে।
:-----আচ্ছা যাবো।
ধ্যাত ঝিনাত আবার এখন কেনো আসছে। ও তো একটা পাগলী মেয়ে। কি থেকে কি করে ফেলে নিজেও জানে না। বুদ্ধি পেয়েছি একটা। নিশা কে সাথে করে নিয়ে যাই। যেই ভাবা সেই কাজ। নিলাকে কল করলাম।
:-----হ্যালো নিলা পরী।(আমি)
:-----হঠাৎ এতো আদর।(নিলা)
:-----তোমাকে আবার কবে আদর না করলাম।
:-----বলো।
:-----নিশা কোথায়।
:-----এইতো আমার সাথেই।কিন্তু কেনো।
:-----ওর কাছে একটু দাও তো।
:-----এই নিশা নে আকাশ তোর সাথে কথা বলবে।
:-----হ্যালো আকাশ ভাইয়া।(নিশা)
:-----কিরে শালি।দুলাভাই কে তো একেবারেই ভুলে গেছিস।(আমি)
:-----আমি কই ভুলে গেছি।তুমি ই তো ভুলে গেছো।
:-----আমি ভুলে গেলে কি কল করতাম।
:-----তা অবশ্য ঠিক।কিন্তু আমি কল করবো কি দিয়ে।আমার তো আর পার্সোনাল মোবাইল নেই।
:-----ওরে আমার শালির কি কষ্ট।আজকে বিকালে ই আমি আমার শালিটাকে মোবাইল কিনে দেবো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।তিন সত্যি।
:-----থ্যাংক ইউ।
:-----বিকালে ঘুরতে যাবো।
:-----আচ্ছা।
:-----নিলাকে ফোনটা দে।
:-----আপু নাও।(নিশা)
:-----শালি-দুলাভাই কি প্লান করলে।(নিলা)
:-----আমরা ঘুরতে যাবো সেটা।(আমি)
:-----ওহ।এই জন্যই নিশাকে এতো খুশি দেখাচ্ছে।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা যেও
:-----আচ্ছা বাই।
বিকালে নিশাকে পিক করলাম। তারপর দুজন স্টেশনের দিকে গেলাম। ট্রেন এখনো আসে নি।
:-----এই নিশা ফুসকা খাবি।(আমি)
:-----কথাটা খারাপ বলো নি।চলো খেয়ে আসি।(নিশা)
:-----হুমম চল।
তারপর দুজনে মিলে ফুসকা খেয়ে নিলাম। ট্রেন চলে এসেছে। ঝিনাত নামলো।
:-----এই আকাশ ভাইয়া।(ঝিনাত)
:-----কেমন আছো ঝিনাত।(ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করলাম আর কি)
:-----এতোদিন তো ভালো ছিলাম না।তবে এবার ভালো থাকবো।(ঝিনাত)
:-----কেনো।
:-----তুমি বুঝলে তো হতোই।
:-----আমি আবার কি বুঝলাম না।
আমি তো সবই বুঝে গেছি। কিন্তু তুমি যে অনেক ছোটো। এখন ধাক্কা দিলে বেশি ইমোশনাল হয়ে যেতে পারো। মনে মনে বললাম।
:-----কিছু না চলো।
:-----আকাশ ভাইয়া আমার মোবাইল।(নিশা)
:-----তুই এখানে কি করছিস।(ঝিনাত)
:-----সেটা তোর জানা কি খুব দরকার।(নিশা)
:-----হুমম।আমার জানা দরকার।(ঝিনাত)
:-----আকাশ ভাইয়া আজ আমাকে মোবাইল কিনে দিবে।(নিশা)
:-----তোকে কেনো মোবাইল দিবে।তা ও আবার আকাশ ভাইয়া।(ঝিনাত)
:-----তো কাকে কিনে দিবে।(নিশা)
:-----আমাকে সব কিনে দিবে।(বিড়বিড় করে বললো)
:-----ওই বিড়বিড় করে কি বলছিস।(নিশা)
:-----কিছু না।আকাশ ভাইয়া চলো।(ঝিনাত)
:-----হুমম চলো।
এইজন্যই নিশাকে সাথে আনা। যাতে এই মেয়েটার মাথা থেকে ভূত নামে। কথামতো নিশাকে ফোন কিনে দিলাম। তারপর ঝিনাতকে বাসায় ড্রপ করে নিশাকে নিয়ে ওর বাসার দিকে চলে গেলাম।
পৌঁছে গেছি।
:-----এই নাম।আর হ্যাঁ মোবাইল বেশি ব্যবহার করা যাবে না।দরকার পরলেই ব্যবহার করবি।আর সারাদিন গেইম খেলিস না আবার।
:-----হ্যাঁ বুঝেছি।ভেতরে চলো।
:-----হ্যাঁ চল।
ভেতরে গেলাম।
:-----আসবো।(আমি)
:-----তুমি আসবে।এতে আবার পারমিশন নেওয়ার কি আছে।(নিলা)
:-----হি হি।মজা করছিলাম।(আমি)
:-----তোমার তো আছেই শুধু মজা
:-----আরে এমন করে কথা বলছো কেনো।
:-----এমনি ই।
:-----আচ্ছা চলো আমরা ঘুরতে যাই।
:-----না যাবো না।তুমি একা ই যাও।
:-----আরে চলো তো।
:-----আচ্ছা চলো।কিন্তু যাবো কোথায়।
:-----প্রথমে একটু ঘোরাঘুরি।আর তারপরে বাসায় যাবো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তুমি বসো আমি চেঞ্জ করে আসছি।
:-----হুমম।
একটু পরে নিলা ড্রেস চেঞ্জ করে আসলো। খোলা চুলে নিলাকে দারুণ লাগছে। আমি হা করে তাকিয়ে আছি।
:-----এই হা করে কি দেখছো।
:-----এইতো আমার নিলা পরীটাকে দেখছি আর কি।
:-----আমাকে কি আজ নতুন দেখছো নাকি।।
:-----তোমাকে যতবার দেখি ততবারই নতুন করে দেখার স্বাদ পাই।
:-----ধ্যাত কি যে বলো না।
:-----এদিকে আসো।
:-----কেনো।
:-----আসো ই না।
নিলা একটু কাছে আসলো। আমি কাজল দিয়ে ছোটো করে একটা ফোঁটা দিয়ে দিলাম নিলার গালে।
:-----কি করছো।
:-----আরে যদি কারো নজর লাগে।
:-----আর কার নজর লাগবে?একজনের তো লেগেই গেছে।
:-----কিহ।কার নজর লেগেছে তোমার প্রতি।
:-----তোমার আর কার।
:-----হুমম।তা তো লেগেছে ই।
:-----চলো এখন।পরে বাসায় ফিরতে দেরী হয়ে যাবে।
:-----হুমম চলো।
তারপরে আমি আর নিলা বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে।এখন আমরা সহর টার রাতের চেহারা দেখবো। বিশেষ কোথাও গেলাম না।একটু এদিক ওদিক ঘুরলাম।
:-----চলো এখন বাসায়।
:-----কোন বাসায়।
:-----এক বাসায় গেলেই হবে।দুইটা ই তোমারই বাসা।
:-----আচ্ছা তাহলে তোমাদের বাসায় চলো।
:-----আমি ওই বাসার কথা ই বলছিলাম।
:-----চলো তাহলে।
:-----হুমম।চলো যাওয়া যাক।
বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।।বাসায় পৌছে কলিং বেল দিলাম। আপু দরজা খুলে দিলো।
:-----আরে নিলা কেমন আসিছ।(আপু)
:-----এইতো ভালো।তুই কেমন আসিছ।(নিলা)
:-----এখন তুই এসে গেছিস।খারাপ কিভাবে থাকি।(আপু)
:-----কথা বলা হয়ে থাকলে এখন ভেতরে যাই।(আমি)
:-----তোকে কে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছে।(আপু)
:-----আমি তো বাড়ির অতিথি।(আমি)
:-----যা তোর রোমে।নিলা তুই চল আমার সাথে।(আপু)
:-----হ্যাঁ হ্যাঁ।আমি তো কিছু না।নিলা ই তো সব।(আমি)
:-----দেখলি কেমন হিংসে করছে।(আপু)
:-----হি হি।(নিলা)
নিলা আপুর সাথে চলে গেলো। আমি আমার রোমে চলে গেলাম।
একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।
:-----আকাশ ভাইয়া আসবো।(ঝিনাত)
:-----আসো এতে বলার কি আছে।(আমি)
:-----একটা প্রশ্ন ছিলো।(ঝিনাত)
:-----হুমম্ বলো কি প্রশ্ন।(আমি)
:-----নিলা আপু এই বাসায় কি করে।(ঝিনাত)
:-----আসলে হয়েছে কি।না মানে।(আমি)
:-----এমন করছো কেনো।ভালো করে বলো।(ঝিনাত)
:-----আপুর থেকে জিজ্ঞেস করো।(আমি)
:-----আচ্ছা।(ঝিনাত)
আমার রোম থেকে চলে গেলো। আমিও ঝিনাতের পিছনে পিছনে গেলাম। আমাকে খেয়াল করেনি হয়তোবা।
:-----আরে নিলা আপু তুমি এখানে কি করছো।(ঝিনাত)
:-----আমি কি করছি মানে।(নিলা)
:-----মানে তুমি এখানে কিভাবে।(ঝিনাত)
:-----ও আসবে না তো কে আসবে।(আপু)
:-----বুঝলাম না ঠিক।(ঝিনাত)
:-----আরে নিলা ই তো আমার একমাত্র ভাবিটা।(আপু)
:-----রুহি কি বলছিস।(নিলা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বললো)
:-----বুঝলাম না ঠিক।(ঝিনাত)
:-----আরে বোকা।আমার ভাই কয়টা।(আপু)
:-----একটা।(ঝিনাত)
:-----তাহলে না বুঝার কি আছে।(আপু)
:-----এবার ও বুঝতে পারছি না।(ঝিনাত)
:-----আরে ও হচ্ছে আকাশের হবু বউ।আর আমার একমাত্র ভাবি।(আপু)
:-----কিন্তু নিলা আপু তো আকাশ ভাইয়ার বড়।(ঝিনাত)
:-----তাতে কি।(আপু)
:-----এটা হয় নাকি।(ঝিনাত)
:-----হুমম হয়।(আপু)
ঝিনাত রোম থেকে চলে গেলো। আমি আপুর রোমে প্রবেশ করলাম।
:-----কি করলি এটা।(আমি)
:-----কেনো কি হয়েছে।(আপু)
(-------)
নানু বাসায় যা যা ঘটেছে সব বললাম।
:-----এত কিছু ঘটে গেলো আর আমি কিছুই জানলাম না।(আপু)
:-----হুমম।(আমি)
:-----কোনো সমস্যা নেই।ঝিনাত এখনো অনেক ছোটো।(আপু)
:-----কিছু না হলেই ভালো।(আমি)
:-----হুমম।(আপু)
:-----নিলা চলো ডিনার করবে।(আমি)
:-----রুহি তুই ও চল।(নিলা)
:-----হুমম।(আপু)
তারপর সবাই একসাথে ডিনার করলাম। ঝিনাত কেমন করে যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কি আর করার।
:-----নিলা চলো।(আমি)
:-----হুমম চলো।আম্মু আজ তাহলে যাই।(নিলা)
:-----আচ্ছা।(আম্মু)
নিলাকে নিয়ে বেরিয়ে আসলাম। নিলাকে ড্রপ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। রাস্তায় কারো কল আসলো......
চলবে.......
------------------------------------
কথাটা শেষ করার আগেই.....টুপ করে একটা দিয়ে দিলো।
:-----থ্যাংক ইউ।(আমি)
:-----হয়েছে এখন যাও।নয়তো আমার তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছা করবে না।(নিলা)
:-----আচ্ছা বাই।
:-----আর হ্যাঁ বাড়িতে গিয়ে অবশ্যই একটা কল করবে।
:-----হুমম ওকে।
:-----আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো
:-----আচ্ছা আজ তাহলে যাই।
:-----হুমম।
নিলাদের বাসার সামনে থেকে চলে আসলাম। অনেক রাত হয়ে গেছে। তাই আল-আমীনকে ওর বাসায় ড্রপ করে আমি বাসায় চলে আসলাম। খুব ক্লান্ত লাগছে। সারাদিন অনেক কাজের চাপ ছিলো। এই রে নিলাকে কল করতে একদম ভুলে গেছিলাম। যাই একটা কল করে জানিয়ে দিই। টুং টুং করে কল দিলাম একটা।
:-----হ্যালো।(নিলা)
:-----একটু আগেই পৌছে গিয়েছি।(আমি)
:-----আমি জানতাম তোমার মনে থাকবে না কল করার কথা।
:-----আরে রাগ করো কেনো।তোমার কথা মনে না থাকলে কার কথা মনে থাকবে।
:-----হয়েছে।
:-----আরে সত্যি।
:-----আচ্ছা এখন কি করছো
:-----আমি তো আমার সুইট সুইট দুইটা বাবুর আম্মুর সাথে কথা বলছি।তুমি কি করছো নিলা পরী।
:-----আমি আমার সুইট সুইট দুইটা বাবুর পিচ্চু আব্বুটার সাথে কথা বলছি।
:-----তাই নাকি।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তাহলে ঘুমাও আজ।
:-----তুমিও ঘুমাও।
:-----হুমম।
নিলার সাথে কথা শেষ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। খুব ক্লান্ত থাকায় শুতেই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম।।পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলো মোবাইলের শব্দে। আরে এখনো তো সকালে হতে কিছুক্ষন বাকি আছে। কোনো বিপদ হলো না তো। এতো সকালে তো কল করার কথা না।
:-----উমম হ্যালো।(আমি)
:-----এখনো ঘুম শেষ হয়নি।(নিলা)
:-----না এখনো তো সকাল হয় নাই।
:-----তা তো আমি জানি।
:-----তাহলে এতো সকালে আমার ঘুমের চোদ্দটা কেনো বাজালে।
:-----হাঁটতে যাবো।
:-----হাঁটতে যাবে মানে।
:-----মানে হালকা শীতের সকালে খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাঁটবো।তুমি আর আমি।
:-----না এখন খালি পায়ে হাঁটতে পারবো না।ঠান্ডা লাগবে অনেক।
:-----আচ্ছা রাখছি তোমার আসতে হবে না।
:-----আরে হ্যালো হ্যালো.....(যাহ ফোনটা কেটে দিলো)
ধ্যাত প্রেমে এতো পেরা আগে জানলে আমি চোখ বন্ধ করে রাস্তায় বের হতাম। কিছুই করার নেই। উঠেই নিলাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম দিলাম। খুব শীত করছে। কি করার বলুন। নিলার বাসার সামনে এসে নিলাকে কল করলাম।
:-----হ্যালো।(নিলা)
:-----কোথায় তুমি।(আমি)
:-----কেনো কল করেছো।যাও ঘুমাও।
:-----আরে নিলা পরী রাগ করো কেনো।বারান্দায় এসে দেখো আমি তোমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।(আমি)
:-----মিথ্যা কথা।
:-----আরে না তোমার সাথে মিথ্যা বলবো।আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা।
:-----সত্যিই এসেছো।
:-----আরে হ্যাঁ।
:-----আচ্ছা দুই মিনিট দাঁড়াও আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।
:-----আসো।
একটু পরে নিলা বেরিয়ে আসলো। যাক আমার এতো সকালে আসার লাভ টা এখন পেলাম। শীতের সকালে নিলাকে খুব মায়াবি লাগছে লাগছে। প্রেমে পড়ে গেলাম আবারও।
:-----ওই ওভাবে কি দেখছো।(নিলা)
:-----তোমাকে দেখি।(আমি)
:-----আগে দেখোনি।
:-----যতবার দেখি ততবারই নতুন করে প্রেমে পড়ে যাই।
:-----কি যে বলো না তুমি।(কিছুটা লজ্জা)
:-----চলো।(আমি)
:-----হুমম চলো।
হালকা শীতের সকাল। তাই রাস্তায় মানুষ কম। বড় একটা মাঠের কাছে বাইকটা রাখলাম। মাঠটা পুরো সবুজ ঘাসে ছেয়ে গেছে। হালকা শিশিরের বিন্দুতে মাঠটা খুব সুন্দর লাগছে। নিলা আর আমি খালি পায়ে হাঁটছি।নিলা আমার হাত ধরে হালকা জড়িয়ে হাঁটা শুরু করলো। অনুভূতিটা বলে বোঝানো যাবে না। দুজনেই হাঁটছি।
:-----খুশি হয়েছো।(আমি)
:-----ভিশন।আমি কখনো ভাবিনি কেউ আমাকে এমন একটা সকাল উপহার দেবে।থ্যাংক ইউ আকাশ ।থ্যাংক ইউ সো মাচ।(নিলা)
:-----ওভাবে বলার কি আছে।
:-----তবুও।তোমার সাথে এভাবে হাঁটা।তোমার পাশে তোমার কাঁধে মাথা রেখে।সব কিছুই স্বপ্নের মতো লাগছে।আমি আসলেই খুব ভাগ্যবতী।(কান্না ই করে দিলো)
:-----আরে পাগলী কান্না করো কেনো।আমি আছি তো তোমার সাথে।
:-----সারাজীবন এভাবেই থাকবে তো।
:-----হুমম।কখনো ছেড়ে যাবো না।
এদিকে পাগলীটা কান্না করেই চলেছে। আরো কিছুক্ষণ হেঁটে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। কলেজে ও তো আবার যেতে হবে।
:-----যাও রেডি হও।আমি একটু পরে আসছি।(আমি)
:-----হুমম বাই।তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু।(নিলা)
:-----হুমম।
আমি বাসায় চলে আসলাম।
:-----কিরে এতো সকালে কোথায় গিয়েছিলি।(আম্মু)
:-----ঘুরতে গিয়েছিলাম একটু।(আমি)
:-----নিলার সাথে নাকি বন্ধু।
:-----বন্ধু নিয়ে এতো সকালে কোথায় যাবো।নিলাকে নিয়েই একটু হাঁটতে গিয়েছিলাম।
:-----ওহ ভালো করেছিস।এখন ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।
:-----হুমম যাচ্ছি।
তারপরে ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের জন্যে রেডি হচ্ছি এমন সময় আপুর আগমন।
:-----নিলাকে পেয়ে তো আমাকে একেবারে ভুলেই গেলি।এখন কলেজে ও নিয়ে যাস না।(আপু)
:-----তোর জন্যে তো গাড়ি আছে ই।(আমি)
:-----গাড়ি দিয়ে একা এক যেতে ভালো লাগে নাকি।
:-----তাহলে কি করবো।
:-----আমাকে আর নিলা গাড়ি করে নিয়ে যাবি।
:-----হুমম।আমি তো আপনাদের ড্রাইভার।
:-----হুমম্।ড্রাইভার ই।এবার খুশি।
:-----বাহ্ আমাকে এখন ড্রাইভার বানিয়ে দিলি।(আমি)
:-----ড্রাইভার সাহেব গাড়ি বের করেন।(বলেই আপু চলে গেলো)
কি করার ই বা আছে গাড়ি নিয়েই বের হতে হলো। আমাকে ড্রাইভার বানিয়ে দিলো। আপুকে নিয়ে বের হলাম। নিলাদের বাসার সামনে থেকে নিলাকে পিক করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
:-----তোরা ভেতরে যা।আমি পার্ক করে আসছি।(আমি)
:-----হুমম।ড্রাইভার তুই পার্ক করে আয়।(আপু)
:-----এখন কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।(আমি)
:-----আচ্ছা আর বলবো না।(আপু)
গাড়িটা পার্ক করে ক্যাম্পাসে যেতে লাগলাম। একটু অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিলাম। এই রে ধপাস্ করে পড়ে গেলাম। কারো সাথে ধাক্কা লেগে গেলো। কানের বারোটা বাজাবে এখন। যেহেতু আমি অন্যমনস্ক ছিলাম তাই কথাগুলো আমারই শুনতেই হবে।
:-----এই যে মিষ্টার।(কথা থামিয়ে)
:-----মিষ্টার আকাশ।(আমি)
:-----যেই লয় ই হোন না কেনো।চোখে কি দেখতে পান না।(মেয়েটি)
:-----হুমম।পাবো না কেনো।দিব্যি দেখতে পাই।(আমি)
:-----তাহলে ধাক্কা খেলেন কেনো।(মেয়েটি)
:-----আরে আমি ইচ্ছা করে ধাক্কা খেয়েছি নাকি।(আমি)
:-----তাহলে কেনো খেয়েছেন।(মেয়েটি)
:-----হঠাৎ করে লেগে গেছে।সরি।(আমি)
:-----সরি বললেই সব সমাধান হয়।(মেয়েটা)
:-----আরে রুপু তুই।(নিলা)
যাক নিলা এসে গেছে। এই যাত্রায় বেঁচে যাবো।
:-----আরে নিলা আপু তুমি।(রুপু মেয়েটার নাম)
:-----তুই এই কলেজে কি করিছ।(নিলা)
:-----নিউ এডমিশন।(রুপু)
:-----ওহ।তা এতো ঝগড়া করছিস কেনো।(নিলা)
:-----এই ছেলেটা আমাকে ধাক্কা মেরেছে।(রুপু)
:-----এইসব বাজে ছেলেদের আর কোনো কাজ নাই।সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ধাক্কা খেতে ইচ্ছা করে ওনাদের।(নিলা)
আরিব্বাস নিলা দেখি দল বদল করলো। আমি তো পুরাই অবাক।
:-----ছেলেটাকে তো আমার খুব পছন্দ হয়েছে আপু।(রুপু নামের মেয়েটা বলে উঠলো)
:-----ওকে চিনিস।(নিলা)
:-----না।আজকেই তো প্রথম কলেজে আসলাম।(রুপু)
:-----এটা তোর দুলাভাই।(নিলা)
:-----ঠিক বুঝলাম না।(রুপু)
:-----আমি তোর কি হই।
:-----আপু।
:-----আপুর জামাই তো অবশ্যই তোর দুলাভাই হবে।
:-----কিহ।সত্যিই।
:-----হুমম।এই পাগল টাকে মানুষ করার দায়িত্ব আমার উপরে।
:-----সরি আপু।
:-----ইটস ওকে।
যাক নিলা বাঁচিয়ে দিলো। আমার কানগুলো।
:-----হাই আমি রুপু।(রুপু)
:-----আমি আকাশ।ধাক্কা টা আমি ইচ্ছা করে দিইনি।তাই সরিম।(আমি)
:-----ইটস ওকে দুলাভাই।(বলেই হো হো করে হাসতে শুরু করলো)
নিলা কিছুক্ষন ওই মেয়েটার সাথে কথা বললো। তারপরে কয়টা ক্লাস করলাম। নিলাকে ওর বাসায় ড্রপ করে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
:-----এই আকাশ শোন।(আম্মু)
:-----হুমম বলো।(আমি)
:-----ঝিনাত আজ সন্ধ্যার ট্রেনে আমাদের এখানে বেড়াতে আসবে।তুই গিয়ে নিয়ে আসিস।।
:-----আমারই যেতে হবে।
:-----হুমম।তোর আব্বুর কাজ আছে।তাই তোর ই যেতে হবে।
:-----আচ্ছা যাবো।
ধ্যাত ঝিনাত আবার এখন কেনো আসছে। ও তো একটা পাগলী মেয়ে। কি থেকে কি করে ফেলে নিজেও জানে না। বুদ্ধি পেয়েছি একটা। নিশা কে সাথে করে নিয়ে যাই। যেই ভাবা সেই কাজ। নিলাকে কল করলাম।
:-----হ্যালো নিলা পরী।(আমি)
:-----হঠাৎ এতো আদর।(নিলা)
:-----তোমাকে আবার কবে আদর না করলাম।
:-----বলো।
:-----নিশা কোথায়।
:-----এইতো আমার সাথেই।কিন্তু কেনো।
:-----ওর কাছে একটু দাও তো।
:-----এই নিশা নে আকাশ তোর সাথে কথা বলবে।
:-----হ্যালো আকাশ ভাইয়া।(নিশা)
:-----কিরে শালি।দুলাভাই কে তো একেবারেই ভুলে গেছিস।(আমি)
:-----আমি কই ভুলে গেছি।তুমি ই তো ভুলে গেছো।
:-----আমি ভুলে গেলে কি কল করতাম।
:-----তা অবশ্য ঠিক।কিন্তু আমি কল করবো কি দিয়ে।আমার তো আর পার্সোনাল মোবাইল নেই।
:-----ওরে আমার শালির কি কষ্ট।আজকে বিকালে ই আমি আমার শালিটাকে মোবাইল কিনে দেবো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।তিন সত্যি।
:-----থ্যাংক ইউ।
:-----বিকালে ঘুরতে যাবো।
:-----আচ্ছা।
:-----নিলাকে ফোনটা দে।
:-----আপু নাও।(নিশা)
:-----শালি-দুলাভাই কি প্লান করলে।(নিলা)
:-----আমরা ঘুরতে যাবো সেটা।(আমি)
:-----ওহ।এই জন্যই নিশাকে এতো খুশি দেখাচ্ছে।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা যেও
:-----আচ্ছা বাই।
বিকালে নিশাকে পিক করলাম। তারপর দুজন স্টেশনের দিকে গেলাম। ট্রেন এখনো আসে নি।
:-----এই নিশা ফুসকা খাবি।(আমি)
:-----কথাটা খারাপ বলো নি।চলো খেয়ে আসি।(নিশা)
:-----হুমম চল।
তারপর দুজনে মিলে ফুসকা খেয়ে নিলাম। ট্রেন চলে এসেছে। ঝিনাত নামলো।
:-----এই আকাশ ভাইয়া।(ঝিনাত)
:-----কেমন আছো ঝিনাত।(ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করলাম আর কি)
:-----এতোদিন তো ভালো ছিলাম না।তবে এবার ভালো থাকবো।(ঝিনাত)
:-----কেনো।
:-----তুমি বুঝলে তো হতোই।
:-----আমি আবার কি বুঝলাম না।
আমি তো সবই বুঝে গেছি। কিন্তু তুমি যে অনেক ছোটো। এখন ধাক্কা দিলে বেশি ইমোশনাল হয়ে যেতে পারো। মনে মনে বললাম।
:-----কিছু না চলো।
:-----আকাশ ভাইয়া আমার মোবাইল।(নিশা)
:-----তুই এখানে কি করছিস।(ঝিনাত)
:-----সেটা তোর জানা কি খুব দরকার।(নিশা)
:-----হুমম।আমার জানা দরকার।(ঝিনাত)
:-----আকাশ ভাইয়া আজ আমাকে মোবাইল কিনে দিবে।(নিশা)
:-----তোকে কেনো মোবাইল দিবে।তা ও আবার আকাশ ভাইয়া।(ঝিনাত)
:-----তো কাকে কিনে দিবে।(নিশা)
:-----আমাকে সব কিনে দিবে।(বিড়বিড় করে বললো)
:-----ওই বিড়বিড় করে কি বলছিস।(নিশা)
:-----কিছু না।আকাশ ভাইয়া চলো।(ঝিনাত)
:-----হুমম চলো।
এইজন্যই নিশাকে সাথে আনা। যাতে এই মেয়েটার মাথা থেকে ভূত নামে। কথামতো নিশাকে ফোন কিনে দিলাম। তারপর ঝিনাতকে বাসায় ড্রপ করে নিশাকে নিয়ে ওর বাসার দিকে চলে গেলাম।
পৌঁছে গেছি।
:-----এই নাম।আর হ্যাঁ মোবাইল বেশি ব্যবহার করা যাবে না।দরকার পরলেই ব্যবহার করবি।আর সারাদিন গেইম খেলিস না আবার।
:-----হ্যাঁ বুঝেছি।ভেতরে চলো।
:-----হ্যাঁ চল।
ভেতরে গেলাম।
:-----আসবো।(আমি)
:-----তুমি আসবে।এতে আবার পারমিশন নেওয়ার কি আছে।(নিলা)
:-----হি হি।মজা করছিলাম।(আমি)
:-----তোমার তো আছেই শুধু মজা
:-----আরে এমন করে কথা বলছো কেনো।
:-----এমনি ই।
:-----আচ্ছা চলো আমরা ঘুরতে যাই।
:-----না যাবো না।তুমি একা ই যাও।
:-----আরে চলো তো।
:-----আচ্ছা চলো।কিন্তু যাবো কোথায়।
:-----প্রথমে একটু ঘোরাঘুরি।আর তারপরে বাসায় যাবো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তুমি বসো আমি চেঞ্জ করে আসছি।
:-----হুমম।
একটু পরে নিলা ড্রেস চেঞ্জ করে আসলো। খোলা চুলে নিলাকে দারুণ লাগছে। আমি হা করে তাকিয়ে আছি।
:-----এই হা করে কি দেখছো।
:-----এইতো আমার নিলা পরীটাকে দেখছি আর কি।
:-----আমাকে কি আজ নতুন দেখছো নাকি।।
:-----তোমাকে যতবার দেখি ততবারই নতুন করে দেখার স্বাদ পাই।
:-----ধ্যাত কি যে বলো না।
:-----এদিকে আসো।
:-----কেনো।
:-----আসো ই না।
নিলা একটু কাছে আসলো। আমি কাজল দিয়ে ছোটো করে একটা ফোঁটা দিয়ে দিলাম নিলার গালে।
:-----কি করছো।
:-----আরে যদি কারো নজর লাগে।
:-----আর কার নজর লাগবে?একজনের তো লেগেই গেছে।
:-----কিহ।কার নজর লেগেছে তোমার প্রতি।
:-----তোমার আর কার।
:-----হুমম।তা তো লেগেছে ই।
:-----চলো এখন।পরে বাসায় ফিরতে দেরী হয়ে যাবে।
:-----হুমম চলো।
তারপরে আমি আর নিলা বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে।এখন আমরা সহর টার রাতের চেহারা দেখবো। বিশেষ কোথাও গেলাম না।একটু এদিক ওদিক ঘুরলাম।
:-----চলো এখন বাসায়।
:-----কোন বাসায়।
:-----এক বাসায় গেলেই হবে।দুইটা ই তোমারই বাসা।
:-----আচ্ছা তাহলে তোমাদের বাসায় চলো।
:-----আমি ওই বাসার কথা ই বলছিলাম।
:-----চলো তাহলে।
:-----হুমম।চলো যাওয়া যাক।
বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।।বাসায় পৌছে কলিং বেল দিলাম। আপু দরজা খুলে দিলো।
:-----আরে নিলা কেমন আসিছ।(আপু)
:-----এইতো ভালো।তুই কেমন আসিছ।(নিলা)
:-----এখন তুই এসে গেছিস।খারাপ কিভাবে থাকি।(আপু)
:-----কথা বলা হয়ে থাকলে এখন ভেতরে যাই।(আমি)
:-----তোকে কে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছে।(আপু)
:-----আমি তো বাড়ির অতিথি।(আমি)
:-----যা তোর রোমে।নিলা তুই চল আমার সাথে।(আপু)
:-----হ্যাঁ হ্যাঁ।আমি তো কিছু না।নিলা ই তো সব।(আমি)
:-----দেখলি কেমন হিংসে করছে।(আপু)
:-----হি হি।(নিলা)
নিলা আপুর সাথে চলে গেলো। আমি আমার রোমে চলে গেলাম।
একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।
:-----আকাশ ভাইয়া আসবো।(ঝিনাত)
:-----আসো এতে বলার কি আছে।(আমি)
:-----একটা প্রশ্ন ছিলো।(ঝিনাত)
:-----হুমম্ বলো কি প্রশ্ন।(আমি)
:-----নিলা আপু এই বাসায় কি করে।(ঝিনাত)
:-----আসলে হয়েছে কি।না মানে।(আমি)
:-----এমন করছো কেনো।ভালো করে বলো।(ঝিনাত)
:-----আপুর থেকে জিজ্ঞেস করো।(আমি)
:-----আচ্ছা।(ঝিনাত)
আমার রোম থেকে চলে গেলো। আমিও ঝিনাতের পিছনে পিছনে গেলাম। আমাকে খেয়াল করেনি হয়তোবা।
:-----আরে নিলা আপু তুমি এখানে কি করছো।(ঝিনাত)
:-----আমি কি করছি মানে।(নিলা)
:-----মানে তুমি এখানে কিভাবে।(ঝিনাত)
:-----ও আসবে না তো কে আসবে।(আপু)
:-----বুঝলাম না ঠিক।(ঝিনাত)
:-----আরে নিলা ই তো আমার একমাত্র ভাবিটা।(আপু)
:-----রুহি কি বলছিস।(নিলা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বললো)
:-----বুঝলাম না ঠিক।(ঝিনাত)
:-----আরে বোকা।আমার ভাই কয়টা।(আপু)
:-----একটা।(ঝিনাত)
:-----তাহলে না বুঝার কি আছে।(আপু)
:-----এবার ও বুঝতে পারছি না।(ঝিনাত)
:-----আরে ও হচ্ছে আকাশের হবু বউ।আর আমার একমাত্র ভাবি।(আপু)
:-----কিন্তু নিলা আপু তো আকাশ ভাইয়ার বড়।(ঝিনাত)
:-----তাতে কি।(আপু)
:-----এটা হয় নাকি।(ঝিনাত)
:-----হুমম হয়।(আপু)
ঝিনাত রোম থেকে চলে গেলো। আমি আপুর রোমে প্রবেশ করলাম।
:-----কি করলি এটা।(আমি)
:-----কেনো কি হয়েছে।(আপু)
(-------)
নানু বাসায় যা যা ঘটেছে সব বললাম।
:-----এত কিছু ঘটে গেলো আর আমি কিছুই জানলাম না।(আপু)
:-----হুমম।(আমি)
:-----কোনো সমস্যা নেই।ঝিনাত এখনো অনেক ছোটো।(আপু)
:-----কিছু না হলেই ভালো।(আমি)
:-----হুমম।(আপু)
:-----নিলা চলো ডিনার করবে।(আমি)
:-----রুহি তুই ও চল।(নিলা)
:-----হুমম।(আপু)
তারপর সবাই একসাথে ডিনার করলাম। ঝিনাত কেমন করে যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কি আর করার।
:-----নিলা চলো।(আমি)
:-----হুমম চলো।আম্মু আজ তাহলে যাই।(নিলা)
:-----আচ্ছা।(আম্মু)
নিলাকে নিয়ে বেরিয়ে আসলাম। নিলাকে ড্রপ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। রাস্তায় কারো কল আসলো......
চলবে.......