19-02-2020, 03:10 PM
অষ্টবিংশতি পর্ব
মন্দিরা আজ চলে যাবে।এক সঙ্গে থাকলে সামান্য খুটিনাটি বাদ-বিতণ্ডা হতেই পারে। কিন্তু একেবারে চলে যাবে ভেবে সবার মন খারাপ হয়।বিশেষ করে সীমা,প্রতিদিন কত কথা হত--কদিন আগেও বিয়ে নিয়ে দুজনে খোলামেলা কত কথাই বলেছে।পরস্পর আলিঙ্গণ চোখের জল বিনিময় করতে করতে রাত হয়ে যায়। ট্রেনের সময় হয়ে আসছে মন্দিরার বাবা বিয়ের কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানালেন।বৈদুর্যকেও বলেছেন,আপনিও যাবেন। সীমাকে চুপি চুপি বলল মন্দিরা,কেউ না যাক তুই কিন্তু অবশ্যই যাবি। বৈদুর্য মাল-পত্তর নিয়ে ট্যাক্সিতে তুলে দিল।মন্দিরা একটা দশ টাকার নোট বৈদুর্যকে দিতে গেলে সে বলল,দিদিমণি আপনাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।টাকা দিয়ে সেটাকে নষ্ট করবেন না।
মন্দিরা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারে না,কি শুনছে সে?উঠত বসতে রোজই যে মানুষটাকে দেখেছে এতদিন তাকে চিনতেই পারে নি? ম্লান হেসে টাকাটা ব্যাগে ভরে বলল,দাদা ভাল থাকবেন,আসি।
গোদেলিয়েভ বাইদুজের কথা ভাবেন। প্রথমে তিনি মেল পারসন রাখতে রাজী ছিলেন না।শেষে মেয়ে না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাজী হলেও সব সময় একটা আশঙ্কা ছিল কোনো অনভিপ্রেত কিছু না ঘটে যায়। কাধ ম্যাসেজ করার সময় তার আঙ্গুল গুলো কাধেই সীমাবদ্ধ ছিল।সামান্য অছিলায় বিন্দুমাত্র এদিক ওদিক করেনি। ইউনাক সম্পর্কে আগ্রহ তাকে অবাক করেছে।বাইদুজ স্বাভাবিক পুরুষ কিনা মনে সন্দেহ দানা বাধতে থাকে।ওর কি পুরুষাঙ্গ নেই--ওকি নপুংষক? রাতে সবাই যখন শুয়ে পড়েছে গোদেলিয়েভ সন্তর্পনে দরজা খুলে ঘুমন্ত বাইদুজের প্রতি টর্চের আলো ফেলেন।
শিশুর মত ঘুমিয়ে আছে,লুঙ্গির ফাক দিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। ঘুমের ঘোরে পাশ ফিরলো বাইদুজ।গোদেলিয়েব টর্চ নিভিয়ে দ্রুত নিজের ঘরে ফিরে গেলেন। চারুর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা সঙ্গত বলে বোধ হল না।নিজেকে বোঝালেন,বাইদুজ যদি নপুংষক হয়ও তাতেই বা কি যায় আসে।কাজ তো ভালই করছে।
ভোর হতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল,সুভদ্রার এত ভোরে ঘুম ভাঙ্গে না। বালিশের নীচ থেকে চিঠিটা বের করে একবার দেখলো। মনে মনে সেদিনের কাজগুলো সাজিয়ে নেয়। মি.দাগাকে ব্যাপারটা জানাতে হবে।সেখান থেকে বারাসাত কোর্ট,তারপর সময় থাকলে একবার রাজার হাটে যেতে হবে,দেবাবুকে তাগাদা দেওয়া দরকার। বিচারক হিসেবে তাকে এখন অন্যরকম মানসিকতা দৃষ্টভঙ্গী গড়ে তুলতে হবে।আসিয়ানা আহমেদের কথা মনে পড়ল।আসিয়ানাকে সাধু মহারাজ চিনতো না।টুনির মা না কে তাকে সাধু মহারাজের কাছে নিয়ে গেছিল,মহারাজ নিজে তার বাসায় যায় নি। আসিয়ানা যৌন সুখ নয় সন্তান কামনায় গেছিল আশ্রমে।সন্তান কামনার পিছনে ছিল নিরাপত্তার অভাববোধ। সন্তান না হলে তার স্বামী তাকে তালাক দিতে পারে।স্বামীর কাছে সে যেন সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র। স্বামী তার নারীত্বকে মর্যাদা না দিয়ে নারীত্বকে অবমাননা করেছে,সেজন্য আইনের চোখে সে অপরাধী নয়।অন্যদিকে বজ্রানন্দ ব্রহ্মচারী সন্যাসী নারীকে মনে করেছে ভোগের সামগ্রী,নারীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উপভোগ করেছে যৌনসুখ।যদিও আসিয়ানা স্বেচ্ছায় নিজেকে মেলে ধরেছে,তার কথায় তিনবার তাকে ধর্ষিত হতে হয়েছে।
বজ্রানন্দ জানতেন তিনি আসিয়ানার যা দাবী তা পুরণে অক্ষম সে কথা গোপন করে লালসা মেটাতে সে কথা খুলে বলেন নি।এক রকম প্রতারণা বলা যায়,যদিও তার মনের সুপ্ত কামাগ্নি প্রজ্বলিত করেছিল আসিয়ানা।সামাজিক মুল্যবোধের পরিবর্তন না হলে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা কি সম্ভব? এই রকম অসহায়তার শিকার কেবল নারী কেন পুরুষও হতে পারে।বৈদুর্যকে যেদিন দেখল মাম্মীর উপর উঠে প্রবল বিক্রমে রমণ করছে প্রথমে তার নাথা গরম হলেও পরে বুঝেছে মাম্মীর প্ররোচনা না থাকলে বৈদুর্য স্বপ্নেও একাজ করার কথা কল্পনা করার সাহস পেতো না।তাকে কেবল মাত্র ব্রা প্যাণ্টিতে দেখে বৈদুর্যের ঘেমে নেয়ে যে অবস্থা হয়েছিল ভাবলে এখনও হাসি পায়।মনে পড়ল রেষ্টুরেণ্টের কথা যখন জড়িয়ে ধরে চুমু খেল বৈদুর্যের হাত তার পিঠে সঞ্চালিত হচ্ছিল তাতে ছিল না কামাগ্নির সুতীব্র আঁচ,বরং অনুভব করেছিল ভালবাসার সুকোমল স্পর্শ।যাতে খুজে পাওয়া যায় বেচে থাকার প্রেরণা।
সুরবালা হাসি হাসি মুখে চা নিয়ে ঢুকলো।সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে,মাম্মী উঠেছে?
--হ্যা।তানারে চা দিয়ে আসলাম।সুরবালা যায় না,চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে,কিছু বলবে?
--বড় বুন আমি জানি তুমি জজ হয়েছো।
সুভদ্রা বুঝতে পারে,এ নিশ্চয়ই মাম্মীর কাজ।তাকে আর আলাদা করে কাউকে বলতে হবে না।তার মেয়ে জজ হয়েছে এ খুশী তার পক্ষে চেপে রাখা বাস্তবিকই কঠিন।ইঙ্গিতটা বুঝতে অসুবিধে হয়না সুভদ্রা বলল,ঠিকই শুনেছো।তোমার কথা ভুলে যায় নি।
মন্দিরার জায়গায় একটি মেয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।ইউনিভার্সিটিতে এম এ পড়ে। মন্দিরা যেতে না যেতে কি করে যে খবর পায় কে জানে।গোদেলিয়েভ তাকে আসতে বলেছেন। চারু এসে বলল,ম্যাম বাজার শেষ।
--সবাই কি বেরিয়ে গেছে?বাইদুজ কি করছে?
--হ্যা সকলেই প্রায় গ্যাছে।বোদা খাতি বসেছে।
গোদেলিয়েভ একবার ভাবলেন,চারুকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন কিনা তারপর বললেন, ঠিক আছে তুমি যাও বাইদুজকে বোলো খাওয়া হলে যেন আসে।
বৈদুর্য ভেবেছিল খেয়েদেয়ে কলেজ ষ্ট্রিট যাবে মনে হচ্ছে তা হবে না।গোদেলিয়েভের দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,ম্যাম আমাকে ডেকেছেন?
--হ্যা বাজার যেতে হবে,কয়েকটা থলি নিয়ে নেও।
দুজনে কোলে মারকেটের দিকে রওনা হল।গোদেলিয়েভ নিজে বাজার করতে ভালবাসেন। এদেশের তরী তরকারী সম্পর্কে তার ভাল ধারণা আছে। বাজারীরা এই বিদেশিনী খদ্দেরকে বেশ ভাল চেনে বিশেষ করে তার অদ্ভুত বাংলা উচ্চারণ তাদের বেশ আনন্দ দেয়।রাস্তায় একটি লরি হতে কয়েকজন আলুর বস্তা পিঠে অরে নামাচ্ছিল। বৈদুর্যর নজরে পড়ে বঙ্গবাসী কলেজের সামনে ভীড়ের জটলা,এগিয়ে গিয়ে খবর নিল,পরীক্ষার রেজাল্ট এসেছে।বৈদুর্যের বুকের মধ্যে ধক করে উঠল।
এটা সেটা কিনতে কিনতে ব্যাগ ভর্তি হয়ে যায়। থলে ভর্তি বাজার শেষ করে রিক্সায় চাপিয়ে দিয়েছে। বৈদুর্য রিক্সায় পিছনে হেটে চলেছেন গোদেলিয়েভ।বৈদুর্যের মন পড়ে আছে কলেজে।হঠাৎ পিছনে গোলমাল শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল ম্যাডাম রাস্তায় পড়ে আছে মানুষ জন ঘিরে রেখেছে। লরির পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে একটি লোকের হাত থেকে বস্তা ছিটকে ম্যামের কোমরের উপর পড়তে ম্যাম কাত হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলেন।আশ পাশের লোকজন হৈ-হৈ করে সাহায্যের জন্য ছুটে এল।বৈদুর্য রিক্সা থামিয়ে দ্রুত ছুটে যায়। গোদেলিয়েভ কোমর ধরে কোনোমতে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,আয় এ্যাম ওকে..আয় এ্যাম ও কে।
--ম্যাম কষ্ট হচ্ছে?বৈদুর্য জিজ্ঞেস করে।
--ঠিক আছে।তুমি বাজার নিয়ে চলে যাও।আস্তে আস্তে আমি চলে যাবো।
বৈদুর্য লজে মাল-পত্তর তুলে দিয়ে রিক্সাওলাকে অপেক্ষা করতে বলে হন হন করে কলেজের দিকে রওনা হল।রিক্সাওলা মেমসাবকে চেনে সে অপেক্ষা করতে থাকে।
আজ রেজাল্ট বেরোবে সে খবর পায়নি।কলেজের কাছাকাছি আসতে উৎসাহ স্তিমিত হয়ে আসে।যদি পাস করতে না পারে?শেলটারে কি বলবে?খবর চেপে রাখা যাবে না।মিমিদির সামনে গিয়ে দাড়াতে পারবে না।মনে করার চেষ্টা করে পরীক্ষা কেমন দিয়েছে?ম্যাম পড়ে গেল কোনো অমঙ্গলের ইঙ্গিত নয়তো?ধুস এসব কি ভাবছে?
মন্দিরা আজ চলে যাবে।এক সঙ্গে থাকলে সামান্য খুটিনাটি বাদ-বিতণ্ডা হতেই পারে। কিন্তু একেবারে চলে যাবে ভেবে সবার মন খারাপ হয়।বিশেষ করে সীমা,প্রতিদিন কত কথা হত--কদিন আগেও বিয়ে নিয়ে দুজনে খোলামেলা কত কথাই বলেছে।পরস্পর আলিঙ্গণ চোখের জল বিনিময় করতে করতে রাত হয়ে যায়। ট্রেনের সময় হয়ে আসছে মন্দিরার বাবা বিয়ের কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানালেন।বৈদুর্যকেও বলেছেন,আপনিও যাবেন। সীমাকে চুপি চুপি বলল মন্দিরা,কেউ না যাক তুই কিন্তু অবশ্যই যাবি। বৈদুর্য মাল-পত্তর নিয়ে ট্যাক্সিতে তুলে দিল।মন্দিরা একটা দশ টাকার নোট বৈদুর্যকে দিতে গেলে সে বলল,দিদিমণি আপনাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।টাকা দিয়ে সেটাকে নষ্ট করবেন না।
মন্দিরা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারে না,কি শুনছে সে?উঠত বসতে রোজই যে মানুষটাকে দেখেছে এতদিন তাকে চিনতেই পারে নি? ম্লান হেসে টাকাটা ব্যাগে ভরে বলল,দাদা ভাল থাকবেন,আসি।
গোদেলিয়েভ বাইদুজের কথা ভাবেন। প্রথমে তিনি মেল পারসন রাখতে রাজী ছিলেন না।শেষে মেয়ে না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাজী হলেও সব সময় একটা আশঙ্কা ছিল কোনো অনভিপ্রেত কিছু না ঘটে যায়। কাধ ম্যাসেজ করার সময় তার আঙ্গুল গুলো কাধেই সীমাবদ্ধ ছিল।সামান্য অছিলায় বিন্দুমাত্র এদিক ওদিক করেনি। ইউনাক সম্পর্কে আগ্রহ তাকে অবাক করেছে।বাইদুজ স্বাভাবিক পুরুষ কিনা মনে সন্দেহ দানা বাধতে থাকে।ওর কি পুরুষাঙ্গ নেই--ওকি নপুংষক? রাতে সবাই যখন শুয়ে পড়েছে গোদেলিয়েভ সন্তর্পনে দরজা খুলে ঘুমন্ত বাইদুজের প্রতি টর্চের আলো ফেলেন।
শিশুর মত ঘুমিয়ে আছে,লুঙ্গির ফাক দিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। ঘুমের ঘোরে পাশ ফিরলো বাইদুজ।গোদেলিয়েব টর্চ নিভিয়ে দ্রুত নিজের ঘরে ফিরে গেলেন। চারুর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা সঙ্গত বলে বোধ হল না।নিজেকে বোঝালেন,বাইদুজ যদি নপুংষক হয়ও তাতেই বা কি যায় আসে।কাজ তো ভালই করছে।
ভোর হতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল,সুভদ্রার এত ভোরে ঘুম ভাঙ্গে না। বালিশের নীচ থেকে চিঠিটা বের করে একবার দেখলো। মনে মনে সেদিনের কাজগুলো সাজিয়ে নেয়। মি.দাগাকে ব্যাপারটা জানাতে হবে।সেখান থেকে বারাসাত কোর্ট,তারপর সময় থাকলে একবার রাজার হাটে যেতে হবে,দেবাবুকে তাগাদা দেওয়া দরকার। বিচারক হিসেবে তাকে এখন অন্যরকম মানসিকতা দৃষ্টভঙ্গী গড়ে তুলতে হবে।আসিয়ানা আহমেদের কথা মনে পড়ল।আসিয়ানাকে সাধু মহারাজ চিনতো না।টুনির মা না কে তাকে সাধু মহারাজের কাছে নিয়ে গেছিল,মহারাজ নিজে তার বাসায় যায় নি। আসিয়ানা যৌন সুখ নয় সন্তান কামনায় গেছিল আশ্রমে।সন্তান কামনার পিছনে ছিল নিরাপত্তার অভাববোধ। সন্তান না হলে তার স্বামী তাকে তালাক দিতে পারে।স্বামীর কাছে সে যেন সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র। স্বামী তার নারীত্বকে মর্যাদা না দিয়ে নারীত্বকে অবমাননা করেছে,সেজন্য আইনের চোখে সে অপরাধী নয়।অন্যদিকে বজ্রানন্দ ব্রহ্মচারী সন্যাসী নারীকে মনে করেছে ভোগের সামগ্রী,নারীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উপভোগ করেছে যৌনসুখ।যদিও আসিয়ানা স্বেচ্ছায় নিজেকে মেলে ধরেছে,তার কথায় তিনবার তাকে ধর্ষিত হতে হয়েছে।
বজ্রানন্দ জানতেন তিনি আসিয়ানার যা দাবী তা পুরণে অক্ষম সে কথা গোপন করে লালসা মেটাতে সে কথা খুলে বলেন নি।এক রকম প্রতারণা বলা যায়,যদিও তার মনের সুপ্ত কামাগ্নি প্রজ্বলিত করেছিল আসিয়ানা।সামাজিক মুল্যবোধের পরিবর্তন না হলে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা কি সম্ভব? এই রকম অসহায়তার শিকার কেবল নারী কেন পুরুষও হতে পারে।বৈদুর্যকে যেদিন দেখল মাম্মীর উপর উঠে প্রবল বিক্রমে রমণ করছে প্রথমে তার নাথা গরম হলেও পরে বুঝেছে মাম্মীর প্ররোচনা না থাকলে বৈদুর্য স্বপ্নেও একাজ করার কথা কল্পনা করার সাহস পেতো না।তাকে কেবল মাত্র ব্রা প্যাণ্টিতে দেখে বৈদুর্যের ঘেমে নেয়ে যে অবস্থা হয়েছিল ভাবলে এখনও হাসি পায়।মনে পড়ল রেষ্টুরেণ্টের কথা যখন জড়িয়ে ধরে চুমু খেল বৈদুর্যের হাত তার পিঠে সঞ্চালিত হচ্ছিল তাতে ছিল না কামাগ্নির সুতীব্র আঁচ,বরং অনুভব করেছিল ভালবাসার সুকোমল স্পর্শ।যাতে খুজে পাওয়া যায় বেচে থাকার প্রেরণা।
সুরবালা হাসি হাসি মুখে চা নিয়ে ঢুকলো।সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে,মাম্মী উঠেছে?
--হ্যা।তানারে চা দিয়ে আসলাম।সুরবালা যায় না,চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে,কিছু বলবে?
--বড় বুন আমি জানি তুমি জজ হয়েছো।
সুভদ্রা বুঝতে পারে,এ নিশ্চয়ই মাম্মীর কাজ।তাকে আর আলাদা করে কাউকে বলতে হবে না।তার মেয়ে জজ হয়েছে এ খুশী তার পক্ষে চেপে রাখা বাস্তবিকই কঠিন।ইঙ্গিতটা বুঝতে অসুবিধে হয়না সুভদ্রা বলল,ঠিকই শুনেছো।তোমার কথা ভুলে যায় নি।
মন্দিরার জায়গায় একটি মেয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।ইউনিভার্সিটিতে এম এ পড়ে। মন্দিরা যেতে না যেতে কি করে যে খবর পায় কে জানে।গোদেলিয়েভ তাকে আসতে বলেছেন। চারু এসে বলল,ম্যাম বাজার শেষ।
--সবাই কি বেরিয়ে গেছে?বাইদুজ কি করছে?
--হ্যা সকলেই প্রায় গ্যাছে।বোদা খাতি বসেছে।
গোদেলিয়েভ একবার ভাবলেন,চারুকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন কিনা তারপর বললেন, ঠিক আছে তুমি যাও বাইদুজকে বোলো খাওয়া হলে যেন আসে।
বৈদুর্য ভেবেছিল খেয়েদেয়ে কলেজ ষ্ট্রিট যাবে মনে হচ্ছে তা হবে না।গোদেলিয়েভের দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,ম্যাম আমাকে ডেকেছেন?
--হ্যা বাজার যেতে হবে,কয়েকটা থলি নিয়ে নেও।
দুজনে কোলে মারকেটের দিকে রওনা হল।গোদেলিয়েভ নিজে বাজার করতে ভালবাসেন। এদেশের তরী তরকারী সম্পর্কে তার ভাল ধারণা আছে। বাজারীরা এই বিদেশিনী খদ্দেরকে বেশ ভাল চেনে বিশেষ করে তার অদ্ভুত বাংলা উচ্চারণ তাদের বেশ আনন্দ দেয়।রাস্তায় একটি লরি হতে কয়েকজন আলুর বস্তা পিঠে অরে নামাচ্ছিল। বৈদুর্যর নজরে পড়ে বঙ্গবাসী কলেজের সামনে ভীড়ের জটলা,এগিয়ে গিয়ে খবর নিল,পরীক্ষার রেজাল্ট এসেছে।বৈদুর্যের বুকের মধ্যে ধক করে উঠল।
এটা সেটা কিনতে কিনতে ব্যাগ ভর্তি হয়ে যায়। থলে ভর্তি বাজার শেষ করে রিক্সায় চাপিয়ে দিয়েছে। বৈদুর্য রিক্সায় পিছনে হেটে চলেছেন গোদেলিয়েভ।বৈদুর্যের মন পড়ে আছে কলেজে।হঠাৎ পিছনে গোলমাল শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল ম্যাডাম রাস্তায় পড়ে আছে মানুষ জন ঘিরে রেখেছে। লরির পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে একটি লোকের হাত থেকে বস্তা ছিটকে ম্যামের কোমরের উপর পড়তে ম্যাম কাত হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলেন।আশ পাশের লোকজন হৈ-হৈ করে সাহায্যের জন্য ছুটে এল।বৈদুর্য রিক্সা থামিয়ে দ্রুত ছুটে যায়। গোদেলিয়েভ কোমর ধরে কোনোমতে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,আয় এ্যাম ওকে..আয় এ্যাম ও কে।
--ম্যাম কষ্ট হচ্ছে?বৈদুর্য জিজ্ঞেস করে।
--ঠিক আছে।তুমি বাজার নিয়ে চলে যাও।আস্তে আস্তে আমি চলে যাবো।
বৈদুর্য লজে মাল-পত্তর তুলে দিয়ে রিক্সাওলাকে অপেক্ষা করতে বলে হন হন করে কলেজের দিকে রওনা হল।রিক্সাওলা মেমসাবকে চেনে সে অপেক্ষা করতে থাকে।
আজ রেজাল্ট বেরোবে সে খবর পায়নি।কলেজের কাছাকাছি আসতে উৎসাহ স্তিমিত হয়ে আসে।যদি পাস করতে না পারে?শেলটারে কি বলবে?খবর চেপে রাখা যাবে না।মিমিদির সামনে গিয়ে দাড়াতে পারবে না।মনে করার চেষ্টা করে পরীক্ষা কেমন দিয়েছে?ম্যাম পড়ে গেল কোনো অমঙ্গলের ইঙ্গিত নয়তো?ধুস এসব কি ভাবছে?