09-02-2020, 03:13 PM
কারসারটা একদম শেষে এসে থেমে গেলো। সবার শেষে পেলাম একটি আকাউন্ত, নাম সুধীররঞ্জন গুপ্তা, রেকমেনডেড বাই মনীন্দ্র বসু। আমার আর বুঝতে কোন অসুবিধেই রইলনা এটাই রঞ্জনের ফেক আকাউন্ত। ঘড়ির দিকে তাকালাম ৯ টা ১০। অর্থাৎ হাতে এখনো বেশ কিছুটা সময় রয়েছে আমার। ক্লিক করলাম, আকাউন্তটির ওপর। সাথে সাথে সম্পূর্ণ আকাউন্ত ডিটেলস আমার হাতে চলে এলো। নিউ জেনারেটেড পেজটায় আমার চোখ পড়তেই হার্ট ফেল হওয়ার উপক্রম হোল। ‘নেট ব্যালেন্স ৮০ লাখ’। আকাউন্ত ডিটেলসটা একবার মিলিয়ে দেখার জন্য ক্লিক করলাম। হ্যাঁ, যা ভেবেছি ঠিক তাই। জালী পাসপোর্ট দিয়ে ফেক আকাউন্ত। এটা রঞ্জনের ই ফেক আকাউন্ত। শালা, মানুষ দুবেলা খাবার পেতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছে আর এরা খোলাম কুচির মত কালোটাকা নিয়ে ফুর্তি করছে। হথাত মোবাইলটা বেজে উঠল। সবার আগে সিস্টেমটা বন্ধ করলাম। কারন এটাকে খুলে রাখা উচিত নয়। ফোনটা রিসিভ করতে যাবো দেখি তার আগেই ফোনটা কেটে গেলো। এইসময় কে ফোন করল? কল লিস্ট হাতড়ে বুঝলাম চিন্ময় ফোন করেছে। চিন্ময়? কিন্তু কেন? সঙ্গে সঙ্গে ফোনটা লাগিয়ে দিলাম। রিং হয়েই গেলো কিন্তু চিনু ফোনটা রিসিভ করলনা। আমার উদ্বেগ হুহু করে বাড়তে শুরু করল। চিনু আমায় কি জানাতে চায়। মধুকর ভিলায় যে আসলে চিনুই আমাদের দুজনকে বার করেছে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আমি আবার কল করতে যাচ্ছি এমন সময় দেখি চিনুর ই ফোন চলে এলো।
‘বিপ্লবদা আপনি কোথায়? আমি আপনাকে এক্ষুনি একটা ম্যাসেজ করেছি চেক করুন। ওই ম্যাসেজটার মধ্যে অনেককিছু রয়েছে। বিপ্লবদা আমি কিছুক্ষন পরে ফোন করছি। আমি বিশাল বিপদে’ আমি কিছু বলার আগেই চিনু ফোনটা কেটে দিলো। নতুন এক রহস্য। ফোনটা ভালো করে চেক করলাম, না কোন ম্যাসেজ আসেনি। আসলে অফিসের মধ্যে নেটওয়ার্কের এতো প্রবলেম যে ম্যাসেজ খুব কষ্টে ইনবক্সে ঢোকে। কিন্তু এটা বেশ ভালো মতই বুঝতে পারছিলাম যে এই ম্যাসেজটা অত্যন্ত জরুরি। যদি এক্ষুনি পাঠিয়ে থাকে, অফিসের বাইরে গেলে ম্যাসেজটা রিসিভ করার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। আমি প্রায় রুদ্ধশ্বাসে দৌড়ে অফিসের বাইরে চলে গেলাম। হাতে মোবাইলটা নিয়ে অপেক্ষা করছি, এমনসময় ম্যাসেজ রিং টোন টা বেজে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে ইনবক্স ওপেন করলাম।
‘Ranjan100isshan’ ‘25thmagh’
এ এক অদ্ভুত ম্যাসেজ। এতটুকু বুঝলাম যে বলতে চাইছে রঞ্জন ই হোল শান। সেটা আমি গতরাতে মধুকর ভিলাতেই জেনে গেছিলাম। আর ২৫ শে মাঘ আমার ছেলের মৃত্যুদিন। এই দুটোর মধ্যে কি সম্পর্ক? একমাত্র চিনুই আমায় ভালো করে বুঝিয়ে সব বলতে পারে। সুতরাং আবার চিনুকেই ফোন লাগালাম। ওপাশ থেকে ‘হ্যালো, হ্যালো, হ্যালো বিপ্লবদা শুনতে পাচ্ছেন? হ্যালো হ্যালো’ এই কথাটাই ভেসে আসছে। আমি যত বলছি ‘হ্যাঁ চিনু আমি সব শুনতে পাচ্ছি’ ততই একি কথা ওপাশ থেকে ভেসে আসছে। বেশ কিছুক্ষন এরকম চলার পর চিনু বলে উঠল ‘বিপ্লবদা, আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিনা। আমি এই মুহূর্তে গাড়িতে। আপনি কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এগিয়ে আসতে শুরু করুন। আমার পেছনে লোক লেগেছে। মনে হয় বাঁচব না। আর হ্যাঁ, বিজয়দাকে...’ হথাত লাইনটা কেটে গেলো। শালা কোনা এক্সপ্রেসওয়ে কি পাড়ার গলি, যে চিনুকে তুড়ি মেরে খুঁজে বার করব। তবুও আমায় যেতেই হত। স্কুটারটায় স্টার্ট মারলাম।
যতটা স্পীডে এই স্কুটারটা চালানো যায় ঠিক ততটাই স্পীডে চালাচ্ছিলাম। একটু সকাল সকাল হওয়ায় সেভাবে ট্রাফিকের প্রবলেম ও হয়নি। বাধ সাধল রবীন্দ্র সদনের কাছে এসে। বিশাল একটা জ্যাম। কিছুই করার নেই, স্টার্টটা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লাম। হথাত ই চোখে পড়ল বেশ কিছুটা দূরে একটা পুলিশের জিপ। কলকাতার রাস্তায় পুলিশের জিপ থাকাটা অস্বাভিক কিছু নয়। কিন্তু আমার মনে কিছু জটিল সমীকরন কিলবিল করে চলেছে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম ওইদিকে। হথাত ই জটিল বহুঘাত সমীকরনের সমাধান হয়ে গেলো। গাড়ির ভেতর থেকে নেমে এলো বিজয়দা। হেঁটে কিছুটা গিয়ে ট্রাফিক পুলিশকে কিছুটা ধমকের স্বরে কিছু বললেন। আমি চুপ করে তকিয়ে আছি ওই দিকেই। ধাতানি খেয়ে ট্রাফিক পুলিশটাও কিছুটা তাড়াহুড়ো করে গাড়িগুলোকে এগিয়ে যেতে নির্দেশ দিলো। তাহলে কি বিজয়দাই?
অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই ট্রাফিক ক্লিয়ার হয়ে গেলো। আমিও প্রচণ্ড বেগে স্কুটারটা ছোটাতে শুরু করলাম। কিন্তু পুলিশের জিপের সাথে কি আমার মধ্যবিত্ত স্কুটার পারে। কিছুক্ষনের মধ্যেই বিজয়দার জীপটা আমার নজরের বাইরে চলে গেলো। মনে মনে সঙ্কল্প করলাম যেভাবে হোক আমি চিনুকে বাঁচাবো। ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। আবার একটা জ্যাম। আশেপাশে ভালো করে লক্ষ্য করলাম। না পুলিশের জীপটা আর দেখা যাচ্ছেনা। হতাশা ক্রমশ আমাকে গ্রাস করে চলেছে। তাহলে কি আমি সত্যিই চিনুকে বাঁচাতে পারবো না। কিছুক্ষনের মধ্যেই ট্রাফিক ক্লিয়ার হয়ে গেলো ও আমি সোজা চলতে লাগলাম। এরপর রাস্তাটা সোজা হাইওয়েতে উঠেছে, আর সেরকম জ্যামে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কখন যে দ্বিতীয় হুগলী সেতু পেরিয়ে গেছি খেয়াল করিনি।
কিছুটা দূরে একটা লাল গাড়ি দাঁড়িয়ে। চিনুর গাড়িটা আমি চিনি, এটা চিনুরই গাড়ি। আরও কিছুটা আগে যেতে বুঝলাম তার ঠিক পেছনে পুলিশের জিপও দাঁড়িয়ে। আমি একদম গাড়িটার পাশে এসে দাঁড়ালাম। ভেতরে দুটো মৃতদেহ। একটা চিনুর একটা চিনুর ড্রাইভারের। পেছনে জিপের ওপর হেলান দিয়ে বিজয়দা কাউকে ফোন করছেন, সম্ভবত থানা থেকে লোক পাঠানোর জন্য। আমাকে দেখে ফোনটা একটু কান থেকে নামিয়ে বলে উঠলেন ‘একি বিপ্লব বাবু আপনি এখানে?’ এর উত্তর দেওয়ার কোন ইচ্ছে আমার ছিলনা। শুধু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হোল ‘আপনি এখানে কি করে?’ কিন্তু পারলাম না। আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে বিজয়দা আবার ফোনে কথা বলতে শুরু করলেন। ‘হ্যাঁ, একটা এ্যাম্বুলেন্স আর ৪ জন পাঠাও’ ফোনটা রেখে আমায় বললেন ‘প্রচুর চেষ্টা করলাম কিন্তু বেচারাকে বাঁচাতে পারলাম না’। আমার মুখ দিয়ে একটাও শব্দ বেরোল না। মাথার মধ্যে একটাই চিন্তা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাহলে কি বিজয়দাই?
‘বিপ্লবদা আপনি কোথায়? আমি আপনাকে এক্ষুনি একটা ম্যাসেজ করেছি চেক করুন। ওই ম্যাসেজটার মধ্যে অনেককিছু রয়েছে। বিপ্লবদা আমি কিছুক্ষন পরে ফোন করছি। আমি বিশাল বিপদে’ আমি কিছু বলার আগেই চিনু ফোনটা কেটে দিলো। নতুন এক রহস্য। ফোনটা ভালো করে চেক করলাম, না কোন ম্যাসেজ আসেনি। আসলে অফিসের মধ্যে নেটওয়ার্কের এতো প্রবলেম যে ম্যাসেজ খুব কষ্টে ইনবক্সে ঢোকে। কিন্তু এটা বেশ ভালো মতই বুঝতে পারছিলাম যে এই ম্যাসেজটা অত্যন্ত জরুরি। যদি এক্ষুনি পাঠিয়ে থাকে, অফিসের বাইরে গেলে ম্যাসেজটা রিসিভ করার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। আমি প্রায় রুদ্ধশ্বাসে দৌড়ে অফিসের বাইরে চলে গেলাম। হাতে মোবাইলটা নিয়ে অপেক্ষা করছি, এমনসময় ম্যাসেজ রিং টোন টা বেজে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে ইনবক্স ওপেন করলাম।
‘Ranjan100isshan’ ‘25thmagh’
এ এক অদ্ভুত ম্যাসেজ। এতটুকু বুঝলাম যে বলতে চাইছে রঞ্জন ই হোল শান। সেটা আমি গতরাতে মধুকর ভিলাতেই জেনে গেছিলাম। আর ২৫ শে মাঘ আমার ছেলের মৃত্যুদিন। এই দুটোর মধ্যে কি সম্পর্ক? একমাত্র চিনুই আমায় ভালো করে বুঝিয়ে সব বলতে পারে। সুতরাং আবার চিনুকেই ফোন লাগালাম। ওপাশ থেকে ‘হ্যালো, হ্যালো, হ্যালো বিপ্লবদা শুনতে পাচ্ছেন? হ্যালো হ্যালো’ এই কথাটাই ভেসে আসছে। আমি যত বলছি ‘হ্যাঁ চিনু আমি সব শুনতে পাচ্ছি’ ততই একি কথা ওপাশ থেকে ভেসে আসছে। বেশ কিছুক্ষন এরকম চলার পর চিনু বলে উঠল ‘বিপ্লবদা, আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিনা। আমি এই মুহূর্তে গাড়িতে। আপনি কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এগিয়ে আসতে শুরু করুন। আমার পেছনে লোক লেগেছে। মনে হয় বাঁচব না। আর হ্যাঁ, বিজয়দাকে...’ হথাত লাইনটা কেটে গেলো। শালা কোনা এক্সপ্রেসওয়ে কি পাড়ার গলি, যে চিনুকে তুড়ি মেরে খুঁজে বার করব। তবুও আমায় যেতেই হত। স্কুটারটায় স্টার্ট মারলাম।
যতটা স্পীডে এই স্কুটারটা চালানো যায় ঠিক ততটাই স্পীডে চালাচ্ছিলাম। একটু সকাল সকাল হওয়ায় সেভাবে ট্রাফিকের প্রবলেম ও হয়নি। বাধ সাধল রবীন্দ্র সদনের কাছে এসে। বিশাল একটা জ্যাম। কিছুই করার নেই, স্টার্টটা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লাম। হথাত ই চোখে পড়ল বেশ কিছুটা দূরে একটা পুলিশের জিপ। কলকাতার রাস্তায় পুলিশের জিপ থাকাটা অস্বাভিক কিছু নয়। কিন্তু আমার মনে কিছু জটিল সমীকরন কিলবিল করে চলেছে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম ওইদিকে। হথাত ই জটিল বহুঘাত সমীকরনের সমাধান হয়ে গেলো। গাড়ির ভেতর থেকে নেমে এলো বিজয়দা। হেঁটে কিছুটা গিয়ে ট্রাফিক পুলিশকে কিছুটা ধমকের স্বরে কিছু বললেন। আমি চুপ করে তকিয়ে আছি ওই দিকেই। ধাতানি খেয়ে ট্রাফিক পুলিশটাও কিছুটা তাড়াহুড়ো করে গাড়িগুলোকে এগিয়ে যেতে নির্দেশ দিলো। তাহলে কি বিজয়দাই?
অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই ট্রাফিক ক্লিয়ার হয়ে গেলো। আমিও প্রচণ্ড বেগে স্কুটারটা ছোটাতে শুরু করলাম। কিন্তু পুলিশের জিপের সাথে কি আমার মধ্যবিত্ত স্কুটার পারে। কিছুক্ষনের মধ্যেই বিজয়দার জীপটা আমার নজরের বাইরে চলে গেলো। মনে মনে সঙ্কল্প করলাম যেভাবে হোক আমি চিনুকে বাঁচাবো। ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। আবার একটা জ্যাম। আশেপাশে ভালো করে লক্ষ্য করলাম। না পুলিশের জীপটা আর দেখা যাচ্ছেনা। হতাশা ক্রমশ আমাকে গ্রাস করে চলেছে। তাহলে কি আমি সত্যিই চিনুকে বাঁচাতে পারবো না। কিছুক্ষনের মধ্যেই ট্রাফিক ক্লিয়ার হয়ে গেলো ও আমি সোজা চলতে লাগলাম। এরপর রাস্তাটা সোজা হাইওয়েতে উঠেছে, আর সেরকম জ্যামে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কখন যে দ্বিতীয় হুগলী সেতু পেরিয়ে গেছি খেয়াল করিনি।
কিছুটা দূরে একটা লাল গাড়ি দাঁড়িয়ে। চিনুর গাড়িটা আমি চিনি, এটা চিনুরই গাড়ি। আরও কিছুটা আগে যেতে বুঝলাম তার ঠিক পেছনে পুলিশের জিপও দাঁড়িয়ে। আমি একদম গাড়িটার পাশে এসে দাঁড়ালাম। ভেতরে দুটো মৃতদেহ। একটা চিনুর একটা চিনুর ড্রাইভারের। পেছনে জিপের ওপর হেলান দিয়ে বিজয়দা কাউকে ফোন করছেন, সম্ভবত থানা থেকে লোক পাঠানোর জন্য। আমাকে দেখে ফোনটা একটু কান থেকে নামিয়ে বলে উঠলেন ‘একি বিপ্লব বাবু আপনি এখানে?’ এর উত্তর দেওয়ার কোন ইচ্ছে আমার ছিলনা। শুধু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হোল ‘আপনি এখানে কি করে?’ কিন্তু পারলাম না। আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে বিজয়দা আবার ফোনে কথা বলতে শুরু করলেন। ‘হ্যাঁ, একটা এ্যাম্বুলেন্স আর ৪ জন পাঠাও’ ফোনটা রেখে আমায় বললেন ‘প্রচুর চেষ্টা করলাম কিন্তু বেচারাকে বাঁচাতে পারলাম না’। আমার মুখ দিয়ে একটাও শব্দ বেরোল না। মাথার মধ্যে একটাই চিন্তা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাহলে কি বিজয়দাই?