01-03-2020, 04:45 PM
[৩৩]
খাদিজা আক্তার রান্না শেষ করে স্নানে ঢুকলো।কলেজ যেতে হবে।কাল দেবের আসার কথা,পাড়ায় এসে জানতে আর কিছু বাকী থাকবে না।আশায় ছিল দেব কলেজে আসবে,আসেনি। কাল কি ফেরেনি? যশবিন্দার না কি তার পাল্লায় পড়লো নাতো? বাচাদের যেমন টফি দিয়ে সহজে ভোলানো যায় দেবটাও সেই রকম। দেবের যদি না আসতে ইচ্ছে হয় না আসুক খাদিজা বাস্তবকে মেনে নিতে নিজেকে মনে মনে প্রস্তুত করে। কলেজে দু-একজন ঠাট্টা করে তাকে মিসেস সোম বলে।খাদিজা হাসলো, দেবকে সবার সঙ্গে পরিচয় না করালেই ভাল হত। ফ্লাট সম্পুর্ণ হতে আরো মাস খানেক লাগবে। খেয়ে দেয়ে রুটিনের উপর চোখ বুলায়।আজ সিক্সথ পিরিয়ড অবধি ক্লাস।
ওদের কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছিল ওরা তাকে আর দেবকে নিয়ে একটা স্ক্যাণ্ডাল রটাতে চেয়েছিল। খাদিজা সেজন্য বিতর্ক এড়াতে মেনে নিয়েছিল সব।তাছাড়া কলেজের কাছাকাছি ফ্লাট হচ্ছে দেখেছিল। মাঝে মধ্যে কলিগরাও আসতে পারে। পজেশন পেলে একদিন গিয়ে মালপত্তর নিয়ে আসবে।প্রোমোটার ভদ্রলোকের ব্যবহার খারাপ নয়। ভদ্রলোক বলেছেন পুরানো ফ্লাট বেঁচে দেবার ব্যবস্থা করে দেবেন। দেব অন্তত একটা ফোন করতে পারতো। নিজেকে ধমক দেয় আবার দেবের কথা ভাবছে। সেদিন লক্ষণবাবুর ব্যবহার খারাপ লাগেনি।উকিল ভদ্রলোক খুব নোংরা নোংরা কথা বলছিল।যা হয়ে গেছে তা নিয়ে আর ভাবতে চায় না।দেব ভর্তি হয়েছে ভাল পড়াশুনা করুক।আল্লাহতালার যা মর্জি সেইমত চলবে খাদিজা।না তার মনে কোনো আক্ষেপ নেই। যা পেয়েছে তাতেই খুশি যা পায়নি তা পাওনা নয় বলে মেনে নিয়েছে। ক্লাসে ঢোকার আগে সানগ্লাস খুলে ব্যাগে রাখলো।একটার পর একটা ক্লাস একসময় টিফিন হয়।এরপর পঞ্চম ঘণ্টায় ক্লাস নেই আবার ষষ্ঠ ঘন্টা তারপর আজকের মত ছুটী।টিফিন আওয়ার শেষ হতে চলল খাদিজা বাথরুমে যাবার জন্য বেরিয়ে চমকে উঠল,দ্রুত এগিয়ে গেয়ে জিজ্ঞেস করে,তুমি কখন এলে?
--আমাকে তো কিছু বলোনি?উত্তেজিত গলায় বলে পল্টূ।
--ফোনে সব কথা বলা যায়না।খাদিজা বলল।
--যেটুকু বলা যায় সেটুকু বলতে পারতে?
--কি হচ্ছে কি ভুলে যেওনা এটা কলেজ।
--ঠিক আছে বাইরে চলো দেখাচ্ছি।
--মারবে নাকি?
--দরকার হলে মারতে হবে।
অতিকষ্টে হাসি চাপে খাদিজা আক্তার।পাগলকে কিভাবে সামলাবে ভাবছে আঙ্গুরদিকে আসতে দেখে জিজ্ঞেস করে,আঙ্গুরদি তোমার হাতে কোনো কাজ নেই তো?
--কি টিফিন আনতে হবে?
খাদিজা ব্যাগ খুলে দুটো টাকা আর একটা চাবি দিয়ে বলল,তুমি ওকে আমার বাসাটা দেখিয়ে দেবে?
--এই টাকা?
--তোমাকে দিলাম।দেব তুমি ওর সঙ্গে যাও।
--তুমি যাবে না?
--আমার একটা ক্লাস আছে ওটা করবো না তুমি বলো?
--ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসবে।আঙ্গুরদির সঙ্গে চলে গেল দেব।স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে খাদিজা।অনেক বদলেছে দেব কথার মধ্যে একটা প্রভুত্বের ভাব খাদিজার ভাল লাগে। কদিনে অনেক বড় হয়ে গেছে পাশাপাশি দাড়ালে বয়সের ব্যবধান এখন আর তত চোখে লাগে না।মনে গান বেজে ওঠে।গুনগুন করতে করতে বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল।
প্রনতিদি বাথরুমে বসে শুনছেন,পাশের বাথরুম থেকে মৃদু স্বরে গান ভেসে আসছে। "আরো আরো আরো প্রভু আরো/এমনি করে আমায় মারো/লুকিয়ে থাকি আমি পালিয়ে বেড়াই/ধরা পড়ে গেছি আর কি এড়াই....।" মনে হচ্ছে অঞ্জনার গলা।বেশ মিষ্টি গলা,বাথরুম থেকে বেরিয়ে দুজনের দেখা হতে প্রণতি জিজ্ঞেস করে,তোর এত দুঃখ কিসের রে?
খাদিজা বেগম মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করে,এখন তোমার ক্লাস ?
--হ্যা কেন?
কি ভেবে খাদিজা বলল,না থাক তোমার কাজ থাকতে পারে।
--ঢং করিস নাতো? কি ব্যাপার বল?
--প্রণতিদি তোমার পরেই আমার ক্লাস মানে মানে,ইতস্তত করে খাদিজা বেগম।
--কি মানে মানে করছিস যা বলার তাড়াতাড়ি বল,আমার ক্লাস আছে।
--তোমার অসুবিধে না হলে আমি এখন যেতে পারি--।
--আর পরের ঘণ্টায় আমি যাবো?
হেসে ফেলে খাদিজা বেগম।প্রণতিদি বলল,ঠিক আছে তুই যা তুই এমন করছিস যেন কিই না কি?
--থ্যাঙ্ক ইউ প্রণতিদি।
খাদিজা বেগম খাতা নিয়ে দ্রুত ক্লাসে চলে গেল।মেয়েরা অবাক হয় মুখ চাওয়া চাওই করে,কিরে ওয়াহিদা রেহমান? একজন জিজ্ঞেস করে,ম্যাম পিজি আজ আসেন নি?
--উনি পরের ঘণ্টায় আসবেন।খাদিজা পড়াতে শুরু করে। মেয়েরা ভেবেছিল ছুটি পাবে,হতাশ হয়।
আঙ্গুরদির পিছনে পিছনে যেতে যেতে পল্টূ জিজ্ঞেস করে,ম্যাডামের ফ্লাট কতদুরে?
--ছেড়ে আসলাম।দেখেন নাই?আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলল,ওই তো ঐ বাড়ীটার তিনতলায়। পাথর প্যারিস হয়ে গেছে।আরো মাস খানেক লাগবে।দেখবেন?
--তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি?
--ম্যাডাম এখন যেখানে থাকে।এই যে সামনে।
পল্টূ দেখলো একটা চারতলা বাড়ী নতুন হয়েছে,বারান্দায় শাড়ী ঝুলছে।সেই বাড়ীর একতলার একটা ফ্লাটের দরজায় ঝোলানো তালা খুলছে আঙ্গুরদি।তারপর চাবিটা পল্টুকে দিয়ে বলল,আমি যাই?
আঙ্গুরদি বিদায় হতে পল্টূ ভিতরে ঢুকে দেখল মেঝেতে পরিপাটি বিছানা পাতা।বেগম সাহেবা তাহলে এখন ভুমি শয্যায় শয়ন করে? ঘুরে ঘুরে দেখে একটা দড়ীতে ঝুলছে শাড়ী অন্ত্রর্বাস ইত্যাদি।দড়িতে ঝোলানো একটা ব্রেসিয়ার নিয়ে গন্ধ শোকে পল্টূ।উঃ কতদিন পর। কোনোঘরে কোন আসবাব নেই।রান্না ঘরে ষ্টোভ তার মানে গ্যাস পুরানো বাসায় রয়েছে।
জুতো খুলে টান টান হয়ে শুয়ে পড়ল পল্টূ। বালিশে নাক গুজে দিয়ে বেগম সাহেবার স্পর্শ পায়।মাথার উপর পাখা রয়েছে উঠে পাখা ঘুরিয়ে দিয়ে আবার শুয়ে পড়ে।
ক্লাস শেষ করে বেরোতে প্রণতিদির সঙ্গে দেখা খাদিজা হাসল।
--খুব তাড়া আছে মনে হচ্ছে?জিজ্ঞেস করে প্রণতিদি।
তাকে মারবে বলে একজন বসে আছে বাসায় খদিজা ভাবে, একথা বলা যায় না প্রণতিদিকে। ধন্যবাদ প্রণতিদি বলে দ্রুত বিশ্রাম কক্ষে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে খাদিজা বেগম সিড়ি দিয়ে নামতে থাকে দ্রুত।কথায় বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। শ্রীময়ী পথ আটকে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার মিসেস সোম মার খেতে এত ইচ্ছে কেন?
প্রণতিদির কাছে সব শুনেছে বুঝতে পারে খাদিজা হেসে জিজ্ঞেস করে,তার আগে তুমি বলতো তোমার স্বামী কি কখনো তোমার গায়ে হাত দিয়েছে?
--না ভাই আদরে আদরে বোর হয়ে ইচ্ছে করে একটু আঘাত পেতে।দুঃখ দুঃখ ভাব করে বলে শ্রীময়ী।
--হি-হি-হি। আঘাত পেয়েছো?
--কান ধরে টেনে ভাবলাম এইবুঝি রেগে গিয়ে কিছু করবে। মক্কেল তাতেও খুশি।কিন্তু তোমার ব্যাপারটা কি?
দূর থেকে আঙ্গুরকে আসতে দেখে খাদিজা বলল,কিছু মনে কোর না একটূ তাড়া আছে,পরে সব বলবো।
--আমি অপেক্ষা করবো।শ্রীময়ী হাসতে হাসতে চলে গেল।
আঙ্গুরদি কাছে আসতে জিজ্ঞেস করে,ওষুধের দোকান খোলা ছিল?
--বড় রাস্তা থেকে এনেছি।আঙ্গুরদি মোড়কটা এগিয়ে দিতে খাদিজা ব্যাগে ভরে নিল।
বলা যায় না কি হতে কি হয়ে যায় সাবধানতা নিয়ে রাখা ভাল।ঐ সময় মানুষ নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না।একা একা কি করছে পাগলটা?বাড়ীর যত কাছে আসে বাড়তে থাকে মনের চঞ্চলতা।দরজা খুলে সন্তর্পণে ভিতরে ঢুকে দেখল তার বিছানায় নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে দেব। পাশে দাঁড়িয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে খাদিজা বেগম।কেমন নিষ্পাপ শিশুর মত বালিশ চেপে ধরে ঘুমোচ্ছে। দুশ্চিন্তার কোনো ছাপ নেই চোখে মুখে।এমবিবিএস পাশ করেছে একেবারে বোকা তাতো নয়। ঘুম ভাঙ্গলেই শুরু হবে তড়পানি খাদিজা বেগম জানে।শরীর মনে বয়ে যায় ফুরফুরে বাতাস। খাদিজা শাড়ী খুলে ফেলে।দড়িতে ঝোলানো একটা আটপৌরে শাড়ী টেনে নিয়ে জামা খুলে ব্রেসিয়ার খুলে দড়িতে ঝুলিয়ে রাখে। ব্রেসিয়ার না পরেই জামা গায়ে দিল।তারপর শাড়ী পরে আঁচল ঘুরিয়ে কাধে ফেলতে গিয়ে নজরে পড়ে ড্যাবডেবিয়ে তাকিয়ে আছে দেব। চোখাচুখি হতেই উলটো মুখ হয়ে পাশ ফিরিয়ে শোয়।মুচকি হেসে খাদিজা বিছানার একপাশে বসে। পল্টু উঠে একটূ সরে বসলো।
খাদিজা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেবকে দেখে বলে,এসেই শুয়ে পড়েছো,জামা কাপড় ছাড়ার সময় পাওনি?
--আমি কি এখানে শোবার জন্য এসেছি--?
আচমকা পল্টুর বুকে উপর ঝাপিয়ে পড়ে হাত দিয়ে গলার কাছ থেকে কি যেন সরিয়ে দিল।ধাক্কা সামলাতে না পেরে পল্টূ চিত হয়ে পড়ে।কিছু বোঝার আগেই খাদিজা উঠে মেঝের কোন দিয়ে হেটে যাওয়া বিছেকে চটি দিয়ে চিপটে দেয়।পল্টু দেখল কালো মিশমিশে একটা তেতুল বিছে একেবারে থেতলে দিয়েছে।
পল্টু অবাক হয়ে বলল,ইস কত বড় তোমার কি একটূ ভয়ডর থাকতে নেই? একটা ঝাড়ণ দিয়ে ফেলতে পারতে ,হাত দিয়ে কেউ ফেলে?
--বিছেটা দেখলাম তোমার কলার থেকে গলার দিকে এগোচ্ছে।একবার মনে হল বলি 'ও বিছেভাই একটু দাঁড়াও আমি ঝাড়ণ নিয়ে আসছি।' খিলখিল করে হাসে খাদিজা।
--কামড়ালে হাসি বেরিয়ে যেত।পল্টূ মুখ গোমড়া করে বলে।
খাদিজা উঠে পাশের ঘর থেকে একটা শাড়ী এনে ভাজ করে বলল,এটা লুঙ্গির মত করে পরো।
পল্টু উঠে প্যাণ্ট বদলে শাড়ী পরতে লাগলো।খাদিজা বলল,জানো দেব ছোটো বেলা থেকে আমার ভয় ডর কম।
পল্টূ লুঙ্গি পরে শুয়ে পড়ে বলল,হ্যা সেতো দেখতে পাচ্ছি,কতগুলো আজেবাজে লোকের ভয়ে নিজের ফ্লাট ছেড়ে পালিয়ে এলে।
--শোনো দু-পা এগিয়ে কখনো এক-পা পিছিয়ে আসতে হয়।
--নিজের দুর্বলতা চাপা দেবার জন্য ভালই যু্ক্তি।
খাদিজা বেগম পল্টূর পেটে আঙ্গুল বোলাতে বোলাতে বলল, তুমি ঠিকই বলেছো দুর্বলতা। ওদের মধ্যে তোমার মামাও ছিলেন।কথাবার্তা শুনে বুঝলাম ওদের লক্ষ্য আমি নয় ওরা তোমার গায়ে কাদা ছেটাতে এসেছিল।পল্টুর কোমর জড়িয়ে ধরে বলল,নিজের জন্য ভাবি না,কিন্তু তোমাকে লোক সমক্ষে হেয় করবে আমি সহ্য করতে পারবো না।
পল্টুর মুখে কথা সরে না।বেগমের চুলে হাত বিলি কাটতে কাটতে বলল,তুমি আমার কথা এত ভাবো?
খাদিজা মুখ ঘুরিয়ে পল্টুর দিকে চোখ তুলে বলল,খোদা আমাকে তোমার দেখভালের জন্য পাঠিয়েছে।
পল্টু তাকিয়ে থাকে ছুরির মত নাক গোলাপের পাপড়ির মত ওষ্ঠদ্বয় নত হয়ে মুখে পুরে চুষতে লাগল।খাদিজা দু-হাতে দেবের গলা জড়িয়ে ধরে।পল্টু বলে,তুমি খুব সুন্দর।
--যশবিন্দারের চেয়েও?
পল্টু ঠেলে সরিয়ে দিতে খাদিজা বেগম উঠে বসে জিজ্ঞেস করে,রাগ করলে?
--তূমি যশবিন্দারের কথা কেন বললে?
--ভুল হয়ে গেছে।একটা কথা বলবো রাগ করবে না?
--আগে বলো শুনি।
--আজ এখানে থাকবে?
--মম চিন্তা করবে কি করে থাকবো বলো?
--ফোন করে বলো জরুরী কাজে আজ ফিরতে পারছো না।
--তা হয়না বেগম সাহেবা,আমি মমকে বানিয়ে কিছু বলতে পারবো না।
--আমি জানি তুমি পারবে না।আচ্ছা আমি যদি মমের অনুমতি নিই?
পল্টূ দু-হাতে জড়িয়ে বুকের মধ্যে মুখ ঢুকিয়ে বলল,তোমার যা ইচ্ছে।আমি সব সময় তোমাকে ছুয়ে থাকতে চাই।কিন্তু এখানে বিছানা নেই থাকবো কোথায়?
খাদিজা লক্ষ্য করলো দেবের আকর্ষণ তার বুকের প্রতি। জামা খুলে বুক খুলে দিয়ে দেবকে বুকে চেপে বলল,আমার হৃদ মাঝারে থাকবে।
নরম বুকে যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় পল্টূ।নরম মখমলের মত, কি শান্তি বুকের মধ্যে মনে হয় জগৎ বিস্মৃত হয়ে বুকের মাঝে হারিয়ে যায়।স্তন বৃন্ত মুখে নিয়ে চুষতে থাকে।মনে পড়ে যায় শৈশবের কথা।
খাদিজা আক্তার রান্না শেষ করে স্নানে ঢুকলো।কলেজ যেতে হবে।কাল দেবের আসার কথা,পাড়ায় এসে জানতে আর কিছু বাকী থাকবে না।আশায় ছিল দেব কলেজে আসবে,আসেনি। কাল কি ফেরেনি? যশবিন্দার না কি তার পাল্লায় পড়লো নাতো? বাচাদের যেমন টফি দিয়ে সহজে ভোলানো যায় দেবটাও সেই রকম। দেবের যদি না আসতে ইচ্ছে হয় না আসুক খাদিজা বাস্তবকে মেনে নিতে নিজেকে মনে মনে প্রস্তুত করে। কলেজে দু-একজন ঠাট্টা করে তাকে মিসেস সোম বলে।খাদিজা হাসলো, দেবকে সবার সঙ্গে পরিচয় না করালেই ভাল হত। ফ্লাট সম্পুর্ণ হতে আরো মাস খানেক লাগবে। খেয়ে দেয়ে রুটিনের উপর চোখ বুলায়।আজ সিক্সথ পিরিয়ড অবধি ক্লাস।
ওদের কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছিল ওরা তাকে আর দেবকে নিয়ে একটা স্ক্যাণ্ডাল রটাতে চেয়েছিল। খাদিজা সেজন্য বিতর্ক এড়াতে মেনে নিয়েছিল সব।তাছাড়া কলেজের কাছাকাছি ফ্লাট হচ্ছে দেখেছিল। মাঝে মধ্যে কলিগরাও আসতে পারে। পজেশন পেলে একদিন গিয়ে মালপত্তর নিয়ে আসবে।প্রোমোটার ভদ্রলোকের ব্যবহার খারাপ নয়। ভদ্রলোক বলেছেন পুরানো ফ্লাট বেঁচে দেবার ব্যবস্থা করে দেবেন। দেব অন্তত একটা ফোন করতে পারতো। নিজেকে ধমক দেয় আবার দেবের কথা ভাবছে। সেদিন লক্ষণবাবুর ব্যবহার খারাপ লাগেনি।উকিল ভদ্রলোক খুব নোংরা নোংরা কথা বলছিল।যা হয়ে গেছে তা নিয়ে আর ভাবতে চায় না।দেব ভর্তি হয়েছে ভাল পড়াশুনা করুক।আল্লাহতালার যা মর্জি সেইমত চলবে খাদিজা।না তার মনে কোনো আক্ষেপ নেই। যা পেয়েছে তাতেই খুশি যা পায়নি তা পাওনা নয় বলে মেনে নিয়েছে। ক্লাসে ঢোকার আগে সানগ্লাস খুলে ব্যাগে রাখলো।একটার পর একটা ক্লাস একসময় টিফিন হয়।এরপর পঞ্চম ঘণ্টায় ক্লাস নেই আবার ষষ্ঠ ঘন্টা তারপর আজকের মত ছুটী।টিফিন আওয়ার শেষ হতে চলল খাদিজা বাথরুমে যাবার জন্য বেরিয়ে চমকে উঠল,দ্রুত এগিয়ে গেয়ে জিজ্ঞেস করে,তুমি কখন এলে?
--আমাকে তো কিছু বলোনি?উত্তেজিত গলায় বলে পল্টূ।
--ফোনে সব কথা বলা যায়না।খাদিজা বলল।
--যেটুকু বলা যায় সেটুকু বলতে পারতে?
--কি হচ্ছে কি ভুলে যেওনা এটা কলেজ।
--ঠিক আছে বাইরে চলো দেখাচ্ছি।
--মারবে নাকি?
--দরকার হলে মারতে হবে।
অতিকষ্টে হাসি চাপে খাদিজা আক্তার।পাগলকে কিভাবে সামলাবে ভাবছে আঙ্গুরদিকে আসতে দেখে জিজ্ঞেস করে,আঙ্গুরদি তোমার হাতে কোনো কাজ নেই তো?
--কি টিফিন আনতে হবে?
খাদিজা ব্যাগ খুলে দুটো টাকা আর একটা চাবি দিয়ে বলল,তুমি ওকে আমার বাসাটা দেখিয়ে দেবে?
--এই টাকা?
--তোমাকে দিলাম।দেব তুমি ওর সঙ্গে যাও।
--তুমি যাবে না?
--আমার একটা ক্লাস আছে ওটা করবো না তুমি বলো?
--ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসবে।আঙ্গুরদির সঙ্গে চলে গেল দেব।স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে খাদিজা।অনেক বদলেছে দেব কথার মধ্যে একটা প্রভুত্বের ভাব খাদিজার ভাল লাগে। কদিনে অনেক বড় হয়ে গেছে পাশাপাশি দাড়ালে বয়সের ব্যবধান এখন আর তত চোখে লাগে না।মনে গান বেজে ওঠে।গুনগুন করতে করতে বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল।
প্রনতিদি বাথরুমে বসে শুনছেন,পাশের বাথরুম থেকে মৃদু স্বরে গান ভেসে আসছে। "আরো আরো আরো প্রভু আরো/এমনি করে আমায় মারো/লুকিয়ে থাকি আমি পালিয়ে বেড়াই/ধরা পড়ে গেছি আর কি এড়াই....।" মনে হচ্ছে অঞ্জনার গলা।বেশ মিষ্টি গলা,বাথরুম থেকে বেরিয়ে দুজনের দেখা হতে প্রণতি জিজ্ঞেস করে,তোর এত দুঃখ কিসের রে?
খাদিজা বেগম মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করে,এখন তোমার ক্লাস ?
--হ্যা কেন?
কি ভেবে খাদিজা বলল,না থাক তোমার কাজ থাকতে পারে।
--ঢং করিস নাতো? কি ব্যাপার বল?
--প্রণতিদি তোমার পরেই আমার ক্লাস মানে মানে,ইতস্তত করে খাদিজা বেগম।
--কি মানে মানে করছিস যা বলার তাড়াতাড়ি বল,আমার ক্লাস আছে।
--তোমার অসুবিধে না হলে আমি এখন যেতে পারি--।
--আর পরের ঘণ্টায় আমি যাবো?
হেসে ফেলে খাদিজা বেগম।প্রণতিদি বলল,ঠিক আছে তুই যা তুই এমন করছিস যেন কিই না কি?
--থ্যাঙ্ক ইউ প্রণতিদি।
খাদিজা বেগম খাতা নিয়ে দ্রুত ক্লাসে চলে গেল।মেয়েরা অবাক হয় মুখ চাওয়া চাওই করে,কিরে ওয়াহিদা রেহমান? একজন জিজ্ঞেস করে,ম্যাম পিজি আজ আসেন নি?
--উনি পরের ঘণ্টায় আসবেন।খাদিজা পড়াতে শুরু করে। মেয়েরা ভেবেছিল ছুটি পাবে,হতাশ হয়।
আঙ্গুরদির পিছনে পিছনে যেতে যেতে পল্টূ জিজ্ঞেস করে,ম্যাডামের ফ্লাট কতদুরে?
--ছেড়ে আসলাম।দেখেন নাই?আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলল,ওই তো ঐ বাড়ীটার তিনতলায়। পাথর প্যারিস হয়ে গেছে।আরো মাস খানেক লাগবে।দেখবেন?
--তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি?
--ম্যাডাম এখন যেখানে থাকে।এই যে সামনে।
পল্টূ দেখলো একটা চারতলা বাড়ী নতুন হয়েছে,বারান্দায় শাড়ী ঝুলছে।সেই বাড়ীর একতলার একটা ফ্লাটের দরজায় ঝোলানো তালা খুলছে আঙ্গুরদি।তারপর চাবিটা পল্টুকে দিয়ে বলল,আমি যাই?
আঙ্গুরদি বিদায় হতে পল্টূ ভিতরে ঢুকে দেখল মেঝেতে পরিপাটি বিছানা পাতা।বেগম সাহেবা তাহলে এখন ভুমি শয্যায় শয়ন করে? ঘুরে ঘুরে দেখে একটা দড়ীতে ঝুলছে শাড়ী অন্ত্রর্বাস ইত্যাদি।দড়িতে ঝোলানো একটা ব্রেসিয়ার নিয়ে গন্ধ শোকে পল্টূ।উঃ কতদিন পর। কোনোঘরে কোন আসবাব নেই।রান্না ঘরে ষ্টোভ তার মানে গ্যাস পুরানো বাসায় রয়েছে।
জুতো খুলে টান টান হয়ে শুয়ে পড়ল পল্টূ। বালিশে নাক গুজে দিয়ে বেগম সাহেবার স্পর্শ পায়।মাথার উপর পাখা রয়েছে উঠে পাখা ঘুরিয়ে দিয়ে আবার শুয়ে পড়ে।
ক্লাস শেষ করে বেরোতে প্রণতিদির সঙ্গে দেখা খাদিজা হাসল।
--খুব তাড়া আছে মনে হচ্ছে?জিজ্ঞেস করে প্রণতিদি।
তাকে মারবে বলে একজন বসে আছে বাসায় খদিজা ভাবে, একথা বলা যায় না প্রণতিদিকে। ধন্যবাদ প্রণতিদি বলে দ্রুত বিশ্রাম কক্ষে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে খাদিজা বেগম সিড়ি দিয়ে নামতে থাকে দ্রুত।কথায় বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। শ্রীময়ী পথ আটকে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার মিসেস সোম মার খেতে এত ইচ্ছে কেন?
প্রণতিদির কাছে সব শুনেছে বুঝতে পারে খাদিজা হেসে জিজ্ঞেস করে,তার আগে তুমি বলতো তোমার স্বামী কি কখনো তোমার গায়ে হাত দিয়েছে?
--না ভাই আদরে আদরে বোর হয়ে ইচ্ছে করে একটু আঘাত পেতে।দুঃখ দুঃখ ভাব করে বলে শ্রীময়ী।
--হি-হি-হি। আঘাত পেয়েছো?
--কান ধরে টেনে ভাবলাম এইবুঝি রেগে গিয়ে কিছু করবে। মক্কেল তাতেও খুশি।কিন্তু তোমার ব্যাপারটা কি?
দূর থেকে আঙ্গুরকে আসতে দেখে খাদিজা বলল,কিছু মনে কোর না একটূ তাড়া আছে,পরে সব বলবো।
--আমি অপেক্ষা করবো।শ্রীময়ী হাসতে হাসতে চলে গেল।
আঙ্গুরদি কাছে আসতে জিজ্ঞেস করে,ওষুধের দোকান খোলা ছিল?
--বড় রাস্তা থেকে এনেছি।আঙ্গুরদি মোড়কটা এগিয়ে দিতে খাদিজা ব্যাগে ভরে নিল।
বলা যায় না কি হতে কি হয়ে যায় সাবধানতা নিয়ে রাখা ভাল।ঐ সময় মানুষ নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না।একা একা কি করছে পাগলটা?বাড়ীর যত কাছে আসে বাড়তে থাকে মনের চঞ্চলতা।দরজা খুলে সন্তর্পণে ভিতরে ঢুকে দেখল তার বিছানায় নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে দেব। পাশে দাঁড়িয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে খাদিজা বেগম।কেমন নিষ্পাপ শিশুর মত বালিশ চেপে ধরে ঘুমোচ্ছে। দুশ্চিন্তার কোনো ছাপ নেই চোখে মুখে।এমবিবিএস পাশ করেছে একেবারে বোকা তাতো নয়। ঘুম ভাঙ্গলেই শুরু হবে তড়পানি খাদিজা বেগম জানে।শরীর মনে বয়ে যায় ফুরফুরে বাতাস। খাদিজা শাড়ী খুলে ফেলে।দড়িতে ঝোলানো একটা আটপৌরে শাড়ী টেনে নিয়ে জামা খুলে ব্রেসিয়ার খুলে দড়িতে ঝুলিয়ে রাখে। ব্রেসিয়ার না পরেই জামা গায়ে দিল।তারপর শাড়ী পরে আঁচল ঘুরিয়ে কাধে ফেলতে গিয়ে নজরে পড়ে ড্যাবডেবিয়ে তাকিয়ে আছে দেব। চোখাচুখি হতেই উলটো মুখ হয়ে পাশ ফিরিয়ে শোয়।মুচকি হেসে খাদিজা বিছানার একপাশে বসে। পল্টু উঠে একটূ সরে বসলো।
খাদিজা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেবকে দেখে বলে,এসেই শুয়ে পড়েছো,জামা কাপড় ছাড়ার সময় পাওনি?
--আমি কি এখানে শোবার জন্য এসেছি--?
আচমকা পল্টুর বুকে উপর ঝাপিয়ে পড়ে হাত দিয়ে গলার কাছ থেকে কি যেন সরিয়ে দিল।ধাক্কা সামলাতে না পেরে পল্টূ চিত হয়ে পড়ে।কিছু বোঝার আগেই খাদিজা উঠে মেঝের কোন দিয়ে হেটে যাওয়া বিছেকে চটি দিয়ে চিপটে দেয়।পল্টু দেখল কালো মিশমিশে একটা তেতুল বিছে একেবারে থেতলে দিয়েছে।
পল্টু অবাক হয়ে বলল,ইস কত বড় তোমার কি একটূ ভয়ডর থাকতে নেই? একটা ঝাড়ণ দিয়ে ফেলতে পারতে ,হাত দিয়ে কেউ ফেলে?
--বিছেটা দেখলাম তোমার কলার থেকে গলার দিকে এগোচ্ছে।একবার মনে হল বলি 'ও বিছেভাই একটু দাঁড়াও আমি ঝাড়ণ নিয়ে আসছি।' খিলখিল করে হাসে খাদিজা।
--কামড়ালে হাসি বেরিয়ে যেত।পল্টূ মুখ গোমড়া করে বলে।
খাদিজা উঠে পাশের ঘর থেকে একটা শাড়ী এনে ভাজ করে বলল,এটা লুঙ্গির মত করে পরো।
পল্টু উঠে প্যাণ্ট বদলে শাড়ী পরতে লাগলো।খাদিজা বলল,জানো দেব ছোটো বেলা থেকে আমার ভয় ডর কম।
পল্টূ লুঙ্গি পরে শুয়ে পড়ে বলল,হ্যা সেতো দেখতে পাচ্ছি,কতগুলো আজেবাজে লোকের ভয়ে নিজের ফ্লাট ছেড়ে পালিয়ে এলে।
--শোনো দু-পা এগিয়ে কখনো এক-পা পিছিয়ে আসতে হয়।
--নিজের দুর্বলতা চাপা দেবার জন্য ভালই যু্ক্তি।
খাদিজা বেগম পল্টূর পেটে আঙ্গুল বোলাতে বোলাতে বলল, তুমি ঠিকই বলেছো দুর্বলতা। ওদের মধ্যে তোমার মামাও ছিলেন।কথাবার্তা শুনে বুঝলাম ওদের লক্ষ্য আমি নয় ওরা তোমার গায়ে কাদা ছেটাতে এসেছিল।পল্টুর কোমর জড়িয়ে ধরে বলল,নিজের জন্য ভাবি না,কিন্তু তোমাকে লোক সমক্ষে হেয় করবে আমি সহ্য করতে পারবো না।
পল্টুর মুখে কথা সরে না।বেগমের চুলে হাত বিলি কাটতে কাটতে বলল,তুমি আমার কথা এত ভাবো?
খাদিজা মুখ ঘুরিয়ে পল্টুর দিকে চোখ তুলে বলল,খোদা আমাকে তোমার দেখভালের জন্য পাঠিয়েছে।
পল্টু তাকিয়ে থাকে ছুরির মত নাক গোলাপের পাপড়ির মত ওষ্ঠদ্বয় নত হয়ে মুখে পুরে চুষতে লাগল।খাদিজা দু-হাতে দেবের গলা জড়িয়ে ধরে।পল্টু বলে,তুমি খুব সুন্দর।
--যশবিন্দারের চেয়েও?
পল্টু ঠেলে সরিয়ে দিতে খাদিজা বেগম উঠে বসে জিজ্ঞেস করে,রাগ করলে?
--তূমি যশবিন্দারের কথা কেন বললে?
--ভুল হয়ে গেছে।একটা কথা বলবো রাগ করবে না?
--আগে বলো শুনি।
--আজ এখানে থাকবে?
--মম চিন্তা করবে কি করে থাকবো বলো?
--ফোন করে বলো জরুরী কাজে আজ ফিরতে পারছো না।
--তা হয়না বেগম সাহেবা,আমি মমকে বানিয়ে কিছু বলতে পারবো না।
--আমি জানি তুমি পারবে না।আচ্ছা আমি যদি মমের অনুমতি নিই?
পল্টূ দু-হাতে জড়িয়ে বুকের মধ্যে মুখ ঢুকিয়ে বলল,তোমার যা ইচ্ছে।আমি সব সময় তোমাকে ছুয়ে থাকতে চাই।কিন্তু এখানে বিছানা নেই থাকবো কোথায়?
খাদিজা লক্ষ্য করলো দেবের আকর্ষণ তার বুকের প্রতি। জামা খুলে বুক খুলে দিয়ে দেবকে বুকে চেপে বলল,আমার হৃদ মাঝারে থাকবে।
নরম বুকে যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় পল্টূ।নরম মখমলের মত, কি শান্তি বুকের মধ্যে মনে হয় জগৎ বিস্মৃত হয়ে বুকের মাঝে হারিয়ে যায়।স্তন বৃন্ত মুখে নিয়ে চুষতে থাকে।মনে পড়ে যায় শৈশবের কথা।