12-04-2020, 05:30 AM
জানি না অনিরুদ্ধ স্যার আমার চিঠিটা পড়েছেন কিনা, কি ভাবছেন........ আমাকে ভুল বুঝলো না তো? আর বুঝলেও বা কি!!! সেদিন বাজারে যাওয়ার সময় কফিসপের পাস দিয়ে যেতে গিয়ে দেখলাম রুপসাদি আর অনিরুদ্ধ স্যারকে | দুজনকে বেশ খুশিই মনে হল | অবশ্য খুশি না হওয়ারও কোনো কারণ নেই, দুজনেই শিক্ষিত, সুন্দর, মানানসই | তবে আমার চোখটা হঠাৎ জলে ভিজে উঠলো কেনো? এমন তো হওয়া উচিত না |
এদিকে বিয়ের সব ঠিক হয়ে গিয়েছে | আর মাত্র কটা দিনের তো ব্যাপার | জানলা দিয়ে দূরের মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে জানিনা কেন মনটা খুব উদাস উদাস লাগছে | হঠাৎ ধেয়ে আসা ঝোড়ো হাওয়ায় ভাবনা গুলো কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে | সবকিছু জানা সত্ত্বেও, আজ কেন খুব ইচ্ছে হচ্ছে যদি একবার দেখা হত, কথা হত |
**********************
- আমি ভাবছিলাম আঁখির বিয়েটা হয়ে গেলেই বাড়িতে তোমার কথা বলে দেবো, কি বলো অনি?
অনি.... অনি..... এই
- হুমমম বলো, শুনছি তো.......
- আচ্ছা অনি, যেদিন থেকে তুমি আঁখির বিয়ের কথা শুনেছো, সেদিন থেকেই দেখছি সবসময় কি এত ভাবো বল তো?
- কই, কিছু না তো.......
- না আমি দেখেছি, তুমি সব সময় কেমন যেন বেখেয়ালে থাকো | কি হয়েছে তুমি তোমার রুপসাকে বলবে না?
- তোমায় বলবো না তা কখনও হয় বলো...... বিশ্বাস করো তেমন কিছু না | অবশ্য তুমি কিছুটা ঠিকই আন্দাজ করেছ |
- কি ব্যাপারে???
- আমি আঁখির বিয়ের কথাই ভাবছিলাম |
- মানে??!!!
- মানে ও আমার সাথে এমন ভাবে ছলনা করার পর, অন্য কারোর সাথে বিয়ে করে সুখে ঘর সংসার করবে, এটা কি মেনে নেওয়া যায় বলো?
- হুমমমম, এটা তুমি ঠিক বলেছ | তবে সুখে ঘর সংসার করার কথা কি আর আগে থেকে বলা যায়........
- হুমমমম, এবার তো আমার মনে হচ্ছে তুমি কিছু ভাবছো যেটা আমায় বলছো না |
- হুমমমমম, সেই........
- এই বলো না, প্লীজ বলো না সোনা |
- আচ্ছা বাবা আচ্ছা, তবে কাউকে বলবে না বলো? না হলে মা জানতে পারলে খুব বকবে কিন্তু |
- ঠিক আছে প্রমিস, কাউকে বলবো না |
**********************
বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে বলে বাড়ির বাইরে বেড়ানোর অনুমতি নেই আমার | না না, আমার খেয়াল রাখার জন্য এ ব্যবস্থা নয়, আমার হবু বরের আদেশ রাস্তায় বেরোতে হলে যেন ওনার থেকে অনুমতি নেওয়া হয় | বাধা নিষেধ আরও আছে, রাস্তায় বেড়ালে কেউ যেন আমার দিকে না তাকায়, কোনো রকম কারুর সাথে কথা বলা বা যোগাযোগ রাখা কোনো রকমে বরদাস্ত নয় | এই তো সেদিন আমার ছোটো বেলার একটা বন্ধুর সাথে হঠাৎ দেখা হওয়ায় দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম, কথা শুরুর আগেই কোথা থেকে রাঘব বাবু আমার হাত ধরে টানতে টানতে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে এসে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঠাঁটিয়ে একটা চড়.............
- তোকে বলেছিলাম না, আমায় না জিজ্ঞেস করে কারোর সাথে কথা বলবি না | কে ওই ছেলেটা? কি বলেছিলি কি ওকে আমার নামে?
- ও...... ও..... ও আমার ছোটো বেলার বন্ধু, অনেক দিন পর দেখা হল তাই.........
- ও পুরোনো নাগর, আমায় নিজের কাছে ঘেঁষতে দিস না....... আর এদিকে রাস্তায় পুরোনো নাগরদের সাথে........... তা পালানোর ধান্দা করছিস নাকি? কেনো আমায় দিয়ে চলছে না বুঝি?
- এসব আপনি কি ভাবে কথা বলছেন? আপনার সাথে আমার বিয়ে হতে চলেছে, আর এসব কি বলছেন?
- সেই জন্যই তো অপেক্ষা করছি মামনি | উড়ে নে উড়ে নে, আসবি তো শেষে আমার বিছানায়....... হা হা হা হা |
ওর ওই কথা, নোংরা ইঙ্গিত গুলো দেখে ঘেন্নায় গা গুলিয়ে উঠছিলো | সবকিছুর মাঝে এখনই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে, এরপর কি হবে ভাবতেও পারছি না |
কাকীমাকে বলতে গিয়েছিলাম, ওনার এইসব নোংরা ইঙ্গিত, অভদ্র ব্যবহারের কথা | কিন্তু অতি প্রত্যাশিত ভাবেই কাকু কাকীমা এড়িয়ে গেল | উল্টে আমারই দোষ দিয়ে বলেন...........
- তোরই বা অত কিসের বাপু, বিয়ের ঠিক হয়েছে, বাড়িতে থাক | তা না, এদিক ওদিক ছুকছুক করা গেলো না | কলেজে পড়েছিলি কোন স্যারের পিছনে, পাত্তা পেলি না, এখন আবার ছোটো বেলার কোন না কোন বন্ধু | ঠিক হবে, আমাদের কথা তো শুনলি না, রাঘবই তোকে সামলাতে পারবে |
কাকীমার কথা শুনে একছুট্টে সেদিন ঘরে চলে এসেছিলাম | বেশি কিছু তো কোনো দিনই আশা করিনি, তাই বলে মানুষ হিসেবে সামান্য সম্মান টুকুও কি আমার প্রাপ্য নয়?
স্যারের সাথে পরিচয় হয়ে মনে হয়েছিলো, পৃথিবীতে এখনও কিছু ভালো মানুষ আছে যারা অন্যের জন্য ভাবে | কিন্তু সবকিছু জানা সত্ত্বেও যখন ওনাকেও রুপসাদির সাথে হাতে হাত রেখে হাঁটতে দেখি, তখন বুঝতে পারি এখনও আমি মানুষ চিনতে শিখিনি |
এদিকে বিয়ের সব ঠিক হয়ে গিয়েছে | আর মাত্র কটা দিনের তো ব্যাপার | জানলা দিয়ে দূরের মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে জানিনা কেন মনটা খুব উদাস উদাস লাগছে | হঠাৎ ধেয়ে আসা ঝোড়ো হাওয়ায় ভাবনা গুলো কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে | সবকিছু জানা সত্ত্বেও, আজ কেন খুব ইচ্ছে হচ্ছে যদি একবার দেখা হত, কথা হত |
**********************
- আমি ভাবছিলাম আঁখির বিয়েটা হয়ে গেলেই বাড়িতে তোমার কথা বলে দেবো, কি বলো অনি?
অনি.... অনি..... এই
- হুমমম বলো, শুনছি তো.......
- আচ্ছা অনি, যেদিন থেকে তুমি আঁখির বিয়ের কথা শুনেছো, সেদিন থেকেই দেখছি সবসময় কি এত ভাবো বল তো?
- কই, কিছু না তো.......
- না আমি দেখেছি, তুমি সব সময় কেমন যেন বেখেয়ালে থাকো | কি হয়েছে তুমি তোমার রুপসাকে বলবে না?
- তোমায় বলবো না তা কখনও হয় বলো...... বিশ্বাস করো তেমন কিছু না | অবশ্য তুমি কিছুটা ঠিকই আন্দাজ করেছ |
- কি ব্যাপারে???
- আমি আঁখির বিয়ের কথাই ভাবছিলাম |
- মানে??!!!
- মানে ও আমার সাথে এমন ভাবে ছলনা করার পর, অন্য কারোর সাথে বিয়ে করে সুখে ঘর সংসার করবে, এটা কি মেনে নেওয়া যায় বলো?
- হুমমমম, এটা তুমি ঠিক বলেছ | তবে সুখে ঘর সংসার করার কথা কি আর আগে থেকে বলা যায়........
- হুমমমম, এবার তো আমার মনে হচ্ছে তুমি কিছু ভাবছো যেটা আমায় বলছো না |
- হুমমমমম, সেই........
- এই বলো না, প্লীজ বলো না সোনা |
- আচ্ছা বাবা আচ্ছা, তবে কাউকে বলবে না বলো? না হলে মা জানতে পারলে খুব বকবে কিন্তু |
- ঠিক আছে প্রমিস, কাউকে বলবো না |
**********************
বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে বলে বাড়ির বাইরে বেড়ানোর অনুমতি নেই আমার | না না, আমার খেয়াল রাখার জন্য এ ব্যবস্থা নয়, আমার হবু বরের আদেশ রাস্তায় বেরোতে হলে যেন ওনার থেকে অনুমতি নেওয়া হয় | বাধা নিষেধ আরও আছে, রাস্তায় বেড়ালে কেউ যেন আমার দিকে না তাকায়, কোনো রকম কারুর সাথে কথা বলা বা যোগাযোগ রাখা কোনো রকমে বরদাস্ত নয় | এই তো সেদিন আমার ছোটো বেলার একটা বন্ধুর সাথে হঠাৎ দেখা হওয়ায় দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম, কথা শুরুর আগেই কোথা থেকে রাঘব বাবু আমার হাত ধরে টানতে টানতে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে এসে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঠাঁটিয়ে একটা চড়.............
- তোকে বলেছিলাম না, আমায় না জিজ্ঞেস করে কারোর সাথে কথা বলবি না | কে ওই ছেলেটা? কি বলেছিলি কি ওকে আমার নামে?
- ও...... ও..... ও আমার ছোটো বেলার বন্ধু, অনেক দিন পর দেখা হল তাই.........
- ও পুরোনো নাগর, আমায় নিজের কাছে ঘেঁষতে দিস না....... আর এদিকে রাস্তায় পুরোনো নাগরদের সাথে........... তা পালানোর ধান্দা করছিস নাকি? কেনো আমায় দিয়ে চলছে না বুঝি?
- এসব আপনি কি ভাবে কথা বলছেন? আপনার সাথে আমার বিয়ে হতে চলেছে, আর এসব কি বলছেন?
- সেই জন্যই তো অপেক্ষা করছি মামনি | উড়ে নে উড়ে নে, আসবি তো শেষে আমার বিছানায়....... হা হা হা হা |
ওর ওই কথা, নোংরা ইঙ্গিত গুলো দেখে ঘেন্নায় গা গুলিয়ে উঠছিলো | সবকিছুর মাঝে এখনই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে, এরপর কি হবে ভাবতেও পারছি না |
কাকীমাকে বলতে গিয়েছিলাম, ওনার এইসব নোংরা ইঙ্গিত, অভদ্র ব্যবহারের কথা | কিন্তু অতি প্রত্যাশিত ভাবেই কাকু কাকীমা এড়িয়ে গেল | উল্টে আমারই দোষ দিয়ে বলেন...........
- তোরই বা অত কিসের বাপু, বিয়ের ঠিক হয়েছে, বাড়িতে থাক | তা না, এদিক ওদিক ছুকছুক করা গেলো না | কলেজে পড়েছিলি কোন স্যারের পিছনে, পাত্তা পেলি না, এখন আবার ছোটো বেলার কোন না কোন বন্ধু | ঠিক হবে, আমাদের কথা তো শুনলি না, রাঘবই তোকে সামলাতে পারবে |
কাকীমার কথা শুনে একছুট্টে সেদিন ঘরে চলে এসেছিলাম | বেশি কিছু তো কোনো দিনই আশা করিনি, তাই বলে মানুষ হিসেবে সামান্য সম্মান টুকুও কি আমার প্রাপ্য নয়?
স্যারের সাথে পরিচয় হয়ে মনে হয়েছিলো, পৃথিবীতে এখনও কিছু ভালো মানুষ আছে যারা অন্যের জন্য ভাবে | কিন্তু সবকিছু জানা সত্ত্বেও যখন ওনাকেও রুপসাদির সাথে হাতে হাত রেখে হাঁটতে দেখি, তখন বুঝতে পারি এখনও আমি মানুষ চিনতে শিখিনি |