Thread Rating:
  • 53 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব
  [৮৫]


             কলিং বেলের শব্দ হতে পরমিত উঠে দরজা খুলে দিল।মিতামাসী রান্না ঘরে ঢুকে গেল। নার্সিং হোমে গিয়ে বিল্লুর সঙ্গে দেখা করে পরমিত আজ চলে যাবে।ডাক্তার সাহেবের জন্য দুঃখ হয়।ছেলে হওয়ার খুশীর আনন্দ উপভোগ করতে পারছেনা।মনে হয় ঘুম ভাঙ্গেনি।বেসিনে গিয়ে চোখে মুখে জল দিল।মৌসী চা দিয়ে গেল।কি একটা ব্লাড টেস্ট করতে দিয়েছে সেটা ডাক্তার সাহেবের ভালো লাগেনি।ডাক্তার সাহেব বেরোতে পরমিত উঠে দাঁড়ায়।
--কাল ঘুম হয়েছিল?
--হ্যা।পরমিত হাসলো।
--মাসী আমাকেও এখানে চা দাও।পরমিতের উল্টোদিকে বসলো।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে পরমিত বলল,বিল্লুর সঙ্গে দেখা করে আমি চলে যাবো।
--ও কি জানে? 
--আমাকে একরাত থাকতে বলেছিল।বাই গুরুর কৃপা।
যশের সঙ্গে দেখা করার জন্য পল্টুর মনে আকুলতা আবার দেখা হলে নানা প্রশ্নের সামনে দাড়াতে হবে ভেবে কেমন এক অনীহা।মিতামাসী চা নিয়ে এল।কলিং বেলের শব্দ শুনে বারান্দায় গিয়ে দেখল,দিলীপ এসেছে।
--কে এল?পল্টু জিজ্ঞেস করে।
--তোমার বন্ধু দিলীপ।
--উপরে আসতে বলো।
মিতামাসী নীচে গেল দরজা খুলতে।দরজার আড়াল থেকে দেবব্রত ডাকে,এই মিতা শোন।
মিতা মাসী সেদিকে দেখতে দেবব্রত জিজ্ঞেস করে,ম্যাডাম কবে আসবে জানিস?
--আমি কি করে বলব?দরজা খুলতে চলে গেল।
কালকের ঘটনা সবাই জানে না।চড় মারার কথা দিলীপকেও বলেনি।এক চড়ে এত কাণ্ড হবে কে জানতো।দরজা খুলে মিতামাসী বলল,বৌদির ছেলে হয়েছে।
দিলীপ উপরে উঠে সর্দারজীকে দেখে অস্বস্তি বোধ করে।পল্টূর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিল।
--আয় দিলীপ,এ হচ্ছে যশের দাদা পরমিত।কাল ও না থাকলে কি যে হতো।
দুজনে হাত জোড় করে নমস্কার বিনিময় করল।
--বোস চা খাবি তো?মাসী--।
পল্টু বলার আগেই মিতামাসী চা নিয়ে এল। 
--আজ অফিস নেই?
--যাব,কেন কোনো দরকার থাকলে যাব না।
--খালি খালি অফিস কামাই করার দরকার নেই।
--আচ্ছা জেনের কি হয়েছে জানিস?
আবার সেই জেনের কথা।পল্টূ বলল,কাল ডাক্তার তোকে কি বলেছিল?
--এমনি কিছু বলেনি তবে খুব যত্ন নিয়ে দেখছিল।চোখের পাতা টেনে মুখের ভিতর আলো ফেলে--তোর মেয়ে শুনেই হয়তো।ব্লাড এক্সামিনের কথা বলল।তোর সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে?
--ডাক্তার ছিলনা।আজ গিয়ে জানতে পারবো।
পরমিত বসে বসে শুনছিল  ডাক্তারসাবের কথা শুনে  মনে হল কুছু গড়বড়ি।একসময় উঠে বলল,আমি স্নান সেরে নিই।
--হ্যা হ্যা আমাদের বেরোতে হবে।তারপর দিলীপকে বলল,তোকে একটা ঘটনার কথা বলা হয়নি।খড়্গপুরে গেছিলাম এক বাবাজীর অপারেশন করতে--।
দিলীপকে দেখে মনে হল বেশ মজা পাচ্ছে।সব কথা শুনে বলল,পল্টু তোকে জানতাম অন্যরকম শেষে তুইও এইসব বাবাজীর ফেরে পড়লি?
--যা সব ঘটছে আমার সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।বাপি বলতো সাধক মানে গবেষক,গবেষণা মানে সাধনা চুল দাড়ি রেখে কপালে তিলক কেটে সাধক হয় না।তোর দেরী হয়ে যাচ্ছে,ওবেলা আসিস।
দিলীপ চলে যেতে পল্টূ স্নানে ঢূকলো। 
দিলীপ বাসায় ফিরতে ফিরতে ভাবে পল্টূর অবস্থা যা এই সময় পাশে থাকা দরকার ছিল।ও বলল খালি খালি অফিস কামাই তারপর আর কি বলবে।
পল্টু স্নান করতে হয় স্নান করে খেতে হয় তাই খায় যন্ত্রের মত একটার পর একটা কাজ সারতে থাকে।নীচে মোহনজী এসে গেছে।পরমিতকে নিয়ে ওরা মুনলাইটে পৌছে দেখল দিলীপ আগেই এসে অপেক্ষা করছে।
--কিরে অফিস গেলি না?
--রোজই তো অফিস করি।
ওরা ভিতরে ঢুকতে একজন এগিয়ে এসে ডাক্তার কেপি মজুমদারের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল,অনকোলজিস্ট।
--বসুন ড সোম।
ড সোম চেয়ারে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে,রিপোর্ট এসেছে?
--হুউম।ইমিডিয়েট কেমো দিতে হবে।
--কেমো?
--লিম্ফোমা, প্লেটলেট অনেক নীচে নেমে গেছে। 
ড সোমের টেবিলে কনুইয়ের ভর রেখে মাথাটা ঝুলে পড়ে।
কে পি মজুমদার বললেন,সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে একজন লোক শুধু সঙ্গে গেলেই হবে।
--কোথায় যেতে হবে আমি যাচ্ছি।দিলীপ বলল।
--এখানে ব্যবস্থা হলে কোথাও যাবার দরকার নেই।
ড সোম উঠে দাড়াল,জিজ্ঞেস করে জেসমিন কোথায়?
নার্সের সঙ্গে একটা ঘরে ঢুকে দেখল একরাতেই মেয়েটার চেহারা একেবারে বদলে গেছে।সেই ছটফটানি নেই, শুয়ে শুয়েই বলল,বাপি মামী আসেনি?
--মামী আসবে মা।মামীকে আনতে যাচ্ছি।
বাইরে বেরিয়ে এসে ছেলে মানুষের মতো কেদে ফেলল।পরমিত জড়িয়ে ধরে বলল,সাব হিম্মত রাখিয়ে।
চোখের জল মুছে বলল,ভাইসাব যশকে কিছু বলবেন না।
দিলীপকে রেখে ওরা গাড়ীতে গিয়ে বসল।
গাড়ী ড্যাফোডিলের কাছে পৌছাতে দোতলার ব্যালকনিতে নজর যেতেই ড সোম অবাক,যশ বাচ্চা বুকে নিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে।দোতলায় উঠে কেবিনে ঢুকে যশকে বলল,তুমি ব্যালকণিতে গেছিলে কেন?
--ইধার হামার দম ঘুটতা হ্যায়।আয় এ্যাম রেডি চলো।
--এখনই যাবে।
--কথাবার্তা হয়ে গেছে।পেমেণ্ট ভি।
ড সোম চোখ ঘুরিয়ে পরমিতকে দেখে।ডা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হতে বললেন,অসুবিধে নেই নরম্যাল ডেলিভারী সাধারণত একদিন রাখি উনি ডক্টর নো প্রবলেম।
ব্যাগ পত্তর গোছানো ছিল।গাড়ীতে উঠে যশ জিজ্ঞেস করে,জেন খেয়েছে? বহুত সারারাতি।
পরমিত বাইরে তাকিয়ে থাকে।ড সোম বলল,সব ঠিক আছে।
ড্রাইভারের পাশে বসা পরমিত বলল,বিল্লু আমি বড় রাস্তায় নেমে যাবো। 
--প্রাজী চাচাজীকে বলবি বিল্লুর বেটা হয়েছে।
--সবাইকে বলব,কালকেই রওনা দেব।
পরমিত নেমে যেতে যশ বাচ্চাকে লক্ষ্য করে বলে,তোর বাপের পরসন্দ হয়নি।
--কি সব আবোল তাবোল বলছো?
--নাতো কি প্যাচার মতো বসে আছে।একবার আদর করছো?
ড সোমের চোখ ভিজে যায়। 
বাড়ীর নীচে গাড়ী দাড়াতে যশবিন্দার ছেলে নিয়ে নেমে দ্রুত উপরে উঠে গেল।ড সোম বলল,মোহনজী আপনি চলে যান,আজ লেক ভিউতে যাবো না।
মিতা মাসী দরজা খুলতেই যশ জেসমিনের খোজ করে,দেখো বেটি তোমার জন্য কি এনেছি।
মিতা মাসী বলল,জেন নার্সিং হোমে।
পল্টু ঢুকেই বলল,মাসী তুমি যাও ওবেলা আসবে।
যশ আগুনে চোখে তাকিয়ে অঙ্গনকে দেখে বলল,ঝুটী কাহিকা।
তারপর ঘরে ঢুকে বাচ্চাকে বিছানায় শুইয়ে গাড়ীর চাবি নিয়ে বেরোবার উদ্যোগ করতেই পল্টু পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।যশ ঘাড় ঘুরিয়ে বলল,তুমি আমার সঙ্গে পারবে না,ছাড় বলছি নেহিতো---।
পল্টু দেখল চোখ দুটো জ্বলছে,কোমর ছেড়ে বসে পড়ে পা চেপে ধরে বলল,যশ প্লীজ?
--এই পা ছাড়ো পা ছাড়ো।অঙ্গনকে দাড় করিয়ে ওর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল,আউরত কো পায়ের পাকাড়তে শরম নেহী?কি    হয়েছিল ডিটেলসে আমাকে বলো।
অঙ্গন ধীরে ধীরে বলতে থাকে।যশ ভাবে এত কাণ্ড হল কেউ আমাকে কিছু বলল না।প্রাজীও বেইমানি করল।খাটের উপর শুয়ে বাচ্চাটা চিৎকার করে কাদতে থাকে। যশ ক্ষেপে গিয়ে ঘরে ঢুকে বলল,এই অঙ্গন কি বাচ্চা চিল্লাতা কিউ?
স্তন বের করতে গিয়ে জামাটা ছিড়ে গেল।বাচ্চার মুখে স্তন গুজে দিয়ে জিজ্ঞেস করল,লিম্ফোমা মতলব লিউকোমিয়া।
স্তনদ্বয় বেশ পুষ্ট সম্ভবত দুধ এসেছে তাই।একটু আগে যা চেহারা দেখেছিল ভয় পেয়ে গেছিল। পল্টু বলল,কেমো দিচ্ছে দিলীপ আছে।বিশ্রাম করো, আমরাও যাব।খালি খালি জামাটা ছিড়লে।
--শাট আপ।তুমি একটা কথা বলবে না ঝুটি।ওড়না দিয়ে চোখ মোছে।
থম থম করছে যশের মুখ।পল্টু কথা না বাড়ীয়ে সোফায় বসে এলিয়ে পড়ে।কাল রাতে ঘুম হয়নি,চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে।  
দৌড়ঝাপ চলছে দিলীপ বুঝতে পারে না ভিতরে কি হচ্ছে।কেপি মজুমদার শুনেছে এ লাইনে বেশ নাম আছে,ওনাকে বিশেষ কল করে আনা হয়েছে।এটাই ভরসা।পল্টুর উপর একের পর এক ঝামেলা হচ্ছে।যারা ভালো মানুষ ভগবান তদের কেন এত কষ্ট দেয়।
চোখ মেলতে দেখল সামনে চায়ের মগ হাতে দাঁড়িয়ে যশ বিন্দার।
পল্টু লাজুক হেসে বলল,ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।হাত বাড়িয়ে চায়ের মগ নিল।
যশ বলল,তোমার যাওয়ার দরকার নেই।তোমার বাচ্চা সামলাও,এখন ঘুমোচ্ছে।
যশ বিন্দার নীচে নেমে গেল।
সন্ধ্যে হয়ে এসেছে বুঝতেই পারেনি।রান্না ঘরে শব্দ শুনে বুঝতে পারে মিতামাসী এসেছে।উঠে ঘরে গিয়ে দেখল বাচ্চাটা চিত হয়ে ঘুমোচ্ছে।হাত মুঠী করা মাঝে ঠোট নড়ছে।হাত দিয়ে ডায়াপার পরীক্ষা করল,শুকনো আছে।ফোনের রিং শুনে পল্টু ফোন ধরতে গেল।
মুন লাইটের নীচে গাড়ী থামতে দিলীপ এগিয়ে এল।সেদিকে না তাকিয়ে যশ বিন্দার ভিতরে ঢুকে গেল।একজন নার্স এগিয়ে এসে সঙ্গী হল।যে ঘরে জেসমিন ছিল সেখানে ঢুকে যশ বলল,ডার্লিং আমি এসেছি মাই লাভ কথা বলো।
পিছন থেকে কে যেন বলল, শী ওণ্ট স্পীক এনিমোর ড সোম।
পিছন ফিরে ড মজুমদারকে দেখে চীৎকার করে উঠল,হো-ও-ও-আ-ট?
--কেমো নিতে পারেনি।ভেরি উইক হার্ট।
যশ বিন্দার বেরিয়ে গাড়ীতে উঠল।দিলীপ জানলা দিয়ে উকি দিতে যশ বলল,শী ইজ নো মোর।এসো বলে গাড়ীর দরজা খুলে দিল।
অঙ্গন তাকে কিছু বলেনি পাছে পেটের সন্তানের কোনো ক্ষতি হয়।সবটা নিজের মধ্যে রেখে তিলে তিলে ক্ষত বিক্ষত হয়েছে।ওর মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করেনি।ওর এখন সাহারা দরকার খুব অন্যায় হয়ে গেছে।
--সকালে খেয়েছো?
--খেয়ে অফিস যাব বলে বেরিয়েছিলাম।
ক্লান্ত পায়ে যশ বিন্দার উপরে উঠল।দরজা খুলে দিল মৌসী।মৌসী কাদছিল বুঝতে পারে যশ।জিজ্ঞেস করল,অঙ্গন কোথায়?
হাত দিয়ে ঘর দেখিয়ে বলল,ফোনে খবর পাবার পর ছোড়দার কি কান্না।
উকি দিয়ে দেখল ছেলের পেটের উপর হাত রেখে অঙ্গন উপুড় হয়ে শুয়ে।যশ অন্য ঘরে গিয়ে বসল।মৌসী জিজ্ঞেস করে,বৌদি চা দেবো।
--চা?দাও।দিলীপ কিছু খাবে?
--না না শুধু চা হলেই চলবে।
 ফোন বাজতে যশ উঠে রিসিভার কানে লাগায়,না যাবে না।।...এক সপ্তাহ...ক্যান্সেল করে দিন...মিসেস সোম বলছি...ও এখন কথা বলবে না...আচ্ছা বলবো।ফোন রেখে দিল।  
ফিরে এসে দিলীপকে বলল,লেক ভিউ থেকে ফোন করেছিল।আচ্ছা দিলীপ বডি নিয়ে যাবার গাড়ি--।
--আমি সব দেখছি তুমি কিছু চিন্তা কোরনা।
--অঙ্গনের অবস্থা দেখছো আর কলকাত্তার সব চিনি না।
[+] 11 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব - by kumdev - 02-04-2020, 08:17 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)