Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
বিপ্লব পোদ্দার- ব্যাংকার অফ দ্যা ইয়ার- complete
#44
‘অন্তত ৪ বার শরীরের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে গাড়িটা চলে গেছে। মাথাটা প্রায় থেঁতলে গেছে। বিকৃত একটা শরীর। আশেপাশে কোন পার্সোনাল কার ও লক্ষ্য করিনি। অতএব কেউ একজন রঞ্জনকে গাড়ি চাপিয়ে দ্বিতীয় হুগলী সেতুতে নিয়ে এসেছে এবং ওখানেই গাড়ি থেকে নামিয়ে খুন করেছে’ বিজয়দার মুখ থেকে এই কথাটা শুনে আমার মাথাটা বোঁ বোঁ করে ঘুরতে শুরু করল। ‘বিপ্লব বাবু আমি নিশ্চিত যে এই খুনের পেছনে কাজ করছে এক চরম প্রতিশোধের স্পৃহা। এই দ্বিতীয় হুগলী সেতুর ওপরই কোন না কোন ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই কারনেই তার পাণ্ডাদেরকে এক এক করে এখানে এনে মেরে ফেলা হচ্ছে। খুনটা যেই করুক তাকে আমি ঠিক ধরবই। কারন আইনের চোখকে কেউ...’ বিজয়দা কথাটা শেষ করলেন না, কথাটা বলার সময় ওনার চোখে এক চরম আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করেছিলাম অথচ সেই আত্মবিশ্বাসই হথাত এক চরম যৌন লালসার আগুনে পরিনত হোল। আমি একদৃষ্টিতে বিজয়দার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি, কোন এক দুর্মূল্য বস্তুর লোভে ওনার চোখদুটো চকচক করে চলেছে। শ্বাস প্রশ্বাস, হ্রিদস্পন্দন সবই কেমন অস্বাভাবিকরকম হয়ে গেছে। আমি পেছন ঘুরে দেখি তো আমারও বিচি টোটালি আউট।
বাথরুমের দরজার কাছে শুধু একটা সাদা তোয়ালে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে রমা। যেন সম্মানটুকু ঢেকে দিতেই কোনোমতে দুহাত দিয়ে তোয়ালের মুখটা বুকের কাছে ধরে থাকা। রমার দুচোখ পাগলের মত বিজয়দাকে দেখে যাচ্ছে। যেন কিছু একটা মনে করতে চেষ্টা করছে ও। আমিও মাথাটা ঘুরিয়ে একবার বিজয়দার দিকে তাকালাম। বিজয়দার শরীরী ভাষা এখন আর শুধুই নিষিদ্ধ যৌনাচারকে প্রকাশ করছেনা তার সাথে কিছু একটা ভয়ও রয়েছে। বিজয়দাকে এর আগে আমি কখনো নার্ভাস হতে দেখিনি। আজ কেন জানিনা ওনার চোখে মুখে বিশাল একটা চিন্তার ছাপ, যেন উনি বুঝি ধরা পড়ে গেছেন কারুর হাতে। আমার আর এই দৃশ্য সহ্য হচ্ছিলনা। আমি পেছন ঘুরে রমার দিকে তাকিয়ে বললাম ‘রমা যাও তৈরি হয়ে নাও। আমাদের এক্ষুনি বেরোতে হবে’ রমা কিছুটা ঘাবড়ে গেলো, আর সাথে সাথে বেডরুমের মধ্যে ঢুকে দরজাটা লাগিয়ে দিলো। রমা ভেতরে প্রবেশ করার পর কিছুটা অন্যমনস্ক হয়েই বিজয়দা বললেন ‘শি ইস বিউটিফুল’। বিজয়দার ওপর সন্দেহ আমার ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
মুখ দিয়ে বেফাঁস কথা বেরিয়ে গেছে এটা বিজয়দা বেশ ভালোই বুঝতে পারলেন। সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সংবরন করে উনি বললেন ‘এখন বাজে সাড়ে ৬ টা। রঞ্জন বাবুর মিসেস আর ১ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা পৌঁছে যাবেন’ ওনার কথা শুনে আমার হুঁশ ফিরল। হ্যাঁ, সত্যিই তো আমিও তো মিতাকে জানাইনি। অথচ মিতাকে আমারই জানানো উচিত ছিল। এর চেয়েও অদ্ভুত যা হোল, সব জেনেও মিতা কেন আমাদের কিছু জানালো না। যতই নাকউঁচু হোক ও, এই মুহূর্তে ওর পাশে দাঁড়ানোর মত তো শুধুই আমি আর রমা। ‘আচ্ছা, বিপ্লব বাবু, মিতা দেবীর সম্বন্ধে আপনার কি মত?’ প্রশ্নটা শুনে আমি কি বলব তাই বুঝতে পারলাম না। ‘না, মানে আমি বলছি, মিতা দেবী কি কোনভাবে এইসবের সঙ্গে যুক্ত’ সত্যি বলতে মিতার ব্যাপারে আমিও কখনো ভেবে দেখিনি। এতটুকুই জানি, মিতা প্রচণ্ড অহংকারী। হয়ত নিজের স্বামী ও আপনজনের চেয়েও টাকাকেই ও বেশী ভালোবাসে। আর এরচেয়েও অদ্ভুত হোল আমার বিয়ের পর থেকে মিতা আমাদের বাড়িতে মাত্র ৫ বার এসেছে। তার মধ্যে ২-৩ বার বাবাই প্রচণ্ড অসুস্থ এই খবর শুনে। ‘এই ব্যাপারে আমি সেরকম কিছুই জানিনা আর ভাবিওনি’ এই বলেই আমি ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম। কিন্তু গুরু মস্তিস্কে ভর হওয়া প্রদোষ মিত্তিরকে কি করে আঁটকে রাখি। এই মুহূর্তে সন্দেহের তালিকায় মোট ৩ জন চলে এলো বিজয়দা, শর্মাজী ও নবতম সংযোজন মিতা, রমার দিদি।
রমা, রেডি হয়ে আমাদের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। ওকে দেখা মাত্রই বিজয়দা টপিকটা সম্পূর্ণ চেঞ্জ করে দিলেন। যেন উনি চাননা রমা কিছুতেই এই ব্যাপারে কিছু জানুক। ‘চলুন, আমাদের এবার বেরনো উচিত। আর হ্যাঁ, মিসেস পোদ্দার, আপনি কিন্তু নিজেকে একটু সংবরন করবেন। কারন মৃতদেহের অবস্থা শোচনীয়’ হ্যাঁ, এই কথাটা বিজয়দা সত্যিই বলেছেন। রমার শরীরের যা অবস্থা তাতে সত্যিই ওকে এরকম বীভৎস একটা মৃতদেহ দেখতে না দেওয়াই উচিত। আমি তাই বিজয়দাকে বললাম ‘আচ্ছা, বিজয়দা, মিতা তো আসছেই, আমিও আছি তাহলে কি রমাকে আর নিয়ে যাওয়ার কোন দরকার আছে?’ আমার কথা শুনে বিজয়দা একবার রমার মুখের দিকে তাকালেন এবং সেই অবস্থাতেই বললেন ‘ওকে, মিসেস পোদ্দারকে যেতে হবেনা। কিন্তু আমি ওনার সাথে পার্সোনালি কয়েকটা কথা বলতে চাই। আপনি যদি একটু নীচে গিয়ে দাঁড়ান খুব ভালো হয়’ আমার চরম আপত্তি ছিল, কিন্তু একজন পুলিশ অফিসার একজন সাধারন নাগরিককে জেরা করতে চান, সত্যিই এতে আমার বাধা দেওয়ার কিছুই নেই। আমি মুখটা বিজয়দার কানের কাছে নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম ‘বিজয়দা, দেখবেন, ওর কিন্তু মানসিক অবস্থা ভালো নয়’
আমায় প্রায় অবাক করেই বিজয়দা কিছুটা জোরে হেঁসে উঠে বললেন ‘আরে ধুস, আপনি মিসেস পোদ্দারকে যতটা অসুস্থ মনে করেন উনি ততটাও নন। আপনি নীচে যান আমি আসছি’ প্রায় পিলে চমকে গিয়ে আমি রমার দিকে তাকালাম। রমার দুই চোখ যেন বারবার করে আমায় বলছে ‘বিপ্লব, এই লোকটার কাছে আমাকে একা ছেড়ে কোথাও যেওনা প্লিস’। আমি বিজয়দার চোখটার দিকেও তাকালাম। যেন এক আদিম হিংস্র পশু ওনার দুই চোখ ঠিকরে বাইরে বেরিয়ে আসছে। আমার আর কিছুই করার ছিলনা। আমি ধীরে ধীরে রুমের বাইরে বেরিয়ে গেলাম।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বিপ্লব পোদ্দার- ব্যাংকার অফ দ্যা ইয়ার- complete - by samss400 - 09-02-2020, 03:11 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)