08-04-2020, 10:45 PM
[৮৮]
সন্ধ্যার পাতলা চাদর সরিয়ে অন্ধকার গাঢ় হয়।কোথায় যাচ্ছে যশ? পল্টু চুপ করে বসে যশের কাণ্ড দেখতে থাকে।গাড়ী বাক নিচ্ছে পল্টু আশ্বস্থ হয় এবার বাড়ীর দিকে যাবে।যশ সামনের দিকে তাকিয়ে বলল,অঙ্গন তুমি ড্রাইভিংটা শিখে নেও।
--দরকার নেই তুমি তো শিখেছ।
যশ হাসল বলল,আমি চালাবো আর তুমি শুধু চড়বে?
--তুমি না থাকলে কি যে হতো।
আবার পুরানো কথা।ঘুরে ফিরে সেই কথা টেনে আনছে।যশ একটু ভেবে বলল,ঠিক আছে আমি চালাবো যেদিকে ইচ্ছে হবে তুমি কিছু বলতে পারবে না--প্রমিশ?
--এতক্ষন কিছু বলেছি?
--ওকে গুড বয়।বা-হাতে অঙ্গনের মাথা টেনে চুমু খেলো।
মিতা মাসীর কাজ সারা ছোড়দা ফেরার অপেক্ষায়।ছোড়দার এই বউটা ছোড়দারে মনে করে বাচ্চা। আগের বউ হলে না হয় আলাদা এই বউয়ের বয়স তো বেশী না।নীচে গাড়ীর শব্দ শুনে বারান্দায় গেল।হ্যা ফিরেছে,কিছুই তো কেনে নাই তাইলে গেছিল কোথায়?
যশ উপরে এসেই জিজ্ঞেস করে,মুন্না ডিস্টার্ব করেনি তো।
বলতে না বলতেই ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ আসে।যশ বলল,কত সেয়ানা দেখো আওয়াজ পেয়েই ব্যাটা চিল্লাচ্ছে।যশ ঘরে গিয়ে মুন্না কোলে নিয়ে স্তন বের করে মুখে গুজে দিল।
--ছোড়দা আমি আসি?মিতামাসী জিজ্ঞেস করে।
পল্টূ ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,মাসী চলে যাবে?
--হ্যা হ্যা মৌসীকে ছেড়ে দাও কাল সকাল সকাল আসতে বোলো।
পল্টু বেরিয়ে বলল,মাসী তুমি যাও।কাল সকাল সকাল এসো।
মিতা মাসী শুনেছে বৌদির কথা ছোড়দা সেই কথাগুলোই বলল।বাপের মত বড় ডাক্তার হয়েছে, যখন মা ছিল তখন ছিল মা ন্যাওটা এখন হয়েছে বউ ন্যাওটা।
মুন্নাকে শুইয়ে দিয়ে যশ টেবিলে খাবার দাবার প্লেট সাজাতে থাকে।অঙ্গন বোতল নিয়ে আসতে যশ হেসে বলল,তোমার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে।
--অল্প একটু?
--ওকে ডার্লিং।
পানাহারের পর শুয়ে পড়ল।যশ বিন্দার চিত হয়ে শুয়ে অঙ্গনের মাথাটা বুকে তুলে নিল।পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে জিজ্ঞেস করে,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?সাচ বলতে পারলে বলবে?
অঙ্গন উপুড় হয়ে যশকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করল,তোমাকে কি মিথ্যে বলেছি?
--এখন একটা সিরিয়াস কথা জিজ্ঞেস করব।জাস্ট কিউরিওসিটি।
--আচ্ছা বলো।
--আমাকে তোমার পছন্দ হয়েছে নাকি মজবুরি?
অঙ্গনকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল,আমাদের সাদি হয়ে গেছে।এখন কিছু যায় আসেনা।
--তোমাকে প্রথম দিল্লীতে দেখে তোমার ব্যবহার খুব ভাল লেগেছিল--।
--সিরিফ ব্যবহার?
--কথা শেষ করতে দাও।
--স্যরি বলো বলো।
--তুমি বাঙালী নও তবু মনে হয়েছিল আমার আপনার জন।মনে অনেক ইচ্ছেই হয় কিন্তু সব সময় সব ইচ্ছে প্রকাশ করা যায় না।দমন করতে হয়।
--তোমার বউ ছিল আমাকে বলোনি।
--তখনও আমাদের বিয়ে হয়নি কিন্তু অঞ্জনা আমার বউয়ের চেয়েও কাছের মানুষ ছিল।
--জবরদস্তি করেছি তখন রাগ হয়েছিল?
--রাগ হয়নি কষ্ট হয়েছিল।
--কষ্ট কেন?
-- প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব না তোমার কথা ভেবে কষ্ট হচ্ছিল।
যশ বিন্দার বুকের উপর অঙ্গনকে চেপে ধরল।মনে মনে ভাবে গড আমার আশা পূরণ করেছে।একসময় বলল,জানো অঙ্গন কলকাতায় আমি তোমার জন্য আসিনি।প্রাজীরা এমন পিছে লাগল ভাগতে ভাগতে জানিনা সাব কনসাসলি তোমার কথা ভেবেছিলাম কিনা,কলকাতায় চলে এলাম।
--তখন কোনো কিছু ভাবার মত অবস্থা ছিলনা, কিছুটা বাধ্য হয়ে তোমাকে মেনে নিলেও যশ এখন তুমি ছাড়া আমি অসহায়।আমার মাকে হারালাম অঞ্জনাকেও কি যে অবস্থা তোমাকে কি বলব--।
--কিছু বলতে হবে না জান, মাইজীর লাড় প্যার বিবির মহব্বত সব আমি দিব কোনো কিছু খামতি রাখব না।অঙ্গনের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে থাকে যেমন সন্তানকে মা আদর করে।বুকে বড় বড় শ্বাস পড়ে যশ বিন্দার বুঝতে পারে ঘুমিয়ে পড়েছে।আলতো করে মাথাটা বালিশের উপর নামিয়ে দিল।
মিতা মাসী কলিং বেল টিপছে ফোন বাজছে কোনো সাড়া শব্দ নেই।কি হল?এরকম তো কোনোদিন হয়না।কলিং বেল চেপে রাখে।
--আসছি আসছি।যশ সাড়া দিল।অনেক রাত করে ঘুমিয়েছে,ধড়ফড় করে উঠে বসে।
ঘর থেকে বেরিয়ে দরজা খুলবে নাকি ফোন ধরবে এক্মুহূর্ত ভেবে দরজা খুলে দিল।ফোন বন্ধ হয়ে গেছে।
--আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।মিতা ঢুকে বলল।
--ঘুমোতে অনেক রাত হয়ে গেছিল।লজুক গলায় বলল যশ।
প্রথম প্রথম এরকম হবে মিতামাসী ভাবে।যশ বেসিনে গিয়ে চোখে মুখে জল দিতে দিতে শুনতে পেল আবার ফোন বাজছে।সুবা হতে না হতে কার এত দরকার পড়ল?তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফোন ধরল,হ্যালো?
--বিল্লু ম্যায় পৌছ গিয়া।
--প্রাজী তুই?
--ঐ লেড়কির কি খবর ভালো আছে তো?
জেসমিনের কথা বলছে যশের মনটা উদাস হয়ে যায়।
--বিল্লু আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস?
--পরমিত জেন পঞ্ছি হয়ে আশমানে চলে গেছে।
--মন খারাপ করিস না।ওতো তোর আপনা বেটি নাই--।
যশ বিন্দারের মনে খচ করে লাগে কথাটা।
--বিল্লু বাপুজী কথা বলবে।
--বলুন চাচাজী।
--সাদি হল লেড়কা হল কিছুই জানলাম না বেটি।
--চাচাজী সব আপনাকে বলব।কেমন আছেন আপনি?
--বেটি বাই গুরুর কৃপায় আমরা ভালই আছি।একটা খবর এসেছে দেশ থেকে--।
দেশে তার আপনা বলতে দাদীজান।জিজ্ঞেস করে,কি খবর চাচাজী?
--তোর দাদীর তবিয়ৎ আচ্ছে নেহী।তোর পাতা জানে না আমার এখানে জানিয়েছে।
--কি হয়েছে দাদীর?
--কিডনি কি প্রবলেম,বুড়াপে মে এ কোন বড় ব্যাপার নয়।
চাচাজীর কোনো কথা কানে যাচ্ছিল না।মন তার হারিয়ে গেছে নুরপুরের কৈশোরে।পিতাজী মারা যাবার পর দাদীজানের আশ্রয়ে মেয়েকে নিয়ে উঠেছিল দলপ্রীত।কয়েক বছর পর দুরারোগ্য ক্যান্সারে মৃত্যু হয় দলপ্রীতের,মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি দাদীজান। সেখানেই ধুলোমাটি মেখে দাদীজান দিলরীতের লাড়প্যারে বিল্লুর বড় হওয়া।ডাক্তারীতে সুযোগ পেয়েও যখন আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছে তখন দাদীজান ভরসা দিয়ে বলেছিল,পুত্তর তুই দিল্লী চলে যা আমি তোর খরচ আমি দেব।জামা কাপড় দাদীজানের দেওয়া টাকা নিয়ে স্কুটীতে রওনা দিয়েছিল।সেখানে চাচাজীর আশ্রয়ে পেয়িং গেষ্টের মত ঠাই হল।
অঙ্গন ঘুম থেকে উঠে যশের খোজে এসে দেখল চিন্তিত মুখে যশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার কি ভাবছো?
যশ ম্লান হেসে বলল,ঝড় উঠেছে।
সব সময় হাসিখুশী যশের এই মুখ অঙ্গনের ভালো লাগে না।কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে,কি হয়েছে আমাকে বলো?কে ফোন করেছিল?
--অঙ্গন এই দুনিয়ায় একমাত্র দাদীজান ছাড়া কেউ নেই।
--কেন ডার্লিং আমি কেউ নই।
--তুমি আলাদা নও আমার দিল।
--দাদীর কিছু হয়েছে?
--তাহলে তোমার এই সময়ে পাশে থাকা উচিত।
--অঙ্গন তোমাকে এই জন্য এত ভালোবাসি।কিন্তু মুন্না আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও গিয়ে শান্তি পাবো না।
--তাহলে নিয়ে চলো।
যশ বিন্দার হা-করে অঙ্গনের দিকে তাকিয়ে থাকে।চোখের পাতা উপচে জল বেরিয়ে আসে, অঙ্গনের বুকে মাথা গুজে দিল।
--আমি ডাক্তার ফিজ দিতে হবে।
--দেবো আমার যা আছে সব উজাড় করে তোমাকে দেবো।
মিতা মাসীকে বলল,মৌসী তুমি দুপুরে একটু থাকবে,আমি বেরোতাম।
অঙ্গন বলল,দুপুরে আবার কোথায় যাবে?
--তোমাকেও নিয়ে যাব ট্রাভেলিং এজেণ্টের কাছে।টিকিট কিনতে হবে না?প্লেনে এখন থেকে দিল্লী ওখান থেকে গাড়ী নিয়ে নেবো।
সন্ধ্যার পাতলা চাদর সরিয়ে অন্ধকার গাঢ় হয়।কোথায় যাচ্ছে যশ? পল্টু চুপ করে বসে যশের কাণ্ড দেখতে থাকে।গাড়ী বাক নিচ্ছে পল্টু আশ্বস্থ হয় এবার বাড়ীর দিকে যাবে।যশ সামনের দিকে তাকিয়ে বলল,অঙ্গন তুমি ড্রাইভিংটা শিখে নেও।
--দরকার নেই তুমি তো শিখেছ।
যশ হাসল বলল,আমি চালাবো আর তুমি শুধু চড়বে?
--তুমি না থাকলে কি যে হতো।
আবার পুরানো কথা।ঘুরে ফিরে সেই কথা টেনে আনছে।যশ একটু ভেবে বলল,ঠিক আছে আমি চালাবো যেদিকে ইচ্ছে হবে তুমি কিছু বলতে পারবে না--প্রমিশ?
--এতক্ষন কিছু বলেছি?
--ওকে গুড বয়।বা-হাতে অঙ্গনের মাথা টেনে চুমু খেলো।
মিতা মাসীর কাজ সারা ছোড়দা ফেরার অপেক্ষায়।ছোড়দার এই বউটা ছোড়দারে মনে করে বাচ্চা। আগের বউ হলে না হয় আলাদা এই বউয়ের বয়স তো বেশী না।নীচে গাড়ীর শব্দ শুনে বারান্দায় গেল।হ্যা ফিরেছে,কিছুই তো কেনে নাই তাইলে গেছিল কোথায়?
যশ উপরে এসেই জিজ্ঞেস করে,মুন্না ডিস্টার্ব করেনি তো।
বলতে না বলতেই ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ আসে।যশ বলল,কত সেয়ানা দেখো আওয়াজ পেয়েই ব্যাটা চিল্লাচ্ছে।যশ ঘরে গিয়ে মুন্না কোলে নিয়ে স্তন বের করে মুখে গুজে দিল।
--ছোড়দা আমি আসি?মিতামাসী জিজ্ঞেস করে।
পল্টূ ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,মাসী চলে যাবে?
--হ্যা হ্যা মৌসীকে ছেড়ে দাও কাল সকাল সকাল আসতে বোলো।
পল্টু বেরিয়ে বলল,মাসী তুমি যাও।কাল সকাল সকাল এসো।
মিতা মাসী শুনেছে বৌদির কথা ছোড়দা সেই কথাগুলোই বলল।বাপের মত বড় ডাক্তার হয়েছে, যখন মা ছিল তখন ছিল মা ন্যাওটা এখন হয়েছে বউ ন্যাওটা।
মুন্নাকে শুইয়ে দিয়ে যশ টেবিলে খাবার দাবার প্লেট সাজাতে থাকে।অঙ্গন বোতল নিয়ে আসতে যশ হেসে বলল,তোমার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে।
--অল্প একটু?
--ওকে ডার্লিং।
পানাহারের পর শুয়ে পড়ল।যশ বিন্দার চিত হয়ে শুয়ে অঙ্গনের মাথাটা বুকে তুলে নিল।পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে জিজ্ঞেস করে,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?সাচ বলতে পারলে বলবে?
অঙ্গন উপুড় হয়ে যশকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করল,তোমাকে কি মিথ্যে বলেছি?
--এখন একটা সিরিয়াস কথা জিজ্ঞেস করব।জাস্ট কিউরিওসিটি।
--আচ্ছা বলো।
--আমাকে তোমার পছন্দ হয়েছে নাকি মজবুরি?
অঙ্গনকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল,আমাদের সাদি হয়ে গেছে।এখন কিছু যায় আসেনা।
--তোমাকে প্রথম দিল্লীতে দেখে তোমার ব্যবহার খুব ভাল লেগেছিল--।
--সিরিফ ব্যবহার?
--কথা শেষ করতে দাও।
--স্যরি বলো বলো।
--তুমি বাঙালী নও তবু মনে হয়েছিল আমার আপনার জন।মনে অনেক ইচ্ছেই হয় কিন্তু সব সময় সব ইচ্ছে প্রকাশ করা যায় না।দমন করতে হয়।
--তোমার বউ ছিল আমাকে বলোনি।
--তখনও আমাদের বিয়ে হয়নি কিন্তু অঞ্জনা আমার বউয়ের চেয়েও কাছের মানুষ ছিল।
--জবরদস্তি করেছি তখন রাগ হয়েছিল?
--রাগ হয়নি কষ্ট হয়েছিল।
--কষ্ট কেন?
-- প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব না তোমার কথা ভেবে কষ্ট হচ্ছিল।
যশ বিন্দার বুকের উপর অঙ্গনকে চেপে ধরল।মনে মনে ভাবে গড আমার আশা পূরণ করেছে।একসময় বলল,জানো অঙ্গন কলকাতায় আমি তোমার জন্য আসিনি।প্রাজীরা এমন পিছে লাগল ভাগতে ভাগতে জানিনা সাব কনসাসলি তোমার কথা ভেবেছিলাম কিনা,কলকাতায় চলে এলাম।
--তখন কোনো কিছু ভাবার মত অবস্থা ছিলনা, কিছুটা বাধ্য হয়ে তোমাকে মেনে নিলেও যশ এখন তুমি ছাড়া আমি অসহায়।আমার মাকে হারালাম অঞ্জনাকেও কি যে অবস্থা তোমাকে কি বলব--।
--কিছু বলতে হবে না জান, মাইজীর লাড় প্যার বিবির মহব্বত সব আমি দিব কোনো কিছু খামতি রাখব না।অঙ্গনের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে থাকে যেমন সন্তানকে মা আদর করে।বুকে বড় বড় শ্বাস পড়ে যশ বিন্দার বুঝতে পারে ঘুমিয়ে পড়েছে।আলতো করে মাথাটা বালিশের উপর নামিয়ে দিল।
মিতা মাসী কলিং বেল টিপছে ফোন বাজছে কোনো সাড়া শব্দ নেই।কি হল?এরকম তো কোনোদিন হয়না।কলিং বেল চেপে রাখে।
--আসছি আসছি।যশ সাড়া দিল।অনেক রাত করে ঘুমিয়েছে,ধড়ফড় করে উঠে বসে।
ঘর থেকে বেরিয়ে দরজা খুলবে নাকি ফোন ধরবে এক্মুহূর্ত ভেবে দরজা খুলে দিল।ফোন বন্ধ হয়ে গেছে।
--আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।মিতা ঢুকে বলল।
--ঘুমোতে অনেক রাত হয়ে গেছিল।লজুক গলায় বলল যশ।
প্রথম প্রথম এরকম হবে মিতামাসী ভাবে।যশ বেসিনে গিয়ে চোখে মুখে জল দিতে দিতে শুনতে পেল আবার ফোন বাজছে।সুবা হতে না হতে কার এত দরকার পড়ল?তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফোন ধরল,হ্যালো?
--বিল্লু ম্যায় পৌছ গিয়া।
--প্রাজী তুই?
--ঐ লেড়কির কি খবর ভালো আছে তো?
জেসমিনের কথা বলছে যশের মনটা উদাস হয়ে যায়।
--বিল্লু আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস?
--পরমিত জেন পঞ্ছি হয়ে আশমানে চলে গেছে।
--মন খারাপ করিস না।ওতো তোর আপনা বেটি নাই--।
যশ বিন্দারের মনে খচ করে লাগে কথাটা।
--বিল্লু বাপুজী কথা বলবে।
--বলুন চাচাজী।
--সাদি হল লেড়কা হল কিছুই জানলাম না বেটি।
--চাচাজী সব আপনাকে বলব।কেমন আছেন আপনি?
--বেটি বাই গুরুর কৃপায় আমরা ভালই আছি।একটা খবর এসেছে দেশ থেকে--।
দেশে তার আপনা বলতে দাদীজান।জিজ্ঞেস করে,কি খবর চাচাজী?
--তোর দাদীর তবিয়ৎ আচ্ছে নেহী।তোর পাতা জানে না আমার এখানে জানিয়েছে।
--কি হয়েছে দাদীর?
--কিডনি কি প্রবলেম,বুড়াপে মে এ কোন বড় ব্যাপার নয়।
চাচাজীর কোনো কথা কানে যাচ্ছিল না।মন তার হারিয়ে গেছে নুরপুরের কৈশোরে।পিতাজী মারা যাবার পর দাদীজানের আশ্রয়ে মেয়েকে নিয়ে উঠেছিল দলপ্রীত।কয়েক বছর পর দুরারোগ্য ক্যান্সারে মৃত্যু হয় দলপ্রীতের,মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি দাদীজান। সেখানেই ধুলোমাটি মেখে দাদীজান দিলরীতের লাড়প্যারে বিল্লুর বড় হওয়া।ডাক্তারীতে সুযোগ পেয়েও যখন আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছে তখন দাদীজান ভরসা দিয়ে বলেছিল,পুত্তর তুই দিল্লী চলে যা আমি তোর খরচ আমি দেব।জামা কাপড় দাদীজানের দেওয়া টাকা নিয়ে স্কুটীতে রওনা দিয়েছিল।সেখানে চাচাজীর আশ্রয়ে পেয়িং গেষ্টের মত ঠাই হল।
অঙ্গন ঘুম থেকে উঠে যশের খোজে এসে দেখল চিন্তিত মুখে যশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার কি ভাবছো?
যশ ম্লান হেসে বলল,ঝড় উঠেছে।
সব সময় হাসিখুশী যশের এই মুখ অঙ্গনের ভালো লাগে না।কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে,কি হয়েছে আমাকে বলো?কে ফোন করেছিল?
--অঙ্গন এই দুনিয়ায় একমাত্র দাদীজান ছাড়া কেউ নেই।
--কেন ডার্লিং আমি কেউ নই।
--তুমি আলাদা নও আমার দিল।
--দাদীর কিছু হয়েছে?
--তাহলে তোমার এই সময়ে পাশে থাকা উচিত।
--অঙ্গন তোমাকে এই জন্য এত ভালোবাসি।কিন্তু মুন্না আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও গিয়ে শান্তি পাবো না।
--তাহলে নিয়ে চলো।
যশ বিন্দার হা-করে অঙ্গনের দিকে তাকিয়ে থাকে।চোখের পাতা উপচে জল বেরিয়ে আসে, অঙ্গনের বুকে মাথা গুজে দিল।
--আমি ডাক্তার ফিজ দিতে হবে।
--দেবো আমার যা আছে সব উজাড় করে তোমাকে দেবো।
মিতা মাসীকে বলল,মৌসী তুমি দুপুরে একটু থাকবে,আমি বেরোতাম।
অঙ্গন বলল,দুপুরে আবার কোথায় যাবে?
--তোমাকেও নিয়ে যাব ট্রাভেলিং এজেণ্টের কাছে।টিকিট কিনতে হবে না?প্লেনে এখন থেকে দিল্লী ওখান থেকে গাড়ী নিয়ে নেবো।