09-02-2020, 02:36 PM
৯
ঘরে ঢোকার মুখে রঞ্জনের ফোনটা আবার বেজে উঠল। আমি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। ওর প্রতিটা কথা আর যদি সম্ভব হয়, ফোনের অপর প্রান্তের কথাগুলো শোনা আমার পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।
‘আজকেই! আরে একদুদিন ও রেস্ট নিতে হয় মানুষকে নাকি। কালই তো পৌছালাম। কোথায়? পুনে? ধুস, ভালো লাগছেনা। আজকের দিনটা কলকাতায় কাটালে হতনা। ওকে, নো প্রবলেম। ফ্লাইটের টিকিট? ওকে তাহলে এই ৩ টে নাগাদ মিট করুন। ওকে বাই’
ফোনটা কাটার পরই রঞ্জন আমার দিকে তাকাল। ও ঠিক বুঝতে পেরেছে যে আমি ওর কথাগুলো শুনছিলাম। ‘বিপ্লব, একটা প্রিন্ট আউট নিতে হবে। আমি আজই পুনে যাবো। মনে হয় ওখান থেকেই আবার সাউথ আফ্রিকা চলে যাবো। আর ফেরা হবেনা। আশেপাশে কোথাও কি...’
এতো আমার জন্য মেঘ না চাইতেই পানি। একে অনেকদিন পর বউকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্রোগ্রাম আর তার ওপর রঞ্জনের পুনে যাওয়া। আমি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলাম ‘ফ্ল্যাটের উল্টো দিকে যে মাঠটা আছে, ওটা পার করলেই একটা দোকান পাবেন। তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান, নয়ত বন্ধ হয়ে যেতে পারে’ রঞ্জন একবার আমার মুখের দিকে তাকাল কিছু একটা ভেবে সোজা গটগট করে হাঁটতে হাঁটতে লিফট এর দিকে চলে গেলো। দরজাটা খোলাই ছিল, তাই খেয়াল করিনি, আমাদের কথাবার্তা শুনে রমা কখন দরজার কাছে এসে গেছে।
‘কি হয়েছে? রঞ্জনদা কোথায় গেলো?’ রমার মুখে উদ্বেগের আভাস। আমি সোজা ভেতরে ঢুকে সজোরে রমার দুই কাঁধকে আঁকড়ে ধরলাম, পা দিয়ে দরজায় আলতো করে একটা লাথি মেরে দরজাটা লক করে দিলাম।
‘এই নাহ, এখন নয়। রঞ্জনদা যেকোনো সময় এসে যেতে পারে। প্লিস এখন নয়’ কে শুনছে রমার আবদার। ‘রমা, আমার সোনা, জানো আমি কেন এতো আনন্দে আছি?’ রমা কিছু একটা জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিল, ও কিছু বলার আগেই আমি ওর মুখটা নিজের কাছে টেনে ওর ঠোঁটের ভেতর নিজের জিভটা একবার কোদালের মত করে চালিয়ে দিলাম। রমার মুখ দিয়ে ‘উম্মম’ বলে একটা শব্দ বেরোল। আমায় কিছুটা জোর করেই দূরে সরিয়ে রমা প্রায় চিৎকার করে উঠল ‘আগে বল, রঞ্জনদা কোথায় গেলো?’ রমার এই অদ্ভুত বিহেভে মাঝেমধ্যেই আমার মটকাটা গরম হয়ে যায়। আমিও কিছুটা শ্লেষের সুরে বললাম ‘আজকেই রঞ্জনদা চলে যাবে। ওকে পুনেতে যেতে হবে। সাইবার কাফেতে গেছে মেল থেকে প্লেনের টিকিট এর প্রিন্ট আউট বার করতে’। রমা কিছুটা উদাস হয়ে গেলো এবং কিছুক্ষন পর আমার দিকে তাকিয়ে বলল ‘রঞ্জনদা যে এতো তাড়াতাড়ি সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে, আমি ভাবতেও পারছিনা’। বুকটা কেমন ছ্যাঁত করে উঠল। রমা ঠিক আছে তো? নাকি রমা, সমস্ত রহস্যটার ব্যাপারেই অবহিত। ডায়েরীটা পড়ে আমি কিছুটা ইঙ্গিত পেয়েছিলাম। আমার মুখের অবস্থা দেখে রমা মুচকি হেঁসে বলে উঠল ‘আরে না আমি বলছি, রঞ্জনদা এইতো কালকেই এলো, আজই আমাদের ছেড়ে পুনে চলে যাবে। খুব খারাপ লাগছে। আড় কিছুদিন থাকতে পারতো!’
হ্যাঁ, আমি জানি হয়ত আগের কথাটা শুধুই একটা ভাষাগত হেরফের তবুও শেষ কদিনে আমার জীবনে যা ঘটছে দ্বৈত অর্থ ভাবাটাই খুব স্বাভাবিক। রমার কি কিছুই মনে পড়েনা। সামান্য কোনকিছুই কি মনে পড়েনা। রমাকে ছাড়া তো এই রহস্যের সমাধান আমার কাছে প্রায় অসম্ভব। যাইহোক যা হবার তা হবে, আপাতত রমাকে পটিয়ে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারটায় রাজী করাই।
‘সোনা, হানিমুনে যাবে? কোলাঘাটে একটা দারুন গেস্ট হাউস আছে। একদম রূপনারায়ন নদীর ওপরে। কত বছর হয়ে গেলো আমরা কোথাও ঘুরতে যাইনি, চলনা প্লিস’
উদাস হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো রমা। কেন এরকম অদ্ভুত ব্যাবহার ও করছে! কি এতো ভাবছে রমা? প্রায় মিনিট দুয়েক পরে রমা জবাব দিলো ‘কোলাঘাট? গেস্ট হাউসটার নাম কি?’ আমি অবাক হয়ে গেলাম ওর কথায়? তবে ভালো এটাই যে, যখন ও একবার আগ্রহ দেখিয়েছে, নিশ্চয়ই ওরও মনে ইচ্ছে রয়েছে ঘুরতে যাওয়ার। কিন্তু মুশকিল হোল, গেস্ট হাউসের নামটা তো আমারও জানা নেই। আমি কিছুটা মৃদুস্বরে রমাকে বললাম ‘এই রে গেস্ট হাউসের নামটা তো আমার জানা নেই’ রমা নিরুত্তাপের মত ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকলো। বেশকিছুক্ষন পর জবাব দিলো ‘তুমি তো স্নান করনি। স্নান করে নাও। আমার রান্না হয়ে গেছে। রঞ্জনদা আসুক, তোমাদের একসাথেই খেতে দিয়ে দেবো’ কথাটা শেষ করেই রমা ভেতরের ঘরের দিকে যেতে শুরু করল।
ঘরে ঢোকার মুখে রঞ্জনের ফোনটা আবার বেজে উঠল। আমি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। ওর প্রতিটা কথা আর যদি সম্ভব হয়, ফোনের অপর প্রান্তের কথাগুলো শোনা আমার পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।
‘আজকেই! আরে একদুদিন ও রেস্ট নিতে হয় মানুষকে নাকি। কালই তো পৌছালাম। কোথায়? পুনে? ধুস, ভালো লাগছেনা। আজকের দিনটা কলকাতায় কাটালে হতনা। ওকে, নো প্রবলেম। ফ্লাইটের টিকিট? ওকে তাহলে এই ৩ টে নাগাদ মিট করুন। ওকে বাই’
ফোনটা কাটার পরই রঞ্জন আমার দিকে তাকাল। ও ঠিক বুঝতে পেরেছে যে আমি ওর কথাগুলো শুনছিলাম। ‘বিপ্লব, একটা প্রিন্ট আউট নিতে হবে। আমি আজই পুনে যাবো। মনে হয় ওখান থেকেই আবার সাউথ আফ্রিকা চলে যাবো। আর ফেরা হবেনা। আশেপাশে কোথাও কি...’
এতো আমার জন্য মেঘ না চাইতেই পানি। একে অনেকদিন পর বউকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্রোগ্রাম আর তার ওপর রঞ্জনের পুনে যাওয়া। আমি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলাম ‘ফ্ল্যাটের উল্টো দিকে যে মাঠটা আছে, ওটা পার করলেই একটা দোকান পাবেন। তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান, নয়ত বন্ধ হয়ে যেতে পারে’ রঞ্জন একবার আমার মুখের দিকে তাকাল কিছু একটা ভেবে সোজা গটগট করে হাঁটতে হাঁটতে লিফট এর দিকে চলে গেলো। দরজাটা খোলাই ছিল, তাই খেয়াল করিনি, আমাদের কথাবার্তা শুনে রমা কখন দরজার কাছে এসে গেছে।
‘কি হয়েছে? রঞ্জনদা কোথায় গেলো?’ রমার মুখে উদ্বেগের আভাস। আমি সোজা ভেতরে ঢুকে সজোরে রমার দুই কাঁধকে আঁকড়ে ধরলাম, পা দিয়ে দরজায় আলতো করে একটা লাথি মেরে দরজাটা লক করে দিলাম।
‘এই নাহ, এখন নয়। রঞ্জনদা যেকোনো সময় এসে যেতে পারে। প্লিস এখন নয়’ কে শুনছে রমার আবদার। ‘রমা, আমার সোনা, জানো আমি কেন এতো আনন্দে আছি?’ রমা কিছু একটা জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিল, ও কিছু বলার আগেই আমি ওর মুখটা নিজের কাছে টেনে ওর ঠোঁটের ভেতর নিজের জিভটা একবার কোদালের মত করে চালিয়ে দিলাম। রমার মুখ দিয়ে ‘উম্মম’ বলে একটা শব্দ বেরোল। আমায় কিছুটা জোর করেই দূরে সরিয়ে রমা প্রায় চিৎকার করে উঠল ‘আগে বল, রঞ্জনদা কোথায় গেলো?’ রমার এই অদ্ভুত বিহেভে মাঝেমধ্যেই আমার মটকাটা গরম হয়ে যায়। আমিও কিছুটা শ্লেষের সুরে বললাম ‘আজকেই রঞ্জনদা চলে যাবে। ওকে পুনেতে যেতে হবে। সাইবার কাফেতে গেছে মেল থেকে প্লেনের টিকিট এর প্রিন্ট আউট বার করতে’। রমা কিছুটা উদাস হয়ে গেলো এবং কিছুক্ষন পর আমার দিকে তাকিয়ে বলল ‘রঞ্জনদা যে এতো তাড়াতাড়ি সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে, আমি ভাবতেও পারছিনা’। বুকটা কেমন ছ্যাঁত করে উঠল। রমা ঠিক আছে তো? নাকি রমা, সমস্ত রহস্যটার ব্যাপারেই অবহিত। ডায়েরীটা পড়ে আমি কিছুটা ইঙ্গিত পেয়েছিলাম। আমার মুখের অবস্থা দেখে রমা মুচকি হেঁসে বলে উঠল ‘আরে না আমি বলছি, রঞ্জনদা এইতো কালকেই এলো, আজই আমাদের ছেড়ে পুনে চলে যাবে। খুব খারাপ লাগছে। আড় কিছুদিন থাকতে পারতো!’
হ্যাঁ, আমি জানি হয়ত আগের কথাটা শুধুই একটা ভাষাগত হেরফের তবুও শেষ কদিনে আমার জীবনে যা ঘটছে দ্বৈত অর্থ ভাবাটাই খুব স্বাভাবিক। রমার কি কিছুই মনে পড়েনা। সামান্য কোনকিছুই কি মনে পড়েনা। রমাকে ছাড়া তো এই রহস্যের সমাধান আমার কাছে প্রায় অসম্ভব। যাইহোক যা হবার তা হবে, আপাতত রমাকে পটিয়ে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারটায় রাজী করাই।
‘সোনা, হানিমুনে যাবে? কোলাঘাটে একটা দারুন গেস্ট হাউস আছে। একদম রূপনারায়ন নদীর ওপরে। কত বছর হয়ে গেলো আমরা কোথাও ঘুরতে যাইনি, চলনা প্লিস’
উদাস হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো রমা। কেন এরকম অদ্ভুত ব্যাবহার ও করছে! কি এতো ভাবছে রমা? প্রায় মিনিট দুয়েক পরে রমা জবাব দিলো ‘কোলাঘাট? গেস্ট হাউসটার নাম কি?’ আমি অবাক হয়ে গেলাম ওর কথায়? তবে ভালো এটাই যে, যখন ও একবার আগ্রহ দেখিয়েছে, নিশ্চয়ই ওরও মনে ইচ্ছে রয়েছে ঘুরতে যাওয়ার। কিন্তু মুশকিল হোল, গেস্ট হাউসের নামটা তো আমারও জানা নেই। আমি কিছুটা মৃদুস্বরে রমাকে বললাম ‘এই রে গেস্ট হাউসের নামটা তো আমার জানা নেই’ রমা নিরুত্তাপের মত ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকলো। বেশকিছুক্ষন পর জবাব দিলো ‘তুমি তো স্নান করনি। স্নান করে নাও। আমার রান্না হয়ে গেছে। রঞ্জনদা আসুক, তোমাদের একসাথেই খেতে দিয়ে দেবো’ কথাটা শেষ করেই রমা ভেতরের ঘরের দিকে যেতে শুরু করল।