Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery গোপন কথা টি রবে না গোপনে ( পর্দাফাঁস ) by Daily Passenger
#12
নয়

আবার শুরু করল ও “ সারা দিনের শেষে এই একটু খানি আনন্দ গান বাজনা ফুর্তি এই নিয়েই নিজেদের পূর্ব জীবনের দুঃখ, সারা দিনের গ্লানি মাখা যে জীবন সেটা ভুলে থাকে। কেউ জানে না কাল সে বেঁচে থাকবে কি না, কেউ জানে না কাল সে যে কাজে যাচ্ছে সেই কাজ সেরে বেঁচে ফিরবে কি না। কেউ জানে না, কাল সে যার অঙ্কশায়িনী হবে সে তার সাথে কি কি করবে। “ অদিতি মাঝখানে বাঁধা দিয়ে বলল “একটা জিনিস কিন্তু আমার মাথায় ঢুকছে না। এখানে মেয়েদের ট্রেনিং দেওয়া হয়, ওরা বন্দুক চালাতে জানে, খালি হাতে লড়তে পারে। তাহলে নিজেদের দেহ না বেঁচে সরাসরি গিয়ে গ্রুপ নিয়ে গিয়ে আক্রমণ করলে কি ক্ষতি হত?” বিনীতাদি বলল “গুড কোশ্চেন। তাহলে উত্তরটা দি। এর অনেকগুলো কারণ। দেখো সরাসরি গ্রুপ নিয়ে গিয়ে ডাকাতি যে আমরা করি না তেমন নয়। কখনও টাকার প্রয়োজনে, কখনও বা খবর পেলাম কোথাও মেয়েদের দিনের পর দিন শোষণ করা হচ্ছে। সে বাড়িতেই হোক, বা কারখানায়। হয়ত দিনের পর দিন যৌন শোষণ চলছে মেয়েদের ওপর। শুধু মাত্র ;.,ই যে যৌন শোষণের মধ্যে পড়ে না সেটা নিশ্চই বলে বোঝাতে হবে না। এমন অসংখ্য কেস আছে যেখানে আমাদের নিজস্ব কোনও স্বার্থ নেই। কিন্তু তবু আমরা আমাদের কষ্টার্জিত অর্থব্যয় করে কেনা গুলি গোলা নিয়ে অনেক অনেক দূরে, নিজেদের জীবন বিপন্ন করে। প্রতিদানে কিছুই পাই নি। আর্থিক লোকসানের কথা যদি ছেরেও দাও, প্রানের লোকসানও হয়েছে এইসব ক্ষেত্রে। হয়ত ফিরে এসেছি আমাদের দু তিন জন কমরেডের শব কাঁধে করে। হয়ত বা দু তিন জন ধরা পড়েছে। কেউ হয়ত ধরা পড়ে যাবার ভয়ে সুইসাইড করেছে। এত কথা বলার অর্থ দুটো। তুমি যেটা জিজ্ঞেস করলে সেরকম ডাকাতি আমরা অনেক করেছি। আর, আমরা সব সময় টাকা লোটার উদ্দেশ্য নিয়েই যুদ্ধে যাই না। অনেক সময় আমাদের জমানো টাকা আর প্রান দুই খরচ করে মেয়েদের সাহায্য করতে যাই। উদ্দেশ্য একটাই পুরুষ সমাজের, বা নারী সমাজের যারা নিরীহ মেয়েদের শোষণ করে চলেছে তার যেন ভয় পায়, পরের বার এরকম কাজ করতে তাদের দেখাদেখি অন্য দেরও যেন হাত কাঁপে। একটা ছোট গল্প শোনাই। আসানসোলের পাশে একজন পুলিশ বদলি হয়ে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে এক গরীব মেয়ের ওপর ওর চোখ পড়ে। মেয়েটা বয়সে ওর থেকে অনেক অনেক ছোট। আর দারোগা তার ওপর বিবাহিত, শুনেছিলাম দুটো মেয়েও ছিল নাকি তার। (এরপর নিজের মনেই বলল) নিজের মেয়ে থাকলেও কোনও লোক কি করে এতটা নিচে নামতে পারে সেটাই মাথায় ঢোকে না। (আবার শুরু করল) মেয়েটাকে বহুভাবে রাস্তাঘাঁটে, উত্যক্ত করেছে ওই দারোগা আর ওর তলার লোকজনেরা। শেষ মেষ মেয়েটার বাড়িতে গুন্ডা গোছের কয়েকজন লোক পাঠায়। কি চতুর বুদ্ধি বোঝ, মেয়েটাকে ওরা কিছু করে নি, শুধু মেয়েটার জামা কাপড় ছিঁড়ে মেয়েটাকে নগ্ন করে বসিয়ে রাখে। গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত চিহ্ন রোপণ করে। পরে মেয়েটার আহত শরীরটাকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে এসে ঘরের সামনে ফেলে রেখে চলে যায়। ওরা কিন্তু মেয়েটাকে রেপ করে নি। কিন্তু সবাই জানলো মেয়েটাকে রেপ করা হয়েছে। কারণ ওরা কিছু না করলেও ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে প্রায় ঘণ্টা খানেক ছিল। পুলিশে ফোন করা হয়েছিল। দারোগা নিজে ছিল। কিন্তু যতক্ষণ না ওরা ওখান থেকে যায় ততক্ষণ কোনও স্টেপ নেয় নি। ওরা বেড়িয়ে যেতেই দারোগা ধড়াচূড়া পরে এসে হাজির হয় ওই বাড়ির দরজায়। সবার থেকে বয়ান নেয়। পরে ঘরের ভেতরে গিয়ে কোনও ডাক্তার ছাড়া নিজেই পরীক্ষা করে ঘোষণা করে দেয় যে গ্যাং রেপ হয়েছে। আমরা মুখে যাই বলি না কেন, এইবার মেয়েটার আর ওর পরিবারের কথা ভাবো একবার। মেয়েটার কোনও দোষ নেই। কিন্তু মেয়েটার সমস্ত জীবনের ওপর ইতি টেনে দিল ওই নোংরা একটা লোক তার ক্ষমতা খাটিয়ে। মেয়েটার বাবা আমাদের বলেছিল যে দারোগা বলে দিয়ে গেছে সেই রাতেই যে রেপ হওয়া মেয়ে শুনলে আর কোথাও ওর বিয়ে হবে না। তাই ওর বাবা বা মার যদি আপত্তি না থাকে তো ও নিজেই এসে ওদের মেয়েদের জৈবিক চাহিদা মিটিয়ে দিয়ে যাবে। আমার প্রশ্ন হল কেন এমনটা হল? মেয়েটা কি ওর রক্ষিতা হওয়ার জন্য জন্ম নিয়েছে। কে ওকে এই অধিকার দিয়েছে যে ও এইরকম ক্ষমতা আর শক্তির অপব্যবহার করতে পারে। অদ্ভুত মনের জোর দেখ মেয়েটার। মেয়েটা কিন্তু সেখানেই দমে যায় নি। ওর ই থানায় উকিল নিয়ে গিয়ে ওরই বিরুদ্ধে নালিশ করেছে। এর পর থেকে যা শুরু হয়েছে তা বলা যায় না। মেয়েটার বাড়ির চারপাশে মেয়েটার নগ্ন ছবির পোস্টারে ভরে গেছে। ওই দিন গুন্ডাগুলো মেয়েটাকে রেপ করার নাটক যখন করছিল তখন ওকে চেপে ধরে অনেকগুল অশ্লীল ছবি তুলেছিল। সেইগুলই লার্জ স্কেলে প্রিন্ট করে পাড়ায় বিলি করা শুরু হল। মেয়েটা সুইসাইড করল। মেয়ের মা সুইসাইড করল। মেয়ের বাবা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক ডাক্তারের আশীর্বাদে বেঁচে যায়। ওখানে আমাদের চর আছে। ওর থেকে কথায় কথায় এই ঘটনা জানতে পেরে আমরা ঠিক করলাম যে কিছু একটা না করলেই নয়। কারণ দারোগার নামে যে নালিশ জমা পড়েছিল সেটা আর নেই। কোন উকিল নিজের গ্যাঁটের টাকা খরচ করে বাদী পক্ষের হয়ে আদালতে লড়বে। আইন সঙ্গত ভাবে হওয়ার কথা নয়, কিন্তু কেসটা ওপেন রইল, কিন্তু অসংখ্য ধুলোর আস্তরণের নিচে চাপা পড়ে গেল। আর বিশ্বাস করো, খুব বেশী হলে দু মাস লাগবে সবার এই জিনিসটা ভুলে যেতে। আবার যদি কোনও মেয়ের ওপর সেই শয়তানের নজর পড়ে আর সেও যদি নিজের শরীর বেচতে রাজি না হয় তো তার পরিবারের সাথেও একই জিনিস হবে। কি ঠিক কিনা? তবে এখানে সিস্টেম বলতে, শুধু দারোগা নয়। দারোগার তলায় যারা রয়েছে, ওই গুন্ডাগুলো এদের সাহসের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। আর কে জানে ওদের মাথার ওপরে কার হাত রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের অন্য কিছু করার ছিল না। চার জন কে পাঠিয়েছিলাম ওখানে। আলি সেবার যায় নি যদিও, রাজুও যায় নি। চারজন বোনকেই পাঠাতে হয়েছিল। জানি পুলিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঝুঁকি অনেক। কিন্তু একটু ঝুঁকি না নিলেই নয়। ওদের তিন জন এক এক করে থানায় গিয়ে দারোগার সাথে দেখা করেছে। অনেক ইশারাও করেছে কথা বার্তার ছলে। হয়ত দারোগার ওদের কাউকে মনে ধরে নি। কিন্তু চতুর্থ জনের বেলায় ওর সেই অশ্লীল ইঙ্গিত বেড়িয়ে এসেছে। থানার মধ্যেই নাকি ওর হাত চেপে ধরেছিল। ওকে এক জায়গায় আসতে বলা হয়। এসেছিল। ওকে প্রানে মারা হয় নি। ওর যৌনাঙ্গটাকে থেঁতলে দিয়ে ওকে সারা জীবনের মতন হিজড়া করে দিয়ে আসা হয়েছে। অবশ্য জানি না এখন চিকিৎসা শাস্ত্র অনেক উন্নত হয়েছে। কিন্তু পরে আমরা ওই চরের মুখেই শুনি যে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে। ভেতরের খবর লোকটার আর কিছু করার ক্ষমতা নেই। হ্যাঁ একটা কথা, লোকটার নগ্ন শরীরটা রাস্তার ওপর ফেলে রেখে আসা হয়েছিল, যাতে সবাই জানতে পারে যে ও সারা জীবনের জন্য একজন ইম্পটেন্ট মানুষ। এইবার ও বাকিদের সামনে কি করে মাথা উঁচু করে কথা বলে সেটাই দেখার। তবে সে দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। “

“ এইবার কি আমি বোঝাতে পেরেছি যে আমরা শুধু টাকা লোটার জন্যই কাজ করি না। তবে হ্যাঁ এছারাও অনেক টাকার কুমীর আছে যাদের কাছে ব্ল্যাক মানির সমুদ্র। এই যে মেয়েগুলকে আমরা বাঁচতে শেখাচ্ছি। লড়তে শেখাচ্ছি, প্রতি হিংসা বল আর যাই বলো না কেন ওদের মধ্যে নিজেদের আর নিজেদের মতন আরও পাঁচ জনকে বাঁচিয়ে রাখার প্রেরণা যোগাচ্ছি এই গুলো তো আর ফ্রি তে হয় না। তাই আরও টাকার দরকার। অধিকাংশ এই মতন ধনীরা হয় গার্ডের মধ্যে থাকে, বা থাকে কড়া পাহারায়। এরা ভীষণ ধূর্ত হয়। হয়ত পুলিশও এদের কাছ থেকে টাকা নেয় বলেই সরকার আর পুলিশের নজরদারির তলায় এরা সুরক্ষিত। অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে যাওয়ার আরেকটা অসুবিধা রয়েছে। পথে কোথাও কোনও বিপদ আপদ বা চেকিং হলেই যদি দেখে দশ জনের কাছেই এরকম আগ্নেয়াস্ত্র সাথে সাথে কি হবে বলা যায় না। সাধারণ লোকই হয়ত পিটিয়ে মেরে ফেলবে। এরা তো আমাদের আতঙ্কবাদী ছাড়া আর কিছুই ভাবে না। আর আমরা তো নিরপরাধ লোকের ওপর গুলি ছুড়তে পারব না ডিয়ার। এদের সবাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমাজের হাতে শোষিত হয়েছে। এরা সংকল্প নিয়েছে যে ফিল্ডে যাওয়ার সময় এদের শরীর বা মন কোনওটাই এদের নিজেদের সম্পত্তি নয়। যে শরীরের জন্য এদের শোষিত হতে হয়েছে, এখন সেই শরীরকেই হাতিয়ার বানিয়ে এরা সমাজের শোষকদের শোষণ করবে। একটা জিনিস চিন্তা কর, ধর একজনের বাগান বাড়িতে গিয়ে রঘু ডাকাতের মতন তুমি এক দল ছেলে মেয়েকে নিয়ে গিয়ে রে রে করে তেড়ে গেলে। হয়ত ওর কিছু সিকিউরিটি থাকলে তাদের সারপ্রাইজ অ্যাটাকে ঘায়েলও করে ফেললে। কিন্তু ধর ততক্ষণে দরজা বন্ধ হয়ে গেছে বা ভেতরে না দেখা আরও কিছু লোক বসে আছে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে। আর যদি হোটেলে এরকম লোক কে লুঠতে হয় তাহলে তো এই প্ল্যান আরও অসফল হবে। দুই ক্ষেত্রেই হয়ত পাঁচ মিনিটের মধ্যে দেখবে এক দঙ্গল পুলিশ এসে হাজির হয়েছে। আতঙ্কবাদী জানতে পারলে তো কথাই নেই। দেখবে কোথা থেকে আর্মিও চলে আসতে পারে। এদের কাউকে দোষ দি না। কারণ এই মুহূর্তে এরা এদের ডিউটি করছে। কিন্তু আমাদের যে গল্প, যে সত্য সেটা এরা জানার আগেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাবে আরও কয়েকটা প্রান। আমাদের গুলিতে যদি কেউ আহত বা নিহত হয় তো কথাই নেই। পরের দিন খবরের কাগজে ফলাও করে ছাপানো হবে এরা শহীদ হয়েছে আমাদের হাতে। যেখানে আমাদের লক্ষ্য না ছিল পুলিশের প্রান নেওয়া , আর না ছিল আর্মির কিছু লোককে শহীদ করা। আর এই রকম ক্ষেত্রে আমাদের কেউ ধরা পড়লে বা শহীদ হলে এই খবরের সাথে তার বা তাদের ছবিও ফলাও করে ছাপানো হবে। আর ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ বা ইন্টালিজেনস ডিপার্টমেন্ট কি জিনিস তোমাদের জানা নেই। কেউ না কেউ হয়ত বলবে এই মেয়েটাকে ওই খানে দেখে ছিলাম। ওরা ছবি দেখিয়ে ট্রেস করে করে সোজা ক্যাম্পে এসে হাজির হতে পারে। তখন সোজা যুদ্ধ। কিন্তু আমাদের এখন ফায়ার আর্মসের এতটা ইনফ্রাসট্রাকচার নেই যে আমরা এই আক্রমণ নিতে পারব। তাই এ ক্ষেত্রে আমরা দ্বিতীয় পদ্ধতি তা পছন্দ করি। শরীরটা দি ওই মহাজন বা ধনী শোষককে। এইসব ক্ষেত্রে তারা একাই থাকে। যদি লোকটা দুর্বল হয় তাহলে কিছু করার আগেই তাকে বেঁধে ফেলা বা বশ করে নেওয়া যায়। তবে অনেকেই অত সোজা হয় না। কিন্তু এই সব ক্ষেত্রে কোনও চেঁচামেচি হলেই বাইরে থেকে কি শুরু হবে কেউ জানে না। যে গেছে সে যদি পালিয়েও আসতে পারে, চেঁচামেচির জন্য অনেকে তাকে দেখে চিনে রাখতে পারে। কেউ যদি ফলো করে সরকারি পুরস্কারের আশায় তাহলে তো কথাই নেই। যতটা পারা যায় নিরবে, লোক না জানিয়ে এই কাজ করা হয়। প্রথমে শরীর দিয়ে বশ করা হয়। যখন লোকটা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়েছে, শরীরের সব শক্তি শরীরের বাইরে ফেলে দিয়ে হাঁপাচ্ছে, বা ঘুমিয়ে পড়েছে, যখন রুখে উঠতে তার সময় লাগবে বোঝা যায় নিশ্চিত ভাবে তখনই আসল কাজটা করা হয়। তবে এত সতর্কতা সত্ত্বেও বিপদ যে হয় না তা নয়। হয় এবং প্রায়ই হয়। সেটা তোমরা দুদিনেই বুঝেছ। আর একটা ব্যাপার হয়েই থাকে যে হয়ত লুন্ঠিত লোকটা পরে পুলিশকে মেয়েটার চেহারার বিবরণ দিয়ে তার স্কেচ আঁকিয়ে নেবে। কিন্তু একটাই শান্তি সে ততক্ষণে আমাদের গোপন ডেরায় ফিরে এসেছে। “ এক দমে কথা বলে বিনীতাদি থামল। “আরও কিছুদিন আছো নিশ্চই অনেক কিছু জানতে পারবে। কেন কোন রিস্ক আমরা নিই না , কোথায় কেন রিস্ক নেওয়া ছাড়া রাস্তা নেই, কোথায় ডাকাতি করব, আর কোথায় নিঃশব্দে শরীর কে হাতিয়ার করে কার্যসিদ্ধি করব সেটা পরিস্থিতি আর সময়ের ওপর নির্ভর করে। “ ও আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কথাগুলো বলে চলেছিল।

ও যখন কথা বলছিল তখন আমার খেয়াল হয়েছে যে দু তিনটে মেয়ে এখান থেকে যদিও তারা কারা সেটা বোঝার কোনও উপায় নেই, তবুও বুঝতে পারলাম যে তারা এক একটা ছেলের ঘরে গিয়ে ঢুকে পড়েছে। বুঝলাম আজ রাতে এরা নিজেরা নিজেদের শারীরিক মিলনের সাথী হিসেবে বেছে নিয়েছে। রাজুর ঘরেও একজন ঢুকেছে। কে জানি না। “ রাজুর ঘরে এখন মায়া আছে। এখানে দু তিনটে মায়া আছে। জানি না তোমরা এই মায়া কে চেন কি না। এসো।“ ও উঠে পড়ল। আমরা সোজা এগিয়ে গেলাম রাজুর ঘরের দিকে। আসন্ন কি হবে বুঝতে না পেরে আমার কানটা গরম হয়ে উঠেছিল। দরজা বন্ধ। জানলা খোলা। রাজু উপরে ওর মেয়েটা নিচে। মেয়েটার কাপড় বিছানার ওপর এলিয়ে পড়ে আছে। রাজুর ঘামে ভেজা কালচে পাছার শক্ত মাংসপিণ্ডগুলো বার বার ওঠা নামা করছে দুটো ফর্সাটে পায়ের মাঝে। দুজনের ঊরুসন্ধি বার বার এক হচ্ছে আবার আলাদা হয়ে যাচ্ছে একে অপরের থেকে। “তোদের আর কতক্ষণ?” ওরা নিজেদের মধ্যে মগ্ন ছিল। কিন্তু জানলা দিয়ে বিনীতাদির গলা পেয়ে রাজু মৈথুন থামিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে জানলার দিকে তাকাল। ওর মুখে কিন্তু লজ্জা বা ভয়ের কোনও চিহ্ন নেই। রাজুর ঘামে ভেজা কাঁধের পাশ থেকে বেড়িয়ে এল একটা পরিচিত মুখ। আরে এ তো সেই মায়া। যে সবার আগে কাল ভোর বেলায় নিজের অতীত নিয়ে শুনিয়েছিল। ও কাকুতি ভরা স্বরে বলল “আমার প্রায় হয়ে এসেছে দিদি।“ বিনীতাদি বলল “ঠিক আছে। রাজু, তোমাদের হয়ে গেলে তুমি একটু জল খেয়ে শান্ত হয়ে নিও। আমি আসব একটু পরে। কাল আবার আমাকে ফিল্ডে যেতে হবে। (আমাদের দিকে গলা নামিয়ে বলল) তবে এইবারেরটা পুরোপুরি ডাকাতি। অস্ত্র নিয়ে লুট করা। তোমাদের দাদাও কাল থেকে থাকবে না দু দিন (এই কথাটা অবশ্য বলল ওদের উদ্দেশ্য করে)। আমি জিনিসপত্র গুছিয়ে আসছি। মায়া তোমার হয়ে গেলে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়। রাজু তুমি একটু জিরিয়ে রেস্ট নিয়ে নাও। আমার আসতে একটু সময় লাগবে। রেস্ট নিয়ে নিলে পরে আরাম পাবে।“ কেমন স্বাভাবিক সাবলীল ভাবে কথাগুলো বলে আমাদের নিয়ে এসে দাঁড়াল আমাদের ঘরের সামনে। “কোনও ছেলেকে পছন্দ হলে তোমরাও তার সাথে গিয়ে থাকতে পারো। কোনও বাঁধা নেই। তবে তোমাদের যেমন পছন্দ হয়েছে ছেলেটাকে, তেমনি ওই ছেলেটারও তোমার সাথে মিলিত হওয়ার ইচ্ছে থাকা চাই, সেটা যেন মনে থাকে।“ ও চলেই যাচ্ছিল, কিন্তু থেমে গেল অদিতির কথা শুনে “ কাল না হয় বুঝলাম দাদা ছিল না আর তোমার মন বা শরীর চাইছিল কাউকে, আর তাই তুমি রাজুর সাথে করলে। কিন্তু আজ তো দাদা আছে।“ বিনীতাদি আগের মতই সহজ ভাবে বলল “ তোমাদের দোষ দেওয়া যায় না। তোমরা যা দেখেছ যা শিখেছ সেই মতনই ভাবছ। বিয়ে ব্যাপারটাকে তোমরা, মানে তোমাদের সমাজ তোমাদের শারীরিক মিলনের ছাড়পত্র হিসেবে শিখিয়েছে। যেমন কোনও মেয়ে বা ছেলেকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক ভাবে ভোগ করা উচিত নয়, ঠিক তেমনই সমাজ কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েকে মিলনের ইচ্ছে হলে আটকাতে পারে না। বিয়ে তো একটা মানসিক বন্ধন যার একটা ভিত হল শারীরিক সম্পর্ক। কিন্তু বিয়ে হয়ে যাওয়া মানে এই নয় যে আমার যদি অন্য কারোর জন্য শারীরিক মিলনের ইচ্ছে আসে তো আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসি না। এটা ছেলেদের ক্ষেত্রেও সত্যি। বিয়ে মানে কারোর শরীর কারোর বাঁধা দাসী বা গোলাম হতে পারে না। যাকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি তাকে আমি মানসিক পুষ্টি যোগাব। তার সমস্ত আপ ডাউন, তার সমস্ত সংগ্রামে আমি বন্ধুর মতন তাকে প্রান দিয়ে আগলে রাখব। কিন্তু আমি যে অন্য কারোর কাছ থেকে শারীরিক ভাবে সুখ নিতে পারি না সেটা কেন হবে? তোমার প্রশ্নের এক কথার উত্তর হল। আমি অরূপকে প্রানের থেকেও বেশী ভালোবাসি। তবে আমার চাহিদা যখন তুঙ্গে থাকে তখন রাজু বা অমল (একে আমরা চিনি না) ওর থেকে বেশী আমার চাহিদা মেটাতে পারে। আর এতে কোনও রাখা ঢাকা নেই। অরূপ সব জানে। আর এটাও সত্যি, স্ত্রী হিসাবে আমি পোষা দাসী নই আর ও আমাকে কোনও দিন কিছু জোর করেনি। আর সেটাই আমার ভালোবাসা। ও যদি আমার থেকে কোনও দিন জৈবিক চাহিদা মেটাতে চায় আর আমার শরীর আর মনের অবস্থা যদি ভালো থাকে তো নিশ্চই মিলিত হব ওর সাথে। ওর সব চাহিদা মেটাতে নিজেকে উজাড় করে দেব। আর তাছাড়াও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রেম ভালোবাসার মুহূর্ত তো হিসাব করে আসে না। যখন সেই মুহূর্ত আসে আমি আর ও মিলিত হই। খুব বাজে শোনাবে তোমাদের কানে। কিন্তু এটা সত্যি কথা, আজ তোমাদের দাদা খুব ব্যস্ত কালকের ব্যাপার নিয়ে। কিন্তু ও যদি ব্যস্ত নাও থাকত আর যদি ওর মন আমাকে আজ কাছে পেতে চাইত, তাহলেও আমি প্রথমে ওর চাহিদা পূরণ করতাম, আমার সব কিছু ঢেলে দিতাম ওর বুকে। কিন্তু তারপর আমি আসতাম আমার চাহিদা পূরণ করতে, আসতাম মানে আসতামই। খিদে তো রোজ একই হয় না। খিদে কম থাকলে, অন্য দিন হলে হয়ত রাজুর কাছে আসতামই না। ওর সাথে মিলনের পরই ওরই কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তাম। কিন্তু মাঝে মাঝে দু একদিন ঠিক হয় না সব কিছু। তোমরা গিয়ে শুয়ে পড়ো। “ আমি বললাম “আসলে আমাদের সকালে সবার সাথে ওই মাঠে গিয়ে করা আর স্নান করাটা ঠিক... মানে... “ ও হেঁসে বলল “ বেশ বেশ। সেটা প্রথম প্রথম হতেই পারে। তো এখন যাবে? এখানে যদিও সাপ খোপ দেখিনি কোনও দিনও। কিন্তু তবুও একটা মোমবাতি নিয়ে যেও। “ অদ্ভুত , ওরা ভীষণ কনফিডেন্ট যে আমরা পালাতে পারব না। কে জানে হয়ত কোথাও থেকে আমাদের ওপর নজরও রাখা হচ্ছে।

আমাদের পাশের ঘর থেকে মায়ার গলার স্বর মাত্রা ছাড়িয়েছে অনেকক্ষণ। বিনীতাদির অবশ্য এদিকে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। ও চলে গেল। এরপর কিছুক্ষণ পর হয়ত বিনীতাদির গলার আওয়াজ পাব ওই ঘর থেকে। আমরা টেবিল থেকে মোমবাতি উঠিয়ে নিয়ে চললাম মাঠের দিকে। এ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি। প্রাইভেসি আর আব্রুর পুরো খুলি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে একটা কথা বলে রাখি। একটা ছেলের ঘর থেকে দেখলাম একটা মেয়ে বেড়িয়ে এলো। আমাদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চিনতে পারলাম। রাকা। রাকার ফিগার ভালো, কিন্তু চেহারা একটু কর্কশ মার্কা। ও ও বুঝল যে আমরাও বুঝেছি যে ও কোথা থেকে কি করে আসছে। মোমবাতির আলোয় খুব স্পষ্ট না হলেও শাড়ির সামনে ঊরুসন্ধির জায়গায় যেন একটা ভেজা ভাব খেয়াল করলাম। বুঝলাম যৌন মিলনের পর শারীরিক রসে ভিজে যাওয়া যৌন কেশ থেকে শাড়িটা ভিজে গেছে। ও গুড নাইট জানিয়ে চলে গেল। অবশ্য এত রাতে কোথায় যাচ্ছি সেটা জিজ্ঞেস করতে ভুলল না। অদিতি একই কথা শোনালো। ও হেঁসে চলে গেল। আমি আর অদিতি পাশাপাশি মাঠের ওপর এক মগ করে জল নিয়ে বসেছি সকালের কাজ রাত্রে সারবার তাগিদে। দুজনেই চুপ। অদিতির আমার আগেই হয়ে গেল। ও ধুয়ে উঠে কল পাড়ের দিকে চলে গেল। মাথার ওপর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। অদিতি এক বালতি জল ভরে স্নান শুরু করেছে। আমিও মোমবাতিটা পাশে রেখে দিয়ে শাড়িটা খুলে মগ দিয়ে মাথায় জল ঢালা শুরু করলাম। চারপাশে কেউ নেই দেখে অদিতিও আজ পুরো পুরি নগ্ন হয়ে স্নান করছে। আমার সামনে ওর আর কোনও লজ্জা নেই। আমারও যেমন নেই ওর সামনে। স্নান সেরে নগ্ন ভাবেই দৌড়ে আমাদের ঘরে ফিরে এলাম। ওই শাড়িটা দিয়েই গা মুছে অন্য শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে নিলাম। আমাদের ভিতরে আসার জন্যই বোধহয় অপেক্ষা হচ্ছিল। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। আমরা মোমবাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম। আমরা যখন স্নান করছিলাম মায়া বোধহয় তখনই কোনও এক সময় বেড়িয়ে গেছে। আমাদের দুজনের চোখেই ঘুম নেই। আমরা নিঃশব্দে মটকা মেরে পড়ে আছি। অনেকক্ষণ পরে দেখলাম এত বৃষ্টি মাথায় করে বিনীতাদি এসে হাজির হয়েছে রাজুর ঘরে। আমি একটা হু মতন শব্দ করলাম খুব আস্তে। অদিতি হু মতন একটা শব্দ করে আমার দিকে ফিরে আমাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ওর বা পা টা আমার পেটের ওপর উঠিয়ে দিয়ে চুপ হয়ে গেল। আমি কি ওর কোল বালিশ নাকি? ঘুম ভাঙল ভোর সাড়ে পাঁচটায়। আজ সময় জানি। কারণ বাইরে দেখলাম কিছু নিয়ে ভীষণ তোড়জোর শুরু হয়েছে। কে একজন চেঁচাতে বলতে বলতে গেলো যে ট্রেনের টাইম হয়ে যাবে কিন্তু তাড়াতাড়ি করো। সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে। কাল আমরা বিনীতাদির শীৎকার শুনি নি, তাই ওই নিয়ে কথা বলব না।

এখন এত তোড়জোড়ের মধ্যে বাইরে না বেরোলে খারাপ দেখাবে। তাই আমরা শাড়ি ঠিক করে ঘুম চোখে বাইরে এলাম। অরূপদার কুটীরের সামনে প্রায় সবাই এসে জমা হয়েছে। আমরা এমনিতেই এক ঘরে হয়ে আছি। এর মধ্যে নাক গলানোর কোনও মানেই হয় না। একটা লোককে দেখে একটু ঘাবড়ে গেলাম। রাকা কে দেখে ওর কাছে গিয়ে গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “দিদি ও কে? ওকে তো কাল দেখিনি। ও কি ফিল্ডে ছিল?” রাকা হাত তালি দিয়ে চেঁচিয়ে উঠল। “দাদা তোমার ছদ্মবেশ সফল। এরা তোমাকে দেখে চিনতেই পারে নি। “ ও অরূপদা। বিনীতাদিকে দেখলাম শার্ট প্যান্ট পরে রেডি। আরতি কে দেখলাম নতুন বউ সেজে রেডি। ওদের সবার স্নান হয়ে গেছে সেটা ওদের চুল দেখলে বোঝা যায়। আলি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল অরূপদাকে, কিন্তু ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল “না । তুমি এখানেই থাকবে। বেস একেবারে খালি করার মানে নেই। “ আরতি, মিনতি, বিনীতাদি আর আরও আট নয় জন দুটো গাড়িতে চেপে বেড়িয়ে গেল। রাজু, আলি এরা সবাই রয়ে গেল। অরূপদা একটু পরে আলির সাথে বেড়িয়ে গেল। যাওয়ার আগে সবাইকে বলে দিয়ে গেল “রাকা, রুমি আর অদিতি এরা এখন তোমাদের গার্ডিয়ান। আর রুমি আর অদিতির কিছু দরকার হলে আলিকে বলবে, রাকা কে বলবে বা রাজু কে বলবে। অবশ্য এখানে যারা আছে এরা সবাই তোমাদের ভাই বোনের মতন, যাকে ইচ্ছে বলতে পারো। তবে একটা অনুরোধ আছে তোমাদের দুজনের কাছে। আজ কিছু জিনিসের ডেলিভারি আছে। যদি তোমরা কাগজ পত্র গুলো একটু বুঝে শুনে তোমাদের মতন করেই লিখে রাখো তো ফিরে আসার পর আমার হিসাব করে প্ল্যান করতে সুবিধা হবে। না বলবে না প্লীজ। ডাক্তার দের অফিস ওয়ার্ক দিচ্ছি, কিন্তু দু এক দিন একটু ম্যানেজ করে নিও।“ আলি কে বলল “ওরা চাইলে আমার অফিসে গিয়ে বসতে পারে। (আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল) ওখানে অনেক বই আছে। বসে বসে পড়লে সময় কেটে যাবে। ডেলিভারির সময় তুমিও থেকো (এটা আবার আলির উদ্দেশ্যে বলা)। ওদের সাহায্যের দরকার পড়তে পারে। আচ্ছা তাহলে আসি রাকা? (সবার দিকে হাত তুলে বলল) আসি হ্যাঁ? ” একটা গাড়ি এসেছে কয়েক মিনিট হল। ও উঠে বেড়িয়ে চলে গেল। ওর সাথে অবশ্য আলিও গেল ওকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে আসতে। আমি রাকা কে বললাম “রাকা দি, কিসের ডেলিভারি গো?” রাকা এসে বলল “আমি ডেলিভারি বুঝি না গো ভালো। তবে সব কিছুর কাঁচা রসিদ থাকে। দেখো, নিশ্চই বুঝতে পারবে। আমি রেডি হই গিয়ে। আমাদের আবার শুরু করতে হবে। তবে আজকের দিনটা আমাদের জন্য খুব বড় দিন। জানি না কি হবে। সব মহারথীরাই আজ যুদ্ধে গেছে। আর যাকে বলে একেবারে সামনা সামনি যুদ্ধ।“ আমি আর অদিতি আমাদের ঘরে ফিরে এলাম। আমরা তখনও জানতাম না যে আমাদের জন্যও এটা খুব খুব বড় দিন হতে চলেছে। একটু গুছিয়ে সে কথা লিখতে হবে।

আমরা ব্রাশ করার পর চায়ের গ্লাস (আজ কাপ নয় আমাদের জন্য গ্লাস, তবে স্টিলের) হাতে নিয়ে আমাদের ওষুধের আড়তে গেলাম। বাপরে বাপ এত ওষুধ এক দিনে। দু একটা মেয়ে এসেছিল সামান্য পেট খারাপ, অ্যালার্জি, র*্যাশ ইত্যাদি নিয়ে টুকিটাকি বলতে। এখানে প্রেস্ক্রিপ্সান লেখার কোনও মানে নেই। ওষুধ দিয়ে বিদায় করলাম। ততক্ষণে আলি ফিরে এসেছে। আমাদের সাথে দেখা করে বলে গেছে যে ইচ্ছে করলে আমরা অরূপদার ঘরে গিয়ে বসে বই পড়তে পারি। অদিতিটা পারেও বটে। একেও খোঁচা দিয়ে বলল “ এখন একটু এখানে কাজ করে নি। আর তোমাদের চিফ তো বলেই গেছে আমরা পুরো ক্যাম্পে যেখানে সেখানে যেতে পারি আর সব কিছু দেখতে পারি।“ আলি জিভ কেটে বলল “আমি তো না বলি নি। শুধু বলেছি, অফিসে গিয়েও বসতে পারো তোমরা।“ বুঝলাম ওর অদিতির প্রতি কোনও আকর্ষণ নেই, বা হাতে সময় নেই। প্রায় দৌড়ে বেড়িয়ে গেল। অদিতি আজ দৌড়াতে যায় নি। কিন্তু কোথা থেকে আরেক গ্লাস চা জোগাড় করে শুঁকনো রুটি আর কলা হাতে নিয়ে মাঠের মাঝে গিয়ে দাঁড়িয়ে মেয়েদের ট্রেনিং দেখছিল। আমি এই সুযোগে সুজাতার কাছে গিয়ে ড্রেসিংটা সেরে নিলাম। তারপর সীমার ড্রেসিং করে অদিতির পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। ও আমাকে ফিসফিস করে বলল “জানিস অনেক গুলো খটকা। ছেলেরা একা একা থাকে। মেয়েরা থাকে দোকলা। প্রাইভেসি? ছেলেগুলো কে মেল বেশ্যাদের মতন ব্যবহার করছে। “ আমি বললাম “এদের চোখে অনিচ্ছায় কোনও কাজ না করানো হলে কোনও দোষ নেই। কি দরকার এই সব ঝামেলার মধ্যে পড়ে। এদের প্রশ্ন করে লাভ নেই। উত্তর রেডি থাকে এদের। আমি শুধু মনে মনে প্রার্থনা করি যেন আমার আর তোর মতন দুটো গরু কোথাও থেকে এরা পেয়ে যায়। আর যত শিগগির সম্ভব পেয়ে যায়।“ ও গলা নামিয়ে বলল “জয় মা। যেন তাই হয়।“ আমরা হাঁটতে হাঁটতে নিজেদের অজান্তেই এগিয়ে চললাম অরূপদার ঘরের দিকে। দু দিন যাবত বৃষ্টি হওয়ায় মাটি পুরো কাঁদায় ভর্তি। যারা ট্রেনিং করছে তাদের পায়ে শস্তা কেডস আছে। কিন্তু আমাদের খালি পা। তাই যতই কাদা বাঁচিয়ে চলি না কেন, পা কাদায় ভরে গেছে। ঘরের সামনে গিয়ে পা শুঁকিয়ে কাদা মাখা মাটিগুলোকে বাইরে ঝেড়ে ফেলে ঘরে ঢুকলাম। আগের দু দিন খেয়াল করি নি, আজ দেখলাম স্বামীজির একটা ছবি রাখা অনেক উপরে। আর তার সামনে একটা ধুপ জ্বলছে, যদিও সেটা আয়ু প্রায় শেষ, ছাইগুলো মেঝেতে পড়ে একটা পাতলা বাদামি স্তূপের সৃষ্টি করেছে। আমরা দুজনেই ছবিটাকে প্রনাম করলাম মাথায় হাত ঠেকিয়ে। এই ভদ্রলোকের ক্যাপা ছিল সেটা এই ভূভারতের কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। অদিতি বসল বিছানায়। আমি গিয়ে বসলাম অরূপদার চেয়ারে। হঠাত দেখলাম ঘরের মধ্যে এসে হাজির হয়েছে সেই প্রথম দিনের রমা। আমি আর অদিতি দুজনেই উঠে দাঁড়াতে যাচ্ছিলাম কিন্তু ও বলল “বসো বসো। “ আমি ওকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই বললাম “এই যে ম্যাডাম। সেদিন কিডন্যাপ করার পর থেকে তো পুরো গায়েব। একবার খোঁজও নিতে আসোনি আমার।“ ও বলল “ আমি শুধু অর্ডার মেনে কাজ করেছি। এখন আপাতত জানতে এসেছি যে তোমরা কি পেটি খাও না গাঁদা খাও। না কি মাছের মাথা খাও?” আমাদের মুখে বিস্ময় দেখে বলল “ ওই যে অরূপদা বলে গেল না যে ডেলিভারি আসবে। আজ রুই আসছে। তাই আগে ভাবে জিজ্ঞেস করে গেলাম। রাকা দি জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছে। “ ওর ব্যবহার সত্যিই সাবলীল। আমরা দুজনেই এক সাথে বলে উঠলাম “পেটি।“ তিন জনেরই হাঁসি এসে গেল। ও যেমন দৌড়াতে দৌড়াতে এসেছিল, ঠিক একই ভাবে সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গার মাংসে তরঙ্গ উঠিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে গায়েব হয়ে গেল।
[+] 2 users Like ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গোপন কথা টি রবে না গোপনে ( পর্দাফাঁস ) by Daily Passenger - by ronylol - 18-02-2020, 10:16 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)