09-01-2020, 03:25 AM
(This post was last modified: 09-01-2020, 03:41 AM by Biddut Roy. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব ৫
(আমি)হ্যা বল?
(আপু) খেলা শেষে সন্ধ্যায় বাসায় আসবি?
((((যা মনে মনে ভাবছিলাম তা ঐ হল"" প্যাচ একটা লাগিয়ে দিয়েছে""এখন কি করে বলি যে সন্ধ্যায় রিয়ার দেখা করতে যেতে হবে ওর সাথে আড্ডা দিব, ও ছাদে অপেক্ষা করবে আমি ওকে বলেছি সন্ধায় আসবো ওদের ছাদে কনফার্ম,, এখন এই গুন্ডি বড় আপুকে যদি বলি তাহলে আমার বারোটা বাজাবে কি করা যাই মাথায় একটা বুদ্ধি আসছে দেখি কাজে লাগে কিনা)))
(আমি)সন্ধ্যায় তো আসতে পারবো না??
(আপু)কেন সন্ধ্যায় আবার কি করবি।
(আমি)সামনের ফাইনাল এক্সাম না তাই একটু পড়তে বসবো।।
(আপু)এক্সামের বহুত দেরি আরো তিন মাস,,, আর তোকে তো কোনদিন দেখি নাই বই নিয়ে বসতে।
(এই গুন্ডি মেয়ের হাত থেকে বাঁচা অসম্ভব)
( আমি)যে ভাবে হক বাচঁতে হবে,, একটা মিথ্যা বানিয়ে বলতে হবে,,,আসলে আজকে আব্বু চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসবে,, চার পাঁচ দিন বাড়িতে থাকবে,,, এই চার পাঁচ দিন পড়তে হবে তা না হলে আব্বু পড়ালেখা বন্ধ করে দিবে।।
(আপু) মিথ্যে বলছিস কেন?
(আমি) কোথায় মিথ্যা বললাম,,, আব্বু তো সত্য আজকে আসবে?
(আপু) একটু রেগে,, যা যা তোরা আসতে হবে না।।
(আমি) রাগ কর কেন,, আচ্ছা ঠিক আছে সময় পাইলে আসবো,,,।।
---আপুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে,,,,, হাঁটতে-হাঁটতে মালেক চাচার দোকানে চলে আসলাম,! দেখি শামীম বসে আছে আমার জন্য।।।। শামীম আমাকে দেখে বলল কিরে কিরে মামুর বেটা এতক্ষণ লাগে আসতে,,।।। আরে আপু আস্তে দে না,? শামীম বলল ইদানিং দেখি তোর আপুর সাথে ভাল ভাব জমে গেছে,।
---- তোর আপুর প্রেমে ট্রেমে পড়ছিস নাকি ,,,
(আমি)দূর হারামজাদা বড় আপুর প্রেমে পড়ে নাকি আবার,,,
(বন্ধু) তাহলে সব সময় তোর আপু বাসায় থাকছ কেন।
(আমি) আরে বেটা আপু আজকে কি বলল জানিস,।
(বন্ধু) তুই না বললে জানবো কি করে।
(আমি)আপু নাকি একটা ছেলেকে ভালোবাসে??
(বন্ধু) ভার্সিটির সুন্দরী মেয়ে ভালবাসতেই পারে তাতে সমস্যা কি।।
(আমি) সমস্যা হলো ছেলেটা আপুর চেয়ে বয়েসে অনেক ছোট??
(বন্ধু) কি বলিস,, নাম কি ছেলেটার,,,,
(আমি) কি জানি একটা নাম বললো ভুলে গিয়েছি,, দাড়া মনে করে নেই হ্যা হ্যা মনে মনে পড়ছে,,,,, F A F
(বন্ধু) এটা আবার কোন ধরণের নাম,,
(আমি) আরে বেটা আপু বলছে F A F ছেলেটার নামের প্রথম অক্ষর এগুলি দিয়ে সাজিয়ে নাম বের করে নিতে,? আমি এই অক্ষর গুলো দিয়ে কোন নামে বের করতে পারছিনা,,, এখন তুই একটু ট্রাই করে দেখ,? আপুর চিনা জানা ভার্সিটি ভার্সিটির বাইরে বন্ধুবান্ধব কারো নাম বের হয় কিনা?? বন্ধুর দিকে তাকিয়ে দেখি মাথা চুলকাচ্ছে,, হয়তো সে অক্ষর গুলো দিয়ে নাম বের করার চেষ্টা করছে,?? এ ফাকে আমি ওর সাথে টেবিলের উপর বসে পরলাম,,, বন্ধু কিছুক্ষন ভাবার পরে হঠাৎ করে বলল?
ট্রিট দে?
কিসের ট্রিট??
আরে বেটা আপু তো তোর প্রেমে পড়ছে।
(আমি)তোর মাথা নষ্ট,, পাগল হইছিস,, বাড়িতে জানে,, তাড়াতাড়ি গাড়ি ওঠ 6 টার আগে পাবনার গাড়ি ছাড়বে এখান থেকে,?? বড় আপু আমার প্রেমে পড়বে কেন,,আপুর কি মাথা খারাপ,,আপু আমাকে আদর করে মোহাব্বত করে বকা দেই,,,, তাই বলে আপু আমার সাথে প্রেম করবে।।
(বন্ধু) তোকে আদর মোহাব্বত করে সেজন্যই তো তোকে ভালোবাসি।।
,, এখন ট্রিট দে,
আরে বলদ কিসের ট্রিট আমিতো কিছুই বুঝতেছি না।।
(বন্ধু) তুই মন দিয়ে অক্ষর গুলো সাজিয়ে দেখ??
,,,আমি মন দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে অক্ষর গুলো সাজিয়ে দেখেছি কারো নাম আমি বাইরে বের করতে পারি নাই,, খামাখা মাথাটা নষ্ট হওয়ার উপক্রম।।
এখন তুই বল অক্ষর গুলো সাজালে কি নাম বের হয়।।
(বন্ধু,,,) আমাকে বলদ বলিস, তুই আস্তা মারা একটা বলদ,, এটা বের করতে পারোস না,,,,
(আমি) দেখ বেশি কথা বলিস না,,,তুই বুঝিয়ে বল বল না বললে আমি চলে যাই।।
(বন্ধু)) আচ্ছা ঠিক আমি বুঝিয়ে বলছি ট্রিট কিন্তু দিতে হবে।
আচ্ছা দিব বল।
F দিয়ে ফারহান Aদিয়ে আহমদ আবার F দিয়ে ফারাবি,, সবগুলো মিলিয়ে হল??
ফারহান আহমদ ফারাবী তোর নাম,, আপু তোকে ভালবাসে? এখন রেস্টুরেন্টের চল ট্রিট দিবি,,
(আমি)আরে থাম কিসের ট্রিট,, আমাকে ভাবতে দে
ও তাই তো এ অক্ষর গুলো দিয়ে তো আমার নাম আসে,, আমি তো কখনো ভাবি নাই,, কত বড় গাধা রে আমি,, নিজের নামের অক্ষর গুলো দিয়ে ও নিজের নামটা সাজাতে পারি নাই,,, তার মানে কি সত্যিই আপু আমাকে ভালবাসে"" আরে না না না,, এ অক্ষর গুলো দিয়ে হয়তো অন্য কারো নামও আসতে পারে,, যা আমি ছেলেটাকে চিনি না আপু চিনে।
((বন্ধু)) দোস্ত তুই তো লাকি রে, ভার্সিটির সুন্দরী আপু যাকে পাওয়ার জন্য সবাই পাগল। সে আপু কি না তোকে ভালবাসে??? আজকে কিন্তু ট্রিট দুইটা দিতে হবে,
(আমি)আরে বেটা তুই আছিস ট্রিট নিয়ে আমি এদিকে চিন্তায় মরি।।।
(বন্ধু) কোন চিন্তা নাই আপু তোকে ঐভালোবাসে
,, তোর কপাল খুলে গেছে সুন্দরী বউ ও
পাবি তার সাথে তার বাবার কোটি টাকা ও পাবি?? এখন ট্রিট দে তাড়াতাড়ি প্রচুর ক্ষিধা লাগছে,,
(আমি) মামুর বেটা ট্রিট ট্রিট করে করে কানটা ঝালাপালা করে ফেললি,,, তুই এখন চল আমার সাথে পাবনা ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসে,,, আপু আমাকে কোন দুঃখে ভালবাসতে যাবে,, ভার্সিটিতে তার ভালোবাসার মানুষ অভাব আছে নাকি আর তার বাবার টাকা দিয়ে আমি কি করব আমরা কি ফকিন্নি,, আমাদের যা আছে তা আমার বউ বাচ্চাকাচ্চা আজীবন খেয়ে যেতে পারবে।।,,)
বন্ধু)) তুই আসলে ট্রিট না দেওয়ার জন্য এগুলো করছিস।আপু তোকে ওই ভালোবাসে। তুই এখন খাওয়াবি কিনা বল,,
(আমি)তোর খিদা লেগেছে অবশ্যই তোকে খাওয়াবো,, কিন্তু আপুর জন্য না,, মনে মনে লাড্ডু ফুটছে আপু আমাকে ভালবাসে। আপু যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে বলে না কেন,, আপু তো আমার সাথে সব কথা ঐ বলে,, তাহলে আমাকে পছন্দ করে বলে না কেন,, হয়তো মেয়ে মানুষ,, আবার আমি তার চেয়ে বয়েসে অনেক ছোট সেজন্য হয়তো ভয়ে বলে না।
ডাকে একটা প্রবাদ আছে না,, মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না,,, এটা হয়তো সেই কিসিমের,,, কিন্তু আমিও কম কিসের,,, আমিও তাকে কিছু বলবো না,,, সে যদি আমাকে পছন্দ করে দেখি না বলে কতদিন থাকতে পারে,।। তবে আমি ও একটু কনফিউজ এ আছি F A F এই অক্ষর গুলো দিয়ে তো অন্য কারো নাম ও হতে পারে,।।। ভাবনার মাঝে বন্ধু বলে উঠল কিরে তুই না বললে খাওয়াবি,, আমি বললাম হুম কি খাবি বল,,ও বলল এখন বেশি কিছু খাব না অল্প খাওয়া সন্ধ্যায় সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাব,,, আমি বললাম তোর শুধু খাওন আর খাওন এ ছাড়া আর কোন কাজ নেই।। আমি দোকান তার চাচার দিকে ইশারা করে বললাম ওকে একটা লাভ ক্যান্ডি চকলেট দিয়ে দেও,, দোকানদার চাচা একটা লাভ ক্যান্ডি চকলেট ওর হাতে ধরিয়ে দিলো।। ও আমার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করল ফকিন্নি নি দেখেছি তোর মতন ফকিন্নি দেখে নেই,, তুই বন্ধু নামে কলঙ্ক,,, অনেক চিন্তা ভাবনা করে তোর নামটা বের করে দিলাম,,, তুই আমাকে লাভ ক্যান্ডি চকলেট দিচ্ছিস,,,, আমি বললাম তুই এটা চুষতে থাক,, মুখ মিষ্টি কর তার ফাঁকে আমি বাসা থেকে মানিব্যাগটা নিয়ে আসি এ বলে আমি হাটা শুরু করলাম,,, ওরপিছন থেকে ডাকতে শুরু করলো,, কোথায় যাচ্ছিস এদিকে আয় তোর খাওয়াতে হবে না আমি ঐ তোকে খাওয়াবো,, ওকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি ওর কাছে থাকলে আমার মানিব্যাগ খালি না করে ছাড়বে না,, ওর ডাক উপেক্ষা না করে হাঁটতে শুরু করলাম,,, মাথার মাঝে এখন শুধু একটাই চিন্তা তাহলে ঈশিতা আপু সে কি আমাকে সত্যিই ভালোবাসে,,, ভালো যদি না বাসে তাহলে আমাকে এভাবে বকে কেন,, মাঝে মাঝে থাপ্পর দেয় কেন আবার আমার জন্য আমার পছন্দের খাবার রান্না করে কেন,,, আমাকে কারো সাথে দেখলে এত রিএক্ট করে কেন,,,, আমার খাওয়া অর্ধেক খুব কফি খা কেন,, আবার আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে কেন,, সব সময় তার কাছে আমাকে ডাকে কেন তাহলে কি সত্যিই সে আমাকে ভালোবাসে,,,, কিছুক্ষণ হেঁটে হঠাৎ কি মনে করে জানি থমকে দাঁড়ালাম,, দৌড়ে আবার দোকানে আসলাম দেখি শামীম এখনো বসে আছে আমাকে দেখে বলল,,, আমি জানি তুই আসবি তুই আমার ন্যাংটাকালের বন্ধু আমার খিদা কথা শুনে না খাওয়া যাবি না।। আমি বললাম তুই যা চাইবি তাই খাওয়াবো কিন্তু সমস্যা একটা আছে ও বললো কি সমস্যা
আমি বললাম,, আপুর একটা ক্লাসমেট আছে না কি জানি ওর নাম আপু ওর সাথে সব সময় ক্যান্টিনে গল্প করে লম্বা-চওড়া কালো ধরনের একটা ছেলে,। আমার কথা শুনে শামীম বলল উনার নাম তো আমার মনে নাই কিন্তু উনার এ তো প্রায়ই দেখি ঈশিতা আপুর সাথে গল্প করে,।। কেন উনি কি করেছেন কি সমস্যা,,,,, আমি বললাম আরে ব্যাটা উনার নামটা তাড়াতাড়ি মনে কর,, শামীম বলল তুই এক মিনিট দাঁড়া আমি দেখতেছি শামীম ওর ফেসবুক এর ভিতরে ঢুকলো অল ফ্রেন্ড লিস্ট চেক করলো,, তারপর বলল হ্যাঁ পেয়েছি উনার নাম তো,, ফাহিম আশরাফ ফরাজী,,, আমি বললাম হ্যা এখানেই সমস্যা,, ফাহিমের প্রথম অক্ষর F আশরাফ এর প্রথম অক্ষর A আর ফরাজীর প্রথম অক্ষর F তারমানে আপু উনাকে ভালোবাসে শামীম আমার কথা শুনে বলে ঈশিতা আপু উনাকে ভালবাসতে যাবে কেন।। আর তুই ওই তো বললি যে ঈশিতা আপু একটা পিচ্চিকে ভালোবাসে আর ঈশিতা আপু ক্লাসমেট তো আর পিচ্চি না,,, সে আপুর চাইতে এক বছরের বড় আপুর সাথে পড়ে ঠিক আছে,, কিন্তু সে এইচ এস সিতে একবার ফেল করেছে আমি বললাম দোস্ত তার পরেও আমি কনফিউজে আছি? আপু আমাকে ভালবাসবে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না,, আমার কথা শুনে শামীম বলল এক কাজ করা যাক আপু তোকে ভালবাসে কিনা পরীক্ষা করে চেক করা যাক,, যদি পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে তাহলে কিন্তু আজকের সন্ধায় বড় ধরনের ট্রিট দিতে হবে,,, আমি বললাম তুই যত বড় ট্রিট চাস আমি দিবো এখন বল কি ভাবে পরীক্ষা করবি। শামীম বলল রক্ত জাতীয় একটা তরল মেডিসিন আছে যা প্রায় দেখতে রক্তের মত সামনের দোকানে বিক্রি করে,, ওইটা এনে তোর কপালে অল্প লাগিয়ে এখানে শুয়ে থাকবি আমি তোর মাথায় আস্তে আস্তে পানি দিব,, তারপর ঈশিতা আপুকে ফোন দিয়ে বলবো,, তোর অবস্থার কথা,, সে যদি এখানে এসে কান্না হাজারী শুরু করে দে তাহলে বুঝতে হবে সে তোকে সত্যিই ভালোবাসে,, আমি বললাম তুই কি বলিস এসব আপু যদি সত্যিটা জানতে পারে তাহলে পার্মানেন্টলি হসপিটাল কম করে হলেও এক মাস থাকতে হবে,, আমার কথা শুনে শামীম বলল তুই কোন চিন্তা করবি না আমি আছি তো,,, আমি বললাম আমার কিন্তু এখন ওই ভয় করতেছে,,, আপু যদি ভাইসেস জানতে পারে,,, তার সাথে ফাইজলামি করছি তাহলে কিন্তু আমি শেষ সব দোষ তোমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিব,, আমার কথা শুনে শামীম বলল আচ্ছা ঠিক আছে চালিয়ে দিস,,, যদি দেখি পরিস্থিতির বেশি খারাপ তখন দুইজনে ওই পালাবো,,,, দোকান থেকে সেই মেডিসিনটা কিনে আনলাম,, চাচার দোকানের টেবিলের উপর বসলাম,, চাচাকে বললাম চাচা মগ বাকেট আছে একটু লাগবে চাচা একটা মগ আর একটা বালতি আমার হাতে দিলো,, বালতি টা পানি দিয়ে পরিপূর্ণ করলাম,,, তারপর চাচার দোকান থেকে দুইটা রেডবল আর দুই টা ফিট বিস্কিট খেয়ে দুজনে দুই নিকেটোন ধরালাম,, সিগারেট শেষ করে,,, শামীম বলল এখন ঈশিতা আপুকে ফোন দিব,,, শামীম ফোন দিয়ে আমার নামে অনেক কিছু বললো,, তারপর আমাকে বলছে হায় হায় সর্বনাশ,,, আপুতো মোবাইলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে,, এ কথা শুনে আমি বললাম দেখ ভাই আমার কিন্তু প্রচন্ড ভয় করতেছে, কিসের থেকে কি হয়ে যায়,,, শামীম বলল আরে বেটা দেখা যাক কি হয়।। 7-- 8 মিনিট পর শামীম বলল শুয়ে পর ঈশিতা আপু এখনি এসে পড়বে,????
শামীম আমার কপালের দুই সাইটে মেডিসিন লাগিয়ে দিয়েছে,, তারপর শামীম বলল, এই তো ঈশিতা আপু কান্না করতে করতে আসতেছে,,, আমি শুয়ে পড়েছি,,, হে খুদা রক্ষা কর,,???
চলবে......
(আমি)হ্যা বল?
(আপু) খেলা শেষে সন্ধ্যায় বাসায় আসবি?
((((যা মনে মনে ভাবছিলাম তা ঐ হল"" প্যাচ একটা লাগিয়ে দিয়েছে""এখন কি করে বলি যে সন্ধ্যায় রিয়ার দেখা করতে যেতে হবে ওর সাথে আড্ডা দিব, ও ছাদে অপেক্ষা করবে আমি ওকে বলেছি সন্ধায় আসবো ওদের ছাদে কনফার্ম,, এখন এই গুন্ডি বড় আপুকে যদি বলি তাহলে আমার বারোটা বাজাবে কি করা যাই মাথায় একটা বুদ্ধি আসছে দেখি কাজে লাগে কিনা)))
(আমি)সন্ধ্যায় তো আসতে পারবো না??
(আপু)কেন সন্ধ্যায় আবার কি করবি।
(আমি)সামনের ফাইনাল এক্সাম না তাই একটু পড়তে বসবো।।
(আপু)এক্সামের বহুত দেরি আরো তিন মাস,,, আর তোকে তো কোনদিন দেখি নাই বই নিয়ে বসতে।
(এই গুন্ডি মেয়ের হাত থেকে বাঁচা অসম্ভব)
( আমি)যে ভাবে হক বাচঁতে হবে,, একটা মিথ্যা বানিয়ে বলতে হবে,,,আসলে আজকে আব্বু চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসবে,, চার পাঁচ দিন বাড়িতে থাকবে,,, এই চার পাঁচ দিন পড়তে হবে তা না হলে আব্বু পড়ালেখা বন্ধ করে দিবে।।
(আপু) মিথ্যে বলছিস কেন?
(আমি) কোথায় মিথ্যা বললাম,,, আব্বু তো সত্য আজকে আসবে?
(আপু) একটু রেগে,, যা যা তোরা আসতে হবে না।।
(আমি) রাগ কর কেন,, আচ্ছা ঠিক আছে সময় পাইলে আসবো,,,।।
---আপুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে,,,,, হাঁটতে-হাঁটতে মালেক চাচার দোকানে চলে আসলাম,! দেখি শামীম বসে আছে আমার জন্য।।।। শামীম আমাকে দেখে বলল কিরে কিরে মামুর বেটা এতক্ষণ লাগে আসতে,,।।। আরে আপু আস্তে দে না,? শামীম বলল ইদানিং দেখি তোর আপুর সাথে ভাল ভাব জমে গেছে,।
---- তোর আপুর প্রেমে ট্রেমে পড়ছিস নাকি ,,,
(আমি)দূর হারামজাদা বড় আপুর প্রেমে পড়ে নাকি আবার,,,
(বন্ধু) তাহলে সব সময় তোর আপু বাসায় থাকছ কেন।
(আমি) আরে বেটা আপু আজকে কি বলল জানিস,।
(বন্ধু) তুই না বললে জানবো কি করে।
(আমি)আপু নাকি একটা ছেলেকে ভালোবাসে??
(বন্ধু) ভার্সিটির সুন্দরী মেয়ে ভালবাসতেই পারে তাতে সমস্যা কি।।
(আমি) সমস্যা হলো ছেলেটা আপুর চেয়ে বয়েসে অনেক ছোট??
(বন্ধু) কি বলিস,, নাম কি ছেলেটার,,,,
(আমি) কি জানি একটা নাম বললো ভুলে গিয়েছি,, দাড়া মনে করে নেই হ্যা হ্যা মনে মনে পড়ছে,,,,, F A F
(বন্ধু) এটা আবার কোন ধরণের নাম,,
(আমি) আরে বেটা আপু বলছে F A F ছেলেটার নামের প্রথম অক্ষর এগুলি দিয়ে সাজিয়ে নাম বের করে নিতে,? আমি এই অক্ষর গুলো দিয়ে কোন নামে বের করতে পারছিনা,,, এখন তুই একটু ট্রাই করে দেখ,? আপুর চিনা জানা ভার্সিটি ভার্সিটির বাইরে বন্ধুবান্ধব কারো নাম বের হয় কিনা?? বন্ধুর দিকে তাকিয়ে দেখি মাথা চুলকাচ্ছে,, হয়তো সে অক্ষর গুলো দিয়ে নাম বের করার চেষ্টা করছে,?? এ ফাকে আমি ওর সাথে টেবিলের উপর বসে পরলাম,,, বন্ধু কিছুক্ষন ভাবার পরে হঠাৎ করে বলল?
ট্রিট দে?
কিসের ট্রিট??
আরে বেটা আপু তো তোর প্রেমে পড়ছে।
(আমি)তোর মাথা নষ্ট,, পাগল হইছিস,, বাড়িতে জানে,, তাড়াতাড়ি গাড়ি ওঠ 6 টার আগে পাবনার গাড়ি ছাড়বে এখান থেকে,?? বড় আপু আমার প্রেমে পড়বে কেন,,আপুর কি মাথা খারাপ,,আপু আমাকে আদর করে মোহাব্বত করে বকা দেই,,,, তাই বলে আপু আমার সাথে প্রেম করবে।।
(বন্ধু) তোকে আদর মোহাব্বত করে সেজন্যই তো তোকে ভালোবাসি।।
,, এখন ট্রিট দে,
আরে বলদ কিসের ট্রিট আমিতো কিছুই বুঝতেছি না।।
(বন্ধু) তুই মন দিয়ে অক্ষর গুলো সাজিয়ে দেখ??
,,,আমি মন দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে অক্ষর গুলো সাজিয়ে দেখেছি কারো নাম আমি বাইরে বের করতে পারি নাই,, খামাখা মাথাটা নষ্ট হওয়ার উপক্রম।।
এখন তুই বল অক্ষর গুলো সাজালে কি নাম বের হয়।।
(বন্ধু,,,) আমাকে বলদ বলিস, তুই আস্তা মারা একটা বলদ,, এটা বের করতে পারোস না,,,,
(আমি) দেখ বেশি কথা বলিস না,,,তুই বুঝিয়ে বল বল না বললে আমি চলে যাই।।
(বন্ধু)) আচ্ছা ঠিক আমি বুঝিয়ে বলছি ট্রিট কিন্তু দিতে হবে।
আচ্ছা দিব বল।
F দিয়ে ফারহান Aদিয়ে আহমদ আবার F দিয়ে ফারাবি,, সবগুলো মিলিয়ে হল??
ফারহান আহমদ ফারাবী তোর নাম,, আপু তোকে ভালবাসে? এখন রেস্টুরেন্টের চল ট্রিট দিবি,,
(আমি)আরে থাম কিসের ট্রিট,, আমাকে ভাবতে দে
ও তাই তো এ অক্ষর গুলো দিয়ে তো আমার নাম আসে,, আমি তো কখনো ভাবি নাই,, কত বড় গাধা রে আমি,, নিজের নামের অক্ষর গুলো দিয়ে ও নিজের নামটা সাজাতে পারি নাই,,, তার মানে কি সত্যিই আপু আমাকে ভালবাসে"" আরে না না না,, এ অক্ষর গুলো দিয়ে হয়তো অন্য কারো নামও আসতে পারে,, যা আমি ছেলেটাকে চিনি না আপু চিনে।
((বন্ধু)) দোস্ত তুই তো লাকি রে, ভার্সিটির সুন্দরী আপু যাকে পাওয়ার জন্য সবাই পাগল। সে আপু কি না তোকে ভালবাসে??? আজকে কিন্তু ট্রিট দুইটা দিতে হবে,
(আমি)আরে বেটা তুই আছিস ট্রিট নিয়ে আমি এদিকে চিন্তায় মরি।।।
(বন্ধু) কোন চিন্তা নাই আপু তোকে ঐভালোবাসে
,, তোর কপাল খুলে গেছে সুন্দরী বউ ও
পাবি তার সাথে তার বাবার কোটি টাকা ও পাবি?? এখন ট্রিট দে তাড়াতাড়ি প্রচুর ক্ষিধা লাগছে,,
(আমি) মামুর বেটা ট্রিট ট্রিট করে করে কানটা ঝালাপালা করে ফেললি,,, তুই এখন চল আমার সাথে পাবনা ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসে,,, আপু আমাকে কোন দুঃখে ভালবাসতে যাবে,, ভার্সিটিতে তার ভালোবাসার মানুষ অভাব আছে নাকি আর তার বাবার টাকা দিয়ে আমি কি করব আমরা কি ফকিন্নি,, আমাদের যা আছে তা আমার বউ বাচ্চাকাচ্চা আজীবন খেয়ে যেতে পারবে।।,,)
বন্ধু)) তুই আসলে ট্রিট না দেওয়ার জন্য এগুলো করছিস।আপু তোকে ওই ভালোবাসে। তুই এখন খাওয়াবি কিনা বল,,
(আমি)তোর খিদা লেগেছে অবশ্যই তোকে খাওয়াবো,, কিন্তু আপুর জন্য না,, মনে মনে লাড্ডু ফুটছে আপু আমাকে ভালবাসে। আপু যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে বলে না কেন,, আপু তো আমার সাথে সব কথা ঐ বলে,, তাহলে আমাকে পছন্দ করে বলে না কেন,, হয়তো মেয়ে মানুষ,, আবার আমি তার চেয়ে বয়েসে অনেক ছোট সেজন্য হয়তো ভয়ে বলে না।
ডাকে একটা প্রবাদ আছে না,, মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না,,, এটা হয়তো সেই কিসিমের,,, কিন্তু আমিও কম কিসের,,, আমিও তাকে কিছু বলবো না,,, সে যদি আমাকে পছন্দ করে দেখি না বলে কতদিন থাকতে পারে,।। তবে আমি ও একটু কনফিউজ এ আছি F A F এই অক্ষর গুলো দিয়ে তো অন্য কারো নাম ও হতে পারে,।।। ভাবনার মাঝে বন্ধু বলে উঠল কিরে তুই না বললে খাওয়াবি,, আমি বললাম হুম কি খাবি বল,,ও বলল এখন বেশি কিছু খাব না অল্প খাওয়া সন্ধ্যায় সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাব,,, আমি বললাম তোর শুধু খাওন আর খাওন এ ছাড়া আর কোন কাজ নেই।। আমি দোকান তার চাচার দিকে ইশারা করে বললাম ওকে একটা লাভ ক্যান্ডি চকলেট দিয়ে দেও,, দোকানদার চাচা একটা লাভ ক্যান্ডি চকলেট ওর হাতে ধরিয়ে দিলো।। ও আমার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করল ফকিন্নি নি দেখেছি তোর মতন ফকিন্নি দেখে নেই,, তুই বন্ধু নামে কলঙ্ক,,, অনেক চিন্তা ভাবনা করে তোর নামটা বের করে দিলাম,,, তুই আমাকে লাভ ক্যান্ডি চকলেট দিচ্ছিস,,,, আমি বললাম তুই এটা চুষতে থাক,, মুখ মিষ্টি কর তার ফাঁকে আমি বাসা থেকে মানিব্যাগটা নিয়ে আসি এ বলে আমি হাটা শুরু করলাম,,, ওরপিছন থেকে ডাকতে শুরু করলো,, কোথায় যাচ্ছিস এদিকে আয় তোর খাওয়াতে হবে না আমি ঐ তোকে খাওয়াবো,, ওকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি ওর কাছে থাকলে আমার মানিব্যাগ খালি না করে ছাড়বে না,, ওর ডাক উপেক্ষা না করে হাঁটতে শুরু করলাম,,, মাথার মাঝে এখন শুধু একটাই চিন্তা তাহলে ঈশিতা আপু সে কি আমাকে সত্যিই ভালোবাসে,,, ভালো যদি না বাসে তাহলে আমাকে এভাবে বকে কেন,, মাঝে মাঝে থাপ্পর দেয় কেন আবার আমার জন্য আমার পছন্দের খাবার রান্না করে কেন,,, আমাকে কারো সাথে দেখলে এত রিএক্ট করে কেন,,,, আমার খাওয়া অর্ধেক খুব কফি খা কেন,, আবার আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে কেন,, সব সময় তার কাছে আমাকে ডাকে কেন তাহলে কি সত্যিই সে আমাকে ভালোবাসে,,,, কিছুক্ষণ হেঁটে হঠাৎ কি মনে করে জানি থমকে দাঁড়ালাম,, দৌড়ে আবার দোকানে আসলাম দেখি শামীম এখনো বসে আছে আমাকে দেখে বলল,,, আমি জানি তুই আসবি তুই আমার ন্যাংটাকালের বন্ধু আমার খিদা কথা শুনে না খাওয়া যাবি না।। আমি বললাম তুই যা চাইবি তাই খাওয়াবো কিন্তু সমস্যা একটা আছে ও বললো কি সমস্যা
আমি বললাম,, আপুর একটা ক্লাসমেট আছে না কি জানি ওর নাম আপু ওর সাথে সব সময় ক্যান্টিনে গল্প করে লম্বা-চওড়া কালো ধরনের একটা ছেলে,। আমার কথা শুনে শামীম বলল উনার নাম তো আমার মনে নাই কিন্তু উনার এ তো প্রায়ই দেখি ঈশিতা আপুর সাথে গল্প করে,।। কেন উনি কি করেছেন কি সমস্যা,,,,, আমি বললাম আরে ব্যাটা উনার নামটা তাড়াতাড়ি মনে কর,, শামীম বলল তুই এক মিনিট দাঁড়া আমি দেখতেছি শামীম ওর ফেসবুক এর ভিতরে ঢুকলো অল ফ্রেন্ড লিস্ট চেক করলো,, তারপর বলল হ্যাঁ পেয়েছি উনার নাম তো,, ফাহিম আশরাফ ফরাজী,,, আমি বললাম হ্যা এখানেই সমস্যা,, ফাহিমের প্রথম অক্ষর F আশরাফ এর প্রথম অক্ষর A আর ফরাজীর প্রথম অক্ষর F তারমানে আপু উনাকে ভালোবাসে শামীম আমার কথা শুনে বলে ঈশিতা আপু উনাকে ভালবাসতে যাবে কেন।। আর তুই ওই তো বললি যে ঈশিতা আপু একটা পিচ্চিকে ভালোবাসে আর ঈশিতা আপু ক্লাসমেট তো আর পিচ্চি না,,, সে আপুর চাইতে এক বছরের বড় আপুর সাথে পড়ে ঠিক আছে,, কিন্তু সে এইচ এস সিতে একবার ফেল করেছে আমি বললাম দোস্ত তার পরেও আমি কনফিউজে আছি? আপু আমাকে ভালবাসবে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না,, আমার কথা শুনে শামীম বলল এক কাজ করা যাক আপু তোকে ভালবাসে কিনা পরীক্ষা করে চেক করা যাক,, যদি পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে তাহলে কিন্তু আজকের সন্ধায় বড় ধরনের ট্রিট দিতে হবে,,, আমি বললাম তুই যত বড় ট্রিট চাস আমি দিবো এখন বল কি ভাবে পরীক্ষা করবি। শামীম বলল রক্ত জাতীয় একটা তরল মেডিসিন আছে যা প্রায় দেখতে রক্তের মত সামনের দোকানে বিক্রি করে,, ওইটা এনে তোর কপালে অল্প লাগিয়ে এখানে শুয়ে থাকবি আমি তোর মাথায় আস্তে আস্তে পানি দিব,, তারপর ঈশিতা আপুকে ফোন দিয়ে বলবো,, তোর অবস্থার কথা,, সে যদি এখানে এসে কান্না হাজারী শুরু করে দে তাহলে বুঝতে হবে সে তোকে সত্যিই ভালোবাসে,, আমি বললাম তুই কি বলিস এসব আপু যদি সত্যিটা জানতে পারে তাহলে পার্মানেন্টলি হসপিটাল কম করে হলেও এক মাস থাকতে হবে,, আমার কথা শুনে শামীম বলল তুই কোন চিন্তা করবি না আমি আছি তো,,, আমি বললাম আমার কিন্তু এখন ওই ভয় করতেছে,,, আপু যদি ভাইসেস জানতে পারে,,, তার সাথে ফাইজলামি করছি তাহলে কিন্তু আমি শেষ সব দোষ তোমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিব,, আমার কথা শুনে শামীম বলল আচ্ছা ঠিক আছে চালিয়ে দিস,,, যদি দেখি পরিস্থিতির বেশি খারাপ তখন দুইজনে ওই পালাবো,,,, দোকান থেকে সেই মেডিসিনটা কিনে আনলাম,, চাচার দোকানের টেবিলের উপর বসলাম,, চাচাকে বললাম চাচা মগ বাকেট আছে একটু লাগবে চাচা একটা মগ আর একটা বালতি আমার হাতে দিলো,, বালতি টা পানি দিয়ে পরিপূর্ণ করলাম,,, তারপর চাচার দোকান থেকে দুইটা রেডবল আর দুই টা ফিট বিস্কিট খেয়ে দুজনে দুই নিকেটোন ধরালাম,, সিগারেট শেষ করে,,, শামীম বলল এখন ঈশিতা আপুকে ফোন দিব,,, শামীম ফোন দিয়ে আমার নামে অনেক কিছু বললো,, তারপর আমাকে বলছে হায় হায় সর্বনাশ,,, আপুতো মোবাইলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে,, এ কথা শুনে আমি বললাম দেখ ভাই আমার কিন্তু প্রচন্ড ভয় করতেছে, কিসের থেকে কি হয়ে যায়,,, শামীম বলল আরে বেটা দেখা যাক কি হয়।। 7-- 8 মিনিট পর শামীম বলল শুয়ে পর ঈশিতা আপু এখনি এসে পড়বে,????
শামীম আমার কপালের দুই সাইটে মেডিসিন লাগিয়ে দিয়েছে,, তারপর শামীম বলল, এই তো ঈশিতা আপু কান্না করতে করতে আসতেছে,,, আমি শুয়ে পড়েছি,,, হে খুদা রক্ষা কর,,???
চলবে......