Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 2.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সুরাজপুরে শুরু [সংগৃহীত]
#22
"সমু, শুনছো?" বাথরুম থেকে উদিতার গলার আওয়াজ পেলাম, আমাকে ডাকছে। আমি করণকে ইশারায় বললাম কি বলছে শুনতে। বউকে যখন ভাগ করে নিয়েইছি তাহলে বউয়ের অনুরোধ উপরোধও ভাগ করেই শুনতে হবে।
 
করণ দরজার কাছে গিয়ে বললো, "কি হয়েছে উদিতা?"
 
উদিতা কোনও উত্তর দিল না কিছুক্ষণ, তারপরে বললো, "সমুকে ডাকো না একবার প্লীজ।"
 
"সমু ব্যস্ত আছে এখন, আমাকে বলো না", করণের গলায় অধিকারবোধের জোর শোনা গেল।
 
আমি মনে মনে হাসলাম, বেচারা উদিতা, বাথরুমের জায়গায় যদি বেডরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করতো তাহলে আর এত ঝামেলা পোহাতে হতো না। বেডরুমেও একটা অ্যাটাচড টয়লেট আছে। এখন ওই পোশাক পরে বেরোতে হলে আমাদের সকলের সামনে দিয়ে যেতে হবে।
 
ঘরের মধ্যে একটা চরম নিস্তব্ধতা, সবাই কান পেতে শুনছে উদিতা আর করণের কথোপকথন। পাশে সানির ঘর থেকে শুধু টম অ্যান্ড জেরির হাল্কা মিউজিক আসছে। উদিতা আবার অনেকক্ষণ কোনও কথা বললো না। তারপরে উপায়ান্তর না দেখে রিনরিনে গলায় বললো, "এই জামাকাপড়গুলো আর পরা যাবে না, সমুকে বল, বেডরুম থেকে আমার কিছু অন্য জামাকাপড় দিতে।"
 
"কোন কোন জামা আর কোন কোন কাপড় এনে দেবো তোমায়?" করণ উদিতাকে নিয়ে খেলতে লাগলো, মুখে মিচকে হাসি।
 
"করণ প্লীজ!" উদিতা আবার কাতর গলায় বলে উঠলো
 
করণ আবার আমার দিকে প্রশ্নচিহ্ন মুখে তাকালো। আমি বললাম, "শালা তোমারও বউ যখন, তখন কি দেবে কি পরাবে তোমার মতওই ঘরে ডান দিকের আলমারীতে উদিতার জামাকাপড় থাকে। চাবিটা আলমারীর মাথায় রয়েছে।"
 
আমি ভাতটা বসিয়ে সোফাতে চলে এসে আমার পেগটা হাতে নিলাম। ঝা বাবুর আবার এসবে রুচি নেই। উনি এখনো মনোযোগ দিয়ে আমাদের বাংলা কথাবার্তা বোঝার চেষ্টা করছেন।
 
"বউয়ের ভাগ দিচ্ছিস পাক্কা তো? কাল সকালে উঠে আমার বউ আমার বউ করে কাঁদবি না তো?" করণ আমার কাছে এসে বললো
 
"কথা ইজ কথা বন্ধু। আজকেই আংটি বদল করে বিয়েটা সেরে ফেলো। তারপরে গান্ধর্ব মতে বিছানাতে। আমার কোনও আপত্তি নেই।" আমি গেলাসে চুমুক দিয়ে উত্তর দিলাম।
 
করণ ঘাড় হেলিয়ে হেসে বেডরুমে ঢুকে গেল। উদিতার আলমারীতে আমাকেও হাত দিতে দেয় না। গুছিয়ে রেখেছে ওর যত শাড়ী-ব্লাউস-ব্রা-প্যান্টি-সাজার জিনিস। দেখা যাক করণ কি কি বের করে আনে।
 
"আংটি কোথায় পাবে?" অম্লানদা তুম্ব মুখে জিজ্ঞাসা করলেন, "নতুন ছাড়া বউনি করা যায় নাকি?"
 
কথাটা ঠিক, নতুন আংটি ছাড়া এঙ্গেজমেন্ট হয় কি করে। হাল্কা রীতি মেনে করার মধ্যেও বেশ একটা ইরোটিক ব্যাপার আছে সেটাকে অস্বীকার করা যায় না।
 
"ক্যায়া প্রব্লেম হ্যায় সোমনাথ?" ঝা কিছু একটা আন্দাজ করে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো।
 
আমি উত্তর দেওয়ার আগেই অম্লানদা বলে উঠলেন, "আপনি বিবি কি শাদী দোস্ত কে সাথ দে রহেন হ্যায় সাহাব, লেকিন রিং নহি হ্যাঁয়।"
 
"আই বাপরে, শেয়ারড বিবি। ওহ ভী বেস্ট ফ্রেন্ড কি সাথ!" ঝা চোখ কপালে করে বলে উঠলো
 
অম্লানদার ভালোই ঝাঁট জ্বলেছে বোঝা যাচ্ছে। হাঁটে হাঁড়ি ভাঙ্গা শুরু করে দিলেন যদিও তাতে আমার খুব একটা আপত্তি ছিল না। উদিতার সব প্রেমিকদেরই ওকে পাওয়ার অধিকার আছে, কারোর কম কারোর বেশী। এ ভাবনাগুলো মদের নেশায় আসছিল কিনা জানি না কিন্তু উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে দিচ্ছিল ক্রমাগত।
 
"একদম সহি বাত, ইতনী খুবসুরৎ অওরৎ কো সির্ফ অকেলা অপনে পাশ নহি রাখনা চাহিয়ে। দোস্তও মে বাঁট না চাহিয়ে। মেরে পাশ হ্যায় এক দ্যো পিস। থোড়া মহেঙ্গা লেকিন করণ বাবু কি ইজ্জাত কা সওয়াল। লেকর আতা হু।" ঝা দৌঁড়ে বেরিয়ে গেল ঘর ছেড়ে।
 
 
 
করণ উদিতার সাজার বাক্সটা হাতে করে নিয়ে এসেছে বাইরে। ওখান থেকে বেশ কয়েকটা সোনার চুড়ি আরেকটা সোনার চেন বের করে বাথরুমের দরজা নক করলো। বুঝলাম ফুলশয্যা বেশ গুছিয়েই করতে চায়। আমার নিজের ফুলশয্যার কথা মনে পড়ে গেল। হ্যাঁ, উদিতার চুড়ির ছনছন আওয়াজ আমার প্রতিটা ঠাপের তালে তালে একটা অদ্ভূত ঐকতান শুরু করেছিল। করনেরও সেই একই শব্দ শোনার ইচ্ছে আছে।
 
দরজাটা অল্প খুলে উদিতা হাত বাড়ালো শাড়ী-জামা পাওয়ার আশায়। করণ চুড়ি আর চেন ওর হাতে দিয়ে বললো, "এগুলো আগে পরে নাও তারপরে বাকীগুলো দিচ্ছি।"
 
উদিতা বাধ্য মেয়ের মতো সেগুলো পরে আবার দরজায় ঠক ঠক করলো। এরপরে করণ ওর হাতে একটা লাল সায়া, লাল স্বচ্ছ হাতকাটা ব্লাউস আরেকটা কালচে লাল শিফনের শাড়ী তুলে দিল। ব্রা প্যান্টি এখনো উদিতার কপালে জুটলো না। করণও পারে, ওই অতো শাড়ী-জামার মধ্যে থেকে কি করে এই কম্বিনেশনটা খুঁজে পেল কে জানে।
 
 
 
ঝা বাবু প্রায় মিনিট কুড়ি পরে ফিরে এলেন। বললেন যে বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে নানির কাছে রেখে এসেছেন। হাতে একটা দুর্ধর্ষ দেখতে হীরের আংটি। এক লাখের নীচে দাম হবে না। ভদ্রলোক এই মউকাতেও ভালো ব্যবসা করে নিলেন।
 
উদিতা সানিকে খাওয়াচ্ছিল। করণের দেওয়া পোষাকে ওকে দেবীর মতন দেখাচ্ছিল। শাড়ী প্লিট করে না পরায় বুকের খাঁজ, পেটের ভাঁজ, চেরা নাভী সবই আমাদের চোখের সামনে ছিল। আমরা দেশের রাজনীতির, খেলাধুলার বেকার যত বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। কিন্তু সকলেরই নজর উদিতার প্রতিটা নড়াচড়ায় আটকে ছিল।
 
খাওয়ার পরে সানি টিভিতে আরও কিছুক্ষণ কিসব হাবিজাবি কার্টুন দেখতে থাকে। অন্য দিন হলে ওকে বকেঝকে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু আজকে কারোরই অতো কিছু করার ধৈর্য্য নেই। সানির ঘরের দরজা ভেজিয়ে দিয়ে উদিতা আমাদের মাঝে এসে দাড়ালো। একটু অস্বস্তিতে ছিল অম্লানদা আর ঝাকে ওখানে দেখে। ওদের কাউকেই ও পছন্দ করে না আর চায়ও না এই একান্ত গোপনীয় ব্যাপারটার সাক্ষী আর কেউ থাকুক।
 
"সমু, পাগলামি তো অনেক হল, এবার চলো যে যার ঘরে চলে যাক।" উদিতা শেষ চেষ্টা করলো ভণ্ডুল করার। কিন্তু ঘরের তিনটে মাতাল আর একটা লম্পটের কানে কোনও আবেদন-নিবেদনই ঢুকল না।
 
আমি উদিতাকে টেনে আমার পাশে বসালাম। সত্যি ওকে এখন উর্বশীর মতই লাগছে। লাল শাড়ী, লাল ব্লাউসে ওর ফর্সা গায়ের রঙ যেন আরও ফেটে পড়ছে। দুটো গাল লাল হয়ে আছে উত্তেজনায়, গা এখনো কাঁপছে। নিঃশ্বাসের দ্রুত ওঠানামায় ফুলে উঠছে স্তনভার।
 
করণ ঝায়ের কাছ থেকে আংটিটা নিয়ে উদিতার বাঁ হাতে পরাতে গেল। সেখানে আমাদের বিয়ের আংটি আগে থেকেই পরা ছিল। উদিতা ডান হাত এগিয়ে দিল মাথা নীচু করে। করণ মৃদু হেসে ডান হাতের অনামিকাতেই পরিয়ে দিল। উদিতা হাতটা সরিয়ে নেওয়ার আগেই ওকে টেনে দাঁড় করিয়ে পাঁজাকোলা করে তুলে নিল। উদিতা চরম আতঙ্কে করণের গলা জড়িয়ে চেপে ধরলোওকে নিয়ে করণ বারান্দায় বেরিয়ে গেল আর কাচের দরজাটা টেনে দিল। গভীর চুম্বনে লিপ্ত হল ওরা খোলা বারান্দায়। বুঝলাম করণ উদিতার সাথে এই মুহূর্তটা আর কারোর সাথে বাঁটতে চায় না। ওর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে আমি বারান্দার ব্লাইন্ডারগুলো টেনে দিলাম।
 
ঝা আর অম্লানদার কাছে ইঙ্গিত ছিল যে আজকের মতন শো শেষ, এবার ওরা উঠতে পারেন। অম্লানদা এত রাতে কি করে একা ফিরবেন তা নিয়ে গাঁইগুই করতে লাগাতে ঝা ওকে ওর ফ্ল্যাটে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেন। অম্লানদার তাতে কোনও আপত্তিই ছিলো না, উদিতার যত কাছাকাছি থাকা যায় ততই ভালো।
 
ঝা শুধু বেরোনোর সময় বলেছিল, "হম ভী তো দেবর হ্যায়, ভাবী কো কভি কভি হমারে বারেমে ভী সোচনে কো বোলিয়ে গা।" ইঙ্গিতটা পরিস্কার ছিল আমার কাছে।
 
"দরওয়াজা খুল্লা ছোড় দুঙ্গা, জব মন চাহে আ জানা, তব সোচেঙ্গে।" আমি চোখ মেরে বলেছিলাম।
 
"জব রেডি হোঙ্গে জাস্ট এক মিসড কল মার দেনা, বান্দা হাজির হো জায়েগা।" ঝায়ের চোখ চকচক করে উঠেছিল।
 
ওরা বেরিয়ে গেলে আমি সত্যি দরজার লক লাগালাম না। কেন কে জানে। ঘরের লাইট নিভিয়ে ব্লাইন্ডারের ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখলাম উদিতাকে করণের গায়ের সাথে লেপটে আছে। আমি সানির ঘরে এসে ওকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করা শুরু করলাম।
[+] 3 users Like ray.rowdy's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সুরাজপুরে শুরু [সংগৃহীত] - by ray.rowdy - 16-01-2020, 03:38 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)