16-02-2019, 10:05 PM
"ওয়েল...যেহেতু তুমি জানতে চাইছো, তাই বলছি...হয়ত সব কথা তুমি বুঝবে না অনি...বেশ ছোট বেলায় আমার বিয়ে হয়েছে...২০ বছর ধরে আমি এই সংসার চালাচ্ছি...ছেলে ও এখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছে...সংসার এখন চলছে আপন নিয়মে...এই সংসারের মধ্যে এখন আর আমি নিজের কোন প্রয়োজন বুঝতে পারি না...মানে...মানে হচ্ছে...আমি নিজেকে এখানে অনুভব করি না...সব যেন একটা অভ্যাস...শুধু মাত্র আসিফের কথা চিন্তা করে জীবনটাকে এখনও চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি...মাঝে মাঝে আমার মনে হয়... আমি যেন একদম একা, কেও নেই আমার..."-নিলার গলায় যেন গত কালকের সেই বিষণ্ণতা আবার ধরা পড়েছে। খুব ধীরে ধীরে নিলা কথাগুলি বলছিলো একটু থেমে থেমে। অনি বেশ গভীর মনোযোগ দিয়ে নিলার বুকের সেই কষ্টগুলিকে বুঝার চেষ্টা করতে লাগলো।
"আপনার স্বামী আপনাকে সময় দেয় না, ভালবাসে না...এটাই কি এই অনুভুতির মুল কারন, নাকি অন্য কিছু ও আছে?"-অনি বেশ মুরুব্বীয়ানা ভঙ্গীতে গম্ভীর গলায় জানতে চাইলো। নিলা ওর গলার স্বরে একটু হেঁসে ফেললো।
"হ্যাঁ...এটা ঠিক যে, আসিফের আব্বু আমাকে সময় দেয় না...কিন্তু ভালবাসে কি না সেটা আমি জানি না...বা সত্যি করে বললে বলতে হয় যে, আমার প্রতি ওর কোন ভালবাসা আছে কি না, সেটা জানার কোন চেষ্টা ও আমি কখনও করি নাই...এরপর হয়ত তুমি জানতে চাইবে যে, আমি উনাকে ভালবাসি কি না...তার উত্তর আগেই বলে দেই...সেটা ও আমি জানি না...আসিফের আব্বুর প্রতি সেই আবেগ, সেই টান আমি কখনও অনুভব করেছি কি না, সেটা মনে পড়ছে না...তবে আসিফের আব্বু আমাকে সম্মান করে, বিশ্বাস করে, আমার কোন কথাকে একদম ফেলে দেয় না, মূল্য দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সব কিছুই যেন কেমন বিনিময়ের মত ওর কাছে...নিজেকে বিলিয়ে দেয়া বা উৎসর্গ করা, এটা ওর ধাঁচে নেই। আবার সে খুব কর্তৃত্বপরায়ণ লোক ও না। আমাকে দিয়ে জোর করে কিছু করায় ও না...মানুষ হিসাবে ও হয়ত খুব একটা খারাপ না...কিন্তু জীবন সাথি হিসাবে কেমন যেন খাপছাড়া..."-নিলা থামলো।
"এবং এই যে টান না থাকা, এর ও একটা মূল কারন আছে...সেটা কি আপনি জানেন? নাকি আমার মুখ থেকে শুনতে চান?"-অনি আবার ও ওর গম্ভীর গলায় বললো। এতক্ষন কথা বলতে বলতে নিলা যেন একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলো, কোন এক দূর কোন কিছুর দিকে তাকিয়ে যেন সে কথা বলছিলো, এখন অনির প্রশ্ন শুনে চট করে অনির দিকে ফিরে তাকালো, মনে মনে চিন্তা করলো, বলে কি এই ছেলে, এর কারন সে জানে, কিন্তু আমি জানি না...এতো অভিজ্ঞ ও হলো কি করে?
"না, আমি জানি না...তুমি বলো...দেখি..."-নিলা যেন অনেকটা চ্যালেঞ্জের ভঙ্গীতে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো অনির দিকে।
"এর কারন হচ্ছে আপনাদের দুজনের যৌন জীবন...আপনারা দুজনেই যৌনতার দিক থেকে পিছিয়ে...আমি ঠিক জানি না যে আপনার স্বামী আপনাকে যৌন তৃপ্তি কোনদিন দিয়েছে কি না বা দেয়ার চেষ্টা করেছে কি না...কিন্তু আপনি যে তার কাছ থেকে সেই সুখ কোনদিন ও পূর্ণভাবে পান নাই, এটা নিশ্চিত..."-অনি ওর মত জানিয়ে দিলো কোনরকম দ্বিধা ছাড়াই।
নিলার মুখ দিয়ে কথা সড়ছিলো না অনির উত্তর শুনে। নিলা যে যৌনতার দিক থেকে অসুখী, সেটা অনি কিভাবে বুঝলো। নিলা চুপ করে ভাবতে লাগলো অনির কথা যে সত্যি সেটা সে শিকার করে নিবে কি না, নাকি অস্বীকার করে সেই মিথ্যের খোলসেই নিজেকে আঁটকে রাখবে। কিন্তু এটা নিলা কেন করবে? এই মুহূর্তে ওর কি আসলেই হারাবার মত কিছু আছে? কেন সে এই কথা স্বীকার না করে নিজেকে এই জীবনে এক বারের মত হলে ও চিৎকার করে জানাবে না, যে হ্যাঁ, সে সুখি নয়। নিজের মনে অনেক টানা পড়ন চলতে লাগলো নিলার, ওর মন বলছে, যে নিজের ছেলের বন্ধুর কাছে কিভাবে নিলা স্বীকার করবে যে সে যৌনতার দিক থেকে মোটেই সুখি নয়, আবার ওর শরীর ওকে বলছে, খুলে দাও, সব খুলে দাও, নিজেকে মেলে ধর, অনির জন্যে না হোক, নিজের জন্যে হলে ও একবার নিজেকে সত্যের সম্মুখে দ্বার করিয়ে দাও, নিজেকে নিজে জানাও যে তোমার কিসের অভাব। নিলার দু চোখের কোনা দিয়ে দু ফোঁটা অশ্রু যেন টালমাটাল করতে লাগলো, নিলা মুখ নিচু করে ছিলো। তাই টপ টপ করে ওর কোলের উপর সেই অশ্রু ঝড়তে লাগলো। অনি খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে নিলার মুখের ভাব লক্ষ্য করছিলো, তাই নিলার চোখের অশ্রু চোখ এড়িয়ে গেলো না অনির। সে বুঝতে পারলো যে ওর ধারনাই ঠিক, কিন্তু নিলার মনের কষ্টের পরিমান এতো বেশি যে, সেটাকে স্বীকার করতে ওর কষ্ট হচ্ছে।
অনি সড়ে এসে নিলার গায়ের সাথে শরীর লাগিয়ে বসলো, এক হাত দিয়ে নিলাকে কাছে টেনে নিজের শরীরের সাথে লাগিয়ে নিলো, আর এক হাতে নিলার নিচু হয়ে যাওয়া মুখের চিবুকে হাত দিয়ে উঁচু করে ধরলো নিলার মুখ। নিলার চোখ বুঝে আছে আর চোখের দু পাশ দিয়ে যেন কোন রকম কান্না ছাড়াই পানির ঝর্না বইছে। অনি নিলার পিঠে হাত বুলিয়ে, পিঠে কয়েকটা চাপর মেড়ে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করলো, কিন্তু অনির আদরে যেন নিলার চোখে পানির পরিমান আর বেড়ে গেলো। আসলে অনিকে আদর করতে দেখে নিলার যেন নিজেকে আর সামলাতে পারছিলো না এই ভেবে যে, এই ছোট ছেলেটা আমাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু যে আমার স্বামী, সে আমার দিকে ফিরে ও তাকায় না, আমার ভিতরের কষ্টগুলি অনুভব করা তো দূরে থাকুক, আমার ভিতরটা যেন সে দেখতে ও পায় না। নিলার মনে দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, অভিমান, লজ্জা-সব কিছু যেন একসাথে কাজ করছিলো। অনি ওকে চুপ করে কাঁদতে দিলো, মুখে কোন কথা না বলে ওকে জড়িয়ে ধরে রেখে ওর মাথায়, পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো, কারো অনি চাইছিলো যে নিলা কাঁদুক, বেশি করে কাঁদুক, ওর ভিতরের সব কষ্টের ফোঁটাগুলিকে বের করে দিক, ওগুলির আর ভিতরে থাকার দরকার নেই, সব কিছু বেরিয়ে যাক নিলার বুকের গভীর থেকে, এরপর সেখানে সেই খালি জায়গায় অনি ওর জন্যে ভালবাসা আর আত্মত্যাগের এক মন্দির তৈরি করে দিবে, যেখানে নিলার সারাদিন ওর জন্যে পুঁজোর থালি সাজাবে আর পুঁজো দিবে। প্রায় ৪/৫ মিনিট হবে নিলা চোখ বন্ধ করেই কেঁদে চলছিলো, ঘরে যে ওর ছেলে আসিফ আছে, আর সে যে ছেলের বন্ধুর বুকে মাথা রেখে বন্ধুর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে কাঁদছে, সেই খেয়ালই নেই এখন ওর। ধীরে ধীরে নিলার বুকের ফোঁসফোঁসানি কমতে শুরু করলো, নিজেকে নিলা সামলিয়ে নিতে শুরু করলো।
এবার নিলার চোখের কনের পানি মুছিয়ে দিলো অনি আর ওকে চুপ করে শান্ত হতে বললো। "কাকিমা, তোমার মনের সব কষ্ট এভাবে তুমি কারো কাছে প্রকাশ করতে পারো নি কখনও, তাই আজ তোমার বুক হালকা হয়ে গেলো, তাই না?" নিলা অনির চোখের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচের দিকে ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ জানালো।
"কাকিমা, তোমার সব কষ্ট কে দূর করতে পারে জানো তুমি? তোমার যা পাওয়া উচিত সেই যোগ্য সম্মান আর ভালবাসা কে দিতে পারে জানো তুমি?"-অনি খুব ধীরে ধীরে যেন ফিসফিস করে নিলার কানে কানে কথাটি বললো। নিলা যেন চমকে উঠলো অনির প্রশ্ন শুনে।"না, অনি...এখন আর এই বয়সে পাওয়ার কিছু নেই...আমি আমার ভাগ্য মেনে নিয়েছি..."-নিলা অনির উত্তর না দিয়ে ওর কথাকে এড়িয়ে যেতে চাইলো।
"নাঃ...এটা আপনি মেনে নিতে পারেন না কাকিমা...আপনি আপনার মূল্য বুঝতে পারছেন না...আপনি এক অসাধারণ অনন্য যৌবনের অধিকারী এক রূপসী সুন্দরী লাস্যময়ী নারী। এই পৃথিবীর কাছ থেকে আপনার অনেক কিছু পাওনা আছে, আর সেগুলিকে আপনি চাই না বলে ফিরিয়ে দিতে পারেন না...এখন ও যে কোন পুরুষের মাথা আপনার দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার মত অনেক কিছুই আপনার আছে...যেটা দরকার এই মুহূর্তে, সেটা হচ্ছে, আপনার দৃঢ় মনোবল, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। তাহলেই আপনার এতো বছরের গ্লানি আর বঞ্চনা সব সুদে আসলে পরিশোধ হয়ে যাবে...এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আপনি সেসবের প্রাপ্য হকদার"-অনি চট করে উঠে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে ওর প্রতিটি শব্দের উপর জোর দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে হাত পা ছুড়ে ছুড়ে নিলাকে বলতে লাগলো।
"একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে আছে দেখেই আপনার জীবন শেষ হয়ে গেছে এমন ভাবার কোন কারনই নেই...যেখানে আপনার ছেলে ও চায় যে আপনার সব বঞ্চনার ইতি ঘটুক, কাজেই আপনার সামনে কোন বাধাই নেই... আপনি হাত বাড়ালেই পৃথিবীর সমস্ত সুখ আপনার কাছে ধরা দিবে, শুধু আপনাকে বুঝতে হবে, কার কাছে আপনি সেটা চাইবেন..."-অনি বলতে লাগলো। কিন্তু ছেলের কথা শুনে নিলার চোখ বড় হয়ে গেলো, জানতে চাইলো "মানে কি? আসিফ কি চায়, ওর সাথে তোমার কি কথা হয়েছে?"-নিলা ওর ভ্রু কুঁচকে জানতে চাইলো। ছেলের কথা শুনে নিলা একটু ঘাবড়ে গেলো।
অনি আবার নিলার কাছে এসে বসে ওর কাঁধে হাত রেখে ওকে শান্ত করতে চাইলো, "রিলাক্স, কাকিমা...আপনার ছেলে যে অনেক কিছু বুঝে, সেটা আপনাকে বুঝতে হবে। নরনারীর কষ্ট, ভালো লাগা, এগুলি বুঝার বয়স ওর হয়েছে। আর তাছাড়া ও আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে সেটা ও একটা বিষয়। আপনাকে নিয়ে আমাদের দুজনের মধ্যে অনেক কথাই হয়েছে। সব কথা আপনাকে এখনই বলতে পারছি না, কিন্তু সে চায় আপনার সব কষ্ট দূর হোক। আপনি যদি অন্য কোন সম্পর্কের মধ্যে নিজের সুখ খুঁজে পান, তাতে ওর কোনই আপত্তি নেই, বরং সে চায় যে আপনি যেন সেটাই করেন।"
"ওহঃ...আমার ছেলেটা যে এতো কিছু বুঝে, আমি জানতাম না...কিন্তু কিভাবে...কি করবো আমি..."-নিলা যেন কথা খুঁজে পাচ্ছে না আর বুঝতে ও পারছে না ও কি করবে। অনির ঠোঁটের কিনারে একটা বাঁকা এক চিলতে হাঁসি ফুটে উঠলো নিলার অসহায়তা দেখে।
"আপনার কষ্ট দূর করবার মানুষটা আপনার সামনেই আছে...আপনার শুধু তাকে চিনে নিয়ে নিজেকে তার কাছে সমর্পণ করতে হবে...ব্যাস...আর কোন কাজ নেই আপানার...এরপর সব তার দায়িত্ব। আপনি শুধু অন্ধের মত চোখ বুজে তার দেখানো রাস্তায় চলবেন, তাহলেই দেখবেন যে আপনার এতো বছরের ক্লান্তি, গ্লানি, কষ্ট সব চলে গিয়েছে, নিজেকে হালকা পাখির মত মনে হবে...আর আপনার জীবন ভরে উঠবে কানায় কানায় সুখে, শান্তিতে, ভালবাসায় আর মমতায়...যা আপনার পাওয়া উচিত তাই আপনি পাবেন, হয়তো তার চেয়ে ও বেশি কিছু পেতে পারেন। এবং আমি জানি, সেসব পেয়ে আপনি খুব সুখি হবেন..."-অনি একটা লম্বা লেকচার দিলো নিলাকে।
কিন্তু নিলা কিছু বুঝতে পারছে না অনির কথা, কার কাছে নিজেকে সমর্পণ করবে সে? নিলার সামনে আছে কে সে? "তুমি হেয়ালি রেখে বলো, ঠিক কি বলতে চাইছো? কে আমার সব কষ্ট দূর করবে? কে সে"-নিলা অস্থির হয়ে জানতে চাইলো।
অনি নিলার অস্থিরতা খুব দারুনভাবে উপভোগ করছে। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে নিলার চোখে চোখ রেখে জবাব দিলো অনি, "আসিফ তোমাকে বলবে তার কথা...তুমি আসিফের সাথে কথা বললেই সব বুঝতে পারবে..."
অনি ইচ্ছে করেই নিলার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করলো না, কিন্তু এদিকে নিলা যে একদমই বুঝতে পারছে অনির কথা তাও না। কিন্তু নিলা চাইছে অনির মুখ থেকে সেটা জানতে, কিন্তু অনি চায় নিলা ওর ছেলের মুখ থেকেই ওর কথা জানুক। দুজনের মধ্যে সুতো টানাটানি চলছে, কিন্তু নিলা আর চাপ দিলো না অনিকে। দুজনেই চুপ করে বসে থেকে একে অন্যকে পড়ার চেষ্টা করতে লাগলো মনে মনে।
এদিকে নিলা যখন কান্না করছিলো, তখনই ড্রয়িং রুমের কাছে এসে দাঁড়িয়ে ওদের কথা আর সংলাপ শুনছিলো আসিফ। বেশ কয়েকবারই সে এসবের মাঝে ঢুকে পড়তে চেয়েছিলো, কিন্তু অনির উপর ওর বিশ্বাস অনেক বেশি ছিলো, যে অনি যে কোন ভাবেই হোক না কেন, ওর আম্মুকে শান্ত করতে পাড়বে। ওর আম্মু কেন কেদেছিলো সেটা ও আসিফ বুঝতে পারছে। অনি যখন নিলাকে জানিয়ে দিলো যে আসিফের কাছ থেকেই নিলাকে জানতে হবে তার নাম, তখন আসিফ বুঝতে পারলো যে, এই মুহূর্তে ওর ওদের মাঝে ঢুকে পড়তে আর কোন বাধাই নেই।
আসিফ এসে "এই কি করছো তোমরা, পড়া শেষ?"-একটু উঁচু স্বরে জানতে চেয়ে ওর আম্মুর কাছে আসলো। এতক্ষন দূর থেকে সে ওর আম্মুর পিছনের সোফা দেখতে পেয়েছিলো, তাই বুঝতে পারে নি যে ওর আম্মুর শাড়ির আচলের এই অবস্থা, এখন সামনে এসে ওর আম্মুর বুকের মাঝখান দিয়ে আঁচল ফেলে রাখা আর ব্লাউজের মধ্য দিয়ে দুই মাই প্রকাশিত হয়ে আছে দেখে বেশ অবাক হলো, কিন্তু বুঝতে পারলো না যে ওর আম্মুর আচলের এই অবস্থা কে করলো, ওর আম্মু নিজে নাকি অনি। কিন্তু এটা নিয়ে ওর আম্মু বা অনিকে এই মুহূর্তে নাকাল করতে ওর মন চাইলো না, তাই ওটা নিয়ে আসিফ কিছুই বললো না। চুপ করে সে ও ওর আম্মুর বুকের সাইজ মাপতে লাগলো মনে মনে। আসিফকে রুমে ঢুকতে দেখে নিলা চমকে ঘড়ীর দিকে চাইলো, রাত এখন ১০ টার উপরে বাজে। নিলা লাফ দিয়ে সোফা থেকে উঠলো, "আমাদের পড়া শেষ, তোরা খেতে আয়, আমি টেবিলে সব আনছি"-বলে নিলা কিছুটা তাড়াহুড়া করে উঠে চলে গেলো রান্নাঘরের দিকে, যদি ও আচলের দিকে ওর কোনই খেয়াল ছিলো না। নিলা চলে যেতেই আসিফ এসে অনি পাশে বসলো, দুই বন্ধুর মুখে দুষ্টমি আর শয়তানী হাঁসি। অনি ওকে সংক্ষেপে ফিসফিস করে জানালো কি কি হয়েছে, আজ রাতে আসিফের কি দায়িত্ত, সেটা ও ওকে ভালো করে বুঝিয়ে দিলো। এরপর অনি আর আসিফ দুজনেই রান্নাঘরের কাছে এসে দাঁড়ালো। নিলার এর মধ্যেই ওর হাতের ক্রিম ধুয়ে ফেলেছে, আসিফ জানতে চাইলো যে এখনও কি জ্বলছে কি না। নিলা জানালো যে না, এখন আর জ্বলছে না। সবাই মিলে কিছুটা চুপচাপই খাবার খেয়ে নিলো। নিলা আজ মাছের ঝোল আর মুরগীর মাংস রান্না করেছিলো, অনি নিলার রান্নার বেশ প্রশংসা করতে করতে খুব তৃপ্তি নিয়েই খেলো।
"আপনার স্বামী আপনাকে সময় দেয় না, ভালবাসে না...এটাই কি এই অনুভুতির মুল কারন, নাকি অন্য কিছু ও আছে?"-অনি বেশ মুরুব্বীয়ানা ভঙ্গীতে গম্ভীর গলায় জানতে চাইলো। নিলা ওর গলার স্বরে একটু হেঁসে ফেললো।
"হ্যাঁ...এটা ঠিক যে, আসিফের আব্বু আমাকে সময় দেয় না...কিন্তু ভালবাসে কি না সেটা আমি জানি না...বা সত্যি করে বললে বলতে হয় যে, আমার প্রতি ওর কোন ভালবাসা আছে কি না, সেটা জানার কোন চেষ্টা ও আমি কখনও করি নাই...এরপর হয়ত তুমি জানতে চাইবে যে, আমি উনাকে ভালবাসি কি না...তার উত্তর আগেই বলে দেই...সেটা ও আমি জানি না...আসিফের আব্বুর প্রতি সেই আবেগ, সেই টান আমি কখনও অনুভব করেছি কি না, সেটা মনে পড়ছে না...তবে আসিফের আব্বু আমাকে সম্মান করে, বিশ্বাস করে, আমার কোন কথাকে একদম ফেলে দেয় না, মূল্য দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সব কিছুই যেন কেমন বিনিময়ের মত ওর কাছে...নিজেকে বিলিয়ে দেয়া বা উৎসর্গ করা, এটা ওর ধাঁচে নেই। আবার সে খুব কর্তৃত্বপরায়ণ লোক ও না। আমাকে দিয়ে জোর করে কিছু করায় ও না...মানুষ হিসাবে ও হয়ত খুব একটা খারাপ না...কিন্তু জীবন সাথি হিসাবে কেমন যেন খাপছাড়া..."-নিলা থামলো।
"এবং এই যে টান না থাকা, এর ও একটা মূল কারন আছে...সেটা কি আপনি জানেন? নাকি আমার মুখ থেকে শুনতে চান?"-অনি আবার ও ওর গম্ভীর গলায় বললো। এতক্ষন কথা বলতে বলতে নিলা যেন একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলো, কোন এক দূর কোন কিছুর দিকে তাকিয়ে যেন সে কথা বলছিলো, এখন অনির প্রশ্ন শুনে চট করে অনির দিকে ফিরে তাকালো, মনে মনে চিন্তা করলো, বলে কি এই ছেলে, এর কারন সে জানে, কিন্তু আমি জানি না...এতো অভিজ্ঞ ও হলো কি করে?
"না, আমি জানি না...তুমি বলো...দেখি..."-নিলা যেন অনেকটা চ্যালেঞ্জের ভঙ্গীতে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো অনির দিকে।
"এর কারন হচ্ছে আপনাদের দুজনের যৌন জীবন...আপনারা দুজনেই যৌনতার দিক থেকে পিছিয়ে...আমি ঠিক জানি না যে আপনার স্বামী আপনাকে যৌন তৃপ্তি কোনদিন দিয়েছে কি না বা দেয়ার চেষ্টা করেছে কি না...কিন্তু আপনি যে তার কাছ থেকে সেই সুখ কোনদিন ও পূর্ণভাবে পান নাই, এটা নিশ্চিত..."-অনি ওর মত জানিয়ে দিলো কোনরকম দ্বিধা ছাড়াই।
নিলার মুখ দিয়ে কথা সড়ছিলো না অনির উত্তর শুনে। নিলা যে যৌনতার দিক থেকে অসুখী, সেটা অনি কিভাবে বুঝলো। নিলা চুপ করে ভাবতে লাগলো অনির কথা যে সত্যি সেটা সে শিকার করে নিবে কি না, নাকি অস্বীকার করে সেই মিথ্যের খোলসেই নিজেকে আঁটকে রাখবে। কিন্তু এটা নিলা কেন করবে? এই মুহূর্তে ওর কি আসলেই হারাবার মত কিছু আছে? কেন সে এই কথা স্বীকার না করে নিজেকে এই জীবনে এক বারের মত হলে ও চিৎকার করে জানাবে না, যে হ্যাঁ, সে সুখি নয়। নিজের মনে অনেক টানা পড়ন চলতে লাগলো নিলার, ওর মন বলছে, যে নিজের ছেলের বন্ধুর কাছে কিভাবে নিলা স্বীকার করবে যে সে যৌনতার দিক থেকে মোটেই সুখি নয়, আবার ওর শরীর ওকে বলছে, খুলে দাও, সব খুলে দাও, নিজেকে মেলে ধর, অনির জন্যে না হোক, নিজের জন্যে হলে ও একবার নিজেকে সত্যের সম্মুখে দ্বার করিয়ে দাও, নিজেকে নিজে জানাও যে তোমার কিসের অভাব। নিলার দু চোখের কোনা দিয়ে দু ফোঁটা অশ্রু যেন টালমাটাল করতে লাগলো, নিলা মুখ নিচু করে ছিলো। তাই টপ টপ করে ওর কোলের উপর সেই অশ্রু ঝড়তে লাগলো। অনি খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে নিলার মুখের ভাব লক্ষ্য করছিলো, তাই নিলার চোখের অশ্রু চোখ এড়িয়ে গেলো না অনির। সে বুঝতে পারলো যে ওর ধারনাই ঠিক, কিন্তু নিলার মনের কষ্টের পরিমান এতো বেশি যে, সেটাকে স্বীকার করতে ওর কষ্ট হচ্ছে।
অনি সড়ে এসে নিলার গায়ের সাথে শরীর লাগিয়ে বসলো, এক হাত দিয়ে নিলাকে কাছে টেনে নিজের শরীরের সাথে লাগিয়ে নিলো, আর এক হাতে নিলার নিচু হয়ে যাওয়া মুখের চিবুকে হাত দিয়ে উঁচু করে ধরলো নিলার মুখ। নিলার চোখ বুঝে আছে আর চোখের দু পাশ দিয়ে যেন কোন রকম কান্না ছাড়াই পানির ঝর্না বইছে। অনি নিলার পিঠে হাত বুলিয়ে, পিঠে কয়েকটা চাপর মেড়ে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করলো, কিন্তু অনির আদরে যেন নিলার চোখে পানির পরিমান আর বেড়ে গেলো। আসলে অনিকে আদর করতে দেখে নিলার যেন নিজেকে আর সামলাতে পারছিলো না এই ভেবে যে, এই ছোট ছেলেটা আমাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু যে আমার স্বামী, সে আমার দিকে ফিরে ও তাকায় না, আমার ভিতরের কষ্টগুলি অনুভব করা তো দূরে থাকুক, আমার ভিতরটা যেন সে দেখতে ও পায় না। নিলার মনে দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, অভিমান, লজ্জা-সব কিছু যেন একসাথে কাজ করছিলো। অনি ওকে চুপ করে কাঁদতে দিলো, মুখে কোন কথা না বলে ওকে জড়িয়ে ধরে রেখে ওর মাথায়, পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো, কারো অনি চাইছিলো যে নিলা কাঁদুক, বেশি করে কাঁদুক, ওর ভিতরের সব কষ্টের ফোঁটাগুলিকে বের করে দিক, ওগুলির আর ভিতরে থাকার দরকার নেই, সব কিছু বেরিয়ে যাক নিলার বুকের গভীর থেকে, এরপর সেখানে সেই খালি জায়গায় অনি ওর জন্যে ভালবাসা আর আত্মত্যাগের এক মন্দির তৈরি করে দিবে, যেখানে নিলার সারাদিন ওর জন্যে পুঁজোর থালি সাজাবে আর পুঁজো দিবে। প্রায় ৪/৫ মিনিট হবে নিলা চোখ বন্ধ করেই কেঁদে চলছিলো, ঘরে যে ওর ছেলে আসিফ আছে, আর সে যে ছেলের বন্ধুর বুকে মাথা রেখে বন্ধুর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে কাঁদছে, সেই খেয়ালই নেই এখন ওর। ধীরে ধীরে নিলার বুকের ফোঁসফোঁসানি কমতে শুরু করলো, নিজেকে নিলা সামলিয়ে নিতে শুরু করলো।
এবার নিলার চোখের কনের পানি মুছিয়ে দিলো অনি আর ওকে চুপ করে শান্ত হতে বললো। "কাকিমা, তোমার মনের সব কষ্ট এভাবে তুমি কারো কাছে প্রকাশ করতে পারো নি কখনও, তাই আজ তোমার বুক হালকা হয়ে গেলো, তাই না?" নিলা অনির চোখের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচের দিকে ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ জানালো।
"কাকিমা, তোমার সব কষ্ট কে দূর করতে পারে জানো তুমি? তোমার যা পাওয়া উচিত সেই যোগ্য সম্মান আর ভালবাসা কে দিতে পারে জানো তুমি?"-অনি খুব ধীরে ধীরে যেন ফিসফিস করে নিলার কানে কানে কথাটি বললো। নিলা যেন চমকে উঠলো অনির প্রশ্ন শুনে।"না, অনি...এখন আর এই বয়সে পাওয়ার কিছু নেই...আমি আমার ভাগ্য মেনে নিয়েছি..."-নিলা অনির উত্তর না দিয়ে ওর কথাকে এড়িয়ে যেতে চাইলো।
"নাঃ...এটা আপনি মেনে নিতে পারেন না কাকিমা...আপনি আপনার মূল্য বুঝতে পারছেন না...আপনি এক অসাধারণ অনন্য যৌবনের অধিকারী এক রূপসী সুন্দরী লাস্যময়ী নারী। এই পৃথিবীর কাছ থেকে আপনার অনেক কিছু পাওনা আছে, আর সেগুলিকে আপনি চাই না বলে ফিরিয়ে দিতে পারেন না...এখন ও যে কোন পুরুষের মাথা আপনার দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার মত অনেক কিছুই আপনার আছে...যেটা দরকার এই মুহূর্তে, সেটা হচ্ছে, আপনার দৃঢ় মনোবল, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। তাহলেই আপনার এতো বছরের গ্লানি আর বঞ্চনা সব সুদে আসলে পরিশোধ হয়ে যাবে...এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আপনি সেসবের প্রাপ্য হকদার"-অনি চট করে উঠে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে ওর প্রতিটি শব্দের উপর জোর দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে হাত পা ছুড়ে ছুড়ে নিলাকে বলতে লাগলো।
"একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে আছে দেখেই আপনার জীবন শেষ হয়ে গেছে এমন ভাবার কোন কারনই নেই...যেখানে আপনার ছেলে ও চায় যে আপনার সব বঞ্চনার ইতি ঘটুক, কাজেই আপনার সামনে কোন বাধাই নেই... আপনি হাত বাড়ালেই পৃথিবীর সমস্ত সুখ আপনার কাছে ধরা দিবে, শুধু আপনাকে বুঝতে হবে, কার কাছে আপনি সেটা চাইবেন..."-অনি বলতে লাগলো। কিন্তু ছেলের কথা শুনে নিলার চোখ বড় হয়ে গেলো, জানতে চাইলো "মানে কি? আসিফ কি চায়, ওর সাথে তোমার কি কথা হয়েছে?"-নিলা ওর ভ্রু কুঁচকে জানতে চাইলো। ছেলের কথা শুনে নিলা একটু ঘাবড়ে গেলো।
অনি আবার নিলার কাছে এসে বসে ওর কাঁধে হাত রেখে ওকে শান্ত করতে চাইলো, "রিলাক্স, কাকিমা...আপনার ছেলে যে অনেক কিছু বুঝে, সেটা আপনাকে বুঝতে হবে। নরনারীর কষ্ট, ভালো লাগা, এগুলি বুঝার বয়স ওর হয়েছে। আর তাছাড়া ও আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে সেটা ও একটা বিষয়। আপনাকে নিয়ে আমাদের দুজনের মধ্যে অনেক কথাই হয়েছে। সব কথা আপনাকে এখনই বলতে পারছি না, কিন্তু সে চায় আপনার সব কষ্ট দূর হোক। আপনি যদি অন্য কোন সম্পর্কের মধ্যে নিজের সুখ খুঁজে পান, তাতে ওর কোনই আপত্তি নেই, বরং সে চায় যে আপনি যেন সেটাই করেন।"
"ওহঃ...আমার ছেলেটা যে এতো কিছু বুঝে, আমি জানতাম না...কিন্তু কিভাবে...কি করবো আমি..."-নিলা যেন কথা খুঁজে পাচ্ছে না আর বুঝতে ও পারছে না ও কি করবে। অনির ঠোঁটের কিনারে একটা বাঁকা এক চিলতে হাঁসি ফুটে উঠলো নিলার অসহায়তা দেখে।
"আপনার কষ্ট দূর করবার মানুষটা আপনার সামনেই আছে...আপনার শুধু তাকে চিনে নিয়ে নিজেকে তার কাছে সমর্পণ করতে হবে...ব্যাস...আর কোন কাজ নেই আপানার...এরপর সব তার দায়িত্ব। আপনি শুধু অন্ধের মত চোখ বুজে তার দেখানো রাস্তায় চলবেন, তাহলেই দেখবেন যে আপনার এতো বছরের ক্লান্তি, গ্লানি, কষ্ট সব চলে গিয়েছে, নিজেকে হালকা পাখির মত মনে হবে...আর আপনার জীবন ভরে উঠবে কানায় কানায় সুখে, শান্তিতে, ভালবাসায় আর মমতায়...যা আপনার পাওয়া উচিত তাই আপনি পাবেন, হয়তো তার চেয়ে ও বেশি কিছু পেতে পারেন। এবং আমি জানি, সেসব পেয়ে আপনি খুব সুখি হবেন..."-অনি একটা লম্বা লেকচার দিলো নিলাকে।
কিন্তু নিলা কিছু বুঝতে পারছে না অনির কথা, কার কাছে নিজেকে সমর্পণ করবে সে? নিলার সামনে আছে কে সে? "তুমি হেয়ালি রেখে বলো, ঠিক কি বলতে চাইছো? কে আমার সব কষ্ট দূর করবে? কে সে"-নিলা অস্থির হয়ে জানতে চাইলো।
অনি নিলার অস্থিরতা খুব দারুনভাবে উপভোগ করছে। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে নিলার চোখে চোখ রেখে জবাব দিলো অনি, "আসিফ তোমাকে বলবে তার কথা...তুমি আসিফের সাথে কথা বললেই সব বুঝতে পারবে..."
অনি ইচ্ছে করেই নিলার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করলো না, কিন্তু এদিকে নিলা যে একদমই বুঝতে পারছে অনির কথা তাও না। কিন্তু নিলা চাইছে অনির মুখ থেকে সেটা জানতে, কিন্তু অনি চায় নিলা ওর ছেলের মুখ থেকেই ওর কথা জানুক। দুজনের মধ্যে সুতো টানাটানি চলছে, কিন্তু নিলা আর চাপ দিলো না অনিকে। দুজনেই চুপ করে বসে থেকে একে অন্যকে পড়ার চেষ্টা করতে লাগলো মনে মনে।
এদিকে নিলা যখন কান্না করছিলো, তখনই ড্রয়িং রুমের কাছে এসে দাঁড়িয়ে ওদের কথা আর সংলাপ শুনছিলো আসিফ। বেশ কয়েকবারই সে এসবের মাঝে ঢুকে পড়তে চেয়েছিলো, কিন্তু অনির উপর ওর বিশ্বাস অনেক বেশি ছিলো, যে অনি যে কোন ভাবেই হোক না কেন, ওর আম্মুকে শান্ত করতে পাড়বে। ওর আম্মু কেন কেদেছিলো সেটা ও আসিফ বুঝতে পারছে। অনি যখন নিলাকে জানিয়ে দিলো যে আসিফের কাছ থেকেই নিলাকে জানতে হবে তার নাম, তখন আসিফ বুঝতে পারলো যে, এই মুহূর্তে ওর ওদের মাঝে ঢুকে পড়তে আর কোন বাধাই নেই।
আসিফ এসে "এই কি করছো তোমরা, পড়া শেষ?"-একটু উঁচু স্বরে জানতে চেয়ে ওর আম্মুর কাছে আসলো। এতক্ষন দূর থেকে সে ওর আম্মুর পিছনের সোফা দেখতে পেয়েছিলো, তাই বুঝতে পারে নি যে ওর আম্মুর শাড়ির আচলের এই অবস্থা, এখন সামনে এসে ওর আম্মুর বুকের মাঝখান দিয়ে আঁচল ফেলে রাখা আর ব্লাউজের মধ্য দিয়ে দুই মাই প্রকাশিত হয়ে আছে দেখে বেশ অবাক হলো, কিন্তু বুঝতে পারলো না যে ওর আম্মুর আচলের এই অবস্থা কে করলো, ওর আম্মু নিজে নাকি অনি। কিন্তু এটা নিয়ে ওর আম্মু বা অনিকে এই মুহূর্তে নাকাল করতে ওর মন চাইলো না, তাই ওটা নিয়ে আসিফ কিছুই বললো না। চুপ করে সে ও ওর আম্মুর বুকের সাইজ মাপতে লাগলো মনে মনে। আসিফকে রুমে ঢুকতে দেখে নিলা চমকে ঘড়ীর দিকে চাইলো, রাত এখন ১০ টার উপরে বাজে। নিলা লাফ দিয়ে সোফা থেকে উঠলো, "আমাদের পড়া শেষ, তোরা খেতে আয়, আমি টেবিলে সব আনছি"-বলে নিলা কিছুটা তাড়াহুড়া করে উঠে চলে গেলো রান্নাঘরের দিকে, যদি ও আচলের দিকে ওর কোনই খেয়াল ছিলো না। নিলা চলে যেতেই আসিফ এসে অনি পাশে বসলো, দুই বন্ধুর মুখে দুষ্টমি আর শয়তানী হাঁসি। অনি ওকে সংক্ষেপে ফিসফিস করে জানালো কি কি হয়েছে, আজ রাতে আসিফের কি দায়িত্ত, সেটা ও ওকে ভালো করে বুঝিয়ে দিলো। এরপর অনি আর আসিফ দুজনেই রান্নাঘরের কাছে এসে দাঁড়ালো। নিলার এর মধ্যেই ওর হাতের ক্রিম ধুয়ে ফেলেছে, আসিফ জানতে চাইলো যে এখনও কি জ্বলছে কি না। নিলা জানালো যে না, এখন আর জ্বলছে না। সবাই মিলে কিছুটা চুপচাপই খাবার খেয়ে নিলো। নিলা আজ মাছের ঝোল আর মুরগীর মাংস রান্না করেছিলো, অনি নিলার রান্নার বেশ প্রশংসা করতে করতে খুব তৃপ্তি নিয়েই খেলো।