21-03-2020, 07:22 PM
(Update No. 193)
নিশিতা বলল, “আপনি বেরিয়ে যাবার সাথে সাথেই আমি পরীক্ষিত, সুরজ আর গাবলুকে ফোন করে এস এম খান নামে ওই লোকটাকে খুঁজে বের করতে বলেছি। ওরা জিজ্ঞেস করছিল কোন এরিয়াতে খুঁজতে হবে। সেটা তো আমরা কেউই জানিনা, তাই বলেছি যে কোথায় আছে সেটাই খুঁজে বের করতে হবে। আর সন্ধান পেলে যেন সাথে সাথে আমাকে বা আপনাকে ফোন করে জানায়”।
তারপর গ্লাসে এক চুমুক দিয়ে আবার বলল, “আর মুরলিধরন আর শিবেন্দুকে আর্জেন্ট এসে অফিসে দেখা করতে বলেছিলাম। ওরা বেলা প্রায় একটার দিকে এসেছিল। তারপর আপনার মোবাইলে প্রাইভেট নাম্বারের কলটা দেখে নিজেদের ল্যাপটপে কি কি যেন নোট করে নিয়ে চলে গেল। আর বলল যে তারা লোকেশান জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের জানিয়ে দেবে। কিন্তু স্যার এখন পর্যন্ত কেউই কিছু জানায় নি”।
বিমল বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে কিছু একটা ভেবে বলল, “কাল সকালে তুমি অফিসে একটু তাড়াতাড়ি এস। আর এসেই সারা কলকাতা জুড়ে আমাদের যত সব চ্যানেল আছে তাদের সবাইকে সতর্ক করে দিও যেন আমাদের অফিস আর ফার্ম হাউসের ওপর দুর থেকে কড়া নজর রাখে। আমরা বাইরে কোথাও গেলেও যেন আমাদের চারপাশে থেকে গার্ড করে। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই যেন পাকড়াও করে আমাকে জানায়। একটু আগেই অফিসের শেষ দু’জন স্টাফ যে বেরিয়ে গেছে, সেটা সে জানে। আর এই মূহুর্তে শুধু তুমিই যে আমার সাথে এ’ঘরে আছ, এ’খবরও সে জানে। আমাকে ফোনে সে’কথা বলছিল। তাই আমার মনে হচ্ছে কেউ আমার ওপর নজর রাখছে। আর আমার ফার্ম হাউসেও আমার আর এক মহিলার ভিডিও রেকর্ডিং করেছে সে। সে ভিডিওটা ড্রাইভারের হাতে দিয়ে গেছে যখন আমি বেলেঘাটা সাইটে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর তারপরে তিন নাম্বার সিডিটা যেটা তুমি একটু আগে দেখলে, সেটাও মনে হয় আমি যখন ফার্ম হাউসের ভেতরে গিয়েছিলাম, তখনই কোন এক সময় সেটা আমার গাড়িতে রেখে যাওয়া ল্যাপটপের ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু গাড়ি তো মেইন গেটের ভেতরেই ছিল। মেইন গেটের ভেতর তো সিকিউরিটিরা ছিল। কোথায় কিভাবে তাহলে সেটা আমার ব্যাগে ঢোকালো তা পরিষ্কার বুঝতে পাচ্ছি না। তবে আমার মন বলছে, ফার্ম হাউসের ওপরেও ওই লোকটা নজর রাখছে। ফার্ম হাউসের ওপর বা এই অফিসের ওপর গোপনে নজর রাখলে মনে হয় কেউ না কেউ ধরা পড়বে। আর হ্যাঁ, যে কুরিয়ার সার্ভিস প্রথম সিডির ডেলিভারিটা দিয়ে গেল, সেই কুরিয়ার সার্ভিসে খোঁজ করতে বলবে, ডেলিভারি বয়টাকেও জেরা করতে বলবে। কুরিয়ারের অফিস থেকে সেন্ডার্স অ্যাড্রেস জেনে নিয়ে ওই ঠিকানায় খোঁজ করতে বলবে। যে করেই হোক আগামীকাল সন্ধ্যের আগে কোন না কোন পজিটিভ রিপোর্ট যেন আমার হাতে অবশ্যই আসে, সেটা সবাইকে ভাল ভাবে বুঝিয়ে দিও”।
নিশিতা বলল, “স্যার প্রথম সিডিটায় সেন্ডারের নাম ছিল এস এম খান। আর অন্য সিডি দুটোয় সেন্ডার্স নেম দেখলাম বি এস মন্ডল আর এম ভি আনোয়ার। এদের খোঁজ করতে হবে না”?
বিমল আরেক ঢোঁক ব্র্যান্ডি খেয়ে বলল, “প্রথম সিডিটা পাবার পর মনে হয়েছিল ওই এস এম খানই বুঝি এর পেছনে আছে। কিন্তু পরে বেলেঘাটায় দু’নম্বর সিডিটা পেতেই আমি বুঝে গেছি যে ওই নাম গুলো লেখা হয়েছে শুধু আমাদের পাজল করবার উদ্দেশ্যে। এখন তো আমাদের কাছে তিনটে নাম এসেছে। কিন্তু একটা নামও আসল নাম নয়। সব গুলোই ভূয়ো নাম। আর নাম সত্যি হলেও, এতবড় শহরে শুধু নাম ধরে খুঁজে কাজের কাজ কিছুই হবে না। গোটা কলকাতা খুঁজলে হয়ত তিনশ’ জন এস এম খান, চারশ’ জন বি এস মন্ডল আর পাঁচশ’ জন এম ভি আনোয়ার পাওয়া যাবে। তাতে কি কাজের কাজ কিছু হবে? কিচ্ছু হবে না। আর এখন তো আমি স্পষ্টই বুঝতে পারছি যে সব ক’টা নামই ভূয়ো। তাই নামের পেছনে না ছুটে অন্যভাবে আমাদের চেষ্টা চালাতে হবে। আমার পেছন পেছন যে কেউ বেলেঘাটা আর দক্ষিনেশ্বর অব্দি গেছে, বা আগে থেকেই সেখানে তারা আমার অপেক্ষায় ছিল, এটা তো পরিষ্কার হয়ে গেছে। আর এই মূহুর্তেও লোকটা আমাদের অফিসের ওপর নজর রেখেছে। তাই আমার চারপাশে গোপনে নজর রাখলে কেউ না কেউ ঠিক ধরা পড়বে। আর মুরলিধরন আর শিবেন্দুকে বল ওদের গ্রুপের আরও কয়েকজনকে যেন কাজে লাগায়। আমার অফিস, বাড়ি, ফার্ম হাউস আর আমার সবগুলো মোবাইলে ইনকামিং আউটগোয়িং সব কলের ওপর যেন তারা কড়া নজর রাখে। আজ বারো তারিখ। দু’দিনের মধ্যেই যে কোন উপায়ে লোকটাকে খুঁজে বের করতেই হবে আমাদের। নইলে বিরাট সর্বনাশ হয়ে যাবে আমার”।
নিশিতা বিমলের কথার গুরুত্ব বুঝতে পেরে বলল, “ঠিক আছে স্যার, আমি কাল আরও একঘন্টা আগে এসে সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে দেব। কিন্তু স্যার, এমন কি সর্বনাশের আশঙ্কা করছেন আপনি? লোকটা কী চায়”?
বিমল এবার গ্লাসের বাকি তরলটুকু একবারে গলাধঃকরণ করে বলল, “এমন একটা বিপদ যে আমার ওপর কখনও আসতে পারে, এ আমি স্বপ্নেও কোনদিন ভাবিনি। তুমি জান না নিশিতা। লোকটা আমাকে আজ সারাদিনে তিনবার ফোন করেছে। কিন্তু একবারও সে আমাকে কোন কথা বলার সুযোগই দেয়নি। ও কি বলেছে জানো? ও বলেছে যে আজকে সে যে সিডিগুলো আমাকে পাঠিয়েছে, এর সবক’টা ভিডিওই সে আগামি সতেরো তারিখ নেটে আপলোড করে দেবে। আর শুধু তাই নয়, আমার চেনা জানা পরিচিত মহলের সবাইকে সে ওই সিডিগুলোর কপি পাঠিয়ে দেবে। বুঝতে পারছ নিশি, এর ফল কত ভয়ঙ্কর হতে পারে। আমি সমাজে কাউকে মুখ দেখাতে পারব না। লোকটাকে ধরতে না পারলে আমাকে হয়ত সুইসাইড করতে হবে”।
নিশিতা সব শুনে ঘাবড়ে গিয়ে বলল, “এ তো সাংঘাতিক ব্যাপার স্যার! কিন্তু লোকটা আসলে কে? আর কিই বা চায় সে”?
বিমল একটু ভেবে বলল, “কে, সেটাই তো শুধু আমি জানতে চাই। তবে সে যে আমার কাছে কী চায়, এ ব্যাপারেও তো কিছুই বলেনি। একবার শুধু বলেছিল যে নেটে আপলোড করে সে নাকি প্রচুর প্রচুর টাকা রোজগার করতে পারবে। আর এ’কথাও বলেছিল যে শুধু এই তিনটে ভিডিওই নয়, তার কাছে নাকি আমাদের আরও অনেক ভিডিও আছে। বাকি ভিডিওগুলোও সে নাকি পরে কখনও নেটে আপলোড করে দেবে। আর কবে কখন সেটা করবে তাও নাকি আমাকে জানাবে। সে যদি এটা করতে সফল হয়, তাহলে বুঝতেই পারছ, আই উইল বি ফিনিশড। ফিনিশড ফর এভার। তাই যে করেই হোক, লেটেস্ট বাই সিক্সটিন্থ বদমাশটাকে আমাদের ধরতেই হবে, বাই হুক অর ক্রুক। তুমি তাই সবাইকে সেভাবে বলে দিও। তবে ভিডিওর ব্যাপারগুলোর কথা প্লীজ অন্য কারো কাছে ডিসক্লোজ কোর না। ইটস মাই হাম্বল রিকোয়েস্ট টু ইউ নিশি”।
নিশিতা ব্যাপারটার গম্ভীরতা শুনে চমকে উঠল। খানিক আগেই সে ভেবেছিল, তার নিজের বুঝি কোনও বিপদ এতে নেই। কিন্তু এ ভিডিও নেটে আপলোড হয়ে গেলে সবাই তাকেও দেখতে পাবে। তারও চেনাজানা মহলের অনেকেই নেটের এ’ধরণের এডাল্ট ওয়েবসাইট গুলোতে খুব সার্ফিং করে। তার ওই ভিডিও দেখলে তো তারা তাকে চিনে ফেলবে। তখন তারও তো সমাজে মুখ দেখানো অসম্ভব হয়ে উঠবে। আর তার সংসার? সেটাও কি টিকবে? তার স্বামী যে একটা ভিডিও দেখেই তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে। এই ভেবে ভয়ে তার গলা শুকিয়ে গেল। ঢোঁক গিলে গিলে কোনরকমে একটু গলাটা ভিজিয়ে নিয়ে ফ্যাসফেসে গলায় সে বলল, “আ আমি বুঝতে পারছি স্যার। কাল সকাল থেকেই আমি আমাদের সমস্ত চ্যানেল গুলোকেই কাজে লাগিয়ে দেব। আচ্ছা স্যার, মিনিস্ট্রি লেভেল থেকে আমরা কি কোন সহায়তা পেতে পারি এ ব্যাপারে? মানে স্পেসিফিক্যালি টেলিকমিউনিকেশন বা তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ থেকে”।
বিমল একটু ভেবে বলল, “ব্যাপারটা এতটাই সেনসিটিভ যে যাকে তাকে বলাও যাবে না, সেটা বুঝতে পারছ না তুমি? তবু আমি আজ রাতটা একটু ভেবে দেখি। আমার দু’একজন ঘণিষ্ট বন্ধুর সাথে একটু পরামর্শ করে দেখি। কিন্তু বদমাশটা যে আমার আশেপাশেই আজ সারাটা দিন কাটিয়েছে সেটা তো বুঝতেই পাচ্ছি। হয়তো আগামীকালও সে আমার আশেপাশেই থাকবে। তাই আমাদের চ্যানেলগুলো যদি খুব কেয়ারফুলি নিজেদের আড়ালে রেখে আমার আশেপাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখে, তাহলেই মনে হয় লোকটাকে আমরা ধরতে পারব। আর সে চেষ্টাটাই আমাদের সকলকে করতে হবে। তাই তুমি কাল সকাল থেকেই যা যা করবার সব কিছু কর। লীভ নো স্টোন আনটার্নড”।
নিশিতাও সায় দিয়ে বলল, “শিয়োর স্যার। কাল সবার আগে আমি এ কাজটাই করব”।
বিমল বলল, “আর আরেকটা জায়গাতেও একটু নজর রাখতে হবে। তুমি একটা প্যাড আর পেন নিয়ে এস আমি সেখানকার ঠিকানাটা তোমাকে বলছি। তুমি নোট ডাউন করে নাও”।
নিশিতা রাইটিং প্যাড নিয়ে আসবার পর সবিতার হোটেলের ঠিকানা, ফোন নাম্বার আর রুম নাম্বার লিখিয়ে দিয়ে বিমল বলল, “এই শেষ ভিডিওটা ওখানেই রেকর্ড করা হয়েছে। এটা একটা হোটেলের রুম। ওই হোটেলের মালিক ম্যানেজার বয় বেয়ারা সবাইকে জেরা করতে হবে। আর ওই হোটেলটার ওপরেও আমাদের নজরদারি করতে হবে। কাউকে সামান্য সন্দেহ হলেই সঙ্গে সঙ্গে তুলে আনতে হবে তাকে। এমন ইনস্ট্রাকশনই দেবে সবাইকে”।
****************
পরদিন সকালে বিমল হাত মুখ ধুয়ে নিজের বেডরুমের বাইরে এসে দাঁড়াতেই কাজের মহিলাটাকে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে জিজ্ঞেস করল, “তোমার মেমসাব ঘুম থেকে উঠেছে”?
মহিলাটি জবাব দিল, “না সাব, এখনও ওঠে নি। ডাকবো”?
বিমল “না থাক” বলে সে নিজেই সবিতার বেডরুমের দিকে এগিয়ে গেল। গত বছর পাঁচেক ধরে তার আর সবিতার বেডরুম আলাদা হয়ে গেছে। স্ত্রীর শরীরের ওপর তার আকর্ষণ পুরোপুরি শেষ হয়ে যেতে বিমল নিজেই তাদের দু’জনের শোবার জন্য আলাদা আলাদা বেডরুমের ব্যবস্থা করেছিল। বিমল চা খেতে খেতেই সবিতার বেডরুমের দরজায় ধাক্কা দিয়ে বুঝতে পারল দড়জাটা ভেতর থেকে বন্ধ। বেশ কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে সবিতার নাম ধরে ডাকবার পর ভেতর থেকে সবিতা ঘুম জড়ানো স্বরে সাড়া দিতে বিমল বাইরে থেকেই গলা তুলে বলল, “তোমার সাথে কিছু জরুরী কথা আছে। তাড়াতাড়ি আমার রুমে এস। আমাকে আবার ন’টার সময়েই বেরিয়ে যেতে হবে। শুনেছ”?
সবিতা ভেতর থেকে দড়জা না খুলেই জবাব দিল, “ঠিক আছে। তুমি তোমার ঘরে যাও, আমি আসছি”।
বিমল আগের দিনে পাওয়া সিডি গুলোর ব্যাপারে ভাবতে ভাবতেই চা খেতে খেতে সবিতার ঘরের দড়জার সামনে থেকে সরে এল। নিজের বেডরুমের দড়জার সামনে দাঁড়িয়েই চা খাওয়া শেষ করল। কাপটা সেখানেই নিচে নামিয়ে রেখে সে আবার তার বেডরুমে ঢুকে গেল। রোজ এমন সময় সে খবরের কাগজ দেখে। কিন্তু আজ যেন সে তা ভুলেই গেছে। কাল অফিস থেকে রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ সে বাড়ি ফিরে এসেছিল। তখনও সবিতার ঘরের দড়জা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। অবশ্য যেদিন সবিতা হোটেলে যায় সে’সব দিন সে হোটেল থেকে ফিরে নিজের বেডরুমের ভেতরেই থাকে বেশীর ভাগ। আর বিমল নিজেও সপ্তাহে দু’ তিনদিন রাতে বাড়িতেই ফেরে না। সে রাতগুলো সে তার ফার্ম হাউসে বা অন্য কোথাও আলাদা আলাদা সঙ্গিনীদের সাথে কাটায়। আর পুরো রাতের আউটিং যে রাতে না হয়, সে রাতে সে তার অফিসের রেস্টরুমেই নিশিতা, কনীনিকা, পরিনীতি বা তাদের মতই অন্য কাউকে ভোগ করে অনেক রাত অব্দি। তাই রাত বারোটা একটার আগে সে কোনদিনই বাড়ি ফেরে না। তবে দেরীতে ফিরলেও বা রাতটা বাইরে কাটালেও সকাল আটটা থেকে ন’টা পর্যন্ত সে রোজ বাড়িতেই থাকে। রোজ ওই সময়েই এক দু’ লহমার জন্যে সবিতার সাথে তার দেখা হয়। দু’ একটা টুকটাক কথাও হয় অবশ্য। তাদের দাম্পত্য জীবন বলতে শুধু এটুকুই অবশিষ্ট আছে। দিনের বাকি তেইশটা ঘন্টায় তারা কেউ কাউকে দেখতে অভ্যস্ত নয়। গত তিন চার বছরে সে একবারও বুঝি তার স্ত্রীর মুখটার দিকে ভাল করে তাকায়ও নি। গত রাতে লোকটা ফোনে বলেছিল যে সবিতাকে নাকি কচি বুড়ো সকলেই চুদতে চায় এখনও। সত্যি কি সবিতার শরীরে এখনও এত সেক্স অ্যাপীল আছে?
সবিতা তখনও আসছেনা দেখে সে খবরের কাগজটা আনবে ভেবে নিজের রুম থেকে বেরোতেই সবিতার ঘরের দড়জাটা খুলে গেল। কিন্তু সবিতার বদলে তাদের ছেলে বিকিকে সবিতার বেডরুম থেকে বেরোতে দেখে সে খুব অবাক হল। বিকি এ’সময় সবিতার ঘরে ঢুকেছিল কেন? সবিতাকে কিছু বলতে এসেছিল না অন্য কিছু? কিন্তু সে আর কিছু ভাববার আগেই সবিতাকেও ঘর থেকে বেরিয়ে তার ঘরের দিকে আসতে দেখে সে আবার নিজের ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ল।
সবিতা তার ঘরে এসে ঢুকতেই বিমল বলল, “দড়জাটা বন্ধ করে দাও”।
সবিতা বেশ অবাক হল। প্রায় বছর পাঁচেক বাদে তার স্বামী তাকে কাছে ডেকেছে, আবার দড়জা বন্ধ করতে বলেছে, ব্যাপারটা কি? এতদিন বাদে আবার স্ত্রীর জন্যে তার প্রেম উথলে উঠল নাকি? তাও আবার এমন সাত সকালে! কিন্তু সবিতার যে এখন আর সে মুডটা আসছে না। গত বছর দুয়েক ধরে তার ছেলের বন্ধুদের সাথে আর বছর পাঁচেক ধরে অজানা অচেনা নানা বয়সের পুরুষের সাথে সান্নিধ্য করে এখন স্বামীর ওপর আগের মত টান একেবারেই নেই। আর ঘন্টা দুয়েক আগেও তার ছেলে বিকি তাকে যে সুখ দিয়েছে, তাতে তার শরীর মন এখন পুরোপুরি শান্ত। তবু স্বামীর নির্দেশে সে বেডরুমের দড়জা বন্ধ করে তার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে বলল, “কি হয়েছে, বলো”?
বিমল বিছানায় বসেই সবিতার মুখের দিকে তাকাল। সত্যি! সবিতাকে আগের চেয়ে অনেক বেশী সেক্সী আর সুন্দরী দেখাচ্ছে তো! লোকটা তাহলে মিথ্যে বলেনি! সবিতার মুখের ওপর থেকে তার দৃষ্টি এবার সবিতার বুকের ওপর পড়ল। ঢিলেঢালা একটা নাইটি পড়ে থাকা সত্বেও তার উঁচু উঁচু বুকদুটো দেখে বিমলের মনে হল তার স্ত্রীর বুক সত্যি এখন আগের চেয়েও বড় আর ভারী দেখাচ্ছে। এমন বুকের প্রতি সব বয়সের পুরুষেরাই আকর্ষিত হবে। তারপর তার চোখ গেল সবিতার তলপেট আর কোমড়ের দিকে। যদিও ঢিলে নাইটির ওপর থেকে সঠিক বোঝা যাচ্ছে না আর সামনে থেকে তার পাছার দিকটাও চোখে পড়ছে না, তবু বিমলের মনে হল সবিতা আগের চেয়ে অনেক স্লিম হয়েছে। তলপেটটা আর আগের মত অত উঁচু মনে হচ্ছে না। কোমড়ের সাইজও মনে হয় বেশ কিছুটা কমেছে। অনেক দিন পর নিজের স্ত্রীকে দেখে তার শরীরে কিছুটা হলেও উত্তেজনা হচ্ছে। কিন্তু না, এখন ও’সব ভাববার সময় নেই।
বিমলকে নিজের শরীরের দিকে এভাবে তাকিয়ে দেখতে দেখে সবিতাও মনে মনে খুব অবাক হল। সে বুঝতে পারছে না বিমলের এমনভাবে তাকে দেখার পেছনে কি কারন থাকতে পারে। তাই বিমল কিছু বলছে না দেখে সে নিজেই বলল, “কী হল, কি জন্যে ডেকেছ? কিছু বলবে”?
বিমল নিজের সন্বিত ফিরে পেয়ে গলা খাকড়ে বলল, “একটা বড় সমস্যায় পড়েছি সবিতা। আর শুধু আমি একাই নই। তুমিও একই রকম সমস্যায় পড়েছ”।
সবিতা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কী এমন সমস্যা হয়েছে”?
বিমল এবার কয়েক সেকেন্ড ভেবে বলল, “তুমি কাল হোটেলের রুমে আমাদের বিকির বয়সী তিনটে ছেলের সাথে সময় কাটিয়েছ, তাই না? আর সন্ধ্যে ছ’টার সময় ওই রুমে ঢুকেছিলে, এটা কি ঠিক”?
সবিতা বিমলের কথার আসল তাৎপর্য বুঝতে না পেরে বলল, “সে তো কাল ফোনেই তোমাকে বলেছি। আজ আবার একই কথা জানতে চাইছ কেন? আর শোনো, আর কোনদিন অমন সময় আমাকে তুমি ফোন করবে না। তোমাকে তো আগেও বলেছি, সন্ধ্যে ছ’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত তুমি আমাকে আমার মত থাকতে দেবে। আর তুমি যেমন ব্যবস্থা করে দিয়েছ, আমি তো সেটাই মেনে চলছি। ওই হোটেলের রুম ছাড়া এখন আর কারো সাথে অন্য কোথাও যাই না আমি। তুমি যখন আমাকে বলেছ ও’সবে রিস্ক বেশী, তখন থেকেই আমি ও’সব ছেড়ে দিয়েছি। যা করি তা ওই রুমেই করি”।
বিমল হাত তুলে সবিতাকে থামিয়ে চাপা গলায় বলল, “আমি সে’কথা বলছি না সবিতা। আমি যেটা বলতে চাইছি, তা হল, তুমি যে কাল তিনটে কম বয়সী ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলে, এ কথাটা তোমাকে ফোন করবার আগেই আমি জানতে পেরেছিলাম। কেউ একজন আমাকে ফোন করে এ’কথা বলেছিল। ফোনটা কে করেছিল বুঝতে পারিনি। কিন্তু তুমি যে ওই সময়ে হোটেলে থাকতে পার, বা তোমার সাথে কম বয়সী কোন ছেলে থাকতে পারে, এটা মানতে আমার কোন কষ্ট হয়নি। কিন্তু একসাথে তিনটে ছেলের সাথে তুমি ও’সব করছ শুনে কথাটা বিশ্বাস হচ্ছিল না। কিন্তু তার চেয়েও বড় .......”
বিমলের কথার মাঝখানেই সবিতা তাকে বাধা দিয়ে বলে উঠল, “আরে ওদের কথা আর বোল না। ওরা সবাই বিকির বয়সী। বিকিরই বন্ধু বান্ধব। একজন বাঙালী, একজন পাঞ্জাবী আর একজন ছিল মারোয়ারী। আর তুমি তো জানো, কম বয়সী ছেলেগুলোর উদ্দম উদ্দীপনা আমার খুব ভাল লাগে। ওরা সকলেই এর আগেও একা বা দু’জন একসাথে আমার সাথে ও’ঘরে এসেছে অনেকবার। কিন্তু তিন বন্ধু মিলে একসাথে আমার চুদাই করবে বলে অনেকদিন ধরে কাকুতি মিনতি করছিল। কাল আর ওদের আটকাতে পারিনি। তাই কাল ওদের তিনজনকে একসাথেই নিয়েছি আমি। আর সত্যি বলছি জানু তোমায়, কাল যা সুখ পেয়েছি, অমন সুখ জীবনে কখনও পাই নি। তুমি যখন আমাকে ফোনটা করলে তখন ওদের তিন জনের তিনটে লন্ড আমার তিনটে ফুটোয় যাতায়াত করছিল। অমন অবস্থায় ফোন কল অ্যাটেন্ড করা কত মুস্কিল সেটা বুঝতে পারছ না তুমি? চুতে আর গাঁড়ে লন্ডের ধাক্কা খেতে খেতেও কথা বলা যায়। আর সে চেষ্টাই করছিলাম আমি তখন। কিন্তু আমি যখন কথা বলছিলাম, তখন বারবার বাঙালী ছেলেটা তার লন্ডটা আমার মুখের মধ্যে ঠেলে ঠেলে ঢোকাতে চাইছিল। ওই পরিস্থিতিতে কি আর কথা বলা যায়? তাই তো বাধ্য হয়েই কথা বলা বন্ধ করতে হয়েছিল”।
বিমল সবিতার কথা শুনে বলল, “আহহা। আমি সে’কথা বলছি না সবিতা। যা করেছ, ঠিক আছে। আমি নিজেই তো তোমাকে ওই রুমে সবকিছু করবার পারমিশান দিয়েছি। কিন্তু ওই লোকটা ফোনে যে আমাকে ঘটণাটা বলল, আমি তাতেই অবাক হয়েছি। তুমি চুপ করে একটু আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনো প্লীজ। তারপর বুঝতে পারবে”। বলে একটু থেমে আবার বলতে লাগল, “লোকটা কাল রাত প্রায় পৌনে ন’টার সময় আমাকে জানাল যে তুমি বিকির বয়সী তিনটে ছেলেকে একসাথে নিয়ে ওই রুমে এনজয় করছ, আমি সে ব্যাপারেই কথা বলতে চাইছি তোমার সাথে। লোকটা কি করে এ’কথা জানলো সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। আর শুধু তাই নয় তুমি এর আগেও বিকির এক বন্ধুর সাথে ওই রুমে যখন সেক্স এনজয় করেছিলে সেটা সে ভিডিও রেকর্ডিং করেছে। আর সেই ভিডিওর একটা সিডিও সে আমার কাছে পাঠিয়েছে। তাই আমার মনে হয়েছিল যে কেউ তোমার ওই হোটেলের রুমে গোপনে কোন ভিডিও ক্যামেরা বসিয়ে সব ঘটণা রেকর্ডিং করছে। তাই তোমাকে সাবধান করবার জন্যই আমি কাল ওই সময়ে ফোনটা করেছিলাম সবিতা। তোমাদের মস্তিতে বাধা দেওয়ার কোন ইচ্ছে আমার ছিল না। তাই তোমাকে তখনই ওই রুম ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বলেছিলাম। কত বড় বিপদ আমার তোমার সামনে, তা এবার বুঝতে পারছ? ওই ভিডিও বাজারে ছড়িয়ে গেলে আমাদের কি অবস্থা হবে ভাবতে পারছ তুমি? কিন্তু কাজটা যে কে করেছে, সেটা কিছুতেই বুঝতে পারছি না। আমি অবশ্য আমার লোকজন লাগিয়ে দিয়েছি। যে করেই হোক এর পেছনে যে বা যারা আছে, তাদের সবাইকে আমার ধরতেই হবে। তাই তোমাকে বলছি সবিতা, এখন অন্ততঃ কিছুদিন ওই হোটেলে যাওয়া বন্ধ করে দাও। আমি ব্যাপারটার একটা কিনারা করতে পারলেই আবার অন্যভাবে এ’সব শুরু করতে পরামর্শ দেব তোমায়”।
বিমলের কথা শুনতে শুনতে সবিতার ফর্সা মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে পড়ল। তার চোখে মুখে ভয় আর দুশ্চিন্তার ছাপ ফুটে উঠল। বিমল থামতেই সবিতা বিমলের পাশে বসে তার একটা হাত ধরে ফ্যাসফেসে গলায় বলল, “এ তুমি কী বলছ জানু? ও’ঘরে আমি এতদিন যার যার সাথে মস্তি করেছি, সে সব কিছু ওই লোকটা রেকর্ডিং করেছে? ওহ ভগবান, এখন কী হবে? আমি তো এখন বাড়ির বাইরেই বেরোতে পারব না গো। আচ্ছা জানু, ওই লোকটা কেন এসব করছে? কি চায় ও? এ’সব করার পেছনে ওর মকসদটা কি”?
______________________________
ss_sexy
নিশিতা বলল, “আপনি বেরিয়ে যাবার সাথে সাথেই আমি পরীক্ষিত, সুরজ আর গাবলুকে ফোন করে এস এম খান নামে ওই লোকটাকে খুঁজে বের করতে বলেছি। ওরা জিজ্ঞেস করছিল কোন এরিয়াতে খুঁজতে হবে। সেটা তো আমরা কেউই জানিনা, তাই বলেছি যে কোথায় আছে সেটাই খুঁজে বের করতে হবে। আর সন্ধান পেলে যেন সাথে সাথে আমাকে বা আপনাকে ফোন করে জানায়”।
তারপর গ্লাসে এক চুমুক দিয়ে আবার বলল, “আর মুরলিধরন আর শিবেন্দুকে আর্জেন্ট এসে অফিসে দেখা করতে বলেছিলাম। ওরা বেলা প্রায় একটার দিকে এসেছিল। তারপর আপনার মোবাইলে প্রাইভেট নাম্বারের কলটা দেখে নিজেদের ল্যাপটপে কি কি যেন নোট করে নিয়ে চলে গেল। আর বলল যে তারা লোকেশান জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের জানিয়ে দেবে। কিন্তু স্যার এখন পর্যন্ত কেউই কিছু জানায় নি”।
বিমল বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে কিছু একটা ভেবে বলল, “কাল সকালে তুমি অফিসে একটু তাড়াতাড়ি এস। আর এসেই সারা কলকাতা জুড়ে আমাদের যত সব চ্যানেল আছে তাদের সবাইকে সতর্ক করে দিও যেন আমাদের অফিস আর ফার্ম হাউসের ওপর দুর থেকে কড়া নজর রাখে। আমরা বাইরে কোথাও গেলেও যেন আমাদের চারপাশে থেকে গার্ড করে। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই যেন পাকড়াও করে আমাকে জানায়। একটু আগেই অফিসের শেষ দু’জন স্টাফ যে বেরিয়ে গেছে, সেটা সে জানে। আর এই মূহুর্তে শুধু তুমিই যে আমার সাথে এ’ঘরে আছ, এ’খবরও সে জানে। আমাকে ফোনে সে’কথা বলছিল। তাই আমার মনে হচ্ছে কেউ আমার ওপর নজর রাখছে। আর আমার ফার্ম হাউসেও আমার আর এক মহিলার ভিডিও রেকর্ডিং করেছে সে। সে ভিডিওটা ড্রাইভারের হাতে দিয়ে গেছে যখন আমি বেলেঘাটা সাইটে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর তারপরে তিন নাম্বার সিডিটা যেটা তুমি একটু আগে দেখলে, সেটাও মনে হয় আমি যখন ফার্ম হাউসের ভেতরে গিয়েছিলাম, তখনই কোন এক সময় সেটা আমার গাড়িতে রেখে যাওয়া ল্যাপটপের ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু গাড়ি তো মেইন গেটের ভেতরেই ছিল। মেইন গেটের ভেতর তো সিকিউরিটিরা ছিল। কোথায় কিভাবে তাহলে সেটা আমার ব্যাগে ঢোকালো তা পরিষ্কার বুঝতে পাচ্ছি না। তবে আমার মন বলছে, ফার্ম হাউসের ওপরেও ওই লোকটা নজর রাখছে। ফার্ম হাউসের ওপর বা এই অফিসের ওপর গোপনে নজর রাখলে মনে হয় কেউ না কেউ ধরা পড়বে। আর হ্যাঁ, যে কুরিয়ার সার্ভিস প্রথম সিডির ডেলিভারিটা দিয়ে গেল, সেই কুরিয়ার সার্ভিসে খোঁজ করতে বলবে, ডেলিভারি বয়টাকেও জেরা করতে বলবে। কুরিয়ারের অফিস থেকে সেন্ডার্স অ্যাড্রেস জেনে নিয়ে ওই ঠিকানায় খোঁজ করতে বলবে। যে করেই হোক আগামীকাল সন্ধ্যের আগে কোন না কোন পজিটিভ রিপোর্ট যেন আমার হাতে অবশ্যই আসে, সেটা সবাইকে ভাল ভাবে বুঝিয়ে দিও”।
নিশিতা বলল, “স্যার প্রথম সিডিটায় সেন্ডারের নাম ছিল এস এম খান। আর অন্য সিডি দুটোয় সেন্ডার্স নেম দেখলাম বি এস মন্ডল আর এম ভি আনোয়ার। এদের খোঁজ করতে হবে না”?
বিমল আরেক ঢোঁক ব্র্যান্ডি খেয়ে বলল, “প্রথম সিডিটা পাবার পর মনে হয়েছিল ওই এস এম খানই বুঝি এর পেছনে আছে। কিন্তু পরে বেলেঘাটায় দু’নম্বর সিডিটা পেতেই আমি বুঝে গেছি যে ওই নাম গুলো লেখা হয়েছে শুধু আমাদের পাজল করবার উদ্দেশ্যে। এখন তো আমাদের কাছে তিনটে নাম এসেছে। কিন্তু একটা নামও আসল নাম নয়। সব গুলোই ভূয়ো নাম। আর নাম সত্যি হলেও, এতবড় শহরে শুধু নাম ধরে খুঁজে কাজের কাজ কিছুই হবে না। গোটা কলকাতা খুঁজলে হয়ত তিনশ’ জন এস এম খান, চারশ’ জন বি এস মন্ডল আর পাঁচশ’ জন এম ভি আনোয়ার পাওয়া যাবে। তাতে কি কাজের কাজ কিছু হবে? কিচ্ছু হবে না। আর এখন তো আমি স্পষ্টই বুঝতে পারছি যে সব ক’টা নামই ভূয়ো। তাই নামের পেছনে না ছুটে অন্যভাবে আমাদের চেষ্টা চালাতে হবে। আমার পেছন পেছন যে কেউ বেলেঘাটা আর দক্ষিনেশ্বর অব্দি গেছে, বা আগে থেকেই সেখানে তারা আমার অপেক্ষায় ছিল, এটা তো পরিষ্কার হয়ে গেছে। আর এই মূহুর্তেও লোকটা আমাদের অফিসের ওপর নজর রেখেছে। তাই আমার চারপাশে গোপনে নজর রাখলে কেউ না কেউ ঠিক ধরা পড়বে। আর মুরলিধরন আর শিবেন্দুকে বল ওদের গ্রুপের আরও কয়েকজনকে যেন কাজে লাগায়। আমার অফিস, বাড়ি, ফার্ম হাউস আর আমার সবগুলো মোবাইলে ইনকামিং আউটগোয়িং সব কলের ওপর যেন তারা কড়া নজর রাখে। আজ বারো তারিখ। দু’দিনের মধ্যেই যে কোন উপায়ে লোকটাকে খুঁজে বের করতেই হবে আমাদের। নইলে বিরাট সর্বনাশ হয়ে যাবে আমার”।
নিশিতা বিমলের কথার গুরুত্ব বুঝতে পেরে বলল, “ঠিক আছে স্যার, আমি কাল আরও একঘন্টা আগে এসে সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে দেব। কিন্তু স্যার, এমন কি সর্বনাশের আশঙ্কা করছেন আপনি? লোকটা কী চায়”?
বিমল এবার গ্লাসের বাকি তরলটুকু একবারে গলাধঃকরণ করে বলল, “এমন একটা বিপদ যে আমার ওপর কখনও আসতে পারে, এ আমি স্বপ্নেও কোনদিন ভাবিনি। তুমি জান না নিশিতা। লোকটা আমাকে আজ সারাদিনে তিনবার ফোন করেছে। কিন্তু একবারও সে আমাকে কোন কথা বলার সুযোগই দেয়নি। ও কি বলেছে জানো? ও বলেছে যে আজকে সে যে সিডিগুলো আমাকে পাঠিয়েছে, এর সবক’টা ভিডিওই সে আগামি সতেরো তারিখ নেটে আপলোড করে দেবে। আর শুধু তাই নয়, আমার চেনা জানা পরিচিত মহলের সবাইকে সে ওই সিডিগুলোর কপি পাঠিয়ে দেবে। বুঝতে পারছ নিশি, এর ফল কত ভয়ঙ্কর হতে পারে। আমি সমাজে কাউকে মুখ দেখাতে পারব না। লোকটাকে ধরতে না পারলে আমাকে হয়ত সুইসাইড করতে হবে”।
নিশিতা সব শুনে ঘাবড়ে গিয়ে বলল, “এ তো সাংঘাতিক ব্যাপার স্যার! কিন্তু লোকটা আসলে কে? আর কিই বা চায় সে”?
বিমল একটু ভেবে বলল, “কে, সেটাই তো শুধু আমি জানতে চাই। তবে সে যে আমার কাছে কী চায়, এ ব্যাপারেও তো কিছুই বলেনি। একবার শুধু বলেছিল যে নেটে আপলোড করে সে নাকি প্রচুর প্রচুর টাকা রোজগার করতে পারবে। আর এ’কথাও বলেছিল যে শুধু এই তিনটে ভিডিওই নয়, তার কাছে নাকি আমাদের আরও অনেক ভিডিও আছে। বাকি ভিডিওগুলোও সে নাকি পরে কখনও নেটে আপলোড করে দেবে। আর কবে কখন সেটা করবে তাও নাকি আমাকে জানাবে। সে যদি এটা করতে সফল হয়, তাহলে বুঝতেই পারছ, আই উইল বি ফিনিশড। ফিনিশড ফর এভার। তাই যে করেই হোক, লেটেস্ট বাই সিক্সটিন্থ বদমাশটাকে আমাদের ধরতেই হবে, বাই হুক অর ক্রুক। তুমি তাই সবাইকে সেভাবে বলে দিও। তবে ভিডিওর ব্যাপারগুলোর কথা প্লীজ অন্য কারো কাছে ডিসক্লোজ কোর না। ইটস মাই হাম্বল রিকোয়েস্ট টু ইউ নিশি”।
নিশিতা ব্যাপারটার গম্ভীরতা শুনে চমকে উঠল। খানিক আগেই সে ভেবেছিল, তার নিজের বুঝি কোনও বিপদ এতে নেই। কিন্তু এ ভিডিও নেটে আপলোড হয়ে গেলে সবাই তাকেও দেখতে পাবে। তারও চেনাজানা মহলের অনেকেই নেটের এ’ধরণের এডাল্ট ওয়েবসাইট গুলোতে খুব সার্ফিং করে। তার ওই ভিডিও দেখলে তো তারা তাকে চিনে ফেলবে। তখন তারও তো সমাজে মুখ দেখানো অসম্ভব হয়ে উঠবে। আর তার সংসার? সেটাও কি টিকবে? তার স্বামী যে একটা ভিডিও দেখেই তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে। এই ভেবে ভয়ে তার গলা শুকিয়ে গেল। ঢোঁক গিলে গিলে কোনরকমে একটু গলাটা ভিজিয়ে নিয়ে ফ্যাসফেসে গলায় সে বলল, “আ আমি বুঝতে পারছি স্যার। কাল সকাল থেকেই আমি আমাদের সমস্ত চ্যানেল গুলোকেই কাজে লাগিয়ে দেব। আচ্ছা স্যার, মিনিস্ট্রি লেভেল থেকে আমরা কি কোন সহায়তা পেতে পারি এ ব্যাপারে? মানে স্পেসিফিক্যালি টেলিকমিউনিকেশন বা তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ থেকে”।
বিমল একটু ভেবে বলল, “ব্যাপারটা এতটাই সেনসিটিভ যে যাকে তাকে বলাও যাবে না, সেটা বুঝতে পারছ না তুমি? তবু আমি আজ রাতটা একটু ভেবে দেখি। আমার দু’একজন ঘণিষ্ট বন্ধুর সাথে একটু পরামর্শ করে দেখি। কিন্তু বদমাশটা যে আমার আশেপাশেই আজ সারাটা দিন কাটিয়েছে সেটা তো বুঝতেই পাচ্ছি। হয়তো আগামীকালও সে আমার আশেপাশেই থাকবে। তাই আমাদের চ্যানেলগুলো যদি খুব কেয়ারফুলি নিজেদের আড়ালে রেখে আমার আশেপাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখে, তাহলেই মনে হয় লোকটাকে আমরা ধরতে পারব। আর সে চেষ্টাটাই আমাদের সকলকে করতে হবে। তাই তুমি কাল সকাল থেকেই যা যা করবার সব কিছু কর। লীভ নো স্টোন আনটার্নড”।
নিশিতাও সায় দিয়ে বলল, “শিয়োর স্যার। কাল সবার আগে আমি এ কাজটাই করব”।
বিমল বলল, “আর আরেকটা জায়গাতেও একটু নজর রাখতে হবে। তুমি একটা প্যাড আর পেন নিয়ে এস আমি সেখানকার ঠিকানাটা তোমাকে বলছি। তুমি নোট ডাউন করে নাও”।
নিশিতা রাইটিং প্যাড নিয়ে আসবার পর সবিতার হোটেলের ঠিকানা, ফোন নাম্বার আর রুম নাম্বার লিখিয়ে দিয়ে বিমল বলল, “এই শেষ ভিডিওটা ওখানেই রেকর্ড করা হয়েছে। এটা একটা হোটেলের রুম। ওই হোটেলের মালিক ম্যানেজার বয় বেয়ারা সবাইকে জেরা করতে হবে। আর ওই হোটেলটার ওপরেও আমাদের নজরদারি করতে হবে। কাউকে সামান্য সন্দেহ হলেই সঙ্গে সঙ্গে তুলে আনতে হবে তাকে। এমন ইনস্ট্রাকশনই দেবে সবাইকে”।
****************
পরদিন সকালে বিমল হাত মুখ ধুয়ে নিজের বেডরুমের বাইরে এসে দাঁড়াতেই কাজের মহিলাটাকে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে জিজ্ঞেস করল, “তোমার মেমসাব ঘুম থেকে উঠেছে”?
মহিলাটি জবাব দিল, “না সাব, এখনও ওঠে নি। ডাকবো”?
বিমল “না থাক” বলে সে নিজেই সবিতার বেডরুমের দিকে এগিয়ে গেল। গত বছর পাঁচেক ধরে তার আর সবিতার বেডরুম আলাদা হয়ে গেছে। স্ত্রীর শরীরের ওপর তার আকর্ষণ পুরোপুরি শেষ হয়ে যেতে বিমল নিজেই তাদের দু’জনের শোবার জন্য আলাদা আলাদা বেডরুমের ব্যবস্থা করেছিল। বিমল চা খেতে খেতেই সবিতার বেডরুমের দরজায় ধাক্কা দিয়ে বুঝতে পারল দড়জাটা ভেতর থেকে বন্ধ। বেশ কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে সবিতার নাম ধরে ডাকবার পর ভেতর থেকে সবিতা ঘুম জড়ানো স্বরে সাড়া দিতে বিমল বাইরে থেকেই গলা তুলে বলল, “তোমার সাথে কিছু জরুরী কথা আছে। তাড়াতাড়ি আমার রুমে এস। আমাকে আবার ন’টার সময়েই বেরিয়ে যেতে হবে। শুনেছ”?
সবিতা ভেতর থেকে দড়জা না খুলেই জবাব দিল, “ঠিক আছে। তুমি তোমার ঘরে যাও, আমি আসছি”।
বিমল আগের দিনে পাওয়া সিডি গুলোর ব্যাপারে ভাবতে ভাবতেই চা খেতে খেতে সবিতার ঘরের দড়জার সামনে থেকে সরে এল। নিজের বেডরুমের দড়জার সামনে দাঁড়িয়েই চা খাওয়া শেষ করল। কাপটা সেখানেই নিচে নামিয়ে রেখে সে আবার তার বেডরুমে ঢুকে গেল। রোজ এমন সময় সে খবরের কাগজ দেখে। কিন্তু আজ যেন সে তা ভুলেই গেছে। কাল অফিস থেকে রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ সে বাড়ি ফিরে এসেছিল। তখনও সবিতার ঘরের দড়জা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। অবশ্য যেদিন সবিতা হোটেলে যায় সে’সব দিন সে হোটেল থেকে ফিরে নিজের বেডরুমের ভেতরেই থাকে বেশীর ভাগ। আর বিমল নিজেও সপ্তাহে দু’ তিনদিন রাতে বাড়িতেই ফেরে না। সে রাতগুলো সে তার ফার্ম হাউসে বা অন্য কোথাও আলাদা আলাদা সঙ্গিনীদের সাথে কাটায়। আর পুরো রাতের আউটিং যে রাতে না হয়, সে রাতে সে তার অফিসের রেস্টরুমেই নিশিতা, কনীনিকা, পরিনীতি বা তাদের মতই অন্য কাউকে ভোগ করে অনেক রাত অব্দি। তাই রাত বারোটা একটার আগে সে কোনদিনই বাড়ি ফেরে না। তবে দেরীতে ফিরলেও বা রাতটা বাইরে কাটালেও সকাল আটটা থেকে ন’টা পর্যন্ত সে রোজ বাড়িতেই থাকে। রোজ ওই সময়েই এক দু’ লহমার জন্যে সবিতার সাথে তার দেখা হয়। দু’ একটা টুকটাক কথাও হয় অবশ্য। তাদের দাম্পত্য জীবন বলতে শুধু এটুকুই অবশিষ্ট আছে। দিনের বাকি তেইশটা ঘন্টায় তারা কেউ কাউকে দেখতে অভ্যস্ত নয়। গত তিন চার বছরে সে একবারও বুঝি তার স্ত্রীর মুখটার দিকে ভাল করে তাকায়ও নি। গত রাতে লোকটা ফোনে বলেছিল যে সবিতাকে নাকি কচি বুড়ো সকলেই চুদতে চায় এখনও। সত্যি কি সবিতার শরীরে এখনও এত সেক্স অ্যাপীল আছে?
সবিতা তখনও আসছেনা দেখে সে খবরের কাগজটা আনবে ভেবে নিজের রুম থেকে বেরোতেই সবিতার ঘরের দড়জাটা খুলে গেল। কিন্তু সবিতার বদলে তাদের ছেলে বিকিকে সবিতার বেডরুম থেকে বেরোতে দেখে সে খুব অবাক হল। বিকি এ’সময় সবিতার ঘরে ঢুকেছিল কেন? সবিতাকে কিছু বলতে এসেছিল না অন্য কিছু? কিন্তু সে আর কিছু ভাববার আগেই সবিতাকেও ঘর থেকে বেরিয়ে তার ঘরের দিকে আসতে দেখে সে আবার নিজের ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ল।
সবিতা তার ঘরে এসে ঢুকতেই বিমল বলল, “দড়জাটা বন্ধ করে দাও”।
সবিতা বেশ অবাক হল। প্রায় বছর পাঁচেক বাদে তার স্বামী তাকে কাছে ডেকেছে, আবার দড়জা বন্ধ করতে বলেছে, ব্যাপারটা কি? এতদিন বাদে আবার স্ত্রীর জন্যে তার প্রেম উথলে উঠল নাকি? তাও আবার এমন সাত সকালে! কিন্তু সবিতার যে এখন আর সে মুডটা আসছে না। গত বছর দুয়েক ধরে তার ছেলের বন্ধুদের সাথে আর বছর পাঁচেক ধরে অজানা অচেনা নানা বয়সের পুরুষের সাথে সান্নিধ্য করে এখন স্বামীর ওপর আগের মত টান একেবারেই নেই। আর ঘন্টা দুয়েক আগেও তার ছেলে বিকি তাকে যে সুখ দিয়েছে, তাতে তার শরীর মন এখন পুরোপুরি শান্ত। তবু স্বামীর নির্দেশে সে বেডরুমের দড়জা বন্ধ করে তার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে বলল, “কি হয়েছে, বলো”?
বিমল বিছানায় বসেই সবিতার মুখের দিকে তাকাল। সত্যি! সবিতাকে আগের চেয়ে অনেক বেশী সেক্সী আর সুন্দরী দেখাচ্ছে তো! লোকটা তাহলে মিথ্যে বলেনি! সবিতার মুখের ওপর থেকে তার দৃষ্টি এবার সবিতার বুকের ওপর পড়ল। ঢিলেঢালা একটা নাইটি পড়ে থাকা সত্বেও তার উঁচু উঁচু বুকদুটো দেখে বিমলের মনে হল তার স্ত্রীর বুক সত্যি এখন আগের চেয়েও বড় আর ভারী দেখাচ্ছে। এমন বুকের প্রতি সব বয়সের পুরুষেরাই আকর্ষিত হবে। তারপর তার চোখ গেল সবিতার তলপেট আর কোমড়ের দিকে। যদিও ঢিলে নাইটির ওপর থেকে সঠিক বোঝা যাচ্ছে না আর সামনে থেকে তার পাছার দিকটাও চোখে পড়ছে না, তবু বিমলের মনে হল সবিতা আগের চেয়ে অনেক স্লিম হয়েছে। তলপেটটা আর আগের মত অত উঁচু মনে হচ্ছে না। কোমড়ের সাইজও মনে হয় বেশ কিছুটা কমেছে। অনেক দিন পর নিজের স্ত্রীকে দেখে তার শরীরে কিছুটা হলেও উত্তেজনা হচ্ছে। কিন্তু না, এখন ও’সব ভাববার সময় নেই।
বিমলকে নিজের শরীরের দিকে এভাবে তাকিয়ে দেখতে দেখে সবিতাও মনে মনে খুব অবাক হল। সে বুঝতে পারছে না বিমলের এমনভাবে তাকে দেখার পেছনে কি কারন থাকতে পারে। তাই বিমল কিছু বলছে না দেখে সে নিজেই বলল, “কী হল, কি জন্যে ডেকেছ? কিছু বলবে”?
বিমল নিজের সন্বিত ফিরে পেয়ে গলা খাকড়ে বলল, “একটা বড় সমস্যায় পড়েছি সবিতা। আর শুধু আমি একাই নই। তুমিও একই রকম সমস্যায় পড়েছ”।
সবিতা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কী এমন সমস্যা হয়েছে”?
বিমল এবার কয়েক সেকেন্ড ভেবে বলল, “তুমি কাল হোটেলের রুমে আমাদের বিকির বয়সী তিনটে ছেলের সাথে সময় কাটিয়েছ, তাই না? আর সন্ধ্যে ছ’টার সময় ওই রুমে ঢুকেছিলে, এটা কি ঠিক”?
সবিতা বিমলের কথার আসল তাৎপর্য বুঝতে না পেরে বলল, “সে তো কাল ফোনেই তোমাকে বলেছি। আজ আবার একই কথা জানতে চাইছ কেন? আর শোনো, আর কোনদিন অমন সময় আমাকে তুমি ফোন করবে না। তোমাকে তো আগেও বলেছি, সন্ধ্যে ছ’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত তুমি আমাকে আমার মত থাকতে দেবে। আর তুমি যেমন ব্যবস্থা করে দিয়েছ, আমি তো সেটাই মেনে চলছি। ওই হোটেলের রুম ছাড়া এখন আর কারো সাথে অন্য কোথাও যাই না আমি। তুমি যখন আমাকে বলেছ ও’সবে রিস্ক বেশী, তখন থেকেই আমি ও’সব ছেড়ে দিয়েছি। যা করি তা ওই রুমেই করি”।
বিমল হাত তুলে সবিতাকে থামিয়ে চাপা গলায় বলল, “আমি সে’কথা বলছি না সবিতা। আমি যেটা বলতে চাইছি, তা হল, তুমি যে কাল তিনটে কম বয়সী ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলে, এ কথাটা তোমাকে ফোন করবার আগেই আমি জানতে পেরেছিলাম। কেউ একজন আমাকে ফোন করে এ’কথা বলেছিল। ফোনটা কে করেছিল বুঝতে পারিনি। কিন্তু তুমি যে ওই সময়ে হোটেলে থাকতে পার, বা তোমার সাথে কম বয়সী কোন ছেলে থাকতে পারে, এটা মানতে আমার কোন কষ্ট হয়নি। কিন্তু একসাথে তিনটে ছেলের সাথে তুমি ও’সব করছ শুনে কথাটা বিশ্বাস হচ্ছিল না। কিন্তু তার চেয়েও বড় .......”
বিমলের কথার মাঝখানেই সবিতা তাকে বাধা দিয়ে বলে উঠল, “আরে ওদের কথা আর বোল না। ওরা সবাই বিকির বয়সী। বিকিরই বন্ধু বান্ধব। একজন বাঙালী, একজন পাঞ্জাবী আর একজন ছিল মারোয়ারী। আর তুমি তো জানো, কম বয়সী ছেলেগুলোর উদ্দম উদ্দীপনা আমার খুব ভাল লাগে। ওরা সকলেই এর আগেও একা বা দু’জন একসাথে আমার সাথে ও’ঘরে এসেছে অনেকবার। কিন্তু তিন বন্ধু মিলে একসাথে আমার চুদাই করবে বলে অনেকদিন ধরে কাকুতি মিনতি করছিল। কাল আর ওদের আটকাতে পারিনি। তাই কাল ওদের তিনজনকে একসাথেই নিয়েছি আমি। আর সত্যি বলছি জানু তোমায়, কাল যা সুখ পেয়েছি, অমন সুখ জীবনে কখনও পাই নি। তুমি যখন আমাকে ফোনটা করলে তখন ওদের তিন জনের তিনটে লন্ড আমার তিনটে ফুটোয় যাতায়াত করছিল। অমন অবস্থায় ফোন কল অ্যাটেন্ড করা কত মুস্কিল সেটা বুঝতে পারছ না তুমি? চুতে আর গাঁড়ে লন্ডের ধাক্কা খেতে খেতেও কথা বলা যায়। আর সে চেষ্টাই করছিলাম আমি তখন। কিন্তু আমি যখন কথা বলছিলাম, তখন বারবার বাঙালী ছেলেটা তার লন্ডটা আমার মুখের মধ্যে ঠেলে ঠেলে ঢোকাতে চাইছিল। ওই পরিস্থিতিতে কি আর কথা বলা যায়? তাই তো বাধ্য হয়েই কথা বলা বন্ধ করতে হয়েছিল”।
বিমল সবিতার কথা শুনে বলল, “আহহা। আমি সে’কথা বলছি না সবিতা। যা করেছ, ঠিক আছে। আমি নিজেই তো তোমাকে ওই রুমে সবকিছু করবার পারমিশান দিয়েছি। কিন্তু ওই লোকটা ফোনে যে আমাকে ঘটণাটা বলল, আমি তাতেই অবাক হয়েছি। তুমি চুপ করে একটু আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনো প্লীজ। তারপর বুঝতে পারবে”। বলে একটু থেমে আবার বলতে লাগল, “লোকটা কাল রাত প্রায় পৌনে ন’টার সময় আমাকে জানাল যে তুমি বিকির বয়সী তিনটে ছেলেকে একসাথে নিয়ে ওই রুমে এনজয় করছ, আমি সে ব্যাপারেই কথা বলতে চাইছি তোমার সাথে। লোকটা কি করে এ’কথা জানলো সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। আর শুধু তাই নয় তুমি এর আগেও বিকির এক বন্ধুর সাথে ওই রুমে যখন সেক্স এনজয় করেছিলে সেটা সে ভিডিও রেকর্ডিং করেছে। আর সেই ভিডিওর একটা সিডিও সে আমার কাছে পাঠিয়েছে। তাই আমার মনে হয়েছিল যে কেউ তোমার ওই হোটেলের রুমে গোপনে কোন ভিডিও ক্যামেরা বসিয়ে সব ঘটণা রেকর্ডিং করছে। তাই তোমাকে সাবধান করবার জন্যই আমি কাল ওই সময়ে ফোনটা করেছিলাম সবিতা। তোমাদের মস্তিতে বাধা দেওয়ার কোন ইচ্ছে আমার ছিল না। তাই তোমাকে তখনই ওই রুম ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বলেছিলাম। কত বড় বিপদ আমার তোমার সামনে, তা এবার বুঝতে পারছ? ওই ভিডিও বাজারে ছড়িয়ে গেলে আমাদের কি অবস্থা হবে ভাবতে পারছ তুমি? কিন্তু কাজটা যে কে করেছে, সেটা কিছুতেই বুঝতে পারছি না। আমি অবশ্য আমার লোকজন লাগিয়ে দিয়েছি। যে করেই হোক এর পেছনে যে বা যারা আছে, তাদের সবাইকে আমার ধরতেই হবে। তাই তোমাকে বলছি সবিতা, এখন অন্ততঃ কিছুদিন ওই হোটেলে যাওয়া বন্ধ করে দাও। আমি ব্যাপারটার একটা কিনারা করতে পারলেই আবার অন্যভাবে এ’সব শুরু করতে পরামর্শ দেব তোমায়”।
বিমলের কথা শুনতে শুনতে সবিতার ফর্সা মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে পড়ল। তার চোখে মুখে ভয় আর দুশ্চিন্তার ছাপ ফুটে উঠল। বিমল থামতেই সবিতা বিমলের পাশে বসে তার একটা হাত ধরে ফ্যাসফেসে গলায় বলল, “এ তুমি কী বলছ জানু? ও’ঘরে আমি এতদিন যার যার সাথে মস্তি করেছি, সে সব কিছু ওই লোকটা রেকর্ডিং করেছে? ওহ ভগবান, এখন কী হবে? আমি তো এখন বাড়ির বাইরেই বেরোতে পারব না গো। আচ্ছা জানু, ওই লোকটা কেন এসব করছে? কি চায় ও? এ’সব করার পেছনে ওর মকসদটা কি”?
______________________________
ss_sexy