31-03-2020, 08:32 PM
[৮৩]
যশ বিন্দার গাড়ি গ্যারাজে ঢুকিয়ে উপরে উঠে এল।বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।একবার মনে হল অঙ্গনকে ফোন করবে আবার ভাবে আরেকটু দেখা যাক।মনে মনে হিসেব করে,সকালেও কিছু মেহশুস করেনি।ঘরে ঢুকতেই মৌসী বলল,আপনের একটা জরুরী ফোন এসেছিল।
যশ বলল,বলে দাও বাড়ী নেই।ও হ্যা তুমি বাড়ী যাও।
--বৌদি আপনার শরীর খারাপ লাগছে?
যশ মৌসীকে এক নজর দেখে হাসল।তারপর কি ভেবে বলল,ঠিক আছে তুমি যাও।
সোফায় শরীর এলিয়ে দিল।অনেক সাবধান করেছে অঙ্গন,শুনলে গুসসা করবে।একেবারে ঘেমে গেছে।এখন একটু ভালো লাগছে।একটু পরে ড্যাফোডিলে ফোন করবে।ফোন বাজছে--বাজুক।
বেজে বেজে এক সময় কেটে গেল।অঙ্গন ফোন করেনি তো? আবার ফোন বাজে,যশ উঠে রিসিভার কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
--ম্যাডাম আমি সোমালি...মুন লাইটে দেখিয়েছিলাম।
--আমি এখন বসছিনা।
--রাখবেন না প্লীজ ম্যাডাম আপনি বলেছিলেন বাড়িতে...।
--আমি বলেছিলাম?
--আমি ভাল আছি একবার...খুব চিন্তায় আছি লাইফ নষ্ট হয়ে যাবে...।
কিসব বলছে যশ বুঝতে পারে না।মনে হচ্ছে কোনো কারণে মহিলা বিপর্যস্ত,একটু ভেবে বলল,বাড়ী চিনতে পারবেন?আচ্ছা আসুন।ফোন রেখে দিল যশ।
সোমালি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে যাক ম্যাডাম রাজী হয়েছে।দ্রুত তৈরী হতে থাকে।বিকেলে ছেলেকে আনতে যেতে হবে।প্রেসক্রিপশণ টেস্ট রিপোর্ট ব্যাগে ভরে নিল।এ্যান্টি বায়োটিক আর এক পাতা আছে।ক্রিমটা কিনতে হবে,ফেরার পথে কিনে নেবে।নীচে নেমে রিক্সাস্ট্যাণ্ডের দিকে এগোতে গিয়ে বিরক্তিতে নাক কুচকে গেল।মিলিদি কাছে এসে জিজ্ঞেস করে।কিরে বেরোচ্ছিস?
--হ্যা ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি।
--ম্যাডাম তো এখন বসছেন না।
--জানি ওর বাড়ীতে যাচ্ছি।তুমি এদিকে কোথায়?
--তোর কাছেই এসেছিলাম,অনেক কথা ছিল।
--কিন্তু আমি তো এখন--।
--তোর সঙ্গে যাবো?
মিলিদিই এই ডাক্তারের খবর দিয়েছিল,সঙ্গে গেলে অসুবিধে কোথায়?একজন সঙ্গী হবে।সোমালি বলল,তুমি যাবে?আচ্ছা চলো।
দুজনে রিক্সায় উঠে বলল,ড সোমের বাড়ী।
মিলি সেন আড়চোখে দেখে বুঝতে পারে সোমালি তার প্রতি ক্ষুব্ধ।সংকোচের সঙ্গে জিজ্ঞেস করে,তুই আমার উপর রেগে আছিস?
--রাগের কথা হচ্ছে না।তুমি একা মানুষ আমার সংসার আছে,এমনি শখ করে খুচখাচ একটু-আধটু মজা করতাম।আর তুমি কিনা শেষে আমাকেও তোমার লাইনে নিয়ে যাচ্ছিলে?
জনিনা ডাক্তার আজ কি বলবেন।
সোমালির মুড বুঝে মিলি সেন আর কথা বাড়ায় না।সোমালির মনে হল মিলিদিকে এত কড়া কথা না বললেই হতো।অবস্থা নরম করতে বলে,দেখো মিলিদি আমাকে ভুল বুঝোনা--।
মিলি সেন হেসে বলল,না না ভুল বুঝব কেন?তুই লাইনের কথা বললি না--।
--প্লীজ মিলিদি এখন ওসব থাক।
-- আজ আমি একা মানুষ,আশিস এ্যাক্সিডেণ্টে মারা না গেলে আজ আমারও সংসার থাকতো সন্তান থাকতো।মিলি সেনের গলা ধরে আসে।
--স্যরি মিলিদি।রিক্সা চলেছে তো চলেছে।সোমালি জিজ্ঞেস করে, ভাই তুমি ড সোমের বাড়ি চেনো তো?
--দাগদার বাবুর বাড়ি অন্ধা ভি চিনে।ডাক্তারবাবু?সোমালি বলল,ভাই দাড়াও দাঁড়াও।
রিক্সা দাড়াতে সোমালি জিজ্ঞেস করে,ডাক্তার বাবু নয় ম্যাডাম মানে মহিলা ডাক্তার?
--হা হা উনি ডাগদারবাবুর পত্নি আছেন।বাঙ্গালি নেই।
মনে হচ্ছে ঠিকই বলছে সোমালি বলল,একটু তাড়াতাড়ি চালাও ভাই।
আগের মত শারীরিক অস্বস্তির ভাব নেই।মৌসী এলে ড্যাফোডিলে ফোন করবে।যশ বিন্দার লুঙ্গি পরলেও কোমরে বাধন দেয়নি।জেন ঘুমোচ্ছে।মেয়েটা ঘুমোতে পারে বটে।নিজের পেটে আলতোভাবে হাত বোলাতে থাকে।কলিং বেল বাজতে বিরক্ত হয়।অঙ্গনকে বলে একজন সব সময়ের লোক রাখতে হবে।খাট থেকে নামতে আবার বেল বেজে উঠল।ঘর পেরিয়ে বারান্দায় গিয়ে নীচে উকি দিতে অবাক।প্রাজী তুই?
উপর দিকে তাকিয়ে পরমিত হাসছে।ভালই হল পরমিতকে দেখে মনে ভরসা হল।নীচে গিয়ে দরজা খুলে ভাইকে উপরে নিয়ে এল।
--তোরা যাসনি?
--গুরমিত চলে গেছে।দু-একদিন পর আমিও যাবো।ভাবলাম যাবার আগে তোর সঙ্গে দেখা করে যাই।
--খুব ভাল করেছিস।
--তুই আমাদের কত পেয়ারা বহিন--
যশ হাসে।পরমিত বলে,তোর সঙ্গে বহুত খারাপ ব্যবহার করেছি।
--ছাড় ঐসব।তুই এসেছিস খুব ভাল লাগছে।
--কিন্তু তোর একী হাল ডক্তার সাহেব কোথায়?
--ওর জরুরী অপারেশন আছে আগের থেকে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট,বোস চা বানাই।
--তুই বোস আমি বানাচ্ছি।
যশ চা পাত্তি দুধ চিনি দেখিয়ে দিয়ে আবার এসে বসল।
ছোটো বেলার কথা ভাবে।চাচাজীর দুই ছেলে কোনো মেয়ে ছিলনা।তাই গুরমিতরা ওকে খুব ভালবাসতো।এক সঙ্গে বড় হয়েছে দেশের বাড়ীতে।ব্যবসার কারণে চাচাজী দিল্লী চলে গেল।সকলে ভাবত যশ হয়তো পুলিশের চাকরি করবে।ডাক্তারির কথা কেউ ভাবেনি।খুব সিরিয়াসলি নয় যশ জয়েণ্টে বসেছিল।সুযোগ পেয়ে ভাবেনি ডক্তারী পড়া হবে।দিল্লী গিয়ে পড়ার মত সঙ্গতি ছিলনা যশের পরিবারের।চাচাজী তাকে দিল্লী নিয়ে ভর্তি করে দিল।
দু-গেলাস চা নিয়ে ঢুকলো পরমিত।চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,গুরমিত বহুত মাথা গরম।
--ছোড় ঐসব আপনা ভাই কিতনা দুশমনি করবে?
--বাবুজী তোর জন্য আমাদের গালি দেয়।বলে এক লেড়কি কেয়া কিয়া আর তোরা?
আবার বেল বাজে।যশ বলল,দেখতো প্রাজী কৌন?
পরমিত বারান্দায় গিয়ে ফিরে এসে বলল,দুটা আউরত।
আউরত?যশ উঠে বারান্দায় গিয়ে জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার?
--ম্যাডাম আপনি আসতে বলেছিলেন।
--আপনি ফোন করেছিলেন?
--হ্যা হ্যা ম্যাডাম।
যশ বিন্দার ভাইকে বলল, প্রাজী দরজা খুলে ওদের নীচের ঘরে বসতে বল।
যশ বিন্দার লুঙ্গিটা ভাল করে পরে একটা পাঞ্জাবী গায়ে এ্যাটাচিটা নিয়ে তৈরী হয়।পরমিত আসতে বলল,ডাক্তারের কোনো রিলেটিভ নাই।এক মামা আছে বহুত হারামী।ডাক্তার বিল্কুল বাচ্চা যেইসা।তুই বোস।
যশ বিন্দার নীচে নেমে গেল।দুজন বসে আছে পেশেণ্ট কে?একটা চেয়ারে বসে যশ জিজ্ঞেস করল,বলুন।
সোমালি বলল,ম্যাডাম মুনলাইটে আপনাকে দেখিয়েছিলাম।আপনি বলেছিলেন--।
যশ হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে মিলিসেনকে বাইরে যেতে বলল।এবার বলুন।
--আপনি এই প্রেস্ক্রিপশন দিয়েছিলেন আর এই টেস্ট করতে বলেছিলেন।
--দেখি টেস্ট রিপোর্ট।
সোমালি এগিয়ে দিতে যশ চোখ বোলাতে বোলাতে বলল,ক্লামিডিয়া বলেছিলাম।আর চুলকায়?
--না ম্যাডাম।
--আচ্ছা ঐ সোফায় শুয়ে পড়ুন।
সোমালি চিত হয়ে শুয়ে পড়ে।যশ ব্যাগ থেকে একটা টর্চ বের করে কাপড় সরিয়ে যোনীর উপর আলো ফেলে দেখতে থাকে।যোনীর ঠোট জোড়ার ফোলাভাব আগের থেকে কমেছে।
চামড়ার স্বাভাবিক রঙ ফিরে এসেছে।কাপড় নামিয়ে দিয়ে যশ বলল,মলম লাগাবার আর দরকার নেই।ট্যাবলেট গুলো যা আছে যেমন খাচ্ছিলেন খাবেন।
যশ টেবিলে এসে বসল।সোমালি এসে যশের সামনে বসতে যশ বলল,এখন স্বাভাবিক জীবন যাপণে বাধা নেই।একটু ভেবে বলল,একটা প্রাইভেট ব্যাপার জিজ্ঞেস করব?
--হ্যা হ্যা বলুন ম্যাডাম।
যশ গলা নামিয়ে বলল,আপনার হাজব্যাণ্ড এ্যাকটিভ আছেন?
সোমালি লজ্জা পায়।ঠোটে ঠোট চেপে নখ খুটতে থাকে।
--এটা মেয়েদের অহঙ্কার।place of creation এটার অমর্যাদা করবেন না।
লজ্জায় সোমালির মাথা নুয়ে আসে।চেয়ার ছেড়ে যশ উঠে দাড়াতে সোমালি বলল,ম্যাডাম আপনার ফিজ?
যশের ঠোটে হাসি বলল,বাড়ীতে রোগী দেখিনা।ওকে?
উপরে উঠে এল তার সঙ্গে মৌসীও ,যশ মিতাকে বলল,মৌসী আমার প্রজী মানে বড়া ভাই।জেনের দুধ বানিয়ে তুমি একটু চা করবে।
--পরমিত প্রাজী খুব বোর হচ্ছিলি।তোর সঙ্গে কথাই হলনা।যশ দুঃখ প্রকাশ করে।
ভিতরে গিয়ে ব্যাগ রেখে ফিরে এসে বলল,তুই বোনকে দেখতে এসেছিলি,দেখেই চলে যাবি?
--মতলব?
--আজ এখানে থেকে যা প্রাজী।ওর সঙ্গেও দেখা হবে।
প্রস্তাবটা পরমিতের খারাপ লাগে না।খারাপ লাগে ভেবে ওর সঙ্গে কত খারাপ ব্যবহার করেছে।
--তুই ফোন করে জানিয়ে দে কাল যাবি।
পরমিত উঠে ফোনের কাছে গেল।
সোমালি আর মিলি রিক্সায় ওঠে।মিলির কৌতুহল ড ম্যাডাম কি বললেন?সোমার মুখ দেখে জিজ্ঞেস করার ভরসা পায় না।নিজে নিজে বলে,মুনলাইটে কেন বসেনা বোঝা গেল।
সোমালি জিজ্ঞেস করে,মানে?
--দেখে বুঝলি না ম্যাডামের বাচ্চা হবে।
সোমালির এসব কথা ভাল লাগছে না।এটা মেয়েদের অহঙ্কার,ম্যাডামের এই কথাটা তখনও মনে অনুরণিত হতে থাকে।নিজেকে সুমনের কাছে অপরাধী মনে হয়।
দুই ভাই বোন কথা বলতে বলতে হুশ হয়,যশ বলল,এত দেরী তো হয়না।মৌসী তুমি প্রাজীর খানা লাগাও।
--ডাক্তার কো আনে দেনা।
--তুই খেয়ে নে।অঙ্গন আসলে আমি ওর সঙ্গে খাবো।আমার ভুখ নাই।
--যশ তোর তবিয়ত ভালো তো?
যশ বিন্দার হাসল।
অপারেশন এবং রোগী দেখতে দেখতে খেয়াল থাকে না সময়ের কথা।কাউণ্টারের সামনে ভীড়।একজন নার্স বসে রোগীর পরিবারের খোজ খবরের জবাব দিচ্ছে।একজনের সঙ্গে বচশা শুরু হল।নার্স বলছে, ড বৈদ্যনাথন ভালো ডাক্তার।ভদ্রলোক নাছোরবান্দা,ড সোমকে দিয়ে অপারেশন করাবেন।
--তাহলে অনেক দেরী হয়ে যাবে।এক মাসের আগে ওর পক্ষে সম্ভব নয়।
পার্বতী রাও নীচে নেমে ভীড় দেখে জিজ্ঞেস করলেন,কি ব্যাপার?
নার্স ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলে।
ম্যাডাম পার্বতী বোঝতে থাকেন,আপনাকে সুযোগ দিলে একজনকে বাদ দিতে হবে।আর যদি অপেক্ষা করতে রাজী থাকেন কিছু বলার নেই।এখানকার সব ডাক্তারই যথেষ্ট অভিজ্ঞ।তারপর হেটে ড সোমের চেম্বারে ঢুকলেন।ড সোম উঠে দাড়াতে বললেন,বোসো বোসো।তোমার হয়ে গেলে একটু উপরে এসো।মাম্মীর সঙ্গে সঙ্গেই উপরে উঠে গেল।
ঘরে বসিয়ে পার্বতী রাও ফোনের কাছে গিয়ে বলল,গোদাবরী তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়।তারপর ডায়াল ঘুরিয়ে রিসিভার এগিয়ে দিলেন,ড সোম রিসিভার কানে লাগায়,ফোন রিং হচ্ছে।ওপাশ থেকে হ্যালো বলতে ড সোম বলল,লেক ভিউ।
--ড সোম?আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে ফোন করেছিলাম।গোদাবরীর গলা পাওয়া গেল।
--বাবাজী ভালো আছেন?
--খুশ মেজাজে আছেন।আপনার খুব সুখ্যাতি করছিলেন।
--যে ওষুধগুলো লিখে দিয়েছি সময়মতো খাওয়াবেন।
--হ্যা হ্যা বাবাজি বলছিলেন চিন্তা করবেন না।আপনি খুব লাকি আছেন।এক আউরত সব ঝড় সামাল দেবে মানে সাহারা হবে।ড সোম মাম্মীর দিকে তাকাল,আউরত সম্ভবত মাম্মী।গোদাবরী গলার স্বর নামিয়ে বলল,একটা রিকোয়েস্ট আছে।সেদিন ইমোশন্যালি কিছু কথা বলেছিলাম কাইণ্ডলি পারুকে ওসব বলবেন না।ও আমার ভাল বন্ধু।ড সোম বলল,রাখছি?গুড নাইট।
আবার সেই ঝড়।মাম্মীর কাছে বিদায় নিয়ে নীচে নেমে এল।বাবাজীর কথা যশকে বলা যাবে না হেসেই উড়িয়ে দেবে আর মাম্মী্র কাছে বাবাজী বাকসিদ্ধ একেবারে বিপরীত।
জেনকে নিয়ে শুয়ে আছে যশ।পরমিত খেতে বসেছে।সুস্বাদু খাবার পরমিত জিজ্ঞেস করে,মৌসী আপনি সুন্দর পাকিয়েছেন।
একটু সময় বুঝতে পারে কি বলছে,মিতা বলল,সব বৌদি করেছে আমি গরম করে দিলাম।
পরমিতের মজা লাগে যে যশকে চিনতো টো-টো ঘুরে বেড়াতো ও এত সুন্দর সংসারী হয়ে উঠেছে ভেবে অবাক লাগে।
প্রাজী--পরমিত ভাইয়া! হঠাৎ চিৎকার কানে আসতে পরমিত টেবিল ছেড়ে ছুটে ঘরে যায়।যশ একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল,ফোন কর আমার নাম বলবি।
যশ চিত হয়ে শুয়ে দাত চেপে ঘাড় এদিক-ওদিক করছে। বিবর্ণ মুখের চেহারা।পরমিত ডায়াল ঘুরিয়ে রিসিভার কানে লাগায়।ড যশ বিন্দারের বাড়ী থেকে বলছি--হ্যা হ্যা--এ্যাম্বুলেন্স? আচ্ছা আচ্ছা থোড়া জলদি কিজিয়ে।
পরমিত মুখ ধুয়ে বারান্দায় গিয়ে অপেক্ষা করে।মৌসীর সাহায্য নিয়ে চেঞ্জ করে যশ।লুঙ্গি ভিজে গেছে।এ্যাম্বুলেন্স এসে থামতে তার থেকে দুটো লোক বেরিয়ে স্ট্রেচার টেনে বের করছে।পরমিত অপেক্ষা করেনা, বোনকে পাঁজা কোলা করে তুলে সিড়ী দিয়ে নীচে নেমে গেল।জেন উঠে পড়েছে,মামের সঙ্গে যাবার জন্য বায়না করে।মিতা মাসী তাকে কোলে নিয়ে সামলাতে থাকে।এ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলল ড্যাফোডিল নার্সিং হোম।
যশ বিন্দার গাড়ি গ্যারাজে ঢুকিয়ে উপরে উঠে এল।বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।একবার মনে হল অঙ্গনকে ফোন করবে আবার ভাবে আরেকটু দেখা যাক।মনে মনে হিসেব করে,সকালেও কিছু মেহশুস করেনি।ঘরে ঢুকতেই মৌসী বলল,আপনের একটা জরুরী ফোন এসেছিল।
যশ বলল,বলে দাও বাড়ী নেই।ও হ্যা তুমি বাড়ী যাও।
--বৌদি আপনার শরীর খারাপ লাগছে?
যশ মৌসীকে এক নজর দেখে হাসল।তারপর কি ভেবে বলল,ঠিক আছে তুমি যাও।
সোফায় শরীর এলিয়ে দিল।অনেক সাবধান করেছে অঙ্গন,শুনলে গুসসা করবে।একেবারে ঘেমে গেছে।এখন একটু ভালো লাগছে।একটু পরে ড্যাফোডিলে ফোন করবে।ফোন বাজছে--বাজুক।
বেজে বেজে এক সময় কেটে গেল।অঙ্গন ফোন করেনি তো? আবার ফোন বাজে,যশ উঠে রিসিভার কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
--ম্যাডাম আমি সোমালি...মুন লাইটে দেখিয়েছিলাম।
--আমি এখন বসছিনা।
--রাখবেন না প্লীজ ম্যাডাম আপনি বলেছিলেন বাড়িতে...।
--আমি বলেছিলাম?
--আমি ভাল আছি একবার...খুব চিন্তায় আছি লাইফ নষ্ট হয়ে যাবে...।
কিসব বলছে যশ বুঝতে পারে না।মনে হচ্ছে কোনো কারণে মহিলা বিপর্যস্ত,একটু ভেবে বলল,বাড়ী চিনতে পারবেন?আচ্ছা আসুন।ফোন রেখে দিল যশ।
সোমালি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে যাক ম্যাডাম রাজী হয়েছে।দ্রুত তৈরী হতে থাকে।বিকেলে ছেলেকে আনতে যেতে হবে।প্রেসক্রিপশণ টেস্ট রিপোর্ট ব্যাগে ভরে নিল।এ্যান্টি বায়োটিক আর এক পাতা আছে।ক্রিমটা কিনতে হবে,ফেরার পথে কিনে নেবে।নীচে নেমে রিক্সাস্ট্যাণ্ডের দিকে এগোতে গিয়ে বিরক্তিতে নাক কুচকে গেল।মিলিদি কাছে এসে জিজ্ঞেস করে।কিরে বেরোচ্ছিস?
--হ্যা ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি।
--ম্যাডাম তো এখন বসছেন না।
--জানি ওর বাড়ীতে যাচ্ছি।তুমি এদিকে কোথায়?
--তোর কাছেই এসেছিলাম,অনেক কথা ছিল।
--কিন্তু আমি তো এখন--।
--তোর সঙ্গে যাবো?
মিলিদিই এই ডাক্তারের খবর দিয়েছিল,সঙ্গে গেলে অসুবিধে কোথায়?একজন সঙ্গী হবে।সোমালি বলল,তুমি যাবে?আচ্ছা চলো।
দুজনে রিক্সায় উঠে বলল,ড সোমের বাড়ী।
মিলি সেন আড়চোখে দেখে বুঝতে পারে সোমালি তার প্রতি ক্ষুব্ধ।সংকোচের সঙ্গে জিজ্ঞেস করে,তুই আমার উপর রেগে আছিস?
--রাগের কথা হচ্ছে না।তুমি একা মানুষ আমার সংসার আছে,এমনি শখ করে খুচখাচ একটু-আধটু মজা করতাম।আর তুমি কিনা শেষে আমাকেও তোমার লাইনে নিয়ে যাচ্ছিলে?
জনিনা ডাক্তার আজ কি বলবেন।
সোমালির মুড বুঝে মিলি সেন আর কথা বাড়ায় না।সোমালির মনে হল মিলিদিকে এত কড়া কথা না বললেই হতো।অবস্থা নরম করতে বলে,দেখো মিলিদি আমাকে ভুল বুঝোনা--।
মিলি সেন হেসে বলল,না না ভুল বুঝব কেন?তুই লাইনের কথা বললি না--।
--প্লীজ মিলিদি এখন ওসব থাক।
-- আজ আমি একা মানুষ,আশিস এ্যাক্সিডেণ্টে মারা না গেলে আজ আমারও সংসার থাকতো সন্তান থাকতো।মিলি সেনের গলা ধরে আসে।
--স্যরি মিলিদি।রিক্সা চলেছে তো চলেছে।সোমালি জিজ্ঞেস করে, ভাই তুমি ড সোমের বাড়ি চেনো তো?
--দাগদার বাবুর বাড়ি অন্ধা ভি চিনে।ডাক্তারবাবু?সোমালি বলল,ভাই দাড়াও দাঁড়াও।
রিক্সা দাড়াতে সোমালি জিজ্ঞেস করে,ডাক্তার বাবু নয় ম্যাডাম মানে মহিলা ডাক্তার?
--হা হা উনি ডাগদারবাবুর পত্নি আছেন।বাঙ্গালি নেই।
মনে হচ্ছে ঠিকই বলছে সোমালি বলল,একটু তাড়াতাড়ি চালাও ভাই।
আগের মত শারীরিক অস্বস্তির ভাব নেই।মৌসী এলে ড্যাফোডিলে ফোন করবে।যশ বিন্দার লুঙ্গি পরলেও কোমরে বাধন দেয়নি।জেন ঘুমোচ্ছে।মেয়েটা ঘুমোতে পারে বটে।নিজের পেটে আলতোভাবে হাত বোলাতে থাকে।কলিং বেল বাজতে বিরক্ত হয়।অঙ্গনকে বলে একজন সব সময়ের লোক রাখতে হবে।খাট থেকে নামতে আবার বেল বেজে উঠল।ঘর পেরিয়ে বারান্দায় গিয়ে নীচে উকি দিতে অবাক।প্রাজী তুই?
উপর দিকে তাকিয়ে পরমিত হাসছে।ভালই হল পরমিতকে দেখে মনে ভরসা হল।নীচে গিয়ে দরজা খুলে ভাইকে উপরে নিয়ে এল।
--তোরা যাসনি?
--গুরমিত চলে গেছে।দু-একদিন পর আমিও যাবো।ভাবলাম যাবার আগে তোর সঙ্গে দেখা করে যাই।
--খুব ভাল করেছিস।
--তুই আমাদের কত পেয়ারা বহিন--
যশ হাসে।পরমিত বলে,তোর সঙ্গে বহুত খারাপ ব্যবহার করেছি।
--ছাড় ঐসব।তুই এসেছিস খুব ভাল লাগছে।
--কিন্তু তোর একী হাল ডক্তার সাহেব কোথায়?
--ওর জরুরী অপারেশন আছে আগের থেকে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট,বোস চা বানাই।
--তুই বোস আমি বানাচ্ছি।
যশ চা পাত্তি দুধ চিনি দেখিয়ে দিয়ে আবার এসে বসল।
ছোটো বেলার কথা ভাবে।চাচাজীর দুই ছেলে কোনো মেয়ে ছিলনা।তাই গুরমিতরা ওকে খুব ভালবাসতো।এক সঙ্গে বড় হয়েছে দেশের বাড়ীতে।ব্যবসার কারণে চাচাজী দিল্লী চলে গেল।সকলে ভাবত যশ হয়তো পুলিশের চাকরি করবে।ডাক্তারির কথা কেউ ভাবেনি।খুব সিরিয়াসলি নয় যশ জয়েণ্টে বসেছিল।সুযোগ পেয়ে ভাবেনি ডক্তারী পড়া হবে।দিল্লী গিয়ে পড়ার মত সঙ্গতি ছিলনা যশের পরিবারের।চাচাজী তাকে দিল্লী নিয়ে ভর্তি করে দিল।
দু-গেলাস চা নিয়ে ঢুকলো পরমিত।চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,গুরমিত বহুত মাথা গরম।
--ছোড় ঐসব আপনা ভাই কিতনা দুশমনি করবে?
--বাবুজী তোর জন্য আমাদের গালি দেয়।বলে এক লেড়কি কেয়া কিয়া আর তোরা?
আবার বেল বাজে।যশ বলল,দেখতো প্রাজী কৌন?
পরমিত বারান্দায় গিয়ে ফিরে এসে বলল,দুটা আউরত।
আউরত?যশ উঠে বারান্দায় গিয়ে জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার?
--ম্যাডাম আপনি আসতে বলেছিলেন।
--আপনি ফোন করেছিলেন?
--হ্যা হ্যা ম্যাডাম।
যশ বিন্দার ভাইকে বলল, প্রাজী দরজা খুলে ওদের নীচের ঘরে বসতে বল।
যশ বিন্দার লুঙ্গিটা ভাল করে পরে একটা পাঞ্জাবী গায়ে এ্যাটাচিটা নিয়ে তৈরী হয়।পরমিত আসতে বলল,ডাক্তারের কোনো রিলেটিভ নাই।এক মামা আছে বহুত হারামী।ডাক্তার বিল্কুল বাচ্চা যেইসা।তুই বোস।
যশ বিন্দার নীচে নেমে গেল।দুজন বসে আছে পেশেণ্ট কে?একটা চেয়ারে বসে যশ জিজ্ঞেস করল,বলুন।
সোমালি বলল,ম্যাডাম মুনলাইটে আপনাকে দেখিয়েছিলাম।আপনি বলেছিলেন--।
যশ হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে মিলিসেনকে বাইরে যেতে বলল।এবার বলুন।
--আপনি এই প্রেস্ক্রিপশন দিয়েছিলেন আর এই টেস্ট করতে বলেছিলেন।
--দেখি টেস্ট রিপোর্ট।
সোমালি এগিয়ে দিতে যশ চোখ বোলাতে বোলাতে বলল,ক্লামিডিয়া বলেছিলাম।আর চুলকায়?
--না ম্যাডাম।
--আচ্ছা ঐ সোফায় শুয়ে পড়ুন।
সোমালি চিত হয়ে শুয়ে পড়ে।যশ ব্যাগ থেকে একটা টর্চ বের করে কাপড় সরিয়ে যোনীর উপর আলো ফেলে দেখতে থাকে।যোনীর ঠোট জোড়ার ফোলাভাব আগের থেকে কমেছে।
চামড়ার স্বাভাবিক রঙ ফিরে এসেছে।কাপড় নামিয়ে দিয়ে যশ বলল,মলম লাগাবার আর দরকার নেই।ট্যাবলেট গুলো যা আছে যেমন খাচ্ছিলেন খাবেন।
যশ টেবিলে এসে বসল।সোমালি এসে যশের সামনে বসতে যশ বলল,এখন স্বাভাবিক জীবন যাপণে বাধা নেই।একটু ভেবে বলল,একটা প্রাইভেট ব্যাপার জিজ্ঞেস করব?
--হ্যা হ্যা বলুন ম্যাডাম।
যশ গলা নামিয়ে বলল,আপনার হাজব্যাণ্ড এ্যাকটিভ আছেন?
সোমালি লজ্জা পায়।ঠোটে ঠোট চেপে নখ খুটতে থাকে।
--এটা মেয়েদের অহঙ্কার।place of creation এটার অমর্যাদা করবেন না।
লজ্জায় সোমালির মাথা নুয়ে আসে।চেয়ার ছেড়ে যশ উঠে দাড়াতে সোমালি বলল,ম্যাডাম আপনার ফিজ?
যশের ঠোটে হাসি বলল,বাড়ীতে রোগী দেখিনা।ওকে?
উপরে উঠে এল তার সঙ্গে মৌসীও ,যশ মিতাকে বলল,মৌসী আমার প্রজী মানে বড়া ভাই।জেনের দুধ বানিয়ে তুমি একটু চা করবে।
--পরমিত প্রাজী খুব বোর হচ্ছিলি।তোর সঙ্গে কথাই হলনা।যশ দুঃখ প্রকাশ করে।
ভিতরে গিয়ে ব্যাগ রেখে ফিরে এসে বলল,তুই বোনকে দেখতে এসেছিলি,দেখেই চলে যাবি?
--মতলব?
--আজ এখানে থেকে যা প্রাজী।ওর সঙ্গেও দেখা হবে।
প্রস্তাবটা পরমিতের খারাপ লাগে না।খারাপ লাগে ভেবে ওর সঙ্গে কত খারাপ ব্যবহার করেছে।
--তুই ফোন করে জানিয়ে দে কাল যাবি।
পরমিত উঠে ফোনের কাছে গেল।
সোমালি আর মিলি রিক্সায় ওঠে।মিলির কৌতুহল ড ম্যাডাম কি বললেন?সোমার মুখ দেখে জিজ্ঞেস করার ভরসা পায় না।নিজে নিজে বলে,মুনলাইটে কেন বসেনা বোঝা গেল।
সোমালি জিজ্ঞেস করে,মানে?
--দেখে বুঝলি না ম্যাডামের বাচ্চা হবে।
সোমালির এসব কথা ভাল লাগছে না।এটা মেয়েদের অহঙ্কার,ম্যাডামের এই কথাটা তখনও মনে অনুরণিত হতে থাকে।নিজেকে সুমনের কাছে অপরাধী মনে হয়।
দুই ভাই বোন কথা বলতে বলতে হুশ হয়,যশ বলল,এত দেরী তো হয়না।মৌসী তুমি প্রাজীর খানা লাগাও।
--ডাক্তার কো আনে দেনা।
--তুই খেয়ে নে।অঙ্গন আসলে আমি ওর সঙ্গে খাবো।আমার ভুখ নাই।
--যশ তোর তবিয়ত ভালো তো?
যশ বিন্দার হাসল।
অপারেশন এবং রোগী দেখতে দেখতে খেয়াল থাকে না সময়ের কথা।কাউণ্টারের সামনে ভীড়।একজন নার্স বসে রোগীর পরিবারের খোজ খবরের জবাব দিচ্ছে।একজনের সঙ্গে বচশা শুরু হল।নার্স বলছে, ড বৈদ্যনাথন ভালো ডাক্তার।ভদ্রলোক নাছোরবান্দা,ড সোমকে দিয়ে অপারেশন করাবেন।
--তাহলে অনেক দেরী হয়ে যাবে।এক মাসের আগে ওর পক্ষে সম্ভব নয়।
পার্বতী রাও নীচে নেমে ভীড় দেখে জিজ্ঞেস করলেন,কি ব্যাপার?
নার্স ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলে।
ম্যাডাম পার্বতী বোঝতে থাকেন,আপনাকে সুযোগ দিলে একজনকে বাদ দিতে হবে।আর যদি অপেক্ষা করতে রাজী থাকেন কিছু বলার নেই।এখানকার সব ডাক্তারই যথেষ্ট অভিজ্ঞ।তারপর হেটে ড সোমের চেম্বারে ঢুকলেন।ড সোম উঠে দাড়াতে বললেন,বোসো বোসো।তোমার হয়ে গেলে একটু উপরে এসো।মাম্মীর সঙ্গে সঙ্গেই উপরে উঠে গেল।
ঘরে বসিয়ে পার্বতী রাও ফোনের কাছে গিয়ে বলল,গোদাবরী তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়।তারপর ডায়াল ঘুরিয়ে রিসিভার এগিয়ে দিলেন,ড সোম রিসিভার কানে লাগায়,ফোন রিং হচ্ছে।ওপাশ থেকে হ্যালো বলতে ড সোম বলল,লেক ভিউ।
--ড সোম?আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে ফোন করেছিলাম।গোদাবরীর গলা পাওয়া গেল।
--বাবাজী ভালো আছেন?
--খুশ মেজাজে আছেন।আপনার খুব সুখ্যাতি করছিলেন।
--যে ওষুধগুলো লিখে দিয়েছি সময়মতো খাওয়াবেন।
--হ্যা হ্যা বাবাজি বলছিলেন চিন্তা করবেন না।আপনি খুব লাকি আছেন।এক আউরত সব ঝড় সামাল দেবে মানে সাহারা হবে।ড সোম মাম্মীর দিকে তাকাল,আউরত সম্ভবত মাম্মী।গোদাবরী গলার স্বর নামিয়ে বলল,একটা রিকোয়েস্ট আছে।সেদিন ইমোশন্যালি কিছু কথা বলেছিলাম কাইণ্ডলি পারুকে ওসব বলবেন না।ও আমার ভাল বন্ধু।ড সোম বলল,রাখছি?গুড নাইট।
আবার সেই ঝড়।মাম্মীর কাছে বিদায় নিয়ে নীচে নেমে এল।বাবাজীর কথা যশকে বলা যাবে না হেসেই উড়িয়ে দেবে আর মাম্মী্র কাছে বাবাজী বাকসিদ্ধ একেবারে বিপরীত।
জেনকে নিয়ে শুয়ে আছে যশ।পরমিত খেতে বসেছে।সুস্বাদু খাবার পরমিত জিজ্ঞেস করে,মৌসী আপনি সুন্দর পাকিয়েছেন।
একটু সময় বুঝতে পারে কি বলছে,মিতা বলল,সব বৌদি করেছে আমি গরম করে দিলাম।
পরমিতের মজা লাগে যে যশকে চিনতো টো-টো ঘুরে বেড়াতো ও এত সুন্দর সংসারী হয়ে উঠেছে ভেবে অবাক লাগে।
প্রাজী--পরমিত ভাইয়া! হঠাৎ চিৎকার কানে আসতে পরমিত টেবিল ছেড়ে ছুটে ঘরে যায়।যশ একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল,ফোন কর আমার নাম বলবি।
যশ চিত হয়ে শুয়ে দাত চেপে ঘাড় এদিক-ওদিক করছে। বিবর্ণ মুখের চেহারা।পরমিত ডায়াল ঘুরিয়ে রিসিভার কানে লাগায়।ড যশ বিন্দারের বাড়ী থেকে বলছি--হ্যা হ্যা--এ্যাম্বুলেন্স? আচ্ছা আচ্ছা থোড়া জলদি কিজিয়ে।
পরমিত মুখ ধুয়ে বারান্দায় গিয়ে অপেক্ষা করে।মৌসীর সাহায্য নিয়ে চেঞ্জ করে যশ।লুঙ্গি ভিজে গেছে।এ্যাম্বুলেন্স এসে থামতে তার থেকে দুটো লোক বেরিয়ে স্ট্রেচার টেনে বের করছে।পরমিত অপেক্ষা করেনা, বোনকে পাঁজা কোলা করে তুলে সিড়ী দিয়ে নীচে নেমে গেল।জেন উঠে পড়েছে,মামের সঙ্গে যাবার জন্য বায়না করে।মিতা মাসী তাকে কোলে নিয়ে সামলাতে থাকে।এ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলল ড্যাফোডিল নার্সিং হোম।