Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
#75
(Update No. 93)

অভি বলল, “না না, বৌ সেজে এসো না। বৌ সেজে এলে আমার মনে হবে অন্য কারো বৌকে চুদতে যাচ্ছি। তুমি বরং স্কার্ট আর টপ পড়ে এস। তবে টপটা যতটা লো নেক হয় ততই ভাল লাগবে। তোমার ক্লিভেজের কিছু অংশ যেন পোশাক পড়া অবস্থাতেই দেখা যায়। বুঝেছ”?

অনুপমা আবার মিষ্টি করে হেসে বলল, “ওকে স্যার, বুঝেছি। আর কিছু”?

অভি জবাব দিল, “আর কিছু করতে হবে না। তবে একটা কথা আগে থেকে জানতে পারলে একটু ভাল লাগত”।

অনুপমা জিজ্ঞেস করল, “বলুন স্যার, কী জানতে চান? এত সঙ্কোচ করছেন কেন? কয়েক ঘন্টা বাদেই তো আমাকে ন্যাংটো করে উল্টে পাল্টে চুদবেন। আর এখন মুখের কথা বলতেই লজ্জা পাচ্ছেন”?

অভি বলল, “ইশ তোমার কথা শুনে তো এখনই আমার বাড়া ঠাটিয়ে উঠছে ডার্লিং। কিন্তু জিজ্ঞেস করতে চাইছিলাম যে এনাল সেক্স করার সুযোগ দেবে তো”?

অনুপমা হেসে বলল, “নিশ্চয়ই দেব। আপনার যেভাবে যা খুশী তাই করতে পারবেন স্যার। তবে ঠিক আছে স্যার, তাহলে আমাদের এপয়েন্টমেন্টটা কনফার্ম হল। রাখছি তাহলে” বলে লাইন কেটে দিল।
 

অভি ফোন রেখেই শঙ্করকে জড়িয়ে ধরে বলল, “থ্যাঙ্ক ইউ গুরু। তুই আমার মনের আশাটা পূর্ণ করলি। এবার বাকিটা সিডিতে দেখিস। কেমন চোদা চুদি মাগিটাকে”।

শঙ্কর ডান হাতের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলল, “বেস্ট অফ লাক। হোটেল থেকে ফিরে এসে ফোন করে জানাস। আমি যাচ্ছি এখন”।
 

***************

সকাল আটটা নাগাদ ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে রচনা রতীশকে জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা সোনা, দিদিভাই, মা-বাবা, বড়কাকু, ছোটকাকু সকলেই তো তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছেন। আমিও তো আমার কথা তোমাকে বলেছি। তাহলে এখনও তুমি কী ভাবছ বল তো? তোমার কি মন সায় দিচ্ছে না”?

রতীশ মনে মনে ভাবতে ভাবতেই জবাব দিল, “তা নয় সোনা। মহিমা বৌদির কথাবার্তা ব্যবহার আমারও খুব ভাল লেগেছে। আর ইনস্টিটিউটটা ঘুরে ফিরে দেখেও আমার ভাল লেগেছে। কিন্তু টেলিফোনে ওই লোকটার সাথে কথা বলার সময় মহিমা বৌদি যা যা বলেছিলেন। ওই কথাগুলোই বারবার ঘুরে ফিরে মনে আসছে। কেন জানিনা বারবার মনে হচ্ছে, ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক নয়। তাই ভাবছিলুম, মন্তির সাথে এ ব্যাপারটা নিয়ে আরেকটু ডিসকাস করব”।

রচনা বলল, “কিন্তু পরশু দিন সকালের পর থেকে তো দিদিভাইয়ের নাম্বারটা এক নাগাড়ে আনরিচেবল আনরিচেবল শোনাচ্ছে। আমার মনটা ভাল লাগছে না গো। বারবার শুধু দিদিভাইয়ের জন্য চিন্তা হচ্ছে। অবশ্য দিদিভাই তো সে’কথা আগেই বলেছিলেন যে ওখানে নাকি মোবাইলের সিগন্যাল পাওয়া যায় না। তবে দিদিভাইয়ের তো কাল ফেরার কথা। তার আগে তো আর তার সাথে কথা বলতে পারছ না। কিন্তু তুমি তো মহিমা বৌদির কাছে দু’দিনের সময় চেয়ে নিয়েছিলে। দু’দিন তো পার হয়ে গেছে। আজ তো তাকে তোমার মতামতটা জানিয়ে দেওয়াই উচিৎ”।

রতীশ একটু চিন্তিত ভাবে বলল, “সেটাই তো ভাবছি। আজ মহিমা বৌদিকে আমার মতামতটা না জানালে উনি তো ভাববেন যে আমার কথার ওপর কোন ভরসা করা যায় না। সেটাও মন থেকে মানতে পারছি না। কিন্তু, মন্তির ব্যাপারটাও আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা জানো। মানছি ও যেখানে গিয়ে থাকছে, সেখানে হয়ত সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু ও তো আর সারাক্ষন একই জায়গায় বসে থাকবে না। কাজের জন্যও তো ওকে এদিক সেদিক ঘুরতে হবে। কোন জায়গা থেকেই কি একটা ফোন করতে পারত না”?

রচনাও রতীশের কথায় সায় দিয়ে বলল, “আমিও তো কাল রাত থেকে এ’কথাটাই ভাবছি সোনা। কাল সকালে দিদিভাই রওনা হবার আগে ফোন করেছিলেন। ওথানে গিয়ে পৌঁছোতে ঘন্টা দেড়েক দুয়েক লাগবে বলেছিলেন। তার মানে বেলা এগারোটা নাগাদ সেখানে পৌঁছে যাবার কথা। তারপর থেকে সারাটা দিনে আমি তিনবার তাকে ফোন করেছি। একবারও লাইন পাইনি। দিদিভাই তো কোন না কোন জায়গা থেকে একবার ফোন করে একটু খবর দিতে পারতেন, তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন। দিদিভাইয়ের কোয়ার্টারের ল্যাণ্ডলাইনেও ফোন করেছি আজ সকালে। লক্ষ্মীদি বলল, দিদিভাই তাকেও কোন ফোন করেন নি। আমার মনটা যে কেমন করছে, সে আমি তোমায় বলে বোঝাতে পারব না”।

রতীশ রচনার একটা হাত মুঠো করে ধরে বলল, “না রচু, দুশ্চিন্তা কোর না। মন্তি যেখানেই থাকুক না কেন, নিশ্চয়ই ভাল আছে। আমি তো শুধু মহিমা বৌদির ব্যাপারটা নিয়ে মন্তির সাথে কথা বলতে পারছিনা বলেই, মহিমা বৌদিকে ফোন করে কী বলব, সেটাই বুঝতে পাচ্ছি না। সেটা নিয়েই ভাবছি আমি। আমার মনে হয় এ বেলাটা দেখি। মন্তির সাথে কথা বলা যায় কি না। যদি কথা না-ই হয় তাহলে বিকেলের দিকে মহিমা বৌদিকে ফোন করে কিছু একটা বলে দিতে হবে”।
 

রচনা বলল, “ভেবে দেখ তুমি। কিন্তু আমার কি মনে হয় জানো সোনা। মহিমা বৌদি যখন বলেছেনই যে তোমার কোন ব্যাপারে যদি সন্দেহ হয়, আর সে সন্দেহ যদি সত্যি হয়, তাহলে তুমি যে কোন সময় তার কাজ ছেড়ে দিতে পারবে, তখন আমার মনে হয় না যে তার ইনস্টিটিউটে অমন কোন কারবার হয়ে থাকে। আর ইনস্টিটিউটের বাইরে যদি সে তেমন কিছু করেও থাকে, তাতে তোমার কি? তুমি তো শুধু তার ইনস্টিটিউটের কাজের সাথেই যুক্ত থাকবে। তবে হ্যা, তুমি এটা পরিস্কার ভাবে বৌদিকে আগে থেকেই বলে নিতে পার যে ইনস্টিটিউটের বাইরে গিয়ে তুমি কখনও কোন ডিউটি করবে না। আর তিনিও যেন তোমাকে এমন আদেশ কখনও না করেন”।
 

রতীশ ভাবতে ভাবতে বলল, “হ্যা এমনই কিছু একটা বলতে হবে। কিন্তু সোনা, আমি আরেকটা কথা ভাবছি। ধর, মহিমা বৌদির ওখানে যদি কাজ না করি, তাহলে কতদিন আর এভাবে ঘরে বসে থাকব! হাতের জমা পুঁজিটুকু ফুরিয়ে গেলে তখন কি করব”?
 

রচনা বলল, “সে জন্যেই তো বলছি। মহিমা বৌদি যখন তোমাকে এতটা ছাড় দিয়েছেন, তখন তোমার সেখানে কাজে যোগ দেওয়াই উচিৎ। পরে যে কোন সময় কোন অসুবিধে হলে তুমি চাইলেই তো তার চাকরী ছেড়ে দিতে পারবে। তাই না”?

রতীশ বলল, “দেখি। বিকেলের মধ্যে মন্তির সাথে কথা না হলে মহিমা বৌদিকে এমনই কিছু একটা বলতে হবে। আচ্ছা সোনা, বিমলজীকে কি এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করব”?

রচনা রতীশের একটা হাত চেপে ধরে জবাব দিল, “না সোনা, ওই লোকটাকে কিছু বলার দরকার নেই। হ্যা মানছি, সে-ই তোমাকে মহিমা বৌদির খবরটা দিয়েছে। নিজে সঙ্গে করে তোমাকে সেখানে নিয়ে গেছে। কিন্তু সোনা, একটা কথা ভেবে দেখ তো। ওই লোকটার এত কি দায় পড়েছে আমাদের জন্যে এত ভাবাভাবি করবার? আর তাছাড়া রবিশঙ্কর আমাদের সাথে যা কিছু করেছে, তার পেছনে এ লোকটা নিশ্চয়ই কোন না কোন ভাবে জড়িত আছেই। সে তুমি যা-ই বলনা কেন সোনা। আমাদের সর্বনাশের পেছনে সে একেবারেই নেই, একথা সে হাজার বার বললেও আমি মানতে পারব না। তাই ওই লোকটার সাথে তুমি আর যোগাযোগ করবার চেষ্টা কোরনা। তবে মহিমা বৌদির ওখানে তুমি যদি সত্যি সত্যি জয়েন কর, তাহলে তাকে শুধু একটা ধন্যবাদ জানিয়ে দিও। কিন্তু তার পরে ওই লোকটার সাথে তুমি কোনরকম যোগাযোগ রাখবে না। এটা কিন্তু আমি স্পষ্ট তোমাকে জানিয়ে দিচ্ছি। আর মহিমা বৌদির ওখানে কাজ না করলে তুমি অন্য কোথাও কাজের সন্ধান কর। আর কিছুই যদি না জোটে তাহলে আমরা বাড়িতেই ফিরে যাব। কিছুই যদি কপালে না জোটে তাহলে যে কোন একটা ব্যবসা খুলে তো বসতে পারবে। আর আমাদের পরিবারের সবাই তো আমাদের পাশে আছে। কিন্তু বিমল আগরওয়ালার সাথে আর কোন রকম ঘনিষ্ঠতা করবে না তুমি। বল সোনা, আমাকে তুমি কথা দাও। আমার এ কথাটা তুমি রাখবে”।

রতীশ রচনার এমন স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা শুনে মনে মনে একটু অবাক হলেও রচনার হাত ধরে বলল, “ঠিক আছে সোনা। তোমার অমতে কি আমি কিছু করতে পারি? আমি তোমায় কথা দিচ্ছি। বিমলজীর সাথে আর ঘনিষ্টতা বাড়াব না আমি। তুমি বিশ্বাস কর”।
 

তখন বেলা প্রায় সওয়া এগারটা। রতীশ ড্রইং রুমে বসে একটা যোগা চিকিৎসার বই পড়ছিল। রচনা কিচেনে রান্নায় ব্যস্ত। এমন সময়ে হঠাৎ তাদের কলিং বেল বেজে উঠতে রতীশ চমকে উঠল। মনে মনে ভেবে অবাক হল, কে আসতে পারে? সে সোফা থেকে উঠে দাঁড়াতেই রচনা ছুটে ড্রইং রুমে এসে চাপা গলায় জিজ্ঞেস করল, “কে এসেছে গো”?

রতীশ রচনাকে ফিসফিস করে বলল, “তুমি ভেতরের ঘরে যাও। আমি দেখছি। ভেব না। কিচ্ছু হবে না”।

রচনা আবার ভেতরের ঘরে ঢুকে ভেতরের দরজাটার পর্দা ভালো করে টেনে দিয়ে দরজার পাশেই কান খাড়া করে দাঁড়িয়ে রইল। একটু বাদেই সামনের দরজা খোলার শব্দ শোনা গেল। আর সেই সাথে সাথে রতীশের গলা শোনা গেল, “এ কী বৌদি আপনি”?
 

রচনা সে’কথা শুনে মনে মনে অবাক হয়ে ভাবল, কোন বৌদি এখানে আসতে পারে? এখানে তো তাদের ঘরের মালিক আর রবিশঙ্কর ছাড়া আর কেউ আসেনি কখনো। এ বৌদিটা আবার কে? কোত্থেকে এল? তবে কি রতীশের মহিমা বৌদিই এসেছেন!

তার ভাবনার মধ্যেই মিষ্টি একটা মেয়ের গলা শোনা গেল। বলছে, “সরি, রতীশ কোন খবর না দিয়ে এভাবে চলে এসে তোমাকে বুঝি বিব্রত করে ফেললাম আমি। কিন্তু কি করব বল? মাত্র দু’দিন আগেই যার সাথে আমি দেবর বৌদির সম্মন্ধ পাতালাম, সেই দেবরটি যদি দু’দিনেই বৌদিকে ভুলে যায়, তাহলে সে হতভাগী বৌদি আর কী করতে পারে বল? তাই তো নিজেই চলে এলাম তোমার বাড়িতে”।

রতীশের গলা শোনা গেল, “ছি ছি বৌদি, এভাবে বলে আমাকে লজ্জা দেবেন না প্লীজ। আসুন আসুন। ভেতরে আসুন। তারপর কথা বলা যাবে” বলেই রচনার উদ্দেশ্যে বলল, “এই রচু, শুনছ। দেখ কে এসেছে? ইশ আমি তো ভাবতেই পাচ্ছিনা। আপনি এভাবে আমার বাড়ি এসে পড়বেন”।

রচনা তখন বুঝে গেছে, এ নিশ্চয়ই মহিমা বৌদি। কিন্তু কিচেনে স্টোভের ওপর রান্না চাপানো আছে। সেটা এভাবে ফেলে চলে গেলে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই সে প্রায় ছুটে কিচেনে গিয়ে কড়াইতে খুন্তি দিয়ে নাড়তে নাড়তে গলা তুলে বলল, “একটু দাঁড়াও। আসছি। রান্নাটা নামিয়ে আসছি। নইলে ধরে যাবে”।

মহিমা ঘরে ঢুকে রতীশের হাত ধরে বলল, “রাগ করলে না তো ভাই? কিন্তু ইনস্টিটিউট থেকে বেরিয়েই কী যে মনে হল, বাড়ি না গিয়ে তোমার এখানে চলে এসেছি”।

রতীশ মহিমাকে একটা সোফায় বসাতে বসাতে বলল, “না না বৌদি, রাগ করব কেন। আপনি বসুন তো এখানে”।
 

মহিমা রতীশকে বাঁধা দিয়ে বলল, “এসেছি যখন তখন তো বসবই ভাই। কিন্তু তার আগে আমাকে যে একটু ভেতরে যেতে হবে। যেতে পারি ভাই”?
 

রতীশ মনে মনে ভাবল মহিমা বুঝি টয়লেটে যাবে। তাই সে বলল, “হ্যা হ্যা বৌদি, আসুন না”।

ভেতরের রুমে ঢুকেই মহিমা বলল, “তোমার বৌ কোথায় গো ভাই”?

রতীশ বলল, “ওই তো ওদিকে কিচেনে আছে বৌদি। রান্না করছে” বলেই কিচেনের দিকে মুখ করে বলল, “রচু কী হল এস। দেখ বৌদি এসেছেন”।

রচনা সাথে সাথে জবাব দিল, “এই তো আসছি গো। কড়াইটা নামিয়েই আসছি। এক মিনিট”।

মহিমা আর দাঁড়িয়ে না থেকে ডাইনিং রুমের ভেতর ঢুকে যেতেই রচনাকে দেখতে পেল পাশের কিচেনে। রচনা তখন স্টোভ নিভিয়ে দিয়ে কড়াইটাকে স্টোভের ওপর থেকে নামাচ্ছিল। অসম্ভব রূপসী একজন মহিলাকে কিচেনে ঢুকতে দেখেই সে বলে উঠল, “এ মা ছি ছি, সোনা, তুমি বৌদিকে এ’ঘরে নিয়ে এলে কেন? রান্নার ঝাঁঝে বৌদির কষ্ট হবে তো। ইস দেখেছ”?
 

মহিমা ততক্ষণে রচনার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। রচনা নিজের হাতটা একটু জলে ধুয়ে নিয়ে একটা টাওয়েলে মুছে নিয়ে ঝুঁকে মহিমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে যেতেই মহিমা তাকে ধরে ফেলে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, “এই না না। এ কি করছ তুমি? প্লীজ আমার পায়ে হাত দিও না ভাই” বলে রচনার কপালে চুমু খেল।
 

রচনা একটু অভিমানী গলায় বলল, “ইশ এভাবে কোন খবর না দিয়ে কেউ হুট করে চলে আসে”? বলে মহিমার মুখের দিকে চাইতেই তার অপরূপ রূপ মাধুরী দেখে মুখের কথা হারিয়ে ফেলল যেন।
 

মহিমার চেয়ে রচনা অনেকটাই খাটো। তবু রচনার ঘামে ভেজা মুখটার দিকে চোখ পড়তেই মহিমা যেন আর তার চোখ সরিয়ে নিতে পারছিল না। রচনার সুন্দর মুখটার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকবার পর মহিমা বলল, “একেই বুঝি বলে রিয়েল বাঙালী বিউটি”।

রচনা একটু লজ্জা পেয়ে কিছু একটা বলতে যেতেই মহিমা হাত তুলে তাকে বাঁধা দিয়ে বলল, “দাঁড়াও রচনা, এক মিনিট” বলে নিজের কাঁধের ব্যাগটা নামিয়ে তার ভেতর থেকে একটা বড় মিষ্টির প্যাকেট বের করে হাতে ধরে রেখে অন্য হাতে ব্যাগের ভেতর থেকে এক মুঠো টাকা বের করে রচনার মাথার চারদিকে ঘুরিয়ে তার মুখের সামনে ধরে বলল, “এটা নাও”।

রচনা প্রায় ভয় পাবার ভঙ্গীতে এক পা পেছনে গিয়ে বলল, “না না বৌদি। এ কি করছেন আপনি”?

মহিমা মিষ্টি করে হেসে বলল, “এমন কিছুই করছি না ভাই। শুধু একটু নিয়ম রক্ষা করছি। আমি তো পাঞ্জাবী। বাঙালী ঘরের বৌ হলেও বাঙালী রীতিনীতি প্রায় জানিই না। কিন্তু আমাদের পাঞ্জাবী রীতিতে ঘরে আসা নতুন বৌয়ের মুখ দেখে বড়রা সবাই এভাবে শগুন দিয়ে থাকে। আমি তো তোমার চেয়ে বড়। আর রতীশ আমার দেবর। তাই তুমি হলে আমার দেবরানী মানে জা। আর বাঙালী পরিবারে বড় জাকে তো ছোট জায়েরা দিদি বলে ডাকে। তাই আমি তো তোমার দিদিই হলাম। কিন্তু শগুনটা তো তোমায় নিতেই হবে ভাই। নইলে যে তোমার আমার সকলেরই অমঙ্গল হবে”।
 

রচনা সাথে সাথে বলল, “ইস না না বৌদি, অমন কথা বলবেন না প্লীজ। আচ্ছা ঠিক আছে। আমি নিচ্ছি। কিন্তু এতগুলো নয় শুধু একটা নোট দিন আমাকে”।

মহিমা তার বাঁ হাতের প্যাকেটটা কুকিং স্ল্যাবের ওপর রেখে দিয়ে রচনার হাত ধরে ডানহাতের পুরো টাকাটাই তার হাতের মধ্যে গুঁজে দিতে দিতে বলল, “তুমি কিচ্ছু জান না রচনা। এটা তো তোমার নামে উৎসর্গ করা হয়ে গেছে। এটা কি আর আমি ফিরিয়ে নিতে পারি? পাগলী কোথাকার”?
 

রচনা রতীশের দিকে কাতর চোখে চেয়ে বলল, “সোনা দেখেছ? তুমি বোঝাও না বৌদিকে একটু”।

রতীশ কিছু বলবার আগেই মহিমা বলল, “এতে বোঝবার বোঝাবার কিচ্ছু নেই। জানো তো শগুন হচ্ছে আশীর্বাদ। বড়দের আশীর্বাদ সম্মানের সাথে নিয়ে নাও। আর এটাও নাও। তোমার সাথে প্রথম দেখা করতে এসেছি। তোমাকে একটু মিষ্টিমুখ না করালে হয়? নাও হাঁ কর তো দেখি। আমি নিজে হাতে তোমাকে খাইয়ে দেব” বলে প্যাকেটের ভেতর থেকে একটা মিষ্টি তুলে রচনার মুখের কাছে তুলে ধরল।
 

নিরুপায় রচনা হাঁ করতেই মহিমা মিষ্টিটা রচনার মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে রতীশের দিকে ঘুরে বলল, “রতীশ ভাই, তুমিও একটা নাও। হাঁ কর”।
 

রতীশ কোন কথা না বলে মিষ্টি মুখে নিতে রচনা প্যাকেটের ভেতর থেকে একটা মিষ্টি তুলে নিয়ে মহিমার মুখের সামনে তুলে ধরে বলল, “আপনাকেও তাহলে আমি খাইয়ে দেব। নিন, হাঁ করুন”।

মহিমাও একটু হেসে হাঁ করতেই রচনা একটা মিষ্টি তার মুখে ঢুকিয়ে দিল। রতীশ ডাইনিং টেবিলের ওপর থেকে জলের বোতল নিয়ে মহিমার হাতে দিতেই রচনা বলল, “সোনা, তুমি বৌদিকে নিয়ে ও ঘরে গিয়ে বস। আমি বাকি রান্নাটুকু সেরে নিই। ও বৌদি। আপনি প্লীজ কিছু মনে করবেন না। আর দশ পনের মিনিটের মধ্যেই আমার রান্না শেষ হয়ে যাবে। তারপর আমি এসে আপনার সাথে গল্প করছি”।

মহিমা রচনাকে আবার জড়িয়ে ধরে বলল, “তোমার আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না। আমি রতীশকে নিয়ে তোমাদের ডাইনিং টেবিলে বসেই গল্প করছি। তুমি রান্না করতে করতে আমার সাথে একটু আধটু কথা বললেই হবে। আর রান্না বন্ধ কর না। নইলে তোমাদের লাঞ্চ টাইম পেরিয়ে যাবে”।

রচনা হেসে বলল, “আচ্ছা বেশ, তাহলে এখানেই বসুন। কিন্তু আপনারই কিন্তু কষ্ট হবে। এমনিতেই আমাদের ঘরে এসি নেই। তার ওপর কিচেনেও চিমনি নেই। ঝাঁঝেও আপনার কষ্ট হতে পারে”।

রতীশ ততক্ষণে দুটো ডাইনিং চেয়ার কিচেনের কাছাকাছি এনে দিয়েছে। রতীশ মহিমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে নিজেও একটা চেয়ারে বসে বলল, “আচ্ছা বৌদি, আপনি আমাদের ফ্ল্যাটটা খুঁজে পেলেন কী করে? এ ফ্ল্যাটের ঠিকানা তো সেদিন আপনাকে আমি বলিনি”।
 

মহিমা মিষ্টি করে হেসে জবাব দিল, “তাগিদ থাকলে সব কিছুই করা যায় রতীশ। তোমার সাথে সেদিন কথা বলে আমার খুব ভাল লেগেছিল। তোমার স্ত্রীও তোমার সাথেই আছে জেনে তাকেও একটু দেখবার লোভ ছিল। আর তাছাড়া, ভেবেছিলাম আজ সকালে তুমি ফোন করবে। তোমার ফোন না পেয়ে মনটা একটু খারাপ হয়েছিল। ইনস্টিটিউট বন্ধ হবার পর গাড়ি নিয়ে বাড়ির দিকেই রওনা হয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ কি খেয়াল হতেই এদিকে চলে এলাম। আসতে আসতেই বিমলকে ফোন করে তোমার ফ্ল্যাটের ঠিকানাটা জেনে নিয়েছিলাম। তাই তেমন কোন অসুবিধা হয় নি। কিন্তু আমি আগে কোন খবর না দিয়ে হঠাৎ করে এসে তোমাদের খুব অসুবিধায় ফেলে দিয়েছি, তাই না”?

রতীশ বলল, “না না বৌদি, তেমন কিছু নয়। আর আমি আপনাকে বিকেলেই ফোন করব ভেবেছিলুম। আসলে আমার এক বোনের সাথে কথা বলেই আপনাকে ফোন করতুম। কিন্তু ওর ফোনটা বারবার আনরিচেবল পাচ্ছি বলেই বিকেলে আপনাকে ফোন করে জানাব ভেবে রেখেছিলুম”।
 

রচনা তাদের কথা শুনতে শুনতে রান্না করে যাচ্ছিল। সে এবার বলল, “বৌদি একটা কথা আছে, আসাটা নিজের ইচ্ছেয় হলেও যাওয়াটা কিন্তু নিজের ইচ্ছেয় হয় না। এ কথাটা শুনেছেন তো”?
 

মহিমা একটু হেসে বলল, “হ্যা তা তো শুনেছিই। তবে তোমরা যদি আমাকে আঁটকে রাখতে চাও, তাহলে সেটা আরেকদিনের জন্য তুলে রাখো ভাই। আজ এমনিতেই হঠাৎ করে এসে তোমাদের বিব্রত করে ফেলেছি”।

রচনা বলল, “ও’কথা বললে চলবে না বৌদি। এসেই যখন পড়েছেন, তখন আমাদের সাথে খেয়ে দেয়ে তবেই যেতে পারবেন। অবশ্য গরীব দেবরানীর হাতের ছাপোষা রান্না খেয়ে আপনার ভাল লাগবে কিনা সেটা বলতে পারব না। কিন্তু না খেয়ে কিছুতেই যেতে পারবেন না। এই বলে দিলুম”।

মহিমা চমকে উঠে বলল, “এই নারে বোন। অমন কথা বোলনা প্লীজ। আসলে আমি তো ঘরে কোনকিছু জানিয়ে আসিনি”।

রচনা বলল, “আমি কোন কথা শুনছি না। জানিয়ে আসেননি, তো এখন ফোন করে জানিয়ে দিন। আমরা কলকাতা আসবার পর এই প্রথম আমাদের ঘরে কেউ এল। এমনি এমনি যেতে দেওয়া যায় নাকি? হ্যা অবশ্য দাদাকে বোধহয় বাড়িতে একা লাঞ্চ করতে হবে”।

মহিমা একটু হেসে বলল, “তোমার দাদার কথা আর বলো না। সে তো প্রায় দিনই অফিসেই লাঞ্চ সেরে নেয়। আজ তো আগেই বলে গেছে, সে দুপুরে বাড়ি আসবে না। বেশ ঠিক আছে। রোজ তো নিজের ঘরে কাজের লোকের হাতের ভাল ভাল রান্নাই খাই। আজ না হয় গরীব দেবরানীর হাতের খারাপ রান্নাই খেয়ে দেখি। দাঁড়াও,বাড়িতে তাহলে একটা ফোন করে দিই। নইলে কমলা আমার জন্যে না খেয়ে বসে থাকবে” বলে ফোন বের করে নাম্বার ডায়াল করল।
 

ও’পাশের সাড়া পেতেই সে বলল, “হ্যা কমলা শোন। আমি এক জায়গায় লাঞ্চ সারছি আজ। আর তোর বড়বাবু তো আজ অফিসেই লাঞ্চ করবে। তাই তুই আমার জন্যে বসে না থেকে খেয়ে নিস। আমি সন্ধ্যের আগেই বাড়ি ফিরে আসব। বুঝেছিস”?

আধঘন্টার ভেতর রচনার রান্না শেষ হয়ে গেল। এ সময়টুকুতে রতীশের সাথে মহিমা যোগা নিয়ে টুকটাক কথা বলে গেল। একবারও রতীশের কাজে যোগ দেবার কথা ওঠাল না মহিমা। কিচেনের সব জিনিসপত্র গোছগাছ করে রচনা মহিমার কাছে গিয়ে বলল, “ও বৌদি, আপনি স্নান করবেন তো”?
 

মহিমা একটু হেসে বলল, “হ্যা, তা তো একটু করতেই হবে। কিন্তু মুস্কিল হল যে এক্সট্রা পোশাক তো আমি কিছু সঙ্গে আনিনি”।

রচনা বলল, “হ্যা আমিও তো সেটাই ভাবছি। কিন্তু শাড়ি দিতে পারলেও আমার ব্লাউজ তো আপনার মাপের হবে না। আর আমার নাইটিও তো আপনার একটু খাটোই হবে মনে হচ্ছে”।
 

মহিমা বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে। আমি স্নান করে না হয় এগুলোই পড়ে নেব। কিন্তু তোমাদের বাথরুমে স্পেস আছে তো? মানে স্নান করবার সময় এগুলো না ভিজিয়ে স্নান করবার মত উপায় হবে তো”?

রচনা মুচকি হেসে বলল, “হ্যা হ্যা, তা আছে। কিন্তু তাহলে আপনি আপনার এই দেবরের সাথে আরেকটু কথা বলতে থাকুন। আমি স্নানটা সেরে নিই আগে। আমাকে আবার তারপর একটু ঠাকুর পূজো করতে হবে খেতে বসবার আগে। আমার ঠাকুর পূজো শেষ হতে হতে আপনার স্নান হয়ে যাবে”।
 

রতীশও রচনার কথা সায় দিতেই রচনা বেডরুমে এসে আলমারি থেকে ধোয়া শাড়ি ব্লাউজ নিয়ে বাথরুমে ঢোকার আগে রতীশকে বলল, “সোনা, তুমি বৌদিকে নিয়ে বেডরুমে বা ড্রইং রুমে এসে বস না। গরমটা একটু কম লাগবে” বলে বাথরুমে ঢুকে পড়ল।
 

স্নান সেরে বাথরুম থেকে লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে বেরিয়ে রচনা ভেজা কাপড় চোপর গুলো নিয়ে তাদের ব্যালকনিতে যাবার সময় দেখল রতীশ আর মহিমা ড্রইং রুমে বসেই গল্প করছে। রচনা ভেজা কাপড়গুলো ব্যালকনিতে মেলতে মেলতে বলল, “সোনা তুমি বৌদিকে বাথরুমটা দেখিয়ে দাও। বৌদি স্নান করে নিক। আমি চট করে পূজোটা সেরে ফেলি”।

______________________________
[+] 1 user Likes riank55's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 04-03-2020, 10:21 PM



Users browsing this thread: 24 Guest(s)