Thread Rating:
  • 52 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব
#87
      [৪১]


       কলেজে বেরোবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে খাদিজা বেগম।দেখতে দেখতে কত বছর পেরিয়ে গেল। রোজ রাতেই ফোনে কথা হয় তবু আশ মেটে কই। নীচ থেকে রিক্সার প্যাক প্যাক হর্ণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।খাদিজা বেগম ব্যালকণিতে গিয়ে ঝুকে দেখল হাদু।লক্ষণ বাবু একটু আগে ফোন করেছিল।ফ্লাট বিক্রির ব্যাপারে কি ঠিক করল জানতে।অশোকবাবু বলেছে ম্যাডাম একটূ অপেক্ষা করুণ দাম আরও বাড়বে। প্রথম দিকে একবার এসেছিল লক্ষণবাবু, দুঃখ প্রকাশ করল। কথা বলে মনে হল যা সন্দেহ করেছিল তাই,দেবের মামা সব কিছুর পিছনে।নিজের ভাগনের বদনাম করে ভদ্রলোক কি হাসিল করতে চান?অনেককাল আগের কথা সেসব মনে রাখতে চায় না খাদিজা বেগম।দেবের ছবিটা তুলে চুমু খেয়ে খাদিজা দরজা বন্ধ করে নীচে নেমে গেল।রিক্সায় উঠে খাদিজা জিজ্ঞেস করে, অত প্যাক-প্যাক করছিলে কেন?
--না ভাবলাম আপনে শুনছেন কি না শুনছেন তাই--।
রিক্সা চলতে শুরু করে।খাদিজা জিজ্ঞেস করে,আচ্ছা হাদু তুমি কতদিন রিক্সা চালাও?
--জ্বি আমি আসছি প্রায় পাঁচ বচ্ছর।এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে শ্যাষ ম্যাশ বচ্ছর দুই হইল রিক্সা চালাই।সুকুর সাহেব গ্যারণ্টি না দিলে রিক্সাও জুটতো না।
--তুমি আগে কোথায় ছিলে?
--জ্বি বাংলা দ্যাশে।যুদ্ধ লাগলে এদেশে আইসা পড়লাম।
--এতদিন তোমার রিক্সা চড়ছি তোমার পুরা নামটাই জানি না।
--পুরা নাম কেউ জানতে চায় না।শেখ হামিদুলকে মাইনষে সুবিধা মত হাদু বানায় দিছে।
খাদিজা বুঝতে পারে লোকটী '.। দেখে বুঝতে পারে নি ,নাম শুনে বুঝতে হল? ও তো শিবনাথ বা গনেশ বলতে পারতো।
--আচ্ছা হামিদ তুমি যে আমার জন্য অপেক্ষা করো এতে তোমার লোকসান হয় না?
--জ্বি আপনে সুকুরদার দিদি।আপনের কথা আলাদা।
সুকুর আলির কথা বলছে।একটা মস্তানের অনুগ্রহে তার খাতির ব্যাপারটা খাদিজার খারাপ লাগে।সুকুর আলি যাকে বিয়ে করেছে গ্রাজুয়েট * র মেয়ে,এক সময় তার ছাত্রী ছিল। সেই সুত্রে সুকুর আলি তাকে দিদি বলে।
--শোনো হামিদ বেশি দেরী করলে তুমি ওয়েটিং চার্জ নেবে।
--জ্বি।
--কি বললাম বুঝেছো?
--জ্বি ওই যা বললেন তাই নেবো।
--দেরী হলে কিছু বেশি পয়সা নেবে।
--জ্বি।রিক্সা কলেজের সামনে থামে।
কমলাদিকে বেশ ফ্রেশ লাগছে দেখতে।খাদিজাকে দেখে চেয়ার থেকে উঠে আসেন কমলাদি।খাদিজা জিজ্ঞেস করে,ভাল আছো কমলাদি?
--সুনীল ছেলেটা খুব খারাপ নয়।নীচু স্বরে বলে কমলা।
--কার কথা বলছো?
--সুনীল,রমুর বর।ওর বৌদি পামেলা না কি নাম--যত নষ্টের গোড়া।
খাদিজা লক্ষ্য করে পনেরো দিনের মত হবে এর মধ্যে কমলাদি কেমন বদলে গেছে।
--সুনীলের দাদা ন্যালা ক্ষ্যাপার মত বউকে সন্তোষ দিতে পারে না।খাই মেটাবার জন্য দেওরকে বশ করেছে।
অদ্ভুত মানুষের বিচার বোধ,খাদিজার এসব শুনতে ভাল লাগছিল না।
--শ্বশুর-শাশুড়ীকে অবধি গ্রাহ্য করে না,এমন নির্লজ্জ মাগী।
--কিন্তু রমুর তাতে কি হবে?
--সুনীল এসেছিল একদিন,বলল জিনিস পত্র কিছু চায় না রমুকে নিয়ে যেতে চায়।
--নিয়ে গেছে? খাদিজা বিস্মিত হয়।
--আপনে ক্ষেপেছেন?রমু বলে দিয়েছে,হয় ঐ বাড়ী ছেড়ে আলাদা বাসা নিতে হবে নাহয় ঐ মাগীকে বাড়ী থেকে তাড়াতে হবে।
শ্রীময়ী হেসে বলল,কনগ্রাচুলেশন ড.সোম।
সত্যি চাপা থাকে না খাদিজা নিয়ম মাফিক প্রিন্সিপাল ড.হাজারিকাকে জানিয়েছে। অথচ এর মধ্যে সারা কলেজ রাষ্ট্র হয়ে গেছে।তাকে নিয়ে কলেজে এখন সাতজন ডক্টরেট।
--এখন আসি কমলাদি।চলো শ্রীময়ী।
--ড.সোম কাছে থাকলে বেশ মজা হত।উনি জানেন?
--জানবে না কেন?
--কিছু বলেনি?অন্তত একটা ফ্লাইং কিস?
খাদিজা মনে মনে হাসে,ফ্লাইং কিস পেতে হলে আগে ওকে শেখাতে হবে।

দিলীপ কম্পিউটার শিখছে। তিন বছরের কোর্স,এ বছর ফাইন্যাল ইয়ার। কলেজ থেকে ফিরছে,পাড়ার মুখে বাজারে কাছে কাছে আসতেই হাফাতে হাফাতে রমিতা এসে বলল, দিলীপদা বাড়ি যাচ্ছো?
জগো মোহন উকিলের বড় মেয়ে রমিতা,যাতায়াতের পথে দেখা হলেও কথা বলতো না।দিলীপ জিজ্ঞেস করে,তুমি হাপাচ্ছো কেন?কোথা থেকে আসছো?
--না এমনি।
--দেখছি হাপাচ্ছো?
--কটা বাদর ছেলে খুব বিরক্ত করছে।
দিলীপ দাঁড়িয়ে পড়ে পিছন ফিরে দেখলো,খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে তিনটে ছেলে। দিলীপ দু-পা এগোতেই ওরা দ্রুত উল্টোদিকে হাটতে শুরু করল।দিলীপ আর এগলো না রমিতাকে বলল,পালিয়েছে তুমি যাও।
--তুমি বাড়ী যাবে না?চলো একসঙ্গে যাই।
--তুমি একাই যাও,আর কেউ তোমাকে বিরক্ত করবে না।
--দিলীপদা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
রমিতা সবে গ্রাজুয়েশন করেছে।কি জানতে চায় রমিতা? এত ভণিতা করছে কেন?
--তুমি মেয়েদের পছন্দ করো না তাই না?
--কেন করবো না?আমার মাও একজন মেয়ে।
--সে কথা নয়।আমি জানি লায়লি তোমার সঙ্গে যা করেছে খুব ভাল করেনি কিন্তু দিলীপদা একজনকে দেখে সবার বিচার করা কি ঠিক?
রমিতা এইসব কথা তুলবে দিলীপ আশা করেনি। লায়লি আজ নেই বেচারি খুব কষ্ট পেয়ে মারা গেছে। সেসব কথা এখন মনে করতে চায় না। দিলীপ বলল,দেখো রমি ঐসব দিন এখন পেরিয়ে এসেছি।সেই দিলীপকে আমার মধ্যে খুজতে যেও না।
--আমি জানি তুমি অনেক বদলে গেছো।রমিতা কাছে ঘেষে এসে বলে,লায়লি তোমার যোগ্য ছিল না।সুন্দর গন্ধ দিলীপের নাকে লাগে।
দিলীপ অস্বস্তি বোধ করে বলে,রমি পাড়ার মধ্যে এসে গেছি লোকে দেখলে নানা কথা উঠবে।
--উঠুক আমি কাউকে কেয়ার করিনা।আচ্ছা দিলীপদা নীরার বিয়েতে তোমাকে নেমন্তন্ন করে নি?
রমিকে কেমন বেপরোয়া মনে হল, কবে কিভাবে বিয়ে ঠিক হল সেদিন দিলীপও ছিল সেকথা রমির কাছে চেপে গিয়ে বলল, হ্যা আমাকে বলেছে সঞ্জয়।
--আমাদের ফুল ফ্যামিলি।আচ্ছা আগে পল্টূদার সঙ্গে নীরার ছিল না?
এসব কথা কেন তুলছে রমি বুঝতে পারছে না বলল,দেখো রমি নীরার কথা জানি না কিন্তু পল্টূ সবার সঙ্গেই কোনো মতলব নিয়ে নয় সহজভাবে মিশতো এতবড় ডাক্তার কোনো অহঙ্কার ছিল না।অন্যের সঙ্গে তুলনা চলে না,পল্টু আমাদের সবার থেকে আলাদা।
রমিতার মনে পড়ল বছর কয়েক আগের পিকনিকের কথা।শমিকে কাধে নিয়ে কুল পাড়তে সাহায্য করেছিল।খুব হাসি পেয়েছিল সেদিন।শমি বলল আর অমনি ওকে কাধে তুলে নিল,পল্টূদাটা কেমন বোকা-বোকা।খটকা লাগে ওর মামাই তো বলে পল্টূদার সঙ্গে অধ্যাপিকার কি সব সম্পর্কের ব্যাপারে। রমিতা সে কথা উল্লেখ করে না, দিলীপদা তাকে ভুল বুঝবে।দূর থেকে তারিণী বুড়ো তাদের দেখে দ্রুত চলে গেল।রমিতা জানে মাকে গিয়ে লাগাবে। এই বুড়োটা খালি মা-র সঙ্গে ঘুর ঘুর করে।
পাড়ার ওদিকে কিছু হয়েছে লোকজন ছোটাছুটী করছে। দিলীপ বলল,রমি তুমি বাড়ী যাও।ওদিকে মনে হচ্ছে কিছু হয়েছে।
আচমকা রমিতা দিলীপের হাত নিয়ে বুকে চেপে ধরে বলল,যাইহোক কথা দাও তুমি কোনো ঝামেলায় জড়াবে না।
এ কি করছে রমিতা? নরম তুলতুলে স্তনের স্পর্শে দিলীপের শরীরে বিদ্যুতের শিহরণ ছড়িয়ে পড়ে।হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,ঠিক আছে তুমি যাও।দ্রুত ডাক্তার সোমের বাড়ীর দিকে পা বাড়ায়।

হায় আল্লাহ একমাস পরে পরীক্ষা তার আগে এ কি সংকটে তুমি ফেললে মেহেরবান?দেবকে মুখ দেখাবে কি করে?খাদিজা আক্তার একগোছা টাকা ব্যাগে ভরে নিল। ফোন বেজে ওঠে এখন আবার কে ফোন করল?বিরক্তি নিয়ে ফোন ধরে বলে,হ্যালো? খাদিজার হাত কেঁপে গেল।নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,শুনেছি মিতাদি ফোন করেছিল....আমি এখন লেক ভিউতে যাচ্ছি,তুমি চিন্তা কোর না। আমি আছি পার্বতী ম্যাম আছেন...কাঁদছো কেন?...এখন রাখছি আমার তাড়া আছে..তুমি না ডাক্তার?..রাখছি?খাদিজা আক্তার ফোন রেখে বেরিয়ে পড়লো।

এ্যাম্বুলেন্স দেখে পথ করে দিল।দুজন লোক আর স্ট্রেচার নিয়ে অনির্বাণ উপরে উঠে গেল। দেববাবুর অবাক লাগে এ্যাম্বুলেন্সে খবর দিল কে? স্থানীয় ডাক্তার প্রবোধ বাবুকে খবর দিয়েছে তার আসার নাম নেই,এ্যাম্বুলেন্স এসে হাজির। স্ট্রেচারে করে মনোরমাকে নামিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দিল।দেববাবুর মনে হল এ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বসবেন কিনা কিন্তু পল্টূ নেই খরচের কথা ভেবে স্থির করে না ওঠাই সমীচীন। দিলীপ দেখল আণ্টি শুয়ে আছেন,চোখ বন্ধ কিছু হয়েছে বলে মনে হল না।পল্টূ নেই মিতা মাসীর কাছে শুনলো ওকে খবর দিয়েছে। বাড়ী গিয়ে খেয়েদেয়ে রাতে লেকভিউতে যাবে।পল্টূ এলে সেখানেই আসবে।
বেডে দিয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলতেই চোখ খুলে মনোরমা হাসলেন।পার্বতী জিজ্ঞেস করেন,দিদি হাউ আর ইউ ফিলিং?
--আই এ্যাম ওকে।'.ীটা আসেনি?
খাদিজা বেগম এগিয়ে গিয়ে বলল,মম কিছু বলছেন?
--ছেলেটা হয়েছে ওর বাপির মত হ্যাংলা।একটু ভালবাসা পেলেই রীতি নীতির ধার ধারে না।তুমি ওকে দেখ মা।
খাদিজার চোখে জল চলে আসে বলে,মম আপনি কথা বলবেন না।
মনোরমা বড় বড় শ্বাস নিতে থাকে বোঝা যায় কষ্ট পাচ্ছে। পার্বতী ছেলেকে বললেন,অনি ডা.চ্যাটার্জিকে খবর দাও।মনোরমাকে ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হল।
[+] 3 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব - by kumdev - 04-03-2020, 05:34 PM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)