Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.18 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery কৌশিকি by nirjonsakhor
#19
কৌশিকির শরীরে ঘামের সাথে কমলা রঙা সিল্কের শাড়িটা লেপ্টে আছে।কালো পিশাচ খুরশেদের চেহারাটাও ঘেমে নেয়ে রয়েছে।মিস্ত্রীদের কাজের জন্য এ ঘরে একটা টেবিল ফ্যান দেওয়া ছিল।এই গরমের দিনে প্রখর রোদ এসে পড়ছে এই ঘরের টিনের চালে।খুরশেদ তবু কৌশিকির বুকের উপর শুয়ে স্তন টেনে যাচ্ছে।দুজনে ঘামে ভিজে একসা হয়ে গেছে।কৌশিকি খুরশেদকে বুকে নিয়ে দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে তার তামাটে কালো ঘেমো পিঠে নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে ঘাম মুছতে থাকে।সিল্কের শাড়িতে ঘাম মোছা সেভাবে যায় না।কৌশিকি দ্যাখে দাড়িগোঁফ ভর্তি তার দুস্টু সন্তান কিভাবে ভুখা শিশুর মতো দুদু খাচ্ছে।অনেকক্ষণ দুধ খাবার পর খুরশেদের ঘুম ধরে যায়।কৌশিকি আস্তে করে খুরশেদকে বুক থেকে সরিয়ে ব্লাউজ আর ব্রেসিয়ারে বুক ঢেকে শাড়ি ঠিক করে নেয়।যাবার সময় ঘুমন্ত দৈত্য খুরশেদের পিঠে চুমু দিয়ে যায়।কণা দ্যাখে প্রায় দেড়ঘন্টা পরে কৌশিকি ঘামে ভিজে চপচপে হয়ে ফিরছে খুরশেদের ঘর থেকে।কণা বলে 'বৌদি এতক্ষন কি করছিলে।এদিকে দাদা এসে পড়েছে।' কৌশিকি বলে 'তোর দাদা কখন এলো?' কণা বলে 'আধা ঘন্টা তো হবেই।' কৌশিকি তিনতলার বৈঠকখানায় সুদীপ্তকে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে দ্যাখে।কৌশিকি কিছু না বলে এসিটা চালিয়ে বেডরুমে শুয়ে পড়ে।সারা শরীরটা ঠান্ডা হয়ে আসে।সুদীপ্ত ল্যাপটপে কাজ সেরে এসে দ্যাখে কৌশিকি বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েছে।কণা হাঁক পাড়ে 'ও বৌদি খাবে না?' কৌশিকি উঠে বলে 'হাঁ তোর দাদাকে ডাক'।কণা বলে 'ও বৌদি খুরশেদভাইকে তুমি খাবার দিয়াসবে না আমি দেব'।কৌশিকি বলে 'নাঃ তুই দিয়ায়'।খাবার টেবিলে কৌশিকি আর সুদীপ্তের কোনো কথা হয় না।কৌশিকি সুদীপ্তের এত নিশ্চুপ থাকার কারণ খোঁজে না।খেয়ে সুদীপ্তের একটু ক্লান্তি লাগে।দ্যাখে কৌশিকি ছুরি দিয়ে আপেল কাটছে।সুদীপ্ত কয়েকটা আপেল টুকরো মুখে ফেলে বেডরুমে যায়।কৌশিকি একটা বই পড়তে থাকে সুদীপ্তের পাশে শুয়ে।প্রায় চারটের দিকে ঘুম ভাঙে সুদীপ্তের।পাশ ফিরে কৌশিকিকে দেখতে না পেয়ে আবার উত্তেজনা গ্রাস করে।নাঃ পাশের ঘরে কৌশিকি ঋতম আর মুন্নির সাথে গল্প করছে।সুদীপ্ত ফিরে আসে।সুদীপ্ত খোলা ছাদে চলে যায়।তখন পড়ন্ত বিকেল,রোদ পড়েনি।তবে রোদের আর সেই তেজ নেই।সুদীপ্ত বুঝতে পারে এই ঘরে সে যেন একা হয়ে পড়ছে।নিজের উপরই বেশি রাগ হয়,ঘৃণা হয়।নিজের স্ত্রীকে পরপুরুষের সাথে এই ব্যাভিচার দেখার পর সে কিকরে চুপ করে আছে।না সে পারে না এই বিকৃত কামনা উপভোগ করতে।তাকে একটা কিছু করতেই হবে।ধীরে ধীরে মনের মধ্যে রাগ,ক্রোধ,ঈর্ষা,যন্ত্রনা জমা হতে থাকে।কৌশিকির বিশ্বাসঘাতকতা তাকে ব্যথিত করে তোলে।কৌশিকি বিকেলে গাছে জল দিতে এসে দ্যাখে সুদীপ্ত সিগারেট খাচ্ছে।চমকে যায় কৌশিকি।কখনো সে সুদীপ্তকে সিগারেট খেতে দ্যাখেনি।কৌশিকি বলে 'সুদীপ্ত তুমি স্মোক করছো!' সুদীপ্ত ঘুরে পড়ে দ্যাখে কৌশিকি।ঠান্ডা মাথার মানুষ সুদীপ্তের মনে বিস্ফোরণ ঘটে,চরম উচ্চস্বরে বলে ওঠে 'রাবিশ! কেন তোমার খুরশেদের মত বিড়ি খেলে ভালো হত?' কৌশিকি চমকে যায়।বুদ্ধিমতী কৌশিকির কিছু বুঝতে বাকি থাকে না।সুদীপ্ত তবে সব জেনেই ফেলেছে।কৌশিকি একজন ব্যাক্তিত্বময়ী অধ্যাপিকা, সঙ্গে সঙ্গেই স্থির করে নেয় 'কেন আমি ভয় পাচ্ছি সুদীপ্ত আমায় কি দিয়েছে?' সুদীপ্ত বলে 'তুমি এতো নীচে নেমে যাবে কৌশিকি ভাবিনি।ছিঃ একটা ভিখারি লোকের সাথে।' কৌশিকি সত্যকে বৃথা চাপা না দিয়ে বলে 'তুমি চুপ করো সুদীপ্ত।সারাজীবন তুমি যা দিতে পারোনি ওই ভিখারিটা আমাকে তা দিয়েছে'।সুদীপ্ত রেগে বলে 'হাঁ দিয়েছে জাস্ট অনলি সেক্স ফর ইউ হোর' কৌশিকি রেগে যায় 'বলে তুমি যদি তাই মনে করো আমি ঠিক করেছি।আমি সেপারেশন চাই।আই ওয়ান্ট ডিভোর্স।' সুদীপ্ত অবাক হয়ে যায়।প্রচন্ড রাগ মাথায় চেপে যায়।সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিজের ব্যাগ গোছাতে থাকে।কৌশিকি বাধা দেয় না।সুদীপ্ত প্রচন্ড রাগের বসে বাড়ী ছেড়ে চলে যায়। কৌশিকি চুপচাপ গোঁ মেরে বসে থাকে।
 
******
 
সুদীপ্ত একটা ট্যাক্সি ধরে নেয়।ট্যাক্সিটা ধরে এয়ারপোর্ট এসে দ্যাখে আজ রাঁচি যাবার কোন ফ্লাইট নেই।ইন্টারনেটে ট্রেন চেক করে পায় না।গঙ্গার পাড়ের দিকে ট্যাক্সি নিয়ে চলে যায় সুদীপ্ত। স্রোতস্বিনী গঙ্গা শহরের উপর দিয়ে বহে চলেছে মিলনস্থলে।সুদীপ্ত একটার পর একটা সিগারেট টানতে থাকে।মাথাটা ধিকধিক করে ওঠে।সিমেন্টের চেয়ারে বসে পড়ে।মনে ছবির মত বারবার কুচ্ছিত খুরশেদ আর কৌশিকির সম্ভোগদৃশ্য আসতে থাকে। তত উত্তেজক অনুভূতি হয় আবার অন্যভাবে কৌশিকির উপর ক্রোধ জন্মায়।
 
সন্ধ্যে গড়িয়ে আসে।কৌশিকি খোলা ছাদে নীরবে বসে থাকে।ভাবতে থাকে তার আর কিছুই করার ছিলোনা।দুই পুরুষের সাথে ঘর করা বাস্তবে সম্ভব নয়।সুদীপ্ত কখনোই মেনে নেবে না।এই গোপন সম্পর্ক একদিন ফাঁস হতই।একজনকে বেছে নিতেই হত তাকে।সে খুরশেদকেই বেছে নিয়েছে।খুরশেদ অসহায় হতদরিদ্র এক প্রতিবন্ধী মানুষ।সুদীপ্ত সুদর্শন,বিত্তশালী।সুদীপ্তকে ছাড়া তার জীবন সম্ভব কিন্তু খুরশেদ?কৌশিকি তাই তার এক ভালোবাসাকে বিসর্জন দিয়ে অন্য ভালোবাসাকে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে।কৌশিকির জীবনে অর্থ,প্রতিপত্তি,রূপ সব ছিল।সুদীপ্ত তাকে কিছু দেয়নি শুধু ঋতম ছাড়া।খুরশেদ তাকে সুখ দিয়েছে।প্রবল শরীরী সুখ।কৌশিকির কাছে শুধু এটুকুর অভাবই ছিল যা খুরশেদ পূর্ন করেছে।তার কোল আলো করে এনে দিয়েছে আর একটি ফুটফুটে সন্তান।কৌশিকি খুরশেদকে সুদীপ্তের চেয়ে বেশিই ভালোবেসে ফেলেছে।কিন্তু সুদীপ্তকেও সে ত্যাগ করতে চায়নি।কিন্তু রূঢ় বাস্তবতায় তাকে একজনকে বেছে নিতে হবে।কৌশিকি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।নজরে আসে খুরশেদের ঘরটাতে বাল্বের আলো জ্বলছে।কৌশিকি আবেগে ভাবে লোকটার হতভাগ্য জীবনে কৌশিকি যেটুকু আনন্দ দিয়েছে তা কেবলই কৌশিকিকে কেন্দ্র করে আবর্ত হয়।সেই আনন্দ কৌশিকি কেড়ে নিতে পারবে না।খুরশেদের জীবন সুখে ভরিয়ে দিলেই তার সুখ মেলে।সে তা করবেই।
 
গঙ্গার পাড়ে সন্ধ্যে নামার দৃশ্য সুদীপ্তের মনে ধীরে ধীরে বদল ঘটায়।চাওয়ালার কাছ থেকে চা খেতে খেতে ভাবে।সে কৌশিকিকে সত্যি কি দিতে পেরেছে?কেন কৌশিকিকে পরপুরুষের বিছানাসঙ্গী হতে হয়েছে।সুদীপ্ত নিজের স্ত্রীর ফিজিক্যাল নিডস কি পূর্ন করতে পেরেছে? উত্তরটা নিজেই দেয়, না কৌশিকি কখনো মুখ ফুটে না বললেও সুদীপ্ত বুঝতে পারে।রুটিন সেক্সে তাদের কর্মব্যস্ত জীবন কি সুখকর ছিল নাকি কেবলই রুটিনজীবনই ছিল।সুদীপ্তের মনে হয় কৌশিকির চারিত্রিক স্খলনের জন্য সে'ই দায়ী।কিন্তু এখন সে কি করবে।খুরশেদ কে কৌশিকি যেভাবে গ্রহণ করেছে তাকে সে ভুলেও ত্যাগ করবে না।কিন্তু যদি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় তবে ঋতমের কি হবে।কৌশিকি ঋতমের ব্যাপারে অনেক বেশি দায়িত্বশীল।সুদীপ্ত মনে করে খুরশেদের সাথে কৌশিকির উদ্দাম যৌনক্রীড়ায় কৌশিকি কখনো ঋতমের প্রতি অবহেলা করবে না।ঋতমের একজন পিতার চেয়ে অনেক জরুরী মায়ের।সুদীপ্ত ভাবে না সে তো এই সম্পর্ককে মেনে নেবই ভেবেছিল ঋতমের স্বার্থে,রেড্ডির মত কৌশিকির সম্পর্ক উপভোগ করতে চেয়েছিল।তবে কি একজন খোঁড়া ভিখারি নোংরা লোকের সাথে কৌশিকির সম্পর্ক সে মেনে নিতে পারছে না।ভেবেছিল কৌশিকির যোগ্য হবে; রূপসী শিক্ষিতা কৌশিকির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ন কোন শিক্ষিত সুপুরুষ।কিন্তু এই নোংরা লোকটার সাথে কৌশিকির উদোম যৌনসঙ্গম তার কাছে আরো বেশি উত্তেজক লেগেছে।সুদীপ্ত ভাবত ভাবতে বোঝে, না তার হঠাৎ রেগে গিয়ে বিপত্তি ঘটানো ঠিক হয়নি।তাছাড়া এই সাঁইত্রিশ বছর বয়সে কৌশিকিকে সে শারীরিক সুখ দিতে অপারগ।তার কাছে যখন কৌশিকি কোনোদিনই শরীরের সুখ পায়নি,ভবিষ্যতেও পাবে না।তারচেয়ে কৌশিকি যদি একটি অবৈধ সম্পর্কে সুখী হতে পারে হোক না।কৌশিকি তো তাকে কখনো অবজ্ঞা করে নি।তাকে অসম্মান করেনি। বুঝতে পারে ৩৫বছরেও কৌশিকির রূপের ছটা কমেনি বরং বেড়েছে।অথচ কৌশিকি কোনদিন রূপ,শিক্ষা,অর্থ কোনোকিছুর অহংকার করেনি।তাই বোধ হয় একজন লো-ক্লাস পুরুষকে তার বিছানাসঙ্গী করে তুলতে দ্বিধাবোধ করেনি।তার কাছে তো আজও কৌশিকি একজন আকর্ষণীয় নারী কিন্তু নিজে সেক্স করবার চেয়ে নিজের স্ত্রী পরের সাথে উন্মত্ত সম্ভোগ করছে এই দৃশ্য তাকে বেশি আকৃষ্ট করেছে।সুদীপ্ত একটা সিগারেট ধরায়।মাঝ গঙ্গায় ডিঙি নৌকাগুলো বেয়ে যাচ্ছে দেখতে থাকে।একটা ট্যাক্সি দেখে হাত নেড়ে দাঁড় করায়।
 
*****************
 
রাত্রি ন'টার দিকে সুদীপ্ত বাড়ী ফেরে।মেইনগেটে শব্দ পেয়ে খুরশেদ গেট খোলে।সুদীপ্ত বলে 'আপনি একবার বাড়িতে আসবেন।' খুরশেদ বুঝতে পারেনা,হঠাৎ সাহেব তাকে ডাকছে কেন।বাড়ীর গেট কৌশিকি খুলে দেয়।কৌশিকি লক্ষ্য করে সুদীপ্ত কাউকে বলছে 'আসুন।'কৌশিকি চমকে যায়।সুদীপ্তের পেছনে খুরশেদ আলি।সুদীপ্ত বলে 'কৌশিকি তুমি একবার ড্রয়িং রুমে এসো।' কৌশিকি আর খুরশেদ সুদীপ্তের মুখোমুখী বসে।কৌশিকি একজন স্বাধীনচেতা স্বনির্ভরশীলা নারী।তার মধ্যে কোনো ভীতি নেই।সে জানে সুদীপ্তের সাথে তার সম্পর্ক ভেঙে গেছে আর তা জোড়া যায় না। সে তাই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কণ্ঠেই বলে 'বলো কি বলতে চাও।' সুদীপ্ত বলে 'কৌশিকি তুমি চাও ডিভোর্স তাই তো?'কৌশিকি বলে 'আমার আর কিছু করার নেই'।খুরশেদ অবাক হয়ে যায় নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারে না।সুদীপ্ত বলে 'তুমি কখনো ঋতমের কথা ভেবেছো ওর কি হবে?' কৌশিকি বলে ' দ্যাখো সুদীপ্ত তুমি নিশ্চই বোঝো আমি এতদিন একা হাতেই বাড়ী,এতবড় আমার পৈত্রিক সস্পত্তি সামলেছি,ঋতমকে বড়ও করেছি।তোমার কি কোন সন্দেহ আছে ঋতমের ভবিষৎ নিয়ে।তুমি যদি এরপরেও মনে কর ঋতমকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেবে তবে আমি বাধ্য হব আইনের দ্বারস্থ হতে।কিন্তু আমি তা চাই না।আমি মনে করি আমাদের মিউচুয়াল ডিভোর্স হোক।আমি চাইনা তোমার সন্তান তোমার থেকেও আলাদা হোক।তুমি চাইলেই ওকে দেখতে পাবে ওর সাথে সময় কাটাতে পারবে।' সুদীপ্ত এতক্ষন ধরে কথাগুলি শুনবার পর বলে 'তবে তুমি সত্যিই ডিভোর্স চাও?' কৌশিকি বলে 'এরপরে কি তুমি আমার সাথে ঘর করবে?নিশ্চই নয়।' খুরশেদ শুনতে থাকে নির্বিকার ভাবে।কোনো কথা বলে না।সুদীপ্ত একটু খানি থমকে থেকে বলে 'কৌশিকি আমি যদি ডিভোর্স না দিই।আই মিন আমি ডিভোর্স চাই না।ঋতমকে নিয়ে কোন ভাগ বাঁটোয়ার চাই না।আমি তোমাকে এরপরেও ভালবাসি।আমি জানি আমি তোমাকে হয়তো সুখী করতে পারিনি।কিন্তু আমি কি করতে পারি বলো? তুমি যদি চাও তোমার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রাখতে,তবে রাখতে পারো।আমি বাধা দেব না।' কৌশিকি অবাক হয়ে যায় বলে 'সুদীপ্ত তুমি! দ্যাখো খুরশেদকে আমি ছাড়তে পারবো না।এরপরেও কি তুমি পারবে? হাঁ আমি তোমাকে এখনো ভালবাসি, হয়তো চিরদিনই ভালোবাসবো।কিন্তু খুরশেদের জন্য আমি তোমাকে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলাম।তুমি কি পারবে?আমার আর খুরশেদের সম্পর্ক মেনে নিতে?'সুদীপ্ত দৃঢ় গলায় বলে 'পারবো।' কৌশিকি বলে 'সুদীপ্ত তুমি যতটা ভাবছ ততটা সহজ নয়।আমি খুরশেদকে ভালোবাসি।আয়ুশ আমার আর খুরশেদের সন্তান।তুমি যদি মেনে নিতে চাও তবে তোমাকে আয়ুশকেও গ্রহণ করতে হবে।সমাজের চোখে আমি আর তুমি স্বামী স্ত্রী হলেও চার দেওয়ালের মধ্যে কিংবা একান্তে খুরশেদ আমার স্বামী।তোমাকে এটা মেনে নিতে হবে।তুমি আমাদের সম্পর্কের মধ্যে কখনো ইন্টারফেয়ার করতে পারবে না।আর তোমার আর আমার সম্পর্কেও খুরশেদ কখনো ইন্টারফেয়ার করবে না।আমাদের একটি মিউচুয়াল সম্পর্ক থাকবে।একজন স্বামী হিসেবে আমি তোমাকে কখনো অসম্মান করিনি।ভবিষ্যতেও করব না।কিন্তু মনে রাখতে হবে খুরশেদও আমার স্বামী, কাজেই খুরশেদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতায় তুমি বাধাদান করতে পারবে না।এই বাড়িটা তোমার এবং আমায় দুজনেরই এখানে খুরশেদ ও তোমার দুজনেরই অধিকার আছে।যদি আমরা মিলেমিশে চলতে পারি সব সম্ভব'
কৌশিকি এবং সুদীপ্ত বুঝতে পারে তারা এক অদ্ভুত সম্পর্কের মধ্যে উপিস্থিত হয়েছে।অসহায় আত্মসমর্পন করছে সুদীপ্ত আর কৌশিকি বুঝতে পারছে না সুদীপ্ত কেন এই অসহায় সমর্পন করছে।
 
এর মাঝেই ঋতম ও মুন্নি এসে পৌঁছয়।খুরশেদ এতক্ষন চুপচাপ বসেছিল এবার সে দুটো বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আদর করতে থাকে।কৌশিকি বলে 'সুদীপ্ত ও খুরশেদ আমি চাই না আমাদের এই জটিল সম্পর্কে বাচ্চাদের ক্ষতি হোক,তাই তোমরা দুজনেই একজন পিতার ন্যায় সম্পর্ক সামলাবে'। খুরশেদ ঋতমকে আদর করে বলে 'সাহাব মেরা তিন বাচ্চা হ্যায়'।সুদীপ্তর বাচ্চাদের উপর কোনো রাগ,ক্রোধ,অভিমান নেই।কৌশিকি বলে 'আজ থেকে এই তিনটি বাচ্চার বাবা সুদীপ্ত আর আব্বা খুরশেদ।বাচ্চারা এই নামেই ডাকবে' সুদীপ্ত সম্মতি সূচক মাথা নাড়ে।
 
কৌশিকি নিশ্চিন্ত হয়।কৌশিকি ভাবতে পারেনি এরকম বাস্তবে সম্ভব।এটা যে একধরনের পলিগ্যামী সে বুঝতে পারে।কৌশিকি বুঝতে পারে তার দায়িত্ব এখন বিরাট: দুই স্বামী যার মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী ,তিনটি সন্তান যার মধ্যে একটি দুধের শিশু ,নিজের বিশাল পৈত্রিক সম্পত্তি,এতবড় বাড়ী, অধ্যাপনার চাকরি।কৌশিকি তবু নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মহিলা মনে করে।
খুরশেদ বুঝে যায় সে এখন ভিখারি নয় কিংবা শুধু আমিনা বিবির স্বামী নয়,সে এখন এ বাড়ীর একজন কর্তা।লুঙ্গির উপর দিয়ে ন্যাতানো দানবীয় তাগড়া লিঙ্গটায় হাত বুলিয়ে ধন্যবাদ দেয়।
সুদীপ্ত বুঝতে পারে সে যা কিছু করছে সব তার ছেলের জন্য।এখন তাকে তিনটি সন্তানের পিতার ভূমিকা নিতে হবে।ষাঁড় ও গাভীর পরিবারে তিনটি বাছুরের দায়িত্ব নেওয়া সে যেন একটি বলদ।
 
রাত বাড়তে থাকে।কৌশিকি খাবার বেড়ে ডাক দেয় 'এসো সকলে,খাবার বাড়া হয়ে গ্যাছে'।বড় টেবিল ঘিরে সকলে বসে পড়ে।কৌশিকি খাবার সার্ভ করে নিজে বসে পড়ে।যেন মনে হয় তার,এক পূর্ন পরিবার।
 
সুদীপ্ত শুয়ে পড়ে।বাচ্চারা তাদের ঘরে শুয়ে পড়ে।কৌশিকি কিচেনে ব্যস্ত থাকে।খুরশেদ একলা দোতলার ঘরে শুয়ে খালি উসখুস করে।তার ঘরে সে নরম বিছানা পেয়েছে,এসি পেয়েছে।লুঙ্গির ভেতরে যন্তরটা দাঁড়িয়ে গ্যাছে।আজ রাতে তার কৌশিকিকে চাই।কৌশিকি কাজ সেরে ফ্রেশ হয়ে বের হয়।বেডরুমে ঢুকে দ্যাখে সুদীপ্ত শুয়ে বুকের উপর ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে।কৌশিকি ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে ক্রিম মাখতে থাকে।সুদীপ্ত বলে 'কৌশিকি তুমিই কি আমিনা?' কৌশিকি মৃদু হেসে বলে ' .দের বিয়ের কনের নাম রাখা হয়।খুরশেদ আমার নাম আমিনা রেখেছে।' সুদীপ্ত বলে 'তুমি কি তবে সত্যিই বিয়ে করেছ?' কৌশিকি বলে 'হাঁ,জানো সুদীপ্ত আমি তোমাকে ভালোবেসেছি,তুমি আমার কর্মজীবন,ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করোনি।কিন্তু কোথাও আমি অপূর্ন ছিলাম।খুরশেদ না এলে বুঝতে পারতাম না।খুরশেদ খুব ভালো মানুষ।ও আমাকে গালি দেয় কিন্তু সেই গালিতেই ও ওর ভালোবাসা প্রকাশ করে।আসলে সমাজের নিম্নশ্রেণীর মানুষদের চাহিদা খুব কম।ওরা গালিগালাচ করলেও ওদের ভালোবাসা অনেক প্রগাঢ় হয়।এই দ্যাখো না আমাদের কিছুই অভাব ছিল না।আমরা চাইলে দুজনে একে অপরের কাছকাছি গভীর ভালোবেসে কাটিয়ে দিতে পারতাম।কিন্তু আমরা তা করিনি।শুধু কাজ আর কাজ নিয়ে সভ্য সমাজের এক নিঃসঙ্গ নাগরিক হয়ে গেছি।আমাদের এই জীবনের চেয়ে খুরশেদদের বস্তিজীবন অনেক ভালো।' সুদীপ্ত চুপ করে যায়।কৌশিকির কথাগুলিতে সত্য আছে নিজেকে দায়ী মনে হয় আবার কৌশিকি এক বিশ্বাসঘাতক নারী একথা ভাবলে রাগ হয়।সুদীপ্তর পাশে বালিশটা ঠিক করে কৌশিকি শুয়ে পড়ে।সুদীপ্ত বুঝতে পারে শরীরকে অস্বীকার করে দাম্পত্য প্রেম হয় না।রুটিন সেক্স লাইফ অনেক দম্পত্তি করে থেকে সারাজীবন কাটিয়ে দেয় কিন্তু তাতে একবার তৃতীয় কেউ প্রবেশ করলে তা ধাক্কা খায়।সুদীপ্ত আসলে একটা ভেঙে যাওয়া সম্পর্ককে তালি দিয়ে জোড়া দিয়েছে নিজের অক্ষমতা ঢাকতে।কৌশিকি জানে সে দোষী তাক এই সম্পর্ক রক্ষা করবার চেষ্টা সে করেনি বরং সে সুদীপ্তকে মুক্তি দিতে চেয়েছে।কৌশিকি ভাবে যদি সুদীপ্ত অন্য কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতো কৌশিকি তবে নিশ্চিত বিচ্ছেদ নিত সুদীপ্তকে কখনোই গ্রহণ করত না।কৌশিকি ডিভোর্সের জন্য প্রস্তুত ছিল,সে কখনোই সুদীপ্তের উপর নির্ভরশীল নয়।কিন্তু সুদীপ্ত তাকে গ্রহণ করেছে এটা তার কাছে মহানুভবতাই বটে। সুদীপ্ত জানে তাদের সম্পর্ক ভাঙনে দায়ী দুজনেই।সে নিজে কখনো স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব পালন করেনি।কৌশিকি বিবাহ বহির্ভূত এক লো-ক্লাস ভিখারির সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।সুদীপ্ত ল্যাপটপটা রেখে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে।কৌশিকি সুদীপ্তর দিকে তাকায়,এরকম কত রাত তারা কাটিয়েছে।সুদীপ্তের কখনো ইচ্ছা হয়নি নিজের স্ত্রী সাথে মিলিত হোক।কৌশিকি মুখ ফুটে বলেনি।আবার মনেও হয়নি সুদীপ্ত তাকে অসুখী করে তুলছে।শুধু একটি সন্তান হলেই যেন বয়স পেরিয়ে গেছে! পরিবার, চাকুরী,সামাজিক চিন্তাভাবনা,ত্বাত্বিক সংস্কৃতি ও দর্শন চর্চা এই যেন সভ্য নাগরিক জীবন।নির্জনতা প্রিয় আসলে কৌশিকির নিঃসঙ্গতা থেকে জন্ম নিয়েছিল।মেধাবি কৌশিকি বরাবরই ছেলেবেলা থেকে বই মুখো থেকেছে।বাবা-মায়ের এক সন্তান হওয়ায় পরিবার সুখও পায়নি।বিয়ের পর কর্মব্যস্ত চাকরি আর স্বামীর ব্যস্ততা নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে।খুরশেদ না এলে কৌশিকি নিজের সুখের সজ্ঞা বুঝতে পারত না। খুরশেদ তাকে বস্তি জীবনের অনুভূতি এনেছে তবু তার কাছে সেটা অনেক বেশি আকর্ষণীয় লেগেছে।খুরশেদ ভালোবাসে একগাদা বাচ্চা-কাচ্চা,স্বামী-স্ত্রী সব সময় বন্য সেক্স,আর হইহই।দীর্ঘদিন শরীরের সুখে অভুক্ত কৌশিকির কাছে খুরশেদের বন্যসেক্স প্রিয় হয়ে উঠতে সময় লাগেনি।অত্যধিক নোংরা যৌনতা,গালিগালাচ,বিকৃত কামনা,খুরশেদের পুরুষালি ডমিনেশন সব কিছুই কৌশিকির আজ অতিপ্রিয়।খুরশেদ মানুষটাকে সে শুধু স্বামী বা প্রেমিক নয় একজন সন্তানের জায়গাও দিয়ে ফেলেছে।লোকটাকে দেখলেই কৌশিকির মনে হয় তার মধ্যে একটা জীবন সঞ্চার হচ্ছে।কৌশিকি ভাবতে ভাবতে নজর করে সুদীপ্ত ঘুমিয়ে পড়েছে।কৌশিকির মনে পড়ে দোতলায় খুরশেদও হয়তো না ঘুমিয়ে অপেক্ষা করছে।কৌশিকি ঘড়ির দিকে তাকায় এগারোটা চল্লিশ।কৌশিকি উঠে পড়ে।সুদীপ্তর ঘুম ভেঙে যায় বলে 'কোথায় যাবে?' কৌশিকি বলে 'এখানে ঘুম আসছে না।দো-তলায় যাচ্ছি'।সুদীপ্ত বুঝতে পারে কৌশিকি খুরশেদের কাছে যাওয়ার কথাটি ঘুরিয়ে বলছে।কৌশিকি আয়নার সামনে দাঁড়ায় পরনে কমলা সিল্কের শাড়ি ম্যাচ করা লাল ব্লাউজ।গলায় মঙ্গলসূত্রটা ব্লাউজের মধ্যে থেকে বের করে শাড়ির উপরে আনে কৌশিকি।সুদীপ্ত দেখতে থাকে।কৌশিকি চলে যায় নীচে।
Like Reply


Messages In This Thread
কৌশিকি by nirjonsakhor - by pcirma - 30-01-2019, 12:23 PM
RE: কৌশিকি by nirjonsakhor - by pcirma - 30-01-2019, 12:51 PM
RE: কৌশিকি by nirjonsakhor - by Pmsex - 15-06-2021, 11:07 AM
RE: কৌশিকি by nirjonsakhor - by Pmsex - 20-09-2021, 12:30 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)