28-01-2020, 11:34 PM
আমার আর সহ্য হচ্ছিলনা। দুহাত দিয়ে প্রচণ্ড জোরে ওর গালদুটো চেপে ধরলাম। ওর মনে ভয়টা আরও বেড়ে গেলো। কাঁপতে কাঁপতে আবার বলে উঠল ‘পালিয়ে চল, ডাকাত’ আর পারলাম না নিজেকে সংবরন করতে। জীবনে কখনো রমার গায়ে হাত দিইনি। এতো জোরে যে আমি রমাকে কখনো চড় মারতে পারবো স্বপ্নেও কল্পনা করিনি। রমা ছিটকে গিয়ে ঝোপের মধ্যে পড়ল। চিৎকার করে উঠলাম আমি ‘রমা, তুমি তো আমাকেই বিষটা আগে খাওয়াতে পারতে! রমা তুমিই জুলি, আমি জানি তুমিই জুলি। তোমাদের এই নোংরা চক্রটার ব্যাপারে যারাই জেনেছে, তুমি তাদেরকেই সরিয়ে দিয়েছ। আমায় কেন মারলে না, রমা?’ রমার মুখ দিয়ে কোন শব্দ নেই, শুধু ওর শরীরটা থরথর করে কেঁপে চলেছে। মাটির ওপর উবু হয়ে বসে আমি ওর মুখের দিকে তাকালাম। রমার ঠোঁটটা কেটে টিপ টিপ করে রক্ত ঝরছে। আমি কি জানোয়ার হয়ে গেছি? আমার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কিছুতেই হাতটা রমার দিকে যাচ্ছেনা। আবার রমাকে প্রশ্ন করলাম ‘রমা, তুমি কে? কেন তুমি কখনো রঞ্জন, কখনো বা চিন্ময়ের গায়ে ঢলে পড়ো? রমা তুমি কে? কেন তুমি পরপুরুষের সামনে বেশ্যার মত নিজের শরীরকে এক্সপোষ কর, কি মজা পাও তুমি? ভালো লাগে নিজের স্বামীকে চাপরাশি পরিচয় দিতে?’ জানি আমার গলার যা তীব্রতা তাতে এতক্ষনে জঙ্গলের বাইরে পাহারায় থাকা দুই গুণ্ডার কাছে খবর চলে গেছে। আমাদের বেঁচে থাকার কোন উপায় আর নেই। শুধু মরবার আগে একবার জানতে চাই, রমা কি সত্যিই জুলি? রমার ঠোঁটদুটো কেঁপে উঠল, ভালো করে কান পাতলাম। ‘ডাকাত’ এই একটাই শব্দ ওর মুখ দিয়ে বেরোল। আর সত্যিই পারলাম না, এতটা অভিনয় রমা করতে পারেনা। আমার নিশ্চয়ই কোথাও ভুল হচ্ছে। দুহাত দিয়ে রমাকে নিজের বুকের মধ্যে টেনে নিলাম। আমার হাতের সেই ছোঁয়ায় স্নেহের উষ্ণতা পেতেই রমা ডুকরে উঠল। ক্রমশ রমার পিঠে হাত বুলিয়ে গেলাম। নিজের অজান্তেই প্রশ্ন করে ফেললাম ‘রমা, তোমায় কে বলেছে, ডাকাতের কথা?’ আবার রমা ডুকরে উঠল ‘আমার কিচ্ছু মনে নেই। আমায় আর মেরো না বিপ্লব। আমার সত্যিই কিচ্ছু মনে নেই’ শালা ছেলেটা মরবার সময়ও নিজেকে দাগী ক্রিমিনাল মনে হচ্ছিল, ব্যাঙ্কে যখন কোন গরীব মানুষ বিপদে পড়ে লোণ চাইতে আসে ও আমি না বলি তখনও মনে হয় আর আজকে নিজেকে সত্যিই একটা রেপিস্ত মনে হচ্ছে। আমি কি জানোয়ার? কি করছি আমি? আমি রমাকে অবিশ্বাস করছি! নাহ, রমাকে যেভাবে হোক বাঁচিয়ে এখান থেকে বার করতে হবে। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে রমার হাতটা ধরে হাঁটতে থাকলাম। রমা জুলি হোক বা না হোক ও আমার। ও যদি সত্যিই জুলি হয় তাহলে ওরই হাতে বিষ খেয়ে আমি মরতে চাই। জীবনটা যাকে একদিন সঁপে দিয়েছি, ফেরত চাওয়ার কোন অর্থ নেই। ফোনটা ভাইব্রেট মোডে ছিল প্রায় ৫ মিনিট ধরে ফোনটা কেঁপে চলেছে, বার করার ইচ্ছে করেনি। এবার বার করলাম; দেখি বিজয়দার ফোন। ওকে তো বিশ্বাস করতেই হবে কারন ওর কথা মত আমাদের সত্যিই কোন ক্ষতি হয়নি। ‘কোথায় আছেন এখন?’ ‘আমরা জঙ্গলের মধ্যে’ ‘ওকে, বড় রাস্তার মোড়ে একটা গাড়ি পাবেন, সেটায় উঠে যাবেন। গাড়িতে উঠুন, আবার ফোন করছি’। ২০-৪০ সেকেন্ড এর কথোপকথন অথচ নতুন করে জীবনটা আবার ফেরত দিয়ে দিলো। জঙ্গল অতিক্রম করে যখন বড় রাস্তার মোড়ে এসে দাঁড়ালাম, দেখি সত্যিই একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের দেখে গাড়ির দরজাটা খুলে দিলো সে। গাড়িতে দুজনেই চেপে বসলাম, মুহূর্তের মধ্যে গাড়িটা ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো। আবার বিজয়দার ফোন। ‘গাড়িতে চেপেছেন তো?’ আমি ক্যাজুয়ালি ‘হুম’ বলে একটা উত্তর দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা উদ্বেগের সাথে ওনার কতগুলো প্রশ্ন ভেসে এলো। ‘আপনি জুলিকে দেখেছেন? শানকে দেখেছেন? কোন এভিডেন্স মানে এই ফটো বা ভিডিও টাইপের কিছু তুলতে পেরেছেন?’ আমার আর এইসব সত্যিই ভালো লাগছিলনা। কে জুলি? কে শান? কে খুন করছে? কেন করছে? এইসব আমার মাথায় আর নেই। আমার দু চোখ রমার দিকে। ঠোঁটটা বেশ ফুলে উঠেছে। উদাস মনে রমা জানলার বাইরে তাকিয়ে আছে। একটাই কথা নিজের মনে ভেবে চলেছি ‘কি করে আমি রমাকে এরকমভাবে মারলাম? আমি কি জানোয়ার?’ বিবেকের দংশন যে কি তা এর আগে বহুবার আমি বুঝেছি; আবার একবার বুঝলাম। বিজয়দার ওই একি প্রশ্নগুলো ভেসে এলো। এবার সত্যিই উত্তর দিতে হত। কিছুটা অবজ্ঞার সুরে আমি বলে উঠলাম ‘আমি জুলি, শান কাউকে দেখতে পাইনি। শুধু প্রান বাঁচিয়ে ফিরে আসছি’ বিজয়দা যে কোনোদিন আমার সাথে এভাবে ব্যাবহার করবে তা আমি জীবনেও ভাবতে পারিনি। তারস্বরে চিৎকার করে বলে উঠলেন ‘দেখতে পাননি মানে? বললেই হোল। এতো কষ্ট করে একটা মাস্টারপ্ল্যান বানালাম আর আপনি সমস্তকিছুতেই জল ঢেলে দিলেন। আমি চার্জশিট কি করে বানাবো? আমি আপনাকে কেন পাঠালাম? আপনাকে কেউ সন্দেহ করবেনা, ওরাও অতিরিক্ত সতর্ক হবেনা, ও আপনি কিছু এভিডেন্স নিয়ে আসবেন’ ওনাকে মাঝপথেই থামিয়ে আমি বলে উঠলাম ‘বিজয়দা, আমার মানসিক অবস্থাটা যদি আপনি বুঝতে পারতেন? কোনরকমে রমাকে বাঁচিয়ে ফিরছি’ আবার প্রচণ্ড জোরে চেঁচিয়ে উঠলেন বিজয়দা ‘রমাকে আপনি বাঁচিয়েছেন? আপনার ক্ষমতা আছে, ওদের হাত থেকে রমাকে বাঁচানোর? আপনি বেঁচেছেন শুধু আমার জন্য। আমার ইনফরমারই আপনাকে বাঁচিয়েছে’ মনেমনে বললাম ‘আপনার ইনফরমার মানে ওই চিনু তাইতো’ আবার বিজয়দা চেঁচিয়ে উঠলেন ‘কেন নিজে যাইনি জানেন? ওদের গ্রেফতার করতে কয়েক মিনিট লাগবে। কিন্তু ওই চার্জশিট। চার্জশিট প্রপার না হলে কিছুতেই সমাজের এতো ওপরের তলার লোককে গ্রেফতার করা যায়না। আপনি কোন কর্মের নয়; আপনি একটি অকর্মার ঢেঁকী’ একেই মেজাজ বিগড়ে আছে, তারপর বিজয়দার এই ব্যাবহার। আমিও আর নিজেকে সংবরন করতে পারলাম না। চেঁচিয়ে বলে উঠলাম ‘আপনি এতো বড় বড় কথা বলছেন, অথচ সত্যি এটা যে আপনি আমায় আর রমাকে নিজের প্রমোশনের জন্যে ইউস করলেন। আপনি কি ভেবেছিলেন আমরা গিনিপিগ? যদি আমাদের কিছু হয়ে যেত? আসলে পুলিশও একধরনের গুন্ডা, খালি রাষ্ট্র তাদের গুণ্ডামি করার পারমিশন দেয়। আর চার্জসিট! এটা একটা কমেডি সিনেমা ছাড়া কিছুই নয়। আমি অন্তত ১০ টা নামকরা কেসের নাম আপনাকে বলতে পারি; যেখানে সাক্ষীদের হয় কিনে নেওয়া হয়েছে নয় খুন করা হয়েছে। আদালত কিসসু করতে পারেনি’। প্রায় একি ভঙ্গীতে বিজয়দাও উত্তর দিলেন ‘হ্যাঁ, আমি আপনার সাহায্য হয়ত নিয়েছি, কিন্তু আপনি নিজেও জানেন এই কেসের ভিকটিম ও কিন্তু আপনি। যা করেছি তা আপনাকে বাঁচাতে। এই সিস্টেমের মধ্যে থেকেও অনেককিছু করা যায়। সিস্টেমটা শুধুই কিছু সমাজবিরোধী নয় আপনাদের মত তাত্বিক সিস্টেমবিরোধীদের জন্যও পচন ধরছে’ বিজয়দার শেষ লাইনটা শুনে খটকা লাগলো আমার মনে। চুপ করে গেলাম। আবার বিজয়দা বললেন ‘আমি আপনাকে আগেই বলেছি, নিজেকে শারলক হোমস ভাবা বন্ধ করুন। মনে রাখবেন গোয়েন্দাগিরিটা আমার পেশা’ শুধু যে বিজয়দাই আমায় কথা শুনিয়ে যাবে আর আমি শুনে যাবো তা হয়না। ‘বিজয়দা, আপনিও কিন্তু ঘুষ নেন। স্বীকারও করেছেন আমার কাছে। তাহলে?’ কিছুটা অবজ্ঞার হাঁসি হেঁসে বিজয়দা উত্তর দিলেন ‘তাহলে আপনার সন্দেহের তালিকায় আমিও প্রবেশ করেছি মিস্টার শারলক হোমস, তাইতো?’ বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকলাম। আজকে সত্যি বহুবার আমি নিজের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রন হারিয়েছি। আমার জীবনে যে আনসল্ভড রহস্যগুলো রয়েছে তা সল্ভ করতে বিজয়দার সাহায্য প্রতি মুহূর্তেই আমার দরকার। জানি আমি ভুল করছি। নিজেকে সংশোধন করলাম। গলাটা অনেক নামিয়ে বললাম ‘বিজয়দা, আমি সত্যিই আপনাকে নিজের দাদার চোখে দেখি। কিন্তু দাদা, একটা সত্যি কথা বলুন। আপনি কার দিকে?’ একটা মুচকি হেঁসে বিজয়দা উত্তর দিলেন ‘আমি আমার প্রফেশনের দিকে। আমার কাছে আদর্শ, আতলামি, ক্ষোভ, বিক্ষোভ এগুলোর চেয়ে বাস্তব অনেক অনেক বেশী দামী। তাই আমি শুধুই চার্জশিটে বিশ্বাস করি। একটা পাওয়ারফুল চার্জশিটই সবকিছু’ আমার কাছে উত্তর দেওয়ার মত কিছুই ছিলনা। চুপ করে বসে থাকলাম। নীরবতাটা বিজয়দাই ভঙ্গ করলেন। ‘দাদা, যখন ভাবেন তখন একটা কথা মনে রাখবেন, দাদা-ভাইয়ে লড়াই হয় ঝগড়াও হয়’ ওফ সত্যি এই কথাটাই দরকার ছিল। মনটা একদম হাল্কা হয়ে গেলো। আমি প্রায় হেঁসেই দিলাম। বিজয়দাও হেঁসে উঠলেন। ‘শুনুন বিপ্লববাবু, পুলিশ হিসেবে নয় দাদা হিসেবে দুটো কথা আপনাকে জানাই। যে জঙ্গলের মধ্যে আপনি রমাকে চড়টা মারলেন, সেখানেই আমার ৩ জন অফিসার লুকিয়ে আছে। রমা জুলি নয়। আমি এক মহিলাকে সন্দেহ করি। তিনিই জুলি। আজই হয়ত জুলি কে এই রহস্যটা সমাধান হয়ে যেত, যদি সত্যিই আপনি আমায় দাদা বলে ভেবে থাকতেন। আপনি আমায় বিশ্বাস করতে পারেননি এটাই আমার কষ্ট অন্যকিছু নয়। আর দ্বিতীয় কথাটা হোল, আপনি শারলক হোমস নন আপনার চেয়ে পুলিশ অনেক বেশী ইনটেলিজেন্ট, নিজেকে শারলক হোমস ভাবা বন্ধ করুন’ আমি আবার হেঁসে উঠলাম, এই হাঁসির মধ্যে যে কি তৃপ্তি রয়েছে তা বিজয়দাও বোঝেন। মুখ দিয়ে একটাই কথা বেরোল ‘অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা’। একটু হেঁসে বিজয়দা উত্তর দিলেন ‘আমি শুধুই চার্জশিটে বিশ্বাস করি’। বিজয়দা ফোনটা রেখে দিলেন। একরাশ কালো মেঘ কোথায় যেন উড়ে গেলো। সবার আগে রমার মুখের দিকে তাকালাম। জানি আমি যে ওকে চড় মেরেছি সেটাও হয়ত ওর আর মনে নেই। নিজেকে বিশাল বড় একটা জানোয়ার মনে হচ্ছিল। রমার কপালের ওপর একটা চুলের গোছা এসে পড়েছিল। হাত দিয়ে সরাতেই রমা আমার দিকে তাকাল। ওর মুখে জোর করে বসিয়ে দেওয়া একটা হাঁসি। আমার মুখ দিয়ে কোন কথা বেরলনা শুধুই মনেমনে বিড়বিড় করলাম ‘আমায় ক্ষমা করে দিও রমা, আমি সত্যিই জানোয়ার নই’। মাত্র দুখানা প্রশ্ন যদি এর জবাবটা পেতাম, সমস্ত কিছুই আমার কাছে পরিস্কার হয়ে যেত। একবার চেষ্টা করেই দেখিনা। রমার দিকে তাকিয়ে হাসিহাসি মুখ করে বললাম ‘রমা, সোনা আমার। প্লিস একটু ভাববার চেষ্টা কর। তোমায় আমি এবার পুজায় একটা লাল বেনারসি সাড়ি দিয়েছিলাম। ওটা কোথায়? তুমি কি কাউকে দিয়েছ?’ রমা জানলার দিকে তাকাল আর কিছুক্ষন পর আমায় বলল ‘ঠিক মনে পড়ছে না, তবে মনে হয় আলমারিতেই আছে’। না এরও উত্তর পেলাম না। আলমারিতে তো রমার সব কাপড় ই থাকে। আলাদা করে এই কাপড়টার কথা ওর মনে নেই। দ্বিতীয় প্রশ্নটা ছিল, ‘মধুকর ভিলায় যে ডাকাত রয়েছে, এই কথাটা রমাকে কে বলেছে?’ না ওকে আর ওটা জিজ্ঞেস করলাম না। জানি ও উত্তর দিতে পারবেনা। নিজের হাতটা রমার কাঁধের ওপর দিয়ে জড়িয়ে দিলাম, রমাও নিজের মাথাটা আমার বুকে গুঁজে দিলো। দুজনেই চোখ বুজে দিয়েছিলাম। হুঁশ ফিরল ড্রাইভারের একটা প্রশ্নে। ‘কেমন আছেন দাদা? এতো রাতে বেরলেন? সকালেও তো ফিরতে পারতেন’ গাড়ির সামনের কাঁচটায় দেখলাম। আরে এতো মনিরুল। আহা, বেচারা বেকার ছেলের ক্যান্সার হয়েছে। কদিন বাঁচবে ঠিক নেই। ওকে এনজিও থেকে অনেকবার সাহায্য করেছি। হাঁসিহাঁসি মুখ করে উত্তর দিলাম ‘আরে তুমি। হ্যাঁ, ভালো আছি। তুমি কেমন আছো? শরীর কেমন আছে? আর এই শরীরে এখনো ট্যাক্সি চালাচ্ছ?’ একটু হেঁসে উত্তর দিল ‘কি করব দাদা। যতদিন আছি সংসারটা টেনে যাই। তারপর কি হবে কেউ জানেনা’ আমারও মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। সত্যি মানুষের কপালে যে কি রয়েছে তা মানুষ সত্যিই জানেনা। প্রচণ্ড বেগে গাড়িটা ছুটে চলেছে দ্বিতীয় হুগলী সেতুর দিকে। আমরা প্রত্যেকেই নীরব, ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। ‘মনিরুল তোমার নাম্বারটা হারিয়ে গেছে। নাম্বারটা দেবে প্লিস?’ আমার প্রশ্নে মনিরুল উদাস হয়ে একবার পেছন ঘুরে দেখল। তারপর কিছুটা হতাশার সাথে উত্তর দিলো ‘দাদা, নাম্বার কেন দেবনা। তবে অনেক হেল্প পেয়েছি আপনার থেকে বিজয়দার থেকে। আর উপকার নিতে পারবো না দাদা, আল্লা আমায় তাহলে মাফ করবে না’ খুব খারাপ লাগলো ছেলেটার কথা শুনে। একটু সামনের দিকে এগিয়ে ওর কাঁধে একটা হাত দিয়ে বললাম ‘মনিরুল, মানুষই তো মানুষের পাশে থাকে। আর তুমিই বা ভাবছ কেন আমি তোমার উপকার করার জন্য ফোন নাম্বারটা নিচ্ছি। হয়ত তুমিই আমার কোন উপকারে লেগে যাবে’ বেশ কিছুক্ষন নীরব থাকার পর মনিরুল বলে উঠল ‘ইমানে লাগে দাদা। আর কত অন্যের দয়া নেবো। আল্লা মেহেরবান হোক। একটিবার আপনাদের মত মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ দিক’। রমা চুপ করে আমাদের কথা শুনে যাচ্ছিল। আজ বহুবছর ও নিজেকে স্বাভাবিক পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে।