22-03-2020, 10:43 PM
(This post was last modified: 22-03-2020, 10:50 PM by kumdev. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
[৭৯]
রাত শেষ হয়ে ভোরের আলো চলকে পড়েছে জানলা দিয়ে।যশ উঠে বসল,অঙ্গন ঘুমোচ্ছে ঘুমোক।কলিং বেলের শব্দে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিতে মিতা প্রবেশ করল। ফিরে এসে ঘুমন্ত অঙ্গনের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হল,কথাটা গোপন করা ঠিক হয়নি।যতই হোক অঙ্গন তার সন্তানের পিতা।জেনের ঘুম ভেঙ্গে গেছে,ঝুকে তাকে কোলে তুলে নিল।জেন ইদানীং কোলে থাকতে চায়না।হাটার খুব ইচ্ছে ছেড়ে দিলে এটা টানে ওটা টানে,সব সময় নজর রাখতে হয়।কোলে নিলেই হাত তুলে বাইরে দেখায় অর্থাৎ বাইরে নিয়ে চলো।এত বড় হল কিন্তু ওজন বাড়ছে না।মৌসী দুধের বোতল দিয়ে গেল।জেনকে সোফায় বসিয়ে বোতল ধরিয়ে দিল।নিজেই এখন বোতল ধরে দুধ খেতে পারে।
রান্না ঘর থেকে মৌসীর গলা পাওয়া গেল,বৌদি চা হয়ে গেছে দেব নাকি ফ্লাক্সে রেখে দেব?
যশ দেখল অঙ্গন ঘুমিয়ে আছে।রান্না ঘরে গিয়ে এক কাপ নিজের জন্য নিয়ে বাকীটুকু ফ্লাক্সে ঢেলে রাখে।চা নিয়ে ফিরে এসে দেখল অঙ্গন চিত হয়ে সিলিং-র দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে।
--তুমি উঠে পড়েছো?যশ চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে রান্না ঘরে গেল নিজের জন্য আনতে।
ফিরে এসে দেখল বিছানায় বসে অঙ্গন চায়ে চুমুক দিচ্ছে।একটু ইতস্তত করে যশ বলল,ডার্লিং একটা কথা বলব বলো রাগ করবে না?
পল্টু মুখ তুলে তাকিয়ে হাসল।
--তোমাকে একটা ব্যাপার গোপন করেছি।
যশের পেটে চোখ বুলিয়ে পল্টু বলল,সব কিছু চেষ্টা করেও গোপন করা যায়না।
যশ অবাক হয়ে বলল,ইউ নাটি কি করে বুঝলে?
--কাল যা করছিলে তাতেই সন্দেহ হয়েছিল এইমাত্র কনফার্ম হলাম।এবারেও সেই আনুষ্ঠানিক বিয়ের আগেই হল।
--ডার্লিং তুমি গুসসা হয়েছো?আধো আধো গলায় বলল যশ।
পল্টূ হেসে বলল,বয়স কত?
--ঐ প্রথম বার।দিল্লী ধরলে দ্বিতীয় বার।
--নো প্রবলেম এই ছ-মাসে জেন বড় হয়ে যাবে।
যশের মনে শান্তি ফিরে আসে।জেনকে নিয়ে বারান্দায় চলে গেল।
মিতামাসী রান্নায় ব্যস্ত পল্টু চা খেতে খেতে সংবাদ পত্রে চোখ বোলায়।আজ একটূ তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে।ড্রিম ল্যাণ্ডে একটা অপারেশন আছে।সেখান থেকে লেক ভিউতে যাবে বাড়ী আসবে না।যশের আজ অফ ডে।সপ্তাহে তিন দিন বসে।এই মুহূর্তে বেশী চাপ নিতে চাইছে না।
জেন দৌড়াতে দৌড়াতে রান্না ঘরে চলে এল।যশও পিছন পিছন ছুটে আসে।মিতা মাসী ওকে ধরে ফেলে।
--ওরে দুষ্টু পালাবি কোথায়?যশ জাপটে ধরে বলল।চলো বাপি বেরোলে আমরা বের হব।
--বৌদি আপনি আজ বেরোবেন?
যশ ইশারা করে বোঝায় বেরোবে না।মিতামাসী হাসল।জেনকে নিয়ে চলে গেল যশ।
মিতামাসী জেনকে দেখে ভাবে মেয়েটা কেমন দুবলা-দুবলা।দুধ ফলের রস খাওন তো ভালই ।এতো পুতু-পুতু করলে হয়?এই সময়ে খেলবো দৌড়াইব পড়বো উঠবো তবেই গায়ে গতরে বড় হবে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূরে তাকিয়ে আছে।আজ তার অফ ডে।বাড়ীতেই থাকবে।জামার নীচে হাত ঢূকিয়ে পেটের উপর বোলায়।পেটটা কি ফুলেছে বোঝার চেষ্টা করে।অঙ্গনের নজর এড়ায়নি ঠিক বুঝতে পেরেছে।এই এক মুশিব্বাত দুনিয়ার লোক দেখবে অন্দার মে বাচ্চা আছে।রিয়ার কথা মনে পড়ল জিগরি দোস্ত।অনেক প্রাইভেট কথা ও জানে।অঙ্গনকে পসন্দ করতো জানলেও ঐ ব্যাপারটা জানে না।রিয়া কেন কেউ জানে না। অঙ্গনকেও রিয়াও পসন্দ করতো,ম্যারেড জানার পর ঐ ওকে বহুত সাপোর্ট দিয়েছিল।ও জানে না সেই অঙ্গন এখন তার হাজব্যাণ্ড।ডায়েরীটা দেখতে হবে ওর নম্বরটা যদি থাকে ফোন করবে।রিয়া তারই মতো গাইনি ডাক্তার।এতদিনে ওরও সাদি হয়ে গিয়ে থাকবে।
অঙ্গন বেরিয়ে গেছে মৌসীও চলে গেছে।জেসমিনকে ঘুম পাড়াতে পাড়াতে ঘুমিয়ে পড়েছিল যশ বিন্দার।কলিং বেলের শব্দ শুনে উঠে দরজা খুলে দিতে মৌসী ঢুকে বলল,ছোড়দার মামা এসিছে।
--ঠিক আছে মৌসী জেনের দুধ বানাও।
দরজায় দাঁড়িয়ে ইতস্তত করছেন দেবব্রত।যশ বলল,ভিতরে আসুন'।
দেববাবু সোফায় বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে,পল্টু নেই?
মাজাকি হচ্ছে,এই সময় অঙ্গন থাকেনা জেনেও জিজ্ঞেস করছে।বলল,নেই রাতে আসবেন।
--একটা দরকারে এসেছিলাম।
--বলুন।চা খাবেন?
--হে-হে-হে।
হারামী লোগ এইরকম হাসে।যশ বলল,মৌসী এ ঘরে দু-কাপ চা দিও।
--আমরা এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো।
--বহুৎ আচ্ছা।একথা ড সোমকে বলার কি দরকার, কবে যাবেন?
--যেতে তো পারি যেকোনো সময় কিন্তু--/
মিতা মাসী চা নিয়ে ঢুকতে কথা থেমে গেল।
--ড সোম মানা করেছে?
চায়ে চুমুক দিয়ে দেববাবু বলে,বাবার যা টাকা ছিল প্রায় সবই বোনের বিয়েতে খরচ করেছে।মায়ের পেটের বোন আমিও আপত্তি করিনি--।
--শুনুন মিস্টার আপনার ফ্যামিলি হিস্টরিতে আমার ইন্টারেস্ট নেই।এখন কি বলতে এসেছেন বলুন।
--ঠিকই সেসব আপনার জানার কথা নয়।মনো থাকলে বলতো।
--ব্যাস আপনার বাত খতম?যশ বাধা দিল।
--না বলছিলাম কি ফ্লাটে টাকা প্রায় সব দেওয়া হয়ে গেছে--।
--কিছু টাকা বাকী আছে?
--আজ্ঞে?হে-হে-হে ঠিকই ধরেছেন।
--কত টাকা?
--আমরা চলে গেলে এ বাড়ী ভাড়া দিলে কয়েক বছরে সেই টাকা উঠে আসবে।
--সেইটাই পুছা করছি কিতনে রূপয়ে?
--তা ধরেন গিয়ে রেজিস্ট্রি-ফেজিস্ট্রি মিলিয়ে পঞ্চাশের মত দিলেই হয়ে যাবে?
--সিরিফ পচ্চাশ রূপেয়া?যশ অবাক হয়ে বলল।
--না না পঞ্চাশ হাজার।পল্টু যদি না দেয় তাহলে বাড়ী ছাড়া মুষ্কিল।
--ঠিক আছে তখন আমার কাছে আসবেন।
--থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাডাম থ্যাঙ্ক ইউ।
দেববাবু চলে গেল।মৌসী ঘরে ঘরে ধুপ জ্বালিয়ে সন্ধ্যে দিতে থাকে।রাস্তায় বাতি স্তম্ভে আলো জ্বলে উঠল।যশ ভাবছে গাড়ীটা নিয়ে বের হবে কিনা?এমন সময় আবার বেল বেজে উঠল।যশ গলা তুলে বলল,,মৌসী দেখো তো আবার কে এল?
মিতামাসী এসে খবর দিল,ছোড়দার বন্ধু দিলীপ এসেছে।
দিলীপ এলে পাড়ার খবর পাওয়া যায়।আজ আর বেরনো হবে না।জেন একটা বড় বাধা। যশ সিড়ী দিয়ে নীচে নামে।মৌসী দরজা খুলে দিলীপকে বসিয়ে দিয়ে গেছে।
--কেমন আছো এতদিন পর বৌদিকে মনে পড়ল।
--আজ তোমার অফ ডে তাই এলাম।
--বলো খবর বলো।
--এর মধ্যে কেউ এসেছিল?
--একটু আগে অঙ্গনের মামা এসেছিল।
--না না তোমার রিলেটিভ কেউ?
--আমি এখানে কেউ জানলে তো আসবে?
তা হলে ওরা কারা?দিলীপ মনে মনে ভাবে।যশ জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার বলতো?
--কদিন আগে তপাদার দোকানে দুজন এসেছিল।জিজ্ঞেস করল,ড সোমের বাড়ী কোথায়?তপাদা ডিরেকশন দিয়ে বলল,এখন তো পাবেন না।তখন জিজ্ঞেস করল,কোনো পাঞ্জবী মেয়ে ওখানে থাকে কিনা।তপাদা রেগে বলল,আপনারা কারা?ওরা বলল,আমাদের রিলেটিভ আছে।তপাদা বলল,ভদ্রভাবে কথা বলুন,উনি ড সোমের স্ত্রী। তখন স্যরি বলতে বলতে চলে গেল।
ঠোটে ঠোট চেপে এতক্ষন যশবিন্দার।দিলীপের কথা শেষ হতে জিজ্ঞেস করল,ওরা পাঞ্জাবী?
দিলীপ দেখল বৌদির ঠোটে হাসি।জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার বৌদি?
--লম্বি কাহানী।ড সোম নয় প্রাজি আমার খোজে এসেছিল।প্রাজী মতলব আমার কাজিন।ওরা জানতে এসেছিল আমি অঙ্গনের ওয়াইফ কিনা?
বাইরে কিসের যেন গোলমাল।পরমিত নয়তো?যশ বিন্দার মনে মনে প্রস্তুত হয়ে দরজার বাইরে দেখল জনা কয়েক লোক।তারমধ্যে একজন হাত জোড় করে বলছে,ম্যাডাম আমার মেয়ে খুব অসুস্থ আপনি একবার তাকে দেখে আসুন।
--অন্য ডাক্তারকে খবর দিন।আমি কলে যাইনা।
দিলীপ দরজার আড়াল থেকে চিনতে ডিসি পাল সঞ্জয় পাড়ার আরো কয়েকজন।ডিসি পাল কেদে ফেলে প্রায়,ম্যাডাম মেয়েটা মরে যাবে।
--আমার ফিজ কত জানেন?
--আপনি যা বলবেন তাই দেব আমার মেয়েটাকে বাচান।
--এক মিনিট।যশ ভিতরে এসে দিলীপকে জিজ্ঞেস করল,তুমি চেনো।
দিলীপ সংক্ষেপে ওদের পরিচয় দিল।ডিসি পালের মেয়ের নাম নীরা।ওকে নিয়ে ঝামেলা লেগেই আছে।যশ বেরিয়ে এসে ভীড়কে বলল, আপনারা যান।দিলীপের সঙ্গে আমি যাচ্ছি।
দিলীপকে অপেক্ষা করতে বলে যশ উপরে উঠে গাড়ীর চাবি এ্যাটাচি কেস নিয়ে মৌসীকে বলল,জেনকে দেখো।
দিলীপ গাড়ীতে উঠে বলল,বৌদি রমিতার সময় হয়ে এসেছে।
--তোমাকে বলছি,কিছু হলেই মুনলাইটে নিয়ে যাবে।ওরা খবর দেবে তাহলেও তুমি আমাকে একটা ফোন করবে।ব্যাস সব দায়িত্ব আমার।
মিনিট সাত-আটের মধ্যে গাড়ী ডিসি পালের বাড়ীর নীচে দাঁড়ায়।যশ উপরে উঠে দেখল একটা খাটে মেয়েটী শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে ঘর ভর্তি লোক দাঁড়িয়ে দেখছে।যশ ঢূকেই বলল,নিকালিয়ে সব।ঘর খালি হয়ে গেল।একটা অল্প বয়সী বউকে বলল,আপনি থাকুন।আপনি পেশেণ্টের দিদি?
--না আমি বৌদি।
যশ দেখল রেক্টাম দিয়ে ক্ষরন হচ্ছে।দিলীপকে মুখ বাড়িয়ে ডেকে এ্যাটাচিটা নিল।তারপর দরজা বন্ধ করে,এ্যাটাচি খুলে সিরিঞ্জ বের করে কোমরে টিটেনাস পুশ করল।রেকটামের চার পাশে মল জড়ানো।মহিলাকে বলল,একটা গামলায় জল গরম করে আনুন।
মহিলা সম্ভবত ক্যারিং, মহিলা চলে গেলে যশ পেশেণ্টের কানের কাছে ঝুকে জিজ্ঞেস করে,কে করেছে?
পেশেণ্ট কেদে বলল,ব-রু-ন।
দরজা দিয়ে মুখ বের করে দিলীপকে জিজ্ঞেস করে,বরুন বলে কাউকে চেনো?
দিলীপ বলল,নীরার হাজব্যাণ্ড বরুন।
--ওহ গড।পারভার্ট।একটা কাগজে ওষুধের নাম লিখে বলল,এই মলমটা নিয়ে আসুন।সঞ্জয় কাগজটা নিয়ে ওষূধ আনতে ছুটলো।
সঞ্জয়ের বউ শর্মিষ্ঠা এক গামলা জল নিয়ে ঢূকলো।যশ জলে হাত দিয়ে উষ্ণতা পরীক্ষা করে। আরেকটু ঠাণ্ডা হোক।নীরা পাশে বসে বলল,কোনো ভয় নেই।আখ মুছে ফেলো।
জলের মধ্যে কয়েক ফোটা ডেটল মেশিয়ে শর্মিষ্ঠাকে বলল,তুলো ভিজিয়ে পরিষ্কার করতে থাকুন।
নীরার কানের কাছে মুখ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,আগেও এরকম করেছে না এই প্রথম বার?
নীরা বলল,এই প্রথম।ও বলল প্রেগন্যাণ্ট হলে পিছনে করতে হয়।
শর্মিষ্ঠা পাছার বোল ফাক করতে ধক করে গন্ধ এসে নাকে লাগে।বমি হবার মতো অবস্থা।মনে মনে ভাবে হায় ভগবান শেষে এই করতে হবে।তুলোয় মল জড়িয়ে যায়।যশ আজলা করে জল নিয়ে পাছায় ঝাপটা মারে।ইতিমধ্যে সঞ্জয় মলম কিনে এনেছে।শর্মিষ্ঠাকে বলল,এখানে রোজ সকালে একবার বাথুরুম করার পর একবার এই মলমটা লাগিয়ে দেবেন।শর্মিষ্ঠা মলম লাগাতে লাগাতে ভাবে খেয়ে দেয়ে কাজ নেই,মলম লাগাবো।দঞ্জয়কে বলে কালই বাপের বাড়ী চলে যাব।
যশ বেরিয়ে দিলীপকে ডাকে।ডিসি পাল এসে জিজ্ঞেস করেন,আপনার ফিজ?
যশ বলল,ঠিক আছে।তারপর হেসে জিজ্ঞেস করে, জামাইকে জেলের ভাত খাওয়াবো?
ডিসি পাল মাথা চুলকায়।
একজন মহিলা গলা চড়িয়ে বলল,নারীর উপর অত্যাচার আমরা মুখ বুজে সহ্য করব না।আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
যশ গাড়ীতে উঠে দিলীপকে জিজ্ঞেস করে,ঐ মহিলা কে?
--অপাদি অঞ্চলের কমিশনার।
রাত শেষ হয়ে ভোরের আলো চলকে পড়েছে জানলা দিয়ে।যশ উঠে বসল,অঙ্গন ঘুমোচ্ছে ঘুমোক।কলিং বেলের শব্দে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিতে মিতা প্রবেশ করল। ফিরে এসে ঘুমন্ত অঙ্গনের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হল,কথাটা গোপন করা ঠিক হয়নি।যতই হোক অঙ্গন তার সন্তানের পিতা।জেনের ঘুম ভেঙ্গে গেছে,ঝুকে তাকে কোলে তুলে নিল।জেন ইদানীং কোলে থাকতে চায়না।হাটার খুব ইচ্ছে ছেড়ে দিলে এটা টানে ওটা টানে,সব সময় নজর রাখতে হয়।কোলে নিলেই হাত তুলে বাইরে দেখায় অর্থাৎ বাইরে নিয়ে চলো।এত বড় হল কিন্তু ওজন বাড়ছে না।মৌসী দুধের বোতল দিয়ে গেল।জেনকে সোফায় বসিয়ে বোতল ধরিয়ে দিল।নিজেই এখন বোতল ধরে দুধ খেতে পারে।
রান্না ঘর থেকে মৌসীর গলা পাওয়া গেল,বৌদি চা হয়ে গেছে দেব নাকি ফ্লাক্সে রেখে দেব?
যশ দেখল অঙ্গন ঘুমিয়ে আছে।রান্না ঘরে গিয়ে এক কাপ নিজের জন্য নিয়ে বাকীটুকু ফ্লাক্সে ঢেলে রাখে।চা নিয়ে ফিরে এসে দেখল অঙ্গন চিত হয়ে সিলিং-র দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে।
--তুমি উঠে পড়েছো?যশ চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে রান্না ঘরে গেল নিজের জন্য আনতে।
ফিরে এসে দেখল বিছানায় বসে অঙ্গন চায়ে চুমুক দিচ্ছে।একটু ইতস্তত করে যশ বলল,ডার্লিং একটা কথা বলব বলো রাগ করবে না?
পল্টু মুখ তুলে তাকিয়ে হাসল।
--তোমাকে একটা ব্যাপার গোপন করেছি।
যশের পেটে চোখ বুলিয়ে পল্টু বলল,সব কিছু চেষ্টা করেও গোপন করা যায়না।
যশ অবাক হয়ে বলল,ইউ নাটি কি করে বুঝলে?
--কাল যা করছিলে তাতেই সন্দেহ হয়েছিল এইমাত্র কনফার্ম হলাম।এবারেও সেই আনুষ্ঠানিক বিয়ের আগেই হল।
--ডার্লিং তুমি গুসসা হয়েছো?আধো আধো গলায় বলল যশ।
পল্টূ হেসে বলল,বয়স কত?
--ঐ প্রথম বার।দিল্লী ধরলে দ্বিতীয় বার।
--নো প্রবলেম এই ছ-মাসে জেন বড় হয়ে যাবে।
যশের মনে শান্তি ফিরে আসে।জেনকে নিয়ে বারান্দায় চলে গেল।
মিতামাসী রান্নায় ব্যস্ত পল্টু চা খেতে খেতে সংবাদ পত্রে চোখ বোলায়।আজ একটূ তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে।ড্রিম ল্যাণ্ডে একটা অপারেশন আছে।সেখান থেকে লেক ভিউতে যাবে বাড়ী আসবে না।যশের আজ অফ ডে।সপ্তাহে তিন দিন বসে।এই মুহূর্তে বেশী চাপ নিতে চাইছে না।
জেন দৌড়াতে দৌড়াতে রান্না ঘরে চলে এল।যশও পিছন পিছন ছুটে আসে।মিতা মাসী ওকে ধরে ফেলে।
--ওরে দুষ্টু পালাবি কোথায়?যশ জাপটে ধরে বলল।চলো বাপি বেরোলে আমরা বের হব।
--বৌদি আপনি আজ বেরোবেন?
যশ ইশারা করে বোঝায় বেরোবে না।মিতামাসী হাসল।জেনকে নিয়ে চলে গেল যশ।
মিতামাসী জেনকে দেখে ভাবে মেয়েটা কেমন দুবলা-দুবলা।দুধ ফলের রস খাওন তো ভালই ।এতো পুতু-পুতু করলে হয়?এই সময়ে খেলবো দৌড়াইব পড়বো উঠবো তবেই গায়ে গতরে বড় হবে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূরে তাকিয়ে আছে।আজ তার অফ ডে।বাড়ীতেই থাকবে।জামার নীচে হাত ঢূকিয়ে পেটের উপর বোলায়।পেটটা কি ফুলেছে বোঝার চেষ্টা করে।অঙ্গনের নজর এড়ায়নি ঠিক বুঝতে পেরেছে।এই এক মুশিব্বাত দুনিয়ার লোক দেখবে অন্দার মে বাচ্চা আছে।রিয়ার কথা মনে পড়ল জিগরি দোস্ত।অনেক প্রাইভেট কথা ও জানে।অঙ্গনকে পসন্দ করতো জানলেও ঐ ব্যাপারটা জানে না।রিয়া কেন কেউ জানে না। অঙ্গনকেও রিয়াও পসন্দ করতো,ম্যারেড জানার পর ঐ ওকে বহুত সাপোর্ট দিয়েছিল।ও জানে না সেই অঙ্গন এখন তার হাজব্যাণ্ড।ডায়েরীটা দেখতে হবে ওর নম্বরটা যদি থাকে ফোন করবে।রিয়া তারই মতো গাইনি ডাক্তার।এতদিনে ওরও সাদি হয়ে গিয়ে থাকবে।
অঙ্গন বেরিয়ে গেছে মৌসীও চলে গেছে।জেসমিনকে ঘুম পাড়াতে পাড়াতে ঘুমিয়ে পড়েছিল যশ বিন্দার।কলিং বেলের শব্দ শুনে উঠে দরজা খুলে দিতে মৌসী ঢুকে বলল,ছোড়দার মামা এসিছে।
--ঠিক আছে মৌসী জেনের দুধ বানাও।
দরজায় দাঁড়িয়ে ইতস্তত করছেন দেবব্রত।যশ বলল,ভিতরে আসুন'।
দেববাবু সোফায় বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে,পল্টু নেই?
মাজাকি হচ্ছে,এই সময় অঙ্গন থাকেনা জেনেও জিজ্ঞেস করছে।বলল,নেই রাতে আসবেন।
--একটা দরকারে এসেছিলাম।
--বলুন।চা খাবেন?
--হে-হে-হে।
হারামী লোগ এইরকম হাসে।যশ বলল,মৌসী এ ঘরে দু-কাপ চা দিও।
--আমরা এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো।
--বহুৎ আচ্ছা।একথা ড সোমকে বলার কি দরকার, কবে যাবেন?
--যেতে তো পারি যেকোনো সময় কিন্তু--/
মিতা মাসী চা নিয়ে ঢুকতে কথা থেমে গেল।
--ড সোম মানা করেছে?
চায়ে চুমুক দিয়ে দেববাবু বলে,বাবার যা টাকা ছিল প্রায় সবই বোনের বিয়েতে খরচ করেছে।মায়ের পেটের বোন আমিও আপত্তি করিনি--।
--শুনুন মিস্টার আপনার ফ্যামিলি হিস্টরিতে আমার ইন্টারেস্ট নেই।এখন কি বলতে এসেছেন বলুন।
--ঠিকই সেসব আপনার জানার কথা নয়।মনো থাকলে বলতো।
--ব্যাস আপনার বাত খতম?যশ বাধা দিল।
--না বলছিলাম কি ফ্লাটে টাকা প্রায় সব দেওয়া হয়ে গেছে--।
--কিছু টাকা বাকী আছে?
--আজ্ঞে?হে-হে-হে ঠিকই ধরেছেন।
--কত টাকা?
--আমরা চলে গেলে এ বাড়ী ভাড়া দিলে কয়েক বছরে সেই টাকা উঠে আসবে।
--সেইটাই পুছা করছি কিতনে রূপয়ে?
--তা ধরেন গিয়ে রেজিস্ট্রি-ফেজিস্ট্রি মিলিয়ে পঞ্চাশের মত দিলেই হয়ে যাবে?
--সিরিফ পচ্চাশ রূপেয়া?যশ অবাক হয়ে বলল।
--না না পঞ্চাশ হাজার।পল্টু যদি না দেয় তাহলে বাড়ী ছাড়া মুষ্কিল।
--ঠিক আছে তখন আমার কাছে আসবেন।
--থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাডাম থ্যাঙ্ক ইউ।
দেববাবু চলে গেল।মৌসী ঘরে ঘরে ধুপ জ্বালিয়ে সন্ধ্যে দিতে থাকে।রাস্তায় বাতি স্তম্ভে আলো জ্বলে উঠল।যশ ভাবছে গাড়ীটা নিয়ে বের হবে কিনা?এমন সময় আবার বেল বেজে উঠল।যশ গলা তুলে বলল,,মৌসী দেখো তো আবার কে এল?
মিতামাসী এসে খবর দিল,ছোড়দার বন্ধু দিলীপ এসেছে।
দিলীপ এলে পাড়ার খবর পাওয়া যায়।আজ আর বেরনো হবে না।জেন একটা বড় বাধা। যশ সিড়ী দিয়ে নীচে নামে।মৌসী দরজা খুলে দিলীপকে বসিয়ে দিয়ে গেছে।
--কেমন আছো এতদিন পর বৌদিকে মনে পড়ল।
--আজ তোমার অফ ডে তাই এলাম।
--বলো খবর বলো।
--এর মধ্যে কেউ এসেছিল?
--একটু আগে অঙ্গনের মামা এসেছিল।
--না না তোমার রিলেটিভ কেউ?
--আমি এখানে কেউ জানলে তো আসবে?
তা হলে ওরা কারা?দিলীপ মনে মনে ভাবে।যশ জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার বলতো?
--কদিন আগে তপাদার দোকানে দুজন এসেছিল।জিজ্ঞেস করল,ড সোমের বাড়ী কোথায়?তপাদা ডিরেকশন দিয়ে বলল,এখন তো পাবেন না।তখন জিজ্ঞেস করল,কোনো পাঞ্জবী মেয়ে ওখানে থাকে কিনা।তপাদা রেগে বলল,আপনারা কারা?ওরা বলল,আমাদের রিলেটিভ আছে।তপাদা বলল,ভদ্রভাবে কথা বলুন,উনি ড সোমের স্ত্রী। তখন স্যরি বলতে বলতে চলে গেল।
ঠোটে ঠোট চেপে এতক্ষন যশবিন্দার।দিলীপের কথা শেষ হতে জিজ্ঞেস করল,ওরা পাঞ্জাবী?
দিলীপ দেখল বৌদির ঠোটে হাসি।জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার বৌদি?
--লম্বি কাহানী।ড সোম নয় প্রাজি আমার খোজে এসেছিল।প্রাজী মতলব আমার কাজিন।ওরা জানতে এসেছিল আমি অঙ্গনের ওয়াইফ কিনা?
বাইরে কিসের যেন গোলমাল।পরমিত নয়তো?যশ বিন্দার মনে মনে প্রস্তুত হয়ে দরজার বাইরে দেখল জনা কয়েক লোক।তারমধ্যে একজন হাত জোড় করে বলছে,ম্যাডাম আমার মেয়ে খুব অসুস্থ আপনি একবার তাকে দেখে আসুন।
--অন্য ডাক্তারকে খবর দিন।আমি কলে যাইনা।
দিলীপ দরজার আড়াল থেকে চিনতে ডিসি পাল সঞ্জয় পাড়ার আরো কয়েকজন।ডিসি পাল কেদে ফেলে প্রায়,ম্যাডাম মেয়েটা মরে যাবে।
--আমার ফিজ কত জানেন?
--আপনি যা বলবেন তাই দেব আমার মেয়েটাকে বাচান।
--এক মিনিট।যশ ভিতরে এসে দিলীপকে জিজ্ঞেস করল,তুমি চেনো।
দিলীপ সংক্ষেপে ওদের পরিচয় দিল।ডিসি পালের মেয়ের নাম নীরা।ওকে নিয়ে ঝামেলা লেগেই আছে।যশ বেরিয়ে এসে ভীড়কে বলল, আপনারা যান।দিলীপের সঙ্গে আমি যাচ্ছি।
দিলীপকে অপেক্ষা করতে বলে যশ উপরে উঠে গাড়ীর চাবি এ্যাটাচি কেস নিয়ে মৌসীকে বলল,জেনকে দেখো।
দিলীপ গাড়ীতে উঠে বলল,বৌদি রমিতার সময় হয়ে এসেছে।
--তোমাকে বলছি,কিছু হলেই মুনলাইটে নিয়ে যাবে।ওরা খবর দেবে তাহলেও তুমি আমাকে একটা ফোন করবে।ব্যাস সব দায়িত্ব আমার।
মিনিট সাত-আটের মধ্যে গাড়ী ডিসি পালের বাড়ীর নীচে দাঁড়ায়।যশ উপরে উঠে দেখল একটা খাটে মেয়েটী শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে ঘর ভর্তি লোক দাঁড়িয়ে দেখছে।যশ ঢূকেই বলল,নিকালিয়ে সব।ঘর খালি হয়ে গেল।একটা অল্প বয়সী বউকে বলল,আপনি থাকুন।আপনি পেশেণ্টের দিদি?
--না আমি বৌদি।
যশ দেখল রেক্টাম দিয়ে ক্ষরন হচ্ছে।দিলীপকে মুখ বাড়িয়ে ডেকে এ্যাটাচিটা নিল।তারপর দরজা বন্ধ করে,এ্যাটাচি খুলে সিরিঞ্জ বের করে কোমরে টিটেনাস পুশ করল।রেকটামের চার পাশে মল জড়ানো।মহিলাকে বলল,একটা গামলায় জল গরম করে আনুন।
মহিলা সম্ভবত ক্যারিং, মহিলা চলে গেলে যশ পেশেণ্টের কানের কাছে ঝুকে জিজ্ঞেস করে,কে করেছে?
পেশেণ্ট কেদে বলল,ব-রু-ন।
দরজা দিয়ে মুখ বের করে দিলীপকে জিজ্ঞেস করে,বরুন বলে কাউকে চেনো?
দিলীপ বলল,নীরার হাজব্যাণ্ড বরুন।
--ওহ গড।পারভার্ট।একটা কাগজে ওষুধের নাম লিখে বলল,এই মলমটা নিয়ে আসুন।সঞ্জয় কাগজটা নিয়ে ওষূধ আনতে ছুটলো।
সঞ্জয়ের বউ শর্মিষ্ঠা এক গামলা জল নিয়ে ঢূকলো।যশ জলে হাত দিয়ে উষ্ণতা পরীক্ষা করে। আরেকটু ঠাণ্ডা হোক।নীরা পাশে বসে বলল,কোনো ভয় নেই।আখ মুছে ফেলো।
জলের মধ্যে কয়েক ফোটা ডেটল মেশিয়ে শর্মিষ্ঠাকে বলল,তুলো ভিজিয়ে পরিষ্কার করতে থাকুন।
নীরার কানের কাছে মুখ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,আগেও এরকম করেছে না এই প্রথম বার?
নীরা বলল,এই প্রথম।ও বলল প্রেগন্যাণ্ট হলে পিছনে করতে হয়।
শর্মিষ্ঠা পাছার বোল ফাক করতে ধক করে গন্ধ এসে নাকে লাগে।বমি হবার মতো অবস্থা।মনে মনে ভাবে হায় ভগবান শেষে এই করতে হবে।তুলোয় মল জড়িয়ে যায়।যশ আজলা করে জল নিয়ে পাছায় ঝাপটা মারে।ইতিমধ্যে সঞ্জয় মলম কিনে এনেছে।শর্মিষ্ঠাকে বলল,এখানে রোজ সকালে একবার বাথুরুম করার পর একবার এই মলমটা লাগিয়ে দেবেন।শর্মিষ্ঠা মলম লাগাতে লাগাতে ভাবে খেয়ে দেয়ে কাজ নেই,মলম লাগাবো।দঞ্জয়কে বলে কালই বাপের বাড়ী চলে যাব।
যশ বেরিয়ে দিলীপকে ডাকে।ডিসি পাল এসে জিজ্ঞেস করেন,আপনার ফিজ?
যশ বলল,ঠিক আছে।তারপর হেসে জিজ্ঞেস করে, জামাইকে জেলের ভাত খাওয়াবো?
ডিসি পাল মাথা চুলকায়।
একজন মহিলা গলা চড়িয়ে বলল,নারীর উপর অত্যাচার আমরা মুখ বুজে সহ্য করব না।আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
যশ গাড়ীতে উঠে দিলীপকে জিজ্ঞেস করে,ঐ মহিলা কে?
--অপাদি অঞ্চলের কমিশনার।