Thread Rating:
  • 53 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব
[৮২]


আলো ঝলমল একটা হোটেলের নীচে যখন গাড়ী দাড়াল ড সোম ঘড়ি দেখল প্রায় সাড়ে-বারোটা।পাক্কা আড়াই ঘণ্টা লেগেছে।এক মধ্য বয়সী মহিলা মাম্মীর বয়সী, সাদা কাপড় পরা গুরু নিতম্বিনী গাড়ীর দরজা খুলে বললেন,আসুন ড সোম।

--পেশেণ্ট কোথায় আছে?
--এখুনি দেখবেন?
--দেখি কেমন কণ্ডিশন সম্ভব হলে আর্লি মর্নিং-এ অপারেশন করব।
পাশের মহিলাকে বললেন,কামিনী ফোন করো বাবাজী জেগে আছেন কিনা? 
দুজনের কি কথা হল তারপর মহিলা ড্রাইভারের পাশে বসে বললেন,চলো।
এই মহিলা সম্ভবত গোদাবরী মাম্মীর বন্ধু।দু-মিনিটের মধ্যে একটা নার্সিং হোমের নীচে গাড়ী দাড়ালো।ছোটো নার্সিং হোম বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন।এদের বেশ প্রভাব আছে,নার্সিং হোমের লোকজনের আচরণে স্পষ্ট।
দোতলায় উঠে একটা ঘরে বাবাজী শুয়ে,দাড়ি-গোফে ঢাকা মুখ মণ্ডল বুকে ঘন লোম।পায়ের কাছে একজন মহিলা পদসেবা করছে।
--বাবাজী কলকাত্তা সে ডাক্তার সাহেব এসেছেন।
--আয় বেটা।
বেটা শুনে ড সোমের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,ভেবেছে সবাই ওর শিষ্য? একটা টুলে বসে হাত ধরে চোখ বুজে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করে।
সেই মহিলা বললেন,আপনার বাবার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল।সাক্ষাৎ ধন্বন্তরী।
--এ বেটা বাপকে ছাড়িয়ে যাবে মিলিয়ে নিবি গোদাবরী।বাবাজী বললেন।
--আপনার কথা মেলাতে হবে কেন?গোদাবরী বললেন।
ড সোম কিছুটা বিরক্তি  কিছুটা কৌতুহল নিয়ে শুনছিল।নার্সকে ডেকে বলল,বুকটা পুরো সেভ করে দিতে হবে।কাল সাতটায় অপারেশন করবে।আর ছ ঘণ্টা আগে নো ফুড। 
--বেটা তোর জীবনে একটা ঝড় বয়ে গেছে।
আবার বেটা? এইসব বুজ্রুকিতে ড সোম ভোলার পাত্র নয়।তবু যেতে গিয়ে ফিরে বলল,কি ঝড় বাবাজী?
--সে তুই জানিস,আমি কি করে বলব?
উপস্থিত সবাই মুচকি হেসে বাবাজীকে তাল দেয়।ড সোম মনে মনে ভাবে এইভাবে এরা মানুষকে বশ করে।
--শোন বেটা আর একটা ঝড় আসছে--।
সবটা না শুনে ড সোম বেরিয়ে গেল।
হোটেলে তার জন্য আলাদা ঘর,একটা হল ঘরে সাদা শাড়ী পরা এক দল মেয়ে।মনে হয় এরা সব বাবাজীর শিষ্যা। বাবাজী আছে বেশ।সখী পরিবৃত কেষ্টো ঠকুর। 
গোদাবরী তাকে ঘরে পৌছে দিয়ে বলল,পারু আমার জিগরি দোস্ত কিন্তু ওর সঙ্গে ছিল আমার টক্কর।শেষে পারুই জিতে গেল।ওর বাবার টাকা ছিল ড সোমকে ধন যৌবন সব দিয়ে কব্জা করে নিল।পারুর কাছে হেরে গিয়ে আমার দুখ হয়নি। ড সোম দিলবালা ছিলেন, বাবাজীর মতো ভোলেভালা।
কথাগুলো শুনতে অশ্লীল লাগছিল।বিশেষ করে বাপিকে বাবাজীর সঙ্গে তুলনা করায় ড সোমের অসহ্য লাগে।বলল,শুভ রাত্রি।   
দরজা বন্ধ করে চেঞ্জ করে ড সোম।গোদাবরীর যা বললেন ও রকম শুনেছে।মাম্মী অর্থ দিয়ে বাপিকে হেল্প  করেছিল।কিন্তু বাবাজীর সঙ্গে বাপির তুলনা হয় না।নিজের রোজগারের উপর নির্ভরশীল ছিল বাবাজী তথাকথিত শিষ্য শিষ্যাদের ঘাড় ভেঙ্গে জীবীকা নির্বাহ করে।বিছানায় শুয়ে বাবাজীর কথাগুলো মনে পড়ল।ঝড় মানে কি অঞ্জনার মৃত্যু?আবার ঝড় আসছে ভেবে বুক কেপে উঠল।যশ কি করছে একা একা।কন্সিভ করেছে অঞ্জনা ডেলিভারীর সময় মারা যায়।অবশ্য বয়স হয়েছিল সেই তুলনায় যশ একেবারে ছেলে মানুষ।বাবাজী-টাবাজীতে বিশ্বাস নেই তাহলেও খুব চিন্তা হচ্ছে। আরেকটা ঝড় আসছে কথাটা কানের কাছে ডেকে চলেছে ঝীঝি পোকার মত।যশের ডেলিভারি হবার আগে আর বাড়ী ছেড়ে কোথাও যাবেনা, যত টাকাই দিক।
গোদাবরী ম্যাডাম বাবাজীকে আগেই হয়তো অঞ্জনার মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল।মাম্মী হয়তো তার বান্ধবীকে কথাটা বলে থাকতে পারেন।কিন্তু আরেকটা ঝড় আসছে বলল কেন? 
সকালে ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে দ্রুত প্রস্তুত করে ড সোম।দরজায় শব্দ শুনে ড সোম জিজ্ঞেস করে,কে?
--নাস্তা পাঠিয়ে দেব?
ড সোম দরজা খুলে দেখল গোদাবরী।বাবাজীর সঙ্গে মহিলার সম্পর্ক কি?ড সোমের কি হল হঠাৎ বলল, ভিতরে আসুন।
গোদাবরী হেসে ভিতরে ঢূকে বসল।
--জানেন ম্যাডাম বছর খানেকের বেশী হবে আমার স্ত্রী মারা গেছেন।
--কি হয়েছিল?গোদাবরীর গলায় উদবেগ।
ড সোম নিশিন্ত হল অঞ্জনার মৃত্যুর খবর গোদাবরী জানতেন না।   
--বাবাজীর চিকিৎসার দায়িত্ব আপনাদের?গোদাবরী হাসলেন,তারপর বললেন,সারা দেশে বাবাজীর শিষ্য ছড়িয়ে আছে।অনেকের ইচ্ছে ছিল বাবাজীর চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে।বাবাজীর অসীম কৃপা উনি আমাদের সেই সুযোগ দিয়েছেন।
কত লোক অর্থাভাবে বিনি চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে আর এই লোকটার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে কাড়াকাড়ি।ড সোম বলল,বাবাজীর উপর আপনাদের অনেক ভরসা?
গোদাবরী চমকে উঠলেন যেন এক অশুভ কথা শুনলেন।বললেন বাবাজী বাকসিদ্ধ পুরুষ ভগবানের অবতার।
ড সোম মনে মনে হাসল,ভগবানের অপারেশনের দায়িত্ব পড়েছে তার উপর। 
মুন লাইটে যেতে হবে,যশ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছে।মিতা মাসী রান্না ঘরে কাজ করছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল ছটা বেজেছে।অঙ্গনকে জিজ্ঞেস করা হয়নি এসে খাবে কিনা।এই কথাটা তার মনে হয়নি ভেবে নিজের প্রতি বিরক্ত হয়।ফোন বাজছে যশ ফোন ধরতে গেল।
রিসিভার কানে লাগিয়ে যশ বলল,তুমি ওরকম করছো কেন?আমি ভালো আছি একদম ফিট।।...আচ্ছা আচ্ছা...রাখছি।
যশ অবাক হয় অঙ্গনের কি হল?রাতে কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখেছিল নাকি?চোখে জল চলে আসে,এত ভালবাসে অঙ্গন তার কথা এত ভাবে?  
অপারেশণ টেবিলে বাক সিদ্ধ চোখ বুজে শুয়ে আছে।চৈতন্য লুপ্ত।দ্রুত রক্তনালী গুলোর সংযোগ করতে হবে।ড সোম এখন অন্য জগতে,রোবটের মতো তার হাত কাজ করতে থাকে।
ঘরের বাইরে রুদ্ধশ্বাস বাবাজীর শিষ্যারা।নিস্তব্ধ পরিবেশ।কারো মুখে কোনো শব্দ নেই কেবল চোখে চোখে ভাব বিনিময়।
যশবিন্দার বেরোবার জন্য তৈরী।যাবার আগে জেনকে খাওয়াতে বসেছে।কিছু খেতে চাইছে না মেয়েটা।ওয়েইং মেশিনে বসিয়ে অবাক ওজন এত কম?অঙ্গনকে বিষয়টা বলতে হবে। চামচে খাবার তুলে যশ বলল,বেটা হা করো হা করো।
--না না বলে যশের পেটে হাত দিয়ে জেন নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করে।
যশ হাতটা পেট হতে সরিয়ে দিতে জেন বলল,এখানে কি আছে?
যশ হেসে বলল,তোমার বোন ঘুমিয়ে আছে।মৌসী তুমি জেনের মুখটা ধুয়ে দাও আমি বেরোচ্ছি।
মিতামাসীর জিম্মায় দিয়ে যশ বিন্দার নীচে নেমে গেল।আজই নার্সিং হোমের সঙ্গে কথা বলে ছুটি নিতে হবে।জামাটা পেটের সঙ্গে সেটে গেছে।ভিতরে মুভমেণ্ট বেশ টের পাচ্ছে।
গাড়ী থেকে নেমে ভিতরে গিয়ে বসতে মিস হাসদা ফাইল এগিয়ে দেয়। 
সোমালি ঢূকে বসতে প্যাড নিয়ে যশ জিজ্ঞেস করে,নাম?
সোমালি ইতিস্তত করে।যশ মুখ তুলে বলল,নাম বলুন।
--সোনালী কর।যশ লিখে বলল,বলুন কি সমস্যা?
--চুলকায়।
যশ বুঝতে পারে কোথায় চুলকানোর কথা বলছেন।মুখ নীচু করে হাসি সম্বরণ করে।তারপর চোখে চোখ রেখে বলল,ডাক্তারের কাছে কিছু লুকাবেন না।
--আমার নাম সোনালি বিশ্বাস করুন।
--নাম নয় আপনার সমস্যার কথা বলুন।কি হচ্ছে কবে থেকে হচ্ছে?
সোমালি মাথাটা এগিয়ে এনে বলল,যোনীর মুখে চুলকায়।
--এরকম কবে থেকে মনে হচ্ছে?
--তা দিন পনের হবে।
--ঐখানে শুয়ে পড়ুন।
মিস হাসদা ধরে টেবিলে উঠিয়ে দিল।সোমালি উঠে চিত হয়ে শুয়ে পড়ল।বুকের মধ্যে দপ দপ করে।পাড়ার ডাক্তার না দেখিয়ে দূরে মুন লাইটে দেখাতে এসেছে।
ড যশ হাতে গ্লাভস পরে বাল সরিয়ে টর্চের আলোয় দেখতে দেখতে ঠোটে ঠোট চেপে কি ভাবে।তারপর বলল,ঠিক আছে নেমে আসুন।মিস হাসদা আপনি একটু বাইরে যান।
সোমালি চিন্তিত মনে নীচে নেমে চেয়ারে বসল।
ড যশ টেবিলে কনুইয়ের ভর দিয়ে ঝুকে বলল,এবার বলুন আপনি কেবল স্বামীর সঙ্গে সহবাস করেন?
--ম্যাডাম কি হয়েছে?
--বলব এখন যা জিজ্ঞেস করছি সহজভাবে বলুন।তাতে আপনারই ভালো।
সোমালি কেদে ফেলে।
বিরক্ত হয়ে ড যশ বলল,কাদবেন না অনেক পেশেণ্ট বাইরে অপেক্ষা করছে। 
--ম্যাডাম আমার নাম সোমালি ভয়ে সোনালি বলেছি, আমাকে একজন ভুল বুঝিয়ে ভয় দেখিয়ে করেছিল।
ড যশ বুঝতে পারে মহিলা এখনো মিথ্যে বলছে।সেসব নির্ণয়ের দায় তার নয়।রোগ কি কেন হয়েছে পরিস্কার।টেবিলে বসে প্রেসক্রিপশন লিখতে থাকে।
সোমালি বলল,ম্যাডাম আমার স্বামী যদি জানতে পারে--।
--শুনুন এই ওষূধগুলো খেতে থাকুন।আর এই টেস্টটা করে দেখা করুন।অন্তত দু-সপ্তাহ সহবাস বন্ধ রাখুন।ভয়ের কিছু নেই আমার ফোন দেওয়া আছ।এখানে এখন বসছিনা।যদি অন্য কাউকে দেখাতে চান দেখাতে পারেন।
--না না ম্যাডাম আপনাকেই দেখাবো।
--ওকে ড সোমের বাড়ি সবাই চিনবে।
--ম্যাডাম কি হয়েছে?
-- মনে হচ্ছে  chlamydia--আপনি বুঝবেন?টেস্ট রিপোর্টটা আসুক।
মুন লাইট থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক দেখল।তারপর একটা রিক্সা ডেকে উঠে পড়ল।যা সন্দেহ হয়েছিল তাই?লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।চেনে না জানে না কেন যে--এখন ডাক্তারের পিছনে কত যায় দেখো।ম্যাডাম বলল,ভয়ের কিছু নেই।এই কথাটাই ভরসা।
যশের অস্বস্তি হয়।বাসায় ফিরে স্নান না করা অবধি স্বস্তি নেই।অঙ্গন কি ফিরেছে?এত চিন্তা নিয়ে পেশেণ্ট দেখা মুষ্কিল।
বেলা বাড়তে থাকে।মিস হাসদাকে ডেকে জিজ্ঞেস করল,মনে হচ্ছে পেশেণ্ট বেশী।
মিস হাসদা চুপ করে থাকে।কথা ছিল প্রতিদিন দশজন পেশেণ্ট দেখবে।যাক আজকের পর আর বসবে না।ব্যাগ পত্তর গুছিয়ে গাড়ী স্টার্ট করল।বাসায় ফিরতে মৌসী বলল,ছোড়দা ফিরেছে।
জেন ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে।ওকে কোলে তুলে বলল,উপরে ছুড়ে আবার ধরে নেয়।জেন খিল খিল করে হাসে।এই ব্যাপারটা জেন খুব উপভোগ করে।হঠাৎ নজরে পড়ে দরজায় এসে দাড়িয়েছে অঙ্গন।অঙ্গনের চোখের দিকে তাকিয়ে ঘাবড়ে যায় যশ বলে,কতক্ষন?
--তোমাকে কতবার বলব তুমি জেনকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না।অঙ্গন বলল।
--এইতো সবে ধরলাম।
--একদম নয়,মাসী আছে আমি আছি তোমাকে কিছু করতে হবে না।
যশ কথা বাড়ায় না,নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে।টেবিলের উপর একটা ছোটো ব্যাগ দেখে মৌসীর হাতে জেনকে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,এটা কি?
--খুলে দেখো।
যশ ব্যাগ খুলে দেখল ব্যাগে টাকা ভর্তি।বুঝতে পারে যেখানে গেছিল সেখান থেকে দিয়েছে।মিতামাসী জেনকে ঘুম পাড়ায়।অঙ্গনকে জড়িয়ে ধরে যশ বলল,তুমি আমার উপর নারাজ?
--তুমি কেন বোঝোনা তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই?
--আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি? 
অঙ্গন চমকে ওঠে।বাবাজীর কথা মনে পড়ল আবার ঝড় আসছে।যশের বুকে মুখ গুজে অঙ্গন বলল, এক্টু সাবধানে থাকো ডার্লিং।কখন কি হয় কে বলতে পারে।
দুর্বোধ্য মনে হয় অঙ্গনকে,টেলিফোনে কথা বলছিল তখনও কেমন লাগছিল।একজন ডাক্তার  কেন এমন ছেলে মানুষী করছে কোনো বাজে স্বপ্ন দেখেছে কি?     

 
[+] 10 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব - by kumdev - 27-03-2020, 02:46 PM



Users browsing this thread: 10 Guest(s)