18-02-2020, 10:17 PM
দশ
আমি চেয়ারে বসে একটা প্যাড তুলে নিলাম। উল্টে পাল্টে দেখলাম। না পুরো সাদা। তবে সামনের কয়েকটা পাতা ছেঁড়া। তবে প্যাডের প্রথম পৃষ্ঠায় বেশ কিছু অক্ষরের ছাপ রয়ে গেছে। সম্ভবত উপরের পাতায় চেপে লেখার ফল। অদিতি বিছানায় শুয়ে পড়েছে। আমার একটু কৌতূহল হল যে কি লেখা থাকতে পারে। আমি প্যাডের পাতাটাকে জানলার কাছে নিয়ে গিয়ে পড়ার চেষ্টা করলাম যে কি লেখা আছে। অদিতি কিছুক্ষণ ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখল। তারপর উঠে বসে বলল “ঠিক কি করছিস বলবি?” বললাম “আগের পাতায় লেখা কিছু জিনিসের ছাপ চলে এসেছে। কোনও কাজ নেই তাই বসে বসে দেখার চেষ্টা করছি কি লিখেছে।“ ও তড়াক করে লাফিয়ে এসে হাত থেকে প্যাডটা নিয়ে প্রথম পাতাটা আর তার পরের কয়েকটা পাতা উল্টে পাল্টে দেখল। “না পরের পাতা গুলোর ছাপ খুব অস্পষ্ট। যা আছে এতেই আছে।“ কিন্তু এইভাবে পড়তে পারব না। আমি বললাম “ছোট বেলায় পড়েছিলাম পেন্সিল বা ওরকম কিছু ঘষে এই লেখার কিছুটা উদ্ধার করা গেলেও যেতে পারে। তবে কতটা চাপ দিয়ে লিখেছে আর হাতের লেখা জড়ানো কি না তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। “ যেমন বলা তেমন কাজ। অদিতি এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে প্রথম পাতাটা আস্তে আস্তে নিপুণ ভাবে প্যাড থেকে ছিঁড়ে নিল। তবে দুর্ভাগ্য ঘরে পেনসিল পেলাম না। আমি বললাম “আরেকটা উপায় আছে। তবে নিখুঁত না করতে পারলে পুরো জিনিসটাই হাতের বাইরে চলে যাবে। “ ও ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল কি। বললাম “মিহি মাটি ঘষে ঘষে যদি ব্যাপারটাকে একটু ...।“ ও কাগজটা ভাঁজ করতে যাচ্ছিল, আমি ওকে বাঁধা দিয়ে বললাম “ভাঁজ করিস না। দাগ ঘেঁটে যাবে।“ ও নির্লজ্জের মতন কোমর থেকে শাড়িটা খুলে নিজের পাছার ওপর কাগজটা একদম সমান্তরালে চেপে ধরল। আমাকে ইশারা করতেই আমি ওর কোমরের চার ধারে শাড়ি জড়াতে শুরু করলাম। আমরা অবশ্য এটা করার আগে চারপাশটা একবার দেখে নিয়েছিলাম। কাগজের পুরোটাই ঢাকা পড়ে গেছে ওর পাছা আর তার উপর দিয়ে যাওয়া মিহি কাপড়ের মাঝে। আমি ওকে বললাম “ আরেকটা কাজ ছিল। তখন ভুলে গেছিলাম। আমি লিখে দিয়েছিলাম ওরা আনিয়ে রেখেছে। বেশ কয়েকটা স্ট্রিপ গর্ভ নিরোধক বড়ি আনিয়েছি। বোধহয় ওরা বোঝেনি। “ ও আমাকে বলল “ তুই কি ভাবছিস বল তো?” আমি বললাম “তেমন দরকার পড়লে ছলা কলা দেখিয়ে পালানো। তুই নিশ্চই পেটে বাচ্চা নিয়ে যেতে চাস না এখান থেকে। “ ও আমাকে বলল “তুই কি পাগল। এদের সাথে আমি শোব?” আমি হেঁসে একধারে মাথা হেলিয়ে বললাম “সোনা সব কিছু কি আর নিজের ইচ্ছেয় হয়। এরাই তো শিখিয়েছে। শরীর হাতিয়ার অ্যান্ড অল।“ আমরা আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেড়িয়ে আমাদের ঘরের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সামনে একজনের সাথে দেখা হওয়ায় আমরা জিজ্ঞেস করলাম “ কটা বাজে বলতে পারবে?” ওর নাম আমরা জানি না। আগে দেখেছি ও কে। কিন্তু কথা বলা হয় নি। আমাদের মতন বয়স হবে। ও বলল “কেন? সীমাদিকে দেখার কথা?” বুঝলাম ও বোধহয় ভাবছে আমরা কখন কখন রুগী দেখব সেটা স্থির করার জন্য এই প্রশ্নটা করেছি। আমি বললাম “ না না। ওকে দেখা হয়ে গেছে। সুজাতা দিদি মনিকেও দেখা হয়ে গেছে। কিন্তু আজ আমাদের ঘাড়ে একটা গুরু দায়িত্ব পড়েছে সেটা তো শুনেছ। ডেলিভারি নিতে হবে। তা ওরা কখন আসবে, আর কটাই বা বাজে সেটার তো কোনও হিসাব নেই। “ ও আকাশের দিকে চোখের উপরে হাত রেখে একবার বলল “ সাড়ে নটা বাজে নি এখনও।“ ও চলে গেল আমরা হাঁটা দিলাম। অদিতি বলল “ সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠলে দিনটা অনেক বড় হয়ে যায়, সেটা ছোটবেলায় আমার বাপ অনেকবার বলেছে, কিন্তু আজ প্রথমবার বুঝলাম।“ তবে বুঝলাম ডেলিভারি কখন আসবে সেটা মেয়েটা জানে না, কারণ সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর ও দেয় নি।
ঘরে ঢুকেই অদিতি পিছনের দিকটা আলগা করে কাগজটা বের করে বিছানায় রেখে আমাদের জন্য বরাদ্দ ছেঁড়া বালিশটা দিয়ে আলগা ভাবে ওটাকে ঢেকে দিল। আমাকে বলল “এই যে? কেমন মাটি নিয়ে আসব?” আমি বললাম “তুই বস। আমি ছোটবেলায় এসব মস্তি অনেকবার করেছি। আমার কাছে ছিল ফুর্তি করার মতন ব্যাপার। আমিই নিয়ে আসি।“ তবে কারোর মনে সন্দেহ প্রবেশ করলে এরা আমাদের কেটে ফেলবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হয়ত বা ভেবে বসল আমরা পুলিশের চর। অদিতি সটান বেড়িয়ে আবার হাঁটা লাগাল অরূপদার ঘরের দিকে। আলি কিছু দূর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। অদিতি দেখলাম ওকে ডাকল। “আলি দা। একবার শুনবেন।“ আমি বাইরে বেড়িয়ে এসে দাঁড়িয়েছি। ও হেঁসে বলল “আপনি বলবে না। তুমি বললেই আমি সাড়া দেব। বল। “ অদিতি বলল “ স্যার আর ম্যাডাম দুজনেই বলেছে আমি মানে আমরা ওই ঘর থেকে বই নিয়ে পড়তে পারি। ও ঘরে পাশের তাকে অনেক গুলো বই দেখেছি। একটা আনব। সময় কাটানোর জন্য। যদি তুমি সঙ্গে আসো তো... মানে বুঝতেই তো পারছ, যদি কিছু সরিয়ে ফেলেছি বলে অপবাদ রটে। “ আলি বলল “দূর সে তুমি বলছ তাই আমি যাব তোমার সাথে। আমরা কোনও রাখা ঢাকা করি না। এসো। যখন বই পড়তে ইচ্ছে করবে নিয়ে যাবে। এখন পড়বে না তো কবে পড়বে।“ শেষ কয়েকটা কথা আমার কানে এলো। “আমি যখন আলিগড় ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম, মানে ওই দিল্লীতে, পড়ায় মন বসত না। আমাদের লাইব্রেরীতে অনেক বই ছিল। অনেক গল্পের বইও ছিল। সেগুল এসে রাতের বেলায় গিলতাম। “ হাহাহা একটা উচ্চ কণ্ঠের উদার হাঁসি। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। বুঝতে পারলাম এর পর ওরা গোটা রাস্তায় অনেক কথা বলল কিন্তু ওদের হাবভাব দেখার মতন সময় বা সুযোগ একটাও আমার হাতে নেই। আমি বাইরে গিয়ে বসে পড়লাম মাটিতে। ভাব খানা এমন যেন মাটির রক্ত পরীক্ষা করছি। ঘরের সামনের মাটি শুঁকিয়ে গেছে। আমি সেখান থেকেই পাথর বেছে বেছে বেশ কিছুটা শুঁকনো বাদামি কালচে মাটি হাতের মুঠোয় ভরে নিলাম। একটা পাতার জন্য এই যথেষ্ট। টেবিলের ওপর এসে মাটিগুলো হাত থেকে রাখলাম। বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলাম অদিতি হাতে একটা বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আলির সাথে গায়ে পড়ে হেঁসে হেঁসে অনেক গল্প করছে। আমি দরজা থেকে নড়লাম না। অদিতি কিছু একটা বলল আর তারপর দেখলাম আলি চুপ মেরে ওপরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল কিছুক্ষণ। তারপর ও উত্তেজিত ভাবে হাত পা নেড়ে প্রায় বিশ মিনিট ধরে অদিতিকে অনেক কিছু বলল। অদিতি দেখলাম মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে সেসব শুনল। আলি কে দেখে কেমন একটা উত্তেজিত বলে মনে হল। নিজের চারপাশে হাত পা ছুঁড়ে চলেছে। আমি এক সময় ভাবলাম অদিতি নিশ্চই নিজের বাচালতা দেখিয়ে কিছু একটা বলে ওকে খেপিয়ে দিয়েছে। নইলে এত উত্তেজিত হবে কেন? ওদের শান্ত করার জন্য একবার ভাবলাম ওদের দিকে যাব, আর কিছু না হোক, একটা বই নেওয়ার অজুহাতে। কিন্তু না। তার আগেই দেখলাম অদিতি ওর খোলা কাঁধে হাত বোলাচ্ছে। আলি একটা হাঁটু অব্দি লম্বা ধুতি আর একটা ফতুয়া মতন পরে আছে। মনে হল দেখে সান্তনা দিচ্ছে আলি কে। আলিকে দেখলাম নিজের চোখ মুছল। তারপর আবার আমাদের ঘরের দিকে হাঁটা শুরু করল। আমি দরজার সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম। যখন ওরা আমার কাছে এসে পৌঁছালো তখন দেখলাম আলি র চোখ লাল। বুঝলাম কেঁদেছে। অদিতি ওকে বলল “ আর মন খারাপ করে থেকো না। এই দেখো, এখানে একজন বন্ধু পেয়ে গেছ তুমি। তুমি আমাকে যা বলেছ, আমি কাউকে বলব না কথা দিলাম। তবে আরও কিছু বলে মন হালকা করতে চাইলে আমাকে বলতে এসো। (আমার দিকে দেখিয়ে বলল) ও দিদি বেশী পড়াশুনা করেছে। তাই বড় ডাক্তার। ওর সময় হবে না। কিন্তু আমার হবে। “ আলি আমাকে বলল(হিন্দি বাঙলা মেশানো কথা) “ তোমার বন্ধু শয়তান। আমার পেট থেকে কথা বের করে আমাকে কাঁদিয়ে এখন সরে পড়ছে।“ অদিতি যেন অরূপদার কায়দা রপ্ত করে ফেলেছে। খুব ধীর গলায় বলল “সরে যাব তো বলি নি। বললাম তো, যখন খুশি নিজের মনের কথা বলতে এসো। আমি শুনব। তুমিই এই ক্যাম্পে আমার প্রথম বন্ধু।“ আলি আবার ভালো করে চোখ মুছে চলে গেলো। যাবার আগে আমাদের অভ্য় দিয়ে গেলো এই বলে যে আমরা যেকোনো সময়ে যখন খুশি ওই ঘরে গিয়ে বই নিয়ে আসতে পারি, বই রেখেও দিয়ে আসতে পারি। আর ডেলিভারি বা হিসাবের দরকার হলে আমাদের ও নিজেই এসে ডেকে নিয়ে যাবে।
বললাম “কি হচ্ছিল রে?” ও বালিশে চাপা দেওয়া কাগজটা এক পাশে সযত্নে সরিয়ে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ে বলল “ ভাব জমালাম। (আমার দিকে চোখ মেরে বলল) আমার একটু বেশী বয়সের ছেলে ভালো লাগে। (আমি একটু ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে আমাকে বলল) মাই লেডি লাভ, ইউ ক্যান কল দিস অ্যা ক্রাশ। যাই হোক, এই হল খবর। (ও শুরু করল) লোকটা আলিগড় থেকে পড়েছে।“ আমি ওকে থামিয়ে বললাম “সে তো আগেই শুনেছি। তো?” বলল “ ও ইকনমিক্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। মাসে চল্লিশ হাজার টাকার মাইনের চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু সব ছেড়ে এখানে এসেছে। “ স্বাভাবিক প্রশ্ন “কেন?” বলল “ এখানে সবাই জানে ওর বউ কে অনেকে মিলে রেপ করে ট্রেন লাইনের ধারে ছেড়ে রেখে দিয়ে গেছিল। কিন্তু সেটা সত্যি নয় কারণ ও সত্যি কথা কাউকে বলতে পারে নি।“ আমি বললাম “ আর তোকে বলে দিল পাঁচ মিনিটের আলাপে? শালা যত সব গ্যাজাখুরি? হ্যাঁ?” ও বলল “ ধীরে বন্ধু ধীরে। এখানে কোনও মেয়ে ওর সাথে ঠিক করে কথা বলে না। অরূপদা আর বিনীতাদি ছাড়া সবাই ওকে গার্ডিয়ান বলে মেনে নিয়েছে, কিন্তু ওর সাথে সুখ দুঃখের কথা আজ অব্দি কেউ বলে নি। অ্যান্ড লাকিলি আমিই ফার্স্ট বললাম। আর শোন মেয়েদের চোখ বোঝে। আমি বললাম বউ মারা গিয়েছিল? লোকটা ইমোশানাল হয়ে ভেঙ্গে পড়ল। গল্প হল। ওর বাবা অনেক বেশী বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে করে ওর নিজের মা মারা যাবার পর। নতুন মাকে ও ভালো বেসে ফেলেছিল। অবশ্য মায়ের মতন ভালোবাসা, এত ওপেন ভালোবাসা এর আগে ও কোনও দিন দেখে নি বলে আমার ধারণা। ওর একটা অপারেশনের সময় ওর মা ওকে সেবা যত্ন করে ভালো করে তোলে। ও ওর মাকে সেলাম না দিয়ে কোথাও বেরতো না। চাকরির ব্যাপারটা সত্যি। ও তখন চাকরি করছিল। আর ওর বাবা যাকে বিয়ে করে এনেছিল তার বয়স ভীষণ কম। মানে ওর কথায় ওর বাবার বয়সের প্রায় অর্ধেক। তবে তাতে কোনও সমস্যা ছিল না। তিন জনের সংসার ভালোই চলছিল। ওর বাবার ছিল একটা ছোট ব্যবসা। আর ও বাইরে বাইরে থাকত অফিসের কাজে। একদিন একটা বাজে খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। দু কথায় বলতে গেলে এই যে, ওর বাবার সাথে স্থানীয় কিছু পলিটিকাল লোকের সমস্যা বাঁধে। কারণ ওরা ওদের বাড়িটা কিনতে চায়। কিন্তু ওর বাবা অনেক টাকার বিনিময়েও সেই বাড়ি বিক্রি করতে রাজি হয় না। ওরা ওর যুবতী দ্বিতীয় মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় সাতজন মিলে রেপ করে একটা মিলের ধারে ফেলে রেখে দিয়ে যায়। ওর দ্বিতীয় মা ছিল অন্তস্বত্বা। এই আঘাত নিতে পারে নি। যখন উদ্ধার হয় ওর দেহ তখন রিগর মর্টিস সেটল করেছে। ওর বাবা সেইদিনই মারা যায়। ওর ওপর উল্টে আরোপ করা হয় যে ও আর ওর বন্ধুরা মিলে ওর স্নেহ আর মমতায় ভর্তি যুবতী মাকে গ্যাং রেপ করেছে নেশার বশে। ওর আর ওর ছয় জন বন্ধুর চাকরি যায়। দুজন আত্মহত্যা করেছে বলে ওর ধারণা। ওর দুবছর জেল হয়েছিল। অবশ্য আদেশ ছিল অনেক দিনের কিন্তু এখানকার ক্যাম্পের নির্ধারিত (গোপনে, সেটা ও ইশারায় বোঝাল) উকিল মামলা আবার শুরু করে সেটাকে আদালতের সামনে পেশ করে। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে ও জেলের বাইরে আসে। এদের সাহায্যে যারা ওর পূজনীয়া মার এই ক্ষতি করেছিল তাদের খুঁজে বের করে খুন করে আর তারপর বহুদিন ইউপি তে ছিল গা ঢাকা দিয়ে। দু বছর আগে এদের ক্যাম্প এখানে পাঠানোর সময় ও চলে এসেছে এখানে। “ আমি বললাম “একটা ব্যাপার আশ্চর্য তাই না? কত লোক এই ভাবে ঠকে যাচ্ছে।“ অদিতি বলল “ বন্ধু তুই আর আমিও এখন সেই দলে পড়ি। কারোর ভালো রিসন থাকলেই সে যে কাউকে তুলে নিয়ে আসতে পারে না। তাহলে ওই খারাপদের থেকে এরাই বা আলাদা কিসের। আমাদের ফ্যামিলির থেকে আমাদের ভাওতা দিয়ে দূরে সরিয়ে এনে এখানে এইভাবে হাফ নেকেড করে আধ পেটা খাইয়ে রেখে দিয়েছে। এখানেই আমার কেন জানি না একটু খটকা লাগছে।“ আমি খুব গম্ভীর ভাবে ভাবছিলাম যে ও যদিও বলছে দু একটা খটকা, আমার কাছে এখনও খটকা অনেকগুলো। তবে এটা নিঃসন্দেহ যে এখানে প্রায় সবাই, বা বেশীরভাগ মেয়েই বা ছেলেই নিজেদের জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি খোলা জানলার দিকে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে বসে আছি দেখে ও আমার কোমরের নগ্ন চামড়ার ওপর কাতুকুতু দেওয়ার মতন করে খুঁচিয়ে বলল “কমরেড, আমি আমার রিপোর্ট পেশ করেছি। এইবার আমি বাইরে গিয়ে নজর রাখব। তুমি যে জিনিসে পারদর্শী বলে দাবি করেছ সেটা নিজের নিপুণ সার্জেনের হাতে সেরে ফেলো।“ ও উঠে বাইরে গিয়ে দাঁড়ালো।
না আমি বিফল হই নি মোটেই। লেখা উদ্ধার করা গেল। আরও পুরোটা। আমার “হয়ে গেছে “ আওয়াজ টা পেয়েই ও ভেতরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার পিঠের উপর। লেখা কিছুটা আবিস্কার হয়েছে ঠিকই কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছুই আবিস্কার হয় নি। লেখা গুলো এখানে ছেপে দিলাম।
1. 73 jl s (k) f-23 (a 36) 66l
2. 128 ajcb (k) f-2 (a 29) 19l
3. 11 bpnd (k) f-G (a-55) 35l (?)
4. 12 fss-3 cross—(k) f-3 (a-41) 19l
(3-4)
5. bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l
6. -S(22)
7. -A(23)
আমি চেয়ারে বসে একটা প্যাড তুলে নিলাম। উল্টে পাল্টে দেখলাম। না পুরো সাদা। তবে সামনের কয়েকটা পাতা ছেঁড়া। তবে প্যাডের প্রথম পৃষ্ঠায় বেশ কিছু অক্ষরের ছাপ রয়ে গেছে। সম্ভবত উপরের পাতায় চেপে লেখার ফল। অদিতি বিছানায় শুয়ে পড়েছে। আমার একটু কৌতূহল হল যে কি লেখা থাকতে পারে। আমি প্যাডের পাতাটাকে জানলার কাছে নিয়ে গিয়ে পড়ার চেষ্টা করলাম যে কি লেখা আছে। অদিতি কিছুক্ষণ ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখল। তারপর উঠে বসে বলল “ঠিক কি করছিস বলবি?” বললাম “আগের পাতায় লেখা কিছু জিনিসের ছাপ চলে এসেছে। কোনও কাজ নেই তাই বসে বসে দেখার চেষ্টা করছি কি লিখেছে।“ ও তড়াক করে লাফিয়ে এসে হাত থেকে প্যাডটা নিয়ে প্রথম পাতাটা আর তার পরের কয়েকটা পাতা উল্টে পাল্টে দেখল। “না পরের পাতা গুলোর ছাপ খুব অস্পষ্ট। যা আছে এতেই আছে।“ কিন্তু এইভাবে পড়তে পারব না। আমি বললাম “ছোট বেলায় পড়েছিলাম পেন্সিল বা ওরকম কিছু ঘষে এই লেখার কিছুটা উদ্ধার করা গেলেও যেতে পারে। তবে কতটা চাপ দিয়ে লিখেছে আর হাতের লেখা জড়ানো কি না তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। “ যেমন বলা তেমন কাজ। অদিতি এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে প্রথম পাতাটা আস্তে আস্তে নিপুণ ভাবে প্যাড থেকে ছিঁড়ে নিল। তবে দুর্ভাগ্য ঘরে পেনসিল পেলাম না। আমি বললাম “আরেকটা উপায় আছে। তবে নিখুঁত না করতে পারলে পুরো জিনিসটাই হাতের বাইরে চলে যাবে। “ ও ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল কি। বললাম “মিহি মাটি ঘষে ঘষে যদি ব্যাপারটাকে একটু ...।“ ও কাগজটা ভাঁজ করতে যাচ্ছিল, আমি ওকে বাঁধা দিয়ে বললাম “ভাঁজ করিস না। দাগ ঘেঁটে যাবে।“ ও নির্লজ্জের মতন কোমর থেকে শাড়িটা খুলে নিজের পাছার ওপর কাগজটা একদম সমান্তরালে চেপে ধরল। আমাকে ইশারা করতেই আমি ওর কোমরের চার ধারে শাড়ি জড়াতে শুরু করলাম। আমরা অবশ্য এটা করার আগে চারপাশটা একবার দেখে নিয়েছিলাম। কাগজের পুরোটাই ঢাকা পড়ে গেছে ওর পাছা আর তার উপর দিয়ে যাওয়া মিহি কাপড়ের মাঝে। আমি ওকে বললাম “ আরেকটা কাজ ছিল। তখন ভুলে গেছিলাম। আমি লিখে দিয়েছিলাম ওরা আনিয়ে রেখেছে। বেশ কয়েকটা স্ট্রিপ গর্ভ নিরোধক বড়ি আনিয়েছি। বোধহয় ওরা বোঝেনি। “ ও আমাকে বলল “ তুই কি ভাবছিস বল তো?” আমি বললাম “তেমন দরকার পড়লে ছলা কলা দেখিয়ে পালানো। তুই নিশ্চই পেটে বাচ্চা নিয়ে যেতে চাস না এখান থেকে। “ ও আমাকে বলল “তুই কি পাগল। এদের সাথে আমি শোব?” আমি হেঁসে একধারে মাথা হেলিয়ে বললাম “সোনা সব কিছু কি আর নিজের ইচ্ছেয় হয়। এরাই তো শিখিয়েছে। শরীর হাতিয়ার অ্যান্ড অল।“ আমরা আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেড়িয়ে আমাদের ঘরের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সামনে একজনের সাথে দেখা হওয়ায় আমরা জিজ্ঞেস করলাম “ কটা বাজে বলতে পারবে?” ওর নাম আমরা জানি না। আগে দেখেছি ও কে। কিন্তু কথা বলা হয় নি। আমাদের মতন বয়স হবে। ও বলল “কেন? সীমাদিকে দেখার কথা?” বুঝলাম ও বোধহয় ভাবছে আমরা কখন কখন রুগী দেখব সেটা স্থির করার জন্য এই প্রশ্নটা করেছি। আমি বললাম “ না না। ওকে দেখা হয়ে গেছে। সুজাতা দিদি মনিকেও দেখা হয়ে গেছে। কিন্তু আজ আমাদের ঘাড়ে একটা গুরু দায়িত্ব পড়েছে সেটা তো শুনেছ। ডেলিভারি নিতে হবে। তা ওরা কখন আসবে, আর কটাই বা বাজে সেটার তো কোনও হিসাব নেই। “ ও আকাশের দিকে চোখের উপরে হাত রেখে একবার বলল “ সাড়ে নটা বাজে নি এখনও।“ ও চলে গেল আমরা হাঁটা দিলাম। অদিতি বলল “ সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠলে দিনটা অনেক বড় হয়ে যায়, সেটা ছোটবেলায় আমার বাপ অনেকবার বলেছে, কিন্তু আজ প্রথমবার বুঝলাম।“ তবে বুঝলাম ডেলিভারি কখন আসবে সেটা মেয়েটা জানে না, কারণ সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর ও দেয় নি।
ঘরে ঢুকেই অদিতি পিছনের দিকটা আলগা করে কাগজটা বের করে বিছানায় রেখে আমাদের জন্য বরাদ্দ ছেঁড়া বালিশটা দিয়ে আলগা ভাবে ওটাকে ঢেকে দিল। আমাকে বলল “এই যে? কেমন মাটি নিয়ে আসব?” আমি বললাম “তুই বস। আমি ছোটবেলায় এসব মস্তি অনেকবার করেছি। আমার কাছে ছিল ফুর্তি করার মতন ব্যাপার। আমিই নিয়ে আসি।“ তবে কারোর মনে সন্দেহ প্রবেশ করলে এরা আমাদের কেটে ফেলবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হয়ত বা ভেবে বসল আমরা পুলিশের চর। অদিতি সটান বেড়িয়ে আবার হাঁটা লাগাল অরূপদার ঘরের দিকে। আলি কিছু দূর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। অদিতি দেখলাম ওকে ডাকল। “আলি দা। একবার শুনবেন।“ আমি বাইরে বেড়িয়ে এসে দাঁড়িয়েছি। ও হেঁসে বলল “আপনি বলবে না। তুমি বললেই আমি সাড়া দেব। বল। “ অদিতি বলল “ স্যার আর ম্যাডাম দুজনেই বলেছে আমি মানে আমরা ওই ঘর থেকে বই নিয়ে পড়তে পারি। ও ঘরে পাশের তাকে অনেক গুলো বই দেখেছি। একটা আনব। সময় কাটানোর জন্য। যদি তুমি সঙ্গে আসো তো... মানে বুঝতেই তো পারছ, যদি কিছু সরিয়ে ফেলেছি বলে অপবাদ রটে। “ আলি বলল “দূর সে তুমি বলছ তাই আমি যাব তোমার সাথে। আমরা কোনও রাখা ঢাকা করি না। এসো। যখন বই পড়তে ইচ্ছে করবে নিয়ে যাবে। এখন পড়বে না তো কবে পড়বে।“ শেষ কয়েকটা কথা আমার কানে এলো। “আমি যখন আলিগড় ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম, মানে ওই দিল্লীতে, পড়ায় মন বসত না। আমাদের লাইব্রেরীতে অনেক বই ছিল। অনেক গল্পের বইও ছিল। সেগুল এসে রাতের বেলায় গিলতাম। “ হাহাহা একটা উচ্চ কণ্ঠের উদার হাঁসি। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। বুঝতে পারলাম এর পর ওরা গোটা রাস্তায় অনেক কথা বলল কিন্তু ওদের হাবভাব দেখার মতন সময় বা সুযোগ একটাও আমার হাতে নেই। আমি বাইরে গিয়ে বসে পড়লাম মাটিতে। ভাব খানা এমন যেন মাটির রক্ত পরীক্ষা করছি। ঘরের সামনের মাটি শুঁকিয়ে গেছে। আমি সেখান থেকেই পাথর বেছে বেছে বেশ কিছুটা শুঁকনো বাদামি কালচে মাটি হাতের মুঠোয় ভরে নিলাম। একটা পাতার জন্য এই যথেষ্ট। টেবিলের ওপর এসে মাটিগুলো হাত থেকে রাখলাম। বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলাম অদিতি হাতে একটা বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আলির সাথে গায়ে পড়ে হেঁসে হেঁসে অনেক গল্প করছে। আমি দরজা থেকে নড়লাম না। অদিতি কিছু একটা বলল আর তারপর দেখলাম আলি চুপ মেরে ওপরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল কিছুক্ষণ। তারপর ও উত্তেজিত ভাবে হাত পা নেড়ে প্রায় বিশ মিনিট ধরে অদিতিকে অনেক কিছু বলল। অদিতি দেখলাম মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে সেসব শুনল। আলি কে দেখে কেমন একটা উত্তেজিত বলে মনে হল। নিজের চারপাশে হাত পা ছুঁড়ে চলেছে। আমি এক সময় ভাবলাম অদিতি নিশ্চই নিজের বাচালতা দেখিয়ে কিছু একটা বলে ওকে খেপিয়ে দিয়েছে। নইলে এত উত্তেজিত হবে কেন? ওদের শান্ত করার জন্য একবার ভাবলাম ওদের দিকে যাব, আর কিছু না হোক, একটা বই নেওয়ার অজুহাতে। কিন্তু না। তার আগেই দেখলাম অদিতি ওর খোলা কাঁধে হাত বোলাচ্ছে। আলি একটা হাঁটু অব্দি লম্বা ধুতি আর একটা ফতুয়া মতন পরে আছে। মনে হল দেখে সান্তনা দিচ্ছে আলি কে। আলিকে দেখলাম নিজের চোখ মুছল। তারপর আবার আমাদের ঘরের দিকে হাঁটা শুরু করল। আমি দরজার সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম। যখন ওরা আমার কাছে এসে পৌঁছালো তখন দেখলাম আলি র চোখ লাল। বুঝলাম কেঁদেছে। অদিতি ওকে বলল “ আর মন খারাপ করে থেকো না। এই দেখো, এখানে একজন বন্ধু পেয়ে গেছ তুমি। তুমি আমাকে যা বলেছ, আমি কাউকে বলব না কথা দিলাম। তবে আরও কিছু বলে মন হালকা করতে চাইলে আমাকে বলতে এসো। (আমার দিকে দেখিয়ে বলল) ও দিদি বেশী পড়াশুনা করেছে। তাই বড় ডাক্তার। ওর সময় হবে না। কিন্তু আমার হবে। “ আলি আমাকে বলল(হিন্দি বাঙলা মেশানো কথা) “ তোমার বন্ধু শয়তান। আমার পেট থেকে কথা বের করে আমাকে কাঁদিয়ে এখন সরে পড়ছে।“ অদিতি যেন অরূপদার কায়দা রপ্ত করে ফেলেছে। খুব ধীর গলায় বলল “সরে যাব তো বলি নি। বললাম তো, যখন খুশি নিজের মনের কথা বলতে এসো। আমি শুনব। তুমিই এই ক্যাম্পে আমার প্রথম বন্ধু।“ আলি আবার ভালো করে চোখ মুছে চলে গেলো। যাবার আগে আমাদের অভ্য় দিয়ে গেলো এই বলে যে আমরা যেকোনো সময়ে যখন খুশি ওই ঘরে গিয়ে বই নিয়ে আসতে পারি, বই রেখেও দিয়ে আসতে পারি। আর ডেলিভারি বা হিসাবের দরকার হলে আমাদের ও নিজেই এসে ডেকে নিয়ে যাবে।
বললাম “কি হচ্ছিল রে?” ও বালিশে চাপা দেওয়া কাগজটা এক পাশে সযত্নে সরিয়ে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ে বলল “ ভাব জমালাম। (আমার দিকে চোখ মেরে বলল) আমার একটু বেশী বয়সের ছেলে ভালো লাগে। (আমি একটু ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে আমাকে বলল) মাই লেডি লাভ, ইউ ক্যান কল দিস অ্যা ক্রাশ। যাই হোক, এই হল খবর। (ও শুরু করল) লোকটা আলিগড় থেকে পড়েছে।“ আমি ওকে থামিয়ে বললাম “সে তো আগেই শুনেছি। তো?” বলল “ ও ইকনমিক্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। মাসে চল্লিশ হাজার টাকার মাইনের চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু সব ছেড়ে এখানে এসেছে। “ স্বাভাবিক প্রশ্ন “কেন?” বলল “ এখানে সবাই জানে ওর বউ কে অনেকে মিলে রেপ করে ট্রেন লাইনের ধারে ছেড়ে রেখে দিয়ে গেছিল। কিন্তু সেটা সত্যি নয় কারণ ও সত্যি কথা কাউকে বলতে পারে নি।“ আমি বললাম “ আর তোকে বলে দিল পাঁচ মিনিটের আলাপে? শালা যত সব গ্যাজাখুরি? হ্যাঁ?” ও বলল “ ধীরে বন্ধু ধীরে। এখানে কোনও মেয়ে ওর সাথে ঠিক করে কথা বলে না। অরূপদা আর বিনীতাদি ছাড়া সবাই ওকে গার্ডিয়ান বলে মেনে নিয়েছে, কিন্তু ওর সাথে সুখ দুঃখের কথা আজ অব্দি কেউ বলে নি। অ্যান্ড লাকিলি আমিই ফার্স্ট বললাম। আর শোন মেয়েদের চোখ বোঝে। আমি বললাম বউ মারা গিয়েছিল? লোকটা ইমোশানাল হয়ে ভেঙ্গে পড়ল। গল্প হল। ওর বাবা অনেক বেশী বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে করে ওর নিজের মা মারা যাবার পর। নতুন মাকে ও ভালো বেসে ফেলেছিল। অবশ্য মায়ের মতন ভালোবাসা, এত ওপেন ভালোবাসা এর আগে ও কোনও দিন দেখে নি বলে আমার ধারণা। ওর একটা অপারেশনের সময় ওর মা ওকে সেবা যত্ন করে ভালো করে তোলে। ও ওর মাকে সেলাম না দিয়ে কোথাও বেরতো না। চাকরির ব্যাপারটা সত্যি। ও তখন চাকরি করছিল। আর ওর বাবা যাকে বিয়ে করে এনেছিল তার বয়স ভীষণ কম। মানে ওর কথায় ওর বাবার বয়সের প্রায় অর্ধেক। তবে তাতে কোনও সমস্যা ছিল না। তিন জনের সংসার ভালোই চলছিল। ওর বাবার ছিল একটা ছোট ব্যবসা। আর ও বাইরে বাইরে থাকত অফিসের কাজে। একদিন একটা বাজে খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। দু কথায় বলতে গেলে এই যে, ওর বাবার সাথে স্থানীয় কিছু পলিটিকাল লোকের সমস্যা বাঁধে। কারণ ওরা ওদের বাড়িটা কিনতে চায়। কিন্তু ওর বাবা অনেক টাকার বিনিময়েও সেই বাড়ি বিক্রি করতে রাজি হয় না। ওরা ওর যুবতী দ্বিতীয় মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় সাতজন মিলে রেপ করে একটা মিলের ধারে ফেলে রেখে দিয়ে যায়। ওর দ্বিতীয় মা ছিল অন্তস্বত্বা। এই আঘাত নিতে পারে নি। যখন উদ্ধার হয় ওর দেহ তখন রিগর মর্টিস সেটল করেছে। ওর বাবা সেইদিনই মারা যায়। ওর ওপর উল্টে আরোপ করা হয় যে ও আর ওর বন্ধুরা মিলে ওর স্নেহ আর মমতায় ভর্তি যুবতী মাকে গ্যাং রেপ করেছে নেশার বশে। ওর আর ওর ছয় জন বন্ধুর চাকরি যায়। দুজন আত্মহত্যা করেছে বলে ওর ধারণা। ওর দুবছর জেল হয়েছিল। অবশ্য আদেশ ছিল অনেক দিনের কিন্তু এখানকার ক্যাম্পের নির্ধারিত (গোপনে, সেটা ও ইশারায় বোঝাল) উকিল মামলা আবার শুরু করে সেটাকে আদালতের সামনে পেশ করে। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে ও জেলের বাইরে আসে। এদের সাহায্যে যারা ওর পূজনীয়া মার এই ক্ষতি করেছিল তাদের খুঁজে বের করে খুন করে আর তারপর বহুদিন ইউপি তে ছিল গা ঢাকা দিয়ে। দু বছর আগে এদের ক্যাম্প এখানে পাঠানোর সময় ও চলে এসেছে এখানে। “ আমি বললাম “একটা ব্যাপার আশ্চর্য তাই না? কত লোক এই ভাবে ঠকে যাচ্ছে।“ অদিতি বলল “ বন্ধু তুই আর আমিও এখন সেই দলে পড়ি। কারোর ভালো রিসন থাকলেই সে যে কাউকে তুলে নিয়ে আসতে পারে না। তাহলে ওই খারাপদের থেকে এরাই বা আলাদা কিসের। আমাদের ফ্যামিলির থেকে আমাদের ভাওতা দিয়ে দূরে সরিয়ে এনে এখানে এইভাবে হাফ নেকেড করে আধ পেটা খাইয়ে রেখে দিয়েছে। এখানেই আমার কেন জানি না একটু খটকা লাগছে।“ আমি খুব গম্ভীর ভাবে ভাবছিলাম যে ও যদিও বলছে দু একটা খটকা, আমার কাছে এখনও খটকা অনেকগুলো। তবে এটা নিঃসন্দেহ যে এখানে প্রায় সবাই, বা বেশীরভাগ মেয়েই বা ছেলেই নিজেদের জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি খোলা জানলার দিকে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে বসে আছি দেখে ও আমার কোমরের নগ্ন চামড়ার ওপর কাতুকুতু দেওয়ার মতন করে খুঁচিয়ে বলল “কমরেড, আমি আমার রিপোর্ট পেশ করেছি। এইবার আমি বাইরে গিয়ে নজর রাখব। তুমি যে জিনিসে পারদর্শী বলে দাবি করেছ সেটা নিজের নিপুণ সার্জেনের হাতে সেরে ফেলো।“ ও উঠে বাইরে গিয়ে দাঁড়ালো।
না আমি বিফল হই নি মোটেই। লেখা উদ্ধার করা গেল। আরও পুরোটা। আমার “হয়ে গেছে “ আওয়াজ টা পেয়েই ও ভেতরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার পিঠের উপর। লেখা কিছুটা আবিস্কার হয়েছে ঠিকই কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছুই আবিস্কার হয় নি। লেখা গুলো এখানে ছেপে দিলাম।
1. 73 jl s (k) f-23 (a 36) 66l
2. 128 ajcb (k) f-2 (a 29) 19l
3. 11 bpnd (k) f-G (a-55) 35l (?)
4. 12 fss-3 cross—(k) f-3 (a-41) 19l
(3-4)
5. bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l
6. -S(22)
7. -A(23)