Thread Rating:
  • 131 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮)
বাড়ীতে থাকলে রঞ্জনের এই অভ্যাস, পড়ে পড়ে ঘুমানো।সকাল বেলা অর্ক চলে গেল আঁকার স্কুলে।অর্ক আঁকে ভালো।শিশু বয়স থেকেই বিভিন্ন অঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছে। সুছন্দা বলেছিল একজন ভালো আঁকা শিক্ষকের কাছে দেবে।অর্ক চলে যেতে, রঞ্জন দেখল ঘড়িতে ন'টা দশ।সুছন্দা অফিস যাবার জন্য রেডি হচ্ছে।
---এই যে ঘুম ভাঙ্গলো? নাও চা।
রঞ্জন চায়ে চুমুক দিয়ে সুছন্দার দিকে তাকালো।গোলাপি শাড়ি আর সাদা ব্লাউজ পরেছে।কপালে লাল টিপ, গলায় সোনার চেন, হাতে লাল পোলা আর চুড়ি, কানে দুটো ছোট টাব।এই সামান্য সাজেও সুছন্দাকে কম দেখায় না।হাতে ঘড়িটা বাঁধছিল সে।
রঞ্জন বলল--ডার্লিং অফিস যেও না আজকে প্লিজ।
সুছন্দা কাঁধের ব্যাগটা নিয়ে বলল---ছুটি নিয়ে কি লাভ হল ওই তো ঘুমাচ্ছ পড়ে পড়ে!
রঞ্জন চায়ের কাপটা রেখে সুছন্দাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে গেলে, সুছন্দা বলল--এই! এই! ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করোনি!
রঞ্জন বলল---একটা চুমু খাবো প্লিজ...
----তোমার দেখছি বয়স কমছে রঞ্জন?
---আঃ বয়সের কি আছে? এইতো বিয়াল্লিশ!
---হুম্ম বিয়াল্লিশটা কম নয়, ছেলে বড় হচ্ছে!
অর্ক এখন ক্লাস নাইন।ইতিমধ্যে মায়ের থেকে লম্বা হয়েছে।
রঞ্জন বলল---আজ কিন্তু দেরী কোরো না।
সুছন্দা চলে গেলে রঞ্জন ব্রাশ করে এসে দেখল সকালে উঠেই রান্না-বান্না সব করে রেখে গেছে সুছন্দা।জলখাবার খেয়ে একটা পুরোনো বই খুঁজছিল পড়বার জন্য।রঞ্জনের বিশেষ বইটই পড়ার নেশা নেই।এসব সুছন্দারই সংগ্রহ।প্রতি বছর বইমেলায় গাদা গাদা বই কেনে।রঞ্জন দেখল বুক সেলফের ফাঁকে একটা ছোট ডায়েরি রাখা।রঞ্জন ওটা টেনে বের করে দেখল সুছন্দা কাজের মেয়ের পাওনা থেকে দুধওয়ালা, কাগজওয়ালা এসবের হিসেব লিখে রেখেছে।সেলফ থেকে একটা বই টেনে নিল রঞ্জন।বইটা অনেক দিন সেলফে পড়ে থাকলেও চোখে পড়েনি কখনো রঞ্জনের।একটি কবিতার বই, ইংরেজি কবিতা।রঞ্জন এমনিতেই তেমন গল্প উপন্যাসের বই'ই পড়ে না, তার ওপর কবিতার বই! বইটা রাখতে গিয়ে পেছনের পাতায় চোখ আটকে গেল রঞ্জনের।একটা কবিতার পংক্তি লেখা!
'তোমার হৃদয় জুড়ে আছে যে পাখি
সেই পাখিটা আমি দেওয়ালে আঁকি'
-----সুখেন।

চমকে উঠল রঞ্জন!---সুখেন!

নামটা মনে আসতেই রঞ্জনের মনে পড়ল ছ মাস আগে তাদের আলিপুরদুয়ার বেড়াতে যাবার কথা--------

রঞ্জন বড় হয়েছে আলিপুরদুয়ারে আর সুছন্দা বড় হয়েছে জলপাইগুড়িতে।সুছন্দার দাদুর বাড়ী আলিপুর দুয়ার।আলিপুরদুয়ারেই রঞ্জন আর সুছন্দার দেখা, প্রেম।সুছন্দার কোনো মামা বা মাসি নেই, ঠিক তার নিজেরও যেমন কোনো ভাইবোন নেই।দাদু দিদা গত হবার পর সুছন্দা আর যায়নি ওখানে।সুছন্দার মা মাঝে মধ্যে যেতেন।গতবছর তিনিও চলে গেলেন।
রঞ্জনের এখন আর ওখানে কেউ নেই।রঞ্জনের একমাত্র পিসি ছিলেন।তিনিও গত।সুছন্দা কিংবা রঞ্জন দুজনেই বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় এখন আর তাদের কোনো আত্মীয় স্বজন নেই।

---আলিপুর দুয়ার---

কলকাতা শহরে মানুষ হওয়া অর্কের কাছে আলিপুরদুয়ার বেশ নতুন।রঞ্জনের বাড়ীটা রঞ্জনের বাবা বানিয়েছিলেন।রঞ্জনের বাবা ফরেস্টে চাকরী করতেন।বিমল মৈত্র নামটি ফরেস্ট এরিয়ার ট্রাইবাল থেকে শুরু করে রেঞ্জারদের ও স্থানীয়দের কাছে বেশ শ্রদ্ধার।বড় সাহেব নামে তিনি পরিচিত ছিলেন।আর সুছন্দার দাদু ফনিবাবু কিন্তু এখানকার লোক ছিলেন না।তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার লোক।অধ্যাপনা করতেন।একমাত্র মেয়ের বিয়ে জলপাইগুড়িতে হতে তিনিও চলে আসেন আলিপুরদুয়ার।আসলে জপাইগুড়ি না গিয়ে আলিপুরদুয়ার যাওয়ার তার কারণ হল তিনি খুব প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন।রঞ্জনের বাবার সঙ্গে সুছন্দার দাদুর খুব সখ্যতা ছিল।


রঞ্জন অনেক দিন পর তার পৈত্রিক বাড়ীতে এসে খুশি।এ বাড়ীর দেখাশোনা করেন বটুকলাল সর্দার।জাতিতে নমশূদ্র।সে কারনে রঞ্জন ছোটবেলা থেকেই দেখেছে বটুকাকা সব সময় নিজেকে অস্পৃশ্য মনে করতেন।কিন্তু রঞ্জনের বাবা-মা কখনো বটুকলালকে দূরের মনে করেননি।লম্বা কুঁজো করে লোকটা বহুদিনের পুরোনো ভৃত্য।ঘরদোর খুলে পরিষ্কার করে দিলেন।সুছন্দা আগেই নিজের মত করে গুছিয়ে নিল।
সামনের ঢালুর ওপারে মোরাম রাস্তাটা পিচ হয়ে গেছে।অর্ক দূরের পাহাড়টা দেখে বলল---বাপি ওইখানে যাওয়া যায় না?
রঞ্জনের মনে পড়ল জঙ্গলের রাস্তা ধরে কতবার ওই পাহাড়ে গেছে ও।বলল--দাঁড়া বিকেলে নিয়ে যাবো তোকে।আগে এখানে বাঘ দেখা যেত।ওই পাহাড়ের কাছেই একটা বাঘের বাচ্চা ধরা পড়েছিল।তোর দাদু ওটাকে তুলে নিয়েসে সেবা শুশ্রূষা করে আবার ছেড়ে দিয়েছিল জঙ্গলে।

কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে রঞ্জনের।পুরো শৈশব তার এখানে কেটেছে।এখান থেকে ছ' মাইল দূরে একটা টোটো পাড়া আছে।সেখানেই ফরেস্টের অফিস।রঞ্জনের পিতৃদেব সেখানেই চাকরী করতেন।এই এলাকায় কোনো স্কুল নেই।এই এলাকা মূলত জলদাপাড়া বনভূমির অংশ।রঞ্জন পড়ত মাদারিহাটের স্কুলে।ফরেস্টের গাড়ী করে স্কুল যেত।
কাছে পিঠেই খয়েরবাড়ি, যেখানে পাহাড়ী তোর্সা নদী রয়েছে।সুছন্দাকে নিয়ে রঞ্জন ওখানে বেশ কয়েকবার গেছে।তখন তাদের বিয়ে হয়নি।

সুছন্দা বাইরে বেরিয়ে এলো।ঘেমে নেয়ে একাকার সে।কোমরে আঁচলটা বেঁধে এতক্ষণ ঝাড়পোছ করছিল সে।বলল---শুনছ? একটা গ্যাসের ব্যবস্থা করতে হবে, নাহলে খাবে কি?
বুড়ো বুটুকলাল বলল---বৌমনি, আমি মাদারিহাট যাবো এক্ষন, লিয়ে আসব।

রঞ্জন বলল--বটু কাকা আপনি একা পারবেন না, আমি যাই।
অর্ক বলল--আমিও যাবো।

মাদারিহাটও অনেকখানি বদলে গেছে।রঞ্জন বলল---এই দেখ অর্ক এই স্কুলে আমি পড়তাম।
বটুকলাল হেসে বলল---আর ছোটবাবু তখন কি দুস্টুমি করতেন! ইস্কুল যাবেনি বলে।
---হ্যা মনে আছে বটুকাকা, আপনি আমাকে নলবাড়ী রাজার দুর্গে ঘুরতে নিয়ে যেতেন।
---সেটা কোথায় বাপি?
---চিলাপাতার জঙ্গলে।ওখানেই তোমার মায়ের দাদুর বাড়ী।
---ওখানে এখন কে আছে মায়ের?
বটুকলাল বলল---বৌমনির দাদু নামজাদা লোক ছিলেন গো...সে বাড়ী এখনো আছে।সাপ খোপ বাসা বেঁধেছে।
---আমি যাবো তাহলে দেখতে! অর্ক বলল।
--যাবি যাবি দাঁড়া।এখন ক'টা দিন রেস্ট নে।

দুপুরে সুছন্দা রান্নায় লেগে পড়ল।রঞ্জন জঙ্গলটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল অর্ককে।অর্ক কলকাতায় জন্ম।কলকাতায় বড় হয়েছে।কংক্রিটের ভিড় আর গাড়ীর আওয়াজই দেখেছে।ঘন সবুজ জঙ্গল, পাহাড় আর পাখির ডাক দেখে সে মোহিত হয়ে পড়ছে।
(চলবে)
[+] 11 users Like Henry's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮) - by Henry - 08-04-2020, 01:33 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)