Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সীমন্তিনী BY SS_SEXY
#22
(Update No. 47)

জলপাইগুড়ি ফিরে এসে ষ্টেশনে নেমেই সীমন্তিনী নিজের ফোনটা সুইচ অন করতেই দেখা গেল বাড়ির নাম্বার থেকে আর রচনার নাম্বার থেকে মিসকল। ষ্টেশন চত্বর থেকে বেরিয়ে রিক্সায় উঠে সীমন্তিনী প্রথমে বাড়ির নাম্বারে কল করল। সরলাদেবী ফোন ধরতেই সীমন্তিনী জানাল সব খবরই তার জানা আছে। রচুর বাবা মা বুধবার তাদের বাড়ি যাচ্ছেন। আর দাদাভাইকে দেখে আর পরিবারের সবাইকে দেখে ভাল লাগলে তারা এ সম্পর্ক করতে রাজি হয়ে যাবেন। সীমন্তিনী তার বড়মাকে বলে দিল যে ছেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে কোন রকম যৌতুক দান সামগ্রীর কথাই যেন ওঠানো না হয়। রচনার মত একটা লক্ষী মেয়ে ঘরে এলে তাদের পরিবার এমনিতেই সুখে স্বাচ্ছন্দে ভরে উঠবে। আর বিয়েটা যে বছর খানেক বাদে হবে এটাও যেন বাড়ির সকলে মেনে নেয়। সরলাদেবী সীমন্তিনীকে আশ্বস্ত করলেন, সে যা চাইছে তা-ই হবে।
 

সীমন্তিনী তার বড়মাকে বলল, “বড়মা তুমি সতুকে মঙ্গলবার সকালে জলপাইগুড়ি পাঠিয়ে দিও। আমি সেদিন দুপুরের দিকেই আবার কালচিনি চলে যাব। আর ভাইয়ের হাতে হাজার পাঁচেক টাকা পাঠিয়ে দিও। রচুর বাবা মা কালচিনি ফিরে যাবার পর আমি জলপাইগুড়ি চলে আসব। ভাইকে এ দুটো দিন একাই থাকতে হবে এ ঘরে। আর ওকে বলে দিও আমি কালচিনি থেকে জলপাইগুড়ি ফেরার পর ওর সাথে একটু আলোচনা করব। তারপর ও আবার বাড়ি যেতে পারবে”।

সরলাদেবী অবাক হয়ে বললেন, “ওমা তুই এ কথা বলছিস? আর আমি তো ভেবেছি সতুকে সেদিন বাসস্ট্যাণ্ডে পাঠাব রচনার মা বাবাকে আমন্ত্রণ জানাতে”।
 

সীমন্তিনী বলল, “আমন্ত্রণ জানাবার জন্যে তুমি অন্য কাউকে পাঠিও বড়মা। তোমাকে তো আগেই বলেছি যে এ গোটা ব্যাপারটা থেকে আমি আর সতু আড়ালে থাকব। তবে খুব বেশীদিন আর এমন আড়ালে থাকবার দরকার পড়বে না। আর কয়েকদিনের মধ্যেই সব কিছু সকলের কাছে পরিস্কার করে দেব। তখন আর লুকোচুরির প্রয়োজন পরবে না”।

সরলাদেবী বললেন, “তা অবশ্য ঠিকই বলেছিস। কিন্তু আমার মনে মনে এখন একটু ভয়ও হচ্ছে রে মা। দেখিস, যা কিছু করার সেসব একটু ভেবে চিন্তে খুব সাবধানে করিস মা। ওরা যদি তোর আসল পরিচয়
 
আর আসল উদ্দেশ্যটা জানবার পর তোকে ভুল বুঝে সম্পর্কটাই ভেঙে দেয়, তাহলে কি হবে রে”?

সীমন্তিনী বলল, “তুমি সেসব নিয়ে ভেব না বড়মা। তোমাকে তো আমি আগেই কথা দিয়েছি, রচনাকে তুমি তোমার বড়ছেলের বৌ করে ঘরে তুলতে পারবে। তুমি দেখে নিও ওনারাও কেউ আমায় ভুল বুঝবেন না, আর রচুও তোমার ছেলের বৌ হয়ে আমাদের পরিবারে আসছেই”।

এরপর সীমন্তিনী রচনার নাম্বারে ফোন করে জানিয়ে দিল যে সে ঠিকমত জলপাইগুড়ি পৌঁছে গেছে।
 
**************

বুধবারে বিধুবাবু আর বিভাদেবী রতীশদের বাড়ি এসে বাড়ির ছোট বড় সকলের সাথে কথা বলে আর সমস্ত বাড়ি ঘর দেখে যার পর নাই খুশী হলেন। সীমন্তিনী জোর করে বিধুবাবুর হাতে পাঁচ হাজার টাকা গুঁজে দিয়ে বলেছিল জলপাইগুড়ি থেকে কিছু মিষ্টি টিষ্টি কিনে নিয়ে রাজগঞ্জ যেতে। বিকেল বেলায় তারা জায়গাটা ঘুরে ফিরে দেখে দু’চার জনের মুখে ভট্টাচার্যি বাড়ির প্রভূত প্রশংসা শুনে অসম্ভব প্রীত হলেন। মনে মনে ভাবলেন রাজরানী না হলেও তাদের ছোটমেয়ে রচনা এ পরিবারে খুবই সুখে থাকবে। অপূর্ব দেখতে রতীশের পাশে তাদের মেয়েকে যে খুবই ভাল লাগবে দেখতে এ ব্যাপারে তাদের মনে কোন সন্দেহই রইল না। রাতে রতিকান্তবাবুরা দোকান থেকে ফিরে এসে সবাই মিলে আলোচনায় বসলেন। বিধুবাবু যথেষ্ট সঙ্কোচের সাথে নিজেদের দৈন্য দশার কথার উল্লেখ করে সীমন্তিনীর কথা মতই সব কিছু বললেন। রতীশের বাড়ির লোকেরা নির্দ্বিধায় তাদের সব কথা মেনে নিলেন। ছোটকাকা চন্দ্রকান্ত বললেন যে বিয়ের সমস্ত খরচ খরচা তারা নিজেরাই বহন করবেন। বিধুবাবু যেন শুধু নিজেরা বিয়ের আয়োজনটুকু করেন। টাকা পয়সার যোগান ছেলের বাড়ি থেকেই দেওয়া হবে।
 

বিধুবাবুরা পরদিন কালচিনি ফেরত গিয়ে সীমন্তিনীকে সব কথা খুলে বললেন। সীমন্তিনী ছেলের বাড়ি সম্পর্কে যা যা বলেছিল তার সব কিছুই একেবারে অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে বলে সীমন্তিনীকে তারা ধন্যবাদও দিলেন। সীমন্তিনীও সব কথা শুনে খুব খুশী হয়ে জলপাইগুড়ি ফিরে এল। সতীশ সে সময় জালপাইগুড়িতে ছিল। ফোনে ফোনে সব খবর পেলেও সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল দিদির জন্য। সীমন্তিনী ঘরে ঢুকেই নিজের ব্যাগের ভেতর থেকে মিষ্টির প্যাকেট বের করে সতীশের মুখে দিতে দিতে বলল, “নে ভাই। জানি তুই আমার ওপর খুব রেগে আছিস। তবু রচনা তোর বৌদি হয়ে আমাদের ঘরে আসছে, এ খুশীতে আগে একটু মিষ্টি মুখ করে নে সোনা ভাই আমার। তারপর দিদিকে যত খুশী গালমন্দ করিস”।
 

সতীশ দুটো মিষ্টি খাবার পর জল খেয়ে বলল, “এই বড়দি, আগে বলনা বৌদি, মানে রচনা এ বিয়েতে রাজি আছে তো”?
 

সীমন্তিনী সতীশের মাথার চুলগুলো নেড়ে চেড়ে বলল, “একদম ভাবিসনে ভাই। সব ঠিক আছে। তবে রচু তো কিছুটা শান্ত প্রকৃতির। আবেগ উচ্ছ্বাসটা সব সময় প্রকাশ করে না। আর বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে নম্র ভদ্র মেয়েরা একটু লজ্জা পেয়েই থাকে। কিন্তু আমার সাথে যতটুকু কথা হয়েছে তাতেই আমি খুশী। আর মাসি মেসোও দাদাভাইকে দেখে আমাদের বাড়ির আর সবাইকে দেখে খুব খুশী হয়েছেন। আর বিয়ে তো প্রায় ঠিকই হয়ে গেল। শুধু দিনক্ষণটা স্থির করা বাকি রইল। আর সেটা তো এখন করবও না। এতে দু’পক্ষেরই সুবিধে। বিয়ে পাকা হবার পর এক বছর বাদে বিয়েটা হচ্ছে। এই এক বছরের মধ্যে কত কিছুই তো হতে পারে। এতে আমাদের আর ওদের বাড়িতে অনভিপ্রেত কিছু হলেই সকলের মনে একটা দ্বিধাভাব জেগে উঠতে পারে। তাই এখন দিন স্থির করার কথা ওঠাবই না আমরা। আপাততঃ আমার হাতে শুধু দুটো কাজ রইল। প্রথম কাজটা হচ্ছে আমি যে তোর আর আমার পরিচয়টা তাদের কাছে লুকিয়ে রেখেছি সেটা তাদের কাছে ঠিকভাবে প্রকাশ করে দেওয়া। আর দুই হচ্ছে, রচনার সাথে আমাদের বাড়ির সকলেই যেন ফোন করে মাঝে মাঝে কথা বলেন। রচনা যেন বুঝতে পারে বিয়ের পর তাকে যাদের সাথে থাকতে হবে তারা সবাই খুব ভাল লোক। তাহলে আমাদের বাড়ির লোকদের ওপর ওর ভরসা বাড়বে। তুই কিন্তু এবার বাড়ি গিয়ে ব্যাপারটা ভাল করে বুঝিয়ে দিবি বাড়ির সবাইকে”।

সতীশ শুনে বলল, “সে তো ঠিক আছেরে বড়দি। কিন্তু আমি কি দাদার বিয়ের আগে আর বৌদিকে দেখতে পাব না? বৌদির বাবা মা আমাদের বাড়ি এলেন, তখনও তুই আমাকে বাড়িতে থাকতে দিলি না। আমি তো তাদের কারোর সাথে দেখা করবার বা কথা বলবার সুযোগই পাচ্ছি না। এতে আমার মনে কষ্ট হয়না বল”?
 

সীমন্তিনী দুষ্টুমি করে বলল, “বুঝেছি। আমি যে দু’ তিনবার ওদের বাড়ি গিয়েছি, থেকেছি, তাতে তোর হিংসে হচ্ছে, না ভাই? কিন্তু আর ভাবিস না। এবার তোকেও নিয়ে যাব। কবে যাবি বল। আজ না কাল”?

সতীশ একটু মনমরা হয়ে বলল, “বুঝেছি, তুই এখনও আমাকে নিয়ে যাবি না”।
 

সীমন্তিনী নিজের মোবাইলটা সতীশের হাতে দিয়ে বলল, “নে। বড়মাকে ফোন কর। উনি যেন রচনাদের বাড়িতে খবর দিয়ে দেন যে রতীশের ভাই আর বোন তাদের বাড়ি যাচ্ছে। আর তুই কবে যেতে চাস সেটাও বড়মাকে বলে দে। তবে পরের সপ্তাহে শুক্রবার পর্যন্ত আমার রেগুলার ক্লাস আছে। যদি আমার সাথে যেতে চাস তাহলে শনিবার যেতে হবে। আর তুই যদি একা যেতে রাজি থাকিস, তাহলে তোর খুশী মত যে কোনদিন যেতে পারিস। তোর কলেজ তো বন্ধই আছে এখন”।
 

সতীশ অবাক হয়ে বলল, “পাগল হয়েছিস তুই? আমি একা গেলে সব গুবলেট হয়ে যাবে। কি বলতে কি বলে ফেলব। শেষে তোর ওপর তারা সবাই রেগে মেগে সম্পর্কটাই না নাকচ করে দেন। না না, তোকে যেতে হবে আমার সাথে”।

সীমন্তিনী হেসে বলল, “বেশ যাব। নে বড়মাকে ফোনটা কর। আর বলে দে আমাদের নাম উল্লেখ না করে তিনি যেন সেভাবেই রচুদের বাড়িতে খবরটা দিয়ে দেন”।
 

সতীশ অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে বলল, “তুই সত্যি বলছিস তো বড়দি? আমার ওপর রাগ করে এ কথা বলছিস না তো”?
 

সীমন্তিনী হেসে বলল, “নারে পাগল ছেলে। আমাকে তো যেতেই হবে। তাদের কাছে যে সত্যি কথাটা এতদিন ধরে লুকিয়ে রেখেছি সেটা তো এখন খোলসা করতেই হবে রে। নইলে পরে ব্যাপারটা অন্য মাত্রায় পৌঁছে যাবে। আর সত্যি বলতে কি জানিস? আমারও রচুকে বার বার দেখতে ইচ্ছে করছে। নে তুই ফোনটা কর”।
 

সীমন্তিনীর কথা শেষ হবার আগেই সতীশের হাতে ধরা ফোনটা বেজে উঠল। সতীশ ফোনের দিকে দেখে বলল “এই বড়দি, বৌদি ফোন করেছে রে। ধর”।
 

সীমন্তিনী বলল, “কলটা তুই রিসিভ কর। বলিস আমি বাথরুমে আছি। আর দেখ কি বলে। স্পীকারটা অন করে দিস”।
 

সতীশ কলটা রিসিভ করেই স্পীকার অন করে দিতেই শোনা গেল রচনা বলছে, “তুমি কী গো দিদিভাই। এতরাত হয়ে গেল। এখনও তোমার পৌছ সংবাদটা দিলে না? জানো, বাবা মা আর ভাই তখন থেকে চিন্তা করছে। তুমি কি এখনও বাড়ি গিয়ে পৌঁছও নি নাকি”?

সতীশ নিজের গলাটা পরিস্কার করে বলল, “না মানে শুনুন। দিদি একটু বাথরুমে আছে। তাই আমি ফোনটা ধরেছি। আমি সতু”।

রচনা বলল, “সরি দাদা, আমি তো বুঝতে পারিনি। আপনি কিছু মনে করবেন না প্লীজ। আসলে দিদিভাই এতক্ষণেও কোন ফোন না করাতে আমরা সবাই একটু চিন্তায় ছিলাম। তাই মা বলল আমাকেই ফোন করে খবরটা নিতে। কিন্তু ফোনটা যে আপনি ধরেছেন, এটা তো আমি বুঝতে পারিনি। অপরাধ নেবেন না দাদা”।
 

সতীশ সীমন্তিনীর দিকে চাইতেই সীমন্তিনী ঈশারায় তাকে বলল কথা চালিয়ে যেতে। সতীশ তাই বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে, ঠিক আছে। আপনি সেটা নিয়ে অযথা ভাববেন না। তা ফোনটা বেজে উঠতে দেখলাম রচনা নামে কেউ একজন ফোন করেছে। আপনিই কি রচনা? আর দিদি কি কালচিনিতে কাল আপনাদের বাড়িতেই ছিল”?

রচনা বলল, “হ্যা দাদা। আপনি তো দিদিভাইয়ের ভাই, তাই না? আমার প্রণাম নেবেন দাদা। আর প্লীজ আমাকে মাফ করে দেবেন”।
 

সতীশ বলল, “আরে বার বার মাফ চাইবার মত এমন কিছু অপরাধ তো আপনি করেন নি। দিদি যে এখানে পৌঁছে আপনাকে ফোন করে খবর দেয় নি, সেটা তো তারই ভুল। তবে আপনি ভাববেন না। দিদি কিছুক্ষণ আগেই ঘরে এসে পৌঁছেছে। আর সে সুস্থই আছে। সে তো এখন বাথরুমে। সে চান সেরে বেরোলেই আমি তাকে বলব যে আপনি ফোন করেছিলেন। একদম ভাববেন না”।

রচনা বলল, “ধন্যবাদ দাদা। আচ্ছা রাখছি এখন” বলে ফোন কেটে দিল। সীমন্তিনী মুচকি হেসে বলল, “কিরে ভাই? বৌদির সাথে কথা বলে কেমন লাগল”?
 

সতীশ মন্ত্রমুগ্ধের মত বলল, “কি সুন্দর গলার ভয়েস রে বড়দি? মনে হচ্ছে কানে যেন মধু ঝরে পড়ছিল। এতদিন জানতুম তোর গলার মত এত মিষ্টি গলা আর বুঝি কারুর নেই। বৌদির গলা তো তোর গলার চেয়েও মিষ্টি লাগল রে”!
 

সীমন্তিনী বলল, “তাহলে এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিলি কেন? আরও খানিকক্ষণ কথা বলে যেতে পারলি না”?

সতীশ বলল, “মনে মনে লোভ তো ঠিকই হচ্ছিল রে বড়দি। কিন্তু বৌদি হয়ে আমাকে যেভাবে আপনি আজ্ঞে করে কথা বলছিল তাতে আর বেশীক্ষণ কথা বললাম না। শেষে দেখা যাবে বিয়ের পরেও আমাকে আপনি আপনি করে কথা বলবে। আমি তো মুখ ফস্কে বৌদিই বলে ফেলছিলুম প্রায়। নে এবার তুই একটু তার সাথে কথা বল। তাহলে ওর ভাল লাগবে”।
 

সীমন্তিনী ফোন হাতে নিয়ে একহাতে সতীশের গলা জড়িয়ে ধরে বলল, “দে। আর তুইও শোন আবার তোর বৌদির মিষ্টি গলা” বলে রচনার নাম্বার ডায়াল করল। রচনা ফোন ধরেই বলল, “ও দিদিভাই। আমি যে বড় অন্যায় করে ফেলেছি গো। তোমার ভাইকে তো তুমি ভেবে রেগেমেগে কত কিছু বলে ফেলেছি আমি। উনি নিশ্চয়ই আমার ওপর খুব রেগে গেছেন, তাই না গো”?

সীমন্তিনী বলল, “কই? না তো! ওকে দেখে তো আমার তেমন মনে হয়নি। ও তো শুধু আমাকে এটুকুই বলল যে তুই ফোন করেছিলি আমাকে। আর আমি বাথরুমে ছিলুম বলে ও কলটা রিসিভ করেছিল। আর তো কিছু বলে নি! তা তুই এমন কী বলেছিস যে ও রাগ করবে”?
 

রচনা বলল, “তুমি চলে যাবার পর এখনও ফোন করনি বলে মা বাবা ভাই সবাই চিন্তা করছিলেন। বার বার বলছিলেন তুমি ঠিকমত গিয়ে পৌঁছলে কিনা। তাই ও’পাশে তুমিই আছ ধরে নিয়ে অভিমান করে আর অনেক অনুযোগ করে অনেক কিছু বলছিলাম। আমি তো ভেবেছিলুম যে ফোনটা তুমিই ধরেছ। ফোনটা যে সতুদা ধরেছে আমি তো সেটা না শুনেই ও’সব কথা বলে ফেলেছিলুম”।
 

সীমন্তিনী বলল, “তুই কি ওকে আপনি আপনি করে বলেছিলিস নাকি”?

রচনা বলল, “হ্যা দিদিভাই, তাই তো বলেছি! প্রথমবার তার সাথে আজ কথা বললাম। সত্যি করে বলতে
 
গেলে তো আমাদের মধ্যে পরিচয়ই ছিল না আগে। তাই আপনি করেই বলেছি। কেন গো তাতে কী হয়েছে”?

সীমন্তিনী বলল, “না তেমন কিছু হয় নি। আমার ভাইটা একটু অভিমান করেছে। বলল যে আমি ওর বড় দিদি। আমাকে তুই নিজের দিদির মত তুমি তুমি বলছিলিস। আর ওকে তুই আপনি করে বলেছিস, তাতে ও খুব দুঃখ পেয়েছে”।
 

রচনা বলল, “এ মা, সে এমন কথা বলেছে বুঝি? ইশ আমাকে নিশ্চয়ই সে খুব খারাপ ভেবেছে, তাই না গো দিদিভাই”?

সীমন্তিনী বলল, “না না, খুব বেশী খারাপ বলে ভাবেনি রে। তবে ওই যে বললুম একটু অভিমান করেছে। ওই আর কি। তবে তুই ভাবিস নে। আমি ওকে বুঝিয়ে দেব। কিন্তু এরপর যদি আবার কখনও তার সাথে কথা হয় সেদিন আর আপনি আজ্ঞে করে বলিসনে ভাই। ও তো আমার ছোট ভাই। বয়সে অবশ্য তোর থেকে বড়ই হবে। তাই দাদা বললেও অন্ততঃ তুমি করে বলিস”।
 

রচনা বলল, “ইশ আমার খুব খারাপ লাগছে গো দিদিভাই। না জেনে না বুঝেই সতুদার মনে দুঃখ দিয়ে ফেলেছি। তুমি তো আমার লক্ষী দিদিভাই। তাকে একটু বুঝিয়ে বলোনা গো”।
 

সীমন্তিনী বলল, “আচ্ছা রে বাবা আচ্ছা। দেব বুঝিয়ে। আর তোকে কান্নাকাটি করতে হবে না। এবার তোদের খবর বল তো শুনি। তোরা কে কেমন আছিস? আর রাজগঞ্জ থেকে কেউ আজ ফোন করেছিল”?
 

রচনা বলল, “হ্যা গো দিদিভাই। ওনার মা ফোন করেছিলেন। মা বাবার সাথে কথা বলার পর আমার সাথেও অনেকক্ষণ কথা বলেছেন আজ”।

সীমন্তিনী খুশী হয়ে বলল, “ওমা! তাই! তা আজই এত কী কথা বললেন তিনি”?
 

রচনা বলল, “আর বোলো না গো দিদিভাই। আমি কেমন ড্রেস পড়তে ভালবাসি, কি খেতে ভালবাসি, সাজতে ভালবাসি কি না? সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নিলেন তিনি”।

সীমন্তিনী জিজ্ঞেস করল, “আর কিছু বলেননি তিনি”?

রচনা জবাব দিল, “বলেছে গো দিদিভাই। আরও অনেক কথা বলেছেন তিনি। তবে সে সব কি আর ফোনে এত ডিটেইলসে বলা যায় নাকি”?

______________________________
 
[+] 1 user Likes riank55's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সীমন্তিনী BY SS_SEXY - by riank55 - 24-02-2020, 09:11 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)