23-03-2020, 09:14 PM
(12-03-2020, 10:30 PM)kumdev Wrote: [৫৫]সবাইকে কেমন এক সুতোয়়় বেধেছেন।
খাদিজা বেগমের মনে হয় কোনো কারণে দিল্লী যেতে অনীহা কি এমন কারণ ঘটল দেব কেন বারবার এড়িয়ে যেতে চাইছে?ছুটি আর হাতে নেই এখন কলেজ কামাই করলে উইদাউট পে হয়ে যাবে। তাহলেও স্থির করে দেবের সঙ্গে দিল্লী যাবে।এই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে দেব খুশী হয় বলে,তুমি আমার সঙ্গে যাবে?
--আচ্ছা দেব সত্যি করে বলতো দিল্লীতে কি হয়েছে?
--বিশ্বাস করো আমি কিছু করিনি।ঠিক আছে তুমি তো যাচ্ছো সত্যি কিনা বুঝতে পারবে।
দিল্লী অচেনা জায়গা খাদিজা যাবে বলেও মনের কোনে একটা অশান্তি থেকে যায়। দিল্লীতে যশবিন্দারের কয়েকজন কাজিন ভাই থাকে।দেব বলছিল গুণ্ডা প্রকৃতি। কলকাতার ভবানী পুরেও আত্মীয় স্বজন আছে।যশ বিন্দার কি ওর ভয়ের কারণ?দিল্লী থেকে যশ বিন্দারই খবরা খবর দেয়। সব কেমন জট পাকিয়ে যায়।শনিবার রাতে বিয়ে করার জন্য ক্ষেপে উঠল।একটা সামাজিক স্বীকৃতির কথা তার মনে এলেও লজ্জায় বলতে পারে নি।দিল্লী থেকে ঘুরে এসে সব ভাবা যাবে।কে জানে ওখানে কি কাণ্ড ঘটিয়েছে।
লক্ষণবাবুর বিয়ে হয়ে গেল নাটকীয়ভাবে। বৈদ্যনাথের সঙ্গে এখন তেমন সম্পর্ক নেই। পৌরসভায় পিওনের কাজ করে বৈদ্যনাথ,লক্ষণই ঠিক করে দিয়েছে। তখনও অল্প আলো আছে সন্ধ্যে হয় হয়, রেল লাইন ধরে হাটতে হাটতে ফিরছিল লক্ষণ। নজরে পড়ল একজন মহিলা লাইনের উপর ঘোরাঘুরি করছে,সন্দেহ জনক মনে হল। মহিলাকে অতিক্রম করে কিছুটা এগোতে ট্রেনের শব্দ পেয়ে পিছনে তাকাতে দেখল সেই মহিলা লাইন ধরে ছুটছে ট্রেনের দিকে।লক্ষণও পিছন পিছন ছুটে মহিলাকে চেপে ধরে রেল লাইনের পাশে আছাড় খেয়ে পড়ে।ঘট ঘট করে চলে যাচ্ছে ট্রেন মহিলাকে জড়িয়ে ধরে লাইনের পাশে শুয়ে আছে লক্ষণ। ট্রেন চলে যেতে মহিলা কেঁদে ফেলে বলল,এইটা আপনি আমার কি সব্বোনাশ করলেন?
--আমি না ধরলে আপনার সব্বোনাশ হয়ে যেতো।
--গ্যালে যেত তাতে আপনের কি?
ইতিমধ্যে লোক জড়ো হতে থাকে।নানা প্রশ্ন,কি ব্যাপার দাদা? বাড়ীতে ঝামেলা? যান বৌদি রাগ করে কি করবেন বাড়ী চলে যান।
--ওসব কিছু না আপনারা যান। লক্ষণ বলল।
--লাইন থেকে সরে গিয়ে গল্প করুণ ট্রেন এলে গল্প শেষ হবে না।
--না হয় না হল তাতে আপনাদের কি?বৌদি মারাইতে আইছে। মহিলা ঝাজিয়ে ওঠে।
--চল চল কারো ভাল করতে নেই।
সবাই চলে যায়।মহিলা গজ গজ করতে থাকে সব ভাল করনেয়ালা।লক্ষণের দিকে তাকিয়ে বলল,এইবার আপনে যান।
--আপনি কোথায় থাকেন?লক্ষণ জিজ্ঞেস করে।
--তা জেনি আপনের কি হবে?
--আমি আপনাকে পৌছে দেবো।
--আপনে আমারে বাঁচাইছেন ভাল করিছেন।আর কিছু করতি হবে না।এইবার গেলি ভাল হয়।
--এইখানে আপনাকে রেখে আমি যাবো না।
--ভারী দরদ দেখছি,বাড়ী গিয়ে বউরে দরদ দেখান।
--আমার বউ নেই।
মহিলা চোখ তুলে লক্ষণকে দেখে তারপর ফিক করে হেসে বলল, আমারে বিয়ে করবেন?
লক্ষণ অপ্রস্তুত আমতা আমতা করে বলল,বিয়ের কথা আসছে কেন?
--তাহলে ফ্রিতে ফুর্তি?কি ভাবছেন আমারে?আমি ভদ্রঘরের মেয়ে।পথ দেখেন নাহলি আমি চিল্লাবো?
--দেখুন আপনি যা ভাবছেন আমি সেরকম নই।
--জানি জানি আপনে কি রকম,যেই বিয়ের কথা বলিছি অমনি গলা শূকোয় কাঠ।
--আপনি কেন মরতে এসেছিলেন?
--কপালে মিত্যু ল্যাখা তাই।আমারে আর বকাবেন না।আমি মরি কি বাঁচি তাতে আপনার কি?
লক্ষণ মুস্কিলে পড়ে মহিলাকে একা ফেলে যেতে পারছে না,রাত হচ্ছে কাহাতক দাঁড়িয়ে থাকা যায়। পুরুষ মানুষ হলে না হয় পাঁজাকোলা করে লাইন থেকে নামাতে পারতো কিন্তু যুবতী মহিলা সে সব করতে যাওয়ায় বিপদ আছে।লক্ষণ দেখল ভদ্রমহিলা হাটুর উপর মাথা রেখে ফোস ফোস করে কাঁদছে। লক্ষণ বুদ্ধি করে বলল,ঠিক আছে আমি বিয়ে করবো এবার চলুন।
মহিলা মাথা তুলে লক্ষণকে দেখে বলল,চেনা জানা নাই নামটাও জানেন না অমনি বিয়ে করবো?
--তুমি তো নাম ধাম কিছুই বলতে চাইছো না,কি করে জানবো?
--একলাফে তুমি?ভারী সেয়ানা মনে হচ্ছে?
--আচ্ছা ভুল হয়ে গেছে,এবার উঠুন।
--শোনেন আমার নাম অপালা কুণ্ডু।মহিলা ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আপনারে দেখে হরি সাধুখাঁর মত মনে হচ্ছে না। আপনে তুমি বলতি পারেন।
লক্ষণের মনে হল হরি বোধ হয় অপালার প্রেমিক, প্রত্যাখ্যাত হয়ে সুইসাইড করতে এসেছিল।
--অপু তুমি কোথায় থাকো,চলো তোমাকে বাড়ী পৌছে দিয়ে আসি।এখনকার অথা আমি কাউকে বলবো না।
অপু শব্দটা কানে যেতে অপালা অবাক হয়ে বলল,অপালারে অপু বানায়ে দিলেন?
--না মানে বাড়ীতে তোমাকে কি অপালা বলতো?
অপালা এই প্রথম খিল খিল করে হাসে তারপর বলল,বাড়ীতে মা আমারে ছুড়ীতেই বুড়ী বানায়ে দিয়েছে।হরি ব্যাটাও আমারে বুড়ি বলে ডাকে।
--হরি সাধুখাঁ তোমাকে ভালবাসতো?
অপালার চোখে আগুনের ঝিলিক বলল,হরি সাধুখাঁ আমার মায়ের সৎ ভাই। মা মরলি আমারে বেঁচে বাড়ী হাতাবার মতলবে এসেছিল।
--তোমার মামা তোমাকে বেঁচে দিতে চেয়েছিল? লক্ষণের মনে অবিশ্বাস।
--সম্বন্ধ আনিছিল ব্যাটা বাংলা বলতি পারে না।তখনি আমার সন্দেহ হয় বললাম,আমি বিয়ে করবো না। সেই রাগে কাল রাতে আমারে নিতি আসিছেল। যত বলি আমার শরীর খারাপ আপনে গুরুজন হারামীর বাচ্চা কিছুতেই শোনবে না--।
--তোমার শরীর খারাপ?
--ধ্যেত শরীর খারাপ বোঝেন না আবার বে করতে চান,অবশ্য সব শুনলি বে করার সাধ ঘুচে যাবে।
মা মারা যাবার পর পৃথিবীতে অপালা একা হয়ে পড়ে,সম্বল একটা চার ঘরের একটা দোতলা বাড়ি আর একতlলায় একঘর ভাড়াটে।ভাড়ার টাকায় চলছিল মন্দ না। এইসময় বউ নিয়ে হরি সাধুখাঁ হাজির,অপালার খারাপ লাগে না।একজন পুরুষ মানুষ সঙ্গে থাকলে বল পাওয়া যায়।ভুল ভাঙ্গে মাসখানেক পর হরি সাধুখাঁ হরিনাম বিলোতে আসেনি।ভাগনীর বিয়ে দেবার জন্য এক অবাঙ্গালি পাত্র নিয়ে উপস্থিত।অপালা তখন রজস্বলা তাও মামা মামীর সম্মান রক্ষায় পাত্রের সামনে বসতে রাজি হয়। পাত্রের সঙ্গে মামা মামীর ফিসফিস কথায় অপালা বুঝতে অসুবিধে হয় না বিয়ে নয় তাকে বিলির ব্যবস্থা হচ্ছে। রাতে নিজের ঘরে শুয়ে ভাবছে এমন সময় মামা মামী ঘরে ঢুকে বলাতকার করতে উদ্যত হল। তার মাসিক চলছে বলা সত্বেও গুদের ভিতর গুজে রাখা ন্যাকড়া বের করে মামী চেপে ধরে আর মামা....।এই পর্যন্ত বলে কেঁদে ফেলে অপালা। একসময় চোখ মুছে ম্লান হেসে জিজ্ঞেস করে,বিয়ে করবেন?
--ঠিক আছে তুমি চলো।
--কোথায়? আমি এখন বাড়ী যাবো না।
লক্ষণ এক মুহুর্ত ভেবে বলল,আমার বাড়ীতে চলো।
--আপনের বাড়ী?চিনি না জানি না অবশ্য আমার যা সব্বোনাশ হবার হয়ে গেছে।
--কোনো সব্বোনাশ হয়নি। শোনো অপু আমার নাম লক্ষণ ভট্টাচার্য বাড়ীতে আমার দাদা বৌদি ভাই-পো আছে তোমার কোনো ভয় নেই।
--বেরাম্মন?আমাকে নিয়ে গেলে দাদা বৌদি কিছু বলবে না?
খাদিজা বেগম নিশ্চিত নয় আর তিন চারদিনের মধ্যে মেন্সটুরেশন হবার কথা। কালকের গাড়ীতে দিল্লি যাবে ব্যাগে প্যাড নিয়েছে।মনে হয় লাগবে না তা হলেও বলা তো যায় না। খাদিজা লক্ষ্য করেছে দেব কাছে থাকতে ছুয়ে থাকতে যত ভালবাসে ততটা রমণ পাগল নয়।বললে করবে কিন্তু একটা মেয়ের পক্ষে কাহাতক বলা যায়। খাদিজা ভাবে পাড়ার সেই বৌদি নিশ্চয়ই এমন কিছু করেছিল যাতে দেব বাধ্য হয়। এতদিন একসঙ্গে আছে মনে হয় নি মেয়েদের প্রতি দেবের কোনো দুর্বলতা আছে। বরং পার্বতী ম্যাম বলছিলেন ড.সোম মেয়েদের শ্রদ্ধা করতেন।দেবও অনেকটা তার বাপির মত। চোখ বুজে ঘুমের ভান করে থেকে বুঝতে পারছে দেব স্তন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। স্তন যেন ওর খেলার সামগ্রী? খাদিজা বেগম মজা করে দেবের দিকে পিছন করে পাশ ফিরলো।এবার শুরু হল চুল নিয়ে ঘাটাঘাটি। স্বপ্ন কল্পনায় এক ছবি ভেসে উঠল,মা শুয়ে আছে আর তার শিশু সন্তান মায়ের শরীর নিয়ে খেলছে।বিরক্ত হয়ে চুল টেনে নিয়ে বলল,কি হচ্ছে ঘুমোতে দেবে না?
--ও তুমি ঘুমাও নি? আই ভেবেছি ঘুমিয়ে পড়েছো।দেব বলল।
--এভাবে কেউ ঘুমোতে পারে?
--আছা তুমি ঘুমাও আমি তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি।
খাদিজা পাশ ফিরে দেবকে জড়িয়ে ধরে বুকে চেপে বলল,তোমাকে কিছু করতে হবে না,তুমি ঘুমাও।
কিছুক্ষণ পর খাদিজা অনুভব করে গরম শ্বাস বুকে লাগছে, মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে। গলা জড়িয়ে ধরে আলতো করে চুমু খেল।
রেল লাইন ধরে হাটতে থাকে লক্ষণের পিছন পিছন অপালা।লক্ষণ পিছন দিকে তাকাচ্ছে না,ইচ্ছে করলে উল্টোদিকে দৌড় দিতে পারে।রাস্তায় লোকজন থাকবে ভেবে অপালা পিছে পিছে চলে।নির্জন পথ ধরলে অপালা যাবে অত বোকা নয়।বাড়ীতে দাদা-বৌদি আছে বলছে,ব্রেম্মান তারা হল তিলি।হারামী হরি সাধুখা যা ক্ষতি করেছে তার চেয়ে আর বেশী কি ক্ষতি হবে।
অপালা গলা চড়িয়ে বলল,আস্তে হাটেন,মেয়েছেলে সঙ্গে থাকলি অত জোরে জোরে কেউ হাটে?
মুগ্ধ হতেও ভুলে যাই... ভালো থাকবেন মামা...