Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 2.11 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সাময়িক সমাধান
#1
- আরিফ সাহেব, কাগজগুলো কিন্ত আজই প্রসেস করতে হবে। বিকেলের দিকে একবার ব্যাংকে যেতে হবে আপনাকে।

বস ডেকে বলল। কাজের পরিমাণ দেখে বোঝা গেল বাসায় পৌঁছাতে দেরি হবে।
দিন শেষে ব্যাংকের ঝামেলা শেষ করে কাগজপত্র অফিসে জমা দিয়ে ফিরতে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেল। মনি দরজা খুলে দিল নক হতে।
- জেগে আছ তোমরা?
ক্লান্তভাবে হেসে জিজ্ঞেস করি।
- হ। আপায় ও তো বইয়া রইসে।
- কি বল.. ওকে ঘুমাতে বলবেনা?
- কইছি তো, হ্যায় ঘুমাইবোনা।
ব্যাগ সোফায় ফেলে রুমে ঢুকলাম বৌকে আদর করে শাসানোর জন্য। হুমা বিছানায় আসন পেতে বসে আমের আচারের বয়ামে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে আচার বের করে খাচ্ছে।
- কই, ঘুমাওনি যে এখনো?
- ও, আসছ? ঘুম আসছিলনা তো.. আচার খাচ্ছিলাম তাই।
মিষ্টি হেসে বলে। এ হাসি দেখার পর আর কিছু বলা যায়না।
- ডিব্বা খালি হইয়া গেছে। সকালে আরেকটা বাইর করুমনে। নাকি এহনি দিমু, আপা?
পেছন থেকে মনি বৌয়ের আচার মাখা হাত দেখে বলে। চামচ যাচ্ছিলনা মনে হচ্ছে লম্বা কাচের বয়ামের তলায়। 
- না না, এতরাতে আর আচার খাবে নাকি? দিনের বেলায় দিও।
আমি বলতে মনি মাথা নেড়ে চলে যায়। 
- রেস্ট নেও, মনি খাবার গরম করুক।
হুমা আচারের বয়াম রেখে হাত মুছে নিচ্ছে। আমি শার্টের ইন খুলে বিছানায় পিঠ ছড়িয়ে দিলাম। হুমা একটু এগিয়ে এসে উরুতে মাথা রেখে বালু আটকানো চুলে হাত বুলাতে শুরু করল। চুলের গোড়ায় নাড়া লেগে বেশ আরাম হচ্ছে। কপালে হাত বুলানোর সময় পাঁচফোড়ন আর সর্ষের তেলের গন্ধটা নাকে লাগছে। 
- আজকে অনেক চাপ গেল, না?
- হু..
চোখ বন্ধ করে নাক দিয়ে শব্দ করলাম।
- গা-টা মাসাজ করে দিতে ভাল হতো, না? আমি তো অকর্মা হয়ে আছি এখন..
ঠোঁট দিয়ে চকাস আওয়াজ করে বলে হুমা।
- আরে, লাগবেনা। গোসল করে বেরোলেই শরীর চাঙ্গা হয়ে যাবে।
আমি বলি।
- হা, তুমি তো বলবাই!
বলে ঘামে তেলতেলে গালে আঙুল দিয়ে টিপে দেয়।
- শোও, মনিকে বলি একটু সেবা করুক। .. মনিইই..
গলা চড়িয়ে ডাক দেয় মনিকে।
- আহ.. মেয়েটা ঘুমাক এখন। বারোটা  ভেজে গেছে প্রায়।
- ও ঘুমিয়েছে দিনে অনেক আজ। ঘুম ধরছেনা বলছিল একটু আগে।
মনি এক ডাকেই চট করে চলে এল।
- জ্বে আপা?
দরজায় অর্ধেক উদয় হল।
- তোর ভাই খুব ক্লান্ত আজ। একটু মাসাজ করে দিবি?
- হা, অবশ্যই!
হাসি দিয়ে এগিয়ে আসে মেয়েটা। আমার চোখ লেগে আসছিল, খুলেই ওকে দেখলাম।
হুমা গলা বাড়িয়ে শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করেছে। ফ্যানের বাতাস সরাসরি লোমশ বুকে পড়তে বেশ ভাল লাগল। 
- ভাইয়ের বেল্টটা খোলতো মনি।
- না, আমি খুলি।
চট করে বেল্ট ধরে ফেললাম। মনিকে দিয়ে খোলাতে শরম লাগবে। কিন্ত প্যান্ট নামানোর জন্য হুমা আমাকে উঠতে দিলনা।
- শুয়ে থাক তুমি। শরম করোনা তো। আম্মা কি বলেছে মনে রাখো!
হুমা জোর করে ধরে রাখে আমার ঘাড়। শ্বাশুড়ি আম্মার কথা মনে পড়ে হুমার বয়ানে।
--

- শালী তো আধা বৌ, মাইনষে কয়। এইহানি কিন্তু আফাদতো তোমার ফুল বৌ.. লাজ শরম কইরোনা, ভালামত থাইহো। দুয়া করি আল্লায় জানি ভালা রাহে।
পান খাওয়া দাঁতে মুখ ভরে হেসে শ্বাশুড়ির কথাগুলো মনে পড়লে গা কেমন শিরশির করে। আমার শ্বশুড়বাড়ি যে একটু অদ্ভুত হবে তা জানতাম। কিন্ত কিছু ব্যাপার বেশ বিপাকে ফেলে দেয়।
বিয়ের কথা দুবাড়ির মধ্যে পাকা হতে হুমা বলেছিল গ্রামে গিয়ে অদ্ভুত লাগলে অবাক না হতে। বিয়ে করতে গিয়ে অবাক তো হয়েছি আসলে জায়গাটা কত দূরে তা বুঝতে পেরে। আর কি প্রকৃতি, সব আনকোরা সৌন্দর্যের সম্ভার। 
আমার ফ্যামিলির সঙ্গে বিয়ের কথাও বলেছে ঢাকায় এসে ওর ভাই-মা। আমাদের যাওয়া হয়েছিল প্রথম বিয়ের সময়ই। আর পরে তো শুধু আমিই গিয়েছি। শেষবার দুমাস আগে যখন গেলাম, সঙ্গে মনিকে নিয়ে এলাম, সেবার এত পথ ঠেলে যাবার ইচ্ছে ছিলনা। তার ওপর হুমার পাচ মাস চলছে। তবে সেজন্যেই যেতে হল। 
- এখুনি রেখে আসতে হবে তোমাকে? কদিন পরে যাও?
আমি বলেছিলাম।
- না, থাকার জন্যে না। এমনি রিচুয়াল টিচুয়াল আছে। তার সঙ্গে কাজে হেল্প-টেল্প করার জন্য একটা লোক দেবে আম্মা।
পাহাড়ি অঞ্চল, অনেকটা বিচ্ছিন্ন এলাকা। কিভাবে সেখানে বিদেশি ধর্মটর্ম ছড়াল তা জানা নেই। তবে আরবীয় বিশ্বাসের সঙ্গে লোকাল প্রাচীন রিচুয়ালও তারা একেবারে ঝেড়ে ফেলেনি। বিয়ের সময়ও একটু সনাতনী কায়দায় হ্যানত্যান আচার দেখে বরযাত্রীরা একটু অবাক হয়েছিল। 

পেট ভাসতে শুরু করা বৌকে নিয়ে এত পথ ঠেলে যাবার পর এবার ওকে দেখতে গ্রামের মহিলারা এল বেশ ভীড় করে। সবার আগ্রহ দেখে কেমন একটা বিশাল পরিবারের অনুভূতি হয়। দুদিন থেকে চলে আসার কথা। যেদিন সন্ধ্যার ট্রেন ধরব, সেদিন বিকেলে মনিকে উপস্থাপন করা হয় প্রথমবার। ট্রেন ধরব বলাও চাট্টিখানি কথা নয়। বাড়ি থেকে দুপুরের দিকে বেরিয়ে, রিকশা টিকশা করে নৌকা টেম্পু করে বিকেলে স্টেশনে পৌঁছে তারপর ট্রেন। 
মেয়েটাকে আগে দেখেছিলাম কিনা মনে করতে চেষ্টা করলাম। পরিচিত মনে হলনা। ফর্সা, চিকন দেহ, লম্বাটে মুখ, হুমার চেয়ে একটু খাট। গা শুকনো বলে ভরা কৈশোর বুকের ওপর ফেলা ওড়না ছাপিয়ে তেমন চোখে লাগেনা। 
- কেমুন আছেন ভাইজান?
মেয়েটা মিষ্টি গলায় জিজ্ঞেস করে।
- ভাল, তুমি ভাল?
 মেয়েটা মাথা নাড়ে।
- এইটা হইল মনি, আমাগো ভোলার মাইয়া। ওয় যাইবো তোমাগ লগে। আগের বার যহন হুমারে দিয়া যাইবা, ওর কামকাইজ সব করব নে তোমার, দেহাশুনা সেবাযত্ন করব। বুঝছ?
- জ্বী।
আস্তে বলি। বুঝছ কথাটার ওপর জোর। অনেক আগে একবার কথাচ্ছলে এ ব্যাপারে বলেছিল হুমা। তখন মনে হয়েছে ওর গাঁয়ের গেঁয়োমি নিয়ে মশকরা করছে। সেটা ওর বড় ভাইয়ের ওয়াইফের প্রেগনেন্সির নিউজ আসার সময়ের কথা।

- জানো, আমাদের ওখানে মেয়েরা প্রেগনেন্ট হলে বাপের বাড়ি থেকে কাজের মেয়ে পাঠায়, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে।
হুমা বলেছিল।
- হাহা.. কেন? তোমাদের তো সব বড় ফ্যামিলি। বৌ প্রেগনেন্ট হলে কি অন্যরা বাড়ির কাজ করতে পারেনা?
- তা পারে.. কিন্ত ওরা তো অন্য লোক। নিজের গ্রাম থেকে যে যায় সে কেয়ার করেনা বেশি? পাঠায় তো পার্সোনালি যেন কেয়ার করে প্রেগনেন্ট মেয়ের, সেজন্য।
- হুমম, সেটা ঠিক আছে।
আমি বলি।
- আরো একটা ডিউটি থাকে ওর, যতদিন প্রেগনেন্সির কারণে হাজবেন্ডের সঙ্গে ফিজিক্যাল রিলেশন করতে পারেনা বৌ - ততদিন জামাইটাকে হ্যাপি রাখা।
হুমা কথাটা একটানে এমনভাবে বলে ফেলে, যে অবিশ্বাসের হাসি দেয়াটাও সম্ভব হয়না।
- হোয়াট? শাটাপ!
- শাটাপ কেন? তুমিতো জানোই আমাদের ওখানে মানুষ একটু অন্যরকম।
হুমা হেসে বলে। মনে হয় কথাটা সিরিয়াসলিই বলেছে একটু আগে।
- রিয়েলি? এটা সেক্সুয়াল এবিউজের পর্যায় পড়ে যায়না?
আমিও একটু সিরিয়াস হয়ে বলি। আশঙ্কা হয় হঠাৎ হুমা আলোচনা থামিয়ে হো হো করে হেসে ফেলবে আবি বিশ্বাস করে ফেলেছি দাবি করে।
- না, জোর করে তো কিছুনা.. এটা ট্রাডিশান। যার বাচ্চা হবে তার ফ্যামিলি থেকেই এরেঞ্জ করা হয়। একটু গরিব ঘরের মেয়েদের পাঠায় বাপ-মা, টাকা-পয়সা দেয়। 
- তোমাদের বেশ কনজার্ভেটিভ সোহাইটি না? এভাবে দেয় কেউ মেয়েদের?
- আমাদেরটা আমাদের মত করে কনজারভেটিভ। 
এটুকুই বলে হুমা।
- পরে বিয়ে করে কেউ এই মেয়েদের?
- হ্যাঁ, করবেনা কেন? ভাল যৌতুক দিয়েই বিয়ে হয়।
অবাক চোখে প্রশ্ন করে বৌ। আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করিনা। ওদের সমাজে ভার্জিনিটির গুরুত্ব কতটুকু তা জানা নেই। তবে জিনিসটা নিয়ে হুমা যেমন স্বাভাবিকভাবে বলল, মনে হচ্ছে আসলেই কোন সমস্যা নেই।

এই কথোপকথোন প্রায় ভুলেই গেছিলাম, সেদিন বৌকে নিয়ে বাড়ি যাবার সময় ট্রেনে বসে সে-ই তুলে কথাাটা।
- এ্যই, তোমাকে বলেছিলাম একবার। মনে আছে, কাজের মেয়েদের ডিউটির কথা?
- ওহ, ওটা.. হাহাহহহ..
আমার হাসি দেখে হুমার ঠোঁট একটা চওড়া হয়, কিন্ত হাসেনা।
- কি?
ওর স্থির চোখ দেখে জিজ্ঞেস করি।
- হ্যাঁ, এমন হাসিখুশি যেন থাকতে পার, তাই আনব আমরা একজন।
হুমার কথাটা শুনে মুখ চুপসে গেল। প্রেগনেন্সির সিম্পটম্প দেখা দেয়ার পর থেকে আমার চিন্তা বেড়ে গেছে। নতুন অতিথি আসবে, নতুন ফ্লাট দরকার। সেভিংস বাড়ানো লাগে, স্যালারি বাড়ানোর আবদার করতে হয়, হুমার স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা.. হাসিঠাট্টা জিনিসটা বেশ কমে গেছে আমাদের জীবনে।
- শাট আপ!
হালকা করে বলে হুমার হাত ধরি। এ ব্যাপারে আর কথা হয়না।


- মনি, তুই কাজটাজ করতে পারিস তো সব? আমাদের কিন্ত তেমন কাজ নেই, শুধু রান্নাবান্না আর গোছগাছ। আমি যতদিন আছি তোকে হেল্প করব।
ট্রেনে ফেরার সময় হুমা জিজ্ঞেস করে।
- জ্বে আপা, আমি কামকাজ সবই পারি। আগেও তো করছি, আলি কাকার মাইয়ার বাইচ্চা হইল, হেই সময় তো আমিই গেছিলাম।
- ও, তাই? তাহলে তো তুই সবই বুঝিস।
- জ্বে।
সাদা দাঁত বের করে হাসে মনি। নাকে একটা ছোট্ট ফুল চিকচিক করে। পরে বলেছে, এটা আর কানের একজোড় দুল সেই আলি কাকার মেয়ের জামাই দিয়েছে। দুলজোড়া সঙ্গে আছে, কিন্ত ট্রেনে পড়েনি। সোনার জিনিস টান মেরে কেউ কান ছিড়ে নিয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কায় ওর মা বলেছে পুটলিতে বেধে নিয়ে যেতে, বাসায় পৌঁছে পড়তে। 
- মনি, তুমি পড়ালেখা কর?
ট্রেনে ওকে আমার প্রথম প্রশ্ন।
- জ্বে, কেলাস এইটে।
- এইযে আমাদের সঙ্গে যাচ্ছ, পড়ালেখা তো হবেনা অনেকদিন। 
জবাবে মুখ টিপে হাসে মনি। পড়ালেখায় নিশ্চই নিয়মিত না। নইলে এইটে আটকে থাকার কথা নয় এখনো। হুমাদের এলাকায় মেয়েদের শিক্ষার হার এখনো খুব কম। 
- মনি, আমাদের ওখানে কিন্ত ফ্ল্যাট বাসা। পাশের বাসায় ওদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। সময় পেলে গিয়ে গল্প করতে পারবি, বিকেলে বাচ্চাদের সঙ্গে নিচে খেলতে টেলতে পারবি।
- এহন কি দৌড়াদৌড়ি করনের বয়স আছে?
মনি হেসে বলে।
- তা না করিস, সময় কাটবে অন্যদের সঙ্গে কথাটথা বললে।
হুমা বলে।
- জ্বে, আচ্ছা।
- আর একটা কথা, ওখানে কিন্ত আমাদের গ্রামের মত না। যদি কেউ জিজ্ঞেস করে তোর কাজ কি, বলবি বাসার কাজটাজ যেগুলো ওগুলো.. আমি কি বলছি বুঝতে পারছিস তো? বাড়িয়ে বলবিনা কিছু!
হুমা বেশ ভাল করে মনিকে কাছে টেনে বলে। ট্রেন তখন প্রায় কমলাপুর চলে এসেছে।
- জ্বে আপা। আমি বুঝছি।
কিশোরিও তেমনি ঠান্ডা গলায় জবাব দেয়। ব্যাগ ট্যাগ নামিয়ে হাতের কাছে এনে রাখতে রাখতে ওদের এই কথোপকথোনটাই আমার সন্দেহের দোটানা দূর করে দেয়। রিকশা করে বাসায় ফেরা পর্যন্ত চিন্তাটা মাথায় জেঁকে বসে থাকে।
[+] 4 users Like riddle's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
সাময়িক সমাধান - by riddle - 25-12-2019, 11:20 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)