29-01-2020, 12:48 PM
সন্ধ্যায় মতিন ফিরে এল৷ জমশেদ এর রাতের খাবার নাসিমা এর মধ্যেই দিয়ে দিল যাতে রাতে আর বের হতে না হয়। যুদ্ধের জন্যে কলেজ বন্ধ।তাই মতিনের তেমন কাজ নেই৷ তারও যুদ্ধে যেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু পোয়াতি বউটাকে ফেলে সে কি করে যায়? নাসিমাকে বাপের বাড়ি রেখে আসতে পারলে ভাল হত৷ কিন্তু এখন সেই সু্যোগ নেই৷ যুদ্ধ দিনে দিনে ভয়ানক আকার ধারণ করছে। আশেপাশের অনেক গ্রাম মিলিটারিরা পুড়িয়ে দিয়েছে৷ মানুষকে পাখির মত গুলি করে মারছে, মেয়েদের ইজ্জতহানি করছে৷ কিন্তু এই পশুগুলো একদিন পরাজিত হবেই মতিনের দৃঢ় বিশ্বাস। সেদিন সে আবার কলেজ চালু করবে৷ সেদিন আর পাকিস্তানি পতাকা না স্বাধীন দেশের পতাকা উড়াবে সে কলেজে৷
যুদ্ধে যেতে না পারলেও মতিন মুক্তিবাহিনীর খোঁজ-খবর নেয় প্রতিদিন। এই গ্রামের বাজারেই মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে আসে৷ এখান থেকে তাদের দায়িত্ব দিয়ে অপারেশন এ পাঠানো হয়। মিলিটারিরা এতদিন এই অঁজপাড়া গায়ে ঢুকেনি। আর সেদিন ঢুকতে চেষ্টা করেও মুক্তিবাহিনীর শক্ত প্রতিরোধে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা হয়ত আবার আসবে। গ্রামের কলেজের শিক্ষক হিসেবে মতিনকে সবাই শ্রদ্ধা করে। সবচেয়ে ভালো কথা হচ্ছে এই গ্রামে কোনো রাজাকার নেই। গ্রামের মেম্বার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে এবং তারা বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করছে৷ আজকে বাজারে একটা মিটিং হয়েছে। এ গ্রামে যাতে কোনোভাবেই মিলিটারি ঢুকতে না পারে। গ্রামের কয়েকজন যুবককে অস্ত্র চালানো শেখানো হয়েছে। মতিন তাদের মধ্যে একজন। যদিও অস্ত্র খুব কম। তবে চালানো শিখে রাখলে কাজে লাগতেও পারে। মতিনের আজ খুব ভালো লাগছে। যুদ্ধে যেতে না পেরে যে গ্লানিটুকু ছিল তা যেন একটু হলেও আজ দূর হল।
রাতে জুম বৃষ্টি শুরু হল৷ টিনের চালে জমজম শব্দ হচ্ছে। বাংলার বর্ষার বৃষ্টি। বৃষ্টি মতিনের খুব পছন্দ। সে নাসিমাকে জড়িয়ে ধরে নাসিমার কপালে একটা চুমো খেল। তারপর নাসিমার পেট থেকে শাড়ির আঁচল সরিয়ে তার অনাগত সন্তানকে হাত বুলিয়ে আদর করতে লাগল। নাসিমা বলল, "তোমার মন খারাপ?''
-মন খারাপ না৷ চিন্তা হয়। যদি কোনো বিপদ হয়?
-কি বিপদ হবে? ওরা হয়ত মাইরা ফেলবে, এর বেশি আর কি করবে?
-জানিনা। নাসিমা, বাচ্চাটার নাম কি রাখব আমরা?
-তুমি কিছু ঠিক করেছ?
-না।
-আমি কয়েকটা ঠিক করেছি৷ কিন্তু এখন বলবনা।
মতিন নাসিমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করল৷ নাসিমা মতিনের চুলে হাত বোলাতে বোলাতে ভাবতে লাগল লাকড়ির ঘরের চাল তো ফুটো৷ জমশেদ নিশ্চয় ভিজে গেছে৷ নাসিমা জানেনা কেন এই শত্রুসেনার প্রতি তার একটা মায়া জন্মে যাচ্ছে। হয়ত মানবতার খাতিরে৷ নাসিমা চায় জমশেদের স্বপ্ন পূরণ হোক। সে নিজ দেশে ফিরে যাক, রেশমিকে বিয়ে করে সুখী হোক৷
সকালবেলা খেয়েই আবার মতিন চলে গেল বাজারে৷ নাসিমা তখন খাবার নিয়ে লাকড়ির ঘরে ঢুকল৷ জমশেদ তাকে দেখেই একটু হাসল৷ বৃষ্টি এখনও থামেনি। জিরিজিরি বৃষ্টি পড়ছে৷
-বেহেনজি, খানা লায়া?
-হ্যাঁ, খেয়ে নাও৷
-বেহেনজি রাতকো বহত তুফান অউর বাদল হুয়া থা৷
-হ্যাঁ। এখনও বাদল হো রাহি৷
নাসিমার মুখে উর্দু শুনে জমশেদ এর মুখে হাসি ফুটে উঠল৷
-আপকি জবান ম্যা উর্দু বহত পেয়ারা লাগতি হ্যা, বেহেনজি৷
নাসিমা দেখল জমশেদের বিছানা কিছুটা ভিজে গেছে। কিন্তু তার শরীর শুকনো আছে৷ জমশেদ খাওয়া শুরু করল৷ নাসিমা সামনে বসে দেখতে লাগল। মতিন খাওয়ার সময়ও সে সামনে বসে থাকে৷ মতিন খাওয়ার সময় তার সাথে গল্প করে৷ কিন্তু জমশেদ রাক্ষসের মত খেতে থাকে৷ অন্যদিকে খেয়াল থাকেনা৷ নাসিমা আজকে ভালো করে জমশেদকে দেখতে লাগল। সে দেখতে খুব সুন্দর৷ লম্বা, উঁচু নাক, হাত পা সব বড় বড়, পেটানো শরীর। সে শুনেছিল পাকিস্তানিরা অনেক লম্বা হয়। আসলেই তাই। নাসিমা যখন জমশেদকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল হঠাৎ জমশেদ তার দিকে তাকাল৷ নাসিমা ইতস্তত হয়ে চোখ নামিয়ে ফেলল৷ এবার জমশেদ এর চোখ পড়ে গেল নাসিমার শাড়ির আঁচলে লুকিয়ে থাকা স্তনের উপর৷ নাসিমার অনাগত সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর জন্য সেগুলো ফুলে-ফেঁপে উঠছিল। জমশেদ কখনো এত কাছ থেকে মেয়েদের বুক দেখেনি৷ সেও বিব্রত হয়ে চোখ নামিয়ে ফেলল এবং খাওয়ায় মনোযোগ দিল৷ নাসিমা জিজ্ঞেস করল -
-পায়ের কি অবস্থা?
বাংলা বুঝতে না পেরে জমশেদ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল৷ নাসিমা তখন হাত দিয়ে পা টা ইঙ্গিত করল। জমশেদ বলল-
-ওহ, মেরা পেইর৷ ইয়ে কাফি বেহতার হ্যা। আপ মুঝে এসে আচ্ছা খানা খিলারাহাহো কি ম্যা জলদিসে ঠিক হো রাহা হু।
কথাটা বলেই জমশেদ হু হু করে হেসে ফেলল৷ তারপর আচমকা হাসি থামিয়ে দিল৷ তার হয়ত মনে পড়েছে সে তার প্রতিপক্ষের আস্তানায় আছে৷ এভাবে হাসা বিপজ্জনক। নাসিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল৷ কি সুন্দর করে হাসে মানুষটা। এমন মানুষ কিনা বাঙালিদের মারছে!
নাসিমা কি মনে করে উঠে গিয়ে জমশেদের পা টা দেখতে চাইল৷ সে কাপড়টা খুলে দিল৷ অনেকটুকু জায়গা কেটেছে৷ সেখানে রক্ত শুকিয়ে আছে৷ নাসিমা কিছু না বলে উঠে চলে গেল। একটু পর ফিরে এল একটা পরিষ্কার কাপড়, একটু গরম পানি, আর একটু হলুদ মাখা নিয়ে৷ বৃষ্টি আগের চেয়ে বেড়েছে৷ ও ঘর থেকে এ ঘরে আসতেই সে অনেকখানি ভিজে গেছে। নাসিমা কাপড় আর গরম পানি দিয়ে কাটা জায়গাটা পরিষ্কার করে হলুদ লাগিয়ে দিল৷ বৃষ্টিতে ভিজে তার দুধেল স্তনটা ভেতরে বোঝা যাচ্ছিল। গ্রামের মেয়ে, তাই ব্রা পরার বালাই নেই। নাসিমা শাড়ি দিয়ে বুক ঢেকে রাখলেও কিছু অংশ বেরিয়ে পড়েছিল যখন সে জমশেদ এর পায়ে হলুদ মেখে দিচ্ছিল৷ জমশেদ এবার আর চোখ ফেরায়নি৷ হাজার হলেও যুবক মানুষ সে৷ সে জানে এটা উচিৎ হচ্ছেনা৷ কিন্তু তবুও সে নাসিমার ভেজা স্তন থেকে চোখ সরাতে পারছেনা৷ প্যান্টের ভেতর তার নুনু একটু একটু শক্ত হচ্ছে৷ সে খুব বিব্রত বোধ করছে৷ নাসিমা যদি তার নুনুর দিকে তাকায় কি ভাববে৷ কিন্তু নাসিমা তাকায়নি৷ নাসিমা হলুদ লাগিয়ে চলে গেল। এদিকে জমশেদের বাড়া আরও ফুলতে লাগল। সে নিজেকে আর থামাতে পারছেনা। যেই মেয়েটা তাকে আশ্রয় দিল তার ভেজা বুক দেখেই তার কামনা জেগে উঠেছে। নিজেকে সে ধিক্কার দিচ্ছে মনে মনে কিন্তু একইসাথে প্যান্টের জিপার খুলে তার ধোনটাকে কচলাতে শুরু করল আর কল্পনায় নাসিমার বুকটাকে চোখে ভাসাতে লাগল। এমন সময় দরজায় আবার শব্দ হল। জমশেদ ভয়ে শুকিয়ে গেল। জলদি করে কাপড় ঠিক করে নিল৷ দরজা খুলে আবার নাসিমা ঘরে ঢুকল৷ জমশেদের দিকে তাকিয়ে বলল-
-উঠিয়ে।
-কিউ?
-আমি বলতা হ্যা ইস লিয়ে৷
জমশেদ উঠে দাঁড়াল৷ নাসিমা তার শাড়ির আঁচল কোমরে গুঁজে জমশেদ এর বিছানাটা টেনে ঘরের একপাশে সরাল। এদিকে নাসিমার বুকদোটো এখন সামনের দিকে ঢাকা হলেও পাশ দিয়ে ঠিকই দেখা যাচ্ছে৷ এবার আগের চেয়ে ভালো করে দেখা গেল। বুকের কালো বোঁটাও বোঝা গেল৷ নাসিমার সেদিকে খেয়াল নেই৷ সে হয়ত ভাবছে সবকিছু ঢাকাই আছে। নাসিমা এবার ঘরের পেছনদিকে লাকড়িগুলো টেনে টেনে ঘরের মাঝখানে আনতে লাগল৷ তার দেখাদেখি জমশেদও হাত লাগাল। শুকনো কাঠ আর ডালপালার লাকড়ি৷ বেশ অনেকগুলো। ধীরে ধীরে সব কাঠখড় ঘরের মাঝখানটায় এনে জমা করা হল। ফলে পেছন দিকে জায়গা খালি হল। নাসিমা সেখানে ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করল৷ তারপর সেখানে জমশেদ এর মাদুরটা এনে বিছিয়ে দিল৷ তার উপর একটা ছেড়া কাঁথা। নাসিমা এবার আনমনে কি জানি ভাবল৷ তারপর জমশেদকে বলল -মেরি সাথ আইয়ে।
-কিদার?
-আইয়ে না৷
নাসিমা বাইরে বের হল৷ জমশেদ দরজায় এসে থমকে দাঁড়াল।
-আগার কই দেখ লিয়া তো?
-কেউ নেহি দেখবে। আসেন।
নাসিমা তাদের স্বামী-স্ত্রীর মানে তাদের থাকার ঘরে গেল৷ জমশেদ খুড়িয়ে খুড়িয়ে তার পেছনে গেল। নাসিমা একটা লেপ বের করল। তারপর জমশেদকে এটা তার ঘরে নিতে৷ সে পোয়াতি তাই এত ভারীটা বইতে কষ্ট হবে।
জমশেদ এক নিমিষেই সেটা কাঁধে তোলে আবার খুড়িয়ে খুড়িয়ে লাকড়ির ঘরে নিয়ে গেল। তারপর মাদুরের উপর বিছানো হল সেটা। নাসিমা ঘর থেকে নতুন একটা চাদর এনে বিছিয়ে দিল। একটা জগে পানি আর গ্লাস এনে রাখল জমশেদ বিছানার পাশে৷ এখন কাঠখড় এর পেছনে থাকায় কেউ এই ঘরের দরজা খুললেও সহজে বুঝতে পারবেনা ঘরে কেউ আছে৷ লাকড়ি একদম পেছনের পুরোটা ঢেকে ফেলেছে। নাসিমার বুদ্ধিতে জমশেদ অবাক হয়ে গেল৷ নাসিমা এবার জমশেদকে বলল লাকড়ির ঘরের পেছনের একটা টিনের বেড়া খুলতে পারবে কিনা৷ জমশেদ খুব সহজেই পেছেনের বেড়ার একটা টিন খুলে ফেলল। সে অবাক হয়ে বলল-
-এ কিয়ু কিয়া, বেহেনজি?
নাসিমা টিনের বেড়াটা একটা দড়ি দিয়ে খুঁটির সাথে আটকে দিল৷ তারপর বলল -
-কোনো বিপদ দেখলে এটা খুলে ভাগ যাওগে। ইসি লিয়ে খোলা ইসকো। পিছে কয় ঘরবাড়ি নেহি হ্যা। খালি জঙ্গল আছে।
-আপ বহত চালাক নিকলা বেহেনজি!
নাসিমা মুচকি হেসে বেরিয়ে এল আর জমশেদের ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দিল।
যুদ্ধে যেতে না পারলেও মতিন মুক্তিবাহিনীর খোঁজ-খবর নেয় প্রতিদিন। এই গ্রামের বাজারেই মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে আসে৷ এখান থেকে তাদের দায়িত্ব দিয়ে অপারেশন এ পাঠানো হয়। মিলিটারিরা এতদিন এই অঁজপাড়া গায়ে ঢুকেনি। আর সেদিন ঢুকতে চেষ্টা করেও মুক্তিবাহিনীর শক্ত প্রতিরোধে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা হয়ত আবার আসবে। গ্রামের কলেজের শিক্ষক হিসেবে মতিনকে সবাই শ্রদ্ধা করে। সবচেয়ে ভালো কথা হচ্ছে এই গ্রামে কোনো রাজাকার নেই। গ্রামের মেম্বার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে এবং তারা বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করছে৷ আজকে বাজারে একটা মিটিং হয়েছে। এ গ্রামে যাতে কোনোভাবেই মিলিটারি ঢুকতে না পারে। গ্রামের কয়েকজন যুবককে অস্ত্র চালানো শেখানো হয়েছে। মতিন তাদের মধ্যে একজন। যদিও অস্ত্র খুব কম। তবে চালানো শিখে রাখলে কাজে লাগতেও পারে। মতিনের আজ খুব ভালো লাগছে। যুদ্ধে যেতে না পেরে যে গ্লানিটুকু ছিল তা যেন একটু হলেও আজ দূর হল।
রাতে জুম বৃষ্টি শুরু হল৷ টিনের চালে জমজম শব্দ হচ্ছে। বাংলার বর্ষার বৃষ্টি। বৃষ্টি মতিনের খুব পছন্দ। সে নাসিমাকে জড়িয়ে ধরে নাসিমার কপালে একটা চুমো খেল। তারপর নাসিমার পেট থেকে শাড়ির আঁচল সরিয়ে তার অনাগত সন্তানকে হাত বুলিয়ে আদর করতে লাগল। নাসিমা বলল, "তোমার মন খারাপ?''
-মন খারাপ না৷ চিন্তা হয়। যদি কোনো বিপদ হয়?
-কি বিপদ হবে? ওরা হয়ত মাইরা ফেলবে, এর বেশি আর কি করবে?
-জানিনা। নাসিমা, বাচ্চাটার নাম কি রাখব আমরা?
-তুমি কিছু ঠিক করেছ?
-না।
-আমি কয়েকটা ঠিক করেছি৷ কিন্তু এখন বলবনা।
মতিন নাসিমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করল৷ নাসিমা মতিনের চুলে হাত বোলাতে বোলাতে ভাবতে লাগল লাকড়ির ঘরের চাল তো ফুটো৷ জমশেদ নিশ্চয় ভিজে গেছে৷ নাসিমা জানেনা কেন এই শত্রুসেনার প্রতি তার একটা মায়া জন্মে যাচ্ছে। হয়ত মানবতার খাতিরে৷ নাসিমা চায় জমশেদের স্বপ্ন পূরণ হোক। সে নিজ দেশে ফিরে যাক, রেশমিকে বিয়ে করে সুখী হোক৷
সকালবেলা খেয়েই আবার মতিন চলে গেল বাজারে৷ নাসিমা তখন খাবার নিয়ে লাকড়ির ঘরে ঢুকল৷ জমশেদ তাকে দেখেই একটু হাসল৷ বৃষ্টি এখনও থামেনি। জিরিজিরি বৃষ্টি পড়ছে৷
-বেহেনজি, খানা লায়া?
-হ্যাঁ, খেয়ে নাও৷
-বেহেনজি রাতকো বহত তুফান অউর বাদল হুয়া থা৷
-হ্যাঁ। এখনও বাদল হো রাহি৷
নাসিমার মুখে উর্দু শুনে জমশেদ এর মুখে হাসি ফুটে উঠল৷
-আপকি জবান ম্যা উর্দু বহত পেয়ারা লাগতি হ্যা, বেহেনজি৷
নাসিমা দেখল জমশেদের বিছানা কিছুটা ভিজে গেছে। কিন্তু তার শরীর শুকনো আছে৷ জমশেদ খাওয়া শুরু করল৷ নাসিমা সামনে বসে দেখতে লাগল। মতিন খাওয়ার সময়ও সে সামনে বসে থাকে৷ মতিন খাওয়ার সময় তার সাথে গল্প করে৷ কিন্তু জমশেদ রাক্ষসের মত খেতে থাকে৷ অন্যদিকে খেয়াল থাকেনা৷ নাসিমা আজকে ভালো করে জমশেদকে দেখতে লাগল। সে দেখতে খুব সুন্দর৷ লম্বা, উঁচু নাক, হাত পা সব বড় বড়, পেটানো শরীর। সে শুনেছিল পাকিস্তানিরা অনেক লম্বা হয়। আসলেই তাই। নাসিমা যখন জমশেদকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল হঠাৎ জমশেদ তার দিকে তাকাল৷ নাসিমা ইতস্তত হয়ে চোখ নামিয়ে ফেলল৷ এবার জমশেদ এর চোখ পড়ে গেল নাসিমার শাড়ির আঁচলে লুকিয়ে থাকা স্তনের উপর৷ নাসিমার অনাগত সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর জন্য সেগুলো ফুলে-ফেঁপে উঠছিল। জমশেদ কখনো এত কাছ থেকে মেয়েদের বুক দেখেনি৷ সেও বিব্রত হয়ে চোখ নামিয়ে ফেলল এবং খাওয়ায় মনোযোগ দিল৷ নাসিমা জিজ্ঞেস করল -
-পায়ের কি অবস্থা?
বাংলা বুঝতে না পেরে জমশেদ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল৷ নাসিমা তখন হাত দিয়ে পা টা ইঙ্গিত করল। জমশেদ বলল-
-ওহ, মেরা পেইর৷ ইয়ে কাফি বেহতার হ্যা। আপ মুঝে এসে আচ্ছা খানা খিলারাহাহো কি ম্যা জলদিসে ঠিক হো রাহা হু।
কথাটা বলেই জমশেদ হু হু করে হেসে ফেলল৷ তারপর আচমকা হাসি থামিয়ে দিল৷ তার হয়ত মনে পড়েছে সে তার প্রতিপক্ষের আস্তানায় আছে৷ এভাবে হাসা বিপজ্জনক। নাসিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল৷ কি সুন্দর করে হাসে মানুষটা। এমন মানুষ কিনা বাঙালিদের মারছে!
নাসিমা কি মনে করে উঠে গিয়ে জমশেদের পা টা দেখতে চাইল৷ সে কাপড়টা খুলে দিল৷ অনেকটুকু জায়গা কেটেছে৷ সেখানে রক্ত শুকিয়ে আছে৷ নাসিমা কিছু না বলে উঠে চলে গেল। একটু পর ফিরে এল একটা পরিষ্কার কাপড়, একটু গরম পানি, আর একটু হলুদ মাখা নিয়ে৷ বৃষ্টি আগের চেয়ে বেড়েছে৷ ও ঘর থেকে এ ঘরে আসতেই সে অনেকখানি ভিজে গেছে। নাসিমা কাপড় আর গরম পানি দিয়ে কাটা জায়গাটা পরিষ্কার করে হলুদ লাগিয়ে দিল৷ বৃষ্টিতে ভিজে তার দুধেল স্তনটা ভেতরে বোঝা যাচ্ছিল। গ্রামের মেয়ে, তাই ব্রা পরার বালাই নেই। নাসিমা শাড়ি দিয়ে বুক ঢেকে রাখলেও কিছু অংশ বেরিয়ে পড়েছিল যখন সে জমশেদ এর পায়ে হলুদ মেখে দিচ্ছিল৷ জমশেদ এবার আর চোখ ফেরায়নি৷ হাজার হলেও যুবক মানুষ সে৷ সে জানে এটা উচিৎ হচ্ছেনা৷ কিন্তু তবুও সে নাসিমার ভেজা স্তন থেকে চোখ সরাতে পারছেনা৷ প্যান্টের ভেতর তার নুনু একটু একটু শক্ত হচ্ছে৷ সে খুব বিব্রত বোধ করছে৷ নাসিমা যদি তার নুনুর দিকে তাকায় কি ভাববে৷ কিন্তু নাসিমা তাকায়নি৷ নাসিমা হলুদ লাগিয়ে চলে গেল। এদিকে জমশেদের বাড়া আরও ফুলতে লাগল। সে নিজেকে আর থামাতে পারছেনা। যেই মেয়েটা তাকে আশ্রয় দিল তার ভেজা বুক দেখেই তার কামনা জেগে উঠেছে। নিজেকে সে ধিক্কার দিচ্ছে মনে মনে কিন্তু একইসাথে প্যান্টের জিপার খুলে তার ধোনটাকে কচলাতে শুরু করল আর কল্পনায় নাসিমার বুকটাকে চোখে ভাসাতে লাগল। এমন সময় দরজায় আবার শব্দ হল। জমশেদ ভয়ে শুকিয়ে গেল। জলদি করে কাপড় ঠিক করে নিল৷ দরজা খুলে আবার নাসিমা ঘরে ঢুকল৷ জমশেদের দিকে তাকিয়ে বলল-
-উঠিয়ে।
-কিউ?
-আমি বলতা হ্যা ইস লিয়ে৷
জমশেদ উঠে দাঁড়াল৷ নাসিমা তার শাড়ির আঁচল কোমরে গুঁজে জমশেদ এর বিছানাটা টেনে ঘরের একপাশে সরাল। এদিকে নাসিমার বুকদোটো এখন সামনের দিকে ঢাকা হলেও পাশ দিয়ে ঠিকই দেখা যাচ্ছে৷ এবার আগের চেয়ে ভালো করে দেখা গেল। বুকের কালো বোঁটাও বোঝা গেল৷ নাসিমার সেদিকে খেয়াল নেই৷ সে হয়ত ভাবছে সবকিছু ঢাকাই আছে। নাসিমা এবার ঘরের পেছনদিকে লাকড়িগুলো টেনে টেনে ঘরের মাঝখানে আনতে লাগল৷ তার দেখাদেখি জমশেদও হাত লাগাল। শুকনো কাঠ আর ডালপালার লাকড়ি৷ বেশ অনেকগুলো। ধীরে ধীরে সব কাঠখড় ঘরের মাঝখানটায় এনে জমা করা হল। ফলে পেছন দিকে জায়গা খালি হল। নাসিমা সেখানে ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করল৷ তারপর সেখানে জমশেদ এর মাদুরটা এনে বিছিয়ে দিল৷ তার উপর একটা ছেড়া কাঁথা। নাসিমা এবার আনমনে কি জানি ভাবল৷ তারপর জমশেদকে বলল -মেরি সাথ আইয়ে।
-কিদার?
-আইয়ে না৷
নাসিমা বাইরে বের হল৷ জমশেদ দরজায় এসে থমকে দাঁড়াল।
-আগার কই দেখ লিয়া তো?
-কেউ নেহি দেখবে। আসেন।
নাসিমা তাদের স্বামী-স্ত্রীর মানে তাদের থাকার ঘরে গেল৷ জমশেদ খুড়িয়ে খুড়িয়ে তার পেছনে গেল। নাসিমা একটা লেপ বের করল। তারপর জমশেদকে এটা তার ঘরে নিতে৷ সে পোয়াতি তাই এত ভারীটা বইতে কষ্ট হবে।
জমশেদ এক নিমিষেই সেটা কাঁধে তোলে আবার খুড়িয়ে খুড়িয়ে লাকড়ির ঘরে নিয়ে গেল। তারপর মাদুরের উপর বিছানো হল সেটা। নাসিমা ঘর থেকে নতুন একটা চাদর এনে বিছিয়ে দিল। একটা জগে পানি আর গ্লাস এনে রাখল জমশেদ বিছানার পাশে৷ এখন কাঠখড় এর পেছনে থাকায় কেউ এই ঘরের দরজা খুললেও সহজে বুঝতে পারবেনা ঘরে কেউ আছে৷ লাকড়ি একদম পেছনের পুরোটা ঢেকে ফেলেছে। নাসিমার বুদ্ধিতে জমশেদ অবাক হয়ে গেল৷ নাসিমা এবার জমশেদকে বলল লাকড়ির ঘরের পেছনের একটা টিনের বেড়া খুলতে পারবে কিনা৷ জমশেদ খুব সহজেই পেছেনের বেড়ার একটা টিন খুলে ফেলল। সে অবাক হয়ে বলল-
-এ কিয়ু কিয়া, বেহেনজি?
নাসিমা টিনের বেড়াটা একটা দড়ি দিয়ে খুঁটির সাথে আটকে দিল৷ তারপর বলল -
-কোনো বিপদ দেখলে এটা খুলে ভাগ যাওগে। ইসি লিয়ে খোলা ইসকো। পিছে কয় ঘরবাড়ি নেহি হ্যা। খালি জঙ্গল আছে।
-আপ বহত চালাক নিকলা বেহেনজি!
নাসিমা মুচকি হেসে বেরিয়ে এল আর জমশেদের ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দিল।