09-02-2020, 03:00 PM
অত্যন্ত সন্তর্পণে আমি দাঁতে দাঁত চিপে আলমারির ডালা দুটোকে ফাঁক করলাম। উঁকি মারার মত একটু ফাঁক হতেই আমার বিচি পুরো আউট। শালা, সুনীল গাঙ্গুলির একটা গল্পে, সম্ভবত ‘কলকাতার জঙ্গলে’, ঠিক এরকমই আন্ডার গ্রাউন্দ একটা ঘরের বর্ণনা ছিল। যদিও এটা আন্ডার গ্রাউন্দ ঘর নয় লোকচক্ষুর আড়ালে লুকোনো একটা ঘর, জানি এর মধ্যে হাজারো রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। দরজাটা ভালো করে ফাঁক করে ভেতরে উঁকি মারলাম। টিমটিম করে আলো জ্বলছে। দুটো খাট পাশাপাশি লাগানো আর তার ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র নোংরা জামাকাপড়। আমি পা টিপে ভেতরে প্রবেশ করলাম। দুজন মানুষের ফিসফিসানির শব্দ এলেও সামনে কোথাও তাদের দেখা যাচ্ছেনা। একিরকম ভাবে আলমারিসদৃশ দরজাটা বন্ধ করে দিলাম। তখনও একিরকমভাবে ভেসে আসছে যৌন শীৎকার। ‘ওহ নীল প্যানটিটা কখন খুলবে রে, উফ আর পারছিনা আমি’ গলাটা এতো চেনা লাগছে কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিনা। আমি ধীরে ধীরে খাটের কাছে এগিয়ে গেলাম। চ্যাঁই করে রাখা নোংরা কাপড়ের ঢিবি। এই শীৎকারগুলো না থাকলে অবশ্যই এটাকে একটা স্টোর রুম ভেবে চলে যেতাম। কিন্তু লোক দুটো কোথায়? হথাত আমার চোখ গেলো হলুদ একটা শাড়ির দিকে। এই সাড়িটা কি আমি কখনো ভুলতে পারি? ঠিক ৪ বছর আগে পুজায় আমি রমাকে কিনে দিয়েছিলাম। শেষ কয়েকমাস রঙ উঠে যাওয়ায় ঘরে পড়া সাড়ি হিসেবেই ও ব্যাবহার করত। ব্যালকনিতে শুকাতে দিয়েছিল হাওয়ায় নাকি উড়ে গেছিল আর খুঁজে পায়নি। সবকিছু কেমন রহস্যময় লাগছিল। তাহলে কি এই যে নোংরা ব্রা, প্যানটি এগুলো সব পড়ে রয়েছে এগুলো কি রমার? আর হলেও বা এখানে কি করে এলো? সবার আগে আমায় খুঁজে বার করতে হবে ওই লোকগুলোকে। ওরা কোথায়? পুরো ঘরে তো আর একটাও কোন দরজা বা জানলা দেখতে পাচ্ছিনা।
সন্তর্পণে দেওয়ালগুলোতে হাতড়াতে শুরু করলাম। খাটটা ঠিক পেরিয়ে গিয়ে দেওয়ালে পেরেক পেতে একটা কাপড় ঝোলানো। কাপড়টার ওপর হাত রাখতেই বুঝলাম এটা একটা দরজা অর্থাৎ এটা দিয়েই পাশের ঘরে যাওয়ার ব্যাবস্থা। বানচোঁদগুলো বাংলোর আড়ালে যে কি চক্র চালায় তার হদিশ না পেলে আমার খাবার হজম হবেনা। খুব সন্তর্পণে পর্দাটা সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। গা ছমছম করতে শুরু করল। পা টিপে টিপে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করলাম। মাঝে মধ্যেই দুএকটা টেবিল চেয়ার আমার পায়ে লাগছে কিন্তু অত্যন্ত ধীরে ধীরে এগোনোয় সেরকম কোন শব্দ হলনা। এতটুকু বুঝতে পারছি যে এটা বিশাল বড় একটা হল ঘর এবং লোকগুলো অন্য কোনোদিকে রয়েছে কারন ওদের ফিসফিসানিগুলো কিছুতেই আর আমার কানে আসছেনা। অথচ ঢোকার মুখে যথেষ্টই আসছিল। আর সামনে এগোতে ভয় করছিল। চুপ করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে চারপাশটা একবার দেখলাম। দূরে কোন এক ফুটো দিয়ে হাল্কা নাইট বাল্বের আলো আসছে। নিশ্চয়ই ওইদিকেই কোন দরজা বা জানলা থাকবে। আমি ধীরে ধীরে সেদিকেই এগোতে শুরু করলাম। দেওয়ালটা হাতড়াতে হাতড়াতে বুঝলাম এটা একটা দরজা ও তার ফাঁক দিয়েই আলোটা আসছে। আমি কি দরজাটা খুলবো? এই প্রশ্নটাই বারবার করে মনের মধ্যে উঁকি দিতে থাকলো। কিন্তু এই রহস্য উদ্ঘাতন করা ছাড়া আমার কাছে অন্য কোন উপায় নেই।
দরজাটা সামান্য ফাঁক করে ভেতরের দিকে উঁকি মারলাম। ভেতরের দৃশ্য দেখে তো আমার মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। অন্তত হাজার খানেক পেটি সার দিয়ে রাখা আছে। মাটিতে একটা বিছানা পাতা আর তাতে দুজন ষণ্ডামার্কা লোক ভোঁস ভোঁস করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। টেবিলটার ওপর একটা রাইফেল ও একটা নাইন এম এম পিস্তল। ভয়ে তো আমার পা কাঁপতে শুরু করে দিলো। আদৌ কি আমার ভেতরে ঢোকা উচিত? আমি কানটাকে অত্যন্ত সজাগ রাখলাম। অপেক্ষাকৃত দুর্বলভাবে হলেও দুই ব্যাক্তির সেই কামাতুর গোঙানিটা আবার আমার কানে আসতে শুরু করল। না, এই রহস্যগুলো যেভাবে হোক আমায় উদ্ঘাতন করতে হবে। ধীরে ধীরে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলাম। আমার থেকে মাত্র ৩-৪ হাত দুরেই ওই দুই ব্যাক্তি শুয়ে আছে। সামান্য কোন আওয়াজ হলেই ওদের ঘুম ভাঙবে এবং আমার পগারপাড় ঘটবে। সবার আগে যে রহস্যটার সমাধান করতে হবে তা হল ওই পেটিগুলোতে কি রয়েছে। আমার দুচোখ ওই দুই ব্যাক্তির দিকে এবং হাতটা ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে শুরু করল পেটিগুলোর দিকে। কপাল ভালো ছিল হাতের সামনের পেটিটাই সিল করা ছিলনা। হাতটা ভেতরে ঢুকতেই আমার নাগালের মধ্যে একটা পলিথিনের সিল করা প্যাকেট এলো। ধীরে ধীরে সেটাকে আমি বাইরে বার করে আনলাম। হাতে নিয়ে ভালো করে দেখতে তো আমি অবাক। খানিকটা ব্যাঙের ছাতার মত দেখতে একটা ছত্রাক। কিছুই মাথায় ঢুকল না। আরেকটা অদ্ভুত জিনিষ, এই ঘরটার মধ্যে ঢুকতেই আগের সেই কামাতুর গোঙানিটা আবার স্পষ্টভাবে আমার কানে আসতে শুরু করল। ভালো করে পুরো ঘরটা লক্ষ্য করতে লাগলাম। ঠিক উল্টো দিকের দেওয়ালে একটা জানালা আর তার ফাঁক দিয়ে বাইরেটা কিছুটা দেখা যাচ্ছে। রমাকে খুঁজতে যখন বাইরে বেরিয়েছিলাম এরকমই একটা সুপুরি গাছ বাগানে দেখেছিলাম। ভালো করে দিকগুলো ভাবার পর বুঝতে পারলাম এটা আমাদের উল্টো দিকের যে রুমটা আছে তারই পেছনে। অর্থাৎ আমাদের রুম ও উল্টো দিকের রুমটার কানেকশন হচ্ছে এই লুকোনো ঘরগুলো। কিন্তু আওয়াজটা কোথা থেকে আসছে?
ডান দিকে তাকালাম আবার এক জায়গায় ওই একিভাবে একটা কাপড় টাঙ্গানো। নিশ্চয়ই এর ভেতরেই রয়েছে আরও একটা রুম। ভয় লাগছিল, পা দুটো এক জায়গাতেই আঁটকে রয়েছিল। বাই চান্স যদি ধরা পড়ে যাই তাহলে সত্যি প্রান হাতে এখান থেকে বেরনো সম্ভব হবেনা। তবুও, হাত দুটো মাথার ওপর করে একবার প্রদোষ মিত্তিরকে স্মরন করে গুটিগুটি পায়ে পৌঁছে গেলাম ওই পর্দা লাগানো দরজার কাছে। আসতে করে পর্দাটা একবার সরিয়ে ভেতরে উঁকি মারতেই মাথা খারাপ হয়ে গেলো।
না আমি কোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নই; কোন আর্কিটেক্ট ও নই। কিন্তু সম্পূর্ণ বাংলোর ডিজাইনটা কোন আর্কিটেক্ট বা ইঞ্জিনিয়ার নয় যেকোনো সাধারন মানুশকেই মুগ্ধ করবে। বাংলোর বাইরে থেকে এমনকি ভেতর থেকেও এটা বোঝা প্রায় অসম্ভব যে বাংলোর দুটো রুমের মধ্যে সংযোগ রয়েছে, যদিও দুটো রুম পরস্পরের বিপরীতে। সংযোগ শুধুমাত্র একটা জায়গায় তা হল বাথরুম এর দেওয়ালে। দুটো রুমেরই বাথরুমের একটা কমন দেওয়াল রয়েছে। না, দেওয়াল বললে ভুল হবে রয়েছে একটা কাঁচের পার্টিশন। আর বাকি দুটো কাঁচের পার্টিশন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে লম্বা একটা দেওয়াল তৈরি করেছে। এই মুহূর্তে আমি যেন কোন ব্লু ফিল্ম এর স্টুডিও তে। এই রুমটার একটা দেওয়াল অর্থাৎ ঠিক আমার সোজাসুজি দেওয়ালটি অন্য কিছুই নয় পরপর দুটি রুমের বাথরুমের ওআল। বাথরুমে ঢোকার পর একবারও মনে হয়নি যে কাঁচটা সি থ্রু। অর্থাৎ বাথরুম থেকে পেছনের রুমটা দেখা অসম্ভব, কিন্তু পেছনের রুমটা থেকে দুটো বাথরুমই সম্পূর্ণ দেখা সম্ভব। ভয়ে আমার দুটো পা থর থর করে কাঁপছে। আমার ঠিক পেছনেই দুটো ষণ্ডমার্কা লোক ঘুমাচ্ছে তাদের হাতের একটু পাশেই রয়েছে একটা রাইফেল ও পিস্তল। এবং আমার ঠিক সামনে দুটো লোক। তাদের মধ্যে একজন অবশ্যই শান্তনু, অপরজন কে? এই ৪ জনের মধ্যে যদি একজন এই মুহূর্তে আমায় দেখে ফেলে আমার মৃত্যু নিশ্চিত। স্বয়ং ভগবানেরও ক্ষমতা নেই আমাকে বাঁচানোর।
সামনের দৃশ্য ছিল ভয়াবহ। দুজন উলঙ্গ পুরুষ, তাদের মুখে পেছন বাঁধা এক মুখোশ। এখানে ঢুকেই আমি শান্তনুকে খুব ভালো করে লক্ষ্য করেছিলাম, তাই আমি নিশ্চিত মাঝারি হাইটের কমবয়সী ওই ছেলেটি শান্তনু। কিন্তু তার পাশের ওই মাঝবয়সী ভারিক্কি চেহারার ওই মানুষটি কে? আমি কি ওকে চিনি? হাতে সেই পরিচিত রিষ্ট ওয়াচ, কার হাতে দেখেছি কিছুতেই মনে করতে পারছিনা। ঠিক শিরদাঁড়া বরাবর একটা কালো লম্বা দাগ। না এরকম কোন দাগের কথা আমি জানিওনা এবং রমার ডায়েরিতেও পড়িনি। কে ও? ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বারবার বলছে এই মানুষটি আমার অতি পরিচিত। বিজয়দা বলেছিলেন মধুকর ভিলায় আমি আমার অতি পরিচিত একজনকে খুঁজে পাবো। তাহলে কি এই সেই ব্যক্তি নাকি অন্য কেউ। আবার একবার পেছন ঘুরে দেখলাম; না লোকদুটো এখনো আগের মতই একিভাবে ঘুমিয়ে আছে। আরেকটা রহস্য আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই দুটো লোক মুখোশ কেন পড়ে আছে? ওরা কি জানে যে আমি ওদের ফলো করে এখানে আসবো? নাকি এর পেছনেও রয়েছে অন্য কোন রহস্য। তবে এতো রহস্য ভীতি সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে ওদের মাদকীয় যৌন আচরন। ভারতের মত রক্ষনশীল দেশেও কি এইসব হয়?
বহুবার আমার সামনেই বহু মানুষ রমার শরীরে নিজের চোখ সেঁকে নিয়েছে। কখনো ঝুঁকে পড়ার ফলে বেরিয়ে আসা দুধের অংশ কখনো সুদৃশ্য ক্লিভেজ আবার কখনো শাড়ির ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসা কারুকার্য করা নাভী অন্যকে স্বর্গসুখ দিয়েছে। আমারই সামনে রঞ্জন রমাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখেছে। অস্বীকার করবো না প্রতিটা ক্ষেত্রেই নিজের সজ্ঞানে অথবা অজান্তে আমিও চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েছি, অন্যের চোখ দিয়ে নিজের স্ত্রীর শরীরসুধা পান করতে চেয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তের দৃশ্য সমস্ত ইরটিসিসমকে হার মানিয়েছে। আমার বারবার করে মনে হচ্ছে ওদের ই পাশে দাঁড়িয়ে রমার সৌন্দর্য কে ওদের মত করে উপভোগ করতে। আমার গবেট বউটা বাথরুমের মধ্যে সম্পূর্ণ উলঙ্গ, ও জানেওনা সামনের দেওয়ালটা দেওয়াল নয় একটা সিনেমার পর্দা, যেখানে ওর শরীরের প্রতিটা গোপন অংশের কারুকার্য সুনিপুনভাবে ফুটে উঠছে।
সন্তর্পণে দেওয়ালগুলোতে হাতড়াতে শুরু করলাম। খাটটা ঠিক পেরিয়ে গিয়ে দেওয়ালে পেরেক পেতে একটা কাপড় ঝোলানো। কাপড়টার ওপর হাত রাখতেই বুঝলাম এটা একটা দরজা অর্থাৎ এটা দিয়েই পাশের ঘরে যাওয়ার ব্যাবস্থা। বানচোঁদগুলো বাংলোর আড়ালে যে কি চক্র চালায় তার হদিশ না পেলে আমার খাবার হজম হবেনা। খুব সন্তর্পণে পর্দাটা সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। গা ছমছম করতে শুরু করল। পা টিপে টিপে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করলাম। মাঝে মধ্যেই দুএকটা টেবিল চেয়ার আমার পায়ে লাগছে কিন্তু অত্যন্ত ধীরে ধীরে এগোনোয় সেরকম কোন শব্দ হলনা। এতটুকু বুঝতে পারছি যে এটা বিশাল বড় একটা হল ঘর এবং লোকগুলো অন্য কোনোদিকে রয়েছে কারন ওদের ফিসফিসানিগুলো কিছুতেই আর আমার কানে আসছেনা। অথচ ঢোকার মুখে যথেষ্টই আসছিল। আর সামনে এগোতে ভয় করছিল। চুপ করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে চারপাশটা একবার দেখলাম। দূরে কোন এক ফুটো দিয়ে হাল্কা নাইট বাল্বের আলো আসছে। নিশ্চয়ই ওইদিকেই কোন দরজা বা জানলা থাকবে। আমি ধীরে ধীরে সেদিকেই এগোতে শুরু করলাম। দেওয়ালটা হাতড়াতে হাতড়াতে বুঝলাম এটা একটা দরজা ও তার ফাঁক দিয়েই আলোটা আসছে। আমি কি দরজাটা খুলবো? এই প্রশ্নটাই বারবার করে মনের মধ্যে উঁকি দিতে থাকলো। কিন্তু এই রহস্য উদ্ঘাতন করা ছাড়া আমার কাছে অন্য কোন উপায় নেই।
দরজাটা সামান্য ফাঁক করে ভেতরের দিকে উঁকি মারলাম। ভেতরের দৃশ্য দেখে তো আমার মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। অন্তত হাজার খানেক পেটি সার দিয়ে রাখা আছে। মাটিতে একটা বিছানা পাতা আর তাতে দুজন ষণ্ডামার্কা লোক ভোঁস ভোঁস করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। টেবিলটার ওপর একটা রাইফেল ও একটা নাইন এম এম পিস্তল। ভয়ে তো আমার পা কাঁপতে শুরু করে দিলো। আদৌ কি আমার ভেতরে ঢোকা উচিত? আমি কানটাকে অত্যন্ত সজাগ রাখলাম। অপেক্ষাকৃত দুর্বলভাবে হলেও দুই ব্যাক্তির সেই কামাতুর গোঙানিটা আবার আমার কানে আসতে শুরু করল। না, এই রহস্যগুলো যেভাবে হোক আমায় উদ্ঘাতন করতে হবে। ধীরে ধীরে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলাম। আমার থেকে মাত্র ৩-৪ হাত দুরেই ওই দুই ব্যাক্তি শুয়ে আছে। সামান্য কোন আওয়াজ হলেই ওদের ঘুম ভাঙবে এবং আমার পগারপাড় ঘটবে। সবার আগে যে রহস্যটার সমাধান করতে হবে তা হল ওই পেটিগুলোতে কি রয়েছে। আমার দুচোখ ওই দুই ব্যাক্তির দিকে এবং হাতটা ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে শুরু করল পেটিগুলোর দিকে। কপাল ভালো ছিল হাতের সামনের পেটিটাই সিল করা ছিলনা। হাতটা ভেতরে ঢুকতেই আমার নাগালের মধ্যে একটা পলিথিনের সিল করা প্যাকেট এলো। ধীরে ধীরে সেটাকে আমি বাইরে বার করে আনলাম। হাতে নিয়ে ভালো করে দেখতে তো আমি অবাক। খানিকটা ব্যাঙের ছাতার মত দেখতে একটা ছত্রাক। কিছুই মাথায় ঢুকল না। আরেকটা অদ্ভুত জিনিষ, এই ঘরটার মধ্যে ঢুকতেই আগের সেই কামাতুর গোঙানিটা আবার স্পষ্টভাবে আমার কানে আসতে শুরু করল। ভালো করে পুরো ঘরটা লক্ষ্য করতে লাগলাম। ঠিক উল্টো দিকের দেওয়ালে একটা জানালা আর তার ফাঁক দিয়ে বাইরেটা কিছুটা দেখা যাচ্ছে। রমাকে খুঁজতে যখন বাইরে বেরিয়েছিলাম এরকমই একটা সুপুরি গাছ বাগানে দেখেছিলাম। ভালো করে দিকগুলো ভাবার পর বুঝতে পারলাম এটা আমাদের উল্টো দিকের যে রুমটা আছে তারই পেছনে। অর্থাৎ আমাদের রুম ও উল্টো দিকের রুমটার কানেকশন হচ্ছে এই লুকোনো ঘরগুলো। কিন্তু আওয়াজটা কোথা থেকে আসছে?
ডান দিকে তাকালাম আবার এক জায়গায় ওই একিভাবে একটা কাপড় টাঙ্গানো। নিশ্চয়ই এর ভেতরেই রয়েছে আরও একটা রুম। ভয় লাগছিল, পা দুটো এক জায়গাতেই আঁটকে রয়েছিল। বাই চান্স যদি ধরা পড়ে যাই তাহলে সত্যি প্রান হাতে এখান থেকে বেরনো সম্ভব হবেনা। তবুও, হাত দুটো মাথার ওপর করে একবার প্রদোষ মিত্তিরকে স্মরন করে গুটিগুটি পায়ে পৌঁছে গেলাম ওই পর্দা লাগানো দরজার কাছে। আসতে করে পর্দাটা একবার সরিয়ে ভেতরে উঁকি মারতেই মাথা খারাপ হয়ে গেলো।
না আমি কোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নই; কোন আর্কিটেক্ট ও নই। কিন্তু সম্পূর্ণ বাংলোর ডিজাইনটা কোন আর্কিটেক্ট বা ইঞ্জিনিয়ার নয় যেকোনো সাধারন মানুশকেই মুগ্ধ করবে। বাংলোর বাইরে থেকে এমনকি ভেতর থেকেও এটা বোঝা প্রায় অসম্ভব যে বাংলোর দুটো রুমের মধ্যে সংযোগ রয়েছে, যদিও দুটো রুম পরস্পরের বিপরীতে। সংযোগ শুধুমাত্র একটা জায়গায় তা হল বাথরুম এর দেওয়ালে। দুটো রুমেরই বাথরুমের একটা কমন দেওয়াল রয়েছে। না, দেওয়াল বললে ভুল হবে রয়েছে একটা কাঁচের পার্টিশন। আর বাকি দুটো কাঁচের পার্টিশন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে লম্বা একটা দেওয়াল তৈরি করেছে। এই মুহূর্তে আমি যেন কোন ব্লু ফিল্ম এর স্টুডিও তে। এই রুমটার একটা দেওয়াল অর্থাৎ ঠিক আমার সোজাসুজি দেওয়ালটি অন্য কিছুই নয় পরপর দুটি রুমের বাথরুমের ওআল। বাথরুমে ঢোকার পর একবারও মনে হয়নি যে কাঁচটা সি থ্রু। অর্থাৎ বাথরুম থেকে পেছনের রুমটা দেখা অসম্ভব, কিন্তু পেছনের রুমটা থেকে দুটো বাথরুমই সম্পূর্ণ দেখা সম্ভব। ভয়ে আমার দুটো পা থর থর করে কাঁপছে। আমার ঠিক পেছনেই দুটো ষণ্ডমার্কা লোক ঘুমাচ্ছে তাদের হাতের একটু পাশেই রয়েছে একটা রাইফেল ও পিস্তল। এবং আমার ঠিক সামনে দুটো লোক। তাদের মধ্যে একজন অবশ্যই শান্তনু, অপরজন কে? এই ৪ জনের মধ্যে যদি একজন এই মুহূর্তে আমায় দেখে ফেলে আমার মৃত্যু নিশ্চিত। স্বয়ং ভগবানেরও ক্ষমতা নেই আমাকে বাঁচানোর।
সামনের দৃশ্য ছিল ভয়াবহ। দুজন উলঙ্গ পুরুষ, তাদের মুখে পেছন বাঁধা এক মুখোশ। এখানে ঢুকেই আমি শান্তনুকে খুব ভালো করে লক্ষ্য করেছিলাম, তাই আমি নিশ্চিত মাঝারি হাইটের কমবয়সী ওই ছেলেটি শান্তনু। কিন্তু তার পাশের ওই মাঝবয়সী ভারিক্কি চেহারার ওই মানুষটি কে? আমি কি ওকে চিনি? হাতে সেই পরিচিত রিষ্ট ওয়াচ, কার হাতে দেখেছি কিছুতেই মনে করতে পারছিনা। ঠিক শিরদাঁড়া বরাবর একটা কালো লম্বা দাগ। না এরকম কোন দাগের কথা আমি জানিওনা এবং রমার ডায়েরিতেও পড়িনি। কে ও? ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বারবার বলছে এই মানুষটি আমার অতি পরিচিত। বিজয়দা বলেছিলেন মধুকর ভিলায় আমি আমার অতি পরিচিত একজনকে খুঁজে পাবো। তাহলে কি এই সেই ব্যক্তি নাকি অন্য কেউ। আবার একবার পেছন ঘুরে দেখলাম; না লোকদুটো এখনো আগের মতই একিভাবে ঘুমিয়ে আছে। আরেকটা রহস্য আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই দুটো লোক মুখোশ কেন পড়ে আছে? ওরা কি জানে যে আমি ওদের ফলো করে এখানে আসবো? নাকি এর পেছনেও রয়েছে অন্য কোন রহস্য। তবে এতো রহস্য ভীতি সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে ওদের মাদকীয় যৌন আচরন। ভারতের মত রক্ষনশীল দেশেও কি এইসব হয়?
বহুবার আমার সামনেই বহু মানুষ রমার শরীরে নিজের চোখ সেঁকে নিয়েছে। কখনো ঝুঁকে পড়ার ফলে বেরিয়ে আসা দুধের অংশ কখনো সুদৃশ্য ক্লিভেজ আবার কখনো শাড়ির ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসা কারুকার্য করা নাভী অন্যকে স্বর্গসুখ দিয়েছে। আমারই সামনে রঞ্জন রমাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখেছে। অস্বীকার করবো না প্রতিটা ক্ষেত্রেই নিজের সজ্ঞানে অথবা অজান্তে আমিও চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েছি, অন্যের চোখ দিয়ে নিজের স্ত্রীর শরীরসুধা পান করতে চেয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তের দৃশ্য সমস্ত ইরটিসিসমকে হার মানিয়েছে। আমার বারবার করে মনে হচ্ছে ওদের ই পাশে দাঁড়িয়ে রমার সৌন্দর্য কে ওদের মত করে উপভোগ করতে। আমার গবেট বউটা বাথরুমের মধ্যে সম্পূর্ণ উলঙ্গ, ও জানেওনা সামনের দেওয়ালটা দেওয়াল নয় একটা সিনেমার পর্দা, যেখানে ওর শরীরের প্রতিটা গোপন অংশের কারুকার্য সুনিপুনভাবে ফুটে উঠছে।