04-03-2020, 10:32 PM
(Update No. 102)
রচনা আর রতীশ লিফটে চড়ে নেমে যেতেই মহিমা আবার নিজের চেম্বারে ফিরে এল। আর প্রায় সাথে সাথেই বাইরে থেকে বীথিকার গলা পাওয়া গেল, “ম্যাম, আমি আসব”?
মহিমা অনুমতি দিতেই বীথিকা ঘরে ঢুকল। মহিমা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বীথিকাকে চেয়ারে বসার ঈশারা করে জিজ্ঞেস করল, “রতীশকে দেখে কেমন লাগল বীথি”?
বীথিকা চেয়ারে বসে খুব খুশী হয়ে বলল, “ম্যাম, আমার তো দারুণ লেগেছে। কী দারুণ দেখতে! এমন সুন্দর দেহের গঠন খুব কম পুরুষেরই হয়ে থাকে। আর তার স্ত্রীও তো খুব সুন্দরী। এরা যদি এসকর্ট হিসেবে কাজ করে তবে এদের দু’জনকে পেতে সবাই কাড়াকাড়ি শুরু করে দেবে। আমাদের মহিলা ক্লায়েন্টরা তো মিঃ ভট্টাচারিয়াকে পেলে আমরা যা চাইব তা-ই দিতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। সত্যি বলছি ম্যাম, আমার তো রতীশবাবুর দিক থেকে চোখ সরাতেই ইচ্ছে করছিল না”।
মহিমা মৃদু হেসে বলল, “আমি মনে মনে আশা করেছিলাম, তুমি এমনই কিছু একটা বলবে। তোমার কাছে তো আর আমার কিছু গোপন নেই। জানো বীথি? গত সপ্তাহে ও যখন ইন্টারভিউ দিতে এসেছিল, তখন ওর সুন্দর সুগঠিত শরীরটাকে আমি দেখেছি। তোমাকে বলতে লজ্জা নেই, ওকে দেখে অনেকদিন বাদে আমার শরীরটাও গরম হয়ে উঠেছিল। কিন্তু খানিকক্ষণ বাদেই আমার মনের ভেতরের সে ইচ্ছেটা কেন জানিনা মরে গিয়েছিল। আর তার বদলে ওর সহজ সাবলীল আর ভদ্র ব্যবহার দেখে ওকে আমার ছোট ভাইয়ের মত ভালবাসতে ইচ্ছে হয়েছিল। তখনই বুঝেছিলাম, ও আর দশটা ছেলের থেকে আলাদা। আমি ছোটবেলা থেকে আজ অব্দি যত পুরুষের মুখোমুখি হয়েছি, তাদের সকলের চোখেই আমার শরীরের ওপর লোভের চাউনি দেখেছি। কিন্তু আমাকে দেখে রতীশের চোখে মুখে বিন্দুমাত্র লালসার ছাপও দেখতে পাইনি আমি। তখনই ভেবেছিলাম একে এসকর্ট করা যাবে না। কিন্তু ওর যোগা স্কিল দেখে আমি সত্যি খুব অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। চল্লিশ পঞ্চাশ মিনিটের মধ্যে ও নানারকম প্রাণায়াম ছাড়াও প্রায় পঞ্চাশটার মত যোগাসন করে দেখিয়েছিল। আমি তখনই বুঝেছি ও একজন সত্যিকারের যোগা এক্সপার্ট। তাই আমার মনোভাব পাল্টে নিয়ে ওর সাথে দেবর ভাবীর সম্পর্ক পাতিয়ে নিয়েছি। তারপর একদিন ওদের ফ্ল্যাটে গিয়ে ওদের দু’জনের সাথে কথা বলে আমি আরও অবাক হয়েছি। ওকে পেলে আমাদের এই যোগা ইনস্টিটিউটের সুনাম অনেক বাড়বে দেখে নিও তুমি। তবে ওর সাথে কোন রকম শারীরিক সম্পর্ক করার কথা মনেও এনো না। ও তেমন ছেলে নয়”।
বীথিকা বলল, “হ্যা ম্যাম, আমারও তেমনটাই মনে হয়েছে। আমি তো তার ঠিক পাশের চেয়ারেই বসেছিলাম। উনি কিন্তু একবারও আমার শরীরের দিকে নজর দেন নি। অন্য সব পুরুষই তো আমাকে দেখে ছোঁকছোঁক করে। কে কোন অছিলায় আমার হাতটা ধরবে, এ ধান্দাতেই থাকে। কিন্তু রতীশবাবুর মধ্যে তেমন কিছুই আমি দেখতে পাইনি। আর তাদের স্বামী স্ত্রীর জুটিটাও খুব সুন্দর মানিয়েছে। মনে হয় একেবারে মেড ফর ইচ আদার”।
মহিমা বলল, “হ্যা ঠিক বলেছ তুমি বীথি। তবে ও একটা উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় এসেছিল। ও একটা যোগা সেন্টার খুলতেই এখানে এসেছিল। কিন্তু এক ঠগের পাল্লায় পড়ে দু’লাখ টাকা খুইয়ে বসেছে। ছেলেটা খুব সহজ সরল। শহুরে লোকদের মতলব ঠিক বুঝতে পারেনি। আর টাকা পয়সা খুইয়ে, যোগা সেন্টার খুলতে পারছে না বলেই, সে আমার এখানে কাজে ঢুকছে। আর ওর মত একজন এক্সপার্টকে পেয়ে আমি একটু অন্যভাবে চিন্তা ভাবনা করছি। তবে আমাদের এসকর্ট ব্যবসার কথা জানতে পারলেই ও কিন্তু এখানে কাজ করা ছেড়ে দেবে। তাই সবদিক সামলে চলতে হবে আমাদের। ও যেন ঘূণাক্ষরেও টের না পায় আমাদের আসল ইনকামের কাজের ব্যাপারে। ও শুধুই আমাদের ইনস্টিটিউটের কাজ করবে। আর তুমি বরুন আর সুজয়কেও ভাল করে বুঝিয়ে দিও। বাইরের ডিউটি, বাইরের ক্লায়েন্ট নিয়ে রতীশের উপস্থিতিতে কেউ যেন নিজেদের মধ্যেও কথাবার্তা না বলে”।
বীথিকা বলল, “ঠিক আছে, ম্যাম। আমি সবাইকে সেটা বুঝিয়ে দেব”।
মহিমা চেয়ারে হেলান দিয়ে আরাম করে বসে বলল, “বেশ। আচ্ছা এবার তোমার কথাটা বল তো শুনি। কী ব্যাপার”?
বীথিকা মনে মনে একটু ভেবে বলল, “ম্যাম, আমার এক বান্ধবী খুব বিপদে পড়েছে। প্রায় গত তিন মাস ধরে আমার সাথেই আছে। অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও কোন কাজ যোগার করতে পারছে না। এখন নিরুপায় হয়েই আমাদের কাজে নামতে চাইছে। আপনি যদি ওকে কাজে নিতেন, তাহলে বেচারী খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারত”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “কি কাজের কথা বলছ? সে কি আমাদের ইনস্টিটিউটে ট্রেনার হিসেবে জয়েন করতে চায়? তার যদি যোগা এক্সারসাইজ জানা থাকে তাহলে নিতে পারি। কারন কবিতা মা হবার পর আর আমাদের সাথে কাজ করবে বলে মনে হয় না। তাই একজন ফিমেল ট্রেনার আমাদের দরকার। ও কি সেটা করতে পারবে”?
বীথিকা জবাব দিল, “না ম্যাম। সেটা ও পারবে না। ও কখনই কোন যোগা এক্সারসাইজ করেনি। আর পড়াশোনাও খুব বেশী করেনি। ক্লাস ইলেভেন পাশ করেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিল। বাড়ির অবস্থা ভাল ছিল না, তাই। আর যোগা ট্রেনারের কাজও করতে পারবে না। ও এসকর্টের কাজই করতে চায়”।
মহিমা শুনে বলল, “ওহ, আচ্ছা ঠিক আছে। মেয়েটার সম্বন্ধে যা যা জানো, তা আমাকে খুলে বল। ওর পরিবার, দেখতে শুনতে কেমন, এসব বল শুনি”।
বীথিকা বলল, “ম্যাম, ওর নাম নবনীতা দেব। খুবই গরীব কায়স্থ ঘরের মেয়ে। কিন্তু দেখতে শুনতে খুবই ভাল। বয়স পঁচিশ। গায়ের রঙ মোটামুটি ফর্সাই। মাঝারি হাইট। পাঁচ ফুট চার। ফিগার খুবই ভাল। চেহারায় জৌলুস আছে। স্ট্যাটিস্টিক্স চৌত্রিশ আটাশ আটত্রিশ। কাপ সাইজ সি। এসকর্ট হিসেবে ডিমাণ্ড খারাপ হবে না মনে হয়”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “ম্যারেড না আনম্যারেড? পরিবারে কে কে আছে”?
বীথিকা বলল, “বছর সাতেক আগে যখন ওর বয়স আঠার, তখন সে তাদের পাড়ারই একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছিল। সে ছেলেটা ওকে বিয়ে করেনি। কিছুদিন ওকে ভোগ করে আসানসোলে গিয়ে ওকে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল। রোজ রাতে মেয়েটার জন্যে কাস্টমার ধরে আনত সে। আর ও রাজি না হলে ওর হাত পা মুখ বেঁধে দিয়ে ওকে রেপ করে চলে যেত লোকগুলো। বছর খানেক আগে সেখান থেকে কোনভাবে পালিয়ে কলকাতায় চলে এসেছিল। কিন্তু ওর বাবা আর দাদা ওকে বাড়িতে রাখে নি। মা আগেই মারা গিয়েছিল। তারপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিরে একটা কাজ জোটাবার চেষ্টা করে কাটিয়েছে। কাজ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকজন ওকে ভোগ করেও শেষ পর্যন্ত তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার সাথে যখন ওর দেখা হয় তখন ও রেল ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে রাত কাটাত। খোলা রাস্তার কলে স্নান করলেও বেশীর ভাগ দিনই তার খাওয়া জুটত না। তাতেও রেহাই পায় নি। প্রায় রোজ রাতেই অজানা অচেনা নানা পুরুষ ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে ওর শরীরটাকে ভোগ করত। কেউ কেউ অল্পস্বল্প পয়সাও দিত। তাতে যা পেত কিনে খেত। প্রায় মাস তিনেক আগে আমার ফ্ল্যাটের কাছাকাছি এক রাস্তায় ওর সাথে আমার দেখা হয়। ছোটবেলার বান্ধবীকে আমি আমার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাই সেদিন। তারপর ওর সব কথা শুনে ওকে আমার ফ্ল্যাটে থাকতে দিয়েছি। গত তিনমাসে ও যে কোনও রকম একটা কাজ জোটাবার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু করে উঠতে পারেনি। আর আমার সাথে থাকতে থাকতে ও আমার সোর্স অফ ইনকাম আর আমার কাজ সম্বন্ধে অনেক কিছু জেনে গিয়েছিল। আমি অবশ্য দু’মাস আগেই ওকে বলেছিলাম যে ও চাইলে আমার মত এসকর্ট হতে পারে। কিন্তু তখন ও আমার কথা মানতে চায়নি। আমিও ওকে জোর করিনি। কিন্তু এখন সবদিক দিয়ে হতাশ হয়ে ও এ কাজ করতে রাজি হয়েছে। তাই আমি আপনাকে এসব বলছি। আপনি ওকে একটু সুযোগ দিলে ও বেচারি অন্ততঃ খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবে”।
মহিমা বীথিকার মুখে সব শুনে বলল, “তুমি তো জানো বীথি। আমি এখন আর নিজের সিন্দুক ভরবার জন্যে কাউকে এ ব্যবসায় টেনে আনি না। পয়সার আমার অভাব নেই। তাই কাউকে জোর করে এ কাজে নামিয়ে আমি পয়সা কামাতে চাই না। কিন্তু তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে, মেয়েটা সবদিক দিয়েই হতাশ হয়ে পড়েছে। তাই এ ব্যবসায় নামতে চাইছে। কিন্তু তুমি তো এ ব্যবসার সব কিছুই জানো। তুমি কি ওকে সব বুঝিয়ে বলেছ”?
বীথিকা জবাব দিল, “হ্যা ম্যাম, আমি ওকে অনেক আগেই এসব বলেছি। আর সব কিছু শুনে বুঝেই ও এ কাজ করতে রাজি হয়েছে”।
মহিমা বলল, “বেশ, তাহলে ওকে একদিন সাড়ে দশটা নাগাদ আমাদের ইনস্টিটিউটে আসতে বল। ওর সাথে কথা বলে দেখি। আর একটা ইন্টারভিউও তো নিতে হবে। নইলে আমি ওর রেট ফিক্স করব কি করে? আর ইন্টারভিউটা কেমন হবে সেটাও কি তুমি ওকে বলেছ”?
বীথিকা বলল, “হ্যা ম্যাম। আমি সব কিছুই ওকে বলেছি। এমনকি ওকে কি কি নিয়ম মেনে চলতে হবে, সেসব কথাও ওকে পরিস্কার ভাবে বলেছি। আর আপনার এখানে এসে ওকে কেমন ইন্টারভিউ দিতে হবে, সেসব কথাও বলেছি। ও সব কিছু শুনেই রাজি হয়েছে। এখন আপনি যদি ওকে কাজে নিতে চান, তাহলে আমি ওকে এখনই ডেকে আনতে পারি এখানে। আপনি ওর ইন্টারভিউ নিয়ে দেখুন”।
মহিমা একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “আজই ইন্টারভিউ নিতে বলছ? কিন্তু এখন তো বরুন সুজয় ওরা চলে গেছে। কার সাথে করবে ও”?
বীথিকা হেসে বলল, “ম্যাম, আপনি তো আছেন। আপনি নিজেই ওকে টেস্ট করে নেবেন। নইলে আমিও আছি। একটা লেসবিয়ান পারফর্মেনস দেখেও তো আপনি বুঝতে পারবেন”।
মহিমা একটু দ্বিধাগ্রস্ত ভাবে জবাব দিল, “না বীথি। আমার আর ওসব করতে ইচ্ছে করছে না আজ। তবে আজ আমি ফ্রিই ছিলাম। ও যদি তোমার সাথে পারফর্ম করে দেখায়, তাহলে ডাক তাকে। ইন্টারভিউটা তাহলে নিয়েই নিই”।
বীথিকা ‘থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম’ বলে নিজের মোবাইল থেকে একটা ফোন করল। খানিক বাদে ওদিকের সাড়া পেতেই বলল, “হ্যা নীতা শোন। আমি আমাদের ম্যামের সাথে তোর কাজের ব্যাপার নিয়ে আলাপ করেছি। ম্যামও রাজি আছেন। কিন্তু তোকে তো আগেই বলেছি, তোকে ম্যামের কাছে এসে ইন্টারভিউ দেবার সাথে সাথে তার সামনে একজনের সাথে একটা পারফর্মেনস করে দেখাতে হবে। ম্যাম এ বেলাটা ফ্রি আছেন। তুই কি আসতে পারবি? ...... হ্যা আমাদের ইনস্টিটিউটে চলে আয় তুই ...... না না, এখানে এখন শুধু আমি আর ম্যাম ছাড়া আর কেউ নেই। তাই তোকে আমার সাথেই একটা পারফর্মেনস করে দেখাতে হবে ..... হ্যারে ম্যামের সামনে .... তুই বুঝতে পাচ্ছিস না। তোর ন্যাকেড বডিটা না দেখলে, সেক্স অ্যাক্টে তুই কাস্টমারকে খুশী করতে পারবি কি না, এসব না বিচার করে ম্যাম তোর রেট ফিক্স করবেন কি করে? .... আচ্ছা ঠিক আছে, তুই তাহলে এখনই বেরিয়ে আয়। একটা অটো নিয়ে চলে আয়। আমি নিচের রাস্তায় তোর জন্য অপেক্ষা করছি তাহলে ... অ্যা, কি বললি? .... না না, চুড়িদার পড়ে এলেই হবে ...... তোকে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে না। আমি তো বলছি তোকে, আমি নিচের রাস্তাতেই থাকব। তুই দেরী না করে তাড়াতাড়ি চলে আয় ... ঠিক আছে? ..... ওকে। রাখছি তাহলে” বলে ফোন কেটে দিয়ে বলল, “ম্যাম ও আসছে। হয়ত মিনিট পনেরোর ভেতরই চলে আসবে”।
মহিমা বলল, “তাহলে এক কাজ করো। এদিকে সব কিছু তালাচাবি মেরে দাও। তারপর চলো, আমরা রেস্ট রুমে গিয়ে বসি”।
ইনস্টিটিউটের সব দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে সামনের আর পেছনের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে মহিমার সাথে বীথিকা নিচের তলার গেস্টরুমে এসে হাজির হল। সেখানে মহিমার হাতের ভারী ব্যাগটা টেবিলে রাখতে রাখতে বীথিকা বলল, “ম্যাম, আমি একটু নিচে যাচ্ছি। ওকে রিসিভ করে নিয়ে আসছি”।
মহিমা একটা চেয়ারে বসে বলল, “হু, দেখ। খুব বেশী দেরী না করে ফেলে আবার”।
মিনিট দশেক বাদেই বীথিকা তারই মত বয়সী একটা মেয়েকে সঙ্গে করে মহিমার রেস্টরুমে এসে হাজির হল। মহিমা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বুঝল যে বীথিকা যেমন বর্ণনা দিয়েছিল ঠিক তেমনই একটি মেয়ে। চেহারায় বেশ জৌলুস থাকলেও একটু যেন শীর্ণ রোগা চেহারার মেয়েটা। বীথিকা রুমের দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে মহিমার সাথে পরিচয় করে দিয়ে বলল, “ম্যাম, এ-ই হচ্ছে আমার বান্ধবী নবনীতা। এর কথাই এতক্ষণ আপনাকে বলছিলাম”।
মহিমা মেয়েটার আপাদমস্তক দেখতে দেখতে বলল, “হু ঠিক আছে। বসো তোমরা। তবে আমার মনে হয় ও আসলে হয়ত আরও একটু বেশী সুন্দরী হবে। অনেকদিন ধরেই বুঝি নিজের শরীরটার ওপর খুব অত্যাচার করেছ তুমি, তাই না”? প্রশ্নটা নবনীতার দিকে তাকিয়েই করল।
বীথিকার পাশাপাশি বিছানায় বসে নবনীতা ম্লান মুখে জবাব দিল, “ম্যাম, বীথি তো আমার সব কথাই শুনেছে। ও আপনাকে কতটুকু বলেছে তা জানিনা। কিন্তু গত সাতটা বছর ধরে আমার এ শরীরটার ওপর অনেক অত্যাচার হয়েছে। আর গত একটা বছর তো ভাল করে স্নানও করতে পারিনি। ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে থাকতাম। খাওয়া জুটত না। তবুও তিন মাস আগে আমার চেহারার যা অবস্থা ছিল, এখন তো তার চেয়ে অনেক ভাল। গত মাস তিনেক ধরে বীথিকার দয়ায় ওর ঘরে আছি বলেই চেহারা আগের থেকে কিছুটা ভাল হয়েছে”।
বীথিকা এমন সময় বলল, “হ্যা ম্যাম। তিন মাস আগে আমার সাথে যেদিন ওর দেখা হয়েছিল তখন ওর চেহারা এত খারাপ ছিল যে আমি প্রায় চিনতেই পারছিলাম না”।
মহিমা নবনীতাকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কি বিবাহিতা নবনীতা”?
নবনীতা জবাব দিল, “না ম্যাম”।
মহিমা এবার জিজ্ঞেস করল, “বীথি বলেছে, তুমি সাত বছর আগে তোমাদের পাড়ার একটা ছেলের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলে। সে ছেলেটা তোমায় বিয়ে করেনি”?
নবনীতা মাথা নিচু করে কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে জবাব দিল, “না ম্যাম। তার সাথেও আমার কখনও বিয়ে হয়নি। আর আমাকে বিয়ে করার মতলব তার কখনই ছিল না। সে শুধু আমার শরীরটাকেই ভোগ করতে চেয়েছিল। প্রথম মাস ছয়েক সে তাই করেছে। আর যখন তার শরীরের ক্ষুধা মিটে গিয়েছিল, তখন রোজ রাতে আমাকে এক একজন পুরুষের হাতে বেঁচে দিয়ে পয়সা কামাতো”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “তুমি তাকে ভালবেসেছিলে? তাকে বিয়ে করে তার সাথেই থাকবে বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলে তো”?
নবনীতা এবার নিজের মুখটা তুলে একবার বীথিকার দিকে দেখে জবাব দিল, “আমাদের বাড়ির এবং পাড়ার সকলে সেটাই জানে ম্যাম”।
মহিমা এবার জিজ্ঞেস করল, “সে আবার কখনও তোমার জীবনে ফিরে আসবে বলে মনে হয় তোমার”?
নবনীতা জবাব দিল, “মনে হয়না, সে আর এমন কিছু করবে। নইলে আমি তার হাত থেকে প্রায় বছর খানেক আগে পালিয়ে আসবার পর তো কলকাতাতেই আছি। তার সাথে তো আমার দেখাই হয়নি”।
নবনীতার মুখটাকে ভাল করে দেখতে দেখতে মহিমা জিজ্ঞেস করল, “আমার এখানে কাজে যোগ দিলে সে এসে আবার যদি কোন ঝামেলা পাকাবার চেষ্টা করে, তখন তুমি নিজে সেটা সামলাতে পারবে”?
নবনীতা বলল, “তেমন কিছু সত্যি হলে, কী করে সামলাব সেটা জানিনা ম্যাম। আত্মহত্যা করবার মত সাহস আমার নেই। তবে আপনাকে কোনও ঝামেলায় ফেলব না। প্রয়োজন হলে আমি আবার তার সাথে চলে যাব। নতুন করে তো আর কিছু হারাবার নেই আমার”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “আর তোমার বাড়ির লোকজনেরা? তারাও কেউ কোন ঝামেলা করবে না তো”?
নবনীতা নিজের চোখের কোল মুছে জবাব দিল, “তাদের কাছে আমি সাত বছর আগেই মরে গিয়েছি ম্যাম। তাই তারা কেউ আর আমার খোঁজ করবে না। করলে গত একটা বছর অন্ততঃ আমার ওপর এত ঝড় ঝাপটা বইত না। এ ব্যাপারে আমি একেবারেই নিশ্চিত”।
মহিমা এবার কয়েক সেকেণ্ড চুপ করে থেকে পরের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল, “দ্যাখ নবনীতা, বীথি তো আমার কাছে ছ’বছর ধরে কাজ করছে। তাই ও আমার সবরকম কাজের সাথেই যুক্ত। আমিও ওকে সবচেয়ে বেশী বিশ্বাস করি। কিন্তু তুমি হয়তো ওর মুখে শুনেছ যে ও আমার এখানে দু’ধরণের কাজ করে। ও আমার এই ইনস্টিটিউটের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট। এখানকার সমস্ত কাজই বলতে গেলে ও দেখাশুনো করে। কিন্তু এ কাজের বিনিময়ে ও যা মাস মাইনে পায়, তাতে ওর সংসারের খরচ মেটাতে পারত না। তাই নিজের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলী দিয়ে ও আমার অন্য একটা ব্যবসাতেও যোগ দিয়েছে। ওর সংসারের প্রয়োজনটা বুঝতে পেরেই আমিও ওর কথায় রাজী হয়েই ওকে আমার অন্য ব্যবসায় লাগিয়েছি। ও এখন আমার ওই অন্য কাজটা থেকেই ওর সংসার চালাবার যাবতীয় খরচ মেটাতে পারছে। তোমাকে তো আমার এ ইনস্টিটিউটে রাখতে পারছি না। তোমার যদি যোগা ট্রেনিং নেওয়া থাকত, তবুও হয়তো তোমাকে ঘসে মেজে আমি কিছুটা তৈরী করে নিতে পারতাম। কিন্তু সেটা তো সম্ভব হচ্ছে না। তাই তোমাকে আমার অন্য ব্যবসাতেই কাজে লাগানো ছাড়া আর তো কোনও উপায় নেই। তা বীথি কি তোমাকে বলেছে সে কাজটা কোন ধরণের”?
নবনীতা শান্ত স্বরেই ছোট্ট করে জবাব দিল, “হ্যাঁ ম্যাম, বলেছে”।
মহিমা সাথে সাথেই আবার জিজ্ঞেস করল, “তোমার কি মনে হয়? তুমি নিজেও অমন কাজ করতে পারবে বলে ভাবো”?
নবনীতা এবার মাথা নিচু করে আগের মতই শান্ত স্বরে বলল, “পারতে তো আমাকে হবেই ম্যাম”।
মহিমা আবারও বলল, “ভাল করে ভেবে দেখ নবনীতা। আমি চাই না শুধু করতে হবে বলেই তুমি এ কাজ শুরু কর। তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ যে সে কাজটা সমাজের চোখে আর আইনের চোখে একটা অপরাধ। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে নিজের শরীরের রক্ত জল করে যেটুকুই উপার্জন তুমি করবে, তা কিন্তু সমাজের দশজনের কাছে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে না। আর জানো তো? একবার এ পথে নেমে পড়লে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আর সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার সুযোগ কোনদিনও পাবে না। চিরটা কাল কিন্তু তোমাকে অন্ধকার জগতের বাসিন্দা হয়েই কাটাতে হবে। পারবে? তোমার মনে কোন গ্লানি বা অপরাধবোধ জেগে উঠবে না তো? অবশ্য আমি এ লাইনের অন্যান্য প্রোভাইডারদের মত নই। তুমি যদি কোনদিন আমার কাজ ছেড়ে দিতে চাও সেদিন আমিও তোমায় খুশী মনেই ছেড়ে দেব। কিন্তু একবার তোমার শরীরে এই তকমাটা লেগে গেলে তুমি কিন্তু আর কখনোই ভদ্র সভ্য সমাজে ফিরে যেতে পারবে না। তাই বলছি, আরেকবার ভেবে দেখ। আমি তোমাকে ভাববার জন্যে সময় দিতে রাজী আছি”।
রচনা আর রতীশ লিফটে চড়ে নেমে যেতেই মহিমা আবার নিজের চেম্বারে ফিরে এল। আর প্রায় সাথে সাথেই বাইরে থেকে বীথিকার গলা পাওয়া গেল, “ম্যাম, আমি আসব”?
মহিমা অনুমতি দিতেই বীথিকা ঘরে ঢুকল। মহিমা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বীথিকাকে চেয়ারে বসার ঈশারা করে জিজ্ঞেস করল, “রতীশকে দেখে কেমন লাগল বীথি”?
বীথিকা চেয়ারে বসে খুব খুশী হয়ে বলল, “ম্যাম, আমার তো দারুণ লেগেছে। কী দারুণ দেখতে! এমন সুন্দর দেহের গঠন খুব কম পুরুষেরই হয়ে থাকে। আর তার স্ত্রীও তো খুব সুন্দরী। এরা যদি এসকর্ট হিসেবে কাজ করে তবে এদের দু’জনকে পেতে সবাই কাড়াকাড়ি শুরু করে দেবে। আমাদের মহিলা ক্লায়েন্টরা তো মিঃ ভট্টাচারিয়াকে পেলে আমরা যা চাইব তা-ই দিতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। সত্যি বলছি ম্যাম, আমার তো রতীশবাবুর দিক থেকে চোখ সরাতেই ইচ্ছে করছিল না”।
মহিমা মৃদু হেসে বলল, “আমি মনে মনে আশা করেছিলাম, তুমি এমনই কিছু একটা বলবে। তোমার কাছে তো আর আমার কিছু গোপন নেই। জানো বীথি? গত সপ্তাহে ও যখন ইন্টারভিউ দিতে এসেছিল, তখন ওর সুন্দর সুগঠিত শরীরটাকে আমি দেখেছি। তোমাকে বলতে লজ্জা নেই, ওকে দেখে অনেকদিন বাদে আমার শরীরটাও গরম হয়ে উঠেছিল। কিন্তু খানিকক্ষণ বাদেই আমার মনের ভেতরের সে ইচ্ছেটা কেন জানিনা মরে গিয়েছিল। আর তার বদলে ওর সহজ সাবলীল আর ভদ্র ব্যবহার দেখে ওকে আমার ছোট ভাইয়ের মত ভালবাসতে ইচ্ছে হয়েছিল। তখনই বুঝেছিলাম, ও আর দশটা ছেলের থেকে আলাদা। আমি ছোটবেলা থেকে আজ অব্দি যত পুরুষের মুখোমুখি হয়েছি, তাদের সকলের চোখেই আমার শরীরের ওপর লোভের চাউনি দেখেছি। কিন্তু আমাকে দেখে রতীশের চোখে মুখে বিন্দুমাত্র লালসার ছাপও দেখতে পাইনি আমি। তখনই ভেবেছিলাম একে এসকর্ট করা যাবে না। কিন্তু ওর যোগা স্কিল দেখে আমি সত্যি খুব অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। চল্লিশ পঞ্চাশ মিনিটের মধ্যে ও নানারকম প্রাণায়াম ছাড়াও প্রায় পঞ্চাশটার মত যোগাসন করে দেখিয়েছিল। আমি তখনই বুঝেছি ও একজন সত্যিকারের যোগা এক্সপার্ট। তাই আমার মনোভাব পাল্টে নিয়ে ওর সাথে দেবর ভাবীর সম্পর্ক পাতিয়ে নিয়েছি। তারপর একদিন ওদের ফ্ল্যাটে গিয়ে ওদের দু’জনের সাথে কথা বলে আমি আরও অবাক হয়েছি। ওকে পেলে আমাদের এই যোগা ইনস্টিটিউটের সুনাম অনেক বাড়বে দেখে নিও তুমি। তবে ওর সাথে কোন রকম শারীরিক সম্পর্ক করার কথা মনেও এনো না। ও তেমন ছেলে নয়”।
বীথিকা বলল, “হ্যা ম্যাম, আমারও তেমনটাই মনে হয়েছে। আমি তো তার ঠিক পাশের চেয়ারেই বসেছিলাম। উনি কিন্তু একবারও আমার শরীরের দিকে নজর দেন নি। অন্য সব পুরুষই তো আমাকে দেখে ছোঁকছোঁক করে। কে কোন অছিলায় আমার হাতটা ধরবে, এ ধান্দাতেই থাকে। কিন্তু রতীশবাবুর মধ্যে তেমন কিছুই আমি দেখতে পাইনি। আর তাদের স্বামী স্ত্রীর জুটিটাও খুব সুন্দর মানিয়েছে। মনে হয় একেবারে মেড ফর ইচ আদার”।
মহিমা বলল, “হ্যা ঠিক বলেছ তুমি বীথি। তবে ও একটা উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় এসেছিল। ও একটা যোগা সেন্টার খুলতেই এখানে এসেছিল। কিন্তু এক ঠগের পাল্লায় পড়ে দু’লাখ টাকা খুইয়ে বসেছে। ছেলেটা খুব সহজ সরল। শহুরে লোকদের মতলব ঠিক বুঝতে পারেনি। আর টাকা পয়সা খুইয়ে, যোগা সেন্টার খুলতে পারছে না বলেই, সে আমার এখানে কাজে ঢুকছে। আর ওর মত একজন এক্সপার্টকে পেয়ে আমি একটু অন্যভাবে চিন্তা ভাবনা করছি। তবে আমাদের এসকর্ট ব্যবসার কথা জানতে পারলেই ও কিন্তু এখানে কাজ করা ছেড়ে দেবে। তাই সবদিক সামলে চলতে হবে আমাদের। ও যেন ঘূণাক্ষরেও টের না পায় আমাদের আসল ইনকামের কাজের ব্যাপারে। ও শুধুই আমাদের ইনস্টিটিউটের কাজ করবে। আর তুমি বরুন আর সুজয়কেও ভাল করে বুঝিয়ে দিও। বাইরের ডিউটি, বাইরের ক্লায়েন্ট নিয়ে রতীশের উপস্থিতিতে কেউ যেন নিজেদের মধ্যেও কথাবার্তা না বলে”।
বীথিকা বলল, “ঠিক আছে, ম্যাম। আমি সবাইকে সেটা বুঝিয়ে দেব”।
মহিমা চেয়ারে হেলান দিয়ে আরাম করে বসে বলল, “বেশ। আচ্ছা এবার তোমার কথাটা বল তো শুনি। কী ব্যাপার”?
বীথিকা মনে মনে একটু ভেবে বলল, “ম্যাম, আমার এক বান্ধবী খুব বিপদে পড়েছে। প্রায় গত তিন মাস ধরে আমার সাথেই আছে। অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও কোন কাজ যোগার করতে পারছে না। এখন নিরুপায় হয়েই আমাদের কাজে নামতে চাইছে। আপনি যদি ওকে কাজে নিতেন, তাহলে বেচারী খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারত”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “কি কাজের কথা বলছ? সে কি আমাদের ইনস্টিটিউটে ট্রেনার হিসেবে জয়েন করতে চায়? তার যদি যোগা এক্সারসাইজ জানা থাকে তাহলে নিতে পারি। কারন কবিতা মা হবার পর আর আমাদের সাথে কাজ করবে বলে মনে হয় না। তাই একজন ফিমেল ট্রেনার আমাদের দরকার। ও কি সেটা করতে পারবে”?
বীথিকা জবাব দিল, “না ম্যাম। সেটা ও পারবে না। ও কখনই কোন যোগা এক্সারসাইজ করেনি। আর পড়াশোনাও খুব বেশী করেনি। ক্লাস ইলেভেন পাশ করেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিল। বাড়ির অবস্থা ভাল ছিল না, তাই। আর যোগা ট্রেনারের কাজও করতে পারবে না। ও এসকর্টের কাজই করতে চায়”।
মহিমা শুনে বলল, “ওহ, আচ্ছা ঠিক আছে। মেয়েটার সম্বন্ধে যা যা জানো, তা আমাকে খুলে বল। ওর পরিবার, দেখতে শুনতে কেমন, এসব বল শুনি”।
বীথিকা বলল, “ম্যাম, ওর নাম নবনীতা দেব। খুবই গরীব কায়স্থ ঘরের মেয়ে। কিন্তু দেখতে শুনতে খুবই ভাল। বয়স পঁচিশ। গায়ের রঙ মোটামুটি ফর্সাই। মাঝারি হাইট। পাঁচ ফুট চার। ফিগার খুবই ভাল। চেহারায় জৌলুস আছে। স্ট্যাটিস্টিক্স চৌত্রিশ আটাশ আটত্রিশ। কাপ সাইজ সি। এসকর্ট হিসেবে ডিমাণ্ড খারাপ হবে না মনে হয়”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “ম্যারেড না আনম্যারেড? পরিবারে কে কে আছে”?
বীথিকা বলল, “বছর সাতেক আগে যখন ওর বয়স আঠার, তখন সে তাদের পাড়ারই একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছিল। সে ছেলেটা ওকে বিয়ে করেনি। কিছুদিন ওকে ভোগ করে আসানসোলে গিয়ে ওকে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল। রোজ রাতে মেয়েটার জন্যে কাস্টমার ধরে আনত সে। আর ও রাজি না হলে ওর হাত পা মুখ বেঁধে দিয়ে ওকে রেপ করে চলে যেত লোকগুলো। বছর খানেক আগে সেখান থেকে কোনভাবে পালিয়ে কলকাতায় চলে এসেছিল। কিন্তু ওর বাবা আর দাদা ওকে বাড়িতে রাখে নি। মা আগেই মারা গিয়েছিল। তারপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিরে একটা কাজ জোটাবার চেষ্টা করে কাটিয়েছে। কাজ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকজন ওকে ভোগ করেও শেষ পর্যন্ত তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার সাথে যখন ওর দেখা হয় তখন ও রেল ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে রাত কাটাত। খোলা রাস্তার কলে স্নান করলেও বেশীর ভাগ দিনই তার খাওয়া জুটত না। তাতেও রেহাই পায় নি। প্রায় রোজ রাতেই অজানা অচেনা নানা পুরুষ ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে ওর শরীরটাকে ভোগ করত। কেউ কেউ অল্পস্বল্প পয়সাও দিত। তাতে যা পেত কিনে খেত। প্রায় মাস তিনেক আগে আমার ফ্ল্যাটের কাছাকাছি এক রাস্তায় ওর সাথে আমার দেখা হয়। ছোটবেলার বান্ধবীকে আমি আমার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাই সেদিন। তারপর ওর সব কথা শুনে ওকে আমার ফ্ল্যাটে থাকতে দিয়েছি। গত তিনমাসে ও যে কোনও রকম একটা কাজ জোটাবার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু করে উঠতে পারেনি। আর আমার সাথে থাকতে থাকতে ও আমার সোর্স অফ ইনকাম আর আমার কাজ সম্বন্ধে অনেক কিছু জেনে গিয়েছিল। আমি অবশ্য দু’মাস আগেই ওকে বলেছিলাম যে ও চাইলে আমার মত এসকর্ট হতে পারে। কিন্তু তখন ও আমার কথা মানতে চায়নি। আমিও ওকে জোর করিনি। কিন্তু এখন সবদিক দিয়ে হতাশ হয়ে ও এ কাজ করতে রাজি হয়েছে। তাই আমি আপনাকে এসব বলছি। আপনি ওকে একটু সুযোগ দিলে ও বেচারি অন্ততঃ খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবে”।
মহিমা বীথিকার মুখে সব শুনে বলল, “তুমি তো জানো বীথি। আমি এখন আর নিজের সিন্দুক ভরবার জন্যে কাউকে এ ব্যবসায় টেনে আনি না। পয়সার আমার অভাব নেই। তাই কাউকে জোর করে এ কাজে নামিয়ে আমি পয়সা কামাতে চাই না। কিন্তু তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে, মেয়েটা সবদিক দিয়েই হতাশ হয়ে পড়েছে। তাই এ ব্যবসায় নামতে চাইছে। কিন্তু তুমি তো এ ব্যবসার সব কিছুই জানো। তুমি কি ওকে সব বুঝিয়ে বলেছ”?
বীথিকা জবাব দিল, “হ্যা ম্যাম, আমি ওকে অনেক আগেই এসব বলেছি। আর সব কিছু শুনে বুঝেই ও এ কাজ করতে রাজি হয়েছে”।
মহিমা বলল, “বেশ, তাহলে ওকে একদিন সাড়ে দশটা নাগাদ আমাদের ইনস্টিটিউটে আসতে বল। ওর সাথে কথা বলে দেখি। আর একটা ইন্টারভিউও তো নিতে হবে। নইলে আমি ওর রেট ফিক্স করব কি করে? আর ইন্টারভিউটা কেমন হবে সেটাও কি তুমি ওকে বলেছ”?
বীথিকা বলল, “হ্যা ম্যাম। আমি সব কিছুই ওকে বলেছি। এমনকি ওকে কি কি নিয়ম মেনে চলতে হবে, সেসব কথাও ওকে পরিস্কার ভাবে বলেছি। আর আপনার এখানে এসে ওকে কেমন ইন্টারভিউ দিতে হবে, সেসব কথাও বলেছি। ও সব কিছু শুনেই রাজি হয়েছে। এখন আপনি যদি ওকে কাজে নিতে চান, তাহলে আমি ওকে এখনই ডেকে আনতে পারি এখানে। আপনি ওর ইন্টারভিউ নিয়ে দেখুন”।
মহিমা একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “আজই ইন্টারভিউ নিতে বলছ? কিন্তু এখন তো বরুন সুজয় ওরা চলে গেছে। কার সাথে করবে ও”?
বীথিকা হেসে বলল, “ম্যাম, আপনি তো আছেন। আপনি নিজেই ওকে টেস্ট করে নেবেন। নইলে আমিও আছি। একটা লেসবিয়ান পারফর্মেনস দেখেও তো আপনি বুঝতে পারবেন”।
মহিমা একটু দ্বিধাগ্রস্ত ভাবে জবাব দিল, “না বীথি। আমার আর ওসব করতে ইচ্ছে করছে না আজ। তবে আজ আমি ফ্রিই ছিলাম। ও যদি তোমার সাথে পারফর্ম করে দেখায়, তাহলে ডাক তাকে। ইন্টারভিউটা তাহলে নিয়েই নিই”।
বীথিকা ‘থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম’ বলে নিজের মোবাইল থেকে একটা ফোন করল। খানিক বাদে ওদিকের সাড়া পেতেই বলল, “হ্যা নীতা শোন। আমি আমাদের ম্যামের সাথে তোর কাজের ব্যাপার নিয়ে আলাপ করেছি। ম্যামও রাজি আছেন। কিন্তু তোকে তো আগেই বলেছি, তোকে ম্যামের কাছে এসে ইন্টারভিউ দেবার সাথে সাথে তার সামনে একজনের সাথে একটা পারফর্মেনস করে দেখাতে হবে। ম্যাম এ বেলাটা ফ্রি আছেন। তুই কি আসতে পারবি? ...... হ্যা আমাদের ইনস্টিটিউটে চলে আয় তুই ...... না না, এখানে এখন শুধু আমি আর ম্যাম ছাড়া আর কেউ নেই। তাই তোকে আমার সাথেই একটা পারফর্মেনস করে দেখাতে হবে ..... হ্যারে ম্যামের সামনে .... তুই বুঝতে পাচ্ছিস না। তোর ন্যাকেড বডিটা না দেখলে, সেক্স অ্যাক্টে তুই কাস্টমারকে খুশী করতে পারবি কি না, এসব না বিচার করে ম্যাম তোর রেট ফিক্স করবেন কি করে? .... আচ্ছা ঠিক আছে, তুই তাহলে এখনই বেরিয়ে আয়। একটা অটো নিয়ে চলে আয়। আমি নিচের রাস্তায় তোর জন্য অপেক্ষা করছি তাহলে ... অ্যা, কি বললি? .... না না, চুড়িদার পড়ে এলেই হবে ...... তোকে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে না। আমি তো বলছি তোকে, আমি নিচের রাস্তাতেই থাকব। তুই দেরী না করে তাড়াতাড়ি চলে আয় ... ঠিক আছে? ..... ওকে। রাখছি তাহলে” বলে ফোন কেটে দিয়ে বলল, “ম্যাম ও আসছে। হয়ত মিনিট পনেরোর ভেতরই চলে আসবে”।
মহিমা বলল, “তাহলে এক কাজ করো। এদিকে সব কিছু তালাচাবি মেরে দাও। তারপর চলো, আমরা রেস্ট রুমে গিয়ে বসি”।
ইনস্টিটিউটের সব দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে সামনের আর পেছনের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে মহিমার সাথে বীথিকা নিচের তলার গেস্টরুমে এসে হাজির হল। সেখানে মহিমার হাতের ভারী ব্যাগটা টেবিলে রাখতে রাখতে বীথিকা বলল, “ম্যাম, আমি একটু নিচে যাচ্ছি। ওকে রিসিভ করে নিয়ে আসছি”।
মহিমা একটা চেয়ারে বসে বলল, “হু, দেখ। খুব বেশী দেরী না করে ফেলে আবার”।
মিনিট দশেক বাদেই বীথিকা তারই মত বয়সী একটা মেয়েকে সঙ্গে করে মহিমার রেস্টরুমে এসে হাজির হল। মহিমা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বুঝল যে বীথিকা যেমন বর্ণনা দিয়েছিল ঠিক তেমনই একটি মেয়ে। চেহারায় বেশ জৌলুস থাকলেও একটু যেন শীর্ণ রোগা চেহারার মেয়েটা। বীথিকা রুমের দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে মহিমার সাথে পরিচয় করে দিয়ে বলল, “ম্যাম, এ-ই হচ্ছে আমার বান্ধবী নবনীতা। এর কথাই এতক্ষণ আপনাকে বলছিলাম”।
মহিমা মেয়েটার আপাদমস্তক দেখতে দেখতে বলল, “হু ঠিক আছে। বসো তোমরা। তবে আমার মনে হয় ও আসলে হয়ত আরও একটু বেশী সুন্দরী হবে। অনেকদিন ধরেই বুঝি নিজের শরীরটার ওপর খুব অত্যাচার করেছ তুমি, তাই না”? প্রশ্নটা নবনীতার দিকে তাকিয়েই করল।
বীথিকার পাশাপাশি বিছানায় বসে নবনীতা ম্লান মুখে জবাব দিল, “ম্যাম, বীথি তো আমার সব কথাই শুনেছে। ও আপনাকে কতটুকু বলেছে তা জানিনা। কিন্তু গত সাতটা বছর ধরে আমার এ শরীরটার ওপর অনেক অত্যাচার হয়েছে। আর গত একটা বছর তো ভাল করে স্নানও করতে পারিনি। ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে থাকতাম। খাওয়া জুটত না। তবুও তিন মাস আগে আমার চেহারার যা অবস্থা ছিল, এখন তো তার চেয়ে অনেক ভাল। গত মাস তিনেক ধরে বীথিকার দয়ায় ওর ঘরে আছি বলেই চেহারা আগের থেকে কিছুটা ভাল হয়েছে”।
বীথিকা এমন সময় বলল, “হ্যা ম্যাম। তিন মাস আগে আমার সাথে যেদিন ওর দেখা হয়েছিল তখন ওর চেহারা এত খারাপ ছিল যে আমি প্রায় চিনতেই পারছিলাম না”।
মহিমা নবনীতাকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কি বিবাহিতা নবনীতা”?
নবনীতা জবাব দিল, “না ম্যাম”।
মহিমা এবার জিজ্ঞেস করল, “বীথি বলেছে, তুমি সাত বছর আগে তোমাদের পাড়ার একটা ছেলের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলে। সে ছেলেটা তোমায় বিয়ে করেনি”?
নবনীতা মাথা নিচু করে কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে জবাব দিল, “না ম্যাম। তার সাথেও আমার কখনও বিয়ে হয়নি। আর আমাকে বিয়ে করার মতলব তার কখনই ছিল না। সে শুধু আমার শরীরটাকেই ভোগ করতে চেয়েছিল। প্রথম মাস ছয়েক সে তাই করেছে। আর যখন তার শরীরের ক্ষুধা মিটে গিয়েছিল, তখন রোজ রাতে আমাকে এক একজন পুরুষের হাতে বেঁচে দিয়ে পয়সা কামাতো”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “তুমি তাকে ভালবেসেছিলে? তাকে বিয়ে করে তার সাথেই থাকবে বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলে তো”?
নবনীতা এবার নিজের মুখটা তুলে একবার বীথিকার দিকে দেখে জবাব দিল, “আমাদের বাড়ির এবং পাড়ার সকলে সেটাই জানে ম্যাম”।
মহিমা এবার জিজ্ঞেস করল, “সে আবার কখনও তোমার জীবনে ফিরে আসবে বলে মনে হয় তোমার”?
নবনীতা জবাব দিল, “মনে হয়না, সে আর এমন কিছু করবে। নইলে আমি তার হাত থেকে প্রায় বছর খানেক আগে পালিয়ে আসবার পর তো কলকাতাতেই আছি। তার সাথে তো আমার দেখাই হয়নি”।
নবনীতার মুখটাকে ভাল করে দেখতে দেখতে মহিমা জিজ্ঞেস করল, “আমার এখানে কাজে যোগ দিলে সে এসে আবার যদি কোন ঝামেলা পাকাবার চেষ্টা করে, তখন তুমি নিজে সেটা সামলাতে পারবে”?
নবনীতা বলল, “তেমন কিছু সত্যি হলে, কী করে সামলাব সেটা জানিনা ম্যাম। আত্মহত্যা করবার মত সাহস আমার নেই। তবে আপনাকে কোনও ঝামেলায় ফেলব না। প্রয়োজন হলে আমি আবার তার সাথে চলে যাব। নতুন করে তো আর কিছু হারাবার নেই আমার”।
মহিমা জিজ্ঞেস করল, “আর তোমার বাড়ির লোকজনেরা? তারাও কেউ কোন ঝামেলা করবে না তো”?
নবনীতা নিজের চোখের কোল মুছে জবাব দিল, “তাদের কাছে আমি সাত বছর আগেই মরে গিয়েছি ম্যাম। তাই তারা কেউ আর আমার খোঁজ করবে না। করলে গত একটা বছর অন্ততঃ আমার ওপর এত ঝড় ঝাপটা বইত না। এ ব্যাপারে আমি একেবারেই নিশ্চিত”।
মহিমা এবার কয়েক সেকেণ্ড চুপ করে থেকে পরের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল, “দ্যাখ নবনীতা, বীথি তো আমার কাছে ছ’বছর ধরে কাজ করছে। তাই ও আমার সবরকম কাজের সাথেই যুক্ত। আমিও ওকে সবচেয়ে বেশী বিশ্বাস করি। কিন্তু তুমি হয়তো ওর মুখে শুনেছ যে ও আমার এখানে দু’ধরণের কাজ করে। ও আমার এই ইনস্টিটিউটের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট। এখানকার সমস্ত কাজই বলতে গেলে ও দেখাশুনো করে। কিন্তু এ কাজের বিনিময়ে ও যা মাস মাইনে পায়, তাতে ওর সংসারের খরচ মেটাতে পারত না। তাই নিজের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলী দিয়ে ও আমার অন্য একটা ব্যবসাতেও যোগ দিয়েছে। ওর সংসারের প্রয়োজনটা বুঝতে পেরেই আমিও ওর কথায় রাজী হয়েই ওকে আমার অন্য ব্যবসায় লাগিয়েছি। ও এখন আমার ওই অন্য কাজটা থেকেই ওর সংসার চালাবার যাবতীয় খরচ মেটাতে পারছে। তোমাকে তো আমার এ ইনস্টিটিউটে রাখতে পারছি না। তোমার যদি যোগা ট্রেনিং নেওয়া থাকত, তবুও হয়তো তোমাকে ঘসে মেজে আমি কিছুটা তৈরী করে নিতে পারতাম। কিন্তু সেটা তো সম্ভব হচ্ছে না। তাই তোমাকে আমার অন্য ব্যবসাতেই কাজে লাগানো ছাড়া আর তো কোনও উপায় নেই। তা বীথি কি তোমাকে বলেছে সে কাজটা কোন ধরণের”?
নবনীতা শান্ত স্বরেই ছোট্ট করে জবাব দিল, “হ্যাঁ ম্যাম, বলেছে”।
মহিমা সাথে সাথেই আবার জিজ্ঞেস করল, “তোমার কি মনে হয়? তুমি নিজেও অমন কাজ করতে পারবে বলে ভাবো”?
নবনীতা এবার মাথা নিচু করে আগের মতই শান্ত স্বরে বলল, “পারতে তো আমাকে হবেই ম্যাম”।
মহিমা আবারও বলল, “ভাল করে ভেবে দেখ নবনীতা। আমি চাই না শুধু করতে হবে বলেই তুমি এ কাজ শুরু কর। তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ যে সে কাজটা সমাজের চোখে আর আইনের চোখে একটা অপরাধ। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে নিজের শরীরের রক্ত জল করে যেটুকুই উপার্জন তুমি করবে, তা কিন্তু সমাজের দশজনের কাছে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে না। আর জানো তো? একবার এ পথে নেমে পড়লে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আর সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার সুযোগ কোনদিনও পাবে না। চিরটা কাল কিন্তু তোমাকে অন্ধকার জগতের বাসিন্দা হয়েই কাটাতে হবে। পারবে? তোমার মনে কোন গ্লানি বা অপরাধবোধ জেগে উঠবে না তো? অবশ্য আমি এ লাইনের অন্যান্য প্রোভাইডারদের মত নই। তুমি যদি কোনদিন আমার কাজ ছেড়ে দিতে চাও সেদিন আমিও তোমায় খুশী মনেই ছেড়ে দেব। কিন্তু একবার তোমার শরীরে এই তকমাটা লেগে গেলে তুমি কিন্তু আর কখনোই ভদ্র সভ্য সমাজে ফিরে যেতে পারবে না। তাই বলছি, আরেকবার ভেবে দেখ। আমি তোমাকে ভাববার জন্যে সময় দিতে রাজী আছি”।
(To be continued ......)
______________________________