Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
#56
(Update No. 76)

প্রায় চল্লিশ মিনিট পর উত্তর কলকাতার একটি অঞ্চলে বড় রাস্তা ছেড়ে দু’তিনটে গলি পেরিয়ে প্রবাল একটা পুরোন একতলা বাড়ির সামনে এসে বাইক থামাল। বাইকের সীটের ওপর বসেই সে পকেট থেকে নিজের মোবাইলটা বের করে সেটার ব্যাক কভার খুলে সিমকার্ডটা বের করে নিল। পকেট থেকে অন্য একটা সীম বের করে মোবাইলে লাগিয়ে মোবাইলটা অন করেই একজনকে ফোন করে ফোনটা কানে লাগিয়ে পুরোন সীমটা নিজের মানিব্যাগের ভেতরের ছোট্ট একটা পকেটের ভেতর ঢুকিয়ে রাখল।

কয়েকবার রিং হবার পর ও’পাশের সাড়া পেতেই সে জিজ্ঞেস করল, “স্যার আমি তো বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু বাড়ির সদর দরজা তো তালা বন্ধ দেখছি। মালটা কোথায় রাখব তাহলে”?

ও’পাশের লোকটা বলল, “প্রবাল, বাড়িটার ডান পাশে একটা ছোট্ট গলি আছে দেখ। সে গলিটায় বাইকটা ঢুকিয়ে দে। বাড়িটার পেছনে গেলেই আরেকটা গেট দেখতে পাবি। পুরোন টাইপের ওই লোহার গেটে পরপর চারবার ঠকঠক করবি। মাথায় কালো টুপি পড়া একটা চব্বিশ পঁচিশ বছরের ছেলে এসে গেট খুলে দেবে। তার হাতে ব্যাগটা দিয়েই তুই ওখান থেকে কেটে পড়বি। আর রাত আটটা নাগাদ অন্য পোশাকে আবার সেখানে আসবি। তখন আমাকে পাবি। ঠিক আছে”?

প্রবাল জবাব দিল, “হ্যা স্যার বুঝেছি”।

ও’পাশ থেকে আবার জিজ্ঞেস করল, “টিম টু সেখানে পৌঁছে গেছে”?

প্রবাল জবাব দিল, “আমি একজনকে ওয়াচে রেখে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে মাল নিয়ে চলে এসেছি স্যার। আপনি তো এমনটাই বলেছিলেন। এতক্ষণে পুরো টিম লোকেশানে নিশ্চয়ই পৌঁছে গেছে। আর পরের আপডেট তো ওরা আপনাকে দেবে”।

ও’পাশ থেকে আবার বলল, “হ্যা, ঠিক আছে। আর শোন, প্ল্যান মাফিকই সব করেছিস তো? কোন ভুলচুক হয়নি তো”?
 

প্রবাল বলল, “না স্যার কোন ভুলচুক হয়নি। পুরোপুরি প্ল্যান মাফিকই সব কিছু কমপ্লিট করে এসেছি আমি”।

ও’পাশ থেকে বলল, “খুব ভাল। এবার তাহলে যেভাবে বললাম সেভাবে জিনিসটা ডেলিভারি দিয়ে চলে যা। রাতে আমার সাথে দেখা করিস। বাই” বলে অন্য প্রান্ত থেকে ফোন কেটে দিল।
 

প্রবাল আর দেরী না করে বাড়িটার ডানপাশের সরু গলিতে বাইক ঢুকিয়ে দিল। বাড়িটার পেছন দিকে এসে একটা ভাঙ্গাচোরা লোহার গেট দেখতে পেয়ে সে বাইক থামিয়ে গেটের লোহায় চারবার ঠকঠক করল। কয়েক সেকেণ্ড বাদেই কালো টুপি পড়া এক যুবক গেট খুলে জিজ্ঞেস করল, “প্রবাল”?

প্রবাল জবাব দিল, “হ্যা”।

ছেলেটা এবার গলির আরো ভেতরের দিকে হাত দেখিয়ে বলল, “ব্যাগটা আমাকে দিয়ে এদিক দিয়ে বাইক চালিয়ে চলে যান। কিছুটা দুর গিয়ে গলিটা দু’ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। আপনি ডানদিকে ঘুরে যাবেন। তাহলে মেইন রোডে পৌঁছে যাবেন। আর রাত আটটায় স্যারের সঙ্গে এখানেই এসে দেখা করবেন”।

প্রবাল আর কথা না বলে ডিকি খুলে ব্যাগটা যুবকটির হাতে দিয়েই সে বাইক চালিয়ে যুবকটির দেখিয়ে দেওয়া পথে এগিয়ে গেল।


**************

ওদিকে বিন্দিয়া স্নান সেরে একটা সুন্দর লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে, হাতে পুজোর থালা নিয়ে দিবাকর, মঙ্গু আর গুড্ডিকে সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেখানে সদ্য কেনা গাড়িটা পার্ক করে রাখা ছিল, সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। বেশ দেরী হয়ে গেছে তাদের বেরোতে। বাথরুমে স্নান করতে করতে গত রাতে আর আজ সকালে টেস্ট ড্রাইভে গিয়ে প্রভুর সাথে কাটানো সময়গুলোর কথা ভাবতে ভাবতে অনেকটা সময় কাটিয়ে ফেলেছিল। সেই মূহুর্ত গুলোর কথা ভাবতে ভাবতে তার পোড় খাওয়া পরিপক্ক যৌনাঙ্গটাও একটা কুমারী মেয়ের যৌনাঙ্গের মতই কামরস নিঃসরণ করছিল অনবরতঃ। শরীরটা যেন একটা ফার্নেসের মত গরম হয়ে উঠেছিল। সে শরীরকে ঠাণ্ডা করতে তাকে স্বমেহনের সাহায্য নিতে হয়েছিল। এমনটা হত তার কচি বয়সে। প্রায় আঠাশ ঊণত্রিশ বছর পর আজ সে স্বমেহন করে সেই কচি বয়সের মতই তৃপ্তি পেয়েছে। তাই স্নান সেরে বেরোতে বেরোতে অনেকটাই দেরী হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গু, দিবাকর আর গুড্ডি অনেক আগেই তৈরী হয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিল।
 

রাস্তার শেষ মোড়টা পেড়িয়েই দেখা গেল জনা পাঁচেক পুলিশ বিন্দিয়ার নতুন কেনা গাড়িটার চারপাশে ঘুরঘুর করছে। ফলস নাম্বার প্লেট লাগান গাড়ির চারপাশে পুলিশের লোকগুলোকে ঘুরতে দেখেই সবাই একসাথে চমকে উঠল। মঙ্গু সঙ্গে সঙ্গে ফিসফিস করে বলল, “দিবাকর ভাইয়া, রুক জাইয়ে। ঔর আগে নহী জানা। না জানে ইয়াহা ইস সময় পুলিশ কাঁহা সে আ গয়ী। ভাবীজী লৌট চলিয়ে। হম সব মুসীবত মে হ্যায়”।

দিবাকর সবাইকে নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরতে ফিরতে বিন্দিয়াকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি গাড়িটাকে রাস্তার এত কাছে রেখেছিলে কেন? আরেকটু ভেতরে এনে ওই ঘেরাও করা জায়গাটায় রাখতে পার নি”?

বিন্দিয়া ঘাবড়ে যাওয়া গলায় জবাব দিল, “প্রভুজী বলেছিল আমাকে ঠিকই। কিন্তু মন্দিরে যাব ভেবেই ওখানে রেখেছিলাম। ভেতরে ঢোকালে আবার ব্যাক করে বের করতে হত, তাই। কিন্তু এবার কী হবে বল তো? পুলিশ কী করে এল এখানে”?
 

সবাই চিন্তান্বিত ভাবে ছুটে ঘরে এসে ঢোকবার পর শলা পরামর্শ করতে শুরু করে দিল। পুলিশ যে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের বাড়ি এসে হাজির হবে, আর গাড়ির কাগজ পত্র দেখতে চাইবে এ নিয়ে কারুর মনে আর কোন সন্দেহ রইল না। প্রভু দু’দিনই তাদেরকে এ ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছিল। গাড়ির নতুন কাগজ পত্র বের না করা অব্দি গাড়িটা প্রকাশ্য জায়গায় রাখতে সে বারণ করেছিল। একবার পুলিশ যখন গাড়িটার খোঁজ পেয়েই গেছে, তাহলে সেটা যে তারা সীজ করে নিয়ে যাবেই এ ব্যাপারে তো আর কোন সন্দেহই নেই। কিন্তু এখন পুলিশের কাছে যদি স্বীকার করা হয় যে গাড়িটা তারা আজই কিনেছে, তাহলে চোরাই গাড়ি কেনার অপরাধে পুলিশ গাড়ির সাথে সাথে দিবাকর বা বিন্দিয়াকেও এরেস্ট করে নিয়ে যেতে পারে। সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার গাড়িটা তো হাতছাড়া হয়েই গেল বলা যায়। কিন্তু থানায় নিজেদের হাজত বাস আটকাতে গেলে গাড়ির মায়া ছেড়ে পুলিশকে এটাই বলতে হবে যে তারা ওই গাড়ির ব্যাপারে কিছুই জানে না। মন্দিরে যাবার জন্য গাড়িটাকে তারা ভাড়া করে এনেছিল বাজার থেকে।

মিনিট দশেক বাদেই দরজার কড়া নাড়ার শব্দ হতেই দিবাকর এসে দরজা খুলে দিল। সামনে বস্তির একটা লোকের সাথে দু’জন পুলিশ দেখে দিবাকর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কী ব্যাপার স্যার? কী হয়েছে”?

একজন পুলিশ জিজ্ঞেস করল, “আপনার নাম দিবাকর প্রসাদ”?

দিবাকর হাতজোড় করে বলল, “হ্যা স্যার। কিন্তু আমি তো কিছু বুঝতে পারছিনা কী ব্যাপারে .....”

পুলিশটা বলল, “আপনি একটু আমাদের সাথে আসুন তো। আমাদের স্যার আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাইছেন”।
 

দিবাকর তবু জিজ্ঞেস করল, “আমার সাথে কি ব্যাপারে কথা বলবেন”?

পুলিশটি জবাব দিল, “সেটা স্যারের মুখ থেকেই শুনবেন। আসুন”।
 

দিবাকর ভেতরের ঘরের দিকে মুখ করে বলল, “আরে গুড্ডি কি মা, সুনতি হো? ম্যায় থোড়া বাহর জা রহা হু। জরা দরওয়াজা বন্দ কর লে না” বলে বাইরে বেরিয়ে গেল।

গাড়ির কাছে আসতেই এক পুলিশ অফিসার জিজ্ঞেস করল, “এ গাড়িটা কি আপনার”?

দিবাকর অবাক হয়ে হাতজোড় করে জবাব দিল, “কী বলছেন স্যার? গাড়ি কেনার সামর্থ্য কি আমাদের মত গরীব মানুষের আছে”?

পুলিশ অফিসার আশে পাশে ভিড় করে থাকা লোকগুলোর দিকে ইশারা করে বলল, “কিন্তু এরা তো বলছে ঘন্টা খানেক আগে আপনার স্ত্রী নাকি এ গাড়িতে চেপেই এখানে এসেছেন”।
 

দিবাকর আগের মতই গোবেচারা হাঁসি হেসে বলল, “হ্যা স্যার, সে’কথা ঠিক। আসলে আমরা পরিবারের সবাই মিলে মন্দিরে পুজো দিতে যাব বলে আমার স্ত্রী এ গাড়িটা ভাড়া করে এনেছিল। ড্রাইভার ছিল তো! সে এখানে নেই না কি”? বলে এদিক ওদিক দেখতে লাগল।

পুলিশ অফিসার জিজ্ঞেস করল, “কে এ গাড়ির ড্রাইভার? দেখুন তো, এখানে সে আছে কি না”?

দিবাকর আশে পাশের লোকগুলোর দিকে চোখ বুলিয়ে বলল, “আসলে স্যার, ড্রাইভারকে তো আমি দেখিনি। সকালে আমার স্ত্রী বাজারে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরবার সময়েই সে গাড়িটা ভাড়া করে এনেছিল। আমরা তো মন্দিরে যাবার জন্যেই তৈরী হচ্ছিলাম। এই দেখুন না, আমি মন্দিরে যাবার পোশাক পড়ে বাকি সকলের তৈরী হবার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এমন সময়েই আমাকে ডেকে আনা হল”।
 

পুলিশ অফিসার আবার জিজ্ঞেস করল, “বেশ তাহলে আপনার স্ত্রীকে ডেকে আনা হোক। দেখি সে এখানে ড্রাইভারকে খুঁজে বের করতে পারে কি না” এই বলে একটা কনস্টেবলকে আবার দিবাকরের বাড়ি পাঠিয়ে দিল।
 

মিনিট দশেক বাদে লাল পেড়ে শাড়ি পড়েই বিন্দিয়া কনস্টেবলের সাথে সেখানে এসে হাজির হল। পুলিশ অফিসার তাকে জিজ্ঞেস করল, “আপনার স্বামী বলছে, আপনি ঘন্টা খানেক আগে এ গাড়িটাকে বাজার থেকে ভাড়া করে এনেছিলেন মন্দিরে যাবেন বলে। কথাটা কি ঠিক”?

বিন্দিয়া একবার দিবাকরের দিকে দেখে ঢোঁক গিলে বলল, “হ্যা স্যার, ঠিক”।

পুলিশ অফিসার জিজ্ঞেস করল, “গাড়িতে নিশ্চয়ই ড্রাইভার ছিল। দেখুন তো এখানে সে আছে”?

বিন্দিয়া চারপাশে দেখে বলল, “না স্যার, এখন তো তাকে এখানে দেখছিনা কোথাও। ফর্সা মত মাঝারি হাইটের জীনস আর টি শার্ট পড়া ছিল ছেলেটা। এখানেই তো থাকবার কথা ছিল। আমরা তো মন্দিরে যাবার জন্যে তৈরী হয়ে এখনই বেরিয়ে আসতাম”!

পুলিশ অফিসার আর কোন কথা না বলে নিজের মোবাইল থেকে কাউকে ফোন করে বলল, “একটা ক্রেন পাঠিয়ে দাও তো। বাজারের উত্তর পুব দিকে। একটা লকড গাড়ি তুলতে হবে”।
 

ফোন রেখেই অফিসার তার একজন জুনিয়রকে বলল, “প্রদীপ, তুমি সীজার লিস্টটা বানিয়ে ফেল তো চটপট। আর সাক্ষী হিসেবে এদের দু’জনের সই নিয়ে নাও। আর অন্য আরেকজনের সই নিও” বলে দিবাকরের দিকে তাকিয়ে বলল, “শুনুন দিবাকরজী। গাড়িটার তো মালিক বা ড্রাইভার কেউই এখানে নেই। আর আমাদের থানায় আগেই ডাইরী করা হয়েছিল যে গাড়িটা দিন পনের আগে চুরি হয়েছিল। তাই এটাকে আমরা সীজ করে নিচ্ছি। আপনারা সবাই এটার সাক্ষী রইলেন”।
 

সিজার লিস্টে ঘটণার সাক্ষী হিসেবে বিন্দিয়া, দিবাকর এবং আরো একজনের নাম ঠিকানা লিখে নিয়ে তাদেরকে দিয়ে সই করিয়ে নিয়ে পুলিশ অফিসার সবাইকে চলে যেতে বলতেই দিবাকর আর বিন্দিয়া নিজের ঘরের দিকে চলে গেল। মিনিট দশেক বাদে পুলিশের ক্রেন এসে ভক্সওয়াগেন গাড়িটাকে তুলে নিয়ে গেল।

**************

বিকেল ঠিক তিনটে পঞ্চাশে শঙ্করকে দেখা গেল বড়বাজারে সেই বিখ্যাত এলাকার চৌপথীর মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। তার পড়নে ক্রিম রঙের একটা টিশার্ট আর নীল রঙের জীনস। একটা ওষুধের দোকানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে আশ্বস্ত হয়ে সে পকেট থেকে মোবাইল বের করে সরজুর নাম্বার ডায়াল করল। ও’পাশ থেকে সরজুর সাড়া পেতেই সে বলল, “সরজু ভাইয়া, আমি শঙ্কর বলছি। আমি চৌপথীতে পৌঁছে গেছি”।

সরজু জবাব দিল, “ঠিক আছে শঙ্কর ভাইয়া, আমি এখনই ভাবীজীকে ফোন করে বলে দিচ্ছি। আপনি ওই জায়গাতেই অপেক্ষা করুন পাঁচ দশ মিনিট। ভাববেন না। আচ্ছা শঙ্কর ভাইয়া আপনি কী পোশাক পড়ে গেছেন বলুন তো”?

শঙ্কর নিজের পোশাকের বিবরণ বলতেই সরজু বলল, “ঠিক আছে শঙ্কর ভাইয়া। আপনি কয়েক মিনিট ওখানেই দাঁড়ান। গুড়িয়া বলে একটা বাচ্চা মেয়ে এখনই আপনার কাছে যাবে” বলে ফোন কেটে দিল।

শঙ্কর নিজের মোবাইল থেকে আরেকটা ফোন করতেই ওষুধের দোকানে একটা লোককে দেখা গেল তার পকেট থেকে মোবাইল বের করে কানে লাগিয়ে বলল, “হ্যা বল”।

শঙ্কর আশে পাশে দেখতে দেখতে বলল, “মালবিকা এসে গেছে”?

লোকটা জবাব দিল, “হ্যা ও সব কিছু নিয়ে রেডি হয়ে আছে”।

শঙ্কর বলল, “আমার ওপর চোখ রাখিস। কয়েক মিনিট বাদেই একটা বাচ্চা মেয়ে এসে আমাকে ফাইনাল লোকেশানে নিয়ে যাবে। তুই দোকান থেকে বেরোবি না। গৌতমকে বলিস আমায় ফলো করতে। আর আমি কোন ফ্ল্যাটে ঢুকছি, সেটা দেখে নিয়ে তোর কাছে ফিরে গেলেই মালবিকাকে ঠিক মত বিল্ডিঙটা চিনিয়ে দিয়ে লোকেশান বুঝিয়েই পাঠিয়ে দিবি। আর ফ্ল্যাট নম্বরটা আমি সেখানে ঢুকেই অভিকে জানিয়ে দেব। অভি তোদের জানিয়ে দেবে। একদম যেন মিস না হয়। ঠিক আছে”?
 

সকালে অভিকে সাথে নিয়ে শঙ্কর এ এলাকাটা ভাল করে দেখে গেছে। তখন সবকিছু নিয়ে ডিটেইলস আলোচনা করে দলের বাকি পাঁচ জনকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়েছে। ফোনটা পকেটে রেখে সে এমন একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়াল যেখানে তাকে সহজেই যে কেউ দেখতে পারে। পাঁচ ছ’ মিনিট পর ফ্রক পড়া একটা বারো তের বছরের বাচ্চা মেয়ে একটা রাস্তা থেকে বেরিয়ে তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “ভাইসাব, দিদি কা সামান লায়ে হ্যায় ক্যা”?

শঙ্কর মেয়েটার দিকে চেয়ে দেখল বারো তের বছরের শ্যাম বর্ণা মিষ্টি চেহারার একটা মেয়ে। শঙ্কর জিজ্ঞাসু চোখে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “তুমি গুড়িয়া”?

মেয়েটা জবাব দিল, “হাঁ ভাইসাব”।

শঙ্কর নিজের গলায় হাত বুলিয়ে দোকানের দিকে একটা ইশারা করে জবাব দিল, “হাঁ, সরজু ভাইয়াকা সামান লায়া হু। ডেলিভারি দেনা হ্যায়’।

মেয়েটা বলল, “আপ মেরে সাথ আইয়ে”।

শঙ্কর মেয়েটার পিছু পিছু চলতে চলতে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল,তার আট দশ ফুট পেছনেই গৌতম আসছে। একটা রাস্তা দিয়ে মিনিট তিনেক যাবার পরেই মেয়েটার পেছন পেছন সেও একটা গলিতে ঢুকে পড়ল। তারপর একটা পাঁচতলা বিল্ডিঙের মেইন গেট দিয়ে ঢুকে পড়ল। মেইন গেটের পাশে ছোট একটা বোর্ডে লেখা ‘লাবিনা এনক্লেভ- ব্লক এ’। মেয়েটা লিফটের সামনে গিয়ে দেখল লিফটটা পাঁচ তলায় এনগেজড আছে। তাই সে শঙ্করকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে গেল। একশ চার নম্বর রুমের সামনে এসে মেয়েটা দরজায় ধাক্কা দিতেই সেটা খুলে গেল।
 

ভেতর থেকে মিষ্টি সুরেলা গলায় এক নারীকন্ঠ ভেসে এল, “গুড়িয়া এলি”?

বাচ্চা মেয়েটি শঙ্করকে নিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে জবাব দিল, “হ্যা দিদি, আমি। আর সরজু ভাইয়ার লোকও এসেছে”।

ভেতর থেকে আবার বলল, “বাবুকে ড্রয়িং রুমে বসতে দে। আমি আসছি”।

মেয়েটা শঙ্করকে সোফায় বসতে বলে ভেতরের একটা দরজা দিয়ে ঢুকে গেল। শঙ্কর একটা সোফায় বসেই পকেট থেকে মোবাইল বের করে ‘লাবিনা এনক্লেভ। ব্লক এ। ১০৪’ লিখে অভির নাম্বারে একটা এসএমএস পাঠিয়ে দিয়ে, আরেকটা নাম্বারে একটা মিসকল দিল। তারপর আবার সরজুর নাম্বারে ফোন করে বলল, “হাঁ, সরজু ভাইয়া, ঠিক জায়গায় পৌঁছে গেছি। ধন্যবাদ” বলে ফোন কেটে দিয়ে ফোনটা পকেটে পুরে রাখতে না রাখতেই ভেতরের দরজা দিয়ে সালোয়ার কামিজ পড়া ভরন্ত যৌবনা অপূর্ব সুন্দরী একটি মেয়ে ঘরে ঢুকে হাঁসি মুখে শঙ্করকে বলল, “নমস্কার স্যার। আশা করি এখানে আসতে কোন অসুবিধে হয়নি”।
 

শঙ্কর একটু ইতস্ততঃ করে বলল, “না অসুবিধে তো কিছুই হয় নি। কিন্তু আমার মনে হয়, আমি বোধ হয় ভুল জায়গায় এসে পড়েছি”।

______________________________
[+] 1 user Likes riank55's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 28-02-2020, 08:58 PM



Users browsing this thread: