18-02-2020, 10:57 PM
25
রাজুর দেখলাম ঘেন্না বলে কোনও ব্যাপার নেই। আমি ভেবেছিলাম ও হয়ত আমাকে বলবে ধুয়ে নিতে। কিন্তু ও আমাকে সে সুযোগ দিল না। আমার খোলা পা দুটো হেঁচড়ে মাটির ওপর দিয়ে টানতে টানতে আবার খাটের থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়েই আমার পা দুটো ওর ঘাড়ের ওপর তুলে দিয়ে এক ধাক্কায় নিজের শক্ত লিঙ্গটা আমার ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। বুঝতে পারলাম আমার শরীরের রস শুধু নয়, এখন ওর লিঙ্গটা অমলের বীর্যেও স্নান করে নিয়েছে। আমার যোনীর ভেতরটা ভীষণ আঠালো হয়ে গেছে শেষ কয়েক মুহূর্তে। আর তাই ঘর্ষণের তীব্রতা যেন আরও বেশী উপভোগ করছি। কিন্তু সত্যি বলতে শরীরে আর জোর নেই। যোনীপথ জৈবিক প্রক্রিয়াতেই আবার জেগে উঠেছে (এটা মেয়েদের একটা অ্যাডভান্টেজ) কিন্তু আর নিতে পারছি না। সত্যি সত্যি চোখে সরষে ফুল দেখছি। রাজু দাঁত চেপে ধাক্কা মারতে মারতে বলে চলেছে “না ওখানকার বেয়ারা নয় মনে হয়। কারণ আমরা যতবার দেখেছি তত বারই দেখেছি সাধারণ পোশাকে। কিন্তু লোকটা বহুরূপী। আমার ধারণা কোনও বিপদের আঁচ পেলেই লোকটা ছদ্মবেশে গিয়ে হাজির হবে আমাদের মেয়েদের বাঁচাতে। অরূপদার ব্যাক আপ প্ল্যান বললাম না।“ আমি দম বন্ধ করে বললাম “ওই লোকটাও কি হাট্টা খোট্টা? মানে দেখতে কেমন?” ও একদমে বলল “ছয় ফিট হবে, বেশ চওড়া, কপালে তিনটে কাটা দাগ আছে আর মুখে চাপ দাড়ি। বাকি দেখতে আমাদের মতই সাধারণ।“ প্রতিটা কথার সাথে সাথে যেন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ওর মন্থনের ধাক্কা। আমি মাথা এপাশ অপাশ করেও চিৎকার আটকাতে পারছি না। ও প্রায় চেঁচিয়ে উঠলো “হয়ে এসেছে আমার।“ সেটা বুঝতে আমারও আর বাকি নেই। কারণ ভীষণ ফুলে উঠে ওর লিঙ্গটা আমার যোনীর ভেতরটাকে প্রসারিত করে যেন ফাটিয়ে ফেলতে চাইছে। কিন্তু আমার এখনও হয় নি, প্রায় হয়ে এসেছে। বললাম “থামিও না। আমারও হবে।“ দাঁতে দাঁত চিপে ও ভোগ করছে আমায়। সে ধাক্কার যে জোর কতটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। না আমার জল বেরলো, আর ওর আগেই বেরলো। আমার হাঁটুদুটোকে উপর দিকে ভাঁজ করে আমার স্তনের ওপর চেপে ধরল। ওর ডান হাত হাঁটুদুটো কে আমার বুকের সাথে লাগিয়ে রেখে নিজের বুকের ভার ছেড়ে দিল আমার ভাঁজ হওয়া হাঁটুর উপর। আমার মাথার অবিন্যস্ত চুলের ওপর নিজের বা হাতটা মুঠোর মতন করে চেপে ধরল। দৃঢ় ভাবে পিষে রাখল আমার মাথাটাকে নোংরা মাটির ওপর নিজের গায়ের জোড়ে। ভীষণ বেগে ভেতর বাইরে করে চলল। ওর চোখ বন্ধ। একবার আমি যেন ওকে কিছু বলতে গেলাম। কারণ ভেতরে জলের তীব্রতা এত বেড়ে গেছে যে মনে হচ্ছে ফেটে যাবে। কিন্তু মুখ খুলতেই ও বাম হাতটা আমার চুলের ওপর থেকে সরিয়ে আমার গালের ওপর একটা মাঝারি কিন্তু সশব্দ থাপ্পড় মেরে আমাকে চুপ করিয়ে দিল। আবার চেপে ধরল আমার চুলের মুঠি। ওর কোমর লাফিয়েই চলেছে। ওর চোখ বন্ধ। আবার আমার চুলের মুঠি ধরে মাথাটাকে মাটির সাথে পিষে রেখে দিয়েছে। পা দুটোকে ওপরে ভাঁজ করে রাখায় অনেক বেশী ভেতরে গিয়ে আছড়ে পড়ছে ওর লিঙ্গের মোটা ডগাটা। হঠাত আমার চুলের ওপর ওর হাতের মুঠো ভীষণ শক্ত হয়ে গেল। নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিল আমার ভাঁজ করা হাঁটুর উপর। বুঝলাম নিঃশেষ করে দিচ্ছে নিজেকে আমার ভেতরে। ওর কাঁধ দুটোকে এতক্ষন খামচে ধরে নখের দাগ ফেলে দিয়েছি ওখানে। সম্বিত ফিরতেই নখ গুলোকে সরিয়ে নিলাম ওর ঘাড়ের ওপর থেকে। একটু থিতু হয়ে ও নিজেও উঠে পড়ল আমার ভাঁজ করা হাঁটুর ওপর থেকে। কিন্তু উঠে ঠিক দাঁড়াতে পারল না। আমার দুপায়ের ফাঁকে লাট খাওয়া ঘুরির মতন ঝপ করে পড়ে গেল। না এত ধকলেও শুয়ে পড়েনি। বসেই আছে ও। কিন্তু মাথাটা নিচু আর সশব্দে হাঁপিয়ে চলেছে। আমার কোমর আর পা দুটো পুরো অসাড় হয়ে গেছে। পা দুটো অগোছালো ভাবে ফেলে দিলাম ওর নগ্ন ঘর্মাক্ত দেহটার দুপাশে। অনুভব করছি আমার ফাঁক হয়ে থাকা যোনীর মুখ দিয়ে চির চির করে গড়িয়ে পড়ছে তিনটে শরীরের রসের মিশ্রণ, রাজুর বীর্য, অমলের বীর্য আর আমার যোনীর রস। একবার উঠতে গিয়েও উঠতে পারলাম না। আবার নেতিয়ে পড়লাম মাটির ওপর। ভীষণ হাঁপিয়ে গেছি। ওঠার সময় এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলাম ওর লিঙ্গটা। ওটা এখনও অর্ধশক্ত হয়ে রয়েছে। ওর পুরো লিঙ্গের ওপর আমাদের তিন জনের শারীরিক রসের একটা পুরু আস্তরণ পড়ে গেছে, সাদা আঠালো দেখাচ্ছে ওর লিঙ্গের গা। আমার শরীরের ভেতর দিয়ে ওদের বীর্যের ধারা এখনও বেড়িয়ে বেড়িয়ে মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছে। আমার উচিত ছিল নিজের যোনীর মুখ চেপে ধরে দৌড়ে বেড়িয়ে যাওয়া। নগ্নতা এখানে স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু শরীরে কোনও বল অনুভব করছি না।
অমল বিছানায় বসেছিল নগ্ন হয়েই। আর আমরা দুজন এইভাবে হাঁপিয়ে চলেছি। হঠাত একটা মেয়ে (ওর নাম আমি জানি না, বা এখন আবছা আলো আর দৃষ্টিতে দেখে চিনতে পারলাম না।) দৌড়াতে দৌড়াতে এলো অমলের ঘরের দরজায়। “তোমরা এখানে?” আমি নিজের নগ্নতা আর যৌন ব্যাভিচারের চিহ্ন ওর সামনে ঢাকার সুযোগই পেলাম না। ওই মেয়েতাও বোধহয় দেখতে পেয়েছে আমার হাঁ করা যোনীর বিধ্বস্ত মুখ থেকে রসের ধারা বেড়িয়ে চলেছে। কিন্তু ও থামল না। আমাদের তিন জনের বিধ্বস্ত যৌনক্লান্ত নগ্ন ঘর্মাক্ত শরীরের ওপর দৃষ্টি বুলিয়েই চেঁচিয়ে উঠল, “ সীমা দি খুন হয়েছে। এসো শিগগির।“ রাজু তড়াক করে উঠে দাঁড়ালো। আমার হাত ধরে আমাকেও টেনে উঠে দাঁড় করিয়ে দিল। অমল নিজের ধুতি পরতে শুরু করে দিয়েছে। রাজু আমার হাতের আমার শাড়িটা গুঁজে দিয়ে নিজের ধুতিটা পরতে শুরু করে দিল। না আমিও আস্তে আস্তে চেতনা ফিরে পাচ্ছি। কোনও মতে শাড়িটা কোমরে বেঁধে বুকের কাছটা ঠিক করে বাইরে বেড়িয়ে গেলাম। চুলের অবস্থা জানি ভয়ানক। পিঠেরও একই অবস্থা। চুল নিশ্চিত ঝরে বিধ্বস্ত কাকের বাসার মতন দেখাচ্ছে আর পিঠটা ময়লা কাঁদায় মাখা মাখি। মুখের অবস্থা যে কেমন সেটা আর লিখে বোঝানোর দরকার নেই। আমরা তিন জনে সীমার ঘরের সামনে গিয়ে হাজির হলাম। আমি ওদের সাথেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম ভিড় ঠেলে। হঠাত একটা হাত আমাকে টেনে ধরল। আস্তে আস্তে টেনে নিয়ে চলে গেল ভিড়ের একদম শেষ প্রান্তে। “এখানে ডাক্তারের প্রয়োজন নেই। “ কথাটা বলল অদিতি। “আমি চেক করে দেখে নিয়েছি। আগের বার যেখানে আহত হয়েছিল, সেখানেই ছুরি বিঁধিয়ে খুন করেছে। “ গলা নামিয়ে এক দমে বলে গেল “একটা কথার মানে আমি বুঝে গেছি। “ আমি ওর দিকে তাকালাম। ও বলল “
-S(22)। এর মানে কি সেটা বুঝতে পেরেছি। আজ বাইশ তারিখ। আজ “এস” অর্থাৎ সীমার জীবন শেষ করা হবে। এই নির্দেশই দেওয়া আছে ওই লেখাতে। অবশ্য এই কাজ কে করেছে সেটা আমি জানি না।“ আমি বললাম “তুই কোথায় ছিলিস?” ও বলল “ আমি আলিদার কোলে শুয়েছিলাম। আর তুই?” বললাম “অমল আর রাজুর ঠাপ খাচ্ছিলাম।“ ও হাতে চিমটি কেটে বলল “সেটা তোর মুখের আর চুলের অবস্থা দেখেই বুঝতে পারছি। তোকে তো পুরো শেষ করে দিয়েছে।“ একবার আমার পিঠের ওপর লাগা মাটির দাগ হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে বলল “নাহ। ঝেড়ে লাভ নেই। স্নান করার পরই পরিষ্কার হবে। আজ এই কাপড়টা ধুয়ে মেলে দিতে হবে। তবে একটা জিনিস ভালো হয়েছে যে আমরা দুজনেই কোনও না কোনও পুরনো লোকের ঘরে রতি ক্রীড়ায় মগ্ন ছিলাম আর তার সাক্ষীর অভাব নেই এখানে। নইলে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে খুনির এক মুহূর্তও দেরী হত না।“ সত্যি তো, এটা তো ভেবেই দেখি নি। আমরাই এখানে একমাত্র অপরিচিত আর নতুন, আর সব থেকে বড় কথা সবাই জানে আমরা এখানে এসে খুশি নই। খুনি যদি আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয় তো, আমরা তো শেষ। রত্নাদির পাশের ঘরে হয়ত আমাদের সারা জীবন বন্দী করে রাখবে। আর কি কি করবে সেতো জানাই নেই। আমি এইসব ভেবে চলেছি, এমন সময় চাপা গলায় ও বলল “ কাল তেইশ। কাল “এ” দিয়ে শুরু কারোর মৃত্যুবাণ নিক্ষেপ করে গেছে আমাদের অরূপদা। একটা মজা দেখ। সব কিছু করছে ও। কেন করছে জানি না। কিন্তু, যখন এসব হচ্ছে তখন ও বা বিনীতাদি কেউ ক্যাম্পে নেই। অর্থাৎ...।“ অর্থাৎ যে কি সেটা আমিও বুঝে গেছি। ওদের কোনও লোক আছে এই ক্যাম্পে। আর সে যে কি দেখছে আর কি বুঝছে আর কি করছে সেটা অন্য কেউ জানে না। মনটা এক নিমেষে ভয়ে ভরে গেল। এই “এ” টা কে যার কাল মৃত্যুর নির্দেশ দিয়ে গেছে ক্যাম্পের কম্যান্ডার ইন চিফ।
একবার চমকে উঠলাম অদিতির নামের আদ্যাক্ষরও “এ”। তবে কি... এই চিন্তা মাথায় আসতেই ওর দিকে তাকালাম। বুঝলাম আলিদার সাথে খুব ভালো সুখের মিলন হয়েছে ওর। ওর অবস্থা হয়ত আমার মতন বিধ্বস্ত নয়, কিন্তু বিধ্বস্ত তো বটেই। তার পরেই মাথায় এলো “এ” দিয়ে আলিদার নামটাও শুরু। মাথায় কিছুই ঢুকছে না। আলিদা একবার আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল “ তুমি ভেতরে গিয়ে একবার দেখবে? যদিও অদিতি একবার দেখেছে। “ আমি ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে ঘরে ঢুকলাম। যেখানে ও আঘাত খেয়ে ফিরেছিল আগের দিন ঠিক সেখানেই এক কোপে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে একটা ধারালো ছোরা। ঘুমের ভেতরেই খুন করা হয়েছে ওকে। বোধহয় নড়ারও সময় পায় নি। ছুরিটা এখনও ওর শরীরে গাঁথা আছে। আমি ছুরিটা ওর শরীরের থেকে বার করতে গিয়েও ওঠা ধরতে পারলাম না। হাতটা চেপে ধরে দেখলাম, হাত ঠাণ্ডা। মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে এলাম। চোখের কোণটা ভিজে গেল আপনা থেকে। সত্যি এই সীমা তো আমার কেউ হয় না। দু দিন আগে তো ওকে চিনতামই না। কিন্তু ওর চিকিৎসা করেছিলাম আমি। দু দিন ধরে ওকে দেখছিলাম। আজ ওকে কেউ এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিয়ে গেল। আমি ভিড়ের বাইরে বেড়িয়ে এসে ফাঁকায় গিয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। অদিতিও এসে বসল আমার গা ঘেঁষে। আমি কান্না ভেজা গলায় ওকে বললাম “ তোর নামও ...।“ ও বলল “জানি “এ” দিয়ে শুরু। কিন্তু হলপ করে বলতে পারি যে এ আমি নয়। অন্য কেউ, কারণ আমি মাত্র সেদিন এসেছি। এখন কাঁদিস না বসে বসে। এখন আমাদের বের করতে হবে যে “এ” দিয়ে আমি ছাড়া আর কার কার নাম আছে।“ বললাম “সেটা কি ভাবে বের করবি? এরকম প্রশ্ন করলে তো সবাই সন্দেহ করবে।“ ও বলল “জানি না। উপায় একটা বের করতেই হবে। আর যদি বের করতে পারি তো তার সাথে আরও কয়েকজন কে নিয়ে কাল রাতটা আমাদের কাটাতে হবে। “ জানি না ওর মাথায় কি ঘুরছে। কিন্তু আমি চিন্তা করতে শুরু করলাম আর কার কার নাম আমরা শুনেছি “এ” দিয়ে যারা এই ক্যাম্পে এখনও আছে। সবার সাথে না মেশার এই এক বিড়ম্বনা। প্রায় কারোর নামই আমরা জানি না। আলি দা এসে জল ভরা চোখ নিয়ে আমাদের পাশে বসে পড়ল। আমি মৃত্যু দেখেছি। কিন্তু এমন নয়। সবাই ভিড় করে এলো আমাদের চারপাশে। অদিতি দেখলাম অদ্ভুত শক্ত স্বভাবের মেয়ে। এই অবস্থাতেও ভেঙ্গে পড়ে নি। সবাইকে লক্ষ্য করে বলল “ আমরা জানি যে আমরা দুজনই এখানে সবথেকে নতুন এসেছি। আর আমাদের সম্বন্ধে তোমরা কেউ কিছু জানো না। যদি তোমরা মনে করো যে এই খুনের জন্য আমাদের মধ্যে কেউ দায়ী তো এই মুহূর্তেই আমার কিছু কথা বলার আছে। “ একসাথে রাজু, আলিদা, অমল, আর আরও চারটে মেয়ে এগিয়ে এসে বলল “ এরকম আমরা একবারও ভাবছি না। ছিঃ ছিঃ। তোমরাই ওকে বাঁচালে আর তোমরাই ওকে মেরে ফেলবে। আজ সকালেও তো তুমি গিয়ে ওকে দেখে এসেছ। সীমাদি তোমার কথা ভীষণ বলছিল সন্ধ্যা থেকে। আর তাছাড়া অন্তত আমরা সাত জন জানি যে তোমরা শেষ দু ঘণ্টা ধরে কোথায় ছিলে। আমরা প্রত্যেকেই তোমাদের আলিদা আর অমলের ঘরে দেখেছি। আমরাও গেছিলাম। কিন্তু তোমরা আছো বলে ডিস্টার্ব করি নি। কিন্তু আমরা সাতজনেই দেখেছি।“ বাকি তিনটে মেয়েও দেখলাম মাথা নাড়াল। আলিদা স্পষ্ট স্বরে বলে দিল যে ঘণ্টা খানেক ধরে অদিতি ওর সাথে ছিল আর রাজু আর অমলও সবাইকে বলে দিল যে আমি ওদের দুজনের সাথে ছিলাম। আলিদা বলল “অরূপদা এখানে নেই। একটা সৎকারের ব্যাবস্থা তো করতে হবে ওর। যুদ্ধে গিয়ে মরলে তাও কথা ছিল। কিন্তু এত একেবারে ওর আহত শরীরের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ওকে খুন করা হয়েছে।“ অদিতি হঠাত ফোঁস করে বলে বসল “আলিদা কিছু মনে করবে না। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, আর অন্তর থেকেই ভালোবাসি। কিন্তু অসহায় শরীর, সুযোগ এই গুলো ঠিক তোমাদের মুখে মানায় না।“ আমি যে ওকে বাঁধা দেব তার সুযোগ আমি পেলাম না। ও উঠে দাঁড়িয়ে পাছা থেকে সশব্দে মাটি ঝেড়ে বলল “ এ কথা বলার কারণ এই যে আমার আর আমার এই বন্ধুটিকে তোমরা এইভাবেই ধরে এনেছ। আমরা ডাক্তার, আমরা জানি কোন ওষুধে কতটা দোষ গুন থাকে। আমরা জানি কোন কোন সিডেটিভ দিলে কি কি হতে পারে। আজ একটা কথা বলি? সীমাদির মৃত্যুতে তোমরা যতটা দুঃখ পেয়েছ আমরাও ঠিক ততটা পেয়েছি। কিন্তু অসাড় শরীর, সুযোগ নেওয়া এইসব না বললেই ভালো। আমার বন্ধু তো বসে বসে কাঁদছে, জানি কেন কাঁদছে। কারণ ওই ওকে বাঁচিয়েছিল, কিন্তু আবার কেউ নিয়ে চলে গেল পেছন থেকে এসে। ও খুব নরম মনের। আমি নই। আর তাই এই অবস্থাতেও একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, (একটু থেমে আলিদার ঘাড়ে হাত দিয়ে বলল) তোমাদের কমরেডের শোক আমাদেরও স্পর্শ করেছে। কিন্তু তাও বলছি, তোমাদের আগের ডাক্তার আমার বন্ধুর অসাড় শরীরের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এখানে নিয়ে আসার আগে ওকে রেপ করেছিল। (রমা ভিড়ের মধ্যে ছিল, ওকেই উদ্দেশ্য করে বলল) সত্যি সব সময় সত্যিই হয়। ও বলেছে যখন তোমরা তিন জন ওকে একলা ডাক্তারের হাতে রেখে দিয়ে বাইরে চলে গিয়েছিলে তখন ওর অসাড় শরীরের ওপর তোমাদের ডাক্তার ;., করেছিল। অরূপদাকে ও ব্যাপারটা বলেছিল আমার সামনে। কিন্তু ও মানতে চায় নি। আলিদা, মনে খুব দুঃখ হলেও একটা কথা না বলে পারছি না। একেই বলে পোয়েটিক জাস্টিস। যা করবে তার ফল এড়াতে পারবে না। তোমাদের দলের একজন কমরেড একটা অসহায় মেয়ের শারীরিক অক্ষমতার সুযোগ নিয়েছিল একদিন, আর আজ একজন এসে তোমাদের আহত কমরেডকে ঘুমের মধ্যে শেষ করে দিয়ে চলে গেল। (আরও জোর গলায় বলল) হ্যাঁ ঘুমের মধ্যে বলছি কারণ, সীমাদি যা মেয়ে ও জেগে থাকলে একটা ধস্তাধস্তি হতই। কিন্তু তার কোনও চিহ্ন আমরা কেউ দেখিনি ওর বিছানায়। (একটু দম নিয়ে বলল) কিন্তু সৎকার একটা করতেই হবে। “ শেষ লাইনে ওর গিয়ার চেঞ্জ হয়ে গেছে। ও বলে চলল “ অরূপদা যাবার আগে বলে গিয়েছিল আমি আর রুমি এখন গার্ডিয়ান। আমরাই ওর সৎকার করব। কেউ যদি আগ বাড়িয়ে করতে চায় তো আমাদের কোনও আপত্তি নেই।“ আমার চোখ দুটো জলে ঝাপসা হয়ে গেছে। শুনলাম অদিতি বলে চলেছে “আলি দা তুমিই এদের মধ্যে সবার বড়। তুমি চাইলে তুমিও করতে পারো।“ আলিদা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে। ও উঠে দাঁড়িয়ে বলল “আমি .।“ অদিতি বলল “কমরেডের মধ্যে আবার * . কি? তবে একটা কথা, ওর কোমরে বেঁধা ছোরাটা বের করে নিও। ওতে চিহ্ন থাকতে পারে। আমরা শুধু গোয়েন্দা গল্প পড়েছি আর সিনেমা দেখেছি। তোমাদের মধ্যে কেউ থাকতেই পারে যে ওটাকে পরীক্ষা করে দেখতে চাইতে পারে। তাই সময় থাকতে বলছি ওটা বের করে নাও। আর তাছাড়া, একটা মেয়েকে, ছোরা সমেত দাহ করা বোধহয় আমাদের শোভা দেয় না।“ শেষ কথাগুলো বলার সময় যে ওর গলা ধরে এলো সেটা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি। আমার শুধু একটাই রাগ ওর ওপর, এই সময় এতগুলো লোকের সামনে নিজের মনের ঝাল না ঝাড়লেই পারত। আলিদা আমার পাশে এসে বসে বলল “তুমিই ওটা বের করে নাও। আমি রুমাল দিচ্ছি। বাঁটের নিচের জায়গাটা ধরে বের করে নাও। আমাদের সে সাহস হবে না। “
আমি আলিদার হাত ধরে এগিয়ে গেলাম ঘরের দিকে। একটা কাপড়ের মতন জিনিস আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। কাঁপা কাঁপা হাতে ছোরার ধারালো অংশটাকে হাতে ধরে টেনে বের করে নিলাম ওর শরীরের থেকে। কান্নায় ভেঙ্গে মাটিতে বসে পড়লাম। ভেতর থেকে বেড়িয়ে এল বমি। মাটির ওপর উপুড় হয়ে বসে উগড়ে দিলাম ভেতরের বিষ। অদিতি সহ বাকিরা এগিয়ে এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেল আমার ঘরের দিকে। সৎকার আমাকে করতে হয় নি। পরের দিন শুনেছিলাম যে আলিদাই সৎকার করেছে। ব্যাগ থেকে আয়না বের করে দেখলাম আমার চোখ পুরো ফুলে গেছে। ঘুমের মধ্যেও কেঁদেছি সারা রাত ধরে। আমি অদিতির মতন এত শক্ত নই। আমি ঘুম থেকে উঠেছি প্রায় সাড়ে সাতটায়। অদিতি পুরো রেডি। ওর ব্রাশ করা হয়ে গেছে। চা খেয়ে ব্রেকফাস্টও সেরে নিয়েছে। ও চুপচাপ চেয়ারে বসে আমার ওঠবার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি উঠে বসে শাড়ি ঠিক করে বললাম “ কতক্ষণ উঠেছিস? “ ও আমার কথার জবাব না দিয়ে বলল “রেডি হয়ে নে। সবাই ট্রেনিং করতে চলে গেছে। সব সিনিয়ররা আমাদের সাথে এসে কথা বলবে বলেছে। এখন ঝিমিয়ে থাকিস না। “ উঠে চোখ জ্বালা করছে দেখে আয়নাটা বের করেছিলাম। নিজের ফোলা মুখটা একবার দেখে নিয়ে চলে গেলাম ব্রাশ হাতে কল পাড়ে। ঘরে ফিরে এসে খেয়াল করলাম চা রুটি আর সকালের বরাদ্দ কলাটা একটা প্লেটে পড়ে আছে। ব্রেকফাস্ট করার কোনও তাগিদ আমার ভেতরে নেই। চাটা মুখে নিয়ে বুঝতে পারলাম অনেকক্ষণ আগে দিয়ে গেছে। ঠাণ্ডা জল হয়ে গেছে। তাও কথা না বাড়িয়ে কাপটা মুখে ঠেকালাম। (আজ আমাদের কপালে এসেছে কাপ, গ্লাস নয়। পাঠকরা ভাববেন না যে গুলিয়ে ফেলেছি কাপ আর গ্লাসের মধ্যে। তাই এই সতর্কতা।) সাথে সাথেই ঘরে এসে প্রবেশ করল আরও ছয়জন। দেখলাম আরও দু তিন জন এসেছে, রাজু, অমল আর আরেকটা ছেলে কিন্তু ওরা বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে। আলিদা এসে আমাদের বিছানায় বসে পড়ল। বাকি মেয়ে গুলো দাঁড়িয়ে রইল। আলিদা গলা খাঁকড়িয়ে শুরু করল। “ রুমির ওপর যে এমন হয়েছে সেটা ও নিশ্চই অরূপদার সামনে কাল তুমি যেভাবে বলেছ সেভাবে বলেনি। নইলে ও নিজেও বিশ্বাস করত। ডাক্তার ফিরে এলে এর বিহিত হবে। আমরা লজ্জিত।“ অদিতি উঠে এসে ওর হাত ধরে বলল “ছিঃ ছিঃ। তুমি এ কথা কেন বলছ? লজ্জিত হওয়ার কোনও কারণ তোমাদের নেই। “ মেয়েরা একে একে এসে আমার হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে গেলো। আমি একটা হালকা হাঁসি দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম যে তাদের ওপর আমার কোনও রাগ নেই। আলিদা এইবার এলো আসল কাজের কথায়। “ আমি তোমাদের সাথে পরামর্শ করতে এসেছি যে কি করা যায়। একটা কথা স্বীকার করতেই হবে যে আমাদের মধ্যে একজন বিশ্বাসঘাতক আছে। (সাথে সাথে উঠে দাঁড়িয়ে বলল) আমি তোমাদের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছি না। আমার একটা থিয়োরি আছে। তোমরা কাল এসেছ। তোমরা একাজ করে থাকলে খুব খারাপ, কিন্তু তোমাদের এখানে আনার আগে তোমাদের দুজনেরই ব্যাক গ্রাউন্ড আমরা চেক করেছিলাম। আমি জানি তোমরা নিজ হাতে মানুষ খুন করতে পারো না। আর তোমাদের বাইরের জীবন ধারা ছিল খুব সাধারণ। (আমাকে দেখিয়ে বলল) তোমরা সবাই শোনো, রুমি কিন্তু অনেকের চিকিৎসা ফ্রিতে করত। আর ও যার সাথে থাকতো সেও তাই করত। তুমি বা অদিতি খুন করতে পারবে না। এটা আমরা জানি। অন্তত আমি জানি। এইবার বল তোমরা একদম গার্ডিয়ান হিসেবে যে আমাদের কি করা উচিত।“ আমি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম কিন্তু অদিতি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “উফফ তুমি আগে খাওয়াটা শেষ করে নাও। রাত থেকে তো কিছুই ঢোকেনি পেটে। তারপর নিয়ে যাব তোমাকে স্নান করাতে। এখন খাও আগে।“ মাঝে মাঝে ওর ব্যক্তিত্ব দেখলে ঘাবড়ে যেতে হয়। আমি মুখ বুজে রইলাম।
অদিতি উঠে দাঁড়িয়ে বলল “ যেমন তোমার থিয়োরি আছে আলিদা। তেমন আমারও একটা থিয়োরি আছে। যে এইসব কথা সবার সামনে হয় না। আমি কাউকে অবিশ্বাস করছি না। কিন্তু কে জানে কি বলতে কি বলব আর সে থেকে যদি কেউ আগ বাড়িয়ে আগাম স্টেপ নেয় তো বিপদ এসে যাবে। ও হ্যাঁ একটা কথা, অরূপদা কবে ফিরছে? ওকে ছাড়া এইসব কথা বলতে আমার ভালো লাগছে না। বা অন্তত বিনীতাদি... “ আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝেছি যে এটা সম্পূর্ণ নাটক।
রাজুর দেখলাম ঘেন্না বলে কোনও ব্যাপার নেই। আমি ভেবেছিলাম ও হয়ত আমাকে বলবে ধুয়ে নিতে। কিন্তু ও আমাকে সে সুযোগ দিল না। আমার খোলা পা দুটো হেঁচড়ে মাটির ওপর দিয়ে টানতে টানতে আবার খাটের থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়েই আমার পা দুটো ওর ঘাড়ের ওপর তুলে দিয়ে এক ধাক্কায় নিজের শক্ত লিঙ্গটা আমার ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। বুঝতে পারলাম আমার শরীরের রস শুধু নয়, এখন ওর লিঙ্গটা অমলের বীর্যেও স্নান করে নিয়েছে। আমার যোনীর ভেতরটা ভীষণ আঠালো হয়ে গেছে শেষ কয়েক মুহূর্তে। আর তাই ঘর্ষণের তীব্রতা যেন আরও বেশী উপভোগ করছি। কিন্তু সত্যি বলতে শরীরে আর জোর নেই। যোনীপথ জৈবিক প্রক্রিয়াতেই আবার জেগে উঠেছে (এটা মেয়েদের একটা অ্যাডভান্টেজ) কিন্তু আর নিতে পারছি না। সত্যি সত্যি চোখে সরষে ফুল দেখছি। রাজু দাঁত চেপে ধাক্কা মারতে মারতে বলে চলেছে “না ওখানকার বেয়ারা নয় মনে হয়। কারণ আমরা যতবার দেখেছি তত বারই দেখেছি সাধারণ পোশাকে। কিন্তু লোকটা বহুরূপী। আমার ধারণা কোনও বিপদের আঁচ পেলেই লোকটা ছদ্মবেশে গিয়ে হাজির হবে আমাদের মেয়েদের বাঁচাতে। অরূপদার ব্যাক আপ প্ল্যান বললাম না।“ আমি দম বন্ধ করে বললাম “ওই লোকটাও কি হাট্টা খোট্টা? মানে দেখতে কেমন?” ও একদমে বলল “ছয় ফিট হবে, বেশ চওড়া, কপালে তিনটে কাটা দাগ আছে আর মুখে চাপ দাড়ি। বাকি দেখতে আমাদের মতই সাধারণ।“ প্রতিটা কথার সাথে সাথে যেন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ওর মন্থনের ধাক্কা। আমি মাথা এপাশ অপাশ করেও চিৎকার আটকাতে পারছি না। ও প্রায় চেঁচিয়ে উঠলো “হয়ে এসেছে আমার।“ সেটা বুঝতে আমারও আর বাকি নেই। কারণ ভীষণ ফুলে উঠে ওর লিঙ্গটা আমার যোনীর ভেতরটাকে প্রসারিত করে যেন ফাটিয়ে ফেলতে চাইছে। কিন্তু আমার এখনও হয় নি, প্রায় হয়ে এসেছে। বললাম “থামিও না। আমারও হবে।“ দাঁতে দাঁত চিপে ও ভোগ করছে আমায়। সে ধাক্কার যে জোর কতটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। না আমার জল বেরলো, আর ওর আগেই বেরলো। আমার হাঁটুদুটোকে উপর দিকে ভাঁজ করে আমার স্তনের ওপর চেপে ধরল। ওর ডান হাত হাঁটুদুটো কে আমার বুকের সাথে লাগিয়ে রেখে নিজের বুকের ভার ছেড়ে দিল আমার ভাঁজ হওয়া হাঁটুর উপর। আমার মাথার অবিন্যস্ত চুলের ওপর নিজের বা হাতটা মুঠোর মতন করে চেপে ধরল। দৃঢ় ভাবে পিষে রাখল আমার মাথাটাকে নোংরা মাটির ওপর নিজের গায়ের জোড়ে। ভীষণ বেগে ভেতর বাইরে করে চলল। ওর চোখ বন্ধ। একবার আমি যেন ওকে কিছু বলতে গেলাম। কারণ ভেতরে জলের তীব্রতা এত বেড়ে গেছে যে মনে হচ্ছে ফেটে যাবে। কিন্তু মুখ খুলতেই ও বাম হাতটা আমার চুলের ওপর থেকে সরিয়ে আমার গালের ওপর একটা মাঝারি কিন্তু সশব্দ থাপ্পড় মেরে আমাকে চুপ করিয়ে দিল। আবার চেপে ধরল আমার চুলের মুঠি। ওর কোমর লাফিয়েই চলেছে। ওর চোখ বন্ধ। আবার আমার চুলের মুঠি ধরে মাথাটাকে মাটির সাথে পিষে রেখে দিয়েছে। পা দুটোকে ওপরে ভাঁজ করে রাখায় অনেক বেশী ভেতরে গিয়ে আছড়ে পড়ছে ওর লিঙ্গের মোটা ডগাটা। হঠাত আমার চুলের ওপর ওর হাতের মুঠো ভীষণ শক্ত হয়ে গেল। নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিল আমার ভাঁজ করা হাঁটুর উপর। বুঝলাম নিঃশেষ করে দিচ্ছে নিজেকে আমার ভেতরে। ওর কাঁধ দুটোকে এতক্ষন খামচে ধরে নখের দাগ ফেলে দিয়েছি ওখানে। সম্বিত ফিরতেই নখ গুলোকে সরিয়ে নিলাম ওর ঘাড়ের ওপর থেকে। একটু থিতু হয়ে ও নিজেও উঠে পড়ল আমার ভাঁজ করা হাঁটুর ওপর থেকে। কিন্তু উঠে ঠিক দাঁড়াতে পারল না। আমার দুপায়ের ফাঁকে লাট খাওয়া ঘুরির মতন ঝপ করে পড়ে গেল। না এত ধকলেও শুয়ে পড়েনি। বসেই আছে ও। কিন্তু মাথাটা নিচু আর সশব্দে হাঁপিয়ে চলেছে। আমার কোমর আর পা দুটো পুরো অসাড় হয়ে গেছে। পা দুটো অগোছালো ভাবে ফেলে দিলাম ওর নগ্ন ঘর্মাক্ত দেহটার দুপাশে। অনুভব করছি আমার ফাঁক হয়ে থাকা যোনীর মুখ দিয়ে চির চির করে গড়িয়ে পড়ছে তিনটে শরীরের রসের মিশ্রণ, রাজুর বীর্য, অমলের বীর্য আর আমার যোনীর রস। একবার উঠতে গিয়েও উঠতে পারলাম না। আবার নেতিয়ে পড়লাম মাটির ওপর। ভীষণ হাঁপিয়ে গেছি। ওঠার সময় এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলাম ওর লিঙ্গটা। ওটা এখনও অর্ধশক্ত হয়ে রয়েছে। ওর পুরো লিঙ্গের ওপর আমাদের তিন জনের শারীরিক রসের একটা পুরু আস্তরণ পড়ে গেছে, সাদা আঠালো দেখাচ্ছে ওর লিঙ্গের গা। আমার শরীরের ভেতর দিয়ে ওদের বীর্যের ধারা এখনও বেড়িয়ে বেড়িয়ে মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছে। আমার উচিত ছিল নিজের যোনীর মুখ চেপে ধরে দৌড়ে বেড়িয়ে যাওয়া। নগ্নতা এখানে স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু শরীরে কোনও বল অনুভব করছি না।
অমল বিছানায় বসেছিল নগ্ন হয়েই। আর আমরা দুজন এইভাবে হাঁপিয়ে চলেছি। হঠাত একটা মেয়ে (ওর নাম আমি জানি না, বা এখন আবছা আলো আর দৃষ্টিতে দেখে চিনতে পারলাম না।) দৌড়াতে দৌড়াতে এলো অমলের ঘরের দরজায়। “তোমরা এখানে?” আমি নিজের নগ্নতা আর যৌন ব্যাভিচারের চিহ্ন ওর সামনে ঢাকার সুযোগই পেলাম না। ওই মেয়েতাও বোধহয় দেখতে পেয়েছে আমার হাঁ করা যোনীর বিধ্বস্ত মুখ থেকে রসের ধারা বেড়িয়ে চলেছে। কিন্তু ও থামল না। আমাদের তিন জনের বিধ্বস্ত যৌনক্লান্ত নগ্ন ঘর্মাক্ত শরীরের ওপর দৃষ্টি বুলিয়েই চেঁচিয়ে উঠল, “ সীমা দি খুন হয়েছে। এসো শিগগির।“ রাজু তড়াক করে উঠে দাঁড়ালো। আমার হাত ধরে আমাকেও টেনে উঠে দাঁড় করিয়ে দিল। অমল নিজের ধুতি পরতে শুরু করে দিয়েছে। রাজু আমার হাতের আমার শাড়িটা গুঁজে দিয়ে নিজের ধুতিটা পরতে শুরু করে দিল। না আমিও আস্তে আস্তে চেতনা ফিরে পাচ্ছি। কোনও মতে শাড়িটা কোমরে বেঁধে বুকের কাছটা ঠিক করে বাইরে বেড়িয়ে গেলাম। চুলের অবস্থা জানি ভয়ানক। পিঠেরও একই অবস্থা। চুল নিশ্চিত ঝরে বিধ্বস্ত কাকের বাসার মতন দেখাচ্ছে আর পিঠটা ময়লা কাঁদায় মাখা মাখি। মুখের অবস্থা যে কেমন সেটা আর লিখে বোঝানোর দরকার নেই। আমরা তিন জনে সীমার ঘরের সামনে গিয়ে হাজির হলাম। আমি ওদের সাথেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম ভিড় ঠেলে। হঠাত একটা হাত আমাকে টেনে ধরল। আস্তে আস্তে টেনে নিয়ে চলে গেল ভিড়ের একদম শেষ প্রান্তে। “এখানে ডাক্তারের প্রয়োজন নেই। “ কথাটা বলল অদিতি। “আমি চেক করে দেখে নিয়েছি। আগের বার যেখানে আহত হয়েছিল, সেখানেই ছুরি বিঁধিয়ে খুন করেছে। “ গলা নামিয়ে এক দমে বলে গেল “একটা কথার মানে আমি বুঝে গেছি। “ আমি ওর দিকে তাকালাম। ও বলল “
-S(22)। এর মানে কি সেটা বুঝতে পেরেছি। আজ বাইশ তারিখ। আজ “এস” অর্থাৎ সীমার জীবন শেষ করা হবে। এই নির্দেশই দেওয়া আছে ওই লেখাতে। অবশ্য এই কাজ কে করেছে সেটা আমি জানি না।“ আমি বললাম “তুই কোথায় ছিলিস?” ও বলল “ আমি আলিদার কোলে শুয়েছিলাম। আর তুই?” বললাম “অমল আর রাজুর ঠাপ খাচ্ছিলাম।“ ও হাতে চিমটি কেটে বলল “সেটা তোর মুখের আর চুলের অবস্থা দেখেই বুঝতে পারছি। তোকে তো পুরো শেষ করে দিয়েছে।“ একবার আমার পিঠের ওপর লাগা মাটির দাগ হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে বলল “নাহ। ঝেড়ে লাভ নেই। স্নান করার পরই পরিষ্কার হবে। আজ এই কাপড়টা ধুয়ে মেলে দিতে হবে। তবে একটা জিনিস ভালো হয়েছে যে আমরা দুজনেই কোনও না কোনও পুরনো লোকের ঘরে রতি ক্রীড়ায় মগ্ন ছিলাম আর তার সাক্ষীর অভাব নেই এখানে। নইলে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে খুনির এক মুহূর্তও দেরী হত না।“ সত্যি তো, এটা তো ভেবেই দেখি নি। আমরাই এখানে একমাত্র অপরিচিত আর নতুন, আর সব থেকে বড় কথা সবাই জানে আমরা এখানে এসে খুশি নই। খুনি যদি আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয় তো, আমরা তো শেষ। রত্নাদির পাশের ঘরে হয়ত আমাদের সারা জীবন বন্দী করে রাখবে। আর কি কি করবে সেতো জানাই নেই। আমি এইসব ভেবে চলেছি, এমন সময় চাপা গলায় ও বলল “ কাল তেইশ। কাল “এ” দিয়ে শুরু কারোর মৃত্যুবাণ নিক্ষেপ করে গেছে আমাদের অরূপদা। একটা মজা দেখ। সব কিছু করছে ও। কেন করছে জানি না। কিন্তু, যখন এসব হচ্ছে তখন ও বা বিনীতাদি কেউ ক্যাম্পে নেই। অর্থাৎ...।“ অর্থাৎ যে কি সেটা আমিও বুঝে গেছি। ওদের কোনও লোক আছে এই ক্যাম্পে। আর সে যে কি দেখছে আর কি বুঝছে আর কি করছে সেটা অন্য কেউ জানে না। মনটা এক নিমেষে ভয়ে ভরে গেল। এই “এ” টা কে যার কাল মৃত্যুর নির্দেশ দিয়ে গেছে ক্যাম্পের কম্যান্ডার ইন চিফ।
একবার চমকে উঠলাম অদিতির নামের আদ্যাক্ষরও “এ”। তবে কি... এই চিন্তা মাথায় আসতেই ওর দিকে তাকালাম। বুঝলাম আলিদার সাথে খুব ভালো সুখের মিলন হয়েছে ওর। ওর অবস্থা হয়ত আমার মতন বিধ্বস্ত নয়, কিন্তু বিধ্বস্ত তো বটেই। তার পরেই মাথায় এলো “এ” দিয়ে আলিদার নামটাও শুরু। মাথায় কিছুই ঢুকছে না। আলিদা একবার আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল “ তুমি ভেতরে গিয়ে একবার দেখবে? যদিও অদিতি একবার দেখেছে। “ আমি ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে ঘরে ঢুকলাম। যেখানে ও আঘাত খেয়ে ফিরেছিল আগের দিন ঠিক সেখানেই এক কোপে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে একটা ধারালো ছোরা। ঘুমের ভেতরেই খুন করা হয়েছে ওকে। বোধহয় নড়ারও সময় পায় নি। ছুরিটা এখনও ওর শরীরে গাঁথা আছে। আমি ছুরিটা ওর শরীরের থেকে বার করতে গিয়েও ওঠা ধরতে পারলাম না। হাতটা চেপে ধরে দেখলাম, হাত ঠাণ্ডা। মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে এলাম। চোখের কোণটা ভিজে গেল আপনা থেকে। সত্যি এই সীমা তো আমার কেউ হয় না। দু দিন আগে তো ওকে চিনতামই না। কিন্তু ওর চিকিৎসা করেছিলাম আমি। দু দিন ধরে ওকে দেখছিলাম। আজ ওকে কেউ এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিয়ে গেল। আমি ভিড়ের বাইরে বেড়িয়ে এসে ফাঁকায় গিয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। অদিতিও এসে বসল আমার গা ঘেঁষে। আমি কান্না ভেজা গলায় ওকে বললাম “ তোর নামও ...।“ ও বলল “জানি “এ” দিয়ে শুরু। কিন্তু হলপ করে বলতে পারি যে এ আমি নয়। অন্য কেউ, কারণ আমি মাত্র সেদিন এসেছি। এখন কাঁদিস না বসে বসে। এখন আমাদের বের করতে হবে যে “এ” দিয়ে আমি ছাড়া আর কার কার নাম আছে।“ বললাম “সেটা কি ভাবে বের করবি? এরকম প্রশ্ন করলে তো সবাই সন্দেহ করবে।“ ও বলল “জানি না। উপায় একটা বের করতেই হবে। আর যদি বের করতে পারি তো তার সাথে আরও কয়েকজন কে নিয়ে কাল রাতটা আমাদের কাটাতে হবে। “ জানি না ওর মাথায় কি ঘুরছে। কিন্তু আমি চিন্তা করতে শুরু করলাম আর কার কার নাম আমরা শুনেছি “এ” দিয়ে যারা এই ক্যাম্পে এখনও আছে। সবার সাথে না মেশার এই এক বিড়ম্বনা। প্রায় কারোর নামই আমরা জানি না। আলি দা এসে জল ভরা চোখ নিয়ে আমাদের পাশে বসে পড়ল। আমি মৃত্যু দেখেছি। কিন্তু এমন নয়। সবাই ভিড় করে এলো আমাদের চারপাশে। অদিতি দেখলাম অদ্ভুত শক্ত স্বভাবের মেয়ে। এই অবস্থাতেও ভেঙ্গে পড়ে নি। সবাইকে লক্ষ্য করে বলল “ আমরা জানি যে আমরা দুজনই এখানে সবথেকে নতুন এসেছি। আর আমাদের সম্বন্ধে তোমরা কেউ কিছু জানো না। যদি তোমরা মনে করো যে এই খুনের জন্য আমাদের মধ্যে কেউ দায়ী তো এই মুহূর্তেই আমার কিছু কথা বলার আছে। “ একসাথে রাজু, আলিদা, অমল, আর আরও চারটে মেয়ে এগিয়ে এসে বলল “ এরকম আমরা একবারও ভাবছি না। ছিঃ ছিঃ। তোমরাই ওকে বাঁচালে আর তোমরাই ওকে মেরে ফেলবে। আজ সকালেও তো তুমি গিয়ে ওকে দেখে এসেছ। সীমাদি তোমার কথা ভীষণ বলছিল সন্ধ্যা থেকে। আর তাছাড়া অন্তত আমরা সাত জন জানি যে তোমরা শেষ দু ঘণ্টা ধরে কোথায় ছিলে। আমরা প্রত্যেকেই তোমাদের আলিদা আর অমলের ঘরে দেখেছি। আমরাও গেছিলাম। কিন্তু তোমরা আছো বলে ডিস্টার্ব করি নি। কিন্তু আমরা সাতজনেই দেখেছি।“ বাকি তিনটে মেয়েও দেখলাম মাথা নাড়াল। আলিদা স্পষ্ট স্বরে বলে দিল যে ঘণ্টা খানেক ধরে অদিতি ওর সাথে ছিল আর রাজু আর অমলও সবাইকে বলে দিল যে আমি ওদের দুজনের সাথে ছিলাম। আলিদা বলল “অরূপদা এখানে নেই। একটা সৎকারের ব্যাবস্থা তো করতে হবে ওর। যুদ্ধে গিয়ে মরলে তাও কথা ছিল। কিন্তু এত একেবারে ওর আহত শরীরের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ওকে খুন করা হয়েছে।“ অদিতি হঠাত ফোঁস করে বলে বসল “আলিদা কিছু মনে করবে না। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, আর অন্তর থেকেই ভালোবাসি। কিন্তু অসহায় শরীর, সুযোগ এই গুলো ঠিক তোমাদের মুখে মানায় না।“ আমি যে ওকে বাঁধা দেব তার সুযোগ আমি পেলাম না। ও উঠে দাঁড়িয়ে পাছা থেকে সশব্দে মাটি ঝেড়ে বলল “ এ কথা বলার কারণ এই যে আমার আর আমার এই বন্ধুটিকে তোমরা এইভাবেই ধরে এনেছ। আমরা ডাক্তার, আমরা জানি কোন ওষুধে কতটা দোষ গুন থাকে। আমরা জানি কোন কোন সিডেটিভ দিলে কি কি হতে পারে। আজ একটা কথা বলি? সীমাদির মৃত্যুতে তোমরা যতটা দুঃখ পেয়েছ আমরাও ঠিক ততটা পেয়েছি। কিন্তু অসাড় শরীর, সুযোগ নেওয়া এইসব না বললেই ভালো। আমার বন্ধু তো বসে বসে কাঁদছে, জানি কেন কাঁদছে। কারণ ওই ওকে বাঁচিয়েছিল, কিন্তু আবার কেউ নিয়ে চলে গেল পেছন থেকে এসে। ও খুব নরম মনের। আমি নই। আর তাই এই অবস্থাতেও একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, (একটু থেমে আলিদার ঘাড়ে হাত দিয়ে বলল) তোমাদের কমরেডের শোক আমাদেরও স্পর্শ করেছে। কিন্তু তাও বলছি, তোমাদের আগের ডাক্তার আমার বন্ধুর অসাড় শরীরের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এখানে নিয়ে আসার আগে ওকে রেপ করেছিল। (রমা ভিড়ের মধ্যে ছিল, ওকেই উদ্দেশ্য করে বলল) সত্যি সব সময় সত্যিই হয়। ও বলেছে যখন তোমরা তিন জন ওকে একলা ডাক্তারের হাতে রেখে দিয়ে বাইরে চলে গিয়েছিলে তখন ওর অসাড় শরীরের ওপর তোমাদের ডাক্তার ;., করেছিল। অরূপদাকে ও ব্যাপারটা বলেছিল আমার সামনে। কিন্তু ও মানতে চায় নি। আলিদা, মনে খুব দুঃখ হলেও একটা কথা না বলে পারছি না। একেই বলে পোয়েটিক জাস্টিস। যা করবে তার ফল এড়াতে পারবে না। তোমাদের দলের একজন কমরেড একটা অসহায় মেয়ের শারীরিক অক্ষমতার সুযোগ নিয়েছিল একদিন, আর আজ একজন এসে তোমাদের আহত কমরেডকে ঘুমের মধ্যে শেষ করে দিয়ে চলে গেল। (আরও জোর গলায় বলল) হ্যাঁ ঘুমের মধ্যে বলছি কারণ, সীমাদি যা মেয়ে ও জেগে থাকলে একটা ধস্তাধস্তি হতই। কিন্তু তার কোনও চিহ্ন আমরা কেউ দেখিনি ওর বিছানায়। (একটু দম নিয়ে বলল) কিন্তু সৎকার একটা করতেই হবে। “ শেষ লাইনে ওর গিয়ার চেঞ্জ হয়ে গেছে। ও বলে চলল “ অরূপদা যাবার আগে বলে গিয়েছিল আমি আর রুমি এখন গার্ডিয়ান। আমরাই ওর সৎকার করব। কেউ যদি আগ বাড়িয়ে করতে চায় তো আমাদের কোনও আপত্তি নেই।“ আমার চোখ দুটো জলে ঝাপসা হয়ে গেছে। শুনলাম অদিতি বলে চলেছে “আলি দা তুমিই এদের মধ্যে সবার বড়। তুমি চাইলে তুমিও করতে পারো।“ আলিদা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে। ও উঠে দাঁড়িয়ে বলল “আমি .।“ অদিতি বলল “কমরেডের মধ্যে আবার * . কি? তবে একটা কথা, ওর কোমরে বেঁধা ছোরাটা বের করে নিও। ওতে চিহ্ন থাকতে পারে। আমরা শুধু গোয়েন্দা গল্প পড়েছি আর সিনেমা দেখেছি। তোমাদের মধ্যে কেউ থাকতেই পারে যে ওটাকে পরীক্ষা করে দেখতে চাইতে পারে। তাই সময় থাকতে বলছি ওটা বের করে নাও। আর তাছাড়া, একটা মেয়েকে, ছোরা সমেত দাহ করা বোধহয় আমাদের শোভা দেয় না।“ শেষ কথাগুলো বলার সময় যে ওর গলা ধরে এলো সেটা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি। আমার শুধু একটাই রাগ ওর ওপর, এই সময় এতগুলো লোকের সামনে নিজের মনের ঝাল না ঝাড়লেই পারত। আলিদা আমার পাশে এসে বসে বলল “তুমিই ওটা বের করে নাও। আমি রুমাল দিচ্ছি। বাঁটের নিচের জায়গাটা ধরে বের করে নাও। আমাদের সে সাহস হবে না। “
আমি আলিদার হাত ধরে এগিয়ে গেলাম ঘরের দিকে। একটা কাপড়ের মতন জিনিস আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। কাঁপা কাঁপা হাতে ছোরার ধারালো অংশটাকে হাতে ধরে টেনে বের করে নিলাম ওর শরীরের থেকে। কান্নায় ভেঙ্গে মাটিতে বসে পড়লাম। ভেতর থেকে বেড়িয়ে এল বমি। মাটির ওপর উপুড় হয়ে বসে উগড়ে দিলাম ভেতরের বিষ। অদিতি সহ বাকিরা এগিয়ে এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেল আমার ঘরের দিকে। সৎকার আমাকে করতে হয় নি। পরের দিন শুনেছিলাম যে আলিদাই সৎকার করেছে। ব্যাগ থেকে আয়না বের করে দেখলাম আমার চোখ পুরো ফুলে গেছে। ঘুমের মধ্যেও কেঁদেছি সারা রাত ধরে। আমি অদিতির মতন এত শক্ত নই। আমি ঘুম থেকে উঠেছি প্রায় সাড়ে সাতটায়। অদিতি পুরো রেডি। ওর ব্রাশ করা হয়ে গেছে। চা খেয়ে ব্রেকফাস্টও সেরে নিয়েছে। ও চুপচাপ চেয়ারে বসে আমার ওঠবার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি উঠে বসে শাড়ি ঠিক করে বললাম “ কতক্ষণ উঠেছিস? “ ও আমার কথার জবাব না দিয়ে বলল “রেডি হয়ে নে। সবাই ট্রেনিং করতে চলে গেছে। সব সিনিয়ররা আমাদের সাথে এসে কথা বলবে বলেছে। এখন ঝিমিয়ে থাকিস না। “ উঠে চোখ জ্বালা করছে দেখে আয়নাটা বের করেছিলাম। নিজের ফোলা মুখটা একবার দেখে নিয়ে চলে গেলাম ব্রাশ হাতে কল পাড়ে। ঘরে ফিরে এসে খেয়াল করলাম চা রুটি আর সকালের বরাদ্দ কলাটা একটা প্লেটে পড়ে আছে। ব্রেকফাস্ট করার কোনও তাগিদ আমার ভেতরে নেই। চাটা মুখে নিয়ে বুঝতে পারলাম অনেকক্ষণ আগে দিয়ে গেছে। ঠাণ্ডা জল হয়ে গেছে। তাও কথা না বাড়িয়ে কাপটা মুখে ঠেকালাম। (আজ আমাদের কপালে এসেছে কাপ, গ্লাস নয়। পাঠকরা ভাববেন না যে গুলিয়ে ফেলেছি কাপ আর গ্লাসের মধ্যে। তাই এই সতর্কতা।) সাথে সাথেই ঘরে এসে প্রবেশ করল আরও ছয়জন। দেখলাম আরও দু তিন জন এসেছে, রাজু, অমল আর আরেকটা ছেলে কিন্তু ওরা বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে। আলিদা এসে আমাদের বিছানায় বসে পড়ল। বাকি মেয়ে গুলো দাঁড়িয়ে রইল। আলিদা গলা খাঁকড়িয়ে শুরু করল। “ রুমির ওপর যে এমন হয়েছে সেটা ও নিশ্চই অরূপদার সামনে কাল তুমি যেভাবে বলেছ সেভাবে বলেনি। নইলে ও নিজেও বিশ্বাস করত। ডাক্তার ফিরে এলে এর বিহিত হবে। আমরা লজ্জিত।“ অদিতি উঠে এসে ওর হাত ধরে বলল “ছিঃ ছিঃ। তুমি এ কথা কেন বলছ? লজ্জিত হওয়ার কোনও কারণ তোমাদের নেই। “ মেয়েরা একে একে এসে আমার হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে গেলো। আমি একটা হালকা হাঁসি দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম যে তাদের ওপর আমার কোনও রাগ নেই। আলিদা এইবার এলো আসল কাজের কথায়। “ আমি তোমাদের সাথে পরামর্শ করতে এসেছি যে কি করা যায়। একটা কথা স্বীকার করতেই হবে যে আমাদের মধ্যে একজন বিশ্বাসঘাতক আছে। (সাথে সাথে উঠে দাঁড়িয়ে বলল) আমি তোমাদের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছি না। আমার একটা থিয়োরি আছে। তোমরা কাল এসেছ। তোমরা একাজ করে থাকলে খুব খারাপ, কিন্তু তোমাদের এখানে আনার আগে তোমাদের দুজনেরই ব্যাক গ্রাউন্ড আমরা চেক করেছিলাম। আমি জানি তোমরা নিজ হাতে মানুষ খুন করতে পারো না। আর তোমাদের বাইরের জীবন ধারা ছিল খুব সাধারণ। (আমাকে দেখিয়ে বলল) তোমরা সবাই শোনো, রুমি কিন্তু অনেকের চিকিৎসা ফ্রিতে করত। আর ও যার সাথে থাকতো সেও তাই করত। তুমি বা অদিতি খুন করতে পারবে না। এটা আমরা জানি। অন্তত আমি জানি। এইবার বল তোমরা একদম গার্ডিয়ান হিসেবে যে আমাদের কি করা উচিত।“ আমি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম কিন্তু অদিতি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “উফফ তুমি আগে খাওয়াটা শেষ করে নাও। রাত থেকে তো কিছুই ঢোকেনি পেটে। তারপর নিয়ে যাব তোমাকে স্নান করাতে। এখন খাও আগে।“ মাঝে মাঝে ওর ব্যক্তিত্ব দেখলে ঘাবড়ে যেতে হয়। আমি মুখ বুজে রইলাম।
অদিতি উঠে দাঁড়িয়ে বলল “ যেমন তোমার থিয়োরি আছে আলিদা। তেমন আমারও একটা থিয়োরি আছে। যে এইসব কথা সবার সামনে হয় না। আমি কাউকে অবিশ্বাস করছি না। কিন্তু কে জানে কি বলতে কি বলব আর সে থেকে যদি কেউ আগ বাড়িয়ে আগাম স্টেপ নেয় তো বিপদ এসে যাবে। ও হ্যাঁ একটা কথা, অরূপদা কবে ফিরছে? ওকে ছাড়া এইসব কথা বলতে আমার ভালো লাগছে না। বা অন্তত বিনীতাদি... “ আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝেছি যে এটা সম্পূর্ণ নাটক।