16-01-2020, 01:35 AM
করণ
জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে করণ ছুটে চলল ঝড়ের মতন। আমি হাঁফাতে হাঁফাতে মনের মধ্যে হাজার রকম যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ করে অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করে যেতে লাগলাম। জল আমার মাথার অনেক ওপর দিয়ে বইছে।
ঘুরঘুট্টি অন্ধকারের মধ্যে করণ যেন নাইট ভিশন ক্যামেরা দিয়ে দেখতে পাচ্ছিল। রাস্তাটা পুরোটাই কাঁচা। চাকার চাপে নুড়ি কাঁকড়ের ছিটকে যাওয়ার শব্দ আর ইঞ্জিনের একটা খুবই মৃদু ঘড়ঘড় আওয়াজ ছাড়া বাকী সব কিছু যেন নিঝুম মেরে আছে। কুয়াশার চাদরটা ছড়িয়ে আছে ইতস্ততঃ। আমার খটকা লাগছিল জীপের আওয়াজটা। আজ পর্যন্ত যতগুলো জীপ গাড়ীতে চড়েছি এটা তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম শব্দ করে। নাহ শুধু জীপ নয়, কলকাতায় আমার যে মারুতি এসএক্স ফোরটা আছে তার চেয়েও কম শব্দ। অদ্ভূত, অথচ আমি গাড়ীটাকে দেখেই চিনতে পেরেছিলাম। এটা যোঙ্গা। ভারতের সেনাবাহিনী এই গাড়ীটা ব্যবহার করে। আমি বি.আর.ও.-তে থাকাকালীন অনেক দেখেছিলাম। ঘন কালো ধোঁয়া আর ইঞ্জিনের আওয়াজ দেখে দূর থেকেই বোঝা যেত। হয়তো আমারই ভুল বা করণ যা ওঁচা ছেলে, নির্ঘাৎ কোনও দামী সাইলেন্সার লাগিয়েছে গাড়ীতে।
করণ কোনও কথা বলছে না। ওকে অনেক মনোযোগ সহকারে চালাতে হচ্ছে। আমি রাইফেলটা আঁকড়ে মনমড়া হয়ে গাড়ীর ঝাঁকুনি সামলাতে লাগলাম। উদিতাকে একা ফেলে আসতে একদম ইচ্ছে করছিল না। বেচারীর ওপর দিয়ে ওরকম একটা ধাক্কা গেল তার ওপরে অম্লানদার হাবভাব একেবারেই ভাল ছিল না। উদিতার ঘুমিয়ে থাকা অবস্থার খারাপ সুযোগ নিতে পারে। তবে লোকটাকে দেখে মনে হয় না একটু উঁকিঝুঁকি মেরে দেখা বা বড়জোর হাত-টাত দেওয়া ছাড়া বেশী কিছু করতে পারবে। প্রিয় বন্ধু করণের সাথে অ্যাডভেঞ্চারের হাতছানিকে এড়ানো অনেক বেশী কঠিন ছিল। আশা করি উদিতাকে পরে বুঝিয়ে বলতে পারবো।
বেশ বুঝতে পারছিলাম একটা ভালোই গোলমালে জড়িয়ে পড়েছি। আমার হাতের .২২ বোর বন্দুকটা আজকাল খেলাধূলার জগতেই বেশী ব্যবহার হয়। গ্রাম-জঙ্গলের দিকে অনেকেই এটা রাখে ছোটখাটো শিকার বা আত্মরক্ষার জন্যে। এটা দিয়ে শেষ কবে কোনও মানুষ মরেছিল তার বোধহয় হিসেব নেই। তবে জখম করতে পারবে কাউকে। করণের পিস্তলটাও পুঁচকে মতন। লুকিয়ে ফেলার জন্যে আদর্শ। তবে যে জিনিসটা এখনো মনের ভিতরে খচ খচ করে চলেছে সেটা ওর চকচকে খুকরিটা। ওই জিনিসটা কোনও সাধারণ লোক সাধারণ অবস্থায় বারান্দার জুতার রেকে লুকিয়ে রাখবে না। আমি করণের দিকে অপাঙ্গে তাকালাম। কালো শাল জড়ানো আমার ছেলেবেলার বন্ধুটাকে একটু অচেনা লাগছে নাকি।
মিনিট দশেক চালানোর পর একটা কালভার্টের কাছে গিয়ে দাঁড় করালো জীপটাকে। চারদিকে কুয়াশাতে দশ মিটার পরের কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না।
"এটা কোথায় দাঁড় করালি?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
করণ নেমে গিয়ে কালভার্টের কাছটায় মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে বললো, "কালভার্টের ওপাশটা দেখ। ওটাই সাঁওতাল বস্তি। ওরা এখান দিয়ে ডান দিকে বেঁকে গেছে। ইয়াদবের একটা পেল্লাই রেংলার আছে। ভেজা মাটিতে দাগ বোঝা যাচ্ছে।"
"...ডানদিকের রাস্তাটা ওই সোজা রেল লাইনের পাশ দিয়ে অবন্তীপুরের দিকে চলে গেছে।"
"শালা, ফেলুদারও দাদা দেখছি। দেখতে পাচ্ছিস কি করে এত কিছু?" আমি সীটের ওপরে উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
"হ্যাঁ, সিধু জ্যাঠা বলতে পারিস," করণ হেসে বললো, "আমরা ডান দিক দিয়ে যাব না। এদিকে কোনও কভার নেই। ওরা যদি লাইনের ধারের ভাঙ্গা ওয়াগনগুলোর কাছাকাছি থাকে তাহলে অনেক আগে থেকে আমাদের দেখতে পেয়ে যাবে। আমরা বাঁ দিকের কাঁচা রাস্তা দিয়ে জঙ্গল হয়ে ঘুরপথে যাব। শেষ দিকের কিছুটা হেঁটে বা দৌঁড়ে পেরোতে হবে।"
"আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। তোর পরিকল্পণাটা কি? আমরা লুকিয়ে যাব কেন? গাড়ীর হেডলাইট জ্বালিয়ে জোরে হর্ন মারতে মারতে যাব। যাতে ওরা গোলমাল দেখে মেয়েটাকে ছেড়ে ভয় পেয়ে চলে যায়।" করণের পরিকল্পণাটা আমার মাথায় ঢুকলো না। ছেলেগুলোকে তো আর আমরা অ্যারেস্ট করতে যাচ্ছি না। মউয়াকে যে ভাবে হোক ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
"সামশের সিং সিঙ্ঘ সুরাজপুরের সুলতান। ও আমাদের গাড়ীর আওয়াজে পালাবে না রে। ওর কাছে একটা এস.এল.আর. আছে যেটা দিয়ে আধ কিমি আগেই আমাদের ঘিলু উড়িয়ে দেবে। জানি না আজকে সেটা নিয়ে ঘুরছে কিনা।" করণ আমার যুক্তি এক কথায় নস্যাৎ ত করে দিল।
"করণ, উদিতা জানতেও পারলো না আমরা এইসব করছি। জানলে ও কিছুতেই আসতে দিত না। পুলিশকে খবর দিলে হয় না? এসব তো আমাদের ধরাছোঁওয়ার অনেক ওপর দিয়ে যাচ্ছে।" আমার গলাটা একটু ধরে এলো। উদিতার মায়াবী মুখটা মনে পড়েই হয়তো। আমার এই খেলনার মতন বন্দুক আর ওই পুঁচকে পিস্তল নিয়ে সেমি-অটোমেটিকের সামনা করতে হবে ভেবেই পেটের ভিতর গুড়গুড় করে উঠলো।
"সোমনাথ, এই জঙ্গলে বানচোত পুলিশ শুধু লাশ কুড়াতে আসে রে। আমরা শুধু মেয়েটার জান বাঁচানোর চেষ্টা করছি, ইজ্জত তো ছেড়েই দে। কাল সকাল অবধি অপেক্ষা করলে মউয়ার ল্যাঙটো শরীর ওই খাল দিয়ে ভেসে আসবে।" করণ ঠাণ্ডা গলায় বললো।
- "তোকে উদিতার কাছ থেকে সরিয়ে আনতে আমার কি খুব ভাল লেগেছে হতভাগা। সত্যি বলতে কি আজকে আবার তোর বউয়ের প্রেমে পড়লাম রে নতুন করে। এত সুন্দরী একটা মেয়ে আমার বাড়ী এসেছে, আমারও কি ইচ্ছে করে নাকি রাস্তায় গিয়ে রংবাজি করতে?"
"শালা মাদারচোদ, পুরকি তোমার যায় না। লম্পটের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে গিলছিলি চোখ দিয়ে, তাতেও আশ মেটেনি। যাহ্ আজকে ভালোয় ভালোয় বাড়ী ফিরলে চুদিস আমার বউকে।" আমি নকল রাগ দেখিয়ে বললাম।
"আলবাৎ চুদবো, প্রাণের আশ মিটিয়ে আগামী সাতদিন ধরে মস্তি করবো। শালা সুরাজপুরে কেউ জবান দিলে ফেরৎ নিতে পারে না। চল জলদী করে কাজ মিটিয়ে বাড়ী ফিরি। আজ রাত থেকেই শুরু হবে তাহলে।" করণ গাড়ীতে ফিরে স্টার্ট দিয়ে দিল।
আমি হেসে ফেললাম ওর কথা বলার ভঙ্গিতে। মালটার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। আজ কতদিন পরে দেখা হল। ফাইন্যাল ইয়ারের পরে মাঝে একবার দিল্লীতে দেখা হয়েছিল। তখনো আমার বিয়ে হয়নি। খুব ব্যস্ত ছিল। দু' মিনিটও কথা হয়নি। তারপরে মাঝে মধ্যে ফোন করতো, উদিতা আর আমার খবর নিত। তারপরে পাঁচ-ছয় বছর একদম বেপাত্তা। গত বছর পূজোর আগে হঠাৎ ফোন আর সেভাবেই আবার যোগাযোগ শুরু। না চাইতেও হঠাৎ কল্পণা করে ফেললাম, করণ আর উদিতাকে একসঙ্গে, নিবিড় আলিঙ্গনে। বলতে নেই, মন্দ লাগলো না ভাবতে।
"একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস সমু?" করণ বললো।
"নাহ তো... কি?" উদিতা আর করণের কাল্পনিক রোঁম্যান্স ভেঙ্গে আমি জবাব দিলাম।
"এত বড় একটা ঘটনা ঘটলো আর সাঁওতাল বস্তি পুরো শুনশান। কেউ বাইরে বেরিয়ে হইচই করছে না। এর আগে এরকম একটা ঘটনা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। সবাই সড়কি-মশাল নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিল। আজকে কোত্থাও কেউ নেই। এই জঙ্গলের রাস্তাতেও মাঝরাত অবধি অনেকে তাড়ি খেয়ে পরে থাকে বা নিজের, অন্যের বউকে নিয়ে মস্তি করে।" করণ ভ্রূ কুঁচকে বললো।
"হয়তো সবাই ভয় পেয়ে আছে। তুই তো বলছিলি এখানে সবাই ইয়াদবকে যমের মতন ভয় পায়।" আমি আমতা আমতা করে যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করলাম। আমি সুরাজপুরে এসেছি বারো ঘণ্টাও হয়নি। এর মধ্যেই ঘটনার ঘনঘটায় কুপোকাৎ প্রায়।
করণ তাও বিড়বিড় করে বলে চলল, "...জোছনার বর আজকে তিন বছর পরে বাড়ী ফিরছে কেন...?"
করণ যখন এতবার করে বলছে তখন কিছু একটা গোলমাল তো আছেই। আমি রাইফেলটাকে একটু বাগিয়ে ধরে বসলাম। এই সামশের সিং সিঙ্ঘটা আবার কে কে জানে? করণ নিত্য নতুন নাম বলছে। ইয়াদবের কোনও এক চ্যালা যে এস.এল.আর. নিয়ে ঘোরে। আজকে যদি আমাদের ভাগ্য খুব ভাল থাকে তাহলে হয়তো সেটাকে আনবে না কিন্তু নেহাৎ খালি হাতে তো আর সাওতাল বস্তি থেকে মেয়ে তুলতে আসবে না। যা আনবে তাই আমাদের স্বর্গপ্রাপ্তির জন্যে যথেষ্ট।
প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে গাড়ীটা হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল। আমার হাত থেকে বন্দুকটা প্রায় রাস্তায় পড়ে যাচ্ছিলো, কোনওমতে সামলালাম। করণের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও এক দৃষ্টে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। এই অন্ধকারে কি দেখছে কে জানে।
"কি হল রে করণ? কোনও জংলী জানোয়ার নাকি?" আমি ফিস ফিস করে বললাম।
"পার্কিং লাইটটা একবার জ্বালাবো তার মধ্যে দেখে নিস। বাঁ দিকের ঝোপের পাশের গাছটার দিকে তাকা।" করণ আরও চাপা গলায় বলে উঠলো। পার্কিং লাইট একবার জ্বালিয়েই নিবিয়ে দিল।
"দেখতে পেলি গামছাটা?" করণ আস্তে করে গাড়ীটাকে রাস্তার ডানদিকের ঢাল ধরে নামিয়ে দিল। আমি আবছা দেখতে পেয়েছিলাম কোনও একটা ছোটো কাপড়ের টুকরো ঝুলছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু তাতে এতো আশ্চর্য্য হওয়ার কি আছে বুঝতে পারলাম না। গাড়ীর ইঞ্জিন বন্ধ করে ফিস ফিস করে বললো, "নেমে পড়... এই রাস্তায় আর যাওয়া যাবে না। আই ই ডি পোঁতা আছে।"
"যাহ্ শালা..." আমার মুখ ঝুলে পড়লো। "কি করে বুঝলি?"
- "ওই গামছাটা সিগন্যাল, তাদের জন্যে যারা জানে।"
"কি জানে? আর তুই কি করে জানলি? এসব কি হচ্ছে করণ?" আমি ওর শালটা খামচে ধরলাম। অক্টোবরের ঠাণ্ডাতেও আমি ভিতরে ভিতরে ঘেমে ভিজে গেছি। সব কিছু ছেড়ে ছুটে পালাতে ইচ্ছে করছে।
"জানার জন্যে চোখ খোলা রাখতে হয়। আমি এই রাস্তা দিয়ে পরশু রাতেও গেছি। কোথাও কিছু ছিল না। সুরাজপুরের জঙ্গলে কেউ অকারণে গাছে কাপড় বেঁধে রাখবে না। এই একটাই রাস্তা সোজা গেছে হাজারীবাগের সি.আর.পি. ক্যাম্পে এখান থেকে মাইল কুড়ি দূরে। অন্য রাস্তাটা অবন্তীপুরের দিক দিয়ে ন্যাশনাল হাইওয়েতে মিশেছে। আর আছে রেল লাইন। অবন্তীপুরে গোলমাল হলে সি.আর.পি. এই রাস্তা দিয়েই আসবে। এই ফাঁদটা ওদের জন্যেই পাতা হয়েছে। লাল পার্টি মনে হয় আসছে ইয়াদবের ঘাঁটির দখল নিতে।" করণ এক নিশ্বাসে বলে গেল। জীপের বনেটটা খুলে দ্রুত হাতে কি সব করছে যেন।
"উদিতা যে বাড়ীতে একা আছে করণ, চল ফিরে চল। এসব আমাদের ক্ষমতার অনেক বাইরে।" আমি কাতরভাবে অনুনয় করে উঠলাম। সুরাজপুরের জঙ্গলে মাওবাদীদের গুলি খেয়ে খবর হওয়ার মতেই ইচ্ছে নেই আমার। "সুমন সন্ধ্যেবেলা একবার ঘুরে গেছে তোর বাড়ীতে। আমাদের হাতে মার খেয়েছে। বদলা নিতে আসতেই পারে।"
"লাল পার্টি আমার বাড়ী যাবে না। ওখানে ওদের কিছু পাওয়ার নেই। ওরা যাবে ইয়াদবের কোঠায়। সুমন বদলা নিতে হয়তো আসবে পরে, আজকে রাতে ভাঙ্গা হাত নিয়েই ব্যস্ত থাকবে রে। এখন আগে মউয়াকে বাঁচাতে হবে।" করণ একই ভাবে বলে গেল।
- "আঃ, পেয়েছি।"
আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে বললো, "স্পার্ক প্লাগগুলো খুলে নিলাম, আর কেউ ইউজ করতে পারবে না গাড়ীটা।" কোমরের পিছন থেকে পিস্তলটা নিয়ে এসে লক করে নিল। আমার কাছে এসে বললো, "এই জঙ্গলের ভিতর দিয়ে উত্তরের দিকে মিনিট দশেক চললেই কাশ বনটা পড়বে। ওখান থেকে ডান দিকে ভাঙ্গা ওয়াগনগুলো দেখা যায়। কাশ বনটা আমাদের কভার দেবে ভাল। তুই আমার থেকে তিন মিটার পিছনে পিছনে এইট ও' ক্লকে থাকবি সবসময়। ওয়াগনগুলোর কাছাকাছি গিয়ে আবার প্ল্যান করবো নেক্সট স্টেপস। ক্লীয়ার?"
বেকুবের মতন ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললাম। বিশ্ববখাটে করণ কি করে এরকম একের পর এক খেল দেখাচ্ছে বুঝতে পারলাম না। মনে হচ্ছে এখানকার পথঘাট হাতের তালুর মতন চেনে। আমাকে এখনো বালিগঞ্জের রাস্তায় ছেড়ে দিলে হারিয়ে যেতে পারি। তিন বছরে করণ এখানে কতবার এসেছে? ওর তো বম্বেতে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা আছে জানতাম। ব্যবসায়ীরা কি এতটা পাগল হয়। কোথাকার কোন এক মেয়ের জন্যে এত বড় ঝুঁকি নিচ্ছে। শালা আমাকেও ফাঁসাচ্ছে।