18-01-2020, 02:18 AM
পর্ব ২৭
আমি ঈশিতাকে কোলে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচতলায় নামছি,, এমন সময় আম্মু হুট করে কোথায় থেকে যেন এসে পড়লো।।। আমার সিনিয়র বউ আম্মুকে দেখে আমার কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করতে শুরু করলো,,, আমি একটু রাগী লুক নিয়ে তার চোখের দিকে তাকালাম,,, সে সাথে সাথে চুপটি মেরে গেল,,,
আম্মু বলতে লাগলো কি হয়েছে ঈশিতার,, এতক্ষণ রুমে বসে কান্না করছিল,,, এখন তুই কোলে নিয়ে নিচে নামছিস কোন সমস্যা হয়েছে নাকি,,,
আমার সিনিয়র বউ আম্মুর কথা শুনে লজ্জায় মুখ লাল করে আমার বুকের দিকে মুখ ঘুরালো,,,
আমি থমথমে গলায় বললাম,, আসলে ঈশিতার অনেকক্ষণ ধরে নাকি কি জন্য পায়ে ব্যথা করছিল,, তাইলে নিচে নেমে খাবার খেতে পারেনি?
আমার কথা শুনে আম্মু বলতে লাগল বোকা মেয়ে এমন বোকা মেয়ে তো দেখি নাই,, পায়ে ব্যথা করলে আমাকে বলবি না,,, না খেয়ে দরজা বন্ধ করে কান্না করলে পায়ের ব্যথা যাবে,,যা ওকে নিয়ে উপরে যা তারপর পায়ে ব্যথার মলম লাগিয়ে দে,,, আমি তোদের দুজনের জন্য খাবার নিয়ে আসছি
আমি আমার সিনিয়র বউকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসলাম সে সাথে সাথে আমার কল থেকে নেমে পড়লো,, তারপর বলতে লাগলো,,, আমি বলছিনা খালামণি দেখে ফেলবে।।
আরে আম্মু দেখেছে তো কি হয়েছে।
যাহ খালামণির সামনে বুঝি আমার লজ্জা করে নাই,, খালামণি এখন কি ভাববে,,।
আরে আমার লজ্জাপতি সিনিয়র বউ আম্মু কিছু ভাববে না,,, ছেলে তার ছেলের বউকে করে নিয়েছে তাতে কি ভাবার আছে,,
একটা বারি দিয়ে মাথাটা ফাটিয়ে ফেলবো।
ওমাহ আমি আবার কি করলাম মাথা ফাটাবে কেন।।
সিনিয়র বউ বলিস কেন,, শুধু বউ বলতে পারিস না ।
আচ্ছা ঠিক আছে সিনিয়র বউ বলবো না সিনিয়র শাকচুন্নি বলবো,,
কি বললি?
না কিছু না?
কিছু না মানে তুই সিনিয়র শাকচুন্নি বললি কেন,,,
সরি মুখ ফসকে বের হয়ে গিয়েছে।
মুখ ফসকে বের হইনি তুই ইচ্ছেকৃতভাবে বলেছিস,, আজকে খাইছি তোরে আমি।
আরে কি করছো ছাড়ো আমাকে,,তোমার না পায়ে ব্যাথা,
কিসের ব্যথা?
ওমা আম্মুকে না বললাম তোমার পায়ে ব্যাথা, এখন আম্মু যদি এসে দেখে তুমি ব্যথা নিয়ে তার ছেলের গলা চেপে ধরে আছো, তাহলে আম্মু ও বুঝে ফেলবে যে তোমার পায়ে খুব ব্যথা নাই,, তোমাকে আমি এমনি এমনি কূলে নিয়েছিলাম।
ও হ্যা তাই তো?
এখন চুপচাপ সোফায় বসে পড়ো,, আমি তোমার পায়ে মলম লাগিয়ে দেয়।
মলম লাগাবি কেন আমার পায়ে তো ব্যাথা নাই,,,
আরে আম্মু না বলল তোমার পায়ে মলম লাগিয়ে দেওয়ার জন্য।
আচ্ছা ঠিক আছে?
আমি আমার সিনিয়র বউয়ের পায়ে মলম লাগিয়ে দিচ্ছি, এমন সময় আম্মু খাবার নিয়ে রুমে আসলো,, দুজনে হাত মুখ ধুয়ে এসে খাবার খেতে বসলাম,,, কিন্তু আমার শাকচুন্নি নাকি খেতে পারবে না,,, আমি তো জানি শাকচুন্নি কি জন্য বললো খেতে পারবে না,,, আমি নিজের হাতে শাকচুন্নি কে খাইয়ে দিলাম। শাকচুন্নির ছোট বাচ্চার মত ভাত চিবানো দেখলে আৃার যে কি ভাল লাগে,,,তা বলে বুঝাতে পারবোনা।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ছাদে দুজনে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম,,,
আমার যাওয়ার আর দুদিন বাকি আছে,, কিছু শপিং করতে হবে,,, তাই বিকালে বাসা থেকে বের হলাম শপিং করার জন্য,,, কিন্তু শাকচুন্নি আমার সাথে শপিং যাবে না,,, শপিং করতে নাকি ওর ভালো লাগেনা।
শপিং করে রাতে বাড়ি ফিরলাম,,, রাতের খাবার খেয়ে খুব ক্লান্ত লাগছে,, রুমে গিয়ে বিছানায় গা টা এলিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পরে আমার শাকচুন্নি রুমে আসলো,,, এসে দেখে আমি বিছানায় শুয়ে আছি তাই জিজ্ঞাসা করল,, তোমার কি শরীর খারাপ,, আমি মাথা ঝাকিয়ে দিয়ে না বললাম,,,,, আমার মাথা ঝাকি দেখে রেগে বললো,, মুখে কি কোন কিছু ঢুকছে নাকি ইদুর বিড়াল টিড়াল,, মুখে বলা যায় নাহ।
আমি তার কথা কোন উত্তরই দিলাম না বালিশের নিচ থেকে মোবাইলটা বের করে,, টিপতে লাগলাম,, সে রাগ করে আমার পাশেই শুয়ে পরল,,, আমি মোবাইল টিপছি আড়চোখে তার দিকে তাকাচ্ছি,,, সে এপাশ ওপাশ করছে,, কি যেন বলবে মনে হয়,,, কিন্তু আমার এ অবস্থা থেকে রাগে কিছু বলতে পারছে না,, আমি দিব্য মোবাইল টিপেই যাচ্ছি,,
সে অনেকক্ষণ নড়াচড়া করে আমার কাছে ঘেষতে লাগলো,,, তারপরও আমি একনাগারে মোবাইল টিপেই যাচ্ছি,, সে এবার আর চুপ থাকতে পারিনি,,বলতে শুরু করলো,, কি আছে মোবাইলে,,,এভাবে মোবাইল টিপছো,, ওখানে গিয়ে যদি এভাবে মোবাইল টিপো তাহলে লেখাপড়া তো কারে উঠবে,,,
আমি তার কোন কথার জবাব দিচ্ছি না,,, সে এবার আমার বুকে চলে আসলো,, এবং আমার হাত থেকে মোবাইলটা ছো মেরে নিয়ে নিল,,, কি করছো,, আমার উপরে আসলা কেন।
ওপরে আসলাম মানে।
দুপুরে আমি তোমাকে কথা দিয়েছি তোমার অনুমতি ছাড়া তোমাকে টাচ করব না।
তুমি আমাকে কথা দিয়েছো টাচ করবা না
কিন্তু আমি তো কথা দেইনি,, আমি আমার স্বামীর উপরে আসবো না আসবো তাতে তোমার কি হ্যাহ।
মানে তুমি আমার ওপরে আসবা আর আমার কিছু না।।
না তোমার কিছু না,,, দুপুরের জন্য এখনো মৃার উপর রাগ করে আছো,,,আচ্ছা ঠিক আছে দুপুরের জন্য আমি সরি,, আমি ইচ্ছে করে এ মনটা করে নি,,, খুব লেগেছিল না?
আমি কোন কথা বললাম না?
কি হলো কথা বলবা না,, আচ্ছা ঠিক আছে আমি আদর করে দিচ্ছি,, একথা বলে আমার কপালে কয়েকটা চুমু দিল,, তারপর বলল এখন ঠিক আছে তো,, এখন তো রাগ কমেছে নিশ্চয়ই,,,
নাহ এখন ও রাগ কমেনি,,,
কি বলো তুমি,, এখনো রাগ কমেনি,, তাহলে কি করলে রাগ কমবে তোমার,, এক কাজ কর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো,, তাহলে তোমার রাগ কমে যাবে।
(((কি লজিক শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে রাগ কমে যাবে)))
কি হলো ধরো না কেন?
না ধরবো না?
না ধরলে দুপরে যে জায়গায় ব্যথা পেয়েছ সে জায়গায় দিব একটা,,,
কি দিবা,,
বাঁশ দিয়া বারি,,,
কিহহ?
না কিছু না
কিছু মানে তুমি যে বললা বাঁশ দিয়ে বারি৷ দিবা
না বাবু আমি বাঁশ দিয়া বারির কথা বলি নাই,,আমি চুমুর কথা বলছি,,, এই যে আর একটা চুমু দিচ্ছি,,, এবার তো জড়িয়ে ধরো প্লিজ।
আমি কিছু না বলে পাগলীটাকে জড়িয়ে ধরলাম,, সে আমার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো,,,
হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম সে ঘুমাচ্ছে না নড়াচড়া করছে,,, আর বারবার আমার বুক থেকে মাথা তুলে আমাকে দেখছে,,, আগে তো এরকম করে নি,, আমার বুকে শুয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ করে আমাকে বলতে লাগল।
এই
কি?
এই?
কি?
একটা কথা বলব?
হ্যা বল?
আমি না?
হ্যা বল?
আমি না?
কি তুমি না?
আমি না?
আরে কি আমি না আমি শুরু করছো?
আমি মুখে বলতে পারব না কানে কানে বলবো?
আচ্ছা ঠিক আছে বল,,, আমার সিনিয়র বউ কানে কানে যে কথা বলল,,, তা শুনে আমার চোখ চাড়কগাছ হয়ে গিয়েছে,,, সে নাকি আমার আদর পেতে চাই আমার ভালোবাসা পেতে চাই আমার স্পর্শ চাই,, কিন্তু মাগার বেবী টেবির প্লান করা যাবে না,,, সমস্যা নাই,,, আমিতো এর সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিলাম।
সে আমার কানে কানে এ কথা বলে লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো,,, আমি তার মাথাটা আমার বুক থেকে তুললাম,,, তারপর তার দিকে তাকালাম,, সে চোখ বন্ধ করে আছে,,, আর আমি এই সুযোগে আমার ঠোট তার ঠোঁটের কাছে কাছে নিতে লাগলাম,,, তার শ্বাস প্রশ্বাস আমার মুখের উপরে পড়ছে,,, তার বুক দ্রুত ওঠানামা করছে আমি বুঝতে পারছি। একসময় তার ঠোটের সাথে আমার ঠোঁট এক হয়ে যায়,, সে নিজেকে সামলাতে পারছেনা,, আমার প্রতিটি ছোঁয়ায় সে কেপে উঠছে,,, এক সময় দুজন দুজনার মাঝে হারিয়ে যেতে লাগলাম।।
দুটা দিন খুব ভালোভাবে কেটেছে,,, এই দুইটা দিন হিসাব করলে জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন ধরা যেতে পারে়।।।
আজকের বিকাল 5 টা বাজে আমার ফ্লাইট,,, যতা সময় বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ীতে উঠলাম,,,আমার খুব খারাপ লাগছে,,, বন্ধুবান্ধব সবাইকে ছেড়ে এত দূরে চলে যাচ্ছি,,, ভাবতেই কেমন যেন একটা কষ্ট লাগছে,, বন্ধু বান্ধবের সাথে কত আড্ডা উড্ডা দিলাম,, হাসির রং তামাশায় খেলাধুলায় জীবনটাকে মাতিয়ে তুলেছিলাম,, আর হয়তো সেই সোনালী দিনগুলো জীবনে ফিরে আসবে না। শত ইচ্ছে করলেও সব বন্ধু বান্ধব এক হয়ে আর আড্ডা দিতে পারব না,,, কারন ততদিনে হয়তো সবাই যার যার কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে,,,
গাড়িতে বসে আছি,,, গাড়ির ভিতরে কারো মুখের দিকে তাকাতে পারছি না,,, সবার মুখ কালো হয়ে আছে। হয়তো আপন জন দূরে চলে গেলে,, যে একটা কষ্ট বুকে জমা হয় সে কষ্ট থেকে আপনা আপনিই মুখ কালো হয়ে যায়।
গাড়ি এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌঁছালো,,, এখন সবাই থেকে বিদায় নিয়ে ভিতরে ঢুকার পালা,,, মা বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম,,, চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে,,, মা-বাবাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি না,,, বিদায় টা এত কষ্টের হয় কেন,, মা বাবার সামনে দাঁড়াতেই টপ টপ করে চোখ থেকে পানি পড়তে লাগলো,,, আমার মা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে দিলেও সাথে বাবা ও,,, আমিও তাদের কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম,,, ঈশিতার দিকে তাকিয়ে দেখি বার বার ওড়না দিয়ে মুখ মুচছে চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।
মামা এসে আব্বু আম্মুকে বলতে লাগলো,, ওকে জড়িয়ে ধরে যদি এভাবে কান্না করতে থাকো তাহলে ও যাবে কিভাবে,, ফ্লাইট মিস করবে তো। আব্বু আম্মু নিজেদেরকে সামলে নিল,,, তারপর আম্মু আমাকে কপালে চুমু দিয়ে বলতে লাগলো।
বাবা সাবধানে থাকবি,,, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবি,,, বেশি রাত জাগবি না,,, তোর তো আবার রাত জাগার অভ্যাস আছে,,, ঠিক মত পড়ালেখা করবি,,, কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করবিনা,, খারাপ মানুষ থেকে দূরে থাকবি,, খারাপ কোন জিনিস খাবি না,,, সময় পেলেই আমাকে ফোন দিবি,,,, আরো নানান উপদেশ দিতে লাগল,,, হঠাৎ করে বলতে লাগল,,, ওই দেখ ঈশিতা মেয়েটা কিভাবে কান্না করছে,,, যা মেয়েটাকে কিছু বলে আই???
আমি আস্তে আস্তে আমার শাকচুন্নির কাছে গিয়ে দাড়ালাম,,, সাথে সাথে শাকচুন্নি আমাকে জড়িয়ে ধরে,,,ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিল,, আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,,, আরে পাগলী এভাবে কাঁদলে আমি যাব কিভাবে,,, আমার যে ফ্লাইটের টাইম হয়ে গেছে,,, যাবার সময় এভাবে কাঁদলে আমি যেতে পারব,,, কিন্তু আমার শাকচুন্নি আমার কোন কথাই শুনছে না,,, কেঁদেই চলছে,,,
((চলবে)))
আমি ঈশিতাকে কোলে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচতলায় নামছি,, এমন সময় আম্মু হুট করে কোথায় থেকে যেন এসে পড়লো।।। আমার সিনিয়র বউ আম্মুকে দেখে আমার কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করতে শুরু করলো,,, আমি একটু রাগী লুক নিয়ে তার চোখের দিকে তাকালাম,,, সে সাথে সাথে চুপটি মেরে গেল,,,
আম্মু বলতে লাগলো কি হয়েছে ঈশিতার,, এতক্ষণ রুমে বসে কান্না করছিল,,, এখন তুই কোলে নিয়ে নিচে নামছিস কোন সমস্যা হয়েছে নাকি,,,
আমার সিনিয়র বউ আম্মুর কথা শুনে লজ্জায় মুখ লাল করে আমার বুকের দিকে মুখ ঘুরালো,,,
আমি থমথমে গলায় বললাম,, আসলে ঈশিতার অনেকক্ষণ ধরে নাকি কি জন্য পায়ে ব্যথা করছিল,, তাইলে নিচে নেমে খাবার খেতে পারেনি?
আমার কথা শুনে আম্মু বলতে লাগল বোকা মেয়ে এমন বোকা মেয়ে তো দেখি নাই,, পায়ে ব্যথা করলে আমাকে বলবি না,,, না খেয়ে দরজা বন্ধ করে কান্না করলে পায়ের ব্যথা যাবে,,যা ওকে নিয়ে উপরে যা তারপর পায়ে ব্যথার মলম লাগিয়ে দে,,, আমি তোদের দুজনের জন্য খাবার নিয়ে আসছি
আমি আমার সিনিয়র বউকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসলাম সে সাথে সাথে আমার কল থেকে নেমে পড়লো,, তারপর বলতে লাগলো,,, আমি বলছিনা খালামণি দেখে ফেলবে।।
আরে আম্মু দেখেছে তো কি হয়েছে।
যাহ খালামণির সামনে বুঝি আমার লজ্জা করে নাই,, খালামণি এখন কি ভাববে,,।
আরে আমার লজ্জাপতি সিনিয়র বউ আম্মু কিছু ভাববে না,,, ছেলে তার ছেলের বউকে করে নিয়েছে তাতে কি ভাবার আছে,,
একটা বারি দিয়ে মাথাটা ফাটিয়ে ফেলবো।
ওমাহ আমি আবার কি করলাম মাথা ফাটাবে কেন।।
সিনিয়র বউ বলিস কেন,, শুধু বউ বলতে পারিস না ।
আচ্ছা ঠিক আছে সিনিয়র বউ বলবো না সিনিয়র শাকচুন্নি বলবো,,
কি বললি?
না কিছু না?
কিছু না মানে তুই সিনিয়র শাকচুন্নি বললি কেন,,,
সরি মুখ ফসকে বের হয়ে গিয়েছে।
মুখ ফসকে বের হইনি তুই ইচ্ছেকৃতভাবে বলেছিস,, আজকে খাইছি তোরে আমি।
আরে কি করছো ছাড়ো আমাকে,,তোমার না পায়ে ব্যাথা,
কিসের ব্যথা?
ওমা আম্মুকে না বললাম তোমার পায়ে ব্যাথা, এখন আম্মু যদি এসে দেখে তুমি ব্যথা নিয়ে তার ছেলের গলা চেপে ধরে আছো, তাহলে আম্মু ও বুঝে ফেলবে যে তোমার পায়ে খুব ব্যথা নাই,, তোমাকে আমি এমনি এমনি কূলে নিয়েছিলাম।
ও হ্যা তাই তো?
এখন চুপচাপ সোফায় বসে পড়ো,, আমি তোমার পায়ে মলম লাগিয়ে দেয়।
মলম লাগাবি কেন আমার পায়ে তো ব্যাথা নাই,,,
আরে আম্মু না বলল তোমার পায়ে মলম লাগিয়ে দেওয়ার জন্য।
আচ্ছা ঠিক আছে?
আমি আমার সিনিয়র বউয়ের পায়ে মলম লাগিয়ে দিচ্ছি, এমন সময় আম্মু খাবার নিয়ে রুমে আসলো,, দুজনে হাত মুখ ধুয়ে এসে খাবার খেতে বসলাম,,, কিন্তু আমার শাকচুন্নি নাকি খেতে পারবে না,,, আমি তো জানি শাকচুন্নি কি জন্য বললো খেতে পারবে না,,, আমি নিজের হাতে শাকচুন্নি কে খাইয়ে দিলাম। শাকচুন্নির ছোট বাচ্চার মত ভাত চিবানো দেখলে আৃার যে কি ভাল লাগে,,,তা বলে বুঝাতে পারবোনা।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ছাদে দুজনে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম,,,
আমার যাওয়ার আর দুদিন বাকি আছে,, কিছু শপিং করতে হবে,,, তাই বিকালে বাসা থেকে বের হলাম শপিং করার জন্য,,, কিন্তু শাকচুন্নি আমার সাথে শপিং যাবে না,,, শপিং করতে নাকি ওর ভালো লাগেনা।
শপিং করে রাতে বাড়ি ফিরলাম,,, রাতের খাবার খেয়ে খুব ক্লান্ত লাগছে,, রুমে গিয়ে বিছানায় গা টা এলিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পরে আমার শাকচুন্নি রুমে আসলো,,, এসে দেখে আমি বিছানায় শুয়ে আছি তাই জিজ্ঞাসা করল,, তোমার কি শরীর খারাপ,, আমি মাথা ঝাকিয়ে দিয়ে না বললাম,,,,, আমার মাথা ঝাকি দেখে রেগে বললো,, মুখে কি কোন কিছু ঢুকছে নাকি ইদুর বিড়াল টিড়াল,, মুখে বলা যায় নাহ।
আমি তার কথা কোন উত্তরই দিলাম না বালিশের নিচ থেকে মোবাইলটা বের করে,, টিপতে লাগলাম,, সে রাগ করে আমার পাশেই শুয়ে পরল,,, আমি মোবাইল টিপছি আড়চোখে তার দিকে তাকাচ্ছি,,, সে এপাশ ওপাশ করছে,, কি যেন বলবে মনে হয়,,, কিন্তু আমার এ অবস্থা থেকে রাগে কিছু বলতে পারছে না,, আমি দিব্য মোবাইল টিপেই যাচ্ছি,,
সে অনেকক্ষণ নড়াচড়া করে আমার কাছে ঘেষতে লাগলো,,, তারপরও আমি একনাগারে মোবাইল টিপেই যাচ্ছি,, সে এবার আর চুপ থাকতে পারিনি,,বলতে শুরু করলো,, কি আছে মোবাইলে,,,এভাবে মোবাইল টিপছো,, ওখানে গিয়ে যদি এভাবে মোবাইল টিপো তাহলে লেখাপড়া তো কারে উঠবে,,,
আমি তার কোন কথার জবাব দিচ্ছি না,,, সে এবার আমার বুকে চলে আসলো,, এবং আমার হাত থেকে মোবাইলটা ছো মেরে নিয়ে নিল,,, কি করছো,, আমার উপরে আসলা কেন।
ওপরে আসলাম মানে।
দুপুরে আমি তোমাকে কথা দিয়েছি তোমার অনুমতি ছাড়া তোমাকে টাচ করব না।
তুমি আমাকে কথা দিয়েছো টাচ করবা না
কিন্তু আমি তো কথা দেইনি,, আমি আমার স্বামীর উপরে আসবো না আসবো তাতে তোমার কি হ্যাহ।
মানে তুমি আমার ওপরে আসবা আর আমার কিছু না।।
না তোমার কিছু না,,, দুপুরের জন্য এখনো মৃার উপর রাগ করে আছো,,,আচ্ছা ঠিক আছে দুপুরের জন্য আমি সরি,, আমি ইচ্ছে করে এ মনটা করে নি,,, খুব লেগেছিল না?
আমি কোন কথা বললাম না?
কি হলো কথা বলবা না,, আচ্ছা ঠিক আছে আমি আদর করে দিচ্ছি,, একথা বলে আমার কপালে কয়েকটা চুমু দিল,, তারপর বলল এখন ঠিক আছে তো,, এখন তো রাগ কমেছে নিশ্চয়ই,,,
নাহ এখন ও রাগ কমেনি,,,
কি বলো তুমি,, এখনো রাগ কমেনি,, তাহলে কি করলে রাগ কমবে তোমার,, এক কাজ কর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো,, তাহলে তোমার রাগ কমে যাবে।
(((কি লজিক শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে রাগ কমে যাবে)))
কি হলো ধরো না কেন?
না ধরবো না?
না ধরলে দুপরে যে জায়গায় ব্যথা পেয়েছ সে জায়গায় দিব একটা,,,
কি দিবা,,
বাঁশ দিয়া বারি,,,
কিহহ?
না কিছু না
কিছু মানে তুমি যে বললা বাঁশ দিয়ে বারি৷ দিবা
না বাবু আমি বাঁশ দিয়া বারির কথা বলি নাই,,আমি চুমুর কথা বলছি,,, এই যে আর একটা চুমু দিচ্ছি,,, এবার তো জড়িয়ে ধরো প্লিজ।
আমি কিছু না বলে পাগলীটাকে জড়িয়ে ধরলাম,, সে আমার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো,,,
হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম সে ঘুমাচ্ছে না নড়াচড়া করছে,,, আর বারবার আমার বুক থেকে মাথা তুলে আমাকে দেখছে,,, আগে তো এরকম করে নি,, আমার বুকে শুয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ করে আমাকে বলতে লাগল।
এই
কি?
এই?
কি?
একটা কথা বলব?
হ্যা বল?
আমি না?
হ্যা বল?
আমি না?
কি তুমি না?
আমি না?
আরে কি আমি না আমি শুরু করছো?
আমি মুখে বলতে পারব না কানে কানে বলবো?
আচ্ছা ঠিক আছে বল,,, আমার সিনিয়র বউ কানে কানে যে কথা বলল,,, তা শুনে আমার চোখ চাড়কগাছ হয়ে গিয়েছে,,, সে নাকি আমার আদর পেতে চাই আমার ভালোবাসা পেতে চাই আমার স্পর্শ চাই,, কিন্তু মাগার বেবী টেবির প্লান করা যাবে না,,, সমস্যা নাই,,, আমিতো এর সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিলাম।
সে আমার কানে কানে এ কথা বলে লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো,,, আমি তার মাথাটা আমার বুক থেকে তুললাম,,, তারপর তার দিকে তাকালাম,, সে চোখ বন্ধ করে আছে,,, আর আমি এই সুযোগে আমার ঠোট তার ঠোঁটের কাছে কাছে নিতে লাগলাম,,, তার শ্বাস প্রশ্বাস আমার মুখের উপরে পড়ছে,,, তার বুক দ্রুত ওঠানামা করছে আমি বুঝতে পারছি। একসময় তার ঠোটের সাথে আমার ঠোঁট এক হয়ে যায়,, সে নিজেকে সামলাতে পারছেনা,, আমার প্রতিটি ছোঁয়ায় সে কেপে উঠছে,,, এক সময় দুজন দুজনার মাঝে হারিয়ে যেতে লাগলাম।।
দুটা দিন খুব ভালোভাবে কেটেছে,,, এই দুইটা দিন হিসাব করলে জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন ধরা যেতে পারে়।।।
আজকের বিকাল 5 টা বাজে আমার ফ্লাইট,,, যতা সময় বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ীতে উঠলাম,,,আমার খুব খারাপ লাগছে,,, বন্ধুবান্ধব সবাইকে ছেড়ে এত দূরে চলে যাচ্ছি,,, ভাবতেই কেমন যেন একটা কষ্ট লাগছে,, বন্ধু বান্ধবের সাথে কত আড্ডা উড্ডা দিলাম,, হাসির রং তামাশায় খেলাধুলায় জীবনটাকে মাতিয়ে তুলেছিলাম,, আর হয়তো সেই সোনালী দিনগুলো জীবনে ফিরে আসবে না। শত ইচ্ছে করলেও সব বন্ধু বান্ধব এক হয়ে আর আড্ডা দিতে পারব না,,, কারন ততদিনে হয়তো সবাই যার যার কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে,,,
গাড়িতে বসে আছি,,, গাড়ির ভিতরে কারো মুখের দিকে তাকাতে পারছি না,,, সবার মুখ কালো হয়ে আছে। হয়তো আপন জন দূরে চলে গেলে,, যে একটা কষ্ট বুকে জমা হয় সে কষ্ট থেকে আপনা আপনিই মুখ কালো হয়ে যায়।
গাড়ি এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌঁছালো,,, এখন সবাই থেকে বিদায় নিয়ে ভিতরে ঢুকার পালা,,, মা বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম,,, চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে,,, মা-বাবাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি না,,, বিদায় টা এত কষ্টের হয় কেন,, মা বাবার সামনে দাঁড়াতেই টপ টপ করে চোখ থেকে পানি পড়তে লাগলো,,, আমার মা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে দিলেও সাথে বাবা ও,,, আমিও তাদের কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম,,, ঈশিতার দিকে তাকিয়ে দেখি বার বার ওড়না দিয়ে মুখ মুচছে চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।
মামা এসে আব্বু আম্মুকে বলতে লাগলো,, ওকে জড়িয়ে ধরে যদি এভাবে কান্না করতে থাকো তাহলে ও যাবে কিভাবে,, ফ্লাইট মিস করবে তো। আব্বু আম্মু নিজেদেরকে সামলে নিল,,, তারপর আম্মু আমাকে কপালে চুমু দিয়ে বলতে লাগলো।
বাবা সাবধানে থাকবি,,, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবি,,, বেশি রাত জাগবি না,,, তোর তো আবার রাত জাগার অভ্যাস আছে,,, ঠিক মত পড়ালেখা করবি,,, কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করবিনা,, খারাপ মানুষ থেকে দূরে থাকবি,, খারাপ কোন জিনিস খাবি না,,, সময় পেলেই আমাকে ফোন দিবি,,,, আরো নানান উপদেশ দিতে লাগল,,, হঠাৎ করে বলতে লাগল,,, ওই দেখ ঈশিতা মেয়েটা কিভাবে কান্না করছে,,, যা মেয়েটাকে কিছু বলে আই???
আমি আস্তে আস্তে আমার শাকচুন্নির কাছে গিয়ে দাড়ালাম,,, সাথে সাথে শাকচুন্নি আমাকে জড়িয়ে ধরে,,,ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিল,, আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,,, আরে পাগলী এভাবে কাঁদলে আমি যাব কিভাবে,,, আমার যে ফ্লাইটের টাইম হয়ে গেছে,,, যাবার সময় এভাবে কাঁদলে আমি যেতে পারব,,, কিন্তু আমার শাকচুন্নি আমার কোন কথাই শুনছে না,,, কেঁদেই চলছে,,,
((চলবে)))