Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
#68
(Upload No. 88)

শঙ্কর আবার চেয়ারে বসে অভির বুকিংএর ব্যাপারে ভাবতে লাগল। কাল তাহলে একবার অভিকে নিয়ে এখানে আসতেই হবে। অনুপমাকে একবার ভোগ করতে না পারলে অভিকে সামলানো মুস্কিল হয়ে যাবে। কাজে ব্যাগরা দেবে। তাছাড়া পরশু দিন হোটেলের রেকর্ডিংটা করতে পারলে আর দু’দিনের মধ্যেই সিডিগুলো সব তৈরি হয়ে যেত। আর স্যারের হুকুম, দু তিন দিনের ভেতরেই এসাইনমেন্টটা কমপ্লিট করে ফেলতে হবে। নইলে সেকেণ্ড ফেজের অপারেশনের প্ল্যান করা যাবে না। তাই কাল অভিকে নিয়ে এখানে আসতেই হবে।

হঠাৎ একটা মেয়েলী গলার কথায় শঙ্করের ভাবনার সুতো ছিঁড়ে গেল। পেছনের দরজার বাইরে থেকে কেউ ডাকল, “সরজু ভাইয়া”।

শঙ্কর কাউকে দেখতে না পেয়ে পেছনের দরজার কাছে এসে দাঁড়াতেই দেখল সতের আঠার বছরের বেশ সুন্দরী একটা মেয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে। শঙ্কর তাকে দেখেই বলল, “সরজু ভাইয়া তো একটু বাইরে গেছে। তুমি একটু বস। সে চা নিয়ে এখনই এসে পড়বে”।
 

মেয়েটা শঙ্করের পা থেকে মাথা পর্যন্ত নজর বুলিয়ে একটা চাবি বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “ওহ, সরি স্যার। কিন্তু এ চাবিটা তাকে দেবার ছিল”।

শঙ্কর হাত বাড়িয়ে বলল, “দাও, আমাকে দাও। আমি তাকে দিয়ে দেব’খন”।

মেয়েটা আর কিছু না বলে শঙ্করের হাতে চাবিটা দিয়ে বলল, “থ্যাঙ্ক ইউ স্যার”।
 

শঙ্কর চাবিটা হাতে নিয়ে জবাব দিল, “ঠিক আছে, আর কিছু বলতে হবে কি”?

মেয়েটা সুন্দর করে হেসে বলল, “না স্যার, আর কিছু বলতে হবে না। থ্যাঙ্ক ইউ স্যার” বলেই মেয়েটা পাশের সরু গলির মধ্যে দিয়ে রাস্তার দিকে এগিয়ে গেল।
 

উগ্র পারফিউমের গন্ধে শঙ্করের বুক ভরে গেল। শঙ্কর বাইরের দিকে এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে দেখল, আর কেউ নেই। সরজু ভাইয়া একটু আগে বলছিল যে তার বাড়ির ভেতর থেকে আরেক জুটি বেরিয়ে আসবে একটু বাদেই। এ মেয়েটাই কি সে? কিন্তু এর সাথে তো আর কেউ নেই। ছিমছাম চেহারার মেয়েটা দেখতে শুনতে বেশ ভালই। বয়স খুবই কম মনে হল। হয়ত এখনও কলেজের গণ্ডি পার হয়নি। এরও বেশভূষা দেখে সচ্ছল ভদ্র পরিবারের মেয়ে বলেই মনে হল তার। এও কি কোন পয়সার বিনিময়ে কোনও পুরুষের মনোরঞ্জন করতেই এখানে এসেছিল?
 

এমন সময়ে দোকানের সামনের কাউন্টারের দিক থেকে আরেক বার মেয়েলী গলা শোনা গেল, “স্যার, একটু এদিকে আসবেন, প্লীজ”।

শঙ্কর চেয়ার থেকে উঠে কাউন্টারের দিকে চেয়ে দেখতে পেল সেই মেয়েটাই কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। শঙ্কর কাউন্টারের কাছাকাছি গিয়ে বলল, “সরি, সরজু ভাইয়া না এলে তো আমি কিছু ডেলিভারি দিতে পারব না”।

মেয়েটা খুব সুন্দর করে হেসে বলল, “না স্যার, সে জন্যে নয়” বলে তার ব্যাগের ভেতর থেকে ছোট্ট একটা পার্স বের করে তার ভেতর থেকে চারশ টাকা বের করে বাড়িয়ে ধরে আগের মতোই মিষ্টি করে হেসে বলল, “আমি আর দেরী করতে পারছি না। এটা সরজু ভাইয়াকে দিয়ে দেবেন প্লীজ”।

শঙ্কর হাত বাড়িয়ে টাকাটা নিতে নিতে বলল, “কিন্তু সরজু ভাইয়াকে কি বলে টাকাটা দেব আমি”?

মেয়েটা বলল, “আপনি শুধু তাকে বলবেন যে বাবলী যাবার সময় এ চাবি আর টাকাটা দিয়ে গেছে, তাহলেই হবে। থ্যাঙ্ক ইউ স্যার” বলেই বাঁ দিকে চেয়ে অন্য কাউকে উদ্দেশ্য করে বলল, “আসুন স্যার”।

মেয়েটা রাস্তার দিকে হাঁটতে শুরু করতেই শঙ্কর দেখতে পেল একজন ত্রিস পঁয়ত্রিশ বছরের যুবক সেই মেয়েটার পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে।
 

আর প্রায় ঠিক সাথে সাথেই পেছনের দরজা দিয়ে সরজু চায়ের কাপ হাতে নিয়ে ঢুকে জিজ্ঞেস করল, “ওখানে কি করছেন শঙ্কর ভাইয়া। এদিকে আসুন। নিন, চা খান”।

সরজু শঙ্করের হাতে চায়ের কাপ তুলে দিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কেউ এসেছিল নাকি”?

শঙ্কর তার হাতে ধরা টাকা আর চাবিটা সরজুর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “হ্যা একজন কলেজের ছাত্রী এসেছিল। নাম বলল বাবলী। আপনি নেই দেখে আমার হাতে এ চাবি আর এই চারশ টাকা দিয়ে গেল আপনাকে দেবার জন্য। নিন”।

সরজু ভাইয়া জিনিসদুটো নিয়ে দোকানের একটা ড্রয়ারে রাখতে রাখতে বলল, “চারশ টাকা দিয়ে গেছে? তার মানে বিছানার চাদরটাকে নষ্ট করে গেছে”।

শঙ্কর আবার নিজের চেয়ারে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করল, “বিছানার চাদর, মানে”?

সরজুও তার কাঠের টুলে বসতে বসতে বলল, “মানে আর কি? মস্তি করতে গিয়ে আমার বিছানার চাদরটাকে হয়ত ভিজিয়ে ফেলেছে, বা তাতে কোন দাগ ফাগ লাগিয়ে ফেলেছে। ওটাকে ধুতে হবে। তাই একশ টাকা বেশী দিয়েছে। কিন্তু মেয়েটা চলে গেল? আমি তো ভাবছিলাম। আপনার সাথে তার কথা একটু বলিয়ে দেব”।

শঙ্কর একটু হেসে বলল, “তার মানে, এ মেয়েটাও কাউকে সাথে করে এসে মস্তি করে গেল আপনার ঘরে”?

সরজু ভাইয়া বলল, “হাঁ, সেটাই তো। ওর কলেজের এক মাস্টারজীর সাথে এসেছিল আজ। বহত চালু মেয়ে আছে। বড়ে ঘর কি। সির্ফ মস্তি করতে আসে। একটু কথা বললেই বুঝতে পারতেন আপনি”।
 

শঙ্কর চা খেতে খেতে বলল, “থাক সরজু ভাইয়া। সকলের খবর নেবার আর কি দরকার আমার। আপনি আছেন, অনুপমা ভাবী আছে। এই আমার কাছে যথেষ্ট। তবে আমার বন্ধুর জন্য বুকিংটা করে যেতে পারলে ভাল হত”।

সরজুও চা খেতে খেতে বলল, “দেখুন শঙ্কর ভাইয়া, আমাদের এ বিজনেসের নিয়ম মাফিকই আমি কথাটা বলেছি আপনাকে। তবে শুনুন, আপনার ওপর আমার ভরোসা আছে। আপনি যদি বলেন যে কোন ধরণের ঝুট ঝামেলা হবে না, তাহলে আমি একটা টিকিট দিতে পারি। তবে কনফার্মেশনটা কিন্তু কাল সকালেই দিতে পারব। এর আগে কিন্তু পারব না”।

শঙ্কর মনে মনে আশান্বিত হয়ে জবাব দিল, “না না সরজু ভাইয়া। কোনরকম ঝুট ঝামেলা হবার তো কোন প্রশ্নই নেই। আমার ওই বন্ধু একটা হোটেলে উঠেছে। কাল ওর কাজ শেষ হয়ে যাবে। পরশু দিনের ট্রেনে রিজার্ভেশন হয়ে গেছে ওর। ট্রেন সন্ধ্যার সময় ছাড়বে। তাই অনুপয়া ভাবীর সিনেমা দেখেই ও চলে যাবে বলে ভেবেছে”।
 

সরজু বলল, “তবে একটা কথা আপনাকে রাখতে হবে। অনুপমা ভাবীকে আপনি এ ব্যাপারে কিছু বলবেন না। সে যদি জানতে পারে যে আমি কাস্টমারের সাথে কথা না বলেই টিকিট দিয়েছি তাহলে কিন্তু লফরা হয়ে যাবে”।

শঙ্কর সরজুর হাত ধরে বলল, “না না, সরজু ভাইয়া। আমি অনুপমা ভাবীকে এ ব্যাপারে কিছুই বলব না” বলে নিজের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে দেড়শ টাকা সরজুর হাতে দিল।

সরজু টাকাটা পকেটে পুরে বলল, “হাঁ শঙ্কর ভাইয়া, অনুপমা ভাবীকে এই বুকিং নিয়ে আপনি কোন কথা বলবেন না। আর কনফার্মেশনটাও আমি আপনাকেই জানিয়ে দেব। সেটা আপনার বন্ধুকে আপনি জানিয়ে দেবেন, কিন্তু আপনার বন্ধুর ফোন নাম্বারটাও আমাকে দিয়ে যাবেন। কারন অনুপমা ভাবী আপনার বন্ধুর কাছে ফোন করে জেনে নেবে কখন কোথায় যেতে হবে তাকে”।
 

শঙ্কর অভির ফোন নাম্বার দিয়ে, আর চা খেতে খেতে আরও কিছু টুকটাক কথা বলে সরজুর দোকান থেকে বেরিয়ে এল।
 

***************

সন্ধ্যে প্রায় সাতটা। রোজ বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছ’টা সাতটা অব্দি মহিমা যোগা এক্সারসাইজ করে। আজও তার ব্যতিক্রম হয় নি। যোগা করে স্নান সেরে সে তার ল্যাপটপ আর মোবাইল দু’খানা হাতে নিয়ে তাদের ছাদে চলে আসে। তার ঘরের সারাক্ষণের কাজের ঝি কমলা তার আগেই ছাদে টেবিল চেয়ার পেতে দেয়। আর টেবিলের ওপর ব্রাণ্ডির বোতল, গরম জলের ফ্লাস্ক, মিনারেল ওয়াটারের বোতল আর গ্লাস রেখে যায়। মহিমা ছাদে উঠে নিজের মোবাইল দুটো চালু করে দেয়। সাড়ে পাঁচটা থেকে সাতটা অব্দি তার দুটো মোবাইলই সুইচ অফ করা থাকে। শুধু নিচের ঘরে ল্যাণ্ডলাইন ফোনটাই চালু থাকে। কিন্তু এ সময়টাতে তার স্বামী অরিন্দমও বাড়ি থাকে না। তাই কোনও ফোন এলে কমলাই সেসব রিসিভ করে। প্রয়োজনীয় কথাগুলো সে পড়ে মহিমাকে জানিয়ে দেয়। তারপর ছাদে এসে রাত সাড়ে আটটা অব্দি একটু একটু করে ড্রিঙ্ক করতে করতে নিজের মোবাইল গুলোতে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে যায়। কখনো কখনো মহিমা রাত ন’টা অব্দি ছাদেই বসে থাকে।
 

সাতটা থেকে সাড়ে আটটা অব্দি কমলাও একটু বিশ্রাম নিতে পারে। এ সময়টায় তার মালকিন তাকে আর ডাকাডাকি করে না। আর এতবড় বাড়িতে তো আর কেউ নেই। মহিমা আর অরবিন্দের দুই সন্তান। এক ছেলে আর এক মেয়ে। মেয়েটা বড়। মেয়ে আর ছেলে দু’জনেই পড়াশোনার সুবাদে ব্যাঙ্গালোর আর আহমেদাবাদে চলে গেছে। কলেজের ছুটি ছাটা ছাড়া তারা আর এখানে আসে না। তাই পুরো বাড়িটাই প্রায় ফাঁকা। খুব বেশী বড় না হলেও ২৩০০ স্কয়ার ফুট এরিয়ার ওপর তিনতলা আধুনিক ডিজাইনের বিল্ডিংটার গ্রাউণ্ড ফ্লোরে কতগুলো দোকান আর গোডাউন ভাড়া দেওয়া আছে। দোতলায় ছেলে মেয়েদের আলাদা আলাদা বাথরুম এটাচ করা দুটো বেডরুম রুম আর স্টাডি রুম ছাড়াও ড্রইং রুম, কিচেন আর ডাইনিং রুম আছে। আর আছে একটা মাঝারি সাইজের একখানা হলঘর, আর দুটো কমন টয়লেট আর মেড সারভেন্টের থাকবার ঘর। আর তিনতলায় বিশাল কিচেন, পাশাপাশি দুটো বেডরুম, একটা বড় হলঘর, গেস্ট রুম আর একটা স্টোর রুম। ছাদের ওপরের পেছনের দিকটা জলের ট্যাঙ্কি ডিটিএইচ ডিশ, পাওয়ার সাপ্লাই জেনারেটর সেট আর এসির কিছু প্লান্ট বসানো আছে। লিফট বসানো হয়নি এখনও, তবে প্রভিসনটা রাখা আছে। যখন খুব বেশী প্রয়োজন হবে তখন বসাবে বলেই ভেবে রেখেছে। ছাদের সামনের দিকের অর্ধেকটা পুরোটাই ফাঁকা। আর খুব রুচিসম্মত ভাবে সুন্দর করে সাজানো। দোতলার আর তিনতলার বেডরুমে, ড্রইং রুমে, গেস্ট রুমে আর হলঘর গুলোতেও এসি বসানো আছে। ছাদের ওপরেও পুরোটাই কভার করা। তাই বৃষ্টির দিনেও থাকতে কোন অসুবিধে হয় না। বাড়িটা বানাবার সময় মহিমার ইচ্ছে ছিল ছাদটাকে সুন্দর করে সাজাবে। সকাল বিকেল দু’বেলা ছাদে যোগাচর্চা করবে বলেই এভাবে বানিয়েছিল। কিন্তু প্রথম প্রথম কিছুদিন সেটা করতে পারলেও বছর দুয়েক বাদে বাড়িটার উত্তর আর দক্ষিণ দিকে দুটো মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং গজিয়ে ওঠবার পর সে আর ছাদে যোগা এক্সারসাইজ করতে পারে না। আশে পাশের ফ্ল্যাট গুলো থেকে প্রচুর মানুষের উঁকিঝুঁকি তার ছাদের খোলা হাওয়ায় যোগাচর্চা করার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন তাই সে তিনতলার বড় হলঘরটাতেই যোগাচর্চা করে।
 

বাড়ির সবকিছু ঝাড়পোছ করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবার জন্য আর বাজার করবার জন্য একটা ছেলে আছে। তার ডিউটি সকাল আটটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা অব্দি। তাই বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে বাড়িতে শুধু কাজের ঝি কমলা আর মহিমা ছাড়া এখন আর কেউই থাকে না। মহিমা রোজ সন্ধ্যের সময় ছাদে এসে বসবার পর কমলা এ সময়টাকে পুরোপুরি ভাবে নিজের মত করে উপভোগ করে। সে ঘণ্টা দেড়েকের জন্য বাড়ির বাইরে চলে যায়। আর এ ব্যাপারে তার মালকিনও তাকে ছাড় দিয়ে রেখেছে। তাই এ বাড়িতে সে খুব সুখেই আছে।
 

রোজকার মত আজও কমলা ছাদের ওপর টেবিল চেয়ার সাজিয়ে টেবিলের ওপর ব্র্যান্ডির বোতল, গ্লাস, মিনারেল ওয়াটারের বোতল আর গরম জলের ফ্লাস্ক সাজিয়ে দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতেই সিঁড়ির মাঝপথে মহিমার সাথে তার দেখা হল। মহিমা কমলাকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করল, “তুই নিচের ফোনের রিসিভারটা নামিয়ে রাখিস। আর দু’তলার মেইন দরজা লক করে যাস। তা কতদুর যাবি আজ? দুরে কোথাও”?
 

কমলা বলল, “না গো বৌদিদি আজ গ্রাউণ্ড ফ্লোরেই যাব শুধু। আর ন’টার আগেই চলে আসব”।
 

মহিমা একটা সিঁড়ি ওপরে উঠে আবার থেমে দাঁড়িয়ে বলল, “যেখানেই যাস খেয়াল রাখিস। দোতলার দরজা খুলে রেখে যাবি না। তা আজ কার কাছে যাচ্ছিস? ওই সুখলালের কাছেই”?

কমলা একটু হেসে বলল, “না বৌদিদি, মাধব অনেকদিন থেকেই চাইছিল আমাকে। আজ ওর কাছে যাব বলেছি”।
 

মহিমা সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে উঠতে বলল, “ঠিক আছে। যে ভাবে বললাম, সেভাবে আগে তিনতলার ফোনের রিসিভারটা নামিয়ে রাখবি। দোতলার দরজা লক করবি। তারপর যাবি। আর সাড়ে আটটা থেকে ন’টার ভেতর ফিরে আসবি”।

ছাদে এসে চেয়ারে বসে ল্যাপটপটা চালু করে তার সাথে একটা এক্সটারনাল হার্ড ডিস্ক কানেক্ট করে দিল। তারপর মোবাইল দুটো সুইচ অন করে দিতেই রতীশের কথা মনে পড়ল। একবার ভাবল, একটা ফোন করা যাক ওকে। ছেলেটার মুখে বৌদি ডাকটা শুনতে বড় মিষ্টি লাগে তার। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল, না ও হয়ত বিরক্ত হতে পারে। ওকে বিরক্ত বা বিব্রত করা ঠিক হবে না। ভাবতে ভাবতেই তার প্রাইভেট মোবাইলটা বেজে উঠল। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল মিসেস বক্সীর ফোন। কল রিসিভ করে স্পীকার অন করে ফোনটা টেবিলের ওপর রেখে বলল, “গুড ইভিনিং মিসেস বক্সী, কেমন আছেন বলুন”।

মিসেস বক্সীর কর্কশ গলার জবাব শোনা গেল, “গুড ইভিনিং মহিমা। কাল একজন এসকর্ট দিতে পারবে”?

মহিমা মুচকি হেসে মিষ্টি করে বলল, “কেন পারব না মিসেস বক্সী? আপনাদের খুশী করাই তো আমার কাজ। কিন্তু আপনি তো মেল ফিমেল দুটোই পছন্দ করেন। কাল কী চাইছেন”?

মিসেস বক্সীর জবাব, “কাল একজন মেল পাঠিও”।

মহিমা বলল, “ঠিক আছে স্পেসিফিকেশন বলুন”।

মিসেস বক্সী বলল, “তোমার কাছে তো আর টিন এজার এসকর্ট নেই। একটা টিন এজার পেলেই ভাল হত। তবে বিলো থারটিই যেন হয়। আর টিডিএইচ হলে ভাল হয়”।

মহিমা বলল, “ওকে মিসেস বক্সী। আমি একটু দেখে নিই। কে কে এভেইলেবল আছে। তারপর আপনাকে কলব্যাক করছি। তবে আপনার বাড়িতেই পাঠাব তো না অন্য কোথাও”?

মিসেস বক্সী জবাব দিল, “হ্যা হ্যা বাড়িতেই পাঠিয়ে দিও। বিকেল চারটে নাগাদ, ওকে”?

মহিমা বলল, “ওকে মিসেস বক্সী, আপনাকে আমি খানিকক্ষণ বাদেই কলব্যাক করছি”।

ফোন বন্ধ করে ল্যাপটপের এক্সটারনাল হার্ড ডিস্কের একটা ড্রাইভের একটা ফাইল খুলে সেটার দিকে চোখ বোলাতে বোলাতে ব্রাণ্ডির বোতলটা খুলে গ্লাসে একটুখানি ঢেলে নিল। তারপর ফ্লাস্ক থেকে খানিকটা গরম জল ঢেলে গ্লাসটা হাতে ধরে অনুভব করল কতটুকু গরম হয়েছে। তারপর মিনারেল ওয়াটারের বোতল থেকে খানিকটা জল মিশিয়ে এক চুমুক খেতেই মোবাইলটা আবার বেজে উঠল। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল ‘মিঃ কাপাডিয়া কলিং’।

মহিমা কল রিসিভ করে বলল, “হ্যা মিঃ কাপাডিয়া, গুড ইভিনিং। বলুন আমাদের এসকর্ট সার্ভিস কেমন লাগল? খুশী হয়েছেন তো”?
 

ও’পাশ থেকে কাপাডিয়ার গলা শোনা গেল, “ভেরি গুড ইভিনিং মিসেস সেন। আর অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা এসকর্ট দেবার জন্যে। শি ওয়াজ মার্ভেলাস। থ্যাঙ্ক ইউ ভেরি মাচ”।

মহিমা মিষ্টি সুরে জবাব দিল, “ইটস মাই প্লেজার মিঃ কাপাডিয়া। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনি আমাদের এমন সার্ভিস দেবার সুযোগ দেবেন”।

মিঃ কাপাডিয়া বললেন, “ভবিষ্যতের কথা ছাড়ুন মিসেস সেন। আমি তো আজই আবার ওই মেয়েটাকেই চাইছিলাম। কিন্তু আপনার কাছে তো একদিন আগে বুকিং না করলে কাউকে পাওয়া যায় না। তাই বলছিলাম কি, আগামী কালের জন্যেও ওই মেয়েটাকেই পাঠান না আরেকবার। রাত আটটা থেকে ন’টা। আগের জায়গাতেই”।

মহিমা বলল, “সরি স্যার। কাল আর পরশু দু’দিনই ওর রাতের এডভান্স বুকিং হয়ে গেছে। তাই ওকে তো দিতে পারছিনা। তবে আপনি চাইলে অন্য কাউকে পাঠাতে পারি”।

মিঃ কাপাডিয়া একটু থমকে গিয়ে বললেন, “ওকে পাওয়া যাবে না”?

মহিমা বলল, “হ্যা মিঃ কাপাডিয়া। আমি তো সে’কথাই বলছি। কাল আর পরশু দু’দিনই ও রাতের বেলা এনগেজড আছে। এডভান্স বুকিং হয়ে গেছে ওর। তবে আমার কাছে আরও অনেক ও’রকম এসকর্ট আছে। আপনি রাজি থাকলে আমি তাদের ভেতর কাউকে পাঠাতে পারি। রেট একই হবে। আর সার্ভিসও যে ভাল পাবেন সে ব্যাপারে আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি”।
 

মিঃ কাপাডিয়া একটু অখুশী গলায় বলল, “ঠিক আছে, তবে তা-ই পাঠান। তবে দেখবেন ম্যাডাম, আমাকে নিরাশ করবেন না। সার্ভিসটা যেন ভাল পাই”।

মহিমা জবাব দিল, “সে ব্যাপারে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। আপনি কাল সকাল দশটা নাগাদ ফিসটা পাঠিয়ে দেবেন আমার অফিসে। আর আপনার ফিসটা পেলেই আমি আপনাকে কনফার্ম করব। ঠিক আছে মিঃ কাপাডিয়া”?

মিঃ কাপাডিয়া বললেন, “ওকে মিসেস সেন। আমি দশটার দিকেই আমার লোকের হাতে টাকাটা আপনার অফিসে পাঠিয়ে দেব। বাই”।

ফোন বন্ধ করে আরেক চুমুক ব্রাণ্ডি খেয়ে মহিমা মনে মনে ভাবল, দিনে দিনে মধ্যবয়সী মহিলা আর পুরুষ ক্লায়েন্টের সংখ্যাই বেশী হচ্ছে। আর সবাই চায় কচি কাঁচা ছেলে মেয়ে। কিন্তু মহিমা কুড়ি বছরের নিচের কাউকে নিজের কাজে সামিল করে না। কিন্তু মিসেস বক্সীর মত পয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছরের মহিলারা প্রায় সকলেই সতেরো আঠারো বছরের ছোকরাদের সান্নিধ্যই বেশী পেতে চায়। আর তার জন্যে তারা দু’ঘন্টার জন্য একলাখ টাকা দিতেও প্রস্তুত আছে। এরা সকলেই বিশিষ্ট ধনী পরিবারের গৃহবধূ। পঞ্চাশ ষাট বছরের স্বামীদের দিয়ে নিজেদের শরীরের জ্বালা শান্ত করতে পারেনা বলে স্বামীর অর্জিত টাকা খরচ করে, লোকনিন্দার হাত থেকে বাঁচতেই মহিমার মত এসকর্ট প্রোভাইডারের কাছ থেকে ছেলে এসকর্ট ভাড়া নিয়ে নিজেদের তৃপ্ত করে।

নিজের মাথা থেকে চিন্তা সরিয়ে দিয়ে সে ফোন তুলে কন্টাক্ট লিস্ট দেখে একজনকে ফোন করে বলল, “হ্যা বিনয়, তুমি কাল বিকেলে ফ্রি আছ? একটা কল এটেণ্ড করতে পারবে”?

ও’পাশ থেকে একটা ছেলের গলা শোনা গেল, “হ্যা ম্যাডাম, কাল বিকেলে আমার কোন এপয়েন্টমেন্ট নেই। আপনার কাছে কোন রিকুইজিশন আছে কি”?
 

মহিমা বলল, “হ্যা কাল বিকেল চারটেয় দমদমের একটা জায়গায় যেতে হবে। পারবে”?

বিনয় বলল, “হ্যা পারব ম্যাম। তবে ক্লায়েন্ট মেল না ফিমেল”?

মহিমা জবাব দিল, “ফিমেল, নিয়ার এবাউট ফর্টি নাইন ফিফটি। একটু মোটার দিকেই। ঠিক যেমনটা তুমি পছন্দ কর”।
 

বিনয় বলল, “ওকে ম্যাম”।

মহিমা বলল, “ওকে বিনয়। তুমি কাল এগারটার পর আমার অফিসে চলে এস। আমি তোমাকে ডিটেইলস বুঝিয়ে তোমার চার্জ দিয়ে দেব, ওকে”?

বিনয় বলল, “ওকে ম্যাম”।

______________________________
[+] 1 user Likes riank55's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 02-03-2020, 09:12 PM



Users browsing this thread: