Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
#62
(Update No. 82)

রতীশ আবার বলল, “না বিমলজী, আপনি একদম ভাববেন না প্লীজ। ম্যাডামের সাথ কাজ শেষ হলে আমি চলে যাব। আমার কোন অসুবিধে হবে না। আপনার কাজটা অসম্পূর্ণ রেখে আমি কি আপনাকে আমাকে পৌঁছে দেবার কথা বলতে পারি? ছিঃ ছিঃ, এত স্বার্থপর তো আমি হতে পারব না”।

বিমলজী চেম্বার থেকে বেরোতে বেরোতেও থেমে দাঁড়িয়ে বলল, “তবু আপনি কিছু মনে করবেন না রতীশবাবু। আপনাকে আমি সাথে করে এনে এখান থেকে একা ছেড়ে দিচ্ছি, ভাবতেও খারাপ লাগছে আমার। প্লীজ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন” বলে বেরিয়ে গেল।

বিমল বেরিয়ে যেতেই মহিমা তার হাতের ঘড়ির দিকে একবার দেখে বলল, “তাহলে মিঃ ভট্টাচারিয়া, কি ভাবছেন? আমাদের এখানে কাজ করতে আপত্তি নেই তো আপনার”?
 

রতীশ একটু হেসে জবাব দিল, “ইন্টারভিউতে পাশ করেছি কি না, সেটাই তো জানিনা ম্যাডাম। আর আমাকে যদি আপনি কাজে রাখতে না চান, তাহলে আমি চাইলেই কি আর এখানে ঢুকতে পারব”?
 

মহিমা টেবিলের ওপর হাত রেখে একটু সামনের দিকে ঝুঁকে বলল, “ইন্টারভিউতে যে হান্ড্রেড পার্সেন্ট মার্ক্স পেয়েছেন, সে কথা তো বিমলের সামনেই বলেছি আমি। আমি বুঝতে পেরেছি, আমি যেমন একজন ট্রেনার খুঁজছিলাম আপনি তার থেকে অনেক অনেক ওপরে মিঃ ভট্টাচারিয়া। আপনাকে পেলে আমার খুব উপকার হবে। তাই আপনি মোটামুটি ধরে নিতে পারেন যে ইন্টারভিউতে আপনি পাশ করে গেছেন। কিন্তু ফাইনালি ‘হ্যা’ বা ‘না’ বলবার আগে আপনাকে আরো অনেক কথা বলার আছে আমার। আচ্ছা বিমলের মুখে শুনেছি আপনি বরানগরের দিকে কোথাও একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। জায়গাটা তো এখান থেকে বেশ দুর। ট্যাক্সি বা অটোতে আসতেও প্রায় ঘন্টা খানেক লেগে যাবে। বাসে সময় আরও বেশী লাগবে। কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে যে আমাদের এখানে জেনারেল সেশন স্টার্ট হয় সকাল ছ’টা থেকে। ছ’টা থেকে আটটা পর্যন্ত চলে। আমাদের অফিস এসিস্ট্যান্ট মেয়েটা, মানে বীথি, ও আসে সকাল সাতটায়। আর আমি সেন্টারে আসি সাড়ে সাতটা নাগাদ। কিন্তু ট্রেনারদের সকলকেই ছ’টার আগেই এখানে আসতে হয়। আপনি যদি এখানে জয়েন করেন, তাহলে আপনাকে তো ভোর অন্ততঃ সাড়ে চারটে পাঁচটার সময় বাড়ি থেকে বেরোতে হবে। অত সকালে তো মেট্রো পাবেন না। আর বরানগর থেকে দমদম এসে তবেই আপনি মেট্রো ধরতে পারবেন। তাতেও তো অনেকটা সময় লেগে যাবে। আর ও অঞ্চলে অত সকালে সিটি বাস চলতে শুরু করে দেয় কি না, সেটাও আমি ঠিক জানিনা। তাছাড়া সিটিবাস পেলেও যে রোজ ঠিক সময়ে এসে পৌছবেন, সেটাও একেবারেই আশা করা যায় না। কোন একটা অটো বা ট্যাক্সি ধরেই আপনাকে এখানে আসতে হবে। কিন্তু তাতে তো খরচও অনেক পড়বে। অটোতে এলেও তো কমপক্ষেও সত্তর আশি টাকা ভাড়া নেবে। ট্যাক্সিতে এলে তো আরও অনেক বেশী খরচ পড়বে। আর তাছাড়া বরানগর থেকে এদিকে আসতে হলে তো আপনাকে বেশ কয়েকটা অটো বদলে বদলে আসতে হবে। ডাইরেক্ট কোনও ট্যাক্সি বা অটো তো পাওয়া যাবে না। যাবার সময় অবশ্য অটো বা ট্যাক্সি না নিয়ে সিটি বাসে অথবা মেট্রোতে যেতে পারেন। সিটিবাসে সময় কিছুটা বেশী লাগলেও ভাড়া অনেক কম পড়বে। মেট্রোতে ভাড়া একটু বেশী হলেও সাত আট মিনিট পরপরই মেট্রো পেয়ে যাবেন। তাতে সময় সবচেয়ে কম লাগবে। তবু দমদম থেকে বরানগর অব্দি তো আর মেট্রো নেই। সেটুকু আপনাকে রিক্সা বা অটোতে যাওয়া আসা করতে হবে। আবার এদিকেও গড়িয়াতে আপনাকে মেট্রো থেকে নামতে হবে। তারপরে বাকি পথটুকু আবার অটোতেই আসতে হবে। তাই ধরে নেওয়া যায় যাতায়াত বাবদ রোজ আপনাকে বেশ কিছু অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবে। আচ্ছা আমি একটা কথা ভাবছি মিঃ ভট্টাচারিয়া। আপনি এদিকে কাছাকাছি কোথাও একটা ফ্ল্যাটে চলে আসতে পারবেন না? প্রয়োজন হলে ফ্ল্যাট খুঁজে পেতে আমি আপনাকে সাহায্য করব”।
 

রতীশ বলল, “ম্যাডাম সেটা তো এখনই বোধ হয় সম্ভব হবে না। আমরা এ’ মাসের এক তারিখেই ওই ফ্ল্যাটে এসেছি। এক বছরের জন্য সেটা লিজ নিয়েছি। এই একটা বছর পার না হতেই সে ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হবে না তো”।

মহিমা একটু ভেবে বলল, “হু, এদিকেও একটা প্রব্লেম আছে। আচ্ছা সে খরচের ব্যাপারটা যদি ছেড়েও দিই, আপনি কি মনে করেন, সেখান থেকে আসা যাওয়া করে আপনি এ কাজটা করতে পারবেন? দেখুন মিঃ ভট্টাচারিয়া। আপনাকে ঠিক সময়ে এসে কিন্তু পৌঁছতে হবে। ছ’টায় কিন্তু আপনাকে ক্লাসে ঢুকতেই হবে”।
 

রতীশ জিজ্ঞেস করল, “ম্যাডাম। এ ব্যাপারে দুটো কথা জিজ্ঞেস করতে পারি কি”?

মহিমা মিষ্টি করে হেসে বলল, “হ্যা হ্যা, নিশ্চয়ই। আপনার ফর্মাল ইন্টারভিউ তো শেষ হয়েই গেছে। আমরা এখন নিগোশিয়েশন স্টেজে এসে পৌঁছেছি। তাই আপনার যা কিছু জিজ্ঞেস করবার আছে, নিশ্চিন্তে সে’সব জিজ্ঞেস করতে পারেন”।
 

রতীশ জিজ্ঞেস করল, “আমার ডিউটি আওয়ার্স কী হবে? সকাল ছটা থেকে শুরু করে ক’টা পর্যন্ত আমাকে এখানে থাকতে হবে”?
 

মহিমা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বলল, “সকাল ছ’টা থেকে আটটা কম্পালসারি জেনারেল সেশনে আপনাকে থাকতেই হবে। তারপর একঘন্টার একটা ব্রেক। তখন আমরা সবাই ব্রেকফাস্ট করি। এই ব্রেকফাস্ট আপনাকে সেন্টার থেকেই দেওয়া হবে। বাড়ি থেকে আপনাকে কিছু বয়ে আনতে হবে না, বা বাইরে কোথাও গিয়েও আপনাকে খেতে হবে না। ব্রেকফাস্টের পর সকাল ন’টা থেকে আপনাকে কেবিন ক্লাস নিতে হবে। কেবিন ক্লাস হয় ন’টা থেকে সাড়ে দশটা অব্দি। সেন্টারের কাজ এখানেই শেষ। তাই ধরে নিন, সকাল ছ’টা থেকে রেগুলার সাড়ে দশটা অব্দি আপনাকে সেন্টারে থাকতে হবে”।

রতীশ বলল, “ম্যাডাম ভোর পাঁচটায় রাস্তায় যদি অটো চলাচল শুরু হয়ে যায়, তাহলে হয়ত আমার আসতে অসুবিধে হবে না। কারন অত সকালে ট্র্যাফিক জ্যামে পড়ার সম্ভাবনা কম। এক ঘন্টায় এখানে পৌঁছে যেতে পারবো আশা করি। তবে আসা যাওয়ার ভাড়া তো দিতেই হবে। এছাড়া আর অন্য কোনও ব্যাপারে যদি আর কিছু বলতে চান.... মানে আপনার এ ইনস্টিটিউটের ব্যাপারে বা এখানে কাজ করতে হলে আমাকে কি কি শর্ত মেনে চলতে হবে, এই সব”।

মহিমা মিষ্টি করে হেসে বলল, “বলার তো অনেক কথাই আছে মিঃ ভট্টাচারিয়া। কিন্তু আমার হাতে সময় থাকলেও বিমল আবার ওদিকে আমার অপেক্ষায় বসে আছে। তাই কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। আচ্ছা আপনি কি আজ বিকেলে আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবেন? ধরুন এই বিকেল ......”
 

কথার মাঝেই টেবিলের ওপর রাখা মহিমার মোবাইলটা বেজে উঠতে সে থেমে গিয়ে রতীশকে ‘এক্সকিউজ মি’ বলে ফোন কানে লাগিয়ে বলল, “হ্যালো কে বলছেন?..... ওহ মিঃ সরকার? হ্যা বলুন কি খবর?....... হ্যা সে তো আছেই, তা কবে চাইছেন? ...... পরশু সন্ধ্যেয়? ঠিক আছে আমি আপনাকে কাল সকালে কনফার্ম করব..... না না, তা নয়। আসলে আমার সেন্টার তো আজকের মত বন্ধ হয়ে গেছে। আমি তো ওর সাথে এখনই কথা বলতে পারছি না। ওর সাথে আমার কাল সকালেই দেখা হবে। আগে থেকে ওর কোন এপয়েন্টমেন্ট করা আছে কিনা সেটা না জেনে আপনাকে কী করে কনফার্ম করি বলুন? ..... হ্যা রেট তো সেটাই আছে। তবে ইন কেস, যদি ও যেতে না পারে তাহলে অন্য কাউকে পাঠাব কি”?

এরপর কিছুক্ষণ চুপ করে ওদিকের কথা শুনে হেসে উঠে বলল, “ওকে, মিঃ সরকার। আপনার টেস্ট তো আমার জানাই আছে। ঠিক আছে। একটা না একটা হয়েই যাবে। তবে আমি কাল দশটা নাগাদ আপনাকে কনফার্ম করছি ..... ওকে, থ্যাঙ্ক ইউ ভেরি মাচ ফর কলিং মি। বাই”।

ফোন রেখে রতীশের দিকে চেয়ে মহিমা বলল, “হ্যা মিঃ ভট্টাচারিয়া। কী যেন বলছিলাম? ওহ, হ্যা মনে পড়েছে। কিন্তু নাহ, থাক। বিকেলে আসতে হলে আপনাকে আবার দু’ঘন্টা বাস জার্নি করতে হবে। আচ্ছা শুনুন। আমাদের এ মালহোত্রা সেন যোগা ইনস্টিটিউটটা চালু হয়েছে প্রায় বছর ছয়েক হল। আমি আর আমার স্বামী মিঃ অরবিন্দ সেন দু’জনে পার্টনারশিপে এটা চালাচ্ছি। কিন্তু আমার স্বামী এ সেন্টার নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামান না। তার আলাদা ইলেকট্রনিক প্রোডাক্টসের ব্যবসা আছে। তিনি সে ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। এখানকার সব কিছুর ভার শুধু আমার ওপরেই। বর্তমান ডিমাণ্ড হিসেবে চারজন ট্রেনারের প্রয়োজন আমার। কিন্তু এখানে দু’মাস আগে পর্যন্ত তিনজন ট্রেনার ছিল। তবে তারা কেউই সত্যিকার যোগা টিচার নয়। অন্যান্য জায়গায় যোগা শিখে তারা এখানে ট্রেনার হিসেবে কাজ করছে। আমি নিজেই তাদের একটু শিখিয়ে পড়িয়ে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের ট্রেনীরা আর বাইরের লোকেরা জানে যে তারা ট্রেইন্ড যোগা টিচার। একজন সত্যিকারের যোগা টিচার কখনও আমি খুঁজেই পাই নি কলকাতায়। ওই তিনজন ট্রেনারের মধ্যে একজন ছিল মহিলা। সে প্রেগনেন্সির জন্য গত দু’মাস থেকে সেন্টারে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত তো সে আসবেই না। আর ডিসেম্বরে ডেলিভারি হবার পরেও যে ও সাথে সাথে এখানে আসতে শুরু করবে, সেটাও আশা করছি না। এমনও হতে পারে যে ও হয়ত পার্মানেন্টলি কাজটা ছেড়েই দেবে। আর আমাদের জেনারেল সেশনের তিনটে সেকসন মিলে বর্তমানে ট্রেনী আছে প্রায় চল্লিশ জন। কবিতা আসা বন্ধ করে দেবার পর থেকে একটা সেকশন বন্ধই রাখতে হচ্ছে। বরুন আর সুজয়কেই সামলাতে হচ্ছে সবাইকে। তাই ওদের ওপর বেশ চাপ পড়ছে দেখেই আমি আরেকজন ট্রেনার খুঁজছিলাম। আপনার মত একজন ট্রেনার পেলে আমি অনেক নিশ্চিন্ত বোধ করব। আর সত্যি কথা বলতে গেলে, আপনার মত এমন এফিসিয়েন্ট টিচার আমি আগে কখনো দেখিনি। তাই আমি যে কোন প্রকারেই হোক আপনাকে কাজে নিতে চাই”।

একটু থেমে দম নিয়ে মহিমা আবার বলল, “ডিউটি আওয়ার্সের ব্যাপারে তো আগেই বলেছি। এবারে অন্য কথাগুলো বলছি। সব অফিসে সব সেন্টারেই সাপ্তাহিক ছুটি বলে একটা কথা থাকে। আমাদের দেশে বেশীর ভাগ অফিসেই রবিবারে সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। কিন্তু আমাদের সেন্টার তো সপ্তাহে সাত দিনই খোলা রাখতে হয়। তাই ট্রেনাররা এক এক জন সপ্তাহের এক এক দিন ছুটি পায়। বরুনের সাপ্তাহিক ছুটি সোম বার। সুজয়ের মঙ্গলবার, আর কবিতার বুধবার। আপনি এখানে কাজে যোগ দিলে আপনাকে সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া হবে বৃহস্পতি থেকে রবিবারের মধ্যে যে কোন একদিন। সেটা আপনি পছন্দমত নিজে বেছে নিতে পারেন। আর এ ছাড়া প্রতি মাসে একদিন করে বছরে বারো দিন সবেতন ক্যাজুয়াল লিভ পায় সকলে। তবে এই ক্যাজুয়াল লিভ জমিয়ে রেখে একসঙ্গে নিতে চাইলেও কেউ একবারে চারদিনের বেশী ছুটি নিতে পারে না। সাপ্তাহিক আর ক্যাজুয়াল লিভ বাদে আমাদের এখানে আর কোন ছুটি কেউ পায় না। কোন কারনে হিসেবের ছুটি শেষ হয়ে যাবার পরেও কেউ যদি কাজে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে প্রোরাটা বেসিসে তার বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়ে থাকে”।

আবার কিছু সময় থেমে সে বলল, “আর সরকারী অফিসের চাকরিতে যেমন প্রভিডেন্ট পেনশন গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি থেকে থাকে, সে’সব জিনিস আমাদের এখানে কিছু নেই। যে যতদিন কাজ করবে, ততদিন বেতন পাবে। আর যেহেতু এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যবসা এখানে অন্যান্য অফিসের মত কোন রুলস রেগুলেশনস নেই। তবে সব কিছুই হবে আমার কথামত। মানে আমি যাকে যা বলি, তাকে সেটাই করতে হয়। তবে আমার সাথে যারা কাজ করেছে বা এখনও করছে তারা সবাই জানে যে আমি কারুর মতের বিরুদ্ধে গিয়ে জোর করে কাউকে দিয়েই কিছু করাই না। আমার কথা বা আমার নির্দেশ মেনে চলতে কারুর অসুবিধে হলে কোনরকম বাদবিবাদে না গিয়ে তারা এখানকার কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে পারে। তেমন ক্ষেত্রে আমিও তাদের হাসিমুখে বিদেয় দিই। তবে সেক্ষেত্রে দু’মাস আগে রিজাইন করবার নোটিস দিতে হবে। এখানে কাজে জয়েন করবার আগে সবাইকেই একটা এগ্রিমেন্ট সাইন করতে হয়। সে এগ্রিমেন্টে এ’সব কথা লেখা থাকে”।

এইটুকু বলে নিজের হাতের ঘড়ির দিকে আরেকবার দেখে মহিমা বলল, “ইশ,আচ্ছা মিঃ ভট্টাচারিয়া, কিছু মনে করবেন না প্লীজ। আপনার সাথে আরও অনেক কথা বলবার আছে আমার। কিন্তু বিমল বেচারাকে আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখি। তাই বলছিলাম কি, আমি একটু বিমলকে বলে আসছি। আপনি প্লীজ একটু বসুন” বলতে বলতে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ল।
 

রতীশ বলল, “ঠিক আছে ম্যাডাম, আমি অপেক্ষা করছি”।

মহিমা বেরিয়ে যাবার পর রতীশ ভাবতে লাগল, সেন্টারটা ঘুরে ফিরে দেখে তার সত্যিই খুব ভাল লেগেছে। বেশ সাজানো গোছানো। সে নিজেও মনে মনে ভেবেছিল, এমনই সাজানো গোছানো একটা যোগা সেন্টার সে খুলবে। আর সকাল বিকেল দু’বেলা সেখানে যোগা ক্লাস চলবে। রচনা সারাটা দিন বাড়িতে একা একা বসে থাকে। বিকেলের দিকে সেও সেন্টারে এসে অফিসে বসতে পারবে। কিন্তু তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। রবিশঙ্করের মনের ভেতরের দুরভিসন্ধি সে ঘূণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি। সে ভেবেছিল বিদেশ বিভূঁইয়ে এসে রবিশঙ্করের মত পরিচিত একজনকে মাঝে সাঝে সাথে পেলে তার আত্মবিশ্বাসটা বাড়ত। কিন্তু কোত্থেকে কী হয়ে গেল। যার ওপর ভরসা করে সে কলকাতা এসেছিল সে লোকটাই কলকাতায় পা দেবার সাথে সাথেই তাকে প্রায় সর্বস্বান্ত করে দিশেহারা করে ছেড়েছে।
 

মহিমা নিজের চেম্বার থেকে বেরিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে লিফটে চেপে নিচের তলায় এসে করিডোর ধরে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে একটা দরজায় নক করতেই দরজাটা খুলে গেল। মহিমা ভেতরে ঢুকেই দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে পেছন ফিরে দেখে বিমল শুধু জাঙ্গিয়া আর গেঞ্জী পড়ে বিছানায় বসে আছে। টিভিতে একটা ব্লু ফিল্ম চলছে। টেবিলের ওপর হুইস্কির গ্লাস বোতল। বিমলের জাঙ্গিয়ার সামনেটা বেশ উচিয়ে আছে। মহিমার বুঝতে অসুবিধে হল না, এটা ব্লু ফিল্মের প্রভাব। সে মিষ্টি করে হেসে বিমলের দু’পায়ের ফাঁকের মধ্যে দাঁড়িয়ে একটু ঝুঁকে বিমলের ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল, “বেশ মজাই তো করছ। আমি ভাবছিলাম তুমি বুঝি একা একা বোর হচ্ছ। কিন্তু তোমাকে আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে ডার্লিং। আমি আধঘন্টা বাদে তোমার কাছে আসছি। প্লীজ ডোন্ট মাইণ্ড”।
 

বিমল দু’হাতে মহিমার কোমর জড়িয়ে ধরে তার পাছার দাবনা দুটো টিপতে টিপতে জিজ্ঞেস করল, “এখনও তোমার ইন্টারভিউ শেষ হয়নি? নাকি ইয়ং হ্যাণ্ডসাম একজনকে পেয়ে নিজের চেম্বারেই শুরু করে দিয়েছ”?
 

মহিমা বিমলের গালে একটা আদরের চাটি মেরে বলল, “কাম অন বিমল। তুমি জান যে সেন্টারে আমি কখনও এ’সব এলাও করি না। আর ও’সব তো সারা জীবনে অনেক করেছি ডার্লিং। এখন একমাত্র তুমি ছাড়া এই সাতচল্লিশ বছরের বুড়ি আর কোন ইয়ং ম্যানের কাছে যায় না। তোমার ডাকেই শুধু আমি সাড়া দিই এখন। তা এটা কি সঙ্গে করে এনেছিলে না কি”? বলে টিভির দিকে ঈশারা করল।

বিমল শালোয়ারের ওপর দিয়ে মহিমার অসম্ভব ভরাট আর উঁচু বুকে মুখ ঘসতে ঘসতে বলল, “আমি তো আগে থেকেই অনুমান করেছিলাম যে রতীশবাবুর সাথে তুমি আগে কথা সেরে নেবে। আর আমাকে একা একা বসে বোর হতে হবে। তাই এটা সাথে করেই এনেছিলাম। দেখে দেখে সময় কাটছে ভালই। অনেক দিন বাদে ব্লু ফিল্ম দেখার সুযোগ পাচ্ছি। তা তুমি রতীশবাবুকে বসিয়ে রেখে এলে কেন ডার্লিং? একবারে তাকে বিদেয় দিয়েই তো আসতে পারতে”।
 

মহিমা বলল, “দেরী হচ্ছে বলেই তোমাকে বলতে এলাম। আর কিছুক্ষণ সময় দাও ডার্লিং। আমি ওকে বিদেয় করে আসছি” বলে একহাত বাড়িয়ে বিমলের জাঙ্গিয়া সমেত তার ঠাটিয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গটাকে মুচড়ে দিল।
 

বিমল জাঙ্গিয়ার ভেতর থেকে তার স্ফীত পুরুষাঙ্গটাকে হঠাৎ করে টেনে বের করে দিয়ে বলল, “এসেছই যখন, তখন একটু সাক করে দাও না ডার্লিং। কতদিন বাদে তোমাকে চুদব বলে এসেছি। ব্লু ফিল্ম দেখতে দেখতে বাড়াটা কেমন ঠাটিয়ে উঠেছে দেখছ”?
 

মহিমা চট করে হাঁটু গেঁড়ে বসে বিমলের পুরুষাঙ্গটাকে নিজের মুখে ঢুকিয়ে নিয়ে কয়েকবার চুসেই ছেড়ে দিয়ে বলল, “তোমার লণ্ড চুসতে চুসতে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে ডার্লিং। আমি বরং তোমার জন্য একটা নতুন কিছু দিয়ে যাচ্ছি। এ ছবিটা তো আগেও দেখেছ। আজ একটা রাজস্থানী ব্লু ফিল্ম দেখাচ্ছি। তোমার নিজের ভাষার ছবি। নিশ্চয়ই ভাল লাগবে তোমার” বলে টিভির দিকে এগিয়ে গিয়ে নিচের একটা ড্রয়ার থেকে একটা সিডি বের করে প্লেয়ারে লোড করে দিয়ে উঠে বলল, “তুমি এটা দেখতে থাক। খুব বেশী লম্বা ছবি নয় এটা। তিরিশ পঁয়ত্রিশ মিনিটের মত। এটা শেষ হতে হতে আমি চলে আসব। আসছি তাহলে। তুমি দরজাটা বন্ধ করে দাও” বলে ঘর থেকে বেরিয়ে এল।

নিজের চেম্বারে ঢুকেই মহিমা বলল, “সরি মিঃ ভট্টাচারিয়া। আপনাকে একা বসিয়ে রেখে চলে গিয়েছিলাম বলে আমাকে ক্ষমা করবেন”।
 

রতীশ নিজের ভাবনা থেকে সরে এসে চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে উঠে বলল, “ঠিক আছে ম্যাডাম। আমার কোন সমস্যা হয়নি। বিমলজীকে আমার জন্যই সেখানে একা একা বসে থাকতে হচ্ছে বলে আমারই ভাল লাগছে না”।
 

মহিমা নিজের চেয়ারে বসতে বসতে বলল, “ইটস ওকে, ওকে বুঝিয়ে এসেছি। আচ্ছা মিঃ ভট্টাচারিয়া শুনুন। আমাদের এখানকার নিয়ম কানুন তো মোটামুটি ভাবে বলা হয়ে গেছে। তবে আপনি একটা কথা শুনে রাখুন। কাজে যোগ দেবার সময় অফিসের নিয়মানুযায়ী আপনাকে কিন্তু একটা এগ্রিমেন্টে সই করতে হবে। সে এগ্রিমেন্টে ধরাবাঁধা কিছু রুলস এণ্ড রেগুলেশনস থাকবে। কিন্তু ওই এগ্রিমেন্টে এমন কথা লেখা না থাকলেও আপনি জেনে রাখুন, ছুটির ব্যাপারে বা ডিউটির ব্যাপারে যেসব কথা আপনাকে এতক্ষণ বলেছি, সেটা বাকি সকলের মত আপনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে ঠিকই। কিন্তু এর বাইরেও আমি আপনার জন্য আরো কিছু সুযোগ সুবিধে দেব। আর ডিউটির ব্যাপারে আগে যেমন বলেছি, আপনাকে জেনারেল সেসন আর কেবিন ট্রেনীং ছাড়া আর কিছুই করতে হবে না। আমি আশা করছি আপনি আমার সেন্টারের জন্য একটা মূল্যবান এসেট হবেন। তাই আপনার জন্য ধরা বাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে আমি আরো কিছু সুযোগ সুবিধে দেব। সে’সব পরে কখনো আমরা আলাপ করব। আপাততঃ যে কথাগুলো না বললে আপনার পক্ষে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে না সে’গুলোই বলছি। শুনুন মিঃ ভট্টাচারিয়া, এখানে অন্যান্য ট্রেনাররা মাসে মাসে পনের হাজার বেতন পায়। কিন্তু এ ইনস্টিটিউটের কাজটা তাদের কাছে একটা পার্ট টাইম জব। তারা আমার ইনস্টিটিউটের কাজ ছাড়াও আরও কিছু আউটডোর কাজের সাথে যুক্ত আছে, যা এ ইনস্টিটিউটের কাজের মধ্যে একেবারেই পড়ে না। আপনাকে তো শুধু সেন্টারের কাজের জন্য চাইছি আমি। আমার ধারণা শারিরীক অসুস্থতা রিকভারি করতে যেসব ট্রেণী আমাদের এখানে আসে, আপনি তাদের কেস স্টাডি করে সঠিক এক্সারসাইজ প্রেসক্রাইব করতে পারবেন। আর আমি চাইব আমাদের অন্যান্য ট্রেনারদেরও আপনি একটু টিপস দেবেন। কারন কোন কোন রোগের পেশেন্টকে কোন কোন আসন করাতে হয় আর কোন কোন আসন করানো ঠিক নয়, এসব ব্যাপারে তারা তো একেবারেই অজ্ঞ। কিন্তু আপনি সেটা সঠিক ভাবে বুঝতে পারবেন। তাই আমি চাই আপনি বরুন আর সুজয়কেও এ ব্যাপারে একটু শিখিয়ে পড়িয়ে দেবেন। তাই শুরুতেই আমি আপনাকে মান্থলি অন্যান্য ট্রেনারদের দেড়গুন স্যালারি দেব। আপনাকে মাসে মাসে বাইশ হাজার দেব। আর যেহেতু আপনাকে এতদুর থেকে আসা যাওয়া করতে হবে, তাই আপনাকে আলাদা করে চার হাজার টাকা আমি কনভেয়ান্স এলাওন্স হিসেবে দেব। তাহলে সব মিলিয়ে শুরুতে আপনি মোট ছাব্বিশ হাজার টাকা পাচ্ছেন মান্থলি। বাকি টুকটাক ব্যাপারে আমরা পরে নিগোশিয়েশন করে নিতে পারব। এবার আপনি বলুন। আপনি রাজি আছেন”?
 

রতীশ কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে থেকে বলল, “ম্যাডাম, আমি বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্যে আছি তাতে আপনার অফার মেনে নেওয়াই উচিৎ আমার। কিন্তু ম্যাডাম, আমার বাড়ি তো নর্থ বেঙ্গলে। ট্রেণে যেতে প্রায় বারো ঘন্টা লেগে যায়। আর প্রতি মাসে বাড়ি না গেলেও বিশেষ বিশেষ অকেশানে বা পুজোর সময় আমাকে তো বাড়ি যেতেই হবে। আর একবার বাড়ি যেতে হলে আমাকে তো কম করেও চার পাঁচ দিনের ছুটির প্রয়োজন হবে”।

মহিমা একটু হেসে বলল, “মিঃ ভট্টাচারিয়া, আমি আপনাকে আগেই বলেছি, ধরাবাঁধা নিয়মের বাইরেও আমি আপনাকে কিছু কিছু অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধে দেব। আপনি আমার কাছে যেমন স্পেশাল, তেমনি আমার তরফ থেকেও কিছু স্পেশাল কনসিডারেশনও পাবেন। শুধু আমাদের দু’জনের মাঝে লয়ালটিটা বজায় থাকতে হবে। তবে হ্যা, আপনি ভাববেন না যে লয়ালটি আশা করে আমি আপনার ওপর কোন রকম জোর জুলুম করব। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি। আপনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে আপনাকে কিছু করতে আমি বাধ্য করব না। আর যে লয়ালটির কথা বললাম সেটা যে একতরফা আপনার তরফ থেকেই রাখতে হবে তা নয়। আমিও একই সমান লয়ালটি বজায় রাখবার চেষ্টা করব। কিন্তু ট্রেনীদের যথার্থ ভাবে শিক্ষা এবং ট্রিটমেন্ট দেবার ব্যাপারে নিজের বিচার বুদ্ধি দিয়ে বরুন আর সুজয়কেও আপনি সাহায্য করবেন প্লীজ”।

রতীশ বলল, “ম্যাডাম, সে ব্যাপারে আমার বিরুদ্ধে আপনার কোন অভিযোগ হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু ম্যাডাম, যদি অভয় দেন, আর যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে আমার মনের একটা প্রশ্ন আপনাকে করতে চাইছি”।

মহিমা রতীশের কথা শুনে মিষ্টি হেসে বলল, “বেশ তো করুন না”।


______________________________
[+] 1 user Likes riank55's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 02-03-2020, 09:07 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)