Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
বিপ্লব পোদ্দার- ব্যাংকার অফ দ্যা ইয়ার- complete
#55
জুলি হয়ত কল্পনাও করতে পারেনি একটা ছাপোষা কেরানীর মধ্যে এতো নিষ্ঠুর একটা জানোয়ার লুকিয়ে থাকতে পারে বলে। বিদ্যুতের বেগে জুলির লাস্যময়ী শরীরটা দুহাতে তুলে ধরে দেওয়ালে পিষে দিলাম। লাল চিকনের সাড়ি আর সাদা সায়াটা কোমরের কাছে গুটিয়ে দিয়ে এক টানে লাল প্যানটিটা টেনে হাঁটুর কাছে নামিয়ে দিলাম। জুলির শরীরটা থরথর করে কাঁপছে। আমার ছেলেটাও কাঁপছিল, ঠিক এরকমভাবেই। গাঁড় ফেটে গেছিল আমার। বাবাই এর হেঁচকিগুলো আমি প্রতি মুহূর্তে অনুভব করি। চোখের সামনে একটু একটু করে বাবাইকে মরতে দেখেছিলাম। সেই একি ভয়, জুলির দুচোখে। ‘জুলি, তুমি তো এক্সপেরিমেন্ট কর! নতুন নতুন যৌন আচরন তুমি উদ্ভাবন কর। এই মুহূর্তে তোমার বাজার দর কত জুলি?’ প্যান্টের জিপ আমি এখনো খুলিনি, শুধুই ঠোঁটদুটো জুলির কানের কাছে নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম। ‘আমায় ছেড়ে দাও বিপ্লব, আমায় ছেড়ে দাও, আমি তোমায় টাকা দেবো, যত চাইবে ততই দেবো’। ‘তোমার বাজার দর কত জুলি?’ এতো জোরে যে আমি চিৎকার করব তা হয়ত জুলি কেন ওই ৪ টে জানোয়ারও বুঝতে পারেনি। জুলির শরীরটা খানিকটা বাবাইএর শেষ নিঃশ্বাস ফেলার সময়ের মত করেই নড়ে উঠল। মুহূর্তের মধ্যে আমার সম্পূর্ণ যৌনাঙ্গটা জুলির পায়ুছিদ্রে প্রবেশ করিয়ে দিলাম। ‘বিপ্লব, আমি মরে যাবো। বিপ্লব টাকা, কত টাকা চাও তুমি’। যন্ত্রণায় কাতর সেই লোভী পশুটার মুখ থেকে অজান্তে যে শব্দটা বেরিয়ে এলো তা হোল ‘টাকা’। প্রচণ্ড জোরে জোরে নিজের যৌনাঙ্গটা ওর পায়ুছিদ্রে ঢুকিয়ে বার করে নিচ্ছি, জুলির মুখ দিয়ে কয়েকটা কাতর শব্দ বেরিয়ে আসছে, তার মধ্যে একটাই আমার কানে প্রবেশ করছে তা হোল ‘টাকা’। সামান্য কোন যৌন উত্তেজনা আমার শরীরে নেই, শুধু চাই এই পশুটাকে জবাই করতে। কষ্ট দিয়ে দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে। জুলির আর্তনাদ ছাপিয়ে ভেসে আসছে মেসোমশাই এর সেই আর্তনাদ। ‘বিপ্লব, তোমার ছেলে মরবে, এর চেয়েও বেশী কষ্ট পেয়ে মরবে’। যন্ত্রণায় চোখদুটো বুজে নিলাম। চোখের সামনে ভেসে এলো সেই দিনগুলো।
রমা ছিল বাপের বাড়িতে। সম্ভবত আমাদের বিয়ের পর ওটা ওর তৃতীয় বার বাপের বাড়ি যাওয়া। রমার ফোন এলো আমার কাছে। ‘বিপ্লব, রঞ্জনদা আমায় সব বলেছে। মেসোমশাই এর মেয়ের বিয়ে আমরা দেবো। তুমি তো চাকরি কর, বিপ্লব। পারবেনা সারাদিন খেটে টাকাটা জোগাড় করতে! বিপ্লব মেনে নাও। আমার মনে হয়না আমি ১০ লাখ টাকা জোগাড় করতে পারবো বলে’। সেদিন রমার কথার কোন উত্তর আমার কাছে ছিলনা। রঞ্জন এসেছিল আমার বাড়িতে। পাশের ঘরে বসে পেপার পড়ছিল। একবার উঁকি মেরে আমার দিকে তাকাল। আমি কি করব, কোথায় যাবো কাকে বলব জানিনা। এসএসকেএম এ এক রুগী ভর্তি। কিডনি খারাপ হয়ে গেছে। বহু গোপনে কন্টাক্ট করেছিলাম। ব্লাড গ্রুপ মিলে গেছিল। ঠিক ছিল আজই বিকেলে গিয়ে নিজের একটা কিডনি বিক্রি করে দেবো। হথাত সকালে জানতে পারলাম সেই ভদ্রলোক মারা গেছে। এবং তার সাথে সাথে আমারও ১০ লাখ টাকার উৎসটাও হারিয়ে গেলো। কি করে টাকা জোগাড় করব? ডাক্তার বলেছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাবাইকে নার্সিংহোমে অ্যাডমিট করতে হবে। পুরো ১০ লাখ টাকাটাই অ্যাডভান্স লাগবে। পেপারে সাহায্য চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম একমাস আগে, কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। ছেলেটাকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পারিয়ে রেখেছিলাম তবুও বিছানায় ছটপট করে চলেছে।
‘বিপ্লব ঘরে আছো নাকি?’ গলাটা শুনে প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো। এই একজনই মানুষ আমি পেয়েছিলাম গোটা পৃথিবীতে যে আমায় প্রতি মুহূর্তে অনুপ্রানিত করেন। আমার বাড়ি মালিক, রবিউল হক। ৭২ সাল থেকে জেলে বন্দী, ছাড়া পান ৭৭ এ। ততদিনে কলকাতা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপনার চাকরি গেছে, উচ্চ মধ্যবিত্ত জীবন থেকে নিম্নবিত্তে উত্তরন ঘটেছে, ছেলে মেয়ের ক্যারিয়ার গেছে, সংসারে সুখ উড়ে গেছে, তবুও লোকটা কি নির্বিকার। একটা আদর্শকে পুজি করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ‘হ্যাঁ মেসোমশাই ভেতরে আসুন’। রোগা পটকা সদা হাস্যমান লোকটির প্রথম প্রশ্নটিও আমার জানা আছে। ‘পাভেলের শরীর কেমন আছে’। ‘পাভেল’ সেই ম্যাক্সিম গোর্কির ‘পাভেল’। বাবাইকে উনি পাভেল বলে ডাকতেন। ওনার মতে বাবাই একদিন পাভেল হয়ে যাবে, শ্রেনী সংগ্রামের যুদ্ধে নিজেকে সঁপে দেবে। আমার মুখ দিয়ে কোন উত্তর বেরোল না। আমার কাঁধে দুটো হাত রেখে সেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ভঙ্গীতে বলে উঠলেন ‘ফাইট বিপ্লব ফাইট’। চোখদুটো ছলছল করছিল, গলাটা জড়িয়ে এসেছিল। কোনরকমে উত্তর দিলাম ‘কার সাথে লড়ব মেসোমশাই?’ দেখলাম উনিও কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন। বহুকষ্টে বাঁ হাতটা দিয়ে চেয়ারটা টেনে বসলেন। ‘বিপ্লব, আমাদের এই আইডিওলজির চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ জীবন। ছেলেকে বাঁচাতে যদি ডাকাতিও করতে হয় তাই কর’ আমি চমকে উঠলাম। একি বলছেন মেসোমশাই, যে মানুষটা আজীবন আদর্শের জয়গান দিয়ে নিজের জীবনটা নষ্ট করে দিলেন তিনিই এই কথা!
‘জানি তুমি অবাক হয়ে গেলে বিপ্লব! দুখানা মেয়ের জন্ম দিয়েছিল তোমার মাসীমা, তারপর আসে ছেলে। তোমার মাসিমা অল্পঅল্প করে টাকা জমিয়ে রাখতেন। আমি বাধা দিতাম। বলতাম ওরা দুজন আমার সন্তান, ওদের কি আমি বিক্রি করব যে তুমি টাকা জমিয়ে রাখছ। পন দিয়ে মেয়ের বিয়ে আমি দেবনা, আমি বদ্ধমূল ছিলাম বিপ্লব। আমি হেরে গেছি বিপ্লব। ছেলেটা দিনরাত কথা শোনায় ‘বাবা, তোমার জন্যই আমি ট্যাক্সিচালক হয়েছি’ পাড়া প্রতিবেশী কথা শোনায় ‘মেয়েরা কি অবিবাহিতই থেকে যাবে!’ আজ দুটো মেয়েরই বিয়ে ঠিক করে এলাম, বলতে পারো বিক্রি করে এলাম। দুপক্ষকে নগদ আড়াই লাখ করে দিতে হবে। মন মানছিল না। কিন্তু এবারও বিয়েটা ভেঙে গেলে তোমার মাসীমা সত্যিই ওদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে। বিপ্লব আর পারছিলাম না সহ্য করতে! নিজের আদর্শকে বেচে দিলাম’ মাথা নীচু করে বসে ছিলাম আমি। ‘কিন্তু বিপ্লব আমি কি ভুল! নিজের সন্তানকে বাঁচানোর জন্যই হয়ত আমি এতোবড় একটা আদর্শচ্যুতি ঘটালাম। বিপ্লব তোমার কাছে তো ‘দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন’ ‘ইস্পাত’ আর ‘মাদার’ তিনটে বইই আছে। একবার আমায় দিতে পারো। আবার পড়ি নতুন করে’ ‘মেসোমশাই আপনি কোন ভুল করেননি’ মুখ দিয়ে শুধু এই কথাটাই বেরিয়েছিল। আমার পিঠটা নিজের প্রায় অকেজো হয়ে যাওয়া ডান হাতটা দিয়ে চাপড়ে দিয়ে বললেন ‘তুমিও পারবে বিপ্লব। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো’ আমি শুধু মাথাটা নীচু করে বসে থাকলাম। ‘তোমার এই বিপদের মধ্যেও তোমার কাছে সেই সাহায্যর জন্যে এসেছি’ আমার হুঁশটা ফিরল। ‘আপনি চিন্তা করবেন না মেসোমশাই, আমি ব্যাঙ্কে যাবো আজ’ আমার কথা শুনে উনি একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। ‘আজই ওদেরকে অগ্রীম টাকাটা দিতে হবে, তবেই বিয়ের দিন ফাইনাল হবে। আমার আকাউন্ত এ কত টাকা আছে বিপ্লব? ৫ লাখ হবে তো?’ আমি উত্তর দিলাম ‘হ্যাঁ, মেসোমশাই এই ৫ লাখের সামান্য বেশী হবে’ সঙ্গে সঙ্গে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস আর উত্তর ‘বিপ্লব, তুমি আজ ৫ লাখ টাকা তুলে এনো। ওরা আজ বিকেলেই আসবে’ আমি চুপ করে থাকলাম। ‘দেখো, বিপ্লব এই হাতটার দিকে দেখো। পুলিশের মারে কেমন অকেজো হয়ে গেছে। নিজের সইটাও করতে পারিনা। প্রতিবার তুমিই সই নকল করে টাকাটা তুলে দাও। অথচ এটাও কিন্তু অনৈতিক। কার জন্য কর? আমার জন্য। একটা অসহায় মানুষের জন্য। অর্থাৎ এটা নৈতিক’ মেসোমশাই কোনরকমে বেঁকে বেঁকে দরজার দিকে চলে গেলেন।
দেখিনি, কখন রঞ্জন উঠে চলে এসেছে। ‘কি ভাবছ বিপ্লব! আমি তো বললাম ২ ঘণ্টার মধ্যেই তোমায় ১০ লাখ জোগাড় করে দেবো’ এতদিন ছিল শুধুই ছেলের চিকিৎসার টাকা জোগাড়ের চিন্তা, এর সাথে যোগ হোল তীব্র এক পাপবোধ। সোফা থেকে নেমে সোজা রঞ্জনের দুপা জড়িয়ে ধরলাম। ‘রঞ্জনদা, এতো বড় পাপ আমি করতে পারবো না। রঞ্জনদা আপনার অনেক টাকা। আপনি যেভাবে হোক আমায় টাকাটা জোগাড় করে দিন’। ‘দেখো বিপ্লব, আমার সাধ্যের মধ্যে থাকলে আমি তোমায় ১ মাস আগেই টাকাটা দিয়ে দিতাম। আমরা ব্যবসায়ী মানুষ। আমাদের হাতে টাকা থাকেনা, আমরা টাকা বিনিয়োগ করে দি’ নিজেকে কিছুতেই সংবরন করতে পারছিলাম না। ‘এটা কেমন নিয়ম, রঞ্জনদা। তোমাকে ৫ লাখ টাকা দিলে তবেই তুমি আমায় ১০ লাখ টাকা দিতে পারবে’ ‘বিপ্লব আবেগপ্রবন হয়ে যেওনা। ১০ লাখ টাকাটা তো আর আমি একা দিচ্ছিনা। আমার একটা সামান্য শেয়ার রয়েছে এর মধ্যে। ৫ লাখ টাকা হার্ড ক্যাশ জমা দেবো আর বলব আমার ১০ লাখ দরকার অন্য এক খাতে বিনিয়োগ করার জন্য। কেন বুঝতে পারছনা বিপ্লব, টাকাটা তো আমার একার নয়, আরও ২-৩ জন আছে’ শেষ ৩-৪ দিনে আমি অন্তত এক ডজন বার রঞ্জনের পা দুটো চেপে ধরেছি, প্রতিবারই একি উত্তর।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বিপ্লব পোদ্দার- ব্যাংকার অফ দ্যা ইয়ার- complete - by samss400 - 09-02-2020, 03:18 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)