Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
(Update No. 139)

সীমন্তিনী সাথে সাথে অর্চনাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, “অর্চু সোনা, তুমি এত উতলা হচ্ছ কেন বোন? তুমি কি জানোনা আমি বেঁচে থাকতে রচু আর দাদাভাইয়ের শরীরে একটা আঁচড়ও কেউ দিতে পারবে না। তুমি একদম দুশ্চিন্তা করো না বোন। ওরা দু’জনে যে আমার প্রাণ গো। আমি ওদের কাছ থেকে শারিরীক ভাবে এত দুরে আছি বলে ভাবছো তো তুমি? কিন্তু আজ তোমাকে জানিয়ে রাখছি, প্রতিটি মূহুর্তে আমি ওদের ওপর নজর রাখছি। তবে সেটা কিকরে করছি সে ব্যাপারটা জানতে চেও না বোন। সেটা বলতে একটু অসুবিধে আছে বলেই বলতে পারব না। তবে তুমি নিশ্চিন্ত থেকো এ ব্যাপারে”।

অর্চনা কয়েকটা মূহুর্ত সীমন্তিনীর দিকে চুপ করে তাকিয়ে থেকে বুকের ভেতর আটকে থাকা শ্বাস ছেড়ে তার একটা হাত আরেকহাতে জড়িয়ে ধরে বলল, “তুমি ঠিক বলছ দিদিভাই”?

সীমন্তিনী অর্চনাকে আগের মতই বুকে চেপে ধরে বলল, “হ্যারে সোনা। আর এটা শুধু আজ থেকে বা কাল থেকে নয়। ওদের বিয়ের আগেই যেদিন আমি প্রথম কালচিনি গিয়েছিলুম, সেদিন থেকে। আর আমার জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত আমি ঠিক একইভাবে রচু আর দাদাভাইয়ের ওপর নজর রেখে যাব। আমার কথা তুমি বিশ্বাস করতে পারো। আর এসব ব্যাপারে একেবারে দুশ্চিন্তা করো না কেমন? এবার নীতার সঙ্গে আমরা একটু আলোচনা করি। দেখি রচু বা দাদাভাইয়ের ওপর কোন বিপদ নেমে আসতে পারে বলে ভাবছে ও”।

অর্চনাকে শান্ত করে সীমন্তিনী নবনীতাকে জিজ্ঞেস করল, “হ্যাঁ নীতা এবার বলো দেখি, তুমি কী বলতে চাইছ”?

নবনীতা শান্ত স্বরে বলল, “দিদি, রতু-দা যদি ওই মহিমা মালহোত্রা সেনের যোগা ইনস্টিটিউটেই কাজ করে তাহলে কিন্তু বিষয়টা সত্যিই খুব চিন্তার”।

সীমন্তিনী বলল, “কলকাতায় বা অন্য অনেক বড় বড় শহরে যে বিউটি পার্লার, মেসেজ সেন্টার, জিম, ব্যায়ামাগার, যোগা সেন্টারে অনেক রকম কূকীর্তি হয়ে থাকে সেটা আমার অজানা নয় নীতা। তাই দাদাভাই কাজে ঢোকবার আগেই যখন আমাকে প্রথম মহিমার যোগা ইনস্টিটিউটের ব্যাপারে বলেছিল, আমি সেদিনই তাকে সতর্ক করে দিয়েছিলুম। আর তাকে বলেছিলুম সে যেন কোনও বন্ড বা মেয়াদী চুক্তি করে কাজে না ঢোকে। আর কাজে ঢোকবার পরেও সে যেন সব সময় সতর্ক থাকে। কোনকিছু বেচাল বুঝলেই সে যেন সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানায়, আর সাথে সাথে সেখানে কাজ করাও ছেড়ে দেয়। আমি শুনেছি, দাদাভাইকে মহিমা নাকি গ্যারান্টি দিয়ে বলেছে যে তার যোগা সেন্টারে কোনও রকম অনৈতিক কাজকর্ম হয় না। আর সে এমনও আশ্বাস দিয়েছে যে দাদাভাইয়ের যদি কখনও তেমন কোন সন্দেহ হয় তবে মহিমা তাকে যে কোনও সময় চাকরি ছেড়ে দিতে বাধা দেবে না। দাদাভাই সে ইনস্টিটিউটে জয়েন করেছে প্রায় দেড় মাস হতে চলল। এর মধ্যে যদি সে বেচাল কিছু দেখে থাকতো তাহলে সে আমাকে অবশ্যই জানাতো। তাছাড়া রচু আর দাদাভাই তো সবসময় মহিমার মিষ্টি ব্যবহারের কথাই বলে। মহিমা তাদেরকে খুব ভালবাসে বলেই জানিয়েছে ওরা। রচুকে নাকি সে ছোটবোন বলে ভাবে, আর দাদাভাইকেও সে নাকি একেবারে ছোটভাইয়ের মতই ভালবাসে। তাহলে তুমি সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছো কেন, সেটা একটু খুলে বল তো”।

নবনীতা এবার অনেক সংযত গলায় বলল, “রতীশ-দা আর বৌদি যখন তোমাকে এভাবে বলেছেন তাহলে তো ধরাই যায় তারা এ ব্যাপারে এখনও অজ্ঞই আছে। কিন্তু দিদি, আমি যখন পরিতোষের বাড়িতে আমার সব কথা তোমাদের সকলের কাছে খুলে বলেছিলাম সেদিন আমি তোমাদের আমার এসকর্ট হবার কথাও বলেছিলাম। আমার এক বান্ধবী যে কিনা আগে থেকেই এক ম্যাডামের এজেন্সীতে এসকর্টের কাজ করত, তার মাধ্যমেই আমি তার ম্যাডামের কাছে গিয়ে তার এসকর্ট এজেন্সীতে যোগ দিয়েছিলাম। সেদিন আমি তোমাদের কাছে আমার সে বান্ধবী আর ওই ম্যাডামের নাম গোপন করে গিয়েছিলাম। তুমি আর পরিতোষ দু’জনেই পুলিশে কাজ করো। আমার চরম বিপদের দিনে যারা আমাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছিল সেই লোক গুলোর কোন বিপদ হোক, এটা আমি চাই নি। তাই সেদিন তাদের নাম ঠিকানা আমি তোমাদের কাছে গোপন করে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ এমন একটা পরিস্থিতিতে পড়ে বলতে বাধ্য হচ্ছি দিদি। আমার ওই ম্যাডামই হচ্ছেন মহিমা মালহোত্রা সেন। যার সহায়তায় আমি নিজের শরীরেরর বিনিময়ে আমার বেঁচে থাকবার জন্যে পয়সা রোজগার করতাম”।
 

অর্চনা নবনীতার কথা শুনে চাপা চিৎকার করে উঠলে সীমন্তিনী তার হাত চেপে ধরে নবনীতাকে বলল, “বেশ তোমার কথা নাহয় মেনেই নিলুম যে তোমার ওই মহিমার ইনস্টিটিউটেই দাদাভাই কাজ করে। তা তুমি সে ইনস্টিটিউটে কখনো গিয়েছিলে? সে ইনস্টিটিউটেও কি এমন দেহ ব্যবসার কাজ চলে বলে তোমার মনে হয়? আর ওই মহিমার ব্যাপারে তুমি যতটুকু যা জানো তা আমাকে খুলে বলো, প্লীজ” এ’কথা বলতেই লক্ষ্মীকে চায়ের ট্রে নিয়ে আসতে দেখে সে হাত তুলে ঈশারায় নবনীতাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “দাঁড়াও, লক্ষ্মীদি চা নিয়ে এসেছে। আগে আমরা চা খেয়ে নিই”।
 

তিনজনেই চুপ করে লক্ষ্মীর হাত থেকে চা নিতে লক্ষ্মী আবার কিচেনের দিকে চলে যাবার পর নবনীতা খুব নিচু গলায় বলতে শুরু করল, “দিদি আমি নিজেও তো সেখানে খুব বেশীদিন কাজ করিনি। আমিও মাত্র মাস খানেকই ওই ম্যাডামের সাথে কাজ করেছি। তবে আমার বান্ধবী সেখানে অনেকদিন থেকেই কাজ করছে। ও ওই যোগা ইনস্টিটিউটেও অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে, আবার তার পাশাপাশি ম্যাডামের এজেন্সীর এসকর্ট হিসেবেও কাজ করে। এখন তো আর গোপন রাখার কোন মানে নেই। তোমরা রতীশ-দার কাছ থেকেই তার নাম জেনে যাবে। তাই আর রাখঢাক না করেই বলছি, আমার সে বান্ধবীর নাম বীথিকা। বীথিকা মল্লিক। কিন্তু দিদি, আমি তোমার কাছে হাত জোড় করে প্রার্থনা করছি, আমার কথার ওপর ভিত্তি করে তোমরা বীথিকার কোনও ক্ষতি করো না প্লীজ। আমার চরম দুঃসময়ে ও-ই শুধু আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আর ও নিজেও এসকর্টের কাজ করে নিরুপায় হয়েই। ওর বাবা দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। আর ওর এক ছোট ভাইও খুব ছোটবেলাতেই পঙ্গু হয়ে গেছে। তাই শুধু যোগা সেন্টারের অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ও যা মাইনে পায় তাতে বাবা আর ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ মিটিয়ে সংসার চালানো একেবারেই অসম্ভব। তাই ও বাধ্য হয়েই নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করে কেবল মাত্র বাবা আর ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ মেটাবার জন্যেই ও’পথে নেমেছে”।

সীমন্তিনী তাকে আশ্বস্ত করে বলল, “যারা নিজের জীবন বাজি রেখে আত্মীয় পরিজনদের মুখে খাবার তুলে দেয়, তারা যতই হীন কাজ করুক না কেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে মনে তাদের শ্রদ্ধাই করি নীতা। হ্যাঁ, আইনের রক্ষক হিসেবে অনেক সময়েই আমাদের মনের বিরূদ্ধে গিয়ে অনেক কিছু করতে হয়। কিন্তু তোমাকে আমি কথা দিচ্ছি, অন্ততঃ তোমার আজকের কথার ভিত্তিতে আমি বা পরিতোষ বীথিকার ওপর কোনও ক্ষতিকারক কিছু করব না। তুমি এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থেকো। এবার বাকি ব্যাপারগুলো আমাকে খুলে বলো”।
 

নবনীতা কয়েকবার বড় বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে বলল, “দিদি, মহিমা ম্যাডামের ওই যোগা সেন্টারটা দক্ষিণ কলকাতার একটা আটতলা বিল্ডিঙের ছ’তলায়। বেশ বড়সড় একটা কম্পাউন্ড। ওই বিল্ডিঙের ছ’তলাটার পুরোটা নিয়েই তার সে সেন্টার। আর বীথিকার মুখেই আমি শুনেছি যে ওই সেন্টারের যারা কর্মচারী, পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে তারা প্রায় সবাই ম্যাডামের এসকর্ট এজেন্সীতে এসকর্টের কাজ করে কেবল মাত্র বাড়তি উপার্জনের জন্যে। ওই ইনস্টিটিউটে রতীশ-দা বাদেও আরও দু’জন পুরুষ ট্রেনার আছে। তাদের নাম বরুন আর সুজয়। তারাও ম্যাডামের এজেন্সীর মেল এসকর্ট। আর বীথিকার কথা তো আগেই বলেছি। বীথিকা ছাড়াও আরও একজন মহিলা কয়েকমাস আগে পর্যন্তও সে ইনস্টিটিউটের ট্রেনার হবার সাথে সাথে বীথিকারই মত ম্যাডামের এজেন্সীর ফিমেল এসকর্ট হিসেবে কাজ করত। তবে কয়েক মাস আগে সে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়তেই ম্যাডামের কাজ থেকে ছুটি নিয়েছে। ডিসেম্বরের দিকে সে হয়ত আবার ম্যাডামের কাজে যোগ দেবে। এরা ছাড়াও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ম্যাডামের আরও অনেক মেল এবং ফিমেল এসকর্টরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যারা ম্যাডামের যোগা সেন্টারের সাথে একেবারেই জড়িত নয়। বলতে গেলে প্রায় পুরো গ্রেটার কলকাতায় ম্যাডামের এমন প্রচুর এসকর্ট আছে। তবে ম্যাডামের যোগা সেন্টারের সাথে তাদের প্রত্যক্ষ্য বা পরোক্ষ কোনও রকম যোগাযোগই নেই। কিন্তু ম্যাডামের আয়ের আসল স্রোত এই এসকর্টের ব্যবসাই। তবে বীথির মুখেই শুনেছি যে সেন্টারের কর্মচারীরা প্রায় সকলেই ম্যাডামের এসকর্ট ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলেও, ম্যাডামের কড়া নির্দেশেই তারা সেন্টারের ভেতরে ওই এসকর্ট ব্যবসা সংক্রান্ত কোন কথাই বলাবলি করে না। আর সেন্টারের ভেতরেও এই ব্যবসা সংক্রান্ত কোন কাজকর্ম হয় না। কারন এসকর্টরা ক্লায়েন্টের বাড়ি বা তাদের পছন্দের কোনও জায়গাতেই গিয়ে মিট করে। তবে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ, তাদের সাথে লেনদেন এবং এসকর্টদের বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের কাছে পাঠাবার কাজগুলো ম্যাডাম ওই ইনস্টিটিউটটার ঠিক নিচের তলাতেই তার নিজস্ব একটা প্রাইভেট রেস্ট রুম আছে, সেখান থেকে করেন। আমাকেও ইন্টারভিউয়ের জন্য তিনি ওই যোগা ইনস্টিটিউটের নিচের তলার ওই রুমটাতেই ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তবে বীথির মুখেই শুনেছি যে বিশেষ কয়েকজন ক্লায়েন্ট যারা শুধু ম্যাডামের সাথে সময় কাটাতে আসে তাদেরকে ম্যাডাম তার ওই রেস্টরুমেই মিট করেন। নিজের এসকর্ট ব্যবসা সুচারু রূপে চালাতেই ম্যাডাম ওই সব ক্লায়েন্টকে সার্ভিস দিয়ে থাকেন”।

এতখানি একদমে বলে নবনীতা একটু সময় চুপ করে থেকে আবার বলল, “আমার মনে হয়, ম্যাডামের ওই পাঁচতলার রেস্ট রুম, বা বাইরের এসকর্ট ব্যবসার ব্যাপারে রতীশ-দা এখনও কিছু জানতে পারেননি। আর ম্যাডাম নিজে থেকে যে এ সমস্ত কথা তাকে জানাবেন না এ তো বলাই বাহুল্য। কিন্তু দিদি, রতীশ-দা নিজের অজ্ঞাতেই কেমন একটা বিপদসঙ্কুল জায়গায় গিয়ে পড়েছেন তা তো বুঝতে পারছ। আর তার মত সুন্দর হ্যান্ডসাম একজন পুরুষের যে ওই ধরণের কাজে কতটা ডিমান্ড আছে তা হয়ত তোমরা কল্পনাও করতে পারবে না, কিন্তু বীথির মুখে আমি সে’সব কথা শুনেছি। তাই আমার মনে হচ্ছে রতীশ-দা এখনও পর্যন্ত ম্যাডামের ওই কাজে জড়িয়ে হয়ত পড়েন নি। কিন্তু দিদি, আমার মন বলছে, রতীশ-দা সেখানে একদম সুরক্ষিত নন। তুমি প্লীজ কিছু একটা করো দিদি। রতীশ-দা আর বৌদিকে তুমি ওই ফাঁদে পড়া থেকে বাঁচাও। নইলে আজ বা হোক কাল, যে কোন সময় সর্বনাশ ঘটে যেতে পারে। রতীশ-দাকে তুমি এক্ষুনি বলে দাও যেন সে ম্যাডামের ওখানে কাজ ছেড়ে দেন। আর তার খোয়া যাওয়া টাকাটা যখন ফিরে পাওয়াই গেছে, তাহলে তার আর ম্যাডামের ওখানে থাকবার দরকার কি? তিনি তো নিজে আলাদা ভাবে নিজের একটা সেন্টার এখন খুলতেই পারেন, তাই না”?

নবনীতার সমস্ত কথা শুনে সীমন্তিনী খুব গভীরভাবে কিছু একটা ভাবতে লাগল। অর্চনা নবনীতার কথা শুনে খুব ভীত হয়ে পড়ল। সে সীমন্তিনীর একটা হাত আঁকড়ে ধরে প্রায় কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, “ও দিদিভাই, কি হবে গো? নীতাদির কথা শুনে আমার তো হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে”।
 

সীমন্তিনী অর্চনার হাতে চাপ দিয়ে শান্ত গলায় বলল, “ভয় পাবার কিচ্ছু নেই অর্চু। আমি তোমাকে তো আগেই বলেছি যে দাদাভাই আর রচুর ওপরে কোনরকম বিপদ নেমে আসতে আমি দেব না। ওদের ওপর আমার সব সময় নজর আছে। এই যে আমি এখন তোমাদের সাথে এখানে বসে আছি, কিন্তু দাদাভাই আর রচুর ওপর আমার এই মূহুর্তেও নজর আছে। ওদের ওপর কোনও বিপদ আসবার আগেই আমি ঠিক সময়ে তা জানতে পারব। আর প্রয়োজন মত সব ব্যবস্থা নিতে পারব। তুমি উতলা হয়ো না বোন। তবে তোমরা দু’জনেই আমাকে একটু ব্যাপারটা ভেবে দেখতে দাও। কারন দাদাভাই বা রচু ওরা দু’জনেই আমার কাছে কোন কথা গোপন রাখবে না। আর নবনীতাও যে অমূলক কথা বলছে সেটাও হতে পারে না। তাই ব্যাপারটা নিয়ে আমাকে এখন একটু ভালভাবে ভেবে দেখা দরকার। নীতা বোন, তুমি একটু অর্চুকে নিয়ে তোমার ঘরে যাবে প্লীজ। আমাকে একটু একা থাকতে দেবে প্লীজ। তবে প্লীজ, আমাকে তোমরা কেউ ভুল বুঝো না। আর অর্চু, তোমাকে আরেকটা কথা বলছি। নীতার মুখে আমরা এখন যা কিছু শুনলুম, এ সবের কোন কিছুর খবরই যেন রাজগঞ্জ বা কালচিনির কেউ জানতে না পারে, এ’কথাটা মাথায় রেখো। আর শুধু তাদের কথাই বা বলছি কেন। রচু আর দাদাভাইও যেন এ ব্যাপারে কিচ্ছুটি জানতে না পারে আপাততঃ। কারন এ’সব খবরের বিন্দুমাত্রও যদি তারা কেউ জানতে পারেন, তাহলে তারা সকলেই চিন্তায় চিন্তায় পাগল হয়ে যাবেন। আমি চাই না সেটা হোক। যা ব্যবস্থা নেবার আমি তা নিশ্চয়ই নেব। আমার ওপর এ’টুকু ভরসা তো করতে পারবে, না কি? আমি আমার ভগবানের নামে শপথ করে বলছি দাদাভাই আর রচুর কোন বিপদ হতে আমি দেব না। নীতা, প্লীজ এবার তোমরা একটু তোমাদের ঘরে যাও। আর অর্চুকে বুঝিয়ে আরও কিছুটা শান্ত করবার চেষ্টা করো প্লীজ”।

নবনীতা বিছানা থেকে নামতে নামতে বলল, “হ্যাঁ দিদি, যাচ্ছি। তবে দিদি একটা ছোট্ট অনুরোধ রাখবে আমার”?

সীমন্তিনী প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তার দিকে চাইতেই সে আবার বলল, “দেখ দিদি, রাজগঞ্জ আর কালচিনির কাউকে না জানালেও আমরা তিনজন তো এ বিপদের কথা জানতেই পারলাম। আমরাও তো এখন থেকে দুশ্চিন্তা আর দুর্ভাবনায় থাকব। তাই বলছি দিদি, এ ব্যাপারে তুমি কী ব্যবস্থা নিচ্ছ তা কিন্তু আমাদের দু’জনের কাছে গোপন রাখবে না। বলো দিদি, আমার এ অনুরোধটা রাখবে প্লীজ”।

অর্চনাও সাথে সাথে বলল, “হ্যাঁ দিদিভাই, আমাদের তুমি সবকিছু জানিও এ ব্যাপারে। নইলে আমি কিন্তু পাগল হয়ে যাবো”।

সীমন্তিনী অর্চনাকে বুকে জড়িয়ে ধরে তার মাথায় আদর করে চুমু খেয়ে বলল, “বেশ, তোমাদের কাছে আমি এ ব্যাপারে কোনকিছু লুকোব না কথা দিলুম। কিন্তু তোমরা দু’জনও আমাকে কথা দাও, ঘাবড়ে গিয়ে দুশ্চিন্তা করে নিজেদের ক্ষতি তোমরা কেউ করবে না। আর এ ব্যাপারে আমরা তিনজন ছাড়া চতুর্থ কেউ যেন একেবারেই কিছু জানতে না পারে”।

অর্চনা সীমন্তিনীর দু’হাত ধরে বলল, “ঠিক আছে দিদিভাই। আমরা তোমায় সে কথা দিলাম। এই তোমাকে ছুঁয়ে শপথ করছি আমি”।

নবনীতাও সীমন্তিনীর হাতে হাত রেখে বলল, “হ্যাঁ দিদি, আমিও তোমাকে সে কথা দিচ্ছি” বলে অর্চনার হাত ধরে তাকে বিছানা থেকে নামাতে নামাতে বলল, “চলো অর্চু, আমরা আমাদের ঘরে যাই। দিদি সময় মত নিজেই আবার আমাদের ডেকে আনবেন। কিচ্ছু ভেবো না। চলো এসো”।
 

******************
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 11-03-2020, 10:22 PM



Users browsing this thread: