21-02-2020, 08:45 AM
।।সপ্ত ত্রিংশতি পর।।
গাড়ী যত কমপ্লেক্সের দিকে এগিয়ে চলে ঢিপঢিপ করে সুভদ্রার বুক।মিসেস কণিকাকে আসতে বলেছে এখন আর কিছু করার নেই। ভুল করতে যাচ্ছে নাতো চিন্তাটা মনের মধ্যে তীব্রতর হতে থাকে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল পিছনে কেনা জিনিসপত্র।বৈদুর্যের কোনো দোষ নেই তার জিদের জন্যই যা কিছু হচ্ছে।বৈদুর্য বলে দিয়েছে তুমি যা বলবে তাই করবো আমি,বিয়ের কোনো দরকার নেই।মুখের কথায় ভরসা নেই সুভদ্রার,পাকাপাকি ব্যবস্থা চাই।
একটু আগে হোটেলে গিয়ে খেয়ে এল,সোফার উপর শুয়ে শেলটারের কথা ভাবছে বৈদুর্য। গোদেলিয়েভ ম্যাম বলছিলেন টাকা বাড়িয়ে দেবেন।মিমিদি রাজি না তাই মুখের উপর না বলে দিল।সকাল থেকে এঘর ওঘর দৌড়াদৌড়ি একটা অভ্যাস হয়ে গেছিল,এখানে সময় কাটতে চায় না।দরজায় শব্দ হতে উঠে দরজা খুললো, মিমিদির বদলে দেখলো পুরুষ মুখ।
–আমি আশুতোষ দে,ম্যাডামের খাট নিয়ে এসেছি।
বৈদুর্য দেখল পিছনে দুজন লোক খাটের নানা অংশ নিয়ে দাঁড়িয়ে,বৈদুর্য পাশ দিতে ওরা ঢুকে জিজ্ঞেস করে, কোথায় রাখবো?
বৈদুর্য কিছু বলার আগেই আশু বাবু পিছনের ঘরটায় খাট রাখতে বলেন।লোকগুলো খাট সেট করে ঘাম মুছে বলল,দেন বাবু যাই।
আশুবাবু তাদের হাতে দশটি টাকা দিতে ওরা চলে গেল। সঙ্গে সঙ্গে একটি বছর চলিশের লোক ঢুকে পড়ল।তার সঙ্গে ষ্ণডাগণ্ডা টাইপ দুটী যুবক।মনে হল ওরা আশুবাবুর পরিচিত।
–কি ব্যাপার বরেনবাবু? এখানে কেন অফিসে যান।
–এইখানেই ফয়শলা করতে চাই।অনেক ঘুরিয়েছেন,আমার ফ্লাটের কি হল?
–কি মুস্কিল কেউ না ছাড়লে কি করে হবে?
পাশে দাঁড়ানো একটি ছেলে হেড়ে গলায় বলল,আপনি কাষ্টোমারের টাকা নিয়েছেন আপনাকে ফ্লাট দিতে হবে।
–দ্যাখ বাদলা আমি তোর সঙ্গে কোনো কথা বলতে চাই না।
–তোর বাপ বলবে শাললা।অপর ছেলেটি এগিয়ে এল।
–ভদ্রভাবে কথা বলবি আনিস,ওসব ফুটো মস্তানি অন্য জায়গায় দেখাবি।আশুবাবু চিৎ কার করে উঠলেন।
বাদলা বলে ছেলেটি আঙ্গুলতুলে বলল,গলা নামিয়ে–ভেবেছো চিল্লিয়ে লোক জড়ো করবে?
বৈদুর্য অবাক হয়ে ঘটনাটা বুঝতে চেষ্টা করে।এরা কারা কিসের ফ্লাট কিছুই বুঝতে পারছে না।সুভদ্রা লিফট থেকে নেমে দেখল ফ্লাটের দরজা খোলা।কি ব্যাপার মনে হচ্ছে তার ফ্লাট থেকে গোলমালের আওয়াজ আসছে। বৈদুর্যের গলা পাওয়া যাচ্ছে না।নীচে গাড়ীতে মালপত্তর রয়েছে ভেবেছিল বৈদুর্যকে বলবে নিয়ে আসতে।দরজা দিয়ে ঢুকে দেবাবু আর জনা তিনেক লোককে দেখে বুঝতে পারে না এরা কারা?বৈদুর্য চুপচাপ বসে আছে সোফায়।
সুভদ্রাকে দেখে আশুবাবু বললেন,বরেন বাবু আপনার যা বলার অফিসে গিয়ে বলবেন, আপনারা যান,আমি এক্ষুনি যাচ্ছি।
–কেন অফিসে কেন? এখানেই বলত হবে,আমরা আপনার বাপের চাকর না শালআ–।আনিস বলল।
সুভদ্রা বলল,এটা আমার ফ্লাট আপনারা এখান থেকে যান।আপনাদের যা কথা দেবাবুর সঙ্গে অফিসে গিয়ে বলুন।
–ফ্লাট মারাবেন না।কোথায় গিয়ে কথা বলবো সেটা আপনার কাছে শিখবো না।
সবাইকে চমকে দিয়ে বৈদুর্য লাফ দিয়ে উঠে বাদলা আর আনিসকে ধাক্কা দিয়ে দরজার বাইরে বের করে দিয়ে বলল,বাদরামী হচ্ছে? কার সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?
ওরা হতচকিত মুখে কথা যোগায় না।বরেনবাবু বেগতিক দেখে নিজেই বেরিয়ে গিয়ে বলল,আচ্ছা আপনি অফিসে আসুন।
–গাড়ীতে জিনিসপত্র রয়েছে,যাক তোমাকে আর যেতে হবে না,আমিই যাচ্ছি।সুভদ্রা বলল।
–তুমি চাবি দাও আমি যাচ্ছি।বৈদুর্যর মুখের দিকে সুভদ্রা কিছু বলতে পারে না,চাবি এগিয়ে দিল।
–ম্যাডাম আপনার খাট এসে গেছে।সিঙ্গল খাট দাম একটু বেশি পড়ে।আশুবাবু বললেন।
–কি ব্যাপার বলুন তো?এরা কারা?
–আর বলবেন না।আমি বরেনবাবুকে বলেছিলাম কেউ বুকিং ক্যান্সেল করলে আপনাকে ফ্লাট দিতে পারি।কিছুতেই শুনবেন না জোরজার করে আমাকে দশ হাজার টাকা গুজে দিল। আমার টাকাটা নেওয়াই ভুল হয়েছে।তখন বুঝিনি লোকটা এরকম,মস্তান নিয়ে ভয় দেখাতে এসেছে।গোবিন্দ নেই বলে ওরা সাপের পাঁচ পা দেখেছে।
–গোবিন্দ কে?এরাই বা কারা?
–একজনের নাম বাদলা আর একজন আনিস।লেকটাউনের ওদিকে থাকে।তবে স্যার ওদের গায়ে হাত না দিলেই ভাল করতেন।আপনি কিছু ভাববেন না,সব ঠিক হয়ে যাবে। বৈদুর্য কয়েকটা প্লাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে ঢূকতে সুভদ্রা বলল, ওগুলো ঐ খাটের উপর রেখে দাও।
–আমি আসি ম্যাডাম? আশুবাবু চলে গেলেন।
সুভদ্রা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে,বৈদুর্যের এইরুপ আগে কখনও দেখেনি।চুপচাপ বসেছিল কি হল কে জানে আচমকা বাঘের মত ঝাপিয়ে পড়ল।
বৈদুর্য মুচকি হেসে বলল,তোমাকে বেশ সুন্দর লাগছে মিমিদি,বলেই স্যরি বলে জিভ কাটল।
–দেবাবুর সঙ্গে কথা হচ্ছে তুমি কেন ওদের গায়ে হাত দিতে গেলে?
–আমি তো চুপ করে বসেছিলাম।ওরা অনেক মুখ খারাপ করছিল আমি কিছু বলেছি?
— তোমাকে তো কিছু বলেনি,তুমিই লাফিয়ে ওদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলে–।
–বেশ করেছি,ওরা বলেনি “ফ্লাট মারানো” হচ্ছে? জিভ টেনে ছিড়ে দিইনি ওদের ভাগ্য।
–তোমাকে বলেছে?
–তোমাকেই বা বলবে কেন?তোমাকে বলা মানে আমাকেই বলা।কথাগুলো বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ালো।
সুভদ্রা এতক্ষনে বুঝতে পারে হঠাৎ ক্ষেপে যাবার কারণ।চোখ ছল ছল করে উঠল।মনে মনে ভাবে,এ কোন পাগলের পাল্লায় পড়ল?সুভদ্রা ব্যালকনিতে গিয়ে বৈদুর্যের পিঠে হাত রাখে। তারপর আপন মনে বলে,কোথায় ভাবলাম এসে একটু চা খবো। তা না কতকগুলো মস্তানের সঙ্গে ঝামেলা।
–টাকা দাও চা নিয়ে আসছি।
–তোমার কাছে টাকা নেই?
–হ্যা ভুলেই গেছিলাম।
–শোনো নতুন ফ্লাক্স এনেছি প্যাকেটের মধ্যে দেখো।ভরতি করে চা নিয়ে এসো।আর কটা কাগজের কাপও নিয়ে আসবে।
বৈদুর্য চলে যেতে সুভদ্রা বাথরুমে ঢুকলো।ছটা বাজতে চলল,যে কোনো মুহুর্তে কনিকা এসে যেতে পারেন।শাওয়ার খুলে নিরাবরণ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,মুখে মৃদু হাসি।আজ তার বিয়ে,কেমন দাম্পত্য জীবনের স্বাদ?মাম্মী বলে বিয়ে ছাড়া নাকি মেয়েদের বেচে থাকা দুর্বিসহ। বাইরে বেল বেজে ওঠে। কে এল বৈদুর্য না কণিকা?দ্রুত গা মুছে পেটীকোট জামা গায়ে দিয়ে তোয়ালে জড়িয়ে আইহোলে চোখ রেখে দেখল বৈদুর্য।দরজা খুলে দিতে বৈদুর্য ঢূকতে সুভদ্রা বলল,তুমি স্নান করে ধুতি পাঞ্জাবী পরবে।
–আমি কোনোদিন ধুতি পাঞ্জাবী পরেছি নাকি?
–তুমি আগে কি কি করেছো আমি শুনতে চাইনি।
চায়ের ফ্লাক্স রেখে বৈদুর্য স্নান করতে গেল।সুভদ্রার সাজগোজে কোনোদিনও তেমন রুচি ছিল না।আজ বগলে কুচকিতে একটু পাউডারের প্রলেপ দিল। নতুন কিনে আনা সিল্কের একটা শাড়ী পরলো।ভাল ফিগার হলে যে কোনো পোষাকই ভাল লাগে।বৈদুর্যের নিজস্ব কোনো পছন্দ নেই তার মিমিদি যা পরে তাই তার ভাল লাগে।তাকে সিগারেট খেতে দেখে অবাক হলেও কোনো বিরুপ মতামত দেয়নি।বৈদুর্যকে ধুতি পরাতে পরাতে বুঝতে পারে ওর ঐটা বেশ বড়। ভাবে কিছু হবে নাতো?মনে হল কলিং বেল বাজলো। কনিকা দাস ঘোষ হাসি মুখে ঢুকলেন।সোফায় বসতে বলে সুভদ্রাও পাশে বসে বলল,এখনো পাকাপাকিভাবে আসিনি।
–হ্যা দেখেই বুঝেছি। কণিকা ব্যাগ খুলে কাগজ পত্র বের করে জিজ্ঞেস করলেন,ওনাকে দেখছি না,আসেন নি?
–হ্যা এসেছে আপনি ফর্ম টা ফিল আপ করুণ।বৈদুর্য তোমার হলে এদিকে এসো।
কণিকা অবাক হয়ে দেখল ধুতি পাঞ্জাবীতে বেশ হ্যাণ্ডসাম দেখতে ভদ্রলোক।সুভদ্রা পাশে বসতে বলল।ফর্ম ফিল আপ করে মুচকি হেসে কণিকা বললেন,আপনি সুভদ্রা সেন হলেন? নিন সই করুণ।
সই করে সুভদ্রা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আপ্যায়ন করতে পারলাম না।একদিন আপনাকে ডাকবো আসবেন তো?একটূ বসুন চা খেয়ে যান।
–না আজ থাক।যেদিন পরে আসবো তখন ভাল মন্দ খাওয়া যাবে।আজ উঠি,হ্যা আমি দু-একদিনের মধ্যে সার্টিফিকেট ইত্যাদি দিয়ে যাবো।দরজার বাইরে গিয়ে বললেন,ভদ্রলোক দারুণ হ্যাণ্ডসাম।উইশ ইউ অল দা বেষ্ট।
সুভদ্রা হেসে দরজা বন্ধ করে দিল।ফিরে এসে দেখল এতবড় একটা ব্যাপার হয়ে গেল বৈদুর্যর মধ্যে তার কোনো প্রতিফলন নেই,জিজ্ঞেস করল,চা দেবো?
–হ্যা দাও।আচ্ছা আমি তোমার কে?
–কি আবার বউ।বৈদুর্য চা এগিয়ে দিল।
সুভদ্রা চা-টা নামিয়ে রেখে বলল,বউকে একটূ আদর করো।
বৈদুর্য চায়ে চুমুক দিয়ে কাপ নামিয়ে রেখে সুভদ্রার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
–এই নাকি আদর?আমাকে একটা চুমু দাও।
–তুমি দাও।বৈদুর্য ঠোট এগিয়ে দিল।
–বলছি তুমি আদর করো।আমি তো আগে কতবার দিয়েছি।
বৈদুর্য মাথা নীচু করে আড়চোখে সুভদ্রাকে দেখে লজ্জায় লাল তার মুখ,তারপর ঘুরে দু-হাতে সুভদ্রার দু-গালে হাত দিয়ে তার ঠোট মুখে পুরে সজোরে চুষতে থাকল।সুভদ্রা ‘উম-উমহ-উমহ’ করে ছাড়াতে চেষ্টা করে। আঃ-আ-আউ-উ।
ঠোট মুক্তো করে বলল,রাক্ষস এই তোমার আদর?হাত ঠোটের উপর বোলায়।ঠোটে রক্ত জমে ফুলে গেছে,বৈদুর্য অপ্রস্তুত কি করবে বুঝতে পারে না।
ব্যাগ থেকে ক্রীম বের করে ঠোটে লাগালো সুভদ্রা।
–মিমিদি আমি বুঝতে পারিনি।অপরাধীর মত মুখ করে বলল বৈদুর্য।
–আবার মিমিদি?বউকে দিদি বললে লোকে শুনে কি বলবে?
–মি্মিদি আমি লোকের সামনে বলবো না,আমার মিমিদি বলতে ভাল লাগে।
–ঠিক আছে তোমার যা ইচ্ছে তাই বোলো।মাম্মীকে একটা ফোন করতে হবে।
সুভদ্রা ডায়াল ঘোরায়।হ্যালো মাম্মী আজ আমি ফিরতে পারবো না….জরুরী কাজে আটকে গেছি….বিয়ে করেছি…তোমার চেনা…বলেছিলাম না বৈদুর্য…মাম্মী….মাম্মী..হ্যালো মাম্মী..।
–কি হলো মিমিদি?
–ফোনটা কেটে গেল…বুঝতে পারছিনা।
–আবার ফোন করো।বৈদুর্য বলে।
–আবার? না থাক কাল তো দেখা হচ্ছে তখন সব বুঝিয়ে বলবো।
সুভদ্রা অবাক হয়নি এরকম কিছু হতে পারে ধারণা ছিল।কাল মাম্মির মান ভাঙ্গাতে হবে।তাকিয়ে তার দিকে হা-করে তাকিয়ে আছে বৈদুর্য।
গাড়ী যত কমপ্লেক্সের দিকে এগিয়ে চলে ঢিপঢিপ করে সুভদ্রার বুক।মিসেস কণিকাকে আসতে বলেছে এখন আর কিছু করার নেই। ভুল করতে যাচ্ছে নাতো চিন্তাটা মনের মধ্যে তীব্রতর হতে থাকে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল পিছনে কেনা জিনিসপত্র।বৈদুর্যের কোনো দোষ নেই তার জিদের জন্যই যা কিছু হচ্ছে।বৈদুর্য বলে দিয়েছে তুমি যা বলবে তাই করবো আমি,বিয়ের কোনো দরকার নেই।মুখের কথায় ভরসা নেই সুভদ্রার,পাকাপাকি ব্যবস্থা চাই।
একটু আগে হোটেলে গিয়ে খেয়ে এল,সোফার উপর শুয়ে শেলটারের কথা ভাবছে বৈদুর্য। গোদেলিয়েভ ম্যাম বলছিলেন টাকা বাড়িয়ে দেবেন।মিমিদি রাজি না তাই মুখের উপর না বলে দিল।সকাল থেকে এঘর ওঘর দৌড়াদৌড়ি একটা অভ্যাস হয়ে গেছিল,এখানে সময় কাটতে চায় না।দরজায় শব্দ হতে উঠে দরজা খুললো, মিমিদির বদলে দেখলো পুরুষ মুখ।
–আমি আশুতোষ দে,ম্যাডামের খাট নিয়ে এসেছি।
বৈদুর্য দেখল পিছনে দুজন লোক খাটের নানা অংশ নিয়ে দাঁড়িয়ে,বৈদুর্য পাশ দিতে ওরা ঢুকে জিজ্ঞেস করে, কোথায় রাখবো?
বৈদুর্য কিছু বলার আগেই আশু বাবু পিছনের ঘরটায় খাট রাখতে বলেন।লোকগুলো খাট সেট করে ঘাম মুছে বলল,দেন বাবু যাই।
আশুবাবু তাদের হাতে দশটি টাকা দিতে ওরা চলে গেল। সঙ্গে সঙ্গে একটি বছর চলিশের লোক ঢুকে পড়ল।তার সঙ্গে ষ্ণডাগণ্ডা টাইপ দুটী যুবক।মনে হল ওরা আশুবাবুর পরিচিত।
–কি ব্যাপার বরেনবাবু? এখানে কেন অফিসে যান।
–এইখানেই ফয়শলা করতে চাই।অনেক ঘুরিয়েছেন,আমার ফ্লাটের কি হল?
–কি মুস্কিল কেউ না ছাড়লে কি করে হবে?
পাশে দাঁড়ানো একটি ছেলে হেড়ে গলায় বলল,আপনি কাষ্টোমারের টাকা নিয়েছেন আপনাকে ফ্লাট দিতে হবে।
–দ্যাখ বাদলা আমি তোর সঙ্গে কোনো কথা বলতে চাই না।
–তোর বাপ বলবে শাললা।অপর ছেলেটি এগিয়ে এল।
–ভদ্রভাবে কথা বলবি আনিস,ওসব ফুটো মস্তানি অন্য জায়গায় দেখাবি।আশুবাবু চিৎ কার করে উঠলেন।
বাদলা বলে ছেলেটি আঙ্গুলতুলে বলল,গলা নামিয়ে–ভেবেছো চিল্লিয়ে লোক জড়ো করবে?
বৈদুর্য অবাক হয়ে ঘটনাটা বুঝতে চেষ্টা করে।এরা কারা কিসের ফ্লাট কিছুই বুঝতে পারছে না।সুভদ্রা লিফট থেকে নেমে দেখল ফ্লাটের দরজা খোলা।কি ব্যাপার মনে হচ্ছে তার ফ্লাট থেকে গোলমালের আওয়াজ আসছে। বৈদুর্যের গলা পাওয়া যাচ্ছে না।নীচে গাড়ীতে মালপত্তর রয়েছে ভেবেছিল বৈদুর্যকে বলবে নিয়ে আসতে।দরজা দিয়ে ঢুকে দেবাবু আর জনা তিনেক লোককে দেখে বুঝতে পারে না এরা কারা?বৈদুর্য চুপচাপ বসে আছে সোফায়।
সুভদ্রাকে দেখে আশুবাবু বললেন,বরেন বাবু আপনার যা বলার অফিসে গিয়ে বলবেন, আপনারা যান,আমি এক্ষুনি যাচ্ছি।
–কেন অফিসে কেন? এখানেই বলত হবে,আমরা আপনার বাপের চাকর না শালআ–।আনিস বলল।
সুভদ্রা বলল,এটা আমার ফ্লাট আপনারা এখান থেকে যান।আপনাদের যা কথা দেবাবুর সঙ্গে অফিসে গিয়ে বলুন।
–ফ্লাট মারাবেন না।কোথায় গিয়ে কথা বলবো সেটা আপনার কাছে শিখবো না।
সবাইকে চমকে দিয়ে বৈদুর্য লাফ দিয়ে উঠে বাদলা আর আনিসকে ধাক্কা দিয়ে দরজার বাইরে বের করে দিয়ে বলল,বাদরামী হচ্ছে? কার সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?
ওরা হতচকিত মুখে কথা যোগায় না।বরেনবাবু বেগতিক দেখে নিজেই বেরিয়ে গিয়ে বলল,আচ্ছা আপনি অফিসে আসুন।
–গাড়ীতে জিনিসপত্র রয়েছে,যাক তোমাকে আর যেতে হবে না,আমিই যাচ্ছি।সুভদ্রা বলল।
–তুমি চাবি দাও আমি যাচ্ছি।বৈদুর্যর মুখের দিকে সুভদ্রা কিছু বলতে পারে না,চাবি এগিয়ে দিল।
–ম্যাডাম আপনার খাট এসে গেছে।সিঙ্গল খাট দাম একটু বেশি পড়ে।আশুবাবু বললেন।
–কি ব্যাপার বলুন তো?এরা কারা?
–আর বলবেন না।আমি বরেনবাবুকে বলেছিলাম কেউ বুকিং ক্যান্সেল করলে আপনাকে ফ্লাট দিতে পারি।কিছুতেই শুনবেন না জোরজার করে আমাকে দশ হাজার টাকা গুজে দিল। আমার টাকাটা নেওয়াই ভুল হয়েছে।তখন বুঝিনি লোকটা এরকম,মস্তান নিয়ে ভয় দেখাতে এসেছে।গোবিন্দ নেই বলে ওরা সাপের পাঁচ পা দেখেছে।
–গোবিন্দ কে?এরাই বা কারা?
–একজনের নাম বাদলা আর একজন আনিস।লেকটাউনের ওদিকে থাকে।তবে স্যার ওদের গায়ে হাত না দিলেই ভাল করতেন।আপনি কিছু ভাববেন না,সব ঠিক হয়ে যাবে। বৈদুর্য কয়েকটা প্লাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে ঢূকতে সুভদ্রা বলল, ওগুলো ঐ খাটের উপর রেখে দাও।
–আমি আসি ম্যাডাম? আশুবাবু চলে গেলেন।
সুভদ্রা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে,বৈদুর্যের এইরুপ আগে কখনও দেখেনি।চুপচাপ বসেছিল কি হল কে জানে আচমকা বাঘের মত ঝাপিয়ে পড়ল।
বৈদুর্য মুচকি হেসে বলল,তোমাকে বেশ সুন্দর লাগছে মিমিদি,বলেই স্যরি বলে জিভ কাটল।
–দেবাবুর সঙ্গে কথা হচ্ছে তুমি কেন ওদের গায়ে হাত দিতে গেলে?
–আমি তো চুপ করে বসেছিলাম।ওরা অনেক মুখ খারাপ করছিল আমি কিছু বলেছি?
— তোমাকে তো কিছু বলেনি,তুমিই লাফিয়ে ওদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলে–।
–বেশ করেছি,ওরা বলেনি “ফ্লাট মারানো” হচ্ছে? জিভ টেনে ছিড়ে দিইনি ওদের ভাগ্য।
–তোমাকে বলেছে?
–তোমাকেই বা বলবে কেন?তোমাকে বলা মানে আমাকেই বলা।কথাগুলো বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ালো।
সুভদ্রা এতক্ষনে বুঝতে পারে হঠাৎ ক্ষেপে যাবার কারণ।চোখ ছল ছল করে উঠল।মনে মনে ভাবে,এ কোন পাগলের পাল্লায় পড়ল?সুভদ্রা ব্যালকনিতে গিয়ে বৈদুর্যের পিঠে হাত রাখে। তারপর আপন মনে বলে,কোথায় ভাবলাম এসে একটু চা খবো। তা না কতকগুলো মস্তানের সঙ্গে ঝামেলা।
–টাকা দাও চা নিয়ে আসছি।
–তোমার কাছে টাকা নেই?
–হ্যা ভুলেই গেছিলাম।
–শোনো নতুন ফ্লাক্স এনেছি প্যাকেটের মধ্যে দেখো।ভরতি করে চা নিয়ে এসো।আর কটা কাগজের কাপও নিয়ে আসবে।
বৈদুর্য চলে যেতে সুভদ্রা বাথরুমে ঢুকলো।ছটা বাজতে চলল,যে কোনো মুহুর্তে কনিকা এসে যেতে পারেন।শাওয়ার খুলে নিরাবরণ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,মুখে মৃদু হাসি।আজ তার বিয়ে,কেমন দাম্পত্য জীবনের স্বাদ?মাম্মী বলে বিয়ে ছাড়া নাকি মেয়েদের বেচে থাকা দুর্বিসহ। বাইরে বেল বেজে ওঠে। কে এল বৈদুর্য না কণিকা?দ্রুত গা মুছে পেটীকোট জামা গায়ে দিয়ে তোয়ালে জড়িয়ে আইহোলে চোখ রেখে দেখল বৈদুর্য।দরজা খুলে দিতে বৈদুর্য ঢূকতে সুভদ্রা বলল,তুমি স্নান করে ধুতি পাঞ্জাবী পরবে।
–আমি কোনোদিন ধুতি পাঞ্জাবী পরেছি নাকি?
–তুমি আগে কি কি করেছো আমি শুনতে চাইনি।
চায়ের ফ্লাক্স রেখে বৈদুর্য স্নান করতে গেল।সুভদ্রার সাজগোজে কোনোদিনও তেমন রুচি ছিল না।আজ বগলে কুচকিতে একটু পাউডারের প্রলেপ দিল। নতুন কিনে আনা সিল্কের একটা শাড়ী পরলো।ভাল ফিগার হলে যে কোনো পোষাকই ভাল লাগে।বৈদুর্যের নিজস্ব কোনো পছন্দ নেই তার মিমিদি যা পরে তাই তার ভাল লাগে।তাকে সিগারেট খেতে দেখে অবাক হলেও কোনো বিরুপ মতামত দেয়নি।বৈদুর্যকে ধুতি পরাতে পরাতে বুঝতে পারে ওর ঐটা বেশ বড়। ভাবে কিছু হবে নাতো?মনে হল কলিং বেল বাজলো। কনিকা দাস ঘোষ হাসি মুখে ঢুকলেন।সোফায় বসতে বলে সুভদ্রাও পাশে বসে বলল,এখনো পাকাপাকিভাবে আসিনি।
–হ্যা দেখেই বুঝেছি। কণিকা ব্যাগ খুলে কাগজ পত্র বের করে জিজ্ঞেস করলেন,ওনাকে দেখছি না,আসেন নি?
–হ্যা এসেছে আপনি ফর্ম টা ফিল আপ করুণ।বৈদুর্য তোমার হলে এদিকে এসো।
কণিকা অবাক হয়ে দেখল ধুতি পাঞ্জাবীতে বেশ হ্যাণ্ডসাম দেখতে ভদ্রলোক।সুভদ্রা পাশে বসতে বলল।ফর্ম ফিল আপ করে মুচকি হেসে কণিকা বললেন,আপনি সুভদ্রা সেন হলেন? নিন সই করুণ।
সই করে সুভদ্রা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আপ্যায়ন করতে পারলাম না।একদিন আপনাকে ডাকবো আসবেন তো?একটূ বসুন চা খেয়ে যান।
–না আজ থাক।যেদিন পরে আসবো তখন ভাল মন্দ খাওয়া যাবে।আজ উঠি,হ্যা আমি দু-একদিনের মধ্যে সার্টিফিকেট ইত্যাদি দিয়ে যাবো।দরজার বাইরে গিয়ে বললেন,ভদ্রলোক দারুণ হ্যাণ্ডসাম।উইশ ইউ অল দা বেষ্ট।
সুভদ্রা হেসে দরজা বন্ধ করে দিল।ফিরে এসে দেখল এতবড় একটা ব্যাপার হয়ে গেল বৈদুর্যর মধ্যে তার কোনো প্রতিফলন নেই,জিজ্ঞেস করল,চা দেবো?
–হ্যা দাও।আচ্ছা আমি তোমার কে?
–কি আবার বউ।বৈদুর্য চা এগিয়ে দিল।
সুভদ্রা চা-টা নামিয়ে রেখে বলল,বউকে একটূ আদর করো।
বৈদুর্য চায়ে চুমুক দিয়ে কাপ নামিয়ে রেখে সুভদ্রার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
–এই নাকি আদর?আমাকে একটা চুমু দাও।
–তুমি দাও।বৈদুর্য ঠোট এগিয়ে দিল।
–বলছি তুমি আদর করো।আমি তো আগে কতবার দিয়েছি।
বৈদুর্য মাথা নীচু করে আড়চোখে সুভদ্রাকে দেখে লজ্জায় লাল তার মুখ,তারপর ঘুরে দু-হাতে সুভদ্রার দু-গালে হাত দিয়ে তার ঠোট মুখে পুরে সজোরে চুষতে থাকল।সুভদ্রা ‘উম-উমহ-উমহ’ করে ছাড়াতে চেষ্টা করে। আঃ-আ-আউ-উ।
ঠোট মুক্তো করে বলল,রাক্ষস এই তোমার আদর?হাত ঠোটের উপর বোলায়।ঠোটে রক্ত জমে ফুলে গেছে,বৈদুর্য অপ্রস্তুত কি করবে বুঝতে পারে না।
ব্যাগ থেকে ক্রীম বের করে ঠোটে লাগালো সুভদ্রা।
–মিমিদি আমি বুঝতে পারিনি।অপরাধীর মত মুখ করে বলল বৈদুর্য।
–আবার মিমিদি?বউকে দিদি বললে লোকে শুনে কি বলবে?
–মি্মিদি আমি লোকের সামনে বলবো না,আমার মিমিদি বলতে ভাল লাগে।
–ঠিক আছে তোমার যা ইচ্ছে তাই বোলো।মাম্মীকে একটা ফোন করতে হবে।
সুভদ্রা ডায়াল ঘোরায়।হ্যালো মাম্মী আজ আমি ফিরতে পারবো না….জরুরী কাজে আটকে গেছি….বিয়ে করেছি…তোমার চেনা…বলেছিলাম না বৈদুর্য…মাম্মী….মাম্মী..হ্যালো মাম্মী..।
–কি হলো মিমিদি?
–ফোনটা কেটে গেল…বুঝতে পারছিনা।
–আবার ফোন করো।বৈদুর্য বলে।
–আবার? না থাক কাল তো দেখা হচ্ছে তখন সব বুঝিয়ে বলবো।
সুভদ্রা অবাক হয়নি এরকম কিছু হতে পারে ধারণা ছিল।কাল মাম্মির মান ভাঙ্গাতে হবে।তাকিয়ে তার দিকে হা-করে তাকিয়ে আছে বৈদুর্য।