22-02-2020, 11:04 PM
(Update No. 1)
১২ই আগস্ট ২০১৬।
সকাল প্রায় আটটা। বাগডোগড়া এয়ারপোর্ট চত্বর থেকে এক পরিবারের কয়েকজন সদস্য বেরিয়ে এল। স্বামী, স্ত্রী, তাদের সাথে বছর বেয়াল্লিশের এক মহিলা। আড়াই বছর বয়সী ফুটফুটে একটা ছেলে বয়স্কা মহিলাটির হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় বত্রিশ বছরের স্বামী ভদ্রলোক একটা ট্রলিতে করে চারখানা লাগেজ বয়ে নিয়ে বাইরে এসেছে। আর বছর পঁচিশেক বয়সের মহিলাটির কোলে একটা ছোট্ট নবজাত শিশু। এয়ারপোর্টের মেইন গেট থেকে বেরিয়ে আসতেই একপাশে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের ভিড় চোখে পড়ল। বিমান যাত্রীদের বেরোতে দেখেই তারা চিৎকার করে সকলের মনযোগ আকর্ষণ করবার জন্যে বলছে, “আসুন স্যার, আসুন ম্যাডাম। গ্যাংটক, থিম্পু, দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্সিয়াং, নেপাল বর্ডার, ধুলাবাড়ি, কুচবিহার, কিশানগঞ্জ, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার,এসি নন-এসি সব আছে। আসুন আসুন”।
যুবকটি ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ভিড় থেকে সকলকে সাথে নিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে নিজের মুখ আর গলার ঘাম মুছতে মুছতে বলল, “সামনের দিকে তো প্রচণ্ড রোদ রচু। তোমরা বরং এখানেই এ ছায়ায় একটু দাঁড়াও। আমি আগে গিয়ে একটা ট্যাক্সি ঠিক করে আসছি। তারপর এসে তোমাদের নিয়ে যাব। লক্ষ্মীদি তুমি খোকার হাত ধরে থাকো”।
এই বলে কয়েক পা এগোতে না এগোতেই উল্টোদিক থেকে ছাব্বিশ সাতাশ বছরের এক যুবক একেবারে তার মুখোমুখি এসে দাঁড়াতে ভদ্রলোক চমকে উঠল। সে কিছু বুঝে ওঠবার আগেই যুবকটি তার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল, “আসুন বড়দা, এ রোদে আর কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। আমার গাড়ি ওই দিকটায় আছে। একটু খানি হাঁটতে হবে” বলে বাচ্চা কোলে করে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রমহিলা আর তার পাশের বয়স্কা মহিলার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাদের দু’জনকেও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল, “আসুন বড়বৌদি, এসো লক্ষ্মীদি”।
ভদ্রমহিলা তার স্বামীর দিকে অবাক হয়ে চেয়ে জিজ্ঞেস করল, “একী গো? ও আমাদের চেনে? কে ও”?
ভদ্রলোক এবার ছেলেটির কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “দ্যাখো ভাই, আমরা কিন্তু কেউই তোমাকে চিনতে পারছি না। তুমি সত্যি আমাদের চেনো”?
ছেলেটি নিষ্পাপ হেসে জবাব দিল, “এ কী বলছেন বড়দা? আমি আপনাদের চিনব না? তাহলে তো মরে গিয়ে আমি নরকেও ঠাঁই পাব না। আপনি তো রাজগঞ্জের ভট্টাচার্যি বাড়ির বড়ছেলে রতীশবাবু। আর ইনি তো বড়বৌদি। উনি হচ্ছেন লক্ষ্মীদি, আর এই ছোট্ট সোনাটা তো আপনাদের ছেলে। তবে ওর নামটা ....... চন্দুবোনের মুখে অবশ্য শুনেছিলাম। কিন্তু এ মূহুর্তে ঠিক মনে করতে পারছি না। আর বৌদির কোলে যে আছে ওকে তো আমি আজই প্রথম দেখছি। ও নিশ্চয়ই আমার নতুন ভাইঝিই হবে। বাড়ির তিন মা তো ওকে দেখবার জন্যে উতলা হয়ে আছেন। চলুন চলুন, তাড়াতাড়ি বাড়ি যাওয়া যাক” বলতে বলতে রতীশের হাত থেকে ট্রলিটা নিয়ে একদিকে এগোতে লাগল।
_______________________________________________________________________________________________________________
১২ই আগস্ট ২০১৬।
সকাল প্রায় আটটা। বাগডোগড়া এয়ারপোর্ট চত্বর থেকে এক পরিবারের কয়েকজন সদস্য বেরিয়ে এল। স্বামী, স্ত্রী, তাদের সাথে বছর বেয়াল্লিশের এক মহিলা। আড়াই বছর বয়সী ফুটফুটে একটা ছেলে বয়স্কা মহিলাটির হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় বত্রিশ বছরের স্বামী ভদ্রলোক একটা ট্রলিতে করে চারখানা লাগেজ বয়ে নিয়ে বাইরে এসেছে। আর বছর পঁচিশেক বয়সের মহিলাটির কোলে একটা ছোট্ট নবজাত শিশু। এয়ারপোর্টের মেইন গেট থেকে বেরিয়ে আসতেই একপাশে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের ভিড় চোখে পড়ল। বিমান যাত্রীদের বেরোতে দেখেই তারা চিৎকার করে সকলের মনযোগ আকর্ষণ করবার জন্যে বলছে, “আসুন স্যার, আসুন ম্যাডাম। গ্যাংটক, থিম্পু, দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্সিয়াং, নেপাল বর্ডার, ধুলাবাড়ি, কুচবিহার, কিশানগঞ্জ, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার,এসি নন-এসি সব আছে। আসুন আসুন”।
যুবকটি ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ভিড় থেকে সকলকে সাথে নিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে নিজের মুখ আর গলার ঘাম মুছতে মুছতে বলল, “সামনের দিকে তো প্রচণ্ড রোদ রচু। তোমরা বরং এখানেই এ ছায়ায় একটু দাঁড়াও। আমি আগে গিয়ে একটা ট্যাক্সি ঠিক করে আসছি। তারপর এসে তোমাদের নিয়ে যাব। লক্ষ্মীদি তুমি খোকার হাত ধরে থাকো”।
এই বলে কয়েক পা এগোতে না এগোতেই উল্টোদিক থেকে ছাব্বিশ সাতাশ বছরের এক যুবক একেবারে তার মুখোমুখি এসে দাঁড়াতে ভদ্রলোক চমকে উঠল। সে কিছু বুঝে ওঠবার আগেই যুবকটি তার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল, “আসুন বড়দা, এ রোদে আর কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। আমার গাড়ি ওই দিকটায় আছে। একটু খানি হাঁটতে হবে” বলে বাচ্চা কোলে করে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রমহিলা আর তার পাশের বয়স্কা মহিলার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাদের দু’জনকেও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল, “আসুন বড়বৌদি, এসো লক্ষ্মীদি”।
ভদ্রমহিলা তার স্বামীর দিকে অবাক হয়ে চেয়ে জিজ্ঞেস করল, “একী গো? ও আমাদের চেনে? কে ও”?
ভদ্রলোক এবার ছেলেটির কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “দ্যাখো ভাই, আমরা কিন্তু কেউই তোমাকে চিনতে পারছি না। তুমি সত্যি আমাদের চেনো”?
ছেলেটি নিষ্পাপ হেসে জবাব দিল, “এ কী বলছেন বড়দা? আমি আপনাদের চিনব না? তাহলে তো মরে গিয়ে আমি নরকেও ঠাঁই পাব না। আপনি তো রাজগঞ্জের ভট্টাচার্যি বাড়ির বড়ছেলে রতীশবাবু। আর ইনি তো বড়বৌদি। উনি হচ্ছেন লক্ষ্মীদি, আর এই ছোট্ট সোনাটা তো আপনাদের ছেলে। তবে ওর নামটা ....... চন্দুবোনের মুখে অবশ্য শুনেছিলাম। কিন্তু এ মূহুর্তে ঠিক মনে করতে পারছি না। আর বৌদির কোলে যে আছে ওকে তো আমি আজই প্রথম দেখছি। ও নিশ্চয়ই আমার নতুন ভাইঝিই হবে। বাড়ির তিন মা তো ওকে দেখবার জন্যে উতলা হয়ে আছেন। চলুন চলুন, তাড়াতাড়ি বাড়ি যাওয়া যাক” বলতে বলতে রতীশের হাত থেকে ট্রলিটা নিয়ে একদিকে এগোতে লাগল।
_______________________________________________________________________________________________________________