11-04-2020, 07:46 PM
পর্ব-২৩
সোহাগের চুম্বনে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় স্যামন্তকের বুক, দুহাতে জড়িয়ে আছে বন্দনাকে।
এমন সময়ে ফোনের রিং বাজে “কিরে তোরা কি করছিস” পূবালীর গলা অন্য দিকে থেকে।
রিসিভার কানে ধরে স্যামন্তকের চোখের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয় বন্দনা “তোর ভাই আমাকে ছারলে তো আমি কিছু করব।”
হেসে ফেলে পুবালী “ঠিক আসছে বাবা, নিজেদের লাঞ্চ নিজের রুমে খেয়ে নিস। বিকেলে স্যাম যাবো, ওখানে রাতে রাজস্থানি প্রোগ্রাম দেখব।”
“ওকে ডার্লিং” তারপরে জিজ্ঞেস দুষ্টুমি ভরা স্বরে জিজ্ঞেস করে পুবালীকে “তোমার নিশ্চয় খালি বসে নও, শুধু কি আমরা এখানে বেড়াতে এসেছি নাকি?”
“ভাই কি ঘুমোচ্ছে?” জিজ্ঞেস করে পুবালী।
স্যামন্তক তখন বন্দনার নগ্ন পিঠের ওপরে আঙ্গুল বোলাচ্ছে, ঠোঁটে একটি চুমু খেয়ে পুবালীকে উত্তর দেয় “হ্যাঁ ঘুমিয়ে পড়েছে, কেন বলতো?” বন্দনার খুব ইচ্ছে করছিল পুবালীর কথা শোনার, জানে যে যদি বলে যে স্যামন্তক জেগে তাহলে ওদের কেলির কথা শুনতে পাবে না, তাই মিথ্যে কথা বলে।
“উফ আর বলিস না। ঘরে ঢুকে আমাকে সেই যে নিয়ে পড়েছে এই উঠলাম।” চোখ বড় বড় হয়ে স্যামন্তকের দিকে দেখে বন্দনা যেন বলতে চাইছে দেখেছ তোমার দিদি কম যায় না। স্যামন্তক খুকখুক করে কেশে ওঠে, জানান দেয় দিদিকে যে ঘুমোয়নি ও। কাশি শুনে লজ্জায় পরে যায় পুবালী “কিরে ভাই তো জেগে, তুই আমাকে মিথ্যে কথা বললি, দাঁড়া পরে দেখাচ্ছি।”
স্যামন্তকের বুকের ওপরে শুয়েশুয়েই, ফোনে দুপুরের খাবারের অর্ডার দিয়ে দিল বন্দনা। কিছুক্ষণের মধ্যে খাবার চলে এলো, দরজা খোলার আগে কোনরকমে কিছু একটা পরে নিল ওরা, খেয়ে দেয়ে আর একচোট পাগলামি করে দুজনে ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে।
বন্দনা চোখ খুলে দেখে যে সূর্য ধিরে ধিরে পাটে বসার তৈরি করছে। এবারে নিজেদের ঠিকঠাক করে বের হওয়া উচিৎ, অনেক হল। পেটের ওপর থেকে স্যামন্তকের ভারী হাতখানা সরিয়ে দিয়ে বাথরুম ঢুকে তৈরি হয়ে নেয়।
তারপরে ধাক্কা দিয়ে স্যামন্তককে উঠিয়ে বলে “কিগো, যাবে না?”
“হুম, তুমি কখন উঠেছ।”
“এইতো, তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও। আমি দেখি ওরা কি করছে।” বলে বেড়িয়ে যায় বন্দনা। পেছন থেকে তাকিয়ে থাকে স্যামন্তক, বন্দনা একটা ধূসর জিন্স আর কালো টপ পরে, তার ওপরে একটা ধূসর কার্ডিগান চাপিয়ে। শরীরের প্রত্যেক বাঁকের সাথে যেন জিন্স আর টপটি এঁটে বসে। পেছনে তাকিয়ে দেখে, স্যামন্তকের জব দিয়ে আবার জল পড়ছে, হেসে বলে বন্দনা “অনেক হয়েছে, এবারে মার খাবে। তাড়াতাড়ি কর।”
বাইরে বেড়িয়ে দেখে, সিতাভ্র গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। জিজ্ঞেস করে পুবালী কোথায়, পুবালী ওর ঘরে জেনে ঘরের দিকে পা বাড়ায়। কিছুক্ষণের পরে সবাই বেড়িয়ে পরে স্যাম মরুভুমিরে দিকে। হোটেলের ম্যানেজার ব্যাবস্থা করে দিয়েছিল স্যামের রাজস্থানি নাচ দেখার।
স্যামে গিয়ে আগে ওরা উঠের পিঠে চড়ে। তারপরে দুরে একসারি তাঁবুর দিকে রওনা হয়, ওর মাঝে কোনো একটা জায়গায় ওদের রাতের খাবার ব্যাবস্থা আর রাজস্থানি প্রোগ্রাম দেখার ব্যাবস্থা। সূর্য কিছুক্ষণ আগে ডুবে গেছে, কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে মরুভুমির ওপর দিয়ে। দুই বান্ধবী হাতে হাত দিয়ে এগিয়ে চলেছে গল্প করতে করতে, পেছনে স্যামন্তক আর সিতাভ্র, গাড়ি থেকে যথারীতি দু ক্যান বিয়ার গলায় ঢালছে। কি করবে এই ঠাণ্ডায় গা গরম তো কিছু করে হোক করতে হবে।
ওদের জন্য আগে থেকে ঠিক করা একটি তাঁবুর সারির মাঝে ঢুকে পরে। চারদিকে ছোটো ছোটো তাঁবু খাটানো, কেউ কেউ নাকি রাতে মরুভুমির মাঝে রাত কাটায়। মাঝখানে একটা জায়গায়, বেশ খানিকটা কাঠ রাখা, মনে হয় রাত বাড়লে বা প্রোগ্রাম শুরু হলে এখানে আগুন জ্বালানো হবে। নিচে মাটিতে জাজিম পাতা, তার ওপরে ওরা বসে পরে। কিছুক্ষণ পরে জ্বলে ওঠে কাঠ, ইংরাজি নাম বনফায়ার, বন তো নেই তবে কনকনে ঠাণ্ডায় আর প্রিয়তমার শরীরের উষ্ণতায় ফায়ার ঠিক আছে। কিছুক্ষণ পরে শুরু হয়, রাজস্থানি মেয়েদের নাচ আর গান। বেশ সুন্দর লাগে জাতিগত রাজস্থানি প্রথার নাচ আর গান। যে মেয়েটা নাচছিল, তাকে দেখে দুই বান্ধবীর মনে হয় যেন আমরা একটু নাচি, কিন্তু অত গুলো লোকের সামনে নাচা তাও আবার কত্থক, ঠিক জমবে না।
পুবালী একবার বন্দনার দিকে তাকিয়ে বলে “কিরে নাচবি নাকি?”
“না বাবা এখানে নয়” হেসে বলে বন্দনা।
সিতাভ্র পুবালীর কানে কানে জিজ্ঞেস করে “কি গো, রাতে থাকবে নাকি তাঁবুতে। বল তো একবার কথা বলে দেখতে পারি।”
মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায় পুবালী, এক নতুন অভিজ্ঞতা হবে রাতে মরুভুমির মাঝে রাত কাটানোর। গলা বাড়িয়ে বন্দনাকে প্রশ্ন করে “কিরে রাতে এখানে থাকবি?” বন্দনা সায় দেয়।
সিতাভ্র উঠে তাঁবুর পরিচালকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে যে রাতে থাকার ব্যাবস্থা কি, উত্তরে জানায় যে একটা বড় তাবু খালি আছে তাতে চারজনে থাকতে পারে। সেটা শুনে একসাথে স্যামন্তক আর পুবালী চিৎকার করে ওঠে, না না একদম না।
স্যামন্তক বলে “তুমি তোমার বউ নিয়ে থাকো আমি থাকছি না।”
“তোমার মাথা খারাপ নাকি? তোমার নিজের কোন ঠিক নেই কখন কি করে বসবে আর ভাইয়ের সাথে এক তাঁবুতে কখন না।” জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে জানান দেয় পুবালী।
“ওকে দেন উই গো ব্যাক।” সিতাভ্র বলল।
বন্দনার কেমন যেন একটু মন খারাপ হয়ে গেল, সিতাভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল “কি রকম আমার কপাল দেখো, এই কিনা মজা করতে এলাম আর ভাই বোনে মিলে বাধা দিয়ে দিলো।”
স্যামন্তক ক্ষেপে গিয়ে বলল “চলো হোটেলে তোমার কত মজা আর বাকি আছে আমি দেখিয়ে দেব।”
সিতাভ্র বলল “ওকে, উই ক্যান ডু ওয়ান থিং। পরশু রাতে শুধু আমরা চারজনে মিলে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাবো এই মরুভুমির মাঝে। আমরা নিজেরাই করবো নিজেদের মতন করে বনফায়ার আর মজা।”
পুবালী দেখল ওর কিছুই করার নেই, বলল “ঠিক আছে।” রাতে বাইরে খেয়ে ওরা হোটেলে ফিরে গেল।
পরদিন সকালে উঠে, কেল্লা দেখতে যাওয়া, তারপরে লেক দেখা আর আসেপাসের হাভেলি গুলো দেখা। কেল্লার ওপর থেকে দুরে রেল লাইন দেখা যায়। কেল্লার ভেতরে একটি মন্দির আছে, স্যামন্তক মন্দিরে দাঁড়িয়ে বন্দনা কে বলে “বনা, চল একটু ফিল্মি ইস্টাইল মারি, বুড়ো আঙ্গুল কেটে বেশ বিয়ে করে ফেলি আমরা। দুই প্রান এক হয়ে যাক আমাদের।”
“আদিখ্যেতা দেখো ছেলের। অনেক হয়েছে স্টাইল মারা তার চেয়ে এক কাজ কর, গাড়ি চালান টা ভালো করে শেখ। প্রান হাতে নিয়ে পাশে বসে ছিলাম আমি।” হেসে বলে বন্দনা।
“কিরে কার বিয়ে করার শখ জেগেছে?” পুবালী স্যামন্তকের দিকে দেখে বলে “তোর?”
“বাঃ রে, বিয়ে না করে একসাথে থাকবো কি করে।” বন্দনা কে জড়িয়ে ধরে বলে “এই তো ফিরে গেলে ও আবার চলে যাবে কোলকাতা।” শুনে একটু মন খারাপ হয়ে যায় বন্দনার, হ্যাঁ ফিরে তো যেতেই হবে।
“ওকে বাবা, ব্যাস একটু সবুর কর সব ঠিক করে দেব।” ভাইয়ের মাথায় চাঁটি মেরে উত্তর দেয় পুবালী।
বেশ হইহুল্লরে কেটে যায় সারাদিন। ফাঁকা রাস্তা ঘাট, ছোট্ট শহর যেন মরুভুমির মাঝে ছোট্ট একটি মরুদ্যান।
পরদিন সকাল বেলা ঠিক করা হল যে বর্ডার দেখতে যাবে, লোকজনের কাছ থেকে রাস্তা জিজ্ঞেস করে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরে চারজনে। কিছুদুর গিয়ে ধুধু করা বালিচরের মাঝ দিয়ে রাস্তা এগিয়ে গিয়েছে। শীতকাল ধুত, কে বলবে রোদের তেজ দেখে। গাড়ি যেন হাওয়ার সাথে দৌর লাগিয়েছে। দুপাশে বালির উঁচু উঁচু পাহাড়, মাঝখানে সরু কালো পিচের রাস্তা, যেন ঠিক দিগন্তের ঢালে গিয়ে নেমে গেছে। কিছু দুর যাওয়ার পরে, তপ্ত বালিয়াড়ির মাঝে একটি ছোট্ট গ্রাম দেখতে পায়। মাটির দেওয়াল, চালের খড় গুলো পুড়ে গেছে গরমে আর রোদের তেজে। এটা যেন পৃথিবীর নতুন এক আশ্চর্য শিল্প কলা, মানুষ কোথায় কোথায় না থাকে। গাড়ি দাড় করিয়ে বিস্ময় ভরা নয়নে সবাই দেখে ছোটো গ্রামটাকে। কোথায় বিলাস বহুল তিন রুমের বাতানুকুলিত ফ্লাট আর কোথায় এই তপ্ত মরু মাঝে ছোটো ছোটো এক কামরার ঘর।
গাড়ি দাঁড়িয়ে পরাতেই কয়েকটা ছোটো ছেলে দৌড়ে আসে গাড়ির দিকে। বন্দনা ওদের জিজ্ঞেস করে “কি করে এখানে থাকো? জল কোথায় পাও?”
বর্ডার পুলিসের তৈরি পাশে একটা কুয়ো দেখিয়ে বলে “পানি অখান দিয়ে আসে।”
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, এই মরুভুমির মাঝে জল করে আসতে পারে। ছেলেটা জবাব দেয় “আল্লাহ পানি দেয়। যে রাখার সে ঠিক নিজের সন্তানদের দেখে।”
হ্যাঁ সত্যি কথা, রাখে হরি মারে কে, সেটা বন্দনার চেয়ে এই পৃথিবীতে মনে হয় আর কেউ জানেনা। স্যামন্তকের গা ঘেঁসে বসে জড়িয়ে ধরে হটাৎ করে। ওর মুখের দিকে চেয়ে থাকে, চোখের কোলে একটু খানি জল চলে আসে। এক রকম মরেই তো গেছিল, যদি না দেবমাল্য দেখত আর স্যামন্তক ঠিক সময়ে এসে না নিয়ে যেত ওকে। কি করছে দেবমাল্য? যে ওকে ফেলে পালিয়েছিল তার শাস্তি কি সেই দুরাচারী আত্মা পেয়েছে?
ঐ রকম ভাবে হটাৎ করে জড়িয়ে ধরতেই স্যামন্তক জিজ্ঞেস করে “কি হল তোমার, কুয়ো দেখে?”
“না কিছু না, আমি ভাবছিলাম রাখে হরি মারে কে।” পুবালী আর স্যামন্তক বুঝতে পারল কথাটার মানে।
পুবালী বলল “অতীত ভুলে বর্তমান আর ভবিষ্যতের দিকে চোখ মেলে তাকা।”
আলতো করে স্যামন্তকের গালে চুমু খায় বন্দনা বলে “হ্যাঁ একরকম সব কিছু ভুলেই বসেছি, সব তো এই পাগলের জন্য, না হলে কি যে হত। হয়তো আবার হারিয়ে যেতাম আমি।”
“আমি হারিয়ে যেতে দিতাম না তোমাকে।”
সিতাভ্র প্রেমালাপ গুলো বেশ মন দিয়ে শুনছিল, ঠিক সেইসময়ে বলে “তোমরা তো জানোনা আমার বউ এক সময়ে প্রেম করেছিল। ব্যাস আর কি, মাঝখান থেকে আমি এসে চুরি করে নিয়ে পালালাম।”
সিতাভ্রর কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ল বন্দনা আর স্যামন্তক। এত ভালো বান্ধবী হয়েও জানেনা কে তার প্রেমিকা আর কিনা ওর স্বামী জানে?
পুবালী মারতে শুরু করে দেয় সিতাভ্রকে “ছাড়ো ওইসব কথা, তোমাকে বলেছি বলে কি হাটে হাড়ি ভেঙে দেবে।”
সেইজন্য তো এত ভালবাসে সিতাভ্র পুবালীকে, বিয়ের আগে প্রথম যেদিন দুজনে একসাথে বেড়াতে বের হয়, দুর্গাপুর ব্যারেজের দিকে, সেইদিন বলেছিল পুবালী নিজের পুরনো প্রেমের কথা, ও চায়নি যে ওর অতীত নিয়ে কোনদিন ওর স্বামী ওকে প্রশ্ন করুক। সেদিনের সব কথা শুনে একটু খানি দমে গেছিল সিতাভ্র, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ছিল চুপ করে। পুবালী ওর সেই ভালোবাসার কথা বলে ছিল, বলেছিল যে বাবা মার অমত আর পরের দিকে নিজের ইচ্ছে টুকু ছিল না, তাই সেই প্রেম কেটে যায়। এই অকাট সত্য কথা শুনে, মনের মধ্যে সেই দিন গভীর ভাবে ভালবেসে ফেলেছিল পুবালীকে। তাই তো যখন পুবালী ওকে বলল যে দেরাদুনে ট্রান্সফার না নিয়ে দিল্লীতে ট্রান্সফার নিতে এক কথায় রাজী হয়ে গেছিল। ও জানে বন্দনা আর স্যামন্তক কের মাঝে পারিবারিক অসামঞ্জস্য নিয়ে কথা উঠবে, কথা উঠবে যে মেয়ে ছেলের চেয়ে বয়সে বড়। হয়তো যেটা পুবালী পারেনি, সেটা সিতাভ্র ওর শালার চোখে দেখতে চায়না।
বন্দনা জিজ্ঞেস করে পুবালী কে “নামটা জানতে পারি কি?”
সিতাভ্র বন্দনার কথা শুনে অবাক “কি? তুমি জানো না? হতেই পারেনা। আমি তো ভাবলাম যে তুমি জানো।”
“না আমি ঠিক জানিনা।”
“যে তোমাকে সেদিন রাতে বাঁচিয়েছিল, সে।”
ডিসেম্বরে দিল্লী থেকে চলে আসার পরে, বন্দনা রাত গুলো অনেক বড় মনে হত। খালি মনে হত যেন ছুটে যায় স্যামন্তকের কাছে। আসার দিন মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছিল, সারা দিন স্যামন্তককে জড়িয়ে ধরে বসেছিল, থেকে থেকে মনে হচ্ছিল যেন বিকেল কখন না আসে। কিন্তু সময় পেড়িয়ে যায়, চলে আসতে হয় ওকে। একটু কান্না পেয়েছিল ওর তবে কাঁদে নি। স্যামন্তক কাঁদতে বারণ করেছিল, বলেছিল যে রোজ দিন ফোন করবে।
চলবে....
সোহাগের চুম্বনে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় স্যামন্তকের বুক, দুহাতে জড়িয়ে আছে বন্দনাকে।
এমন সময়ে ফোনের রিং বাজে “কিরে তোরা কি করছিস” পূবালীর গলা অন্য দিকে থেকে।
রিসিভার কানে ধরে স্যামন্তকের চোখের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয় বন্দনা “তোর ভাই আমাকে ছারলে তো আমি কিছু করব।”
হেসে ফেলে পুবালী “ঠিক আসছে বাবা, নিজেদের লাঞ্চ নিজের রুমে খেয়ে নিস। বিকেলে স্যাম যাবো, ওখানে রাতে রাজস্থানি প্রোগ্রাম দেখব।”
“ওকে ডার্লিং” তারপরে জিজ্ঞেস দুষ্টুমি ভরা স্বরে জিজ্ঞেস করে পুবালীকে “তোমার নিশ্চয় খালি বসে নও, শুধু কি আমরা এখানে বেড়াতে এসেছি নাকি?”
“ভাই কি ঘুমোচ্ছে?” জিজ্ঞেস করে পুবালী।
স্যামন্তক তখন বন্দনার নগ্ন পিঠের ওপরে আঙ্গুল বোলাচ্ছে, ঠোঁটে একটি চুমু খেয়ে পুবালীকে উত্তর দেয় “হ্যাঁ ঘুমিয়ে পড়েছে, কেন বলতো?” বন্দনার খুব ইচ্ছে করছিল পুবালীর কথা শোনার, জানে যে যদি বলে যে স্যামন্তক জেগে তাহলে ওদের কেলির কথা শুনতে পাবে না, তাই মিথ্যে কথা বলে।
“উফ আর বলিস না। ঘরে ঢুকে আমাকে সেই যে নিয়ে পড়েছে এই উঠলাম।” চোখ বড় বড় হয়ে স্যামন্তকের দিকে দেখে বন্দনা যেন বলতে চাইছে দেখেছ তোমার দিদি কম যায় না। স্যামন্তক খুকখুক করে কেশে ওঠে, জানান দেয় দিদিকে যে ঘুমোয়নি ও। কাশি শুনে লজ্জায় পরে যায় পুবালী “কিরে ভাই তো জেগে, তুই আমাকে মিথ্যে কথা বললি, দাঁড়া পরে দেখাচ্ছি।”
স্যামন্তকের বুকের ওপরে শুয়েশুয়েই, ফোনে দুপুরের খাবারের অর্ডার দিয়ে দিল বন্দনা। কিছুক্ষণের মধ্যে খাবার চলে এলো, দরজা খোলার আগে কোনরকমে কিছু একটা পরে নিল ওরা, খেয়ে দেয়ে আর একচোট পাগলামি করে দুজনে ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে।
বন্দনা চোখ খুলে দেখে যে সূর্য ধিরে ধিরে পাটে বসার তৈরি করছে। এবারে নিজেদের ঠিকঠাক করে বের হওয়া উচিৎ, অনেক হল। পেটের ওপর থেকে স্যামন্তকের ভারী হাতখানা সরিয়ে দিয়ে বাথরুম ঢুকে তৈরি হয়ে নেয়।
তারপরে ধাক্কা দিয়ে স্যামন্তককে উঠিয়ে বলে “কিগো, যাবে না?”
“হুম, তুমি কখন উঠেছ।”
“এইতো, তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও। আমি দেখি ওরা কি করছে।” বলে বেড়িয়ে যায় বন্দনা। পেছন থেকে তাকিয়ে থাকে স্যামন্তক, বন্দনা একটা ধূসর জিন্স আর কালো টপ পরে, তার ওপরে একটা ধূসর কার্ডিগান চাপিয়ে। শরীরের প্রত্যেক বাঁকের সাথে যেন জিন্স আর টপটি এঁটে বসে। পেছনে তাকিয়ে দেখে, স্যামন্তকের জব দিয়ে আবার জল পড়ছে, হেসে বলে বন্দনা “অনেক হয়েছে, এবারে মার খাবে। তাড়াতাড়ি কর।”
বাইরে বেড়িয়ে দেখে, সিতাভ্র গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। জিজ্ঞেস করে পুবালী কোথায়, পুবালী ওর ঘরে জেনে ঘরের দিকে পা বাড়ায়। কিছুক্ষণের পরে সবাই বেড়িয়ে পরে স্যাম মরুভুমিরে দিকে। হোটেলের ম্যানেজার ব্যাবস্থা করে দিয়েছিল স্যামের রাজস্থানি নাচ দেখার।
স্যামে গিয়ে আগে ওরা উঠের পিঠে চড়ে। তারপরে দুরে একসারি তাঁবুর দিকে রওনা হয়, ওর মাঝে কোনো একটা জায়গায় ওদের রাতের খাবার ব্যাবস্থা আর রাজস্থানি প্রোগ্রাম দেখার ব্যাবস্থা। সূর্য কিছুক্ষণ আগে ডুবে গেছে, কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে মরুভুমির ওপর দিয়ে। দুই বান্ধবী হাতে হাত দিয়ে এগিয়ে চলেছে গল্প করতে করতে, পেছনে স্যামন্তক আর সিতাভ্র, গাড়ি থেকে যথারীতি দু ক্যান বিয়ার গলায় ঢালছে। কি করবে এই ঠাণ্ডায় গা গরম তো কিছু করে হোক করতে হবে।
ওদের জন্য আগে থেকে ঠিক করা একটি তাঁবুর সারির মাঝে ঢুকে পরে। চারদিকে ছোটো ছোটো তাঁবু খাটানো, কেউ কেউ নাকি রাতে মরুভুমির মাঝে রাত কাটায়। মাঝখানে একটা জায়গায়, বেশ খানিকটা কাঠ রাখা, মনে হয় রাত বাড়লে বা প্রোগ্রাম শুরু হলে এখানে আগুন জ্বালানো হবে। নিচে মাটিতে জাজিম পাতা, তার ওপরে ওরা বসে পরে। কিছুক্ষণ পরে জ্বলে ওঠে কাঠ, ইংরাজি নাম বনফায়ার, বন তো নেই তবে কনকনে ঠাণ্ডায় আর প্রিয়তমার শরীরের উষ্ণতায় ফায়ার ঠিক আছে। কিছুক্ষণ পরে শুরু হয়, রাজস্থানি মেয়েদের নাচ আর গান। বেশ সুন্দর লাগে জাতিগত রাজস্থানি প্রথার নাচ আর গান। যে মেয়েটা নাচছিল, তাকে দেখে দুই বান্ধবীর মনে হয় যেন আমরা একটু নাচি, কিন্তু অত গুলো লোকের সামনে নাচা তাও আবার কত্থক, ঠিক জমবে না।
পুবালী একবার বন্দনার দিকে তাকিয়ে বলে “কিরে নাচবি নাকি?”
“না বাবা এখানে নয়” হেসে বলে বন্দনা।
সিতাভ্র পুবালীর কানে কানে জিজ্ঞেস করে “কি গো, রাতে থাকবে নাকি তাঁবুতে। বল তো একবার কথা বলে দেখতে পারি।”
মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায় পুবালী, এক নতুন অভিজ্ঞতা হবে রাতে মরুভুমির মাঝে রাত কাটানোর। গলা বাড়িয়ে বন্দনাকে প্রশ্ন করে “কিরে রাতে এখানে থাকবি?” বন্দনা সায় দেয়।
সিতাভ্র উঠে তাঁবুর পরিচালকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে যে রাতে থাকার ব্যাবস্থা কি, উত্তরে জানায় যে একটা বড় তাবু খালি আছে তাতে চারজনে থাকতে পারে। সেটা শুনে একসাথে স্যামন্তক আর পুবালী চিৎকার করে ওঠে, না না একদম না।
স্যামন্তক বলে “তুমি তোমার বউ নিয়ে থাকো আমি থাকছি না।”
“তোমার মাথা খারাপ নাকি? তোমার নিজের কোন ঠিক নেই কখন কি করে বসবে আর ভাইয়ের সাথে এক তাঁবুতে কখন না।” জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে জানান দেয় পুবালী।
“ওকে দেন উই গো ব্যাক।” সিতাভ্র বলল।
বন্দনার কেমন যেন একটু মন খারাপ হয়ে গেল, সিতাভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল “কি রকম আমার কপাল দেখো, এই কিনা মজা করতে এলাম আর ভাই বোনে মিলে বাধা দিয়ে দিলো।”
স্যামন্তক ক্ষেপে গিয়ে বলল “চলো হোটেলে তোমার কত মজা আর বাকি আছে আমি দেখিয়ে দেব।”
সিতাভ্র বলল “ওকে, উই ক্যান ডু ওয়ান থিং। পরশু রাতে শুধু আমরা চারজনে মিলে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাবো এই মরুভুমির মাঝে। আমরা নিজেরাই করবো নিজেদের মতন করে বনফায়ার আর মজা।”
পুবালী দেখল ওর কিছুই করার নেই, বলল “ঠিক আছে।” রাতে বাইরে খেয়ে ওরা হোটেলে ফিরে গেল।
পরদিন সকালে উঠে, কেল্লা দেখতে যাওয়া, তারপরে লেক দেখা আর আসেপাসের হাভেলি গুলো দেখা। কেল্লার ওপর থেকে দুরে রেল লাইন দেখা যায়। কেল্লার ভেতরে একটি মন্দির আছে, স্যামন্তক মন্দিরে দাঁড়িয়ে বন্দনা কে বলে “বনা, চল একটু ফিল্মি ইস্টাইল মারি, বুড়ো আঙ্গুল কেটে বেশ বিয়ে করে ফেলি আমরা। দুই প্রান এক হয়ে যাক আমাদের।”
“আদিখ্যেতা দেখো ছেলের। অনেক হয়েছে স্টাইল মারা তার চেয়ে এক কাজ কর, গাড়ি চালান টা ভালো করে শেখ। প্রান হাতে নিয়ে পাশে বসে ছিলাম আমি।” হেসে বলে বন্দনা।
“কিরে কার বিয়ে করার শখ জেগেছে?” পুবালী স্যামন্তকের দিকে দেখে বলে “তোর?”
“বাঃ রে, বিয়ে না করে একসাথে থাকবো কি করে।” বন্দনা কে জড়িয়ে ধরে বলে “এই তো ফিরে গেলে ও আবার চলে যাবে কোলকাতা।” শুনে একটু মন খারাপ হয়ে যায় বন্দনার, হ্যাঁ ফিরে তো যেতেই হবে।
“ওকে বাবা, ব্যাস একটু সবুর কর সব ঠিক করে দেব।” ভাইয়ের মাথায় চাঁটি মেরে উত্তর দেয় পুবালী।
বেশ হইহুল্লরে কেটে যায় সারাদিন। ফাঁকা রাস্তা ঘাট, ছোট্ট শহর যেন মরুভুমির মাঝে ছোট্ট একটি মরুদ্যান।
পরদিন সকাল বেলা ঠিক করা হল যে বর্ডার দেখতে যাবে, লোকজনের কাছ থেকে রাস্তা জিজ্ঞেস করে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরে চারজনে। কিছুদুর গিয়ে ধুধু করা বালিচরের মাঝ দিয়ে রাস্তা এগিয়ে গিয়েছে। শীতকাল ধুত, কে বলবে রোদের তেজ দেখে। গাড়ি যেন হাওয়ার সাথে দৌর লাগিয়েছে। দুপাশে বালির উঁচু উঁচু পাহাড়, মাঝখানে সরু কালো পিচের রাস্তা, যেন ঠিক দিগন্তের ঢালে গিয়ে নেমে গেছে। কিছু দুর যাওয়ার পরে, তপ্ত বালিয়াড়ির মাঝে একটি ছোট্ট গ্রাম দেখতে পায়। মাটির দেওয়াল, চালের খড় গুলো পুড়ে গেছে গরমে আর রোদের তেজে। এটা যেন পৃথিবীর নতুন এক আশ্চর্য শিল্প কলা, মানুষ কোথায় কোথায় না থাকে। গাড়ি দাড় করিয়ে বিস্ময় ভরা নয়নে সবাই দেখে ছোটো গ্রামটাকে। কোথায় বিলাস বহুল তিন রুমের বাতানুকুলিত ফ্লাট আর কোথায় এই তপ্ত মরু মাঝে ছোটো ছোটো এক কামরার ঘর।
গাড়ি দাঁড়িয়ে পরাতেই কয়েকটা ছোটো ছেলে দৌড়ে আসে গাড়ির দিকে। বন্দনা ওদের জিজ্ঞেস করে “কি করে এখানে থাকো? জল কোথায় পাও?”
বর্ডার পুলিসের তৈরি পাশে একটা কুয়ো দেখিয়ে বলে “পানি অখান দিয়ে আসে।”
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, এই মরুভুমির মাঝে জল করে আসতে পারে। ছেলেটা জবাব দেয় “আল্লাহ পানি দেয়। যে রাখার সে ঠিক নিজের সন্তানদের দেখে।”
হ্যাঁ সত্যি কথা, রাখে হরি মারে কে, সেটা বন্দনার চেয়ে এই পৃথিবীতে মনে হয় আর কেউ জানেনা। স্যামন্তকের গা ঘেঁসে বসে জড়িয়ে ধরে হটাৎ করে। ওর মুখের দিকে চেয়ে থাকে, চোখের কোলে একটু খানি জল চলে আসে। এক রকম মরেই তো গেছিল, যদি না দেবমাল্য দেখত আর স্যামন্তক ঠিক সময়ে এসে না নিয়ে যেত ওকে। কি করছে দেবমাল্য? যে ওকে ফেলে পালিয়েছিল তার শাস্তি কি সেই দুরাচারী আত্মা পেয়েছে?
ঐ রকম ভাবে হটাৎ করে জড়িয়ে ধরতেই স্যামন্তক জিজ্ঞেস করে “কি হল তোমার, কুয়ো দেখে?”
“না কিছু না, আমি ভাবছিলাম রাখে হরি মারে কে।” পুবালী আর স্যামন্তক বুঝতে পারল কথাটার মানে।
পুবালী বলল “অতীত ভুলে বর্তমান আর ভবিষ্যতের দিকে চোখ মেলে তাকা।”
আলতো করে স্যামন্তকের গালে চুমু খায় বন্দনা বলে “হ্যাঁ একরকম সব কিছু ভুলেই বসেছি, সব তো এই পাগলের জন্য, না হলে কি যে হত। হয়তো আবার হারিয়ে যেতাম আমি।”
“আমি হারিয়ে যেতে দিতাম না তোমাকে।”
সিতাভ্র প্রেমালাপ গুলো বেশ মন দিয়ে শুনছিল, ঠিক সেইসময়ে বলে “তোমরা তো জানোনা আমার বউ এক সময়ে প্রেম করেছিল। ব্যাস আর কি, মাঝখান থেকে আমি এসে চুরি করে নিয়ে পালালাম।”
সিতাভ্রর কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ল বন্দনা আর স্যামন্তক। এত ভালো বান্ধবী হয়েও জানেনা কে তার প্রেমিকা আর কিনা ওর স্বামী জানে?
পুবালী মারতে শুরু করে দেয় সিতাভ্রকে “ছাড়ো ওইসব কথা, তোমাকে বলেছি বলে কি হাটে হাড়ি ভেঙে দেবে।”
সেইজন্য তো এত ভালবাসে সিতাভ্র পুবালীকে, বিয়ের আগে প্রথম যেদিন দুজনে একসাথে বেড়াতে বের হয়, দুর্গাপুর ব্যারেজের দিকে, সেইদিন বলেছিল পুবালী নিজের পুরনো প্রেমের কথা, ও চায়নি যে ওর অতীত নিয়ে কোনদিন ওর স্বামী ওকে প্রশ্ন করুক। সেদিনের সব কথা শুনে একটু খানি দমে গেছিল সিতাভ্র, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ছিল চুপ করে। পুবালী ওর সেই ভালোবাসার কথা বলে ছিল, বলেছিল যে বাবা মার অমত আর পরের দিকে নিজের ইচ্ছে টুকু ছিল না, তাই সেই প্রেম কেটে যায়। এই অকাট সত্য কথা শুনে, মনের মধ্যে সেই দিন গভীর ভাবে ভালবেসে ফেলেছিল পুবালীকে। তাই তো যখন পুবালী ওকে বলল যে দেরাদুনে ট্রান্সফার না নিয়ে দিল্লীতে ট্রান্সফার নিতে এক কথায় রাজী হয়ে গেছিল। ও জানে বন্দনা আর স্যামন্তক কের মাঝে পারিবারিক অসামঞ্জস্য নিয়ে কথা উঠবে, কথা উঠবে যে মেয়ে ছেলের চেয়ে বয়সে বড়। হয়তো যেটা পুবালী পারেনি, সেটা সিতাভ্র ওর শালার চোখে দেখতে চায়না।
বন্দনা জিজ্ঞেস করে পুবালী কে “নামটা জানতে পারি কি?”
সিতাভ্র বন্দনার কথা শুনে অবাক “কি? তুমি জানো না? হতেই পারেনা। আমি তো ভাবলাম যে তুমি জানো।”
“না আমি ঠিক জানিনা।”
“যে তোমাকে সেদিন রাতে বাঁচিয়েছিল, সে।”
ডিসেম্বরে দিল্লী থেকে চলে আসার পরে, বন্দনা রাত গুলো অনেক বড় মনে হত। খালি মনে হত যেন ছুটে যায় স্যামন্তকের কাছে। আসার দিন মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছিল, সারা দিন স্যামন্তককে জড়িয়ে ধরে বসেছিল, থেকে থেকে মনে হচ্ছিল যেন বিকেল কখন না আসে। কিন্তু সময় পেড়িয়ে যায়, চলে আসতে হয় ওকে। একটু কান্না পেয়েছিল ওর তবে কাঁদে নি। স্যামন্তক কাঁদতে বারণ করেছিল, বলেছিল যে রোজ দিন ফোন করবে।
চলবে....