14-01-2020, 02:09 PM
পর্ব ২৩
"""এদিকে ঈশিতা তার প্রিয় মানুষের এ অবস্থা দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে নাই,,, সাথে সাথে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।।
ফারাবীর বন্ধুবান্ধব খালা খালু দৌড়ে ফারাবীর কাছে যাই,,, এবং ফারাবীকে ডাকতে থাকে,,,, কিন্তু ফারাবীর কোন সারা শব্দ নাই,,,, সবাই কান্না করতে থাকে তাদের প্রিয় বন্ধু জন্য।।
ফারাবীর খালা ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে আহাজারি করতে থাকে,,,, এবং ফারাবীর বুকে কান পেতে বোঝার চেষ্টা করছে ফারাবীর শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে কিনা,,,,,, কিন্তু না ফারাবির কোন শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে না।।
ফারাবীর খালামণি আরো জোরে জোরে কান্না করতে থাকে,,,, এবং তার স্বামীর শার্টের কলার ধরে বলতে লাগে।।
তুমি দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে কি দেখো। কিছু একটা কর না,,, ফারাবী যদি মারা যায়,,,তাহলে আমার বোন তো পাগল হয়ে যাবে।। আমার কোন ছেলে নাই,,,,, আমার বোনের একটা মাত্র ছেলে,,,, ওর কিছু হয়ে গেলে তো আমার বোন সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবে?
তোমার মেয়ের কথা একবার চিন্তা কর।।
ফারাবীর খালু দিশেহারা হয়ে গেলে। একজনের জায়গায় এখন চারজনের অবস্থা সিরিয়াস।।।। ফারাবীর খালু বলতে লাগলো,,, চিন্তা করো না,,, আল্লাহ যদি সহায় হোন,,,, তাহলে ফারাবী বাঁচবে,,,,, আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব।।
অ্যাম্বুলেন্স কে ফোন করা হলো,,, অল্প কিছুক্ষনের ভিতর অ্যাম্বুলেন্স এলে,,, সাথে সাথে ফারাবীকে অক্সিজেন মাক্স লাগিয়ে গাড়িতে তুলে,,,, সাথে যারা জ্ঞান হারিয়েছে তাদের কেউ।।।
গাড়ি কুমিল্লা জেনারাল হসপিটালে পৌঁছালে,,,, ডাক্তার দূরত্ব ফারাবীকে ইমারজেন্সিতে ভর্তি করে,,,,,, তখন পর্যন্ত যারা জ্ঞান হারিয়েছে তাদের জ্ঞান ফিরে নাই”” আধাঘন্টা পর ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে,,, ফারাবীর খালা খালু ডাক্তারের কাছে যাই,,, ডাক্তার বের হয়ে বলতে লাগল""" ওর অবস্থা এত গুরুতর যে,,, আমাদের পক্ষে এখানে চিকিৎসা করা সম্ভব না,,, আপনারা ওকে ইমিডিয়েটলি ঢাকাই শিফট করুন,,,, আমরা ওর ক্ষত জায়গা গুলো পরিষ্কার করে দিয়েছি,,,, আর রক্ত বের হবে না।
আপনারা এখন যত দ্রুত পারেন ওকে ঢাকায় নিয়ে যান। দেরি করলে হয়তো ওকে বাঁচানো সম্ভব না।।
একথা শুনে ফারাবির খালা কান্না করতে লাগল,,, এখন আমরা কি করব,,,, ফারাবীকে বুঝি আর বাঁচাতে পারলাম না।
ফারাবীর খালু বলতে লাগলো আহা টেনশন করো না,,, একটা ব্যবস্থা করছি,,,
ফারাবীর খালুর হেলিকপ্টার ভাড়া করে,,,
ফারাবীকে হেলিকপ্টারে তুলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই,,,, হেলিকপ্টার যখন ভাসমান শূন্য আকাশে দ্রুত বেগে চলতে লাগলো,,,, তখন ফারাবীর আম্মুর জ্ঞান ফিরে,,,, জ্ঞান ফেরার পর আবারো প্রিয় সন্তানের জন্য আহাজারি করতে শুরু করে,, তোমরা আমার ফারাবীকে আমার কোলে ফিরিয়ে দাও,,, আমার একটা মাত্র ছেলে,,, সে যদি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায়,,,, তাহলে আমরা কি নিয়ে বাঁচবো,,, কে আমাকে মা বলে ডাকবে,,, আমার যে আর কোন সন্তান নাই,,, এ কথা বলে হাজারী করতে করতে আবারও জ্ঞান হারালো।। ফারাবীর আম্মুর কাথা শুনে,,, ফারাবীর খালা খালু নিজেদেরকে সামলানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে,,,,,
কিছুক্ষণ পরে ফারাবীর আব্বু ও জ্ঞান ফিরে,,,, উনার মুখে কোন কথা নাই,,, মনে হই প্রিয় সন্তানের জন্য বোবা হয়ে গিয়েছে,,, ফারাবীর খালো ফারাবির আব্বুকে সান্তনা দেবার চেষ্টা করছে।।
এদিকে ঈশিতার এখনো জ্ঞান ফিরে নাই,,,
হেলিকপ্টার ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছালে,,,
ডাক্তার ফারাবীর গুরুতর অবস্থা দেখে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে ট্রিটমেন্ট করতে থাকে,,,,
এদিকে ততক্ষণে ঈশিতার জ্ঞান ফিরেছে,, ওকে কোনোভাবেই সামলানো যাচ্ছে না।
তার প্রিয় মানুষটির জন্য একবারে পাগল পারা হয়ে গিয়েছে,,,, মাকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,,মা কী হয়েছে আমার ফারাবীর।। তুমি কথা বলোনা কেন,,, আমার ফাবীর কিছু হয়েছে,,,, ফারাবীর কিছু হলে যে আমি বাচঁবো না,,, আমার কাছে আমার ফারাবীকে এনে দাও,,,
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে,, একটা পর্যায়ে আবারো জ্ঞান হারালো,,,,
আধাঘন্টা পর দুজন ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই,,, ডাক্তারের চেহারায় দুঃখের আভা দেখা যাচ্ছে,,,, ফারাবীর আব্বু জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে ডাক্তার,,,, আমার ছেলে বাঁচবে,,,, ডাক্তার বলতে লাগলো,,,, দেখুন আপনার ছেলের অবস্থা এতটাই গুরুতর যে ওকে হয়তো বাঁচানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না,,,,
এ কথা শোনার সাথে সাথে ফারাবির আব্বু ডাক্তারের হাত ধরে বলতে লাগলো,,, ডাক্তার যে করে হক আমার ছেলেকে বাঁচান,,, যত টাকা লাগে আমি দিবো,,, দরকার হলে আমি আমার সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিব??
(ডাক্তার) দেখুন টাকা দিয়ে সবকিছু হয় না। হায়াত মউত আল্লাহর হাতে,,, আমরা শুধু চেষ্টা করে থাকি,,,, আমার এক বন্ধু আছে ডাক্তার ইব্রাহীম হামিদ,,,, ওকে ফোন দিয়েছি কিছুক্ষনের ভিতর চলে আসবে,,, দেখা যাক কি করে যাই।।।
★ কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদ এসে ফারাবীকে 1 ঘন্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাইরে বের হয়ে আসে,,,,,
ফারাবীর আব্বু দৌড়ে ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদের কাছে যায়,,,, ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদ বলতে লাগলো আপনার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ,,,, ডাক্তার কথা শেষ করতে পারল না তার আগেই ফারাবির আব্বু ডাক্তারের হাত ধরে ফেলে,,,,, ডাক্তার আমার একমাত্র ছেলে,,,, ওকে ছাড়া আমাদের আর কেউই নাই,,,, যে করে হোক আমার ছেলেকে বাঁচান।।
(ডাক্তার) দেখুন চিন্তা করবেন না,,, আল্লাহর উপর ভরসা করুন,,,, দেখুন আপনার ছেলের শরীর থেকে এত পরিমান রক্ত বের হয়েছে যে,,, ও এতক্ষণ বাঁচার কথা না,,, হয়তো আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসায় এখনো বেচেঁ আছে।।
কিন্তু আগামী 30 মিনিটের মধ্যে যদি ওর শরীরে A (-) পজেটিভ রক্ত পোস না করা হয়,, তাহলে হয়তো আর শ্বাস প্রশ্বাস নিবে না? এখন যত দ্রুত সম্ভব A(-) পজিটিভে ৬ থেকে৭ রক্তের ব্যবস্থা করুন। 30 মিনিট ওভার হয়ে গেলে ওকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না।।।
সাথে সাথে ফারাবীর আব্বু খালু বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংক ফোন করতে লাগলো,,, কথায় আছে বিপদ যখন আসে তখন চারপাশ থেকে আসে,,,, কোন ব্লাড ব্যাংক থেকে এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারলো না,,,
বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবার কাছে ফোন করা হয়েছে কারো রক্তের সাথেই ফারাবীর রক্তের গ্রুপ মিলেছে না।। তারা দিশেহারা হয়ে গিয়েছে,,,, এ বুঝি তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে ফেললো?
এদিকে ফারাবীর আম্মুর জ্ঞান ফিরেছে,,, জ্ঞান ফেরার পর যখন শুনল কোন রক্তের ব্যবস্থা হচ্ছে না,,,, তখন কাঁদতে লাগলো আর বিলাপ করতে লাগল,,, আমার ছেলে কি তাহলে আমার কাছে ফিরে আসবে না,, আমাকে মা বলে ডাকবে না,,, আমি কি নিয়ে থাকবো,,,, কাকে বাবা বলে জড়িয়ে কপালে চুমু দিব।। শেষ বার
আমার কলিজার টুকরো ছেলেটাকে একবার জড়িয়ে ধরতে পারিনি। একনাগাড়ে বিলাপ করে যাচ্ছে,,, আসলে কোন মায়ের একমাত্র ছেলে যদি অকালে তাদের কাছ থেকে হারিয়ে যায়,,, তা যে ঐ মায়ের জন্য কতটা কষ্টের কতটা বেদনার,, কতটা যন্ত্রণার শুধু ঐ মা ওই উপলব্ধি করতে পারে।।
অলরেডি ২৫ মিনিট ওভার হয়ে গেছে,, এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারে নাই,,, ডাক্তার বের হয়ে আসলো এসে জিজ্ঞাসা করল রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে।।
ফারাবী আব্বু চোখ দুটো নিচের দিকে দিয়ে না সূচক বাক্য উচ্চারণ করলো,,, তার চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি ফ্লোরে পড়তে লাগলো,,,,, একজন বাবা হয়ে তার প্রিয় সন্তানকে রক্তের কারণে শেষ হতে দেখে কিভাবে নিজেকে সামলাই।।।
ডাক্তার ফরাবীর আব্বুর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছে,,, এই চোখে যে কত আকুতি মিনতি খেলা করছে,,, প্রিয় সন্তানকে বাচাঁনোর জন্য।।
ডাক্তার চোখ নিচের দিকে দিয়ে বলতে লাগলো।
দেখুন A (-) পজিটিভ রক্তের ব্যবস্থা না হলে আপনার ছেলেকে আর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না,,,, আমরা দুঃখিত।
এদিকে ঈশিতার জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষণ আগে,,, জ্ঞান ফেরার পর থেকে এক নাগাড়ে কেদেই যাচ্ছে,,, ডাক্তারের মুখ থেকে যখন শুনলো A(-) পজিটিভ রক্ত না হলে ফারাবীকে বাঁচানো যাবে না?
ঈশিতা এ কথা শুনে দৌড়ে গিয়ে ডাক্তারের পা জড়িয়ে ধরল,,, আর বলতে লাগলো ডাক্তার আমার ফারাবীকে বাঁচান,,, আপনার যা কিছু লাগে আমরা দিব?
((ডাক্তার)) দেখুন টাকা দিয়ে কিচ্ছু হবে না,,, ওর রক্ত দরকার?
ঈশিতা বলতে লাগলো ডাক্তার ফারাবীর রক্ত আমার রক্ত এক আমার শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নেন,,, তারপরও আমার ফারাবীকে আপনি বাঁচিয়ে দেন।
(ডাক্তার) দেখুন আপনার শরীর থেকে এত পরিমান রক্ত নিলে আপনি মারা যাবেন।।
ঈশিতা বলতে লাগলো ডাক্তার ফারাবীকে ছাড়া আমি বেঁচে থেকে কী করব,,,, ওকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা যে আমার মৃত্যুর সমান মনে হবে,,,, ওকে ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনাও করতে পারি না।। আমি বেঁচে থাকতে ওর মৃত্যু আমি সহ্য করতে পারবো না,,, আমার শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নিন।
ফারাবীর আব্বু আম্মু ঈশিতার কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছে,, তারা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে ঈশিতা ফারাবীকে এতটা ভালবাসি,, এবং ফারাবীর রক্তের গ্রুপ আর ঈশিতার রক্তের গ্রুপ এক?
ইশিতার কথা শুনে ডাক্তার বলতে লাগলো তা কখনো সম্ভব না,,, আপনার শরীর থেকে সব রক্ত নেওয়া মানে আপনাকে সে ইচ্ছায় হত্যা করা,, আমাদের কাজ মানুষকে বাঁচানো,,, কাউকে হত্যা করা না,,,, আপনি আমাদের সাথে আসুন আপনার শরীর থেকে ততটুকু রক্ত নিব যতটুকু রক্ত নিলে আপনি বেঁচে থাকবেন।।
ডাক্তার ঈশিতার শরীর থেকে তিন ব্যাগ রক্ত নিল।। তিন ব্যাগ রক্ত দিয়ে ঈশিতা দুর্বল হয়ে পড়েছে।।
তারপর ডাক্তার এমার্জেন্সি তে গেল ঘন্টা দুয়েক পর ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যায়,,
ডাক্তার জোরে একটা নিশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো,,, আপনার ছেলের শরীরে তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে,,, কিন্তু সে রক্ত আপনার ছেলের শরীরে কাজ করছে না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি,,,,, আমাদের আর কিছু করার নাই,, আমাদের ক্ষমা করবেন।
আপনারা ওকে,যত দ্রুত পারেন ওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য,, বাহিরে কোন রাষ্ট্র নিয়ে যান।।।
এ কথা শুনে সবাই দিশেহারা হয়ে গেছে,,, কি করবে এখন,,,,, ঈশিতার আব্বু সেনাবাহিনীতে কাজ করে দু ঘন্টার ভিতরে সিঙ্গাপুরের টিকেট কেটে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হস্পিতাল নেওয়া হয়।।।
ডাক্তার ফারাবীর গুরুতর অবস্থা দেখে আই সি তে ভর্তি করায়,,,, তারপর সেখানের কয়েকটা ব্লাড ব্যাংক থেকে 5 ব্যাগ রক্তের
রক্তের ব্যবস্থা করে??
টানা 9 ঘণ্টা ধরে দুজন ডাক্তার ট্রিটমেন্ট করে কেবিন থেকে বের হয়ে আসে।
সাথে সাথে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই,,,, ডাক্তার দুঃখের সহিত বলতে লাগলো,,,, আপনার ছেলেকে রক্ত দেওয়া হয়েছে,,, এবং ওর যাবতীয় সব ট্রিটমেন্ট ভালোভাবে হয়েছে,,,, কিন্তু ওর জ্ঞান ফিরছে না,,,, আর জ্ঞান কখন ফিরবি তাও আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।।। ঈশ্বরের উপর ভরসা করুন,,, ঈশ্বর যদি সহায় হোন,,, তাহলে যেকোনো সময় আপনার ছেলের জ্ঞান ফিরতে পারে।
★ ডাক্তারের কথা শুনে সবার চেহারাই একটা আতঙ্কের ছাপ ভেসে উঠলো।।।
এক এক করে 10 টা দিন অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরছে না,,,
ফারাবীর আম্মু চব্বিশটা ঘন্টা জায়নামাযে দাঁড়িয়ে প্রিয় সন্তানের জন্য দোয়া করতে থাকে,,,
এভাবে আরো দিন অতিবাহিত হতে লাগলো,,, চারজন মানুষের নিদ্রাহীন ২০ রজনী কেটে গেল,,, কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরে না,,,,
এদিকে ঈশিতা সারাটা সময় জায়নামাজে দাঁড়িয়ে তার প্রিয় মানুষটির জন্য কান্না করতে থাকে,,, কেঁদে কেঁদে আল্লাহকে বলে,, হে আল্লাহ তোমার কাছে কখনো কিচ্ছু চাইনি,,,, আজ আমি আমার ফারাবীকে চাই,,, আমার ফারাবীকে তুমি আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।।।
সময় তার নির্দিষ্ট গতিতে চলতে লাগল,,,
সূর্য তার নিয়ম মত পৃথিবীকে আলোকিত করে যেতে লাগল,,, কিন্তু ফারাবীর আব্বু-আম্মুর মনে কোন আলো নেই,,,, সে আলো যেন হারিয়ে গেছে,, কোন এক অজানা অন্ধকার গুহার ভিতরে,,, সেখান থেকে মনে হয় আলো আর ফিরে এসে তাদের জীবন আলোকিত করবে না।।
৩০ দিন অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরছে না,,, ফারাবীর আব্বু আম্মুর বিশ্বাস,, তাদের প্রিয় সন্তান আবারো ফিরে আসবে তাদেরই বুকে,,
31 দিনের মাথায় ডাক্তার এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলে,,, আগামী পাঁচ দিনের মাথায় যদি ওর জ্ঞান না ফিরে,, তাহলে হয়তো আর কখনো জ্ঞান ফিরবে না।।
ডাক্তারের কথা শুনে সবাই যেন বোবা হয়ে গেছে,,, কারো মুখে কোন বাক্য উচ্চারণ হয় না??
৩৪ দিন চলতে লাগলো,,, ফারাবীর কেবিনে ফারাবীর আব্বু আম্মু খালা খালু বসে আছে,,, আর ঈশিতা হোটেলে,, এখানে আসলে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে,,, সেজন্য বেশিরভাগ ওকে হোটেলে রাখা হয়,,,
বিকালবেলা ফারাবির কেবিনে,, ফারাবীর পাশে ফারাবীর আব্বু আম্মু বসে প্রিয় সন্তানের দিকে তাকিয়ে আছে,,, আর আস্তে আস্তে বলছে,,, বাবা চোখ খোল না,, দেখ না একবার আমাদের কে,,, তোর কি মায়া লাগেনা আমাদের জন্য,,,, আমাদেরকে ছেড়ে যাস না বাবা তুই,,,,, দেখ তোর মার দিকে একবার তাকিয়ে,,, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে কত বেলা না খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে তোর মা তোর জন্য,,,,, কিন্তু ফারাবীর জ্ঞানকে মনে হয স্রষ্টা ঘুমিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে ক্ষনিকের সময়ের জন্য,,,, তাইতো স্রষ্টার হুকুম ছাড়া জ্ঞানটা এনে তার জন্মদাত্রী মা দিকে একবার তাকাতে পারছে না।।।
তারা ফারাবির পাশে বসে ভাবতে লাগলো
তাদের সন্তানকে বুঝি আর ফিরে পাবে না,,, ডাক্তারের দেওয়া পাঁচ দিনের ভিতরে আর মাত্র 2 দিন বাকি আছে,,,, এই দুই দিনের ভিতর জ্ঞান না ফিরলে,,,, তাহলে ফারাবীর আর কখনো জ্ঞান ফিরবে না,,, এ কথা ভাবতেই ফারাবীর আব্বু-আম্মুর হৃদয় আত্মাই কাপন তুলে,,,
হঠাৎ করে ফারাবীর আম্মু খেয়াল করে দেখে ফারাবীর হাত নড়তে লাগলো,,, সাথে সাথে দৌড়ে ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে,,, মায়ের মায়াময় কণ্ঠ দিয়ে প্রিয় সন্তানকে ডাকতে লাগলো,,,, কয়েকটা ডাক দেওয়ার পরে হঠাৎ করে ফারাবির জ্ঞান ক্ষনিকের এই দুনিয়ায় আসে,,, এবং ফারাবির ভিতরে প্রবেশ করে?
হঠাৎ করে ফারাবী চোখ খুলে তাকাই,,, সাথে সাথে ফারাবীর আম্মু ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে থাকে,,,, আমার সোনা মানিক,,, আমাকে দেখ,,, ভালোভাবে চোখ খুলে তাকানা বাবা,,,, আজকের কান্না মায়ের কষ্টের কান্না নয়,,,, প্রিয় সন্তানকে হারানোর কান্না নয়,,,,, একমাত্র কলিজার টুকরোকে ফিরিয়ে পাওয়ার কান্না।
ফারাবীর চোখ খোলা দেখে সবার ভিতর একটা আনন্দের আবা ফুটে উঠে,,,,, সবাই ফারাবীকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে,,,, ফারাবী কোন কথা বলছে না,,,, ক্ষিন দৃষ্টি নিয়ে প্রিয় মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে,,,, 20 মিনিট পরে
ফারাবী সর্বপ্রথম পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক মা শব্দটা উচ্চারণ করে,,,,,
প্রিয় সন্তানের মুখে মা ডাক শুনে ফারাবী আম্মুর হৃদপিণ্ডয় মনে হয় কাপন তুলেছে,,, কলিজা মনে হয় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে,,,, ফারাবীর মুখে মা ডাক শুনে ফারাবীর আম্মুর 34 দিনের না ঘুমানোর ক্রান্তি,,, না খাওয়ার দুর্বলতা,,, প্রিয় সন্তানকে হারানোর অসহ্য যন্ত্রণা,,, মনে হয় কয়েক সেকেন্ডের ভিতর পৃথিবীর অন্তরালের বাহিরে চলে গিয়েছে??
ফারাবী টুকটাক সবার সাথে কথা বলছে,,
ফারাবীর আম্মু ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে কিভাবে অবস্থা হয়েছিল,,,, ফারাবী আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে বলে,,,
★ হঠাৎ করে ফারাবীর চোখ দুটো অন্য কাউকে খুজতে লাগলো,,,,, সে মনে মনে দৃঢ়তা প্রকাশ করে বলে আমারে পয়শী মনে হয় আসে নাই,,,, হারিয়ে ফেললাম আমার পয়শীকে আজীবনের জন্য,,,
সবাই ফারাবীর চতুর্দিকে বারবার তাকিয়ে দেখার মানে বুঝতে পেরেছে,,,, ফারাবীর আম্মু বলতে লগ্লো,,, কাকে খুঁজছিস বাবা ঈশিতাকে,,,, ফারাবী কোন কথা বলল না চোখ দুটো নিচে নামিয়ে ফেললো,,, ফারাবীর আম্মু ফারাবীর হাত ধরে বলতে লাগলো,,,,, মেয়েটা তোকে অসম্ভব ভালোবাসে,,,, যা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি,,,,৩৪ দিনে মেয়েটা মনে হয় একটা রাতের জন্য ও ঘুমায়নি,,,, আরো কি কি করেছে কতবার জ্ঞান হারিয়েছে কে রক্ত দিয়েছে সবকিছু খুলে বলল ফারাবীকে??
ওই দিকে ঈশিতাকে ফারাবীর জ্ঞান ফিরেছে এ খবর শোনালে,,, সাথে সাথে পাগলপারা হয়ে যায়,,,, কখন সে হসপিটালে পৌঁছাবে,,,,, ট্যাক্সির ভিতরে বসে পাগলের মত ছটফট করতে থাকে,,, ট্যাক্সির হাই গতিবেগ তার কাছে কচ্ছপের হাঁটার সমান মনে হয়,,, সে ধৈর্য্য হারা হয়ে যাচ্ছে,, মন চাচ্ছে উড়ে চলে যায় হসপিটালে করিডোরে,,,, টেক্সি ওয়ালাকে বার বার বলতে লাগলো,,, ভাই আরো স্পিডে চালান না।। গাড়ি হসপিটাল এর কাছে পৌঁছালে,,, ঈশিতা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে শুরু করে,,,, গাড়িতে বসে থাকতে তার আর সহ্য হচ্ছে না,,, সে মনে মনে বলতে লাগলো গাড়ির চেয়ে আমি দৌড়ে আগে পৌঁছাতে পারবো হসপিটালে।।
ঈশিতা দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে ফারাবীর কেবিনের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়,,, ফারাবী সবার সাথে কথা বলতে দেখে,,, তার ভিতরে আত্মা মনে হয় ফিরে পাই,,,, দরজার সাথে হেলান দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে,,,, তার বুক এত দ্রুত উঠানামা করছে যে,,,, তার ভিতরে হৃদপিণ্ড নামে জিনিস মনে হয় তার সারা শরীরে ভূমিকম্প তুলে দিয়েছি??
ঈশিতার জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকাই,,, ঈশিতাকে দেখার সাথে সাথে সবাই রুম থেকে বের হয়ে যায়,,, ঈশিতা নিজেকে আর সামলাতে পারে না,,, দৌড়ে গিয়ে ফারাবীর কপালে নাকে ঠোঁটে গালে চুমু দিতে থাকে,,,, আর ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে লাগে আর বলতে লাগে।।।।।
((((চলবে)))
"""এদিকে ঈশিতা তার প্রিয় মানুষের এ অবস্থা দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে নাই,,, সাথে সাথে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।।
ফারাবীর বন্ধুবান্ধব খালা খালু দৌড়ে ফারাবীর কাছে যাই,,, এবং ফারাবীকে ডাকতে থাকে,,,, কিন্তু ফারাবীর কোন সারা শব্দ নাই,,,, সবাই কান্না করতে থাকে তাদের প্রিয় বন্ধু জন্য।।
ফারাবীর খালা ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে আহাজারি করতে থাকে,,,, এবং ফারাবীর বুকে কান পেতে বোঝার চেষ্টা করছে ফারাবীর শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে কিনা,,,,,, কিন্তু না ফারাবির কোন শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে না।।
ফারাবীর খালামণি আরো জোরে জোরে কান্না করতে থাকে,,,, এবং তার স্বামীর শার্টের কলার ধরে বলতে লাগে।।
তুমি দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে কি দেখো। কিছু একটা কর না,,, ফারাবী যদি মারা যায়,,,তাহলে আমার বোন তো পাগল হয়ে যাবে।। আমার কোন ছেলে নাই,,,,, আমার বোনের একটা মাত্র ছেলে,,,, ওর কিছু হয়ে গেলে তো আমার বোন সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবে?
তোমার মেয়ের কথা একবার চিন্তা কর।।
ফারাবীর খালু দিশেহারা হয়ে গেলে। একজনের জায়গায় এখন চারজনের অবস্থা সিরিয়াস।।।। ফারাবীর খালু বলতে লাগলো,,, চিন্তা করো না,,, আল্লাহ যদি সহায় হোন,,,, তাহলে ফারাবী বাঁচবে,,,,, আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব।।
অ্যাম্বুলেন্স কে ফোন করা হলো,,, অল্প কিছুক্ষনের ভিতর অ্যাম্বুলেন্স এলে,,, সাথে সাথে ফারাবীকে অক্সিজেন মাক্স লাগিয়ে গাড়িতে তুলে,,,, সাথে যারা জ্ঞান হারিয়েছে তাদের কেউ।।।
গাড়ি কুমিল্লা জেনারাল হসপিটালে পৌঁছালে,,,, ডাক্তার দূরত্ব ফারাবীকে ইমারজেন্সিতে ভর্তি করে,,,,,, তখন পর্যন্ত যারা জ্ঞান হারিয়েছে তাদের জ্ঞান ফিরে নাই”” আধাঘন্টা পর ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে,,, ফারাবীর খালা খালু ডাক্তারের কাছে যাই,,, ডাক্তার বের হয়ে বলতে লাগল""" ওর অবস্থা এত গুরুতর যে,,, আমাদের পক্ষে এখানে চিকিৎসা করা সম্ভব না,,, আপনারা ওকে ইমিডিয়েটলি ঢাকাই শিফট করুন,,,, আমরা ওর ক্ষত জায়গা গুলো পরিষ্কার করে দিয়েছি,,,, আর রক্ত বের হবে না।
আপনারা এখন যত দ্রুত পারেন ওকে ঢাকায় নিয়ে যান। দেরি করলে হয়তো ওকে বাঁচানো সম্ভব না।।
একথা শুনে ফারাবির খালা কান্না করতে লাগল,,, এখন আমরা কি করব,,,, ফারাবীকে বুঝি আর বাঁচাতে পারলাম না।
ফারাবীর খালু বলতে লাগলো আহা টেনশন করো না,,, একটা ব্যবস্থা করছি,,,
ফারাবীর খালুর হেলিকপ্টার ভাড়া করে,,,
ফারাবীকে হেলিকপ্টারে তুলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই,,,, হেলিকপ্টার যখন ভাসমান শূন্য আকাশে দ্রুত বেগে চলতে লাগলো,,,, তখন ফারাবীর আম্মুর জ্ঞান ফিরে,,,, জ্ঞান ফেরার পর আবারো প্রিয় সন্তানের জন্য আহাজারি করতে শুরু করে,, তোমরা আমার ফারাবীকে আমার কোলে ফিরিয়ে দাও,,, আমার একটা মাত্র ছেলে,,, সে যদি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায়,,,, তাহলে আমরা কি নিয়ে বাঁচবো,,, কে আমাকে মা বলে ডাকবে,,, আমার যে আর কোন সন্তান নাই,,, এ কথা বলে হাজারী করতে করতে আবারও জ্ঞান হারালো।। ফারাবীর আম্মুর কাথা শুনে,,, ফারাবীর খালা খালু নিজেদেরকে সামলানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে,,,,,
কিছুক্ষণ পরে ফারাবীর আব্বু ও জ্ঞান ফিরে,,,, উনার মুখে কোন কথা নাই,,, মনে হই প্রিয় সন্তানের জন্য বোবা হয়ে গিয়েছে,,, ফারাবীর খালো ফারাবির আব্বুকে সান্তনা দেবার চেষ্টা করছে।।
এদিকে ঈশিতার এখনো জ্ঞান ফিরে নাই,,,
হেলিকপ্টার ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছালে,,,
ডাক্তার ফারাবীর গুরুতর অবস্থা দেখে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে ট্রিটমেন্ট করতে থাকে,,,,
এদিকে ততক্ষণে ঈশিতার জ্ঞান ফিরেছে,, ওকে কোনোভাবেই সামলানো যাচ্ছে না।
তার প্রিয় মানুষটির জন্য একবারে পাগল পারা হয়ে গিয়েছে,,,, মাকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,,মা কী হয়েছে আমার ফারাবীর।। তুমি কথা বলোনা কেন,,, আমার ফাবীর কিছু হয়েছে,,,, ফারাবীর কিছু হলে যে আমি বাচঁবো না,,, আমার কাছে আমার ফারাবীকে এনে দাও,,,
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে,, একটা পর্যায়ে আবারো জ্ঞান হারালো,,,,
আধাঘন্টা পর দুজন ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই,,, ডাক্তারের চেহারায় দুঃখের আভা দেখা যাচ্ছে,,,, ফারাবীর আব্বু জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে ডাক্তার,,,, আমার ছেলে বাঁচবে,,,, ডাক্তার বলতে লাগলো,,,, দেখুন আপনার ছেলের অবস্থা এতটাই গুরুতর যে ওকে হয়তো বাঁচানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না,,,,
এ কথা শোনার সাথে সাথে ফারাবির আব্বু ডাক্তারের হাত ধরে বলতে লাগলো,,, ডাক্তার যে করে হক আমার ছেলেকে বাঁচান,,, যত টাকা লাগে আমি দিবো,,, দরকার হলে আমি আমার সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিব??
(ডাক্তার) দেখুন টাকা দিয়ে সবকিছু হয় না। হায়াত মউত আল্লাহর হাতে,,, আমরা শুধু চেষ্টা করে থাকি,,,, আমার এক বন্ধু আছে ডাক্তার ইব্রাহীম হামিদ,,,, ওকে ফোন দিয়েছি কিছুক্ষনের ভিতর চলে আসবে,,, দেখা যাক কি করে যাই।।।
★ কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদ এসে ফারাবীকে 1 ঘন্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাইরে বের হয়ে আসে,,,,,
ফারাবীর আব্বু দৌড়ে ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদের কাছে যায়,,,, ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদ বলতে লাগলো আপনার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ,,,, ডাক্তার কথা শেষ করতে পারল না তার আগেই ফারাবির আব্বু ডাক্তারের হাত ধরে ফেলে,,,,, ডাক্তার আমার একমাত্র ছেলে,,,, ওকে ছাড়া আমাদের আর কেউই নাই,,,, যে করে হোক আমার ছেলেকে বাঁচান।।
(ডাক্তার) দেখুন চিন্তা করবেন না,,, আল্লাহর উপর ভরসা করুন,,,, দেখুন আপনার ছেলের শরীর থেকে এত পরিমান রক্ত বের হয়েছে যে,,, ও এতক্ষণ বাঁচার কথা না,,, হয়তো আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসায় এখনো বেচেঁ আছে।।
কিন্তু আগামী 30 মিনিটের মধ্যে যদি ওর শরীরে A (-) পজেটিভ রক্ত পোস না করা হয়,, তাহলে হয়তো আর শ্বাস প্রশ্বাস নিবে না? এখন যত দ্রুত সম্ভব A(-) পজিটিভে ৬ থেকে৭ রক্তের ব্যবস্থা করুন। 30 মিনিট ওভার হয়ে গেলে ওকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না।।।
সাথে সাথে ফারাবীর আব্বু খালু বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংক ফোন করতে লাগলো,,, কথায় আছে বিপদ যখন আসে তখন চারপাশ থেকে আসে,,,, কোন ব্লাড ব্যাংক থেকে এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারলো না,,,
বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবার কাছে ফোন করা হয়েছে কারো রক্তের সাথেই ফারাবীর রক্তের গ্রুপ মিলেছে না।। তারা দিশেহারা হয়ে গিয়েছে,,,, এ বুঝি তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে ফেললো?
এদিকে ফারাবীর আম্মুর জ্ঞান ফিরেছে,,, জ্ঞান ফেরার পর যখন শুনল কোন রক্তের ব্যবস্থা হচ্ছে না,,,, তখন কাঁদতে লাগলো আর বিলাপ করতে লাগল,,, আমার ছেলে কি তাহলে আমার কাছে ফিরে আসবে না,, আমাকে মা বলে ডাকবে না,,, আমি কি নিয়ে থাকবো,,,, কাকে বাবা বলে জড়িয়ে কপালে চুমু দিব।। শেষ বার
আমার কলিজার টুকরো ছেলেটাকে একবার জড়িয়ে ধরতে পারিনি। একনাগাড়ে বিলাপ করে যাচ্ছে,,, আসলে কোন মায়ের একমাত্র ছেলে যদি অকালে তাদের কাছ থেকে হারিয়ে যায়,,, তা যে ঐ মায়ের জন্য কতটা কষ্টের কতটা বেদনার,, কতটা যন্ত্রণার শুধু ঐ মা ওই উপলব্ধি করতে পারে।।
অলরেডি ২৫ মিনিট ওভার হয়ে গেছে,, এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারে নাই,,, ডাক্তার বের হয়ে আসলো এসে জিজ্ঞাসা করল রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে।।
ফারাবী আব্বু চোখ দুটো নিচের দিকে দিয়ে না সূচক বাক্য উচ্চারণ করলো,,, তার চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি ফ্লোরে পড়তে লাগলো,,,,, একজন বাবা হয়ে তার প্রিয় সন্তানকে রক্তের কারণে শেষ হতে দেখে কিভাবে নিজেকে সামলাই।।।
ডাক্তার ফরাবীর আব্বুর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছে,,, এই চোখে যে কত আকুতি মিনতি খেলা করছে,,, প্রিয় সন্তানকে বাচাঁনোর জন্য।।
ডাক্তার চোখ নিচের দিকে দিয়ে বলতে লাগলো।
দেখুন A (-) পজিটিভ রক্তের ব্যবস্থা না হলে আপনার ছেলেকে আর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না,,,, আমরা দুঃখিত।
এদিকে ঈশিতার জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষণ আগে,,, জ্ঞান ফেরার পর থেকে এক নাগাড়ে কেদেই যাচ্ছে,,, ডাক্তারের মুখ থেকে যখন শুনলো A(-) পজিটিভ রক্ত না হলে ফারাবীকে বাঁচানো যাবে না?
ঈশিতা এ কথা শুনে দৌড়ে গিয়ে ডাক্তারের পা জড়িয়ে ধরল,,, আর বলতে লাগলো ডাক্তার আমার ফারাবীকে বাঁচান,,, আপনার যা কিছু লাগে আমরা দিব?
((ডাক্তার)) দেখুন টাকা দিয়ে কিচ্ছু হবে না,,, ওর রক্ত দরকার?
ঈশিতা বলতে লাগলো ডাক্তার ফারাবীর রক্ত আমার রক্ত এক আমার শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নেন,,, তারপরও আমার ফারাবীকে আপনি বাঁচিয়ে দেন।
(ডাক্তার) দেখুন আপনার শরীর থেকে এত পরিমান রক্ত নিলে আপনি মারা যাবেন।।
ঈশিতা বলতে লাগলো ডাক্তার ফারাবীকে ছাড়া আমি বেঁচে থেকে কী করব,,,, ওকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা যে আমার মৃত্যুর সমান মনে হবে,,,, ওকে ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনাও করতে পারি না।। আমি বেঁচে থাকতে ওর মৃত্যু আমি সহ্য করতে পারবো না,,, আমার শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নিন।
ফারাবীর আব্বু আম্মু ঈশিতার কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছে,, তারা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে ঈশিতা ফারাবীকে এতটা ভালবাসি,, এবং ফারাবীর রক্তের গ্রুপ আর ঈশিতার রক্তের গ্রুপ এক?
ইশিতার কথা শুনে ডাক্তার বলতে লাগলো তা কখনো সম্ভব না,,, আপনার শরীর থেকে সব রক্ত নেওয়া মানে আপনাকে সে ইচ্ছায় হত্যা করা,, আমাদের কাজ মানুষকে বাঁচানো,,, কাউকে হত্যা করা না,,,, আপনি আমাদের সাথে আসুন আপনার শরীর থেকে ততটুকু রক্ত নিব যতটুকু রক্ত নিলে আপনি বেঁচে থাকবেন।।
ডাক্তার ঈশিতার শরীর থেকে তিন ব্যাগ রক্ত নিল।। তিন ব্যাগ রক্ত দিয়ে ঈশিতা দুর্বল হয়ে পড়েছে।।
তারপর ডাক্তার এমার্জেন্সি তে গেল ঘন্টা দুয়েক পর ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যায়,,
ডাক্তার জোরে একটা নিশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো,,, আপনার ছেলের শরীরে তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে,,, কিন্তু সে রক্ত আপনার ছেলের শরীরে কাজ করছে না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি,,,,, আমাদের আর কিছু করার নাই,, আমাদের ক্ষমা করবেন।
আপনারা ওকে,যত দ্রুত পারেন ওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য,, বাহিরে কোন রাষ্ট্র নিয়ে যান।।।
এ কথা শুনে সবাই দিশেহারা হয়ে গেছে,,, কি করবে এখন,,,,, ঈশিতার আব্বু সেনাবাহিনীতে কাজ করে দু ঘন্টার ভিতরে সিঙ্গাপুরের টিকেট কেটে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হস্পিতাল নেওয়া হয়।।।
ডাক্তার ফারাবীর গুরুতর অবস্থা দেখে আই সি তে ভর্তি করায়,,,, তারপর সেখানের কয়েকটা ব্লাড ব্যাংক থেকে 5 ব্যাগ রক্তের
রক্তের ব্যবস্থা করে??
টানা 9 ঘণ্টা ধরে দুজন ডাক্তার ট্রিটমেন্ট করে কেবিন থেকে বের হয়ে আসে।
সাথে সাথে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই,,,, ডাক্তার দুঃখের সহিত বলতে লাগলো,,,, আপনার ছেলেকে রক্ত দেওয়া হয়েছে,,, এবং ওর যাবতীয় সব ট্রিটমেন্ট ভালোভাবে হয়েছে,,,, কিন্তু ওর জ্ঞান ফিরছে না,,,, আর জ্ঞান কখন ফিরবি তাও আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।।। ঈশ্বরের উপর ভরসা করুন,,, ঈশ্বর যদি সহায় হোন,,, তাহলে যেকোনো সময় আপনার ছেলের জ্ঞান ফিরতে পারে।
★ ডাক্তারের কথা শুনে সবার চেহারাই একটা আতঙ্কের ছাপ ভেসে উঠলো।।।
এক এক করে 10 টা দিন অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরছে না,,,
ফারাবীর আম্মু চব্বিশটা ঘন্টা জায়নামাযে দাঁড়িয়ে প্রিয় সন্তানের জন্য দোয়া করতে থাকে,,,
এভাবে আরো দিন অতিবাহিত হতে লাগলো,,, চারজন মানুষের নিদ্রাহীন ২০ রজনী কেটে গেল,,, কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরে না,,,,
এদিকে ঈশিতা সারাটা সময় জায়নামাজে দাঁড়িয়ে তার প্রিয় মানুষটির জন্য কান্না করতে থাকে,,, কেঁদে কেঁদে আল্লাহকে বলে,, হে আল্লাহ তোমার কাছে কখনো কিচ্ছু চাইনি,,,, আজ আমি আমার ফারাবীকে চাই,,, আমার ফারাবীকে তুমি আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।।।
সময় তার নির্দিষ্ট গতিতে চলতে লাগল,,,
সূর্য তার নিয়ম মত পৃথিবীকে আলোকিত করে যেতে লাগল,,, কিন্তু ফারাবীর আব্বু-আম্মুর মনে কোন আলো নেই,,,, সে আলো যেন হারিয়ে গেছে,, কোন এক অজানা অন্ধকার গুহার ভিতরে,,, সেখান থেকে মনে হয় আলো আর ফিরে এসে তাদের জীবন আলোকিত করবে না।।
৩০ দিন অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরছে না,,, ফারাবীর আব্বু আম্মুর বিশ্বাস,, তাদের প্রিয় সন্তান আবারো ফিরে আসবে তাদেরই বুকে,,
31 দিনের মাথায় ডাক্তার এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলে,,, আগামী পাঁচ দিনের মাথায় যদি ওর জ্ঞান না ফিরে,, তাহলে হয়তো আর কখনো জ্ঞান ফিরবে না।।
ডাক্তারের কথা শুনে সবাই যেন বোবা হয়ে গেছে,,, কারো মুখে কোন বাক্য উচ্চারণ হয় না??
৩৪ দিন চলতে লাগলো,,, ফারাবীর কেবিনে ফারাবীর আব্বু আম্মু খালা খালু বসে আছে,,, আর ঈশিতা হোটেলে,, এখানে আসলে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে,,, সেজন্য বেশিরভাগ ওকে হোটেলে রাখা হয়,,,
বিকালবেলা ফারাবির কেবিনে,, ফারাবীর পাশে ফারাবীর আব্বু আম্মু বসে প্রিয় সন্তানের দিকে তাকিয়ে আছে,,, আর আস্তে আস্তে বলছে,,, বাবা চোখ খোল না,, দেখ না একবার আমাদের কে,,, তোর কি মায়া লাগেনা আমাদের জন্য,,,, আমাদেরকে ছেড়ে যাস না বাবা তুই,,,,, দেখ তোর মার দিকে একবার তাকিয়ে,,, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে কত বেলা না খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে তোর মা তোর জন্য,,,,, কিন্তু ফারাবীর জ্ঞানকে মনে হয স্রষ্টা ঘুমিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে ক্ষনিকের সময়ের জন্য,,,, তাইতো স্রষ্টার হুকুম ছাড়া জ্ঞানটা এনে তার জন্মদাত্রী মা দিকে একবার তাকাতে পারছে না।।।
তারা ফারাবির পাশে বসে ভাবতে লাগলো
তাদের সন্তানকে বুঝি আর ফিরে পাবে না,,, ডাক্তারের দেওয়া পাঁচ দিনের ভিতরে আর মাত্র 2 দিন বাকি আছে,,,, এই দুই দিনের ভিতর জ্ঞান না ফিরলে,,,, তাহলে ফারাবীর আর কখনো জ্ঞান ফিরবে না,,, এ কথা ভাবতেই ফারাবীর আব্বু-আম্মুর হৃদয় আত্মাই কাপন তুলে,,,
হঠাৎ করে ফারাবীর আম্মু খেয়াল করে দেখে ফারাবীর হাত নড়তে লাগলো,,, সাথে সাথে দৌড়ে ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে,,, মায়ের মায়াময় কণ্ঠ দিয়ে প্রিয় সন্তানকে ডাকতে লাগলো,,,, কয়েকটা ডাক দেওয়ার পরে হঠাৎ করে ফারাবির জ্ঞান ক্ষনিকের এই দুনিয়ায় আসে,,, এবং ফারাবির ভিতরে প্রবেশ করে?
হঠাৎ করে ফারাবী চোখ খুলে তাকাই,,, সাথে সাথে ফারাবীর আম্মু ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে থাকে,,,, আমার সোনা মানিক,,, আমাকে দেখ,,, ভালোভাবে চোখ খুলে তাকানা বাবা,,,, আজকের কান্না মায়ের কষ্টের কান্না নয়,,,, প্রিয় সন্তানকে হারানোর কান্না নয়,,,,, একমাত্র কলিজার টুকরোকে ফিরিয়ে পাওয়ার কান্না।
ফারাবীর চোখ খোলা দেখে সবার ভিতর একটা আনন্দের আবা ফুটে উঠে,,,,, সবাই ফারাবীকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে,,,, ফারাবী কোন কথা বলছে না,,,, ক্ষিন দৃষ্টি নিয়ে প্রিয় মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে,,,, 20 মিনিট পরে
ফারাবী সর্বপ্রথম পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক মা শব্দটা উচ্চারণ করে,,,,,
প্রিয় সন্তানের মুখে মা ডাক শুনে ফারাবী আম্মুর হৃদপিণ্ডয় মনে হয় কাপন তুলেছে,,, কলিজা মনে হয় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে,,,, ফারাবীর মুখে মা ডাক শুনে ফারাবীর আম্মুর 34 দিনের না ঘুমানোর ক্রান্তি,,, না খাওয়ার দুর্বলতা,,, প্রিয় সন্তানকে হারানোর অসহ্য যন্ত্রণা,,, মনে হয় কয়েক সেকেন্ডের ভিতর পৃথিবীর অন্তরালের বাহিরে চলে গিয়েছে??
ফারাবী টুকটাক সবার সাথে কথা বলছে,,
ফারাবীর আম্মু ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে কিভাবে অবস্থা হয়েছিল,,,, ফারাবী আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে বলে,,,
★ হঠাৎ করে ফারাবীর চোখ দুটো অন্য কাউকে খুজতে লাগলো,,,,, সে মনে মনে দৃঢ়তা প্রকাশ করে বলে আমারে পয়শী মনে হয় আসে নাই,,,, হারিয়ে ফেললাম আমার পয়শীকে আজীবনের জন্য,,,
সবাই ফারাবীর চতুর্দিকে বারবার তাকিয়ে দেখার মানে বুঝতে পেরেছে,,,, ফারাবীর আম্মু বলতে লগ্লো,,, কাকে খুঁজছিস বাবা ঈশিতাকে,,,, ফারাবী কোন কথা বলল না চোখ দুটো নিচে নামিয়ে ফেললো,,, ফারাবীর আম্মু ফারাবীর হাত ধরে বলতে লাগলো,,,,, মেয়েটা তোকে অসম্ভব ভালোবাসে,,,, যা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি,,,,৩৪ দিনে মেয়েটা মনে হয় একটা রাতের জন্য ও ঘুমায়নি,,,, আরো কি কি করেছে কতবার জ্ঞান হারিয়েছে কে রক্ত দিয়েছে সবকিছু খুলে বলল ফারাবীকে??
ওই দিকে ঈশিতাকে ফারাবীর জ্ঞান ফিরেছে এ খবর শোনালে,,, সাথে সাথে পাগলপারা হয়ে যায়,,,, কখন সে হসপিটালে পৌঁছাবে,,,,, ট্যাক্সির ভিতরে বসে পাগলের মত ছটফট করতে থাকে,,, ট্যাক্সির হাই গতিবেগ তার কাছে কচ্ছপের হাঁটার সমান মনে হয়,,, সে ধৈর্য্য হারা হয়ে যাচ্ছে,, মন চাচ্ছে উড়ে চলে যায় হসপিটালে করিডোরে,,,, টেক্সি ওয়ালাকে বার বার বলতে লাগলো,,, ভাই আরো স্পিডে চালান না।। গাড়ি হসপিটাল এর কাছে পৌঁছালে,,, ঈশিতা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে শুরু করে,,,, গাড়িতে বসে থাকতে তার আর সহ্য হচ্ছে না,,, সে মনে মনে বলতে লাগলো গাড়ির চেয়ে আমি দৌড়ে আগে পৌঁছাতে পারবো হসপিটালে।।
ঈশিতা দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে ফারাবীর কেবিনের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়,,, ফারাবী সবার সাথে কথা বলতে দেখে,,, তার ভিতরে আত্মা মনে হয় ফিরে পাই,,,, দরজার সাথে হেলান দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে,,,, তার বুক এত দ্রুত উঠানামা করছে যে,,,, তার ভিতরে হৃদপিণ্ড নামে জিনিস মনে হয় তার সারা শরীরে ভূমিকম্প তুলে দিয়েছি??
ঈশিতার জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকাই,,, ঈশিতাকে দেখার সাথে সাথে সবাই রুম থেকে বের হয়ে যায়,,, ঈশিতা নিজেকে আর সামলাতে পারে না,,, দৌড়ে গিয়ে ফারাবীর কপালে নাকে ঠোঁটে গালে চুমু দিতে থাকে,,,, আর ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে লাগে আর বলতে লাগে।।।।।
((((চলবে)))