18-02-2020, 10:18 PM
12
“ওদের দিয়ে দাও। “ আলি আমাদের উদ্দেশ্য করে বলল। আমি ছুরি কাচি অনেক ধরেছি কিন্তু বন্দুক এই প্রথম। আমার হাতে বন্দুকটা ধরাতে ধরাতে লোকটা বলল “সাবধান, ম্যাগাজিন ভরা।“ দেখতে ছোট হলেও জিনিসটা বেশ ভারী। জিনিসটা হাতে নিতেই আমার হাত কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। মানুষের পেট কাটার সময় আমার হাত আজ অব্দি কাঁপে নি, কিন্তু এই ছোট জিনিসটা হাতে নিতেই কেমন জানি একটা ভয় মনের মধ্যে এসে জুড়ে বসল। আরেকটু হলে জিনিসটা আমার হাত থেকে মাটিতে পড়ে যেত, ঠিক এমন সময় অদিতি জিনিসটা আমার হাত থেকে তুলে নিল। “কি করছ? এই জিনিস হাত থেকে পড়ে গেলে খুব খারাপ। তার ওপর আবার সেলামির জিনিস।“ অদিতি কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে হেঁসে হেঁসেই কথা বলছে। বন্দুকটা হাতে নেওয়ার পরও ওর মধ্যে কোনও রকম অস্বস্তি চোখে পড়ল না আমার। যেন একটা খ্যালনা নিয়ে হাতে নেড়ে চেড়ে দেখছে। সাহস আছে বলতে হবে মেয়েটার। আমি লিস্ট থেকে একটা একটা করে জিনিস পড়া শুরু করলাম। খুব মেপে মেপে জিনিস নামানো হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক, কারণ অনেক রক্ত মাংস বেচে জীবন বিপন্ন করে উপার্জন করা টাকা দিয়ে এই জিনিস কেনা। তবে বাজারের থেকে অনেক শস্তায় পেয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। দু তিনটে জিনিস ছাড়া বাকি সব যেমন লেখা আছে তেমনটাই আছে। তবে ওজনে কারছুপি থাকলে জানি না। সব জিনিস নামানো হয়ে গেলে সবাই মিলে ট্রাকের ভেতরগুলো ভালো করে তন্ন তন্ন করে খুজে দেখে নিল যে কিছু ফেলে রাখা হয়েছে কি না। জিনিস সরিয়ে ফেলা হল। ওই দু তিনটে জিনিস ওরা বলল কালকের মধ্যে এসে দিয়ে যাবে। কিন্তু আলি বলল তার দরকার নেই কারণ বারবার এদিকে এলে পুলিশের নজরে পড়তে বেশী দেরী হবে না। ও নিজেই লোক পাঠাবে সেই তুলে নেবে। এইবার টাকা দেওয়ার পালা। একটা মেয়ে এসে দুজন ড্রাইভারের জন্য চা দিয়ে গেল। ওরা চায়ের গ্লাস হাতে নিয়ে আবার হাঁটা দিল অরূপদার ঘরের দিকে। আমি আলি আর অদিতি ওদের পিছন নিলাম। অদিতি ফিস ফিস করে আলি কে বলল “আলিদা এত অনেক অনেক জিনিস। এত লোক কোথায়?” আলি বলল “ অনেক দিনের জিনিস এসেছে। আর টুকিটাকি কিছু লাগলে যোগান আসে। তিন চার মাসে একবার দুবার এরকম রিফিল করে নি। বাকি জিনিস নিয়ে কেউ এখানে আসে না। কোথাও নামিয়ে দিয়ে যায়, আমরা সময় মতন উঠিয়ে নি। “ আরতি অবশ্য এমনটাই বলেছিল সেদিন। আলি আমাদের দুজনকে গলা নামিয়ে নিয়ে বলল “অরূপদা বলে গেছে যে একটা বাদামী খাতায় জিনিসের রেট লেখা আছে। এর আগে কোনও দিন ওর অনুপস্থিতিতে এত মালের ডেলিভারি নেওয়া হয় নি। একবার খুজে দেখ। বোধহয় হাতের কাছেই থাকবে। আমি টাকার বন্দবস্ত করছি। “ অদিতি আলির বা হাতটা চেপে ধরে বলল “ওই তিনটে জিনিস, যেগুলো আসে নি, তার টাকা দেবে না। “ আমি বলে দিলাম টোটাল কত টাকা দিতে হবে। আলি আমাদের অরূপদার ঘরে রেখে ওদের দুপুরে এখানেই খেয়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়ে টাকা আনতে চলে গেল। অবশ্য যাওয়ার আগে অদিতির হাত থেকে কালো চকচকে জিনিসটা নিয়ে চলে গেল।
খুব বেশী খুজতে হয় নি, বই রাখা তাকেই পাওয়া গেল সেই বাদামী খাতা। সত্যি তাতে সব কটা জিনিসের রেট লেখা আছে। আর সাথে তারিখও দেওয়া আছে। তারিখ ছয় দিন আগের। মনে হয় সেদিনই এদের সাথে ডিল ফাইনাল করেছিল অরূপদা। না কোথাও রেটে কোনও ভুল নেই। বরং কয়েকটা জিনিসের রেট যা ধরা হয়েছে সেটা খাতায় লেখা সংখ্যার থেকে কম। আমাদের গুন যোগ করতে অনেকক্ষণ লাগলো। ইতিমধ্যে আলি ফিরে এসেছে একটা বড় ব্যাগ নিয়ে। ওদের সামনে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বলল “ গুনে নিয়ে একটা কাঁচা রসিদ লিখে দাও তোমরা। বাকি টাকা ওই জিনিসগুলো নেবার সময় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। “ আমরাও একটা কাঁচা রসিদ দিয়ে দিলাম। উল্লেখ করে দিলাম যে কি কি জিনিস এখনও আমাদের কাছে আসা বাকি, আর কত টাকা আমাদের তরফ থেকে ওদের দেওয়া বাকি। অদিতি এক একটা টাকার থোক গুনে গুনে অ্যাঁমাউন্টটা ওদের বলছে, ওরাও আবার নিজেরা গুনে নিয়ে মিলিয়ে নিচ্ছে। অদিতির টাকা গোণার ভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলাম আমার মতই ও ও নোট গোণার কাজে ভীষণ অপটু। আমি বাদামী খাতাটা আবার জায়গায় রাখার সময় খেয়াল করলাম কয়েকটা বইয়ের পেছনে একটা চটি মতন বই তাকের একদম পিছনে লুকিয়ে রাখা আছে। লুকিয়ে রাখা আছে সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কারণ, নইলে এইভাবে একদম বইয়ের স্তূপের পিছনে রাখার কোনও কারণ নেই। সহজে চোখে পড়বে না। লাকিলি আমার চোখে পড়ে গেছে। কিন্তু ওদের সামনে বের করা যাবে না বুঝে পুরো ব্যাপারটা চেপে গেলাম তখনকার মতন। টাকা গোণাও শেষ হল। শুনলাম মাছ বসানো হচ্ছে। ড্রাইভার দুজন অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও এখানে খেতে রাজি হল না। ওরা টাকার ব্যাগ হাতে রওয়ানা দিল। অরূপদার ঘরে এখন শুধু আমরা দুজন। চারপাশটা দেখে নিলাম একবার। অদিতিকে গলা নামিয়ে বললাম ওই চটি বইটার কথা। ও বলল “ যদি সত্যি লুকিয়ে রাখা থাকে, তাহলে সেটা বের করা রিস্ক হবে। কারণ পরে যদি ধরতে পারে তাহলে বলবে গুপ্তচরের কাজ করছি। এক কাজ কর তুই বাইরে নজর রাখ কেউ এলেই বলবি। আমি বইটা বের করে কি লেখা আছে দেখে নিচ্ছি। তারপর আলোচনা করা যাবে।“ আমি ওকে সাবধান করে দিলাম “দেখিস কোনও বই ফেলিস না। আর ঠিক যেভাবে আছে ঠিক সেইভাবে বইটাকে আবার রেখে যেতে হবে।“ তাকটার গভীরতা বেশ ভালো। প্রায় দুই স্তর বইয়ের পেছন থেকে অদিতি ওই চটি বইটা বের করল। আমি বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম পাহারা দিতে। মাঝে মাঝে আড় চোখে ঘরের ভেতরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম যে অদিতি প্যাড থেকে একটা কাগজ ছিঁড়ে নিয়ে পেন দিয়ে তাতে ওই চটি বইটা থেকে কিসব লিখে নিচ্ছে। মেয়েটা না একটা মাথা মোটা। আগে লিখে নিয়ে তারপর প্যাড থেকে পাতাটা ছিঁড়ে নিলেই হত। এখন খড়খড়ে কাঠের টেবিলে পাতলা কাগজটা রেখে তার ওপর লিখতে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। আর সময়ও লাগছে বেশী। আমার তো হার্ট বিট অনেকক্ষণ ধরেই বেড়ে গেছে। যাই হোক। ওর সব কিছু নোট করে নেওয়ার আগে কেউ এলো না। ও বইটা আবার আগের জায়গায় ঢুকিয়ে রেখে ভালো করে বইয়ের স্তরের পেছনে সেটাকে লুকিয়ে রেখে কাগজটা ভাঁজ করে নাভির নিচে শাড়ির গিঁটের মধ্যে ভালো ভাবে গুঁজে নিল। এখন আর বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। বেড়িয়ে এসে আমার হাত ধরে বলল “খাজানা পেয়ে গেছি। চল। “ বাইরে মেয়েদের ট্রেনিং ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ তখনও নিশানা প্র্যাকটিস করছে। তবে অধিকাংশই দেখলাম কল পাড়ের দিকে হাঁটা দিয়েছে। অনেক বেলা হয়েছে। তবে জানি আজ খেতে অনেক দেরী। অদিতি ঘরে এসেই আমাকে ইশারায় বলল “বাইরে দাঁড়িয়ে দেখত কেউ আসছে কি না এই দিকে। “ আমি দরজার বাইরে গিয়ে দাঁড়াতেই অদিতি পিছনের দরজাটা খুলে বাইরে গিয়ে ওই কাগজটা একটা ঝোপের নিচে পাথরের নিচে চাপা দিয়ে ফিরে এলো।
“
“ওদের দিয়ে দাও। “ আলি আমাদের উদ্দেশ্য করে বলল। আমি ছুরি কাচি অনেক ধরেছি কিন্তু বন্দুক এই প্রথম। আমার হাতে বন্দুকটা ধরাতে ধরাতে লোকটা বলল “সাবধান, ম্যাগাজিন ভরা।“ দেখতে ছোট হলেও জিনিসটা বেশ ভারী। জিনিসটা হাতে নিতেই আমার হাত কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। মানুষের পেট কাটার সময় আমার হাত আজ অব্দি কাঁপে নি, কিন্তু এই ছোট জিনিসটা হাতে নিতেই কেমন জানি একটা ভয় মনের মধ্যে এসে জুড়ে বসল। আরেকটু হলে জিনিসটা আমার হাত থেকে মাটিতে পড়ে যেত, ঠিক এমন সময় অদিতি জিনিসটা আমার হাত থেকে তুলে নিল। “কি করছ? এই জিনিস হাত থেকে পড়ে গেলে খুব খারাপ। তার ওপর আবার সেলামির জিনিস।“ অদিতি কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে হেঁসে হেঁসেই কথা বলছে। বন্দুকটা হাতে নেওয়ার পরও ওর মধ্যে কোনও রকম অস্বস্তি চোখে পড়ল না আমার। যেন একটা খ্যালনা নিয়ে হাতে নেড়ে চেড়ে দেখছে। সাহস আছে বলতে হবে মেয়েটার। আমি লিস্ট থেকে একটা একটা করে জিনিস পড়া শুরু করলাম। খুব মেপে মেপে জিনিস নামানো হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক, কারণ অনেক রক্ত মাংস বেচে জীবন বিপন্ন করে উপার্জন করা টাকা দিয়ে এই জিনিস কেনা। তবে বাজারের থেকে অনেক শস্তায় পেয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। দু তিনটে জিনিস ছাড়া বাকি সব যেমন লেখা আছে তেমনটাই আছে। তবে ওজনে কারছুপি থাকলে জানি না। সব জিনিস নামানো হয়ে গেলে সবাই মিলে ট্রাকের ভেতরগুলো ভালো করে তন্ন তন্ন করে খুজে দেখে নিল যে কিছু ফেলে রাখা হয়েছে কি না। জিনিস সরিয়ে ফেলা হল। ওই দু তিনটে জিনিস ওরা বলল কালকের মধ্যে এসে দিয়ে যাবে। কিন্তু আলি বলল তার দরকার নেই কারণ বারবার এদিকে এলে পুলিশের নজরে পড়তে বেশী দেরী হবে না। ও নিজেই লোক পাঠাবে সেই তুলে নেবে। এইবার টাকা দেওয়ার পালা। একটা মেয়ে এসে দুজন ড্রাইভারের জন্য চা দিয়ে গেল। ওরা চায়ের গ্লাস হাতে নিয়ে আবার হাঁটা দিল অরূপদার ঘরের দিকে। আমি আলি আর অদিতি ওদের পিছন নিলাম। অদিতি ফিস ফিস করে আলি কে বলল “আলিদা এত অনেক অনেক জিনিস। এত লোক কোথায়?” আলি বলল “ অনেক দিনের জিনিস এসেছে। আর টুকিটাকি কিছু লাগলে যোগান আসে। তিন চার মাসে একবার দুবার এরকম রিফিল করে নি। বাকি জিনিস নিয়ে কেউ এখানে আসে না। কোথাও নামিয়ে দিয়ে যায়, আমরা সময় মতন উঠিয়ে নি। “ আরতি অবশ্য এমনটাই বলেছিল সেদিন। আলি আমাদের দুজনকে গলা নামিয়ে নিয়ে বলল “অরূপদা বলে গেছে যে একটা বাদামী খাতায় জিনিসের রেট লেখা আছে। এর আগে কোনও দিন ওর অনুপস্থিতিতে এত মালের ডেলিভারি নেওয়া হয় নি। একবার খুজে দেখ। বোধহয় হাতের কাছেই থাকবে। আমি টাকার বন্দবস্ত করছি। “ অদিতি আলির বা হাতটা চেপে ধরে বলল “ওই তিনটে জিনিস, যেগুলো আসে নি, তার টাকা দেবে না। “ আমি বলে দিলাম টোটাল কত টাকা দিতে হবে। আলি আমাদের অরূপদার ঘরে রেখে ওদের দুপুরে এখানেই খেয়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়ে টাকা আনতে চলে গেল। অবশ্য যাওয়ার আগে অদিতির হাত থেকে কালো চকচকে জিনিসটা নিয়ে চলে গেল।
খুব বেশী খুজতে হয় নি, বই রাখা তাকেই পাওয়া গেল সেই বাদামী খাতা। সত্যি তাতে সব কটা জিনিসের রেট লেখা আছে। আর সাথে তারিখও দেওয়া আছে। তারিখ ছয় দিন আগের। মনে হয় সেদিনই এদের সাথে ডিল ফাইনাল করেছিল অরূপদা। না কোথাও রেটে কোনও ভুল নেই। বরং কয়েকটা জিনিসের রেট যা ধরা হয়েছে সেটা খাতায় লেখা সংখ্যার থেকে কম। আমাদের গুন যোগ করতে অনেকক্ষণ লাগলো। ইতিমধ্যে আলি ফিরে এসেছে একটা বড় ব্যাগ নিয়ে। ওদের সামনে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বলল “ গুনে নিয়ে একটা কাঁচা রসিদ লিখে দাও তোমরা। বাকি টাকা ওই জিনিসগুলো নেবার সময় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। “ আমরাও একটা কাঁচা রসিদ দিয়ে দিলাম। উল্লেখ করে দিলাম যে কি কি জিনিস এখনও আমাদের কাছে আসা বাকি, আর কত টাকা আমাদের তরফ থেকে ওদের দেওয়া বাকি। অদিতি এক একটা টাকার থোক গুনে গুনে অ্যাঁমাউন্টটা ওদের বলছে, ওরাও আবার নিজেরা গুনে নিয়ে মিলিয়ে নিচ্ছে। অদিতির টাকা গোণার ভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলাম আমার মতই ও ও নোট গোণার কাজে ভীষণ অপটু। আমি বাদামী খাতাটা আবার জায়গায় রাখার সময় খেয়াল করলাম কয়েকটা বইয়ের পেছনে একটা চটি মতন বই তাকের একদম পিছনে লুকিয়ে রাখা আছে। লুকিয়ে রাখা আছে সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কারণ, নইলে এইভাবে একদম বইয়ের স্তূপের পিছনে রাখার কোনও কারণ নেই। সহজে চোখে পড়বে না। লাকিলি আমার চোখে পড়ে গেছে। কিন্তু ওদের সামনে বের করা যাবে না বুঝে পুরো ব্যাপারটা চেপে গেলাম তখনকার মতন। টাকা গোণাও শেষ হল। শুনলাম মাছ বসানো হচ্ছে। ড্রাইভার দুজন অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও এখানে খেতে রাজি হল না। ওরা টাকার ব্যাগ হাতে রওয়ানা দিল। অরূপদার ঘরে এখন শুধু আমরা দুজন। চারপাশটা দেখে নিলাম একবার। অদিতিকে গলা নামিয়ে বললাম ওই চটি বইটার কথা। ও বলল “ যদি সত্যি লুকিয়ে রাখা থাকে, তাহলে সেটা বের করা রিস্ক হবে। কারণ পরে যদি ধরতে পারে তাহলে বলবে গুপ্তচরের কাজ করছি। এক কাজ কর তুই বাইরে নজর রাখ কেউ এলেই বলবি। আমি বইটা বের করে কি লেখা আছে দেখে নিচ্ছি। তারপর আলোচনা করা যাবে।“ আমি ওকে সাবধান করে দিলাম “দেখিস কোনও বই ফেলিস না। আর ঠিক যেভাবে আছে ঠিক সেইভাবে বইটাকে আবার রেখে যেতে হবে।“ তাকটার গভীরতা বেশ ভালো। প্রায় দুই স্তর বইয়ের পেছন থেকে অদিতি ওই চটি বইটা বের করল। আমি বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম পাহারা দিতে। মাঝে মাঝে আড় চোখে ঘরের ভেতরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম যে অদিতি প্যাড থেকে একটা কাগজ ছিঁড়ে নিয়ে পেন দিয়ে তাতে ওই চটি বইটা থেকে কিসব লিখে নিচ্ছে। মেয়েটা না একটা মাথা মোটা। আগে লিখে নিয়ে তারপর প্যাড থেকে পাতাটা ছিঁড়ে নিলেই হত। এখন খড়খড়ে কাঠের টেবিলে পাতলা কাগজটা রেখে তার ওপর লিখতে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। আর সময়ও লাগছে বেশী। আমার তো হার্ট বিট অনেকক্ষণ ধরেই বেড়ে গেছে। যাই হোক। ওর সব কিছু নোট করে নেওয়ার আগে কেউ এলো না। ও বইটা আবার আগের জায়গায় ঢুকিয়ে রেখে ভালো করে বইয়ের স্তরের পেছনে সেটাকে লুকিয়ে রেখে কাগজটা ভাঁজ করে নাভির নিচে শাড়ির গিঁটের মধ্যে ভালো ভাবে গুঁজে নিল। এখন আর বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। বেড়িয়ে এসে আমার হাত ধরে বলল “খাজানা পেয়ে গেছি। চল। “ বাইরে মেয়েদের ট্রেনিং ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ তখনও নিশানা প্র্যাকটিস করছে। তবে অধিকাংশই দেখলাম কল পাড়ের দিকে হাঁটা দিয়েছে। অনেক বেলা হয়েছে। তবে জানি আজ খেতে অনেক দেরী। অদিতি ঘরে এসেই আমাকে ইশারায় বলল “বাইরে দাঁড়িয়ে দেখত কেউ আসছে কি না এই দিকে। “ আমি দরজার বাইরে গিয়ে দাঁড়াতেই অদিতি পিছনের দরজাটা খুলে বাইরে গিয়ে ওই কাগজটা একটা ঝোপের নিচে পাথরের নিচে চাপা দিয়ে ফিরে এলো।
“