Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
(Update No. 191)

দক্ষিনেশ্বর পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় ছ’টাই বেজে গেল বিমলের। সিডির ব্যাপার নিয়ে সে এতোটাই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে, সন্ধ্যে ছ’টায় যে হায়দ্রাবাদের নামী বিল্ডার আজিম কুরেশির সাথে তার অফিসে একটা মিটিঙে তাকে থাকতে হবে, এ’কথা সে বেমালুম ভুলে গিয়েছিল। ওই বদমাশটা যদি সত্যি সত্যি তার এই ভিডিও গুলো নেটে কিংবা তার পরিচিত মহলের লোকদের কাছে পাঠিয়ে দেয়, তবে তো মহা সর্বনাশ। তার সমস্ত পরিচিত মহলে তার এমন বদনাম হবে যে তার আর মুখ দেখাবার জো থাকবে না। ফার্ম হাউসের গেট দিয়ে ভেতরে ঢোকবার সময়ই কথাটা তার মনে এল। গাড়ি বিল্ডিঙের মূল দড়জার সামনে থামতেই দড়জার সামনে প্রহরারত গার্ড ছুটে এসে গাড়ির দড়জা খুলে বিমলকে স্যালুট ঠুকল। বিমল গাড়ি থেকে নামতেই গার্ডটা ছুটে গিয়ে মূল দড়জার তালা খুলতে শুরু করল।

বিমল দড়জার কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়িয়ে নিশিতাকে ফোন করল। ওদিকে নিশিতা ফোন ধরতেই বিমল জিজ্ঞেস করল, “মিঃ আজিম কুরেশি কি ফোন করেছিল”?

নিশিতা জবাব দিল, “হ্যাঁ স্যার, একটু আগেই উনি ফোন করে জানতে চাইছিলেন যে আজ সন্ধ্যের মিটিংটা হচ্ছে কি না। আমি তাকে বলেছি যে মিটিংটা ঠিক সময়েই হবে। তখন উনি বললেন যে উনি ঠিক সময়েই এসে পৌঁছবেন। কিন্তু স্যার, আপনি এখন কোথায় আছেন? এখনও ফিরলেন না যে”?
 

বিমল নিশিতার কথার সরাসরি জবাব না দিয়ে বলল, “না নিশি, মিটিংটা আজ হচ্ছে না। তাকে ফোন করে জানিয়ে দাও যে বিশেষ কাজে আমি অনেক দুরে একটা জায়গায় আটকে গেছি। তাই সময়মত অফিসে পৌঁছতে পারছি না। তুমি তাকে কাল বা পরশুর একটা সময় দিও। আর শোনো, ওই এসএমএস আর মোবাইল লোকেশান ট্র্যাকিং করার ব্যাপার গুলোর কোনও হদিশ করতে পারলে”?

নিশিতা বলল, “স্যার, আপনি অফিস থেকে বেরিয়ে যাবার সাথে সাথেই আমি পরিক্ষীত, সুরজ আর গাবলুদের ফোন করে এস এম খানের খোঁজ করতে বলেছি। আর মুরলিধরন আর শিবেন্দুকে ডেকে আপনার ফোনে কল করা ওই প্রাইভেট ...........”

নিশিতাকে ধমকে থামিয়ে দিয়ে বিমল বলল, “তুমি কী করেছ, সেটা আমি জানতে চাই নি নিশি। আমি জানতে চেয়েছি কোনও হদিশ পাওয়া গেল কি না? তুমি শুধু সেই কথাটা বলো এখন। তুমি কি করেছ না করেছ সেটা আমি পরে দেখব”।

নিশিতা একটু ভয় পেয়ে শান্ত গলায় বলল, “না স্যার, এখনও পর্যন্ত প্রাইভেট নাম্বারের লোকেশান বা এস এম খানের খোঁজ, কোনটাই পাওয়া যায়নি”।

বিমল আর কোন কথা না বলে চরম বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে দিল। তারপর ফার্ম হাউসের মূল দড়জা দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল। সোজা একতলার তার নিজস্ব মাস্টার বেডরুমে গিয়ে ঢুকল। প্রথমেই সে রিমোট টিপে এসিটা চালিয়ে দিল। গার্ড তার মালিককে এভাবে আসতে দেখে যার পর নাই অবাক হল। যদিও বেশীরভাগ সময়েই মালিকের সাথে কোন না কোন কম বয়সী বা মধ্য বয়সী মহিলা থেকে থাকে, তবে এমন নয় যে তার মালিক এভাবে একা কখনও এ ফার্ম হাউসে আসে নি। অবশ্য দিনের বেলায় যখন আসে তখন বেশীর ভাগ সময়ে সে একাই আসে। কিন্তু তার হাতে কোনও ব্রিফকেস বা কোনও বড় ধরণের ব্যাগ নিশ্চয়ই থাকে। তাই আজ তাকে খালি হাতে দেখে সে চরম বিস্মিত হল।

বিমল তার মাস্টার বেডরুমে এসে এসি চালিয়ে দেবার পর দড়জাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিল। তারপর ঘরের ঠিক মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে শুরু করল প্রতিটা দেওয়ালে। ওপর নিচে সর্বত্র তার সতর্ক দৃষ্টি ঘুরে বেড়াতে লাগল। বিশাল কিং সাইজ খাটটার চারপাশ, খাটের নিচে, ড্রেসিং টেবিল আর আলমারির চার পাশে খুঁটে খুঁটে দেখেও তার চোখে সন্দিগ্ধজনক কিছু ধরা পড়ল না। সব শেষে সিলিং আর সিলিং ফ্যান গুলোর দিকেও ভাল করে দেখল। নাহ, কোথাও কিচ্ছু নেই। হঠাতই তার চোখ গিয়ে পড়ল ঘরের দেওয়ালে লাগানো এসিটার ওপর। কিভেবে সে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা স্ক্রু ড্রাইভার বের করে এসির সামনের কভারটা খুলে ফেলল। নাহ, এখানেও কোন ক্যামেরা বা ওই জাতীয় কোনকিছু নেই। আবার এসির কভারটাকে আগের মত করে লাগিয়ে দিয়ে স্ক্রু ড্রাইভারটা হাতে নিয়েই সে লাগোয়া বাথরুমে ঢুকে পড়ল। অনেকক্ষণ ধরে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও বাথরুমেও সন্দেহজনক কোনকিছু তার নজরে পড়ল না। হতাশ হয়ে বেডরুমে ফিরে এসে স্ক্রু ড্রাইভারটা যথাস্থানে রেখে দিয়ে সে খাটে পাতা বিছানার ওপর বসে ভাবতে লাগল। এ ঘরের বিছানায় ক’দিন আগেই ওই মহিলাকে নিয়ে সে শুয়েছিল। আর তার দিন চারেক বাদে একটা কম বয়সী মেয়েকে নিয়েও সে সারা রাত এ’ঘরে কাটিয়েছে। তখন ঘটণাগুলো কিভাবে রেকর্ডিং হয়ে থাকতে পারে। এ’কথা বলাই বাহুল্য যে সেদিন কোন না কোন ক্যামেরা এ ঘরে নিশ্চয়ই লাগানো ছিল। নইলে ওই সিডিটা কী করে তৈরী করতে পারে কেউ। এক সময় বিমল নিজেই ভেবেছিল যে এ ঘরের চারকোণায় চারটে গোপন ভিডিও ক্যামেরা সে বসাবে, যাতে মেয়ে মহিলাদের সাথে কাটানো অন্তরঙ্গ মূহুর্তের সব কিছু ওই ক্যামেরায় ধরা পরে। অলস অবসর সময়ে ওই সব রেকর্ডের ভিডিও গুলো দেখে সে কিছুটা ভাল সময় কাটাতে পারবে। কিন্তু আজ করি কাল করি বলে সে কাজটা আদৌ করা হয়নি। কিন্তু তার অজান্তে যে-ই সে কাজটা করে থাকুক না কেন তাকে অন্ততঃ দু’দিন এখানে এ’রুমে অবশ্যই আসতে হয়েছে। কারন একবার তাকে এখানে এসে ক্যামেরা গুলো লাগাতে হয়েছে। আর আরেকবার এসে ক্যামেরাগুলো খুলে নিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। কিন্তু এটা কিকরে সম্ভব সেটা তার মাথাতেই আসছিল না। গার্ডদের কাছে চাবি থাকে বটে, কিন্তু এ’ঘরে তার পারমিশন ছাড়া এখানকার গার্ডরাও ঢুকতে সাহস পাবে না। এ’ব্যাপারে তার শুরু থেকেই কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে। আর তাকে না জানিয়ে গার্ডদের চোখে ধূলো দিয়ে কেউ যে এ’ঘরে ঢুকতে পারে, সেটাও প্রায় অবিশ্বাস্য ব্যাপার।

এসির হাওয়ার প্রভাবে ঘরটা বেশ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। রিমোট হাতে নিয়ে এসির টেম্পারেচার কন্ট্রোল করতে করতে হঠাতই তার মনে পড়ল, কিছুদিন আগে এ ঘরের এসিটা কাজ করছিল না বলে লাখুকে সে এ’ঘরে পাঠিয়েছিল। সে এসে এসিটা সারাই করেছিল। তাহলে ওই লাখুই কি এ’ঘরে ক্যামেরা লাগিয়েছিল? কিন্তু পরক্ষণেই তার মনে হল, না না, লাখু তার অনেকদিনের পরিচিত এবং বিশ্বস্ত। সে এমন কাজ করবে বলে মনে হয় না। বিমল তার দ্বিধাবিভক্ত মন নিয়েই এসি বন্ধ করে তার বেডরুম ভাল করে লক করে বেরিয়ে এল।

মূল দড়জার সামনে এসে বিমল হাত তুলে গার্ডদের দিকে ঈশারা করতেই তারা দু’জনই সাথে সাথে বিমলের সামনে এসে দাঁড়াল। বিমল তাদের চোখের দিকে দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল, “এই তোরা ভালভাবে ডিউটি করছিস তো? তোদের ফাঁকি দিয়ে কেউ ফার্ম হাউসে ঢোকেনি তো”?

একজন গার্ড সাথে সাথে বলল, “হ্যাঁ স্যার, আমরা তো দিনরাত খুব সতর্ক ভাবেই পাহাড়া দিচ্ছি। ফার্ম হাউসের কাছে আসা তো দুরের কথা, মেনগেটের ভেতরেও আমরা কাউকে ঢুকতে দিইনা আপনার পারমিশন ছাড়া”।
 

আরেকজন গার্ড প্রশ্ন করল, “কেন স্যার? কিছু হয়েছে কি? আপনার কি মনে হয় আপনার পারমিশন ছাড়া আমরা কাউকে কখনও ভেতরে ঢুকতে দিয়েছি”?
 

বিমল এক সেকেন্ড ভেবে সত্যি কথাটা চেপে গিয়ে বলল, “না তা নয়। আমি এমনি জানতে চাইছি। তোরা ঠিক মত ডিউটি করছিস কি না তা জানতে তো চাইতেই পারি আমি”।
 

একজন গার্ড সাথে সাথে বলল, “হ্যা স্যার, সে তো আপনি করতেই পারেন। কিন্তু এর আগে তো কখনও এভাবে জিজ্ঞেস করেন নি, তাই কেমন যেন লাগছে”।

বিমল নিজেকে একটু সহজ দেখাবার চেষ্টা করে বলল, “না না তেমন কোন ব্যাপার নেই। আচ্ছা, কথায় কথায় একটা কথা মনে পড়ে গেল। লাখু যেন কবে এসিটা সারাই করতে এসেছিল? ওর মজুরীটা এখনও দেওয়া হয়নি। তোরা রেজিস্টার দেখে আমাকে সঠিক তারিখটা বল তো”।
 

একজন গার্ড সাথে সাথে মেন গেটের দিকে দৌড়ে গেল। মেন গেটের ঠিক ভেতরেই ছোট্ট একটা ঘর থেকে একটা খাতা হাতে নিয়ে আবার ছুটে এল বিমলের কাছে। তারপর খাতার পাতাগুলো ওল্টাতে ওল্টাতে এক জায়গায় থেমে গিয়ে বলল, “এই তো স্যার। এই মাসের চার তারিখে লাখু এসেছিল এসি সারাই করতে। কিন্তু সেদিন আপনিই তো পারমিশন দিয়েছিলেন স্যার। তবে সেদিন ও বলেছিল যে ওর কাছে একটা পার্টস ছিল না বলে টেম্পোরারি কাজ চালিয়ে দেবার মত ব্যবস্থা করে গিয়েছিল। আর আমার সামনেই তো ও আপনাকে ফোন করে সে’কথা বলেছিল। আর গত পরশুদিন সে এসে ওই পার্টসটা এনে এসিটাকে সারাই করে গেছে। সে’কথাও তো আপনি জানেন স্যার। তা স্যার, এসিটা কি ঠিক হয়নি? কাজ করছে না এখন”?

বিমলের মনে পড়ল লাখু তাকে সত্যিই অমন কথা বলেছিল। আর চার তারিখের পরেই সে ভিডিওর ওই মহিলাকে নিয়ে এখানে এসেছিল। তারপর আরও আরেকদিন মিলু নামের একটা কচি মেয়েকেও একদিন এখানে এনেছিল। ওই দু’দিনই এসিটা কম কাজ করছিল। তারপর লাখু এসে মেশিনটার কী একটা পার্টস বদলে দিয়ে গেছে। এ’কথাও তার জানা আছে। আর আজ তো বোঝাই গেল যে এসিটা ঠিক কাজ করছে। তার মানে লাখু এসির কাজের ব্যাপারেই দু’দিন এখানে এসেছিল। আর সে কাজই করে গেছে। আর এটাই প্রথম নয়, এর আগেও লাখু এমনভাবে এসি মেশিন বা ফ্রিজ বা গিজার এ’সব ঠিক করতে এসেছে এবং করেও গেছে। কখনও তো এমন কোন ঘটণা ঘটেনি। লাখু তার খুবই বিশ্বস্ত। তাই এ ফার্ম হাউসে যাবতীয় ইলেকট্রিসিটি বা ইলেকট্রনিক গুডসের মেরামতির জন্য সে লাখু ছাড়া আর কাউকে ডাকে না। তাই লাখুকে সন্দেহ করা একেবারেই অমূলক।
 

গার্ডদের কথায় সন্তুষ্ট হয়ে বিমল নিজেই খাতাটা হাতে নিয়ে দেখল। চার তারিখে আর দশ তারিখে লাখু এসেছিল। লাখুর সইও আছে খাতায়। পাঁচ তারিখ আর ন’তারিখ খাতায় মালিক সাহেবের আসবার কথাও লেখা আছে। তবে এতে কারো সই নেই। বিমলের নির্দেশেই গার্ডরা বিমলের নাম না লিখে মালিক সাহেব বলে খাতায় এন্ট্রি করে। আবার কে কখন বেরিয়ে গেছে সে’সবও খাতায় লেখা আছে। মালিক সাহেবের আসবার এন্ট্রি লেখা আছে পাঁচ তারিখ রাত সাড়ে ন’টার সময়, আর বেরিয়ে যাবার এন্ট্রিতে সময় লেখা আছে ছ’তারিখ সকাল আটটা দশ। আর আরেকবার মালিক সাহেবের আসবার সময় লেখা আছে ন’ তারিখ রাত ন’টা পঞ্চাশ। আর পরদিন তার বেরোবার সময় লেখা আছে দশ তারিখ সকাল সাতটা চল্লিশ। হ্যাঁ কোনও ভুল নেই এন্ট্রিতে। আর লাখুর নামে লেখা আছে লাখু চার তারিখ দুপুর একটা দশে এসে বেরিয়ে গেছে একটা পঁচিশে। তার মানে সে মোটে পনেরো মিনিট ফার্ম হাউসের ভেতরে ছিল। এত কম সময়ে এসি মেশিন খুলে সেটা টেম্পরারি কাজ করবার মতন করে, আবার লুকিয়ে ভিডিও ক্যামেরা বসিয়ে পনের মিনিটের ভেতর বেরিয়ে যাওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। আবার দশ তারিখে বিকেল সাড়ে তিনটেয় এসে বেরিয়ে গেছে বারো মিনিট বাদেই। এই বারো মিনিটেও এসি মেশিনের পার্টস বদলে ভিডিও ক্যামেরা গুলো খুলে ফেলা হয়ত সম্ভব নয়। তাই লাখুকেও সন্দেহ করা যাচ্ছে না। অবশ্য খাতায় যদি ঠিকঠাক লেখা থাকে। কিন্তু তার নিজের নামের এন্ট্রিগুলোতে সময় তো ঠিকঠাকই লেখা আছে। তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে লাখুর এন্ট্রি গুলোতেও ঠিক সময়ই লেখা আছে। তাই লাখুকে সন্দেহের বাইরেই রাখতে হচ্ছে। এ ছাড়া খাতায় আরও একটা এন্ট্রি দেখতে পেল সে। গতকালও সে বিকেল চারটেয় এখানে এসেছিল, আর ঘন্টা খানেক পরেই কাজ সেরে বেরিয়ে গিয়েছিল। সে’সবও ঠিক মতই খাতায় লেখা আছে। তার মানে বোঝা যাচ্ছে যে খাতায় এন্ট্রির ব্যাপারে গার্ডদের কোনও ভুল হয়নি। তাহলে তার বেডরুমের ওই দিন রাতে রেকর্ডিংটা কে কিভাবে করল। নাহ, কিচ্ছুই মাথায় আসছে না তার। হতাশ হয়ে রেজিস্টারটা একটা গার্ডের হাতে ফেরত দিতে দিতে বলল, “আচ্ছা এটা রাখ। আর একটু সাবধান থাকিস। কেউ যেন আমার পারমিশন ছাড়া এখানে ঢুকতে না পারে” বলে নিজের গাড়ির দিকে এগিয়ে চলল। ফার্ম হাউসের গেট দিয়ে যখন তার গাড়ি বেরোল তখন সাতটা পেরিয়ে গেছে।


*******************

রাত প্রায় সাড়ে আটটা নাগাদ বিমলের গাড়ি নিজের অফিসের সামনে এসে বিমলকে নামিয়ে দিল। বিমল গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভারকে গাড়ির আশেপাশেই থাকতে বলে বিল্ডিংএর ভেতরে ঢুকে গেল। লিফটে চড়ে ওপরে উঠে নিজের অফিসে গিয়ে দেখে বেশীর ভাগ স্টাফই চলে গেছে। সামনের অংশে শুধু দু’জন বসে নিজেদের কাজ শেষ করবার চেষ্টা করছে। নিজের চেম্বারে ঢুকে পাশের কাঁচে ঘেরা কেবিনের দিকে তাকিয়ে দেখল নিশিতা ফোনে কারো সাথে কথা বলছে। ফোনটা টেবিলে রেখে নিজের গায়ের কোটটা খুলে তার রিভলভিং চেয়ারের ব্যাকরেস্টের সাথে ঝুলিয়ে চেয়ারে বসতে না বসতেই নিশিতা তার কাছে প্রায় ছুটে এল। চিন্তাগ্রস্ত মুখে সে বিমলের মুখের দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করল, “স্যার, বেলেঘাটা থেকে কোথায় গিয়েছিলেন আপনি? ওই লোকটার কোনও খোঁজ পেলেন”?

বিমল হাত তুলে তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “আগে আমাকে এক গ্লাস জল দাও তো নিশি। তারপর বেশ কড়া করে এক কাপ কফি বানাও প্লীজ”।

নিশিতা আর কোনও কথা না বলে রেস্টরুমের ভেতর ঢুকে গেল। রেস্টরুমের একপাশেই একটা পার্টিশানের ওপারে ছোট্ট একটা ক্লোজেট। সেখানে ফ্রিজের ভেতর থেকে ঠাণ্ডা মিনারেল ওয়াটারের বোতল থেকে একটা গ্লাসে জল ভরে বিমলের টেবিলে রেখেই সে আবার ভেতরের ক্লোসেটে ঢুকে গেল। নিশিতা মিনিট পাঁচেক বাদে এক কাপ কফি নিয়ে ক্লোজেট থেকে বেরিয়ে চেম্বারে ঢুকে দেখে বিমল চেয়ারটাকে পেছনদিকে হেলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে আধা শোয়া হয়ে আছে।
 

“স্যার কফি” বলে কাপটা টেবিলে নামিয়ে রাখতেই বিমল চেয়ার সোজা করে বসে কফির কাপ হাতে তুলে নিল। নিশিতা বিমলের চেয়ারের পেছনে গিয়ে বিমলের কপাল মাথা আর কাঁধ টিপতে টিপতে হাল্কা গলায় বলল, “মিঃ আজিম কুরেশিকে আগামীকাল বিকেল পাঁচটার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছি স্যার”।

বিমল কোন কথা না বলে চুপচাপ কফির কাপে চুমুক দিয়ে যাচ্ছিল। নিশিতা বুঝতে পারল, বিমল খুব গভীরভাবে কিছু একটা নিয়ে ভাবছে। মনে হচ্ছে ওই সিডির ব্যাপারটা নিয়েই। কিন্তু বেলেঘাটা থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যের অ্যাপয়েন্টমেন্টটা ক্যানসেল করে তার স্যার কোথায় গিয়েছিল, এটা জানতে তার ভীষণ কৌতূহল হচ্ছিল। কিন্তু সে জানে, এখনই কিছু জিজ্ঞেস করতে গেলে তার স্যার রেগে যাবেন। তার স্যারকে এতোটা উদ্বিঘ্ন সে কখনও দেখেনি। এর আগে ইনকাম ট্যাক্স, আর সিবিআইয়ের রেডের সময়েও স্যারকে সে কখনও বিচলিত হতে দেখেনি। একটু ভেবে নিশিতা “এক মিনিট স্যার” বলে চেম্বার থেকে বেরিয়ে সামনের অংশে গেল। দু’জন সেখানে কাজে ব্যস্ত আছে দেখে সে বলল, “সুধীর, বিকাশ, তোমাদের কাজ শেষ হলে চলে যেও। স্যার একটু বিজি আছেন। তোমরা তার চেম্বারে নক কোর না”। অফিস স্টাফেরা সবাই এ’মন নির্দেশ মাঝে মধ্যেই পেয়ে থাকে। তারা জানে রাত আটটার পর তাদের স্যার কিভাবে বিজি থাকেন। তাই তারা কোনও উচ্চবাচ্য না করে মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানাল।

নিশিতা চেম্বারে ফিরে এসে চেম্বারের দড়জাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিল। তারপর বিমলের পাশে এসে একটু দাঁড়িয়ে আবার বিমলের পেছনে গিয়ে তার কাঁধে গলায় আর ঘাড়ে ম্যাসেজ করতে শুরু করল। খানিক বাদে বিমলের কফি খাওয়া শেষ হতেই নিশিতা বিমলের হাত ধরে চেয়ার থেকে টেনে ওঠাতে ওঠাতে বলল, “আজ আপনার প্রচুর স্ট্রেস গেছে স্যার, বুঝতে পাচ্ছি। চলুন, একটু রিল্যাক্স করে নেবেন” বলে বিমলের হাত ধরে রেস্টরুমের ভেতরে গিয়ে ঢুকল।
 

বিমল যেন শক্তিহীন একটা পুতুল। নিশিতা বিমলকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে নিজের পড়নের টপটা খুলে ফেলল। তারপর নিজের ব্রাটাও খুলে ফেলল। অন্যান্য দিন ব্রা খোলার কাজটা বিমলই করে। নিশিতা শুধু নিজের ডিউটি পালন করতেই তার বসের কাছে নিজের শরীরটা তুলে ধরে। কিন্তু আজ ব্যাপারটা একটু অন্যরকম হচ্ছে। বিমলকে এত বিদ্ধস্ত সে আগে কখনও দেখেনি। আজ তার এই অসহায়তা দেখে সত্যিই নিশিতার কষ্ট হচ্ছে। তার কোমল মনটা তার বসকে কিছুটা স্বস্তি দিতে চাইছিল। তাই এই প্রথম বসের নির্দেশের অপেক্ষা না করেই, অনেকটা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ভাবেই সে বিমলের সামনে নগ্ন হল। ঈশ্বর সত্যিই নিশিতার দেহটাকে বেশ যত্ন নিয়েই বানিয়েছেন। তার ভরপুর শরীরে কোথাও এতটুকু খামতি নেই। বিমল একদৃষ্টে নিশিতার উলঙ্গ ঊর্ধাংগের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু তার চোখে বরাবরের মত লোভ লালসার ছায়া নেই আজ। তাকে খুবই নিষ্প্রভ বলে মনে হচ্ছে আজ। নিশিতা নিজেই এগিয়ে এসে তার উঁচু বুকটাকে বিমলের মুখের কাছে উঁচিয়ে ধরল। তবু যেন তার স্যারের কোন হেলদোল নেই আজ। নিশিতা এবার নিজেই নিজের একটা ভারী স্তন কিছুটা উঁচিয়ে ধরে বিমলের ঠোঁটে চেপে ধরে অন্য হাতে তার স্যারের মাথার পেছনদিকটা ধরে নিজের বুকের দিকে টেনে আনল। এমন অবস্থাতেও বিমল কয়েক সেকেন্ডচুপ করে থাকবার পর নিজের ঠোঁট দুটো ফাঁক করল। নিশিতা সাথে সাথে উদ্যোগী হয়ে তার স্যারের মুখের ভেতর নিজের স্তনটা ঢুকিয়ে দিয়ে তার মাথার চুলে হাত বোলাতে লাগল। বিমল বুঝি এবার নিজের অজান্তেই নিশিতার স্তনটাকে বেশী করে নিজের মুখের ভেতর টেনে নিয়ে চুষতে শুরু করল। নিশিতা যখন বুঝতে পারল যে তার স্যার এবার স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে তার মধুভান্ডটাকে চুষতে শুরু করেছে তখন সে বাঁহাতে বিমলের মাথাটাকে নিজের বুকের ওপর চেপে রেখে ডান হাতটা এগিয়ে দিল বিমলের কোমড়ের দিকে। প্যান্টের ওপর দিয়েই সে বিমলের পুরুষাঙ্গের ওপর চাপ দিয়ে বুঝল যে জিনিসটা এখনও ঘুমিয়ে আছে। সে একটু কসরত করে এক হাতের প্রচেষ্টায় বিমলের প্যান্টের জিপারটা খুলে ফেলল। তারপর নিজের হাতটাকে প্যান্টের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে আন্দাজে হাতরে হাতরে জাঙ্গিয়ার ফাঁক দিয়ে বিমলের পুরুষাঙ্গটাকে টেনে বার করল। বিমলের জিনিসটা তখনও বেশ ঠাণ্ডা আর নরম। এমনটা নিশিতা কখনও দেখেনি। আজই প্রথম তার স্যারের এ জিনিসটাকে সে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে মনে মনে ভাবল তার স্যার আজ ভীষণই টেনশনে আছেন। টেনশনে নিশিতা নিজেও সারাটা দিন ভুগেছে। সকালে ওই সিডিটা দেখবার পর থেকেই সে নিজেও বড় দুশ্চিন্তায় ভুগছে। অমন একটা সিডি কে কোন উদ্দেশ্যে বানিয়েছে কে জানে। তবে এর পেছনে যে কোন মহৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে না, এটা বুঝতে কারুরই অসুবিধে হবার কথা নয়। কিন্তু ওই এস এম খান নামের লোকটা কাকে বিপদে ফেলতে চাইছে? তাকে না তার স্যারকে? আর কী ধরণের বিপদই বা সামনে আসছে, তারও কোন অনুমান সে সারা দিন ভর ভেবেও বের করতে পারেনি। ওই এস এম খান কি তাকে বা তার স্যারকে কোনভাবে ব্ল্যাকমেল করতে চাইছে? আর এভাবে ব্ল্যাকমেল করে সে কী পেতে চাইছে? তার স্যারের প্রভাব প্রতিপত্তি সম্বন্ধে নিশিতা খুব ভাল ভাবেই ওয়াকিবহাল। কেউ তার স্যারের চুল পরিমাণ বিরোধিতা করলেও তার স্যার তাকে এমনভাবে চরম শাস্তি দিয়ে থাকেন, যে তার বিরূদ্ধে কেউ কোন প্রমাণই দেখাতে পারে না। এ রাজ্যের সমস্ত আমলা মন্ত্রী থানা পুলিশ তার স্যারের কথায় ওঠবস করে। দিল্লীর অনেক মন্ত্রী আমলাও তার স্যারের হাতের মুঠোয় পোরা। তাই তার স্যারকে কেউ বিপদে ফেলতে পারে না। কিন্তু আজ যেন তার স্যার সত্যিই খুব বিচলিত। তাকে এত টেনশনে নিশিতা কোনদিন দেখেনি। এ’সব ভাবতে ভাবতে সে ডানহাতে বিমলের শিথিল হয়ে থাকা পুরুষাঙ্গটাকে আদর করতে লাগল। বিমল ততক্ষণে কিছুটা সহজ ভাবেই নিশিতার বুকের সুধা পান করতে শুরু করেছে। নিশিতাও তার ডানহাতের গতি বাড়িয়ে দিল। আর মিনিট খানেকের ভেতরেই বিমলের ছোট খোকা যেন ঘুম থেকে জেগে উঠল। সেটা এবার ধীরে ধীরে উত্তপ্ত আর উত্থিত হয়ে নিজের পূর্ণাংগ রূপ ধারণ করল।
 

ঠিক এমন সময়েই বিমলের টেবিলের ওপর রাখা ইন্টারকমটা বাজে শব্দ করে উঠল। বিমল আর নিশিতা দু’জনেই প্রায় একই সাথে চমকে উঠল। বিমল নিশিতার বুক থেকে ঝট করে মুখ সরিয়ে নিয়ে রাগী মুখে নিজের টেবিলে গিয়ে ইন্টারকমের রিসিভার না তুলেই সেটাকে স্পীকার মোডে দিয়ে চেঁচিয়ে উঠল, “এই, তোমরা তো জানো যে আমি এখন খুব ব্যস্ত। কেন তাহলে আমাকে ডিসটার্ব করছ”?

নিশিতা খোলা বুকেই তার স্যারের পেছন পেছন এল। ও’পাশ থেকে কেউ একজন বলল, “স্যার, আমি চৌহান বলছি, আপনার ড্রাইভার। আসলে স্যার, আপনি আপনার ল্যাপটপের ব্যাগটা গাড়িতেই ফেলে এসেছিলেন। সেটাই নিয়ে এসেছি স্যার”।

______________________________
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 21-03-2020, 07:18 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)