Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance বড় আপুর বান্ধবী যখন বউ (সম্পূর্ণ)
#8
পর্ব-০৪


----------------------------------


একটুপরে নিলাকে কল দিলাম। টুট্ টুট্...

:-----হ্যালো।(নিলা)
কি মিষ্টি কন্ঠস্বর।আবারও ওর প্রেমে পড়ে গেলাম।
:-----হ্যালো কে বলছেন।(নিলা)
:-----আমি।(আমি)
:-----আমি কে।
:-----তুমি তো নিলা।
:-----এতো রাতে ফোন করে মজা করছেন।
:-----আরে নিলা পরী রাগ করো কেনো।
:-----আকাশ তুমি।এতো রাতে কি মনে করে।
:-----তোমাকে ফোন করতে আবার কিছু মনে করতে হয় নাকি।তোমাকে মনে করেই ফোন দিলাম।
:-----দেখো আকাশ আমি আগেই বলেছি এটা কোনোভাবেই সম্ভব না।শুধু শুধু তোমার সময় নষ্ট করো না।
:-----দেখো আমি বলছিলাম যে...।
(যা কথা শেষ করার আগেই কেটে দিলো)

কি আর করার নিলার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে আপুর ডাকে ঘুম ভাঙলো।

:-----এটা কি করলি।(আমি)
:-----কি করলাম আবার।কলেজ যাবি না।(আপু)
:-----ধ্যাত্।নিলাকে নিয়ে কি সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম। তুই দিলি সব শেষ করে।
:-----হয়েছে এখন রেডি হয়ে খেতে আয়।কলেজ যাওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে।
:-----হুমম।যা এখান থেকে।

আপু চলে গেলো। নিলার কথা ভাবতে ভাবতে উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে বসলাম।

:-----কিরে নিলাকে কিছু বলেছিলি।
:-----না।আজ কলেজ গিয়ে বলবো।দেখি কি বলে।যদি রাজি না হয়
:-----সবসময় নেগেটিভ ভাবা বন্ধ কর তো।
:-----আচ্ছা।এখন খাওয়া শেষ কর।

এরপর দুজনে খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কলেজে এসে আমি রাফি আর আল-আমীনের সাথে চলে গেলাম। আপু চলে গেলো। ক্লাস করছিলাম এমন সময় আপুর ফোন।

:-----হ্যালো আপু।
:-----তুই কোথায়।
:-----আমি তো ক্লাসে।
:-----এখনই গাছতলায় চলে আয়।
:-----এতো জরুরি দরকার কেনো।
:-----তুই আসবি।
:-----হুমম্ আসছি।

চলে গেলাম গাছতলায়। দেখি আপু,নিলা,রিয়া আর রাত্রি আপুও আছে সাথে।

:-----কিরে এতো জরুরি তলব কেনো।(আমি)
:-----এদিকে আয়।(আমাকে একটু দুরে নিয়ে গেলো আপু)
:-----আরে কি হয়েছে সেটা বলবি তো।(আমি)
:-----নিলাকে তোর কথা বলেছিলাম।(আপু)
:-----তারপর।(আমি)
:-----এটা নাকি কোনোভাবেই সম্ভব না।আমি অনেক করে বুঝালাম।কিন্তু কোনো মতেই বোঝাতে পারলাম না রে।আরো বললো যে তুই যদি আমার ভাই না হতি তাহলে খুব খারাপ হয়ে যেতো।(আপু)

খুব খারাপ লাগলো আপুর কথাগুলোতে। আমি আর কোনো উত্তর না দিয়ে ওই স্থান থেকে চলে আসছিলাম রাত্রি আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি কান্না করছে। হয়তো সব ঘটনা জেনে গেছে। আপু অনেকবার পেছন থেকে ডেকেছিলো কিন্তু শুনিনি। চলে আসলাম। আজ খুব খারাপ লাগছে। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কিছুদিনের মধ্যে হয়তো মেনে নেবে। কিন্তু এখন তো সরাসরি না করে দিলো। জীবনে প্রথম কাউকে পছন্দ হলো আর সে আমার সাথে এরকম করলো। ভাবতেই চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো। আগে কখনো ধূমপান করিনি। কিন্তু আজ খুব ইচ্ছে করছে। তাই অনেকগুলো সিগারেট কিনলাম। একটার পর একটা খেতেই আছি। অনেক রাত হয়েছে তাই বাসায় ফিরলাম। বাসায় এসে কলিংবেল দেওয়ার সাথে সাথে আপু দরজা খুলে দিলো। যেনো দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলো।

:-----কিরে তোর চোখ এমন লাল কেনো।(অনেকটা ভয় পেয়ে আম্মু কথাটা বললো)
:-----কিরে কিছু বলছিস না কেনো।কি হয়েছে বল আমাকে।(আপু)
:-----কিছু না বলেই আমি আমার রোমে চলে গেলাম।
(পেছন থেকে আপু আমাকে ডাকছিলো কিন্তু আমি না শুনেই আমার রোমে চলে গেলাম)

:-----ওর কি হয়েছে রে।কিছু কি জানিস তুই।(আম্মু)
:-----না মা সেরকম কিছু তো জানি না।(আপু)
:-----দেখ আমি তোদের মা হই।আমার কাছে লুকানোর কিছু নেই কিছু।(আম্মু)

সবকিছু খুলে বললাম আম্মুর কাছে। আম্মু কিছু না বলে নিজের রোমে চলে গেলো। আমার আকাশের জন্যে খুব চিন্তা হচ্ছে। আমার একমাত্র ভাই। রাতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম মনে নেই। ঘুম ভাঙার পরে বুঝলাম অনেক বেলা হয়ে গেছে। আজ আর কেউ ডাক দিতে পারেনি। কারণ আজকে আমার রোমের দরজা লাগানো ছিলো। প্রায় দুপুর হয়ে গেছে মনে হয়। খুব খিদে ও পেয়েছে।
তাই ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেতে গেলাম।

:-----কিরে তোর শরীর ঠিক আছে তো।(আম্মু)
:-----হুমম্।আমার শরীরের আবার কি হবে।(আমি)
:-----তাহলে তোর শরীরের এমন অবস্থা হচ্ছে কেনো?কেমন রোগা হয়ে যাচ্ছিস।
:-----না তো।আমি একদম ঠিক আছি।
:-----হুমম।ভালোই নিজের মার চোখ ফাঁকি দেওয়া শিখে যাচ্ছিস।
:-----কি শুরু করলে।খাওয়ার মুড্ টাই নষ্ট করে দিলে।যাও আর খাবোই না।(এই বলেই আমি খাবার টেবিল থেকে উঠে গেলাম)
:-----এই আকাশ কোথায় যাচ্ছিস।খাবার এভাবে রেখে চলে যাচ্ছিস কেনো।

আমি আর কিছু না বলে বাইরে চলে গেলাম। রাফি আর আল-আমীনকে ফোন করে চা-য়ের দোকানে আসতে বললাম। ওখানে প্রায় সময়ই আড্ডা দেই। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা পৌছে গেলো।
ওরা এসে রীতিমতো অবাক হলো আমাকে দেখে।

:-----ওই এটা কি করছিস।(রাফি)
:-----পাগল-টাগল হয়ে গেলি নাকি।(আল-আমীন)
আসলে ওরা আগে কখনো আমাকে সিগারেট খেতে দেখেনি।
:-----এখানে বস।(আমি)
:-----আগে বল তোর এই অবস্থা কেনো।(রাফি)
:-----না তেমন কিছু না।একা একা আর কতো ভালো লাগে।তাই এটাকে সঙ্গী বানাচ্ছি।(আমি)
:-----এটা কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।(রাফি)
:-----তোরা আমার ভালো চাছ তো।(আমি)
:-----কেনো কোনো সন্দেহ আছে নাকি।(রাফি আর আল-আমীন একসাথে বললো)
:-----তাহলে এটা খেতে মানা করিছ না।(আমি)
:-----তবুও একটু ভেবে চিন্তে করিছ যা করার।(রাফি)
:-----হুমম।(আমি)
প্রায় তিন প্যাকেট সিগারেট খেয়ে ফেলেছি।
:-----প্লিজ দোস্ত আর না।(রাফি)
আমিও ভাবলাম অনেক খেয়েছি। একটুপরে নিশার কলেজ ছুটি দিলো।
আরেকটা সিগারেট ধরালাম।

:-----আরে আকাশ ভাইয়া তুমি সিগারেট খাও।(নিশা)
:-----হুমম।এই নে।(দুইটা চকলেট দিলাম)
:-----তোমকে এমন পচাঁ দেখাচ্ছে কেনো।(চকলেটগুলোনিতে নিতে নিশা বললো)
:-----এমনিই।(বলেই বাজে একটা হাসি দিলাম)
:-----মিথ্যা কথা বলো কেনো।
:-----হিহি হিহি।
:-----ভেংচি দিলো একটা
:-----আইসক্রিম খাবি?
:-----না।
:-----তাহলে।
:-----ফুসকা খাবো।
:-----ওকে চল।।
:-----হুমম।
:-----কাল থেকে আর এখানে আসা হবে না রে।
:-----কেনো কোথায় যাবে।
:-----অনেক দুরে।
:-----কোথাও যেও না।তুমি চলে গেলে আমাকে প্রতিদিন চকলেট কে দিবে।আর শালি বলে কে ডাকবে।।
নিশার মুখে শালি কথাটা শুনে নিলার কথাটা মনে পড়ে গেলো।
:-----আচ্ছা আমি রাফি আর আল-আমীনকে বলে দিবো তোকে প্রতিদিন চকলেট,আইসক্রিম,ফুসকা আর যা যা খেতে চাছ সব খাওয়াতে।
:-----তা ঠিক আছে।কিন্তু তুমি চলে গেলে ভালো লাগবে না।
:-----আবারও বাজে একটা হাসি দিলাম)

এরপর নিশাকে বাসায় পৌছে দিয়ে চলে আসলাম। খুব তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসলাম। সোজা ছাদে চলে গেলাম। দোলনায় বসে আছি। কতো স্বপ্ন ছিলো নিলার কাধে মাথা দিয়ে একসাথে চাঁদ দেখবো। নিলাল কথা মনে পড়তেই চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো।
সিগারেট খাওয়া শুরু করলাম আবার। একটার পর একটা। পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলো তাকিয়ে দেখি আপু রাগি একটা লুক নিয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

:-----আরে এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো।(আমি)
:-----এগুলো কি।(সিগারেটগুলো দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো)
:-----জানি না
:-----আবার মিথ্যা কথাও বলছিস।
:-----সর তো কলেজ যেতে হবে।

বলেই নিচে এসে রেডি হয়ে কলেজে চলে গেলাম। কলেজে ঢুকেই দেখি রাফি আর আল-আমীন গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
আমার জন্যেই অপেক্ষা করছিলো মনে হয়। বাইকটা পার্ক করে ক্যাম্পাসে গেলাম। এমন সময় রাত্রি আপুর সাথে দেখা। আমি দেখেও না দেখার ভান করে চলে আসছিলাম।

:-----আকাশ এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।(একটু জোরেই কথাটা বললো রাত্রি আপু)
:-----ওহ ।আপু তুমি।কেমন আছো।(আমি)
:-----এমনটা কেনো করলে।(রাত্রি আপু)
:-----কেমন করলাম আবার আমি।(আমি)
:-----নিলা থেকে কি আমি দেখতে খারাপ।(রাত্রি আপু)
:-----না ঠিক তা নয়।কিন্তু হঠাৎ করেই ভালো লেগে গেলো।(আমি)
:-----হুমম্ বুঝেছি তুমি ভালো থাকো এটাই চাই।আমার ভাগ্যে তুমি লিখা নাই।(রাত্রি আপু)
:-----কষ্ট পেও না।আমার সত্যিই কিছু করার নেই।(আমি)

বলেই চলে আসলাম। একটু দুরে নিলাকে দেখলাম। মনে হয় আমার আর রাত্রি আপুর সব কথা শুনেছে। শুনুক আমার কি। আমি পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম। কয়েকটা ক্লাস করে বাসায় ফিরে আসলাম।

:-----আম্মু।
:-----হুমম্ বল।
:-----আমি নানু বাসায় চলে যাবো।এখানে আর থাকতে পারছি না।
:-----আমি সব জানি।যা কয়েকদিন ঘুরে আস।ভালো লাগবে।
:-----হুমম।

খাওয়া শেষ করে রোমে চলে গেলাম।নানু বাসায় যাওয়া হয় না বহু বছর। ছোট বেলায় একবার গিয়েছিলাম। আম্মু আগে থেকেই বলে দিয়েছে মামাদের। আমার তিন মামা আর আম্মু একা। আম্মুও বহু বছর ধরে নানু বাসায় যায় না। শুনেছি মামারা নাকি রাজনীতি করে। যাইহোক রওয়ানা দিলাম নানু বাসার উদ্দেশ্যে। নানু বাসাটা একটু গ্রাম এলাকায়। কিন্তু নানু বাসার পরিবার সম্ভ্রান্ত। সন্ধ্যার ট্রেনে উঠে পড়লাম। আম্মু টিকিট আগের থেকেই কেটে রেখেছে। ট্রেনে উঠতেই এক মেয়ের সাথে ধাক্কা লেগে গেলো। আমার অনিচ্ছায়। মেয়েদের সাথে ধাক্কা খেলে যা হয় আর কি। দিলো বয়ান শুনিয়ে। সুন্দরী মেয়ে দেখলে ওইটা সেইটা বলে আমার মাথা খেয়ে নিলো। একটু পরে পড়লাম আরেক সমস্যায়। দেখি মেয়েটার সিট আমার সামনের সিটে। সারা রাস্তা আমার মাথা খেলো। এমনিতেই আমার মন ভালো নেই। পরিস্থিতি একটু শান্ত হলো। মানে মেয়েটা একটু ভালো করে কথা বললো।

:-----তোমার নামটাই তো জানা হলো না।(মেয়েটা)
:-----আকাশ ।আপনার নাম?(আমি)
:-----নিরা।
:-----ওহ সুন্দর নাম।(আমি)

আরো অনেক কথা বললো। কথা বলতেই আছে। কালকে মনে হয় আমাকে মেন্টাল হসপিটালে ভর্তি হতে হবে। মেয়েরা এতো কথা কিভাবে বলে। শেষ পর্যন্ত আমার গন্তব্যে পৌঁছালাম। ওখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় সকাল দশটা হয়ে গেছে। ট্রেন থেকে নেমেই দেখি....।



চলবে......
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বড় আপুর বান্ধবী যখন বউ - by Biddut Roy - 17-03-2020, 09:28 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)