Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
#51
(Update No. 71)

ফোনে কথা বলা শেষ করে সে মিনিট খানেক ফোনটা হাতে নিয়ে খুটখাট করে শঙ্করের দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনি সত্যি সত্যি বহুত কিস্মতওয়ালা আছেন শঙ্কর ভাইয়া। অনুপমা ভাবীর ফোন ছিল। সে কাল থেকে বুকিং নেবে। তাহলে আপনি কি টিকিট নিতে চাইছেন এখন”?
 

শঙ্কর খুব খুশী হয়ে বলল, “হ্যা সরজু ভাইয়া। সেটা নেবার জন্যেই তো আমি এসেছি। কিন্তু আজকের বুকিং হবে না”?

সরজু বলল, “না শঙ্কর ভাইয়া। আজ ভাবীজীর হাজবেণ্ড বাড়িতে আছে। কাল সকালে সে বেওসার কাজে বাইরে যাচ্ছে কয়েক দিনের জন্য। তাই কালকের বুকিংই পাবেন”।

শঙ্কর বলল, “ঠিক আছে সরজু ভাইয়া, তবে আমাকে তো বড়বাজার যেতে হবে সিনেমা দেখতে, তাই না? তাহলে বিকেল চারটে থেকে একঘন্টার বুকিং করে দিন”।
 

সরজু বলল, “বিকেল চারটার টিকিট? কিন্তু ভাবীজী তো বলছিল সন্ধ্যা ছটার আগে বুকিং নেবে না”।

শঙ্কর কিছু বলতে যেতেই সরজু আবার পকেট থেকে ফোন বের করতে করতে বলল, “এক মিনিট রুকিয়ে শঙ্কর ভাইয়া” বলেই আবার কাউকে ফোন করল।

ফোন কানে লাগিয়ে বলল, “হাঁ ভাবীজী। কাস্টমারটাকে পেয়েছি। কিন্তু নতুন লোক তো। তাই একটু বোঝাতে হচ্ছে। কিন্তু ভাবীজী সে তো কাল বিকেল চারটার বুকিং চাইছে। পর আপনি তো দুপুর .....” কথা শেষ না করেই সরজু থেমে গিয়ে ও’দিকের কথা শুনতে লাগল। তারপর বলল, “ঠিক হ্যায় ভাবীজি, আমি তাহলে তাকে টিকিট দিয়ে একেবারে কনফার্ম করে কোড দিয়ে দিচ্ছি” বলে ফোন কেটে দিল।
 

শঙ্করের দিকে চেয়ে হেসে বলল, “আপনি সচমুচ অনেক কিস্মতওয়ালা আছেন শঙ্কর ভাইয়া। ভাবীজী আপনার চারটার শোয়ের টিকিট কনফার্ম করে দিল। এবার আপনি কনফার্ম টিকিট নিয়ে নিতে পারেন”।
 

শঙ্কর জিজ্ঞেস করল, “সে তো খুব ভাল কথা সরজু ভাইয়া। তাহলে আমাকে কত দিতে হবে এখন”?

সরজু জবাব দিল, “আমাকে আপনি শুধু এখন ডেরশ রুপিয়া দিন। কিন্তু আপনি কি ভাবীজীকে বাইরে আনতে চান? না তার ঘরে যাবেন”?

শঙ্কর পকেট থেকে দেড়শ টাকা বের করে সরজুর হাতে দিয়ে বলল, “না না সরজু ভাইয়া, বাইরে কোথাও নয়। আমি সেখানেই মানে তার বাড়িতেই যাব”।

সরজু টাকাটা নিয়ে নিজের পকেটে রেখে বলল, “তাহলে কাল বিকেল চারটায় আপনার শো-র টিকিট কনফার্ম হয়ে গেল শঙ্কর ভাই। তবে ঠিক সময়ে হলে গিয়ে তিন হজার রুপিয়া অপারেটরকে দিতে হবে আপনাকে। আর বুকিংটা কিন্তু এক ঘন্টার জন্য হল। আর টাইমিংটা মিস করবেন না যেন”।

শঙ্কর বলল, “কিন্তু সরজু ভাইয়া ভাবীর বাড়ির ঠিকানাটা তো বলবেন আমাকে। নইলে বড়াবাজার গিয়ে তার ঘর আমি খুঁজে বের করব কী করে”?

সরজু বলল, “সে সব আমি বলে দিচ্ছি আপনাকে। শুনুন” বলে শঙ্করকে বড়বাজারের একটা নামকরা ফার্নিচার হাউসের ঠিকানা বুঝিয়ে দিয়ে বলল, “ওখানে ওই ফার্নিচার হাউসটা ছাড়িয়ে পন্দ্র বিস ফুট এগিয়ে গেলেই একটা চৌপথী আছে। আপনি সেখানে গিয়ে আমাকে একটা ফোন করবেন। আমার নাম্বার আপনি নোট করে নিন। আমাকে ফোন করার দস মিনিটের মধ্যেই একটা বাচ্চা মেয়ে, লগভগ বারহ তেরহ সাল কি, আপনার কাছে এসে বলবে ‘ভাইসাব, দিদি কা সামান লায়ে হ্যায় ক্যা’। কথাটা মনে রাখবেন। আপনি প্রথমবার সেখানে যাচ্ছেন বলেই এটা করতে হচ্ছে। পরের বার যখন যাবেন তখন আর এ’সবের প্রয়োজন হবে না। তখন তো নিজেই হলে চলে যেতে পারবেন। কিন্তু এবারের জন্যেই শুধু মনে রাখবেন, ওই বাচ্চা মেয়েটা এসে আপনাকে বলবে ‘ভাইসাব, দিদি কা সামান লায়ে হ্যায় ক্যা’। আর আপনি তার জবাবে বলবেন ‘সরজু ভাইয়াকা সামান লায়া হু। ডেলিভারি দেনা হ্যায়’। মনে থাকবে তো? আপনাকে বলতে হবে ‘সরজু ভাইয়াকা সামান লায়া হু। ডেলিভারি দেনা হ্যায়’। তখন মেয়েটা আপনাকে সাথে করে ভাবীজীর ঘরে নিয়ে যাবে। আর ভাবীজীর ঘরে গিয়ে আপনি তাকে বলবেন ‘সরজু ভাইয়া কা দো শ সাত নাম্বার বুকিং’। বুঝেছেন তো। ভাবীজীকে এই কথাটাই আপনাকে বলতে হবে। হেরফের হলে কিন্তু মুস্কিল হয়ে যাবে। তখন ভাবীজী আবার আমাকে ফোন করবে। আপনিই আমার কাছে টিকিট নিয়েছেন কি না সেটা বুঝবে, তারপর আপনাকে হলে ঢুকতে দেবে। কিন্তু আপনার সময় বরবাদ হবে। সেইজন্যে কথাটা ভালভাবে মনে রাখবেন, ‘সরজু ভাইয়া কা দো শ সাত নম্বর বুকিং’। ব্যস তারপর ভাবীজীই আপনার মেহমান নওয়াজী করতে শুরু করবে। ঠিক আছে ভাইয়া? সবটা মনে থাকবে তো”?

শঙ্কর খুশী হয়ে জবাব দিল, “হাঁ সরজু ভাইয়া। বুঝেছি”।

সরজু বলল, “তবু কোন সমস্যা হলে সময় নষ্ট না করে আমাকে ফোন করবেন। আমি মদত করব আপনাকে”।

শঙ্কর চেয়ার ছেড়ে উঠে সরজুর হাত ধরে বলল, “বহুত বহুত ধন্যবাদ আপনাকে সরজু ভাইয়া। আপনার সাথে দোস্তি খুব ভাল জমবে মনে হয়। তাহলে আজ চলি আমি”?
 

সরজু বলল, “ঠিক আছে শঙ্কর ভাইয়া। আপনার কাপড়গুলো বিকেলে এসে নিয়ে যাবেন”।

শঙ্কর আবার সরজুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বেরিয়ে গেল। সরজুর লণ্ড্রী থেকে বেরিয়ে অনেক দুর এসে শঙ্কর নিজের মোবাইল বের করে একজনকে ফোন করল। ও’পাশ থেকে সাড়া পেতেই সে বলল, “হ্যা অভি শোন। টিম মোতায়েন করা হয়ে গেছে”?

ও’পাশ থেকে অভি জবাব দিল, “আরে গুরু, টিম তো রেডি আছে। কিন্তু এক্সাক্ট লোকেশানটা না জানলে মোতায়েনটা করব কী করে বল”?

শঙ্কর বলল, “শোন, লোকেশানটা আমি এইমাত্র জানতে পেলাম। তুই দু’জনকে বিপ্লবের দোকানে ঢুকিয়ে দে। ওর দোকানের সামনের চৌপথীতে কড়া নজর রাখতে বলবি। আমি কাল বেলা তিনটে পঞ্চাশ বা পঞ্চান্নতে সেখানে পৌঁছব। তারপর কেউ একজন ফলো করে যেন দেখে নেয় আমি কোন ফ্ল্যাটে ঢুকছি। আর তুই মালবিকাকে বলিস রেডি থাকতে। আমি ফ্ল্যাটে ঢোকবার ঠিক পাঁচ মিনিট বাদেই যেন ও ওর কাজ শুরু করে দেয়। আমি সেখানে পৌঁছেই তোকে একটা এসএমএস করে ফ্ল্যাটের ঠিকানাটা জানিয়ে দেব। তুই জিনিসপত্র নিয়ে একেবারে রেডি থাকবি। তিনটে পঞ্চান্ন থেকে চারটে পাঁচের মধ্যে তুই আমার এসএমএস পেয়ে যাবি। আর সাথে সাথে তোর মেশিনারি নিয়ে ঠিক জায়গা মতো সে গুলোকে ইনস্টল করবি। আর মালবিকা যদি মিস না করে তাহলে আমার আসল কাজ চারটে দশের মধ্যে কমপ্লিট হয়ে যাবে। তুই সিগন্যাল পেলেই একটা মিসকল দিবি আমার নাম্বারে। তাহলেই আমি বুঝতে পারব আমাদের পারপাস সাকসেসফুল হয়েছে। ঠিক আছে”?

অভি সব শুনে বলল, “গুরু সে’সব তো ঠিকঠাক হয়ে যাবে। সেসব নিয়ে ভাবিস না। কিন্তু গুরু তুই ওখানে কতক্ষণ থাকবি”?

শঙ্কর একটু মুচকি হেসে বলল, “এক ঘন্টার সিনেমা”।

অভি বলল, “কী বলছিস গুরু? তুই একঘন্টা ধরে ওই খাসা মাগিটাকে ...বি! কী কপাল নিয়ে জন্মেছিস রে তুই”?

শঙ্কর বলল, “অভি শোন। আমি এখন রাস্তায় আছি। আমার মটকা গরম করে দিস না প্লীজ। তোর সাথে একবার ফাইনাল কথা বলতে হবে। কাল সকাল আটটায় আমি তোর বাড়ি যাচ্ছি। আমি না যাওয়া অব্দি তুই বাড়ি থেকে বেরোবি না। আর আগে যা যা বললাম সেভাবে সব এরেঞ্জমেন্ট করে রাখ। বুঝেছিস”?

অভি বলল, “ওকে গুরু। তাই হবে। তুই একদম টেনশন নিস না। বসের আর কোন অর্ডার আছে”?

শঙ্কর জবাবে বলল, “আমার সাথে স্যারের মিটিং আছে রাতে। নতুন কিছু ইনস্ট্রাকশন দিলে সেটা তোকে কাল সকালে জানাব। এখন রাখছি”।


*************

সকাল এগারটা নাগাদ কুরিয়ারের লোক এসে চন্দ্রকান্তবাবুর পাঠানো ইনভেলাপটা ডেলিভারি দিয়ে গেল রতীশের ফ্ল্যাটে। রতীশ খামের মুখটা খুলে ভেতরের জিনিসগুলো বের করে রান্না ঘরে এসে রচনাকে সবকিছু দেখাল। চন্দ্রিকার ছবির পেছনে চন্দ্রকান্তবাবুর দোকানে বসে থাকা রবিশঙ্করকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। রচনা আগে বিল ক্যাশমেমো গুলো দেখে চন্দ্রিমার ছবিটা দেখতে দেখতে বলল, “সোনা, এ ছবিটা থেকে একটা কপি বানানো যাবে না”?

রতীশ একটু অবাক হয়ে বলল, “তা হয়ত যেতে পারে। কোনও স্টুডিওতে গিয়ে দেখতে হবে। কিন্তু তুমি কপি করতে চাইছ কেন সোনা”?

রচনা ছবিটার দিকে চোখ রেখেই জবাব দিল, “চন্দু সোনাকে কী সুন্দর লাগছে ছবিটাতে। এ ছবিটার একটা কপি আমার কাছে রাখতে পেলে মাঝে মাঝে দেখতে পাব। তাই বলছি”।

রতীশ রচনার কাঁধে হাত রেখে আদর মাখা গলায় বলল, “ঠিক আছে। থানায় যাবার পথেই কোন একটা স্টুডিও থেকে আর্জেন্ট অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নেব। ভেব না”।
 

সেদিন বিকেলেই থানায় গিয়ে পুলিশ অফিসারের হাতে জিনিসগুলো জমা দিল। পুলিশ অফিসার তাদের আশ্বস্ত করলেন যে রবিশঙ্করকে তারা ঠিক খুঁজে বের করবে। ইনভেস্টিগেটিং অফিসার মিঃ মুখার্জী তার মোবাইল নাম্বারটা রতীশকে বলে দিয়ে জানালেন যে এখন আর রতীশকে থানায় আসতে হবে না। প্রয়োজন হলে রতীশ যেন তাকে ফোন করে। আর রবিশঙ্করকে ধরতে পারলে তিনি নিজেই রতীশকে ফোন করে ডেকে নেবেন।
 

****************
 
[+] 1 user Likes riank55's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 27-02-2020, 07:28 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)