30-03-2020, 03:09 PM
পর্ব-২২
পুবালী এর মাঝে ফোন করে বাড়িতে জানিয়ে দেয় যে ওরা রওনা দিয়েছে, জয়শাল্মির পৌঁছে জানিয়ে দেবে। রাস্তার অত্যধিক যানজটের ফলে জয়পুর পৌঁছতে পৌঁছতে বেশ রাত হয়ে যায়, প্রায় রাত ন’টা। জয়পুরে নেমে রাতের ডিনার সেরে নিল ওরা। বাইরে কনকনে ঠাণ্ডা, রাস্তায় কুকুর ছাড়া আর কোন প্রাণীর দেখা নেই। এবারে সিকর রোড ধরে এগিয়ে যেতে হবে সেই বিকানীর পর্যন্ত তারপরে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার মরুভুমির মাঝখান দিয়ে যাত্রা। জয়পুর থেকে যখন যাত্রা শুরু করে তখন বাজে রাত সাড়ে দশটা। গাড়ির হেডলাইটের আলো গিয়ে ফিরেও আসেনা, এই রকম ঘুটঘুটে অন্ধকার। পুবালী আবার সামনে চলে গেছে, নিজের বরের পাশে, গিয়ারের ওপর দিয়ে প্রায় গা ঘেঁসে বসে। পেছনে বন্দনাকে এক প্রকার কোলের ওপরে তুলে বসে স্যামন্তক।
কিছুক্ষণের মধ্যে মনে হল যেন ঘুম পাবে। সিতাভ্রর দু’চোখ ঢুলু ঢুলু, গাড়ি সিকর পৌঁছানোর একটু আগে গোঁত্তা খেয়ে প্রায় একটা গাছে ধাক্কা মারার যোগাড়। ব্যাস, সেই দেখে সবার ঘুমের গেল বারোটা বেজে। বন্দনা কি সুন্দর স্যামন্তকের বুকের ওপরে মাথা দিয়ে আদর খাচ্ছিল, গেল সেটা ভেস্তে। সবার যেন প্রান হাতে চলে এলো।
স্যামন্তক, সিতাভ্রর অবস্থা দেখে বলল “দাও, আমাকে বাকিটা আমি চালাচ্ছি।”
পুবালী জিজ্ঞেস করল “তোর ঘুম পাচ্ছে না?”
“না ঘুমের তো বারোটা বাজিয়ে দিল তোর বর।” স্যামন্তক সিতাভ্রর উদেশ্য বলে উঠলো। সিতাভ্র আর স্যামন্তক দু’জনে গাড়ি থেকে নেমে একটু গাড়ির এদিক ওদিকে দেখে নিল, সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি না। দেখে সন্তুষ্ট হয়ে স্যামন্তক সামনে স্টিয়ারিং ধরে বসে পড়লো। বন্দনা পাশের সিটে, সিতাভ্রকে পুবালী পেছনে ডেকে নিয়েছে। গাড়ি আবার ধেয়ে চলে, নিস্তব্ধ নিশুতি রাতের অন্ধকার চিরে। শুরু শুরু তে একটু খানি ব্রেক আক্সিলেটর নিয়ে অসুবিধা হয়েছিল স্যামন্তকের, কয়েক কিলোমিটার পেরিয়ে যেতেই, সব অসুবিধা কাটিয়ে গাড়ি ছোটাতে শুরু করে দেয় খালি রাস্তার ওপর দিয়ে।
কিছুক্ষণের মধ্যে সিকর পেরিয়ে যায় ওরা, বন্দনা পেছনে তাকিয়ে দেখে যে সিতাভ্র বউকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে। পা দুটি ভাঁজ করে সিটের ওপরে রেখে, স্যামন্তকের দিকে গা ঘেঁসে বসে।
“কি গো ঠাণ্ডা লাগছে” জিজ্ঞেস করে বন্দনা।
একবার ধিরে করে পেছন দিকে তাকায় স্যামন্তক, দেখে দিদি জামাইবাবু ঘুমিয়ে পড়েছে। বন্দনার গালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে “ঠাণ্ডা লাগবে কিকরে পাশে যদি এত উষ্ণতা নিয়ে কেউ বসে থাকে তাহলে তো এবারে আমি গাড়ি নিয়ে বালিতে চড়িয়ে দেব।”
হেসে ফেলে বন্দনা “অনেক হয়েছে, তোমার প্রেম নিবেদন। সামনে দেখে গাড়ি না চালালে এবারে সত্যি কিছু একটা ঘটিয়ে দেবে।”
“সিট পেছনে হেলিয়ে দিয়ে তুমি ঘুমোতে পারো।” স্যামন্তক বলে।
“তুমি জেগে গাড়ি চালাবে আর আমি ঘুমব, আমি অতটা পাষাণ হৃদয়ের মেয়ে নই সামু” মাথার চুলে বিলি কেটে উত্তর দেয় বন্দনা।
“উমম… চুলে হাত দিও না, তোমার হাতের ছোঁয়ায় কিন্তু আমার ভেতরে কেমন কেমন করছে। গাড়ি দাঁর করিয়ে দিয়ে কিন্তু……” বত্রিসটি দন্ত বিকশিত করে স্যামন্তক চোখ টিপে বলে।
কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে বন্দনা “গাড়ি দাঁড় করিয়ে কি করবে?”
“দেখতে চাও কি করব?”
বন্দনাও কম যায় না স্যামন্তকের সাথে খুনসুটি করতে, জ্যাকেটের চেন খুলে দেয় “হ্যাঁ করবে টাকি, তুমি কিছুই করতে পারবে না, একে তো হাতে স্টিয়ারিং ধরে তারপরে পেছনে তোমার দিদি।” বলেই হি হি করে হেসে দেয়।
স্যামন্তকের অবস্থা খারাপ, গাড়ি চালাবে কি, ওর স্বর্গের নর্তকী তো গাড়ির মধ্যে দুষ্টুমি শুরু করে দিয়েছে। অসুবিধা তো স্যামন্তকের, বন্দনার তো সিটের পেছনে লুকিয়ে, পেছন থেকে কেউ দেখতে পাবেনা ও কি করছে। ডান হাত, স্টিয়ারিঙ্গে বাঁ হাত গিয়ারের ওপরে, চোখ সামনের দিকে, চোয়াল শক্ত। প্রেয়সীর দুষ্টুমি দেখতে হলে গাড়ি থামাতে হবে আর দিদি জেগে গেলে একদম কেলেঙ্কারি কাণ্ড।
মৃদু ধমকানির সুরে বলে স্যামন্তক “বদমাশি করা থামাবে, না হলে আমি ঠিক গাড়ি থামিয়ে দেব এবারে।”
মাথার পেছনে হাত দিয়ে চুল খুলে ফেলে বন্দনা, মাথা ঝাঁকিয়ে নিয়ে চুল গুলো এলোমেলো করে দেয়, কিছু গুচ্ছ চুল ওর মুখের ওপরে এসে যায়, কিঞ্চিত ঢেকে যায় মুখটা “ওকে, আমি কিছু করব না।” কিন্তু উচ্ছল নারী তার প্রেমিকের হৃদয় আন্দলিত করার জন্য রূপের ডালি সাজাতে শুরু করে ঐ নিশুতি রাতের অন্ধকারে। স্যামন্তকের গালে মাথায় বন্দনার চুল উড়ে আসে।
এবারে রেগে যায় স্যামন্তক, গাড়িতে ব্রেক কষিয়ে বলে “ধুর আমি আর চালাব না।”
ব্রেকের চোটে সামনে ঝুঁকে পরে বন্দনা, দিদি আর সিতাভ্র জেগে যায়। “কি হল” ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করে পুবালী। বন্দনা উত্তর দেয় যে গাড়ির সামনে কুকুর এসে গেছিল তাই গাড়ি দাঁর করিয়ে দিয়েছে। স্যামন্তক একবার কটমট করে তাকাল বন্দনার দিকে, মাথা দিয়ে মাথায় টোকা মেরে আবার গাড়ি চালাতে শুরু করল।
গাড়ি কিছুক্ষণের মধ্যে বিকানির ছাড়িয়ে যায়। বন্দনা চুপ করে স্যামন্তকের সিটের পেছনে হাত রেখে বসে। গাড়ি সিঙ্গেল লেন রোড ধরে ধেয়ে চলে। সামনে পেছনে কোণ গাড়ি নেই, দুপাশে কিছুই নেই, কোণ গ্রাম নেই, কোণ বসতি নেই, মাঝে মাঝে গাড়ি ধিরে করে দুপাশের আঁধারের মাঝে দেখতে চেষ্টা করে স্যামন্তক।
বন্দনা জিজ্ঞেস করে “কি আছে গো দুপাশে।”
“কিছু নেই, শুধু মনে হয় ছোটো ছোটো ঝোপ ঝাড় আর কিছু নেই।”
কানে কানে ফিস ফিস করে বলে “এই ঝোপঝাড়ের মধ্যে গাড়ি নিয়ে গেলে কেমন হয়।”
“তোমার সব অধভুত চিন্তা ধারা।”
“তুমি তো দেখছি একদম রোম্যান্টিক নও। সবকিছু কেমন ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব, ওয়াইল্ড হতে হয়, বুঝলে।” চোখে যেন একটু বাসনার উষ্ণতা লেগে। কাছের মানুষটি এত কাছে তাও নিবিড় করে জড়িয়ে ধরতে পারছে না।
“একবার স্টিয়ারিং ধরে বস, আর আমি করি তোমার সাথে অয়াইল্ডনেস তারপরে দেখব। আর আমি ওয়াইল্ড কিনা সেটা আমি জয়সাল্মির পৌঁছে জানিয়ে দেব।” বন্দনার দিকে তাকিয়ে বলে স্যামন্তক।
“আচ্ছা বাবা, এবারে গাড়ি চালাও আমি কিছু ডিস্টার্ব করব না।” চুপ করে বসে পরে বন্দনা।
পোখরানের কাছাকাছি পৌঁছে যায়, পেছনের আকাশে ঊষার লালিমা মাখছে আর সামনে বিস্তীর্ণ মরুভুমির হলুদ বালু। চোখে একটু খানির জন্য ঢুলুনি লাগে স্যামন্তকের, পাশে তাকিয়ে দেখে, বন্দনা জেগে বসে। কি করে ঘুমোয় বন্দনা একা একা ছেড়ে, তাই প্রানপনে নিজেকে ঘুমের কোলে সঁপে দিতে গিয়েও পারেনি, ছেলেটা যে জেগে আছে।
“কি হল ঘুম পাচ্ছে নাকি?” বন্দনা জিজ্ঞেস করে।
“হুম এবারে পাচ্ছে।”
“দাড় করিয়ে একটু মুখে জল দিয়ে নাও ঠিক হয়ে যাবে।”
ভোরের আলো কালো রাতের আঁধার কে ঠেলে সরিয়ে আকাশকে রঙ্গিন করে তুলেছে, শীতের সকাল কিন্তু এই দিকের হাওয়ায় শুষ্কতা মাখা। গাড়ি থেকে নেমে চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে নেয় স্যামন্তক, নিজেকে ধাতস্থ করার জন্য একটা সিগারেট জ্বালায়। বন্দনা জ্যাকেটটা জড়িয়ে ওর পাশে এসে দাঁড়ায়।
ভোরের মতন মিষ্টি হেসে বলে “এনারজি চাই নাকি তোমার।”
ঠোঁট দেখে স্যামন্তকের লোভ হয়, একটু এনারজি সত্যি লাগবে এতটা গাড়ি চালিয়ে গা হাত পা ব্যাথা করতে শুরু করে দিয়েছে। দু, তিন টানে সিগারেট শেষ করে বন্দনার পেলব কমনীয় দেহটি বাহুপাশে আবদ্ধ করে নেয়। বন্দনা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে স্যামন্তকের গলা, ঠোঁটে ঠোঁট চেপে মরুভুমির নব ঊষা বরণ করে কপোত কপোতী। অধর ওষ্ঠের ঘর্ষণে নিদ্রা সহস্র যোজন দুরে পলায়ন করে, শরীরের উষ্ণতা বণ্টন করে নেয় দু’জনে মিশে যায় দুই বক্ষ দুই প্রান।
গাড়ি থামার ফলে পুবালী, সিতাভ্র উঠে পরে। দেখে যে গাড়ির সারথি, গাড়ি থামিয়ে প্রেমে মগ্ন। স্ত্রীর ঘুম জড়ানো চোখের মাঝে হারিয়ে যেতে বর ইচ্ছে করে সিতাভ্রর, কেউ যখন পাশে নেই, তখন সেই মাদকতাময় সম্মহিনির বাহুপাশে নিজেকে সঁপে দেয়।
চুম্বনের রেশ ঠোঁটে মেখে উতপ্ত হয়ে ওঠে স্যামন্তক, ঠোঁট জোড়া ছেড়ে বলে “চল এবারে যাওয়া যাক, নাহলে দিদি উঠে পরে আমাদের দেখে কিছু একটা ভাবতে পারে।”
দুহাতে স্যামন্তকের কোমর জড়িয়ে পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে বলে “হ্যাঁ চল।” গাড়ির ভেতরে চোখ যায় বন্দনার, দেখে হেসে ফেলে বলে স্যামন্তককে “না আমরা শুধু একমাত্র প্রাণী নয় যে কিনা এই তপ্ত বালুচরের উষ্ণতা বুকে এঁকে নিয়েছি, ঐ দেখো গাড়ির ভেতরে।” স্যামন্তক দেখেও না দেখার ভান করে।
ওদের কাছে আসতে দেখে প্রেমের জোয়ারে ভাটা টানে সিতাভ্র, ছেড়ে দেয় সুন্দরী স্ত্রীর কোমল ওষ্ঠ। স্যামন্তককে দেখে বলে “তোমাদের দেখে মনে হল আমরা কি বুড়ো হয়ে গেছি নাকি?” হাঁ হাঁ করে হেসে ওঠে চারজনেই।
সকাল দশটা নাগাদ জয়শাল্মির পৌঁছায়, ঠিক কেল্লার পেছন দিকের বাজারের কাছে একটি সুন্দর হোটেল নেয় ওরা। হোটেলের জানালা দিয়ে গাড় হলুদ রঙের কেল্লাটা সেই সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লার মতন দেখতে মনে হয়, সকালের মিষ্টি রোদে ঝলমল করছে হলদে বালি পাথরের নির্মিত কেল্লা। সেই ফেলুদার গল্পের শুটিঙের পরে এই কেল্লার নতুন নামকরণ, সোনার কেল্লা।
হোটেলের কামরার মধ্যে ঢুকে পরে জুত জামা না খুলে এক লাফে বিছানার ওপরে শুয়ে পরে বন্দনা। স্যামন্তক ব্যাগের ভেতর থেকে ক্যামেরা বের করে বাইরে কিছুর ছবি তুলতে ব্যাস্ত। বন্দনা, দেখে রেগে যায়, কি ছেলেরে বাবা, ছবি তোলা যেন পালিয়ে যাচ্ছে। চেঁচিয়ে বলে “এইযে ক্যামেরা ম্যান, ছবি তোলা বন্দ করে যদি একটু বউয়ের দিকে নজর দেন তো এই তৃষ্ণার্ত চাতকীর প্রান কৃতার্থ হয়।”
“তোমাকে দেখতে এসেছি নাকি আমি?” রাগিয়ে দেয় স্যামন্তক।
“ওকে আমাকে দেখতে আসনি, খুব ভালো কথা, এটা যেন মনে থাকে।” হাঁটু গেড়ে বসে পরে বিছানার ওপরে। প্রথমে জ্যাকেটটা খুলে একদিকে ছুঁড়ে মারে বন্দনা। খিলখিল করে হেসে ওঠে মাথার নাড়িয়ে, চুল গুল কিছু সামনে চলে আসে, ঢেকে দেয় সুন্দর মুখখানি। হাসি শুনে ক্যামেরা হাতে ঘুরে দাঁড়ায় স্যামন্তক, সাদা ধবধবে বিছানার ওপরে প্রানের জলপরী ঠিক যেন উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গে ঢেউ খেলে মেতেছে নিজেকে উজার করার খেলায়। বাঁ হাতের তর্জনী বেঁকিয়ে কাছে ডাকে বন্দনা। হাতের ক্যামেরা চোখের ওপরে উঠে আসে, ক্লিচ, একটি ছবি, এই লাস্যময়ী নারীর। গোলাপি জিব বের করে নিচের ঠোঁটের ওপর বুলিয়ে ভিজিয়ে নেয়, বন্দনা।
স্যামন্তকের মাথার রক্ত ধিরে ধিরে গতি ধারন করছে। কোমরে হাত রেখে, জিন্সের বেল্ট খুলে ফেলে দেয় বন্দনা। এবারে, শক্তির পরীক্ষা কে জেতে। বুকের ওপরে হাত চলে আসে রমণীর, উন্নত বক্ষ যুগল, পরনের জামার ভেতরে এতক্ষণ যেন ছাড়া পাওয়ার উৎকণ্ঠা নিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছিল। একটানে সবকটি বোতাম খুলে ফেলে, জানালা দিয়ে উপচে আসা মিষ্টি রোদ, বক্ষের মসৃণ ত্বকের ওপরে পিছলে পরে। কি করছে মেয়েটা। গায়ের জামা খুলে ফেলে একটানে, ঊর্ধ্বাঙ্গ, অনাবৃত, শুধু মাত্র কালো একটি বক্ষবন্ধনী দ্বারা সুগোল বক্ষ কোনরকমে ঢাকা। দুই বক্ষ যেন একে ওপরের সাথে যুদ্ধ করছে। বক্ষ মাঝের গভীর উপত্যকা হাতছানি দিয়ে ডাকছে স্যামন্তককে, কি হল আর কত দেরি করবে তুমি।
ক্যামেরাটা চেয়ারে রেখে এগিয়ে আসে স্যামন্তক। বনার চোখে কামনার তরল অগ্নি। স্যামন্তক বিছানার পায়ের দিকে এসে দাঁড়ায়, পরনের জামা, গেঞ্জি একটানে খুলে ফেলে। অনাবৃত পেশিবহুল ছাতি দেখে ঝাঁপিয়ে ওঠার মন চায়, কিন্তু আরও একটু যেন মাতোয়ারা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে জলপরীর মনের কণে। সামনে যেন একটি মত্ত বাঘ, বাঘিনীর দিকে স্বাদন্ত বের করে তাকিয়ে, এই যেন খাবলে খুবলে কোমল নধর দেহটিকে আস্টে পিষ্টে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।
গলায় স্বরে নেশার ঘোর মিলিয়ে ডেকে ওঠে বন্দনা “কি গো, তুমি আমার বুনো চেহারা দেখনি আগে।”
একটু খানি পেছনে সরে শুয়ে পরে বন্দনা, কোমর থেকে টেনে পরনের জিন্স নামিয়ে দেয় হাঁটু পর্যন্ত। বাঘের চোখে আগুন, সামনে এত সুন্দর বাঘিনী তার লাস্যময়ী রূপ ধরে কেলি করছে, কিন্তু ছুঁতে দিচ্ছে না। পরনের এক চিলতে কালো রঙের কটি বন্ধনি রূপের আধার ঢেকে রাখতে অক্ষম। জিন্সের দু’পায়ে হাত দিয়ে একটানে খুলে ফেলে স্যামন্তক। চোখের সামনে প্রান প্রেয়সী শুধু মাত্র অন্তরঙ্গ পরিধানে পরিহিত, যেটুকু না ঢাকলে সভ্য সমাজ আমাদের সভ্য বলে গন্য করেনা, সেই দুই স্থান ছাড়া সারা অঙ্গ অনাবৃত।
“দেখলে হবে সোনা? খরচা আছে।” খিলখিল করে হেসে ওঠে বন্দনা।
শরীরের সহস্র শিরায় উপশিরায় বয়ে চলে তরল অগ্নি, ক্ষিপ্ত স্যামন্তকের বাঘ লোলুপ দৃষ্টি হেনে তাকিয়ে আছে কামিনীর মত্ত রূপের পানে।
“সো, ইউ অয়ান্ট টু প্লে হানি” চোখ দুটি ছোটো ছোটো করে দাঁতে দাঁত পিষে বলে স্যামন্তক।স্যামন্তক এক লাফে বিছানার ওপরে চড়ে যায়।
উচ্ছল তরঙ্গিণীর ন্যায় ঘুরে শুয়ে পরে বন্দনা “তুমি তো দেখতে চেয়েছিলে তাই না।” একলাফে বিছানা থেকে নেমে পরে “ধরতে আমাকে পারবে না।”
বিছানার ওপরে শুয়ে হেসে ফেলে স্যামন্তক, হেরে গেছে বাঘিনীর কাছে। লাস্যময়ী রমণী, কটিদেশে ঢেউ খেলিয়ে বাথরুমের দিকে হেঁটে যায়। পরনে শুধু মাত্র ক্ষীণ বক্ষবন্ধনি আর সরু কটিবন্ধনি। সারা শরীরে যেন কামনার আগুন ঠিকরে বের হচ্ছে। দুই সুগোল নিটোল নিতম্ব চোখের সামনে সম্পূর্ণ উন্মচিত, কিছুই আর ভেবে দেখার নেই, সব কিছুর ওপরে থেকে পর্দা উঠে গেছে।
পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে বক্ষের শেষ পরিধান টুকু মেঝেতে ফেলে দেয়। উন্নত বক্ষযুগল, এতক্ষণ যাহারা হাঁসপাস করছিল ঐ দৃঢ় বক্ষবন্ধনী মাঝে, তারা যেন ছাড়া পেয়ে নেচে ওঠে “ওখানে শুয়ে থাকবে না আমার সাথে স্নান করতে আসবে?”
বলার কি দরকার ছিল, আমি কি তোমাকে এমনিই ছেড়ে দিতাম নাকি, ভাবে স্যামন্তক। এক্লাফে বিছানা ছেড়ে নেমে জড়িয়ে ধরে প্রেয়সীর কোমল শরীর। দু হাতে কোলে তুলে নেয় হৃদয়ের তস্করি কে। কোমল পেলব দেহখানি নিয়ে ঢুকে পরে স্নান ঘরে। দুহাতে স্যামন্তকের গলা জড়িয়ে ধরে নগ্ন রমণী। মাথার ওপরে জলের ফোয়ারা, তার নিচে দাঁড় করিয়ে জলক্রীড়ায় মেতে ওঠে ভিজে থাকা বাঘ। আস্টে পিস্টে কোমল দেহখানি বারংবার নিয়ে চলে সুদুর সুখের সমুদ্রে, বাসনার আগুনে সিক্ত বাঘিনী নিজেকে পুনরায় সঁপে দেয় প্রানের রাজকুমারের হাতে। স্নান এবং তার সাথে রতিক্রীড়া সেরে সিক্ত দেহে কোলে উঠে আবার সাদা ধবধবে বিছানার ওপরে রত হয় পুনরায়। থেকে থেকে যেন আর শেষ হয় না দুজনে, হাঁপিয়ে উঠেও যেন নবীন শক্তি নিয়ে মত্ত হয় দু’জনে।
স্যামন্তক বন্দনার দেহখানি নিজের বুকের ওপরে নিয়ে কেলি শেষে শুয়ে থাকে, শরীরের শেষ শক্তি টুকু উজার করে একে ওপরকে মাতিয়ে দিয়েছে। সোহাগের চুম্বনে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় স্যামন্তকের বুক, দুহাতে জড়িয়ে আছে বন্দনাকে।
চলবে....
পুবালী এর মাঝে ফোন করে বাড়িতে জানিয়ে দেয় যে ওরা রওনা দিয়েছে, জয়শাল্মির পৌঁছে জানিয়ে দেবে। রাস্তার অত্যধিক যানজটের ফলে জয়পুর পৌঁছতে পৌঁছতে বেশ রাত হয়ে যায়, প্রায় রাত ন’টা। জয়পুরে নেমে রাতের ডিনার সেরে নিল ওরা। বাইরে কনকনে ঠাণ্ডা, রাস্তায় কুকুর ছাড়া আর কোন প্রাণীর দেখা নেই। এবারে সিকর রোড ধরে এগিয়ে যেতে হবে সেই বিকানীর পর্যন্ত তারপরে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার মরুভুমির মাঝখান দিয়ে যাত্রা। জয়পুর থেকে যখন যাত্রা শুরু করে তখন বাজে রাত সাড়ে দশটা। গাড়ির হেডলাইটের আলো গিয়ে ফিরেও আসেনা, এই রকম ঘুটঘুটে অন্ধকার। পুবালী আবার সামনে চলে গেছে, নিজের বরের পাশে, গিয়ারের ওপর দিয়ে প্রায় গা ঘেঁসে বসে। পেছনে বন্দনাকে এক প্রকার কোলের ওপরে তুলে বসে স্যামন্তক।
কিছুক্ষণের মধ্যে মনে হল যেন ঘুম পাবে। সিতাভ্রর দু’চোখ ঢুলু ঢুলু, গাড়ি সিকর পৌঁছানোর একটু আগে গোঁত্তা খেয়ে প্রায় একটা গাছে ধাক্কা মারার যোগাড়। ব্যাস, সেই দেখে সবার ঘুমের গেল বারোটা বেজে। বন্দনা কি সুন্দর স্যামন্তকের বুকের ওপরে মাথা দিয়ে আদর খাচ্ছিল, গেল সেটা ভেস্তে। সবার যেন প্রান হাতে চলে এলো।
স্যামন্তক, সিতাভ্রর অবস্থা দেখে বলল “দাও, আমাকে বাকিটা আমি চালাচ্ছি।”
পুবালী জিজ্ঞেস করল “তোর ঘুম পাচ্ছে না?”
“না ঘুমের তো বারোটা বাজিয়ে দিল তোর বর।” স্যামন্তক সিতাভ্রর উদেশ্য বলে উঠলো। সিতাভ্র আর স্যামন্তক দু’জনে গাড়ি থেকে নেমে একটু গাড়ির এদিক ওদিকে দেখে নিল, সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি না। দেখে সন্তুষ্ট হয়ে স্যামন্তক সামনে স্টিয়ারিং ধরে বসে পড়লো। বন্দনা পাশের সিটে, সিতাভ্রকে পুবালী পেছনে ডেকে নিয়েছে। গাড়ি আবার ধেয়ে চলে, নিস্তব্ধ নিশুতি রাতের অন্ধকার চিরে। শুরু শুরু তে একটু খানি ব্রেক আক্সিলেটর নিয়ে অসুবিধা হয়েছিল স্যামন্তকের, কয়েক কিলোমিটার পেরিয়ে যেতেই, সব অসুবিধা কাটিয়ে গাড়ি ছোটাতে শুরু করে দেয় খালি রাস্তার ওপর দিয়ে।
কিছুক্ষণের মধ্যে সিকর পেরিয়ে যায় ওরা, বন্দনা পেছনে তাকিয়ে দেখে যে সিতাভ্র বউকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে। পা দুটি ভাঁজ করে সিটের ওপরে রেখে, স্যামন্তকের দিকে গা ঘেঁসে বসে।
“কি গো ঠাণ্ডা লাগছে” জিজ্ঞেস করে বন্দনা।
একবার ধিরে করে পেছন দিকে তাকায় স্যামন্তক, দেখে দিদি জামাইবাবু ঘুমিয়ে পড়েছে। বন্দনার গালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে “ঠাণ্ডা লাগবে কিকরে পাশে যদি এত উষ্ণতা নিয়ে কেউ বসে থাকে তাহলে তো এবারে আমি গাড়ি নিয়ে বালিতে চড়িয়ে দেব।”
হেসে ফেলে বন্দনা “অনেক হয়েছে, তোমার প্রেম নিবেদন। সামনে দেখে গাড়ি না চালালে এবারে সত্যি কিছু একটা ঘটিয়ে দেবে।”
“সিট পেছনে হেলিয়ে দিয়ে তুমি ঘুমোতে পারো।” স্যামন্তক বলে।
“তুমি জেগে গাড়ি চালাবে আর আমি ঘুমব, আমি অতটা পাষাণ হৃদয়ের মেয়ে নই সামু” মাথার চুলে বিলি কেটে উত্তর দেয় বন্দনা।
“উমম… চুলে হাত দিও না, তোমার হাতের ছোঁয়ায় কিন্তু আমার ভেতরে কেমন কেমন করছে। গাড়ি দাঁর করিয়ে দিয়ে কিন্তু……” বত্রিসটি দন্ত বিকশিত করে স্যামন্তক চোখ টিপে বলে।
কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে বন্দনা “গাড়ি দাঁড় করিয়ে কি করবে?”
“দেখতে চাও কি করব?”
বন্দনাও কম যায় না স্যামন্তকের সাথে খুনসুটি করতে, জ্যাকেটের চেন খুলে দেয় “হ্যাঁ করবে টাকি, তুমি কিছুই করতে পারবে না, একে তো হাতে স্টিয়ারিং ধরে তারপরে পেছনে তোমার দিদি।” বলেই হি হি করে হেসে দেয়।
স্যামন্তকের অবস্থা খারাপ, গাড়ি চালাবে কি, ওর স্বর্গের নর্তকী তো গাড়ির মধ্যে দুষ্টুমি শুরু করে দিয়েছে। অসুবিধা তো স্যামন্তকের, বন্দনার তো সিটের পেছনে লুকিয়ে, পেছন থেকে কেউ দেখতে পাবেনা ও কি করছে। ডান হাত, স্টিয়ারিঙ্গে বাঁ হাত গিয়ারের ওপরে, চোখ সামনের দিকে, চোয়াল শক্ত। প্রেয়সীর দুষ্টুমি দেখতে হলে গাড়ি থামাতে হবে আর দিদি জেগে গেলে একদম কেলেঙ্কারি কাণ্ড।
মৃদু ধমকানির সুরে বলে স্যামন্তক “বদমাশি করা থামাবে, না হলে আমি ঠিক গাড়ি থামিয়ে দেব এবারে।”
মাথার পেছনে হাত দিয়ে চুল খুলে ফেলে বন্দনা, মাথা ঝাঁকিয়ে নিয়ে চুল গুলো এলোমেলো করে দেয়, কিছু গুচ্ছ চুল ওর মুখের ওপরে এসে যায়, কিঞ্চিত ঢেকে যায় মুখটা “ওকে, আমি কিছু করব না।” কিন্তু উচ্ছল নারী তার প্রেমিকের হৃদয় আন্দলিত করার জন্য রূপের ডালি সাজাতে শুরু করে ঐ নিশুতি রাতের অন্ধকারে। স্যামন্তকের গালে মাথায় বন্দনার চুল উড়ে আসে।
এবারে রেগে যায় স্যামন্তক, গাড়িতে ব্রেক কষিয়ে বলে “ধুর আমি আর চালাব না।”
ব্রেকের চোটে সামনে ঝুঁকে পরে বন্দনা, দিদি আর সিতাভ্র জেগে যায়। “কি হল” ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করে পুবালী। বন্দনা উত্তর দেয় যে গাড়ির সামনে কুকুর এসে গেছিল তাই গাড়ি দাঁর করিয়ে দিয়েছে। স্যামন্তক একবার কটমট করে তাকাল বন্দনার দিকে, মাথা দিয়ে মাথায় টোকা মেরে আবার গাড়ি চালাতে শুরু করল।
গাড়ি কিছুক্ষণের মধ্যে বিকানির ছাড়িয়ে যায়। বন্দনা চুপ করে স্যামন্তকের সিটের পেছনে হাত রেখে বসে। গাড়ি সিঙ্গেল লেন রোড ধরে ধেয়ে চলে। সামনে পেছনে কোণ গাড়ি নেই, দুপাশে কিছুই নেই, কোণ গ্রাম নেই, কোণ বসতি নেই, মাঝে মাঝে গাড়ি ধিরে করে দুপাশের আঁধারের মাঝে দেখতে চেষ্টা করে স্যামন্তক।
বন্দনা জিজ্ঞেস করে “কি আছে গো দুপাশে।”
“কিছু নেই, শুধু মনে হয় ছোটো ছোটো ঝোপ ঝাড় আর কিছু নেই।”
কানে কানে ফিস ফিস করে বলে “এই ঝোপঝাড়ের মধ্যে গাড়ি নিয়ে গেলে কেমন হয়।”
“তোমার সব অধভুত চিন্তা ধারা।”
“তুমি তো দেখছি একদম রোম্যান্টিক নও। সবকিছু কেমন ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব, ওয়াইল্ড হতে হয়, বুঝলে।” চোখে যেন একটু বাসনার উষ্ণতা লেগে। কাছের মানুষটি এত কাছে তাও নিবিড় করে জড়িয়ে ধরতে পারছে না।
“একবার স্টিয়ারিং ধরে বস, আর আমি করি তোমার সাথে অয়াইল্ডনেস তারপরে দেখব। আর আমি ওয়াইল্ড কিনা সেটা আমি জয়সাল্মির পৌঁছে জানিয়ে দেব।” বন্দনার দিকে তাকিয়ে বলে স্যামন্তক।
“আচ্ছা বাবা, এবারে গাড়ি চালাও আমি কিছু ডিস্টার্ব করব না।” চুপ করে বসে পরে বন্দনা।
পোখরানের কাছাকাছি পৌঁছে যায়, পেছনের আকাশে ঊষার লালিমা মাখছে আর সামনে বিস্তীর্ণ মরুভুমির হলুদ বালু। চোখে একটু খানির জন্য ঢুলুনি লাগে স্যামন্তকের, পাশে তাকিয়ে দেখে, বন্দনা জেগে বসে। কি করে ঘুমোয় বন্দনা একা একা ছেড়ে, তাই প্রানপনে নিজেকে ঘুমের কোলে সঁপে দিতে গিয়েও পারেনি, ছেলেটা যে জেগে আছে।
“কি হল ঘুম পাচ্ছে নাকি?” বন্দনা জিজ্ঞেস করে।
“হুম এবারে পাচ্ছে।”
“দাড় করিয়ে একটু মুখে জল দিয়ে নাও ঠিক হয়ে যাবে।”
ভোরের আলো কালো রাতের আঁধার কে ঠেলে সরিয়ে আকাশকে রঙ্গিন করে তুলেছে, শীতের সকাল কিন্তু এই দিকের হাওয়ায় শুষ্কতা মাখা। গাড়ি থেকে নেমে চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে নেয় স্যামন্তক, নিজেকে ধাতস্থ করার জন্য একটা সিগারেট জ্বালায়। বন্দনা জ্যাকেটটা জড়িয়ে ওর পাশে এসে দাঁড়ায়।
ভোরের মতন মিষ্টি হেসে বলে “এনারজি চাই নাকি তোমার।”
ঠোঁট দেখে স্যামন্তকের লোভ হয়, একটু এনারজি সত্যি লাগবে এতটা গাড়ি চালিয়ে গা হাত পা ব্যাথা করতে শুরু করে দিয়েছে। দু, তিন টানে সিগারেট শেষ করে বন্দনার পেলব কমনীয় দেহটি বাহুপাশে আবদ্ধ করে নেয়। বন্দনা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে স্যামন্তকের গলা, ঠোঁটে ঠোঁট চেপে মরুভুমির নব ঊষা বরণ করে কপোত কপোতী। অধর ওষ্ঠের ঘর্ষণে নিদ্রা সহস্র যোজন দুরে পলায়ন করে, শরীরের উষ্ণতা বণ্টন করে নেয় দু’জনে মিশে যায় দুই বক্ষ দুই প্রান।
গাড়ি থামার ফলে পুবালী, সিতাভ্র উঠে পরে। দেখে যে গাড়ির সারথি, গাড়ি থামিয়ে প্রেমে মগ্ন। স্ত্রীর ঘুম জড়ানো চোখের মাঝে হারিয়ে যেতে বর ইচ্ছে করে সিতাভ্রর, কেউ যখন পাশে নেই, তখন সেই মাদকতাময় সম্মহিনির বাহুপাশে নিজেকে সঁপে দেয়।
চুম্বনের রেশ ঠোঁটে মেখে উতপ্ত হয়ে ওঠে স্যামন্তক, ঠোঁট জোড়া ছেড়ে বলে “চল এবারে যাওয়া যাক, নাহলে দিদি উঠে পরে আমাদের দেখে কিছু একটা ভাবতে পারে।”
দুহাতে স্যামন্তকের কোমর জড়িয়ে পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে বলে “হ্যাঁ চল।” গাড়ির ভেতরে চোখ যায় বন্দনার, দেখে হেসে ফেলে বলে স্যামন্তককে “না আমরা শুধু একমাত্র প্রাণী নয় যে কিনা এই তপ্ত বালুচরের উষ্ণতা বুকে এঁকে নিয়েছি, ঐ দেখো গাড়ির ভেতরে।” স্যামন্তক দেখেও না দেখার ভান করে।
ওদের কাছে আসতে দেখে প্রেমের জোয়ারে ভাটা টানে সিতাভ্র, ছেড়ে দেয় সুন্দরী স্ত্রীর কোমল ওষ্ঠ। স্যামন্তককে দেখে বলে “তোমাদের দেখে মনে হল আমরা কি বুড়ো হয়ে গেছি নাকি?” হাঁ হাঁ করে হেসে ওঠে চারজনেই।
সকাল দশটা নাগাদ জয়শাল্মির পৌঁছায়, ঠিক কেল্লার পেছন দিকের বাজারের কাছে একটি সুন্দর হোটেল নেয় ওরা। হোটেলের জানালা দিয়ে গাড় হলুদ রঙের কেল্লাটা সেই সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লার মতন দেখতে মনে হয়, সকালের মিষ্টি রোদে ঝলমল করছে হলদে বালি পাথরের নির্মিত কেল্লা। সেই ফেলুদার গল্পের শুটিঙের পরে এই কেল্লার নতুন নামকরণ, সোনার কেল্লা।
হোটেলের কামরার মধ্যে ঢুকে পরে জুত জামা না খুলে এক লাফে বিছানার ওপরে শুয়ে পরে বন্দনা। স্যামন্তক ব্যাগের ভেতর থেকে ক্যামেরা বের করে বাইরে কিছুর ছবি তুলতে ব্যাস্ত। বন্দনা, দেখে রেগে যায়, কি ছেলেরে বাবা, ছবি তোলা যেন পালিয়ে যাচ্ছে। চেঁচিয়ে বলে “এইযে ক্যামেরা ম্যান, ছবি তোলা বন্দ করে যদি একটু বউয়ের দিকে নজর দেন তো এই তৃষ্ণার্ত চাতকীর প্রান কৃতার্থ হয়।”
“তোমাকে দেখতে এসেছি নাকি আমি?” রাগিয়ে দেয় স্যামন্তক।
“ওকে আমাকে দেখতে আসনি, খুব ভালো কথা, এটা যেন মনে থাকে।” হাঁটু গেড়ে বসে পরে বিছানার ওপরে। প্রথমে জ্যাকেটটা খুলে একদিকে ছুঁড়ে মারে বন্দনা। খিলখিল করে হেসে ওঠে মাথার নাড়িয়ে, চুল গুল কিছু সামনে চলে আসে, ঢেকে দেয় সুন্দর মুখখানি। হাসি শুনে ক্যামেরা হাতে ঘুরে দাঁড়ায় স্যামন্তক, সাদা ধবধবে বিছানার ওপরে প্রানের জলপরী ঠিক যেন উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গে ঢেউ খেলে মেতেছে নিজেকে উজার করার খেলায়। বাঁ হাতের তর্জনী বেঁকিয়ে কাছে ডাকে বন্দনা। হাতের ক্যামেরা চোখের ওপরে উঠে আসে, ক্লিচ, একটি ছবি, এই লাস্যময়ী নারীর। গোলাপি জিব বের করে নিচের ঠোঁটের ওপর বুলিয়ে ভিজিয়ে নেয়, বন্দনা।
স্যামন্তকের মাথার রক্ত ধিরে ধিরে গতি ধারন করছে। কোমরে হাত রেখে, জিন্সের বেল্ট খুলে ফেলে দেয় বন্দনা। এবারে, শক্তির পরীক্ষা কে জেতে। বুকের ওপরে হাত চলে আসে রমণীর, উন্নত বক্ষ যুগল, পরনের জামার ভেতরে এতক্ষণ যেন ছাড়া পাওয়ার উৎকণ্ঠা নিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছিল। একটানে সবকটি বোতাম খুলে ফেলে, জানালা দিয়ে উপচে আসা মিষ্টি রোদ, বক্ষের মসৃণ ত্বকের ওপরে পিছলে পরে। কি করছে মেয়েটা। গায়ের জামা খুলে ফেলে একটানে, ঊর্ধ্বাঙ্গ, অনাবৃত, শুধু মাত্র কালো একটি বক্ষবন্ধনী দ্বারা সুগোল বক্ষ কোনরকমে ঢাকা। দুই বক্ষ যেন একে ওপরের সাথে যুদ্ধ করছে। বক্ষ মাঝের গভীর উপত্যকা হাতছানি দিয়ে ডাকছে স্যামন্তককে, কি হল আর কত দেরি করবে তুমি।
ক্যামেরাটা চেয়ারে রেখে এগিয়ে আসে স্যামন্তক। বনার চোখে কামনার তরল অগ্নি। স্যামন্তক বিছানার পায়ের দিকে এসে দাঁড়ায়, পরনের জামা, গেঞ্জি একটানে খুলে ফেলে। অনাবৃত পেশিবহুল ছাতি দেখে ঝাঁপিয়ে ওঠার মন চায়, কিন্তু আরও একটু যেন মাতোয়ারা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে জলপরীর মনের কণে। সামনে যেন একটি মত্ত বাঘ, বাঘিনীর দিকে স্বাদন্ত বের করে তাকিয়ে, এই যেন খাবলে খুবলে কোমল নধর দেহটিকে আস্টে পিষ্টে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।
গলায় স্বরে নেশার ঘোর মিলিয়ে ডেকে ওঠে বন্দনা “কি গো, তুমি আমার বুনো চেহারা দেখনি আগে।”
একটু খানি পেছনে সরে শুয়ে পরে বন্দনা, কোমর থেকে টেনে পরনের জিন্স নামিয়ে দেয় হাঁটু পর্যন্ত। বাঘের চোখে আগুন, সামনে এত সুন্দর বাঘিনী তার লাস্যময়ী রূপ ধরে কেলি করছে, কিন্তু ছুঁতে দিচ্ছে না। পরনের এক চিলতে কালো রঙের কটি বন্ধনি রূপের আধার ঢেকে রাখতে অক্ষম। জিন্সের দু’পায়ে হাত দিয়ে একটানে খুলে ফেলে স্যামন্তক। চোখের সামনে প্রান প্রেয়সী শুধু মাত্র অন্তরঙ্গ পরিধানে পরিহিত, যেটুকু না ঢাকলে সভ্য সমাজ আমাদের সভ্য বলে গন্য করেনা, সেই দুই স্থান ছাড়া সারা অঙ্গ অনাবৃত।
“দেখলে হবে সোনা? খরচা আছে।” খিলখিল করে হেসে ওঠে বন্দনা।
শরীরের সহস্র শিরায় উপশিরায় বয়ে চলে তরল অগ্নি, ক্ষিপ্ত স্যামন্তকের বাঘ লোলুপ দৃষ্টি হেনে তাকিয়ে আছে কামিনীর মত্ত রূপের পানে।
“সো, ইউ অয়ান্ট টু প্লে হানি” চোখ দুটি ছোটো ছোটো করে দাঁতে দাঁত পিষে বলে স্যামন্তক।স্যামন্তক এক লাফে বিছানার ওপরে চড়ে যায়।
উচ্ছল তরঙ্গিণীর ন্যায় ঘুরে শুয়ে পরে বন্দনা “তুমি তো দেখতে চেয়েছিলে তাই না।” একলাফে বিছানা থেকে নেমে পরে “ধরতে আমাকে পারবে না।”
বিছানার ওপরে শুয়ে হেসে ফেলে স্যামন্তক, হেরে গেছে বাঘিনীর কাছে। লাস্যময়ী রমণী, কটিদেশে ঢেউ খেলিয়ে বাথরুমের দিকে হেঁটে যায়। পরনে শুধু মাত্র ক্ষীণ বক্ষবন্ধনি আর সরু কটিবন্ধনি। সারা শরীরে যেন কামনার আগুন ঠিকরে বের হচ্ছে। দুই সুগোল নিটোল নিতম্ব চোখের সামনে সম্পূর্ণ উন্মচিত, কিছুই আর ভেবে দেখার নেই, সব কিছুর ওপরে থেকে পর্দা উঠে গেছে।
পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে বক্ষের শেষ পরিধান টুকু মেঝেতে ফেলে দেয়। উন্নত বক্ষযুগল, এতক্ষণ যাহারা হাঁসপাস করছিল ঐ দৃঢ় বক্ষবন্ধনী মাঝে, তারা যেন ছাড়া পেয়ে নেচে ওঠে “ওখানে শুয়ে থাকবে না আমার সাথে স্নান করতে আসবে?”
বলার কি দরকার ছিল, আমি কি তোমাকে এমনিই ছেড়ে দিতাম নাকি, ভাবে স্যামন্তক। এক্লাফে বিছানা ছেড়ে নেমে জড়িয়ে ধরে প্রেয়সীর কোমল শরীর। দু হাতে কোলে তুলে নেয় হৃদয়ের তস্করি কে। কোমল পেলব দেহখানি নিয়ে ঢুকে পরে স্নান ঘরে। দুহাতে স্যামন্তকের গলা জড়িয়ে ধরে নগ্ন রমণী। মাথার ওপরে জলের ফোয়ারা, তার নিচে দাঁড় করিয়ে জলক্রীড়ায় মেতে ওঠে ভিজে থাকা বাঘ। আস্টে পিস্টে কোমল দেহখানি বারংবার নিয়ে চলে সুদুর সুখের সমুদ্রে, বাসনার আগুনে সিক্ত বাঘিনী নিজেকে পুনরায় সঁপে দেয় প্রানের রাজকুমারের হাতে। স্নান এবং তার সাথে রতিক্রীড়া সেরে সিক্ত দেহে কোলে উঠে আবার সাদা ধবধবে বিছানার ওপরে রত হয় পুনরায়। থেকে থেকে যেন আর শেষ হয় না দুজনে, হাঁপিয়ে উঠেও যেন নবীন শক্তি নিয়ে মত্ত হয় দু’জনে।
স্যামন্তক বন্দনার দেহখানি নিজের বুকের ওপরে নিয়ে কেলি শেষে শুয়ে থাকে, শরীরের শেষ শক্তি টুকু উজার করে একে ওপরকে মাতিয়ে দিয়েছে। সোহাগের চুম্বনে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় স্যামন্তকের বুক, দুহাতে জড়িয়ে আছে বন্দনাকে।
চলবে....