Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery গোপন কথা টি রবে না গোপনে ( পর্দাফাঁস ) by Daily Passenger
#8
সাত


আলিদা বলল “দুটো খবর, সুলেমানকে পুলিশে ধরেছে। তবে মনে হয় না কিছু করতে পারবে। কারণ অনেক মেয়েরা ওর মাধ্যমে কাস্টোমার খোঁজে। তারা কে কি বৃত্তান্ত সে সব ওর জানার কথা নয়। তবে মেয়ে চালান দেওয়ার জন্য কিছু সাজা হতে পারে। “ আমি মাঝপথে বলে উঠলাম “ সুলেমান যদি মুখ খুলে দেয়?” আরতি আমাকে বলল “সুলেমান আমাদের কথা জানে না। ও খুব বেশী হলে বলতে পারবে কোথায় ওর সাথে দেখা করা হয়। যে দেখা করে তার চেহারাও ও চিনতে পারবে না। দাঁড়ি গোঁফ ইত্যাদি লাগিয়ে রীতিমত সাজিয়ে পাঠানো হয়। (আলিদার দিকে তাকিয়ে বলল) আর পরের খবরটা?” আলি দা বলল “ টাউনে গ্রিন হোটেলে শাঁসালো মাল এসেছে। মেয়ে চাইছে। যা খবর আছে সেটা সত্যি হলে আজ সকালেই লাখ কুড়ি টাকা পেয়েছে ক্যাশে একজনের কাছ থেকে। আর যদি কিছু টাকা থাকে তো জানি না। “ আরতি একটু ভেবে নিয়ে বলল “ কত বয়সের মেয়ে চাইছে শুনেছ?” পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা বলল “বুলু দা যা বলেছে তাতে তেত্রিশ থেকে চল্লিশ। তবে নাকি ঝানু মাল। পাশের ঘরে একটা ষণ্ডা মতন লোক আছে। ওর সাথেই এসেছে। সব সময় চারপাশে ঘুর ঘুর করে। “ আরতি একটু ভেবে বলল “বুঝতে পেরেছি সাথে কুকুর নিয়ে এসেছে পাহাড়া দেবার জন্য। “ বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে একটু হাঁটতে লাগলো ধীরে ধীরে। বোধহয় এত ব্যায়াম করে বলেই এদের ফিগার এত ভালো এই বয়সেও। নিজের মনে মনে বলল “ অরূপদা নেই। বিনীতাদি ও নেই। সুজাতার এই অবস্থা। আলিদা একটু গলা নামিয়ে বলল “ ছেলেটার বাপের আসানসোলে ফ্যাক্টরি আছে যেখানে রশ্মির বাবার হাত কাটা পড়েছিল। পরে তো গুম করে দিল।“ “সীমা কে একবার ডেকে দাও তো।“ আরতি বলে উঠলো। আলিদা দাঁড়িয়ে রইল। অন্য ছেলেটা বেড়িয়ে চলে গেল। ছেলেটার বয়স বাইশ কি তেইশ হবে। অদ্ভুত পেটানো শরীর। আর চোখে মুখে একটা চটপটে ভাব। সীমা এসে হাজির হল। এর সাথে আলাপের সুযোগ আসে নি। বয়স পয়ত্রিশ মতন। ফিগার ভালোই। আরতি ওকে বলল “ সীমা গ্রিন হোটেলে কাউকে একজন কে পাঠাতে হবে। ঘুঘু মাল এসেছে, সাথে নাকি কুকুর নিয়ে এসেছে। অবশ্য কথা বলা কুকুর। বিনীতাদি নেই। আমি এখন যেতে পারব না। কাকে পাঠানো যায় বলতো?” সীমা বলল “আমাকে অনেক দিন কোথাও যেতে হয় নি। আমিই চলে যাচ্ছি। আমার বন্দুকের গুলি আর নেই। কারোর একটা নিয়ে যেতে হবে। “ আরতি বলল “বেশ। আলি, কখন যেতে হবে?” জবাব এলো, “সন্ধ্যায়। ঠিক সাড়ে সাতটায় ডেকেছে। “ আরতি জিজ্ঞেস করল “ঠিক জানো তো পুলিশের কারসাজি নয়। ফাদ পাতা হচ্ছে না তো?” আলি বলল “যতদূর বুঝলাম না। “ সীমাকে বলল “তুমি তৈরি হয়ে নাও। বিকেল ঠিক পাঁচটায় বেড়িয়ে যাবে। রাতেই কাজ শেষ করে ফিরে আসবে। আলি তুমি আজ ওখানেই অপেক্ষা করবে। কাজ খতম হলেই সোজা এখানে চলে আসবে। হয়ত একটু আগেই পৌঁছাবে তোমরা। একটু চারপাশটা ঘুরে দেখে নিও। কোথাও কোনও ফাঁদ পাতা হচ্ছে বুঝতে পারলেই ফিরে আসবে। ঝামেলার মধ্যে যাবে না। “ ওরা তিনজনে বেড়িয়ে যেতে আরতি বলল “তোমাদের সাথে পরে অনেক গল্প হবে। এখন এসো তোমাদের ঘর দেখিয়ে দি। আর একজন খুব অসুস্থ তাকে একটু দেখে দিও প্লীজ। আর শোন পোশাকটা পরিবর্তন করে আমাদের মতন পরে নাও, অন্তত যতদিন এখানে আছে। আসলে আমাদের জামা কাপড় খুব বাড়ন্ত। বাইরে যেতে হলে ভালো জামা কাপড় পরে পাঠাতে হয়। আর অন্য রকম পোশাক পরে ঘুরলে সবাই ভাববে তোমরা ডাক্তার বলে তোমাদের জন্য কোনও নিয়ম নেই। সেটা এরকম ক্যাম্পে ভালো দেখায় না। “ কথাগুলো ও খুব সহজ ভাবেই বলল। আমাদের কিছু করার নেই। সত্যি কথাই বলেছে। আমাদের খুবই বেমানান দেখাচ্ছে। দেখলাম একদল মেয়ে সারি বদ্ধ ভাবে মাথার উপর বন্দুক নিয়ে রোদের মধ্যে দৌড়ে চলেছে। এদের কাছে দুর্গা পূজার কোনও মানে নেই। মাঠ দিয়ে যেতে যেতে আমাদের বলল “ও হ্যাঁ ভালো কথা, রাজুকে বলে দেব তোমাদের একবার আমাদের ওষুধের জায়গাটা দেখিয়ে দিতে। কয়েকদিন যখন আছোই তখন একটা উপকার করে দাও। কি কি ওষুধ রাখা দরকার, কি কি যন্ত্রপাতি লাগবে সেগুল যদি বলে দাও তো আমরা ধীরে ধীরে কিনে ফেলতে পারি। শুনলেই তো আজ বাইরে আলি যাচ্ছে। কিছু খুব জরুরি লাগলে ওকে লিস্ট দিয়ে দেবে। সীমা যখন ওর কাজ করবে তখন আলি ওষুধ গুলো কিনে নিতে পারে। বা আগেও কিনে নিতে পারে। “ অদিতি জিজ্ঞেস করল “রাজু কে?” আরতি বলল “ওই যে একটু আগে যেই ছেলেটাকে দেখলে। ওর মা ওকে এখানে নিয়ে এসেছিল যখন ও সতের কি আঠারো। এখানেই থেকে গেছে। খুব ভালো বন্দুক চালায়। “ আমি একটু ইতস্তত করে বললাম “ডাক্তার কে দেখছি না আজ।“ আরতি কেন জানি না হো হো করে হেঁসে উঠল “ মনে ধরেছে নাকি ওকে?” বললাম “না এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম।“ বলল “চিন্তা নেই। ওকে তোমার পছন্দ হলে আর ওর ও যদি তোমাকে পছন্দ হয় তো তোমরা মেলা মেশা করতে পারো। এখানে আমরা অবাধ এবং খোলামেলা স্বতঃস্ফূর্ত মেলা মেশায় বিশ্বাস করি। সমাজে যে বিধি নিষেধ গুলো আছে আমরা সেগুল এখানে মানি না। তবে কোনও জোরাজুরি চলবে না, না ছেলের পক্ষ থেকে না মেয়েদের পক্ষ থেকে। বাকি যা খুশি করতে পারো। সারা দিনের পরিশ্রমের পর মন আর শরীর কাউকে কাছে চাইবে তাতে আর আশ্চর্য হবার কি আছে। তবে একজন কে কথা দিয়েছি বলে তুমি তাকে তোমার সম্পত্তি মনে করবে তেমন ভাবলে চলবে না। পুরো ব্যাপারটাই স্বতঃস্ফূর্ত হওয়া চাই।“ এ তো মহা মুশকিলে পড়া গেলো। কি করে বোঝাই যে ওকে আমি খুজছি না প্রেম নিবেদন করার জন্য। ওকে হাতের সামনে পেলে একটা থাপ্পড় মেরে ঝাল মেটাতাম। কিন্তু আরতিকে সে সব বুঝিয়ে লাভ নেই। আর রত্নাদি বা কোথায়। সকাল থেকে দেখছি না তো ওকে। আরতি বলল “ও ভোরের আগে বেড়িয়ে গেছে। কলকাতা যাবে। সেখান থেকে দিল্লী, সেখান থেকে উপি। তারপর সেখান থেকে ফিরবে।“

“এই ঘরটায় তোমরা থাকবে।“ আমরা ভেতরে ঢুকলাম। দেখলাম বিছানায় দু জোড়া সাদা শাড়ি রাখা আছে ঠিক ওরা যেমন পরে। “তোমরা চেঞ্জ করে নাও। একটু পরে রাজু কে পাঠিয়ে দিচ্ছি। চা লাগলে ওকে বলে দিও। আর কিছু খেয়ে নিও।“ দেখলাম আমার টুথ পেস্ট আর ব্রাশ আর অদিতির ও দু একটা ছোট খাটো জিনিস টেবিলের ওপর রাখা আছে। এ ঘরের খাটটা একটু বড়, যাতে দুজন পাশা পাশি শুতে পারে। অদিতি একটা পাতলা শাড়ি হাতে তুলে দেখে সেটা হাতে নিয়েই বিছানায় বসে পড়ল। ঘরের পেছন দিকে একটা জানালা আর আরেকটা দরজাও আছে। দরজা খুলে বেরোলে ঘরের পেছেন দিকে বেড়িয়ে যাওয়া যায়। তবে খেয়াল করলাম একটা জানলারও কপাট নেই, অবশ্য গরাদ আছে। অদিতি জানলা দিয়ে একবার পেছনদিকটা দেখে নিয়ে দরজা খুলে পেছন দিকে বেরল। আমি ওকে বললাম “এখন পালানোর চেষ্টা করা বৃথা। পরে ভেবে কিছু একটা ঠিক করতে হবে। অদিতি কথা না বাড়িয়ে ঘরে ঢুকে পেছনের দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে শাড়ি ছাড়তে শুরু করে দিয়েছে। আমি উঠে দাঁড়িয়ে শাড়ির কোমরের গিঁটটা খুলে ফেললাম। আমরা দুজনে কেউ কারোর দিকে তাকাচ্ছি না লজ্জায়। যে দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেছি সে দরজাটা ভাবলাম একবার বন্ধ করে দি, কিন্তু তাতে কোনও লাভ নেই। কারণ তার দুপাশে দুটো বড় বড় গরাদ দেওয়া কপাটহীন জানালা আছে যেখান দিয়ে ঘরের ভেতরটা পরিষ্কার দেখা যায়। চোখের কোন দিয়ে বুঝতে পারলাম অদিতি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে একটা শাড়ি শরীরে জড়াতে শুরু করে দিয়েছে। আমিও একটা শাড়ি তুলে নিলাম। শাড়িটা শরীরে জড়ানোর পর অদ্ভুত নগ্ন মনে হচ্ছিল নিজেকে। স্তনগুলো ভালো করে ঢাকা যায় নি। নাভির নিচে প্রায় ছয় ইঞ্চি কি তারও বেশী নগ্ন। অর্ধেকের মতন স্তন বিভাজিকা নগ্ন। অদিতির অবস্থা আরও খারাপ। ওর স্তন আমার থেকেও বেশী ভরাট। আর লম্বায় আমার থেকেও বেশী। আমার শাড়িটা তাও কোনও মতে হাঁটু ছাড়িয়েছে, কিন্তু ওরটা হাঁটুর প্রায় পাঁচ ইঞ্চি ওপরে এসেই শেষ হয়ে গেছে। তবে এই পরিবেশে কিছু বেমানান নয়, কারণ কয়েকজন কে দেখেছি যে মিনি স্কার্টের মতন অর্ধেক থাই শাড়ির বাইরে নগ্ন, মানে যাদের উচ্চতা সাধারনের থেকে বেশী। আমরা দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে হেঁসে ফেললাম। অদিতি বলল “উফফ আঁচলটাও যদি একটু লম্বা হত তাহলে ম্যানাজ করতে পারতাম। শালা জড়িয়ে গুঁজে রাখা ছাড়া এটা কোনও কাজেই আসবে না। তবে হ্যাঁ নগ্নতা বোঝা গেলেও আমরা নগ্ন নই। একটু পরেই রাজু এসে হাজির হল। একটা জিনিস না মেনে পারছি না, অন্য কোনও ছেলে হলে আমাদের এই অর্ধনগ্ন অবস্থা টা চোখ দিয়ে উপভোগ করতে ছাড়ত না। কিন্তু হয়ত এখানে থেকে এরকম দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছে বলেই, বা সত্যিকারের কমরেড হয়ে উঠছে বলেই ও যেন আমাদের অবস্থাটা দেখেও দেখল না। ঘরে এসে টেবিলে চা রেখে দিয়ে চলে গেল। বলল “খাবার নিয়ে আসছি, আরতি দিদি তোমাদের যত্ন করতে বলেছে। আমার ঘর এই পাশে। কোনও কিছু দরকার পড়লে ডাকতে ভুলবে না। “ চা টা অখাদ্য তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এখানে এদের যা সংগ্রামের জীবন তাতে চা নিয়ে বেশী মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। কিছুক্ষণ পরে এসে দুটো করে শুঁকনো রুটি আর একটা করে কলা খেতে দিয়ে চলে গেল। রুটি শুধু শুধু খেতে হবে? না দেখলাম চিনিও দিয়ে গেছে। বেঁচে থাকতে হলে খেতে হবে। মুখ বন্ধ করে খাওয়া শুরু করলাম। অদিতিই মুখ খুলল “ আমি অদিতি, আর তুমি রুমি। বেশ। একটা কথা বলবে? এতক্ষন যা শুনলে, সব শুনে, দেখে কি মনে হচ্ছে?” আমি খেতে খেতেই বললাম “দেখলাম আর কই? শুধুই তো এক তরফা শুনে গেলাম। তবে একটা কথা হুটপাট করে কিছু করতে যাওয়া বোকামি হবে। সব দিক দেখে শুনে ব্যবস্থা করতে হবে।“ ও বলল “তো এখন সারাদিন বসে বসে কি ভ্যারান্ডা ভাজব? দু একটা এরকম গুলি খাওয়া কেস এলে না হয় জমে যেত। “ রাজু কিছুক্ষণ পরে আবার ফিরে এলো। ও রীতিমত ঘামাচ্ছিল। ওকে দেখে বুঝতে পারলাম ওকে সারাক্ষন অনেক দৌড়া দৌড়ী করতে হয়। “চলো তোমাদের ওষুধের জায়গায় নিয়ে যাই।“ গেলাম ওর সাথে।

সত্যি খুব করুণ অবস্থা। আমরা দুজন মিলে বসে বসে যতটা সাধ্য যন্ত্রপাতি আর ওষুধের একটা লিস্ট বানালাম। এদের প্রানের জোর বেশী। তাই ওটি ছাড়াও কাউকে কাউকে হয়ত বাঁচিয়ে দেওয়া যাবে। লিস্ট বানাতে বানাতে অনেকক্ষণ সময় কেটে গেল। মাঝে মাঝে দু একজন ছেলে মেয়ে এসে আমাদের সাথে আলাপ করে গেল। রাজু আমাদের সেই অসুস্থ মেয়েটার কাছে নিয়ে গেল। বয়স সাতাশ কি আঠাশ। কোমরে একবার ছোরার ঘা খেয়েছিল। এখন সেই ঘা পেকে বাজে অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। পট্টি করে ওষুধ বললাম। তবে বুঝলাম ওষুধ বাইরে থেকে আনাতে হবে। অরূপদা এলে বলতে হবে যে অন্তত ওষুধ গুলো ঠিক ঠাক জমিয়ে রেখ। দুপুরের খাবারের আগে একবার আরতির সাথে দেখা হল। ওকে জিজ্ঞেস করলাম “আচ্ছা এই যে বললে এত লাখ লাখ টাকা তোমরা নিয়ে আসছে। তো সব টাকা যায় কোথায়? ওষুধ তো প্রায় নেই, জামা কাপড়ের এই অবস্থা।“ ও আমাকে বলল “ কত গুলো ছেলে মেয়ে এখানে আছে সেটা জানো? দশ লাখ টাকায় কতদিন চলবে? তার পর বন্দুক গুলি অস্ত্রের ব্যবস্থা। সেগুল কিনতে গেলেও আবার দালালি দিতে হয়। তবে আজ সীমা যদি হাতটা মারতে পারে তো পরের কিছুদিন নিশ্চিত। আর তাছাড়া অরূপদা নিজে গিয়ে বাইরে অনেক মেয়েদের সাহায্যও করে। তারা এখানকার মেম্বার নয়। কিন্তু সমস্যায় পড়েছে। তখন এখানকার মেয়েদের নিয়ে গিয়ে তাকে সাহায্য করা হয়। অর্থ সাহায্যও করা হয়। বুঝলাম অরূপদার মন বিশাল বড়। দুপুরে দেখলাম সব ছেলে মেয়েরা নগ্ন হয়ে কল পারে গিয়ে স্নান করে নিচ্ছে। কারোর কোনও লজ্জা নেই। দিয়ে ভেজা গায়েই ধুতি শাড়ি এইসব জড়িয়ে নিয়ে চলে গেল। কাপড় এত পাতলা যে শোকাতে বেশীক্ষণ লাগবে না। কিন্তু এই মুহূর্তে ওরা গায়ে কাপড় থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেকে নগ্ন। ভেতরের পুরো শরীরটা শাড়ির বাইরে দেখা যাচ্ছে। ছেলেদেরও একই হাল। আমার মনে পাপ আছে, বার বার নজর চলে যাচ্ছিল ছেলেদের নিম্নাঙ্গের দিকে। কিন্তু না মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। আমি আর অদিতি ওদের সবার স্নান হয়ে যাওয়ার পর কল পারে গিয়ে স্নান সারলাম। তবে আমরা ওদের মতন নগ্ন হয়ে স্নান করলাম না। পরনের শাড়িটা দিয়ে শরীরটা ঢেকেই স্নান করলাম। তারপর ওদের মতন শাড়ি পরা নগ্ন শরীরে ঘরে ফিরে ভিজে শাড়িটা দিয়েই শরীরের যতটা জল পারা যায় ঝেড়ে অন্য শাড়িটা পরে ভেজা শাড়িটা মেলে দিলাম। এই সময় অদিতি একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসল। ইতিমধ্যে আমরা দুজন দুজনকে নগ্ন অবস্থায় দেখে ফেলেছি, আর কথা বার্তায় অনেক সহজ হয়ে গেছি। “ আচ্ছা এখানে যে একটাও জানলার কপাট নেই, মশার কামড় খেয়ে মরতে হবে না তো?” আমি কোনও উত্তর দিতে পারলাম না এর। প্রশ্নটা নেহাত ভুল নয়। কিন্তু এর কি উত্তর দেব। ও হ্যাঁ আমাদের কালকের শাড়িগুলো রাজু নিয়ে চলে গেছিল।

এখানে একটা জায়গায় খাবার পরিবেশন করা হয়। সবাই লাইন দিয়ে থালা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুটা জেলের কয়েদীর মতন ব্যাপার। আমরাও গিয়ে লাইনে দাঁড়য়ে পড়লাম। দেখলাম অনেকেরই পরনের শাড়ি ইতিমধ্যে শুঁকিয়ে গেছে। পিছন থেকে আওয়াজ এলো। “ এই ওদের আগে নিতে দাও। সুজাতাকে ওরা বাঁচিয়েছে আজ। “ কোনও হাঁসপাতাল হলে হয়ত আমি বলতাম এখন বাহাত্তর ঘণ্টা দেখতে হবে। কিন্তু এরা সেই সব ব্যাপারে বিশ্বাস করে না। গুলি বেড়িয়ে গেছে তার মানে হল বেঁচে গেছে। তবে, সুজাতা সত্যি সেরে উঠেছিল। আর সেক্ষেত্রে ওষুধের থেকে বেশী কাজ করেছিল ওর নিজের মনের জোর । ওরা সম্ভ্রমে পাশে সরে গিয়ে আমাদের আগে যেতে দিল। আমরা একটু অপ্রস্তুত হয়েই বলে ফেললাম “ না না আমরা তো শুধু বসেই আছি। তোমরাই আগে নিয়ে নাও। আমরা বরং পরে নেব। “ আমরা লাইন ছেড়ে বেড়িয়ে এলাম। আজ ওদের জন্য ভাত ডাল আলু সিদ্ধ আর একটা করে ডিম সিদ্ধ হয়েছে। রোজ ডিম ওদের বরাদ্দে জোটে না। তাই আজ ওরা খুব খুশি। অদিতি আমার হাতটা চেপে সেই মহিলার কাছে এগিয়ে গেল যে ওদের আদেশ দিয়েছিল। এর বয়সও চল্লিশের কিছু নিচে। ওর নাম রাকা। বলল “তোমরা আমার সাথে খেও। “ অদিতি জিজ্ঞেস করল “বিনীতাদি ছাড়া আর কি কেউ বাইরে আছে?” ও হেঁসে বলল “ বুঝলাম অরূপদা তোমাদের বলেছে।“ আমি বললাম “ না না। আরতিদি বলেছে। “ ও বলল “হ্যাঁ আরও চার পাঁচ জন এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। “ সবার খাওয়া শেষ হতে আমরাও বসলাম খেতে। বসলাম মানে একটা করে পাথরের ওপর পেছন ঠেকিয়ে রাখা আর কি।“ লক্ষ্য করলাম ও খাওয়ার সময় কোনও কথা বলে না। হঠাত দেখলাম অরূপদা কোথা থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে হাজির হয়েছে। এই খাবার কিছু আছে। আজ তখন যেতে পারিনি। এখন খেয়ে দেয়ে আবার যাব। একবার চোখ ঘুরিয়ে আমাদের দেখে বলল “ এখানে খাবার দাবার খুব সাধারণ। মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হবে। তবে আমি চেষ্টা করছি আরও দুজনকে খোঁজার। তবে তোমরা যে এই পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছ সেটা দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। “ শেষ কথাটা বোধহয় আমাদের অর্ধনগ্ন অবস্থাটা দেখে বলেছে, কে জানে। একজন ছুটে এসে ওর হাতে একটা থালা ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল। আমাদের মতই ও খাবার তুলে নিয়ে মুখ বুজে খাওয়া শুরু করে দিল। অদিতি খুব কম খায়। আমার কিন্তু ওদের খাবার মন্দ লাগলো না। ছোট বেলায় কতবার মার হাতে এরকম খাবার খেয়েছি। ওরা ভাত ডাল আর আলু একসাথে সিদ্ধ করে নেয়। একটা অদ্ভুত খিচুড়ির মতন ঘ্যাঁট। পরে দেখেছিলাম ভাঁড়ারে থাকলে আরও কিছু টুকটাক সব্জিও পড়ে তাতে। আজ সব্জি নেই ডিম। তবে আমার ঝাল খেতে ভালো লাগে। এদের খাবারটা একটু ঝাল ঝালের দিকেই। আমি আরেকবার ওই ঘ্যাঁটটা নেব কি না ভাবছি, এই সময় রাকাদি বোধহয় আমার উশখুশ ভাব দেখে বলে উঠলো “যা খাবার আছে এই। আরেকটু খেতে চাইলে নিতে পার। বাড়ন্ত হলে জানিয়ে দেওয়া হবে। “ কথা শুনে অরূপদা মুখ তুলে চাইল। “তোমরা কি নিতে লজ্জা করছ না কি? নাও নাও। আজ খাবার বাড়ন্ত নয়।“ ওর খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। ও থালাটা নিয়ে কল পাড়ের দিকে রওয়ানা দেবার আগেই অদিতি বলে উঠলো “ আচ্ছা আমরা তো সারা দিন বসেই আছি। তেমন কোনও কেস না এলে করব টা কি সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। “ অরূপদা বলল “ কেস এখানে শহরের মতন পাবে না। বড় লোকদের একটা ফোঁড়া হলেও ওরা ডাক্তারের কাছে ছোটে, কিন্তু এখানে নাভি শ্বাস না উঠলে কেউ তোমাদের জ্বালাবে না। তবে সেই দিনই তোমাদের কেরামতি দেখানোর পালা। ঠিক আজ যেমন দেখালে। এখানে ডাক্তার থাকাটা পর্যাপ্ত নয় কিন্তু প্রয়োজন। “ এর পরের কথাটা শুনে আমার রক্ত আবার হিম হয়ে গেল। “এখানে মাসে পাঁচ ছয় জন করে অন্তত মারা যায়। কোনও মাসে এর ব্যতিক্রম হয় না। তোমরা যত দিন আছ ততদিন যদি সেই সংখ্যাটা একটু কমাতে পারো তো তাতেই আমরা কৃতজ্ঞ। তবে হ্যাঁ কারুর শরীর খারাপ হলে এমনিতে গিয়ে দেখতে পারো। তাতে আমি বাঁধা দেবার কে। “ কথা গুলো ব্রেন অয়াশ মার্কা টোনে বললেও কথাটা সত্যি। এরা মরতে বসলে তবেই আমাদের কাছে আসবে। অদিতি বলল “সে না হয় হল, কিন্তু আমরা কি এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে পারি? চিন্তা নেই পালানোর চেষ্টা করব না। কিন্তু ক্যাম্পের মধ্যেই ঘুরে বেরানো। বা ওদের ট্রেনিং দেখা?” অরূপদা বলল “স্বচ্ছন্দে। এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে। যেখানে সেখানে তোমরা ঘুরে বেড়াতে পারো। সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে পারো। কেউ বারণ করবে না। “ আমি বললাম “ মাঝে মাঝে গিয়ে রান্নায় হাত লাগালে কি তোমার আপত্তি থাকবে?” অরূপদা বলল “ দুটো পাগল এসে জুটেছে এখানে। আই উইল বে গ্ল্যাড ইফ ইউ শেয়ার আওয়ার ওয়ার্ক অ্যান্ড পেইন। ধন্যবাদ।“ থালা ধুয়ে ফিরে আসার পর আমাদের বলল “ আর কিছু প্রয়োজন হলে ইউ নো হুম টু আস্ক। আমি বলি রা রা। রাজু আর রাকা। চললাম রাকা। সাবধানে থেকো তোমরা। আমি কাল সন্ধ্যার আগে ফিরছি না। আরতিকে জানিয়ে দিও প্লীজ।“

খাওয়া দাওয়ার পর আমরা আমাদের ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। একটা জিনিস আগেই দেখেছি অদিতির সারা শরীর আমার মতই নির্লোম। সত্যি বলতে কি আমি এরকম নোংরা ভাবে থাকতে পারব না। জানলার বাইরে দেখলাম রাজু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিড়ি টানছে। অদিতি উঠে গিয়ে ওকে বলল “এই ছোকরা একটা বিড়ি দাও না।“ রাজু ওর দিকে হাত দেখিয়ে দৌড়ে কোথায় একটা চলে গেল। আমি ওকে বললাম “তুই বিড়ি খাস?” আমরা আস্তে আস্তে তুই তুকারিতে নেমে এসেছি। তবে ঠিক করেছি যে বাইরে সবার সামনে তুমি সম্বোধন করব। জবাব এলো “যা পাই সব খাই।“ রাজুর হাত থেকে বিড়ি নিয়ে আগুণ জ্বালিয়ে কয়েকটা সুখটান দিয়ে পেছনের জানলা দিয়ে ফেলে আবার এসে শুয়ে পড়ল। রাজু তখনও জানলার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অদিতি আমাকে ফিস ফিস করে বলল “ কি মনে হচ্ছে ভাওতা না ভালো?” আমি ও একই রকম ফিসফিস করে বললাম “কে?” ও বলল “ওই অরূপ মাল টা।“ মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম জানি না। আমি যেটা স্নানের সময় ভেবেছিলাম সেটা অদিতিই আমাকে আগে বলল “এই শোন এরকম নোংরা ভাবে থাকতে আমি পারব না। আর দুদিন পরে এদের মতন হয়ে যাব। রাজুকে বলে একটা রেজার জোগাড় করবি?” আমি হেঁসে বললাম “ আমিও ঠিক সেটাই ভাবছিলাম। তবে রেজার বলতে তো ও বোধহয় নিজেরটা দিয়ে দেবে। “ ও বলল “ ছেলেটার কি এইডস আছে?” আমরা দুজনেই হেঁসে ফেললাম। আমি উঠে গিয়ে রাজুকে বললাম “এই ছেলে। আরেকটা উপকার করবে আমাদের?” ও বলল “কি বলো না।“ আমি বললাম “দাঁড়ি কামানর রেজার আছে?” ও বলল “হ্যাঁ।“ আমি বললাম “বুধবার আর শনিবার আমার ওটা চাই। রাত্রে দিলেই হবে।“ ও চোখ তুলে জিজ্ঞেস করল “হাতের শিড়া কাটবে?” পেছন থেকে রমার আওয়াজ এলো আজ এই প্রথম। কালকের পর এই প্রথম। “না। ওরা কি করবে সেটা বুঝে তোমার কাজ নেই। চেয়েছে, দিয়ে দেবে। (একটু ভেবে বলল), না থাক, ওর কাছ থেকে নিতে হবে না। আমিই পাঠিয়ে দিচ্ছি। বাই দা ওয়ে প্রথম দিনেই সাকসেস। খুব ভালো।“ একটু পরে একটা পরিষ্কার রেজার নিয়ে এসে দিয়ে চলে গেল রাজু। ও নিজেও নাকি আজ যাচ্ছে আলির সাথে। আর ওর সাথে থাকবে দুটো বন্দুক। কি করে জানলাম সে কথায় গিয়ে লাভ নেই। লোকের কথা শুনেই জানতে পেরেছি। আর কি? রাজুর নাকি ভীষণ গায়ের জোর । চেহারা ভালো সেটা আগেই বলেছি। তবে গায়ের জোর যে মারাত্মক সেটা এখনও বুঝি নি। আমাদের ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল বিকালের পরই । দুপুরের খাবারের পর ওদের এক প্রস্থ ট্রেনিং হয়ে গেছে। এখন সবাই মানে ছেলে মেয়েরা এর ওর গায়ে ঢলে পড়ে নির্মল হাঁসি ঠাট্টায় মেতে আছে। সকালে যতগুলো ছেলে দেখেছিলাম এখন মনে সংখ্যা তার থেকে একটু বেশী। আমি আর অদিতি এখানে প্রায় এক ঘরে হয়ে আছি। সন্ধ্যা নেমে এলো। বাইরে গ্রাম্য গান শুরু হয়েছে। প্রচুর হাঁসি ঠাট্টার শব্দ আসছে। রাজু একবার বলতে এসেছিল, “গ্রামের মহুয়া চলবে?” অদিতি এমন ভাবে তাকিয়েছে যে ও আর দাঁড়ায় নি। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বাজবে খুব বেশী হলে (কারণ আমাদের হাতে ঘড়ি নেই) বাইরে থেকে সম্মিলিত গানের শব্দটা হঠাত করে চিৎকারে পরিণত হল। কেন ঠিক বুঝতে পারলাম না। একটা অচেনা মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বলল “বাজে অবস্থা। তাড়াতাড়ি আসো।“ অদিতি শুধু একটাই কথা বলল “আবার?” বললাম “চল। এখন বসে থেকে লাভ নেই। ওদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। “ একটা গুলি খেয়েছে তলপেটে। একটা ছাব্বিশ বছরের মেয়ে।

নাম স্নিগ্ধা। সকালের মতন সবাই ওকে ঘিরে রেখেছে। ওষুধ খুব কম। কিন্তু তাতেই যা করার করতে হবে। ভীষণ ছিপছিপে পেটানো শরীর। পুলিশের গুলি খেয়েছে। কিন্তু মাল হাত থেকে ছাড়েনি। লাখ সাতেকের জিনিস। তবে নগদ টাকা নয়। আমি না বলে পারলাম না “এ কি রোজ হয়?” জানি না কে পিছন থেকে বলল “হ্যাঁ। প্রায়ই হয়।“ অদিতি আমাকে বলল “হেভি সিডেটিভ দেবো কি?” আমি উত্তর দিচ্ছি না দেখে বলল “ কি মনে হচ্ছে পারবে?” (সবার সামনে আমরা তুমি করেই কথা বলব।) বললাম “চেষ্টা করে দেখতে হবে। আবার সেই ওপেন এয়ার ওটি। সুজাতাকে নিয়ে যাওয়ার পর জায়গাটা পরিষ্কার করে দিয়েছে কেউ একজন। আবার চলল যমে মানুসে টানাটানি। স্নিগ্ধা চেতনা হারিয়েছে অনেকক্ষণ। তবে ঠিক ওটি তে যা ব্যবহার করা হয় সেই ওষুধ আমাদের কাছে নেই। তাই মাঝে মাঝেই স্নিগ্ধা বলে উঠছিল “বাবা বাবা বাবা” । দ্বিতীয় সাকসেস। মেয়েটা বেঁচে গেল। প্রচুর জ্বর ছিল গায়ে যখন এসেছিল। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার মিনিট তিরিশেকের মধ্যে জ্বর গায়েব। সব কিছু যখন শেষ হল তখন বোধ করি সাড়ে নটা বেজে গেছে। আমি কাঁটা ছেঁড়া করলেও, অদিতি একটা জিনিয়াস তাতে সন্দেহ নেই। স্নিগ্ধা নিজেই ওঠার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বাকিরা ধরাধরি করে ওকে ওর ঘরে পৌঁছে দিয়ে এলো। আমরা ঘরে ফিরে এলাম। অদিতি বলল “ উফফ।“ সত্যি উফফ। একদিনে এত ঘটনা আর নেওয়া যাচ্ছে না। আমার চোখ বুজে এসেছিল। জানি না কখন খাবারের জন্য ডাক পড়বে। বাইরে আর এখন গান হচ্ছে না। হঠাত বিছানার ওপর কেমন একটা ঝাঁকানি অনুভব করে তড়াক করে উঠে বসলাম। আমার বুকের আঁচল নেমে গিয়েছিল। তাড়াতাড়ি নগ্ন স্তনগুলোকে ঢেকে দেখলাম অদিতি উঠে দাঁড়িয়ে শাড়ি ঠিক করছে। মানে আঁচলটা কোমরে গুঁজছে। ভঙ্গীটা যেন এমন যে বাইরে গিয়ে কেটে ফেলবে বা নিজেকে বলিদান দিয়ে দেবে। আমি বললাম “ব্যাপারটা কি? যাচ্ছিস কোথায়?” ও বলল “একটা হেস্ত নেস্ত হওয়া দরকার। চল।“ আমি বললাম “সে তো বুঝলাম। কিন্তু হেস্ত নেস্তটা করবি কার সাথে?” বলল “ অরূপদা নেই তো কি হয়েছে বন্ধু মাদাম তো এসে গেছে। “ আমার তন্দ্রা মতন এসেছিল। উঠে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ও কি বলতে চাইছে। বললাম “বল না কি হয়েছে?” বলল “ বিনীতা এসেছে। চল।“ আমাদের নিজেদের থেকে বেরোতে হল না। দেখলাম একটা মেয়ে এসে কি যেন একটা চেঁচিয়ে বলেই চলে গেল। আমি আসলে আরেকবার শুয়ে পড়বার চিন্তা করছিলাম। কিন্তু না এত লাফালাফি দেখে জিজ্ঞেস করলাম “ওই মেয়ে কি বলে গেল। আমার কানে কিছু ঢোকেনি। “ অদিতি বলল “অন্য ভাষায় কিছু একটা বলে চলে গেল। এল, চলেও গেল, কিন্তু কেন বুঝলাম না। “ একটু পরে রাজু এসে বলল “বিনীতাদি এসেছে। তোমরা চলো। “ অদিতি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল “লোকাল প্রাইম মিনিস্টার তলব করেছেন। চল। দেখি এ কোন লেভেলের আঁতেল।“ আমি উঠে পড়েছিলাম। ইশারায় ওকে বুঝিয়ে দিলাম আস্তে কথা বলতে। বাইরে বেড়িয়ে দেখলাম স্নিগ্ধার ঘরের সামনে বিশাল ভিড় আর ভীষণ চেঁচামেচি। আমরাও ভিড়ের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। ভাব খানা এমন যে এক্ষুনি এখানে হরির লুট হবে।

দেখলাম জিন্স আর শার্ট পরা একজন মহিলা বেড়িয়ে এলেন। আরতি কে দেখলাম ওর দিকে এগিয়ে আসতে। ও নিজেও হাত তুলে আরতির সামনে গিয়ে চেঁচিয়ে বলল “ উই হ্যাভ ওয়ান টু ডে। অ্যান্ড দ্যাট টু... থ্রি টাইমস। “ ওরা কয়েক সেকন্ড নিজেদের জড়িয়ে ধরে রইল। আমি ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করলাম “তুই জানলি কি করে যে এই বস্তুটাই বিনীতাদি?” ও আরও গলা নামিয়ে বলল “বাইরে থেকে চিৎকার শুনলাম যে বিনীতাদি এসে গেছে। এসে গেছে। হুররে। খুব সোজা।“ আমি সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। মহিলা গলা তুলে সবাই কে বলল “সবাই শোনো, সকালে সুজাতা, এখন স্নিগ্ধা এই হল দুটো জয়। আমি যা নিয়ে এসেছি সেটাকে ধরলে নগদ সাত লাখ টাকা হবে। “ আরতি ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল “কিন্তু আমি যে শুনলাম চার লাখ।“ বলল “তোমাদের অরূপদার কানটা গেছে। কান শুনতে ধান শোনে। চার লাখ দিয়ে থাকবে সাত লাখ সেটাই বলেছিলাম। তো যাকগে। আর এসেই শুনলাম আমাদের সীমা একটা ভীষণ নোংরা লোককে কাঁত করতে গেছে। যদি সাকসেস আসে তো চার নম্বর।“ আমি অদিতির দিকে ফিসফিস করে ঘাড় নামিয়ে নিয়ে বললাম “ এর সাথে ঝগড়া করতে আসছিলিস?” ও বলল “ সেটা করবো, তবে সবার সামনে নয়। মহিলা ওনার স্বামীর থেকেও বেশী নাটুকে।“ বিনীতাদি বলে উঠল “ওহহ। আমাদের নতুন দুই কমরেড কোথায়?” আমরা সতর্ক হয়ে উঠলাম। এক মুহূর্তে আমি ফিসফিস করে ওর কানে বলে দিলাম “চেপে যা। ফস করে কিছু বলে বসিস না।“ রাজু বলল “ওই ওরা পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। “ রাজুকে দেখতে পাই নি। শুধু গলার স্বরটা চিনতে পারলাম। সবাই রাস্তা ছেড়ে দিল। বিনীতাদি আমাদের কাছে এসে আমাদের দুজনের কপালে একটা করে চুমু দিয়ে দিল। “আমি ওকে বলতাম বারবার, দুটো ভালো ডাক্তার নিয়ে এসো, এইভাবে প্রান যাবে না। আজ তোরা প্রমান করে দিয়েছিস।“ অদিতি বোধহয় এই নাটকীয় তুই তুকারি শুনে চেঁচিয়ে উঠত, কিন্তু ওর হাতটা এখনও আমার হাতে ধরা। ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু কি বলবে জানি না, তাই আগেই হাতে একটা জোড়ে চাপ দিলাম। ও একটু থিতু হয়ে বলল “ আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।“ বিনীতাদি বলল “ আপনি নয় সোনা। তুমি। আমরা সবাই এখানে সমান। আর বয়সে যারা ছোট তাদের কে আমি মাঝে মাঝে তুই বলি, কিন্তু সেটা ভালোবেসে, ছোট বলে নয়। আমি চেঞ্জ করে তোমাদের ঘরে আসছি। তোমাদের আর আসতে হবে না। আজ সেলিব্রেশনের দিন। দেরীতে খেলেও হবে। আর তোমাদের অরূপদা এসে মাতব্বরি করলে বলে দিও আমি গ্র্যান্ট করেছি। (আমাদের দিকে ফিরে বলল) আমি আসছি দশ মিনিটে।“ একটু থেমে বলল “শুধু সীমাকে নিয়ে একটু চিন্তিত। কারণ আলির কাছ থেকে কোনও খবর আসে নি এখনও। তবে সেটা সাকসেস হলে তো গ্র্যান্ড ফিস্ট। “ জমায়েত ভেঙ্গে গেল।
[+] 2 users Like ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গোপন কথা টি রবে না গোপনে ( পর্দাফাঁস ) - by ronylol - 03-02-2019, 11:19 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)