18-12-2019, 12:11 PM
দুর্ঘটনা (০৩)
নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন –
চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়
আজিকে যে রাজাধিরাজ কাল সে ভিক্ষা
চায়
মায়িল আর সুধীর দুজনের মনের অবস্থা এই
গানের মত। তিন ঘণ্টা আগেই সব কিছুই ঠিক
ছিল। মায়িল বিয়ে করে সংসার করার স্বপ্ন
দেখছিল। সুধীর ডাক্তারী পাস করে
বরাবরের জন্যে গ্রামে আসার স্বপ্ন
দেখছিল। আর এখন সব ফাঁকা। এক ঘণ্টা মত
সময় লাগে সুধীরের নিজেকে সামলে নিতে।
সব আত্মীয় স্বজনেরা এসে ওদের সান্তনা
দেয়। এরপর পুলিশ আসে, ওদের নিয়ম মত
জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিছু সময় পরে ওরা
এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করে চলে
যায়। তারপর সুধীর মায়িলের কাছে আবার সব
কিছু বিশদ শুনতে চায়।
মায়িল কেঁদে কেঁদে বলে ও ওই কথা আর
বলতে পারবে না।
মায়িল – ওই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের কথা আমি
ভাবতেই পারছি না। আমার শুধু মনে হচ্ছে
কেন আমি আগে গিয়ে ওই পাইপটা ধরলাম
না। তাহলে বাবা মা বেঁচে থাকতো।
সুধীর – তুমি আগে পাইপটা ধরলে আমি
তোমাদের তিনজনকেই হারাতাম। কিন্তু
আমার এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে
না।
মায়িল – পুলিশ দেখে তো দুর্ঘটনাই বলল।
সুধীর – পুলিশ কি জানে বা বোঝে! ওরা শুধু
নিয়ম রক্ষা করতে এসেছিলো। আমার
পিসিকেই সন্দেহ হচ্ছে
মায়িল – সেই সকাল থেকে পিসি এখন পর্যন্ত
বাড়িতেই নেই।
সুধীর – কোথায় গেছে পিসি?
মায়িল – ভোর বেলা পিসি আর পিসে
কোথাও বেড়াতে গেছে।
সুধীর – চল তো ছাদে আর একবার গিয়ে দেখি
মায়িল – আমি যেতে পারবো না। আমার ভয়
লাগছে আবার দুঃখও লাগছে।
বাকি সবাই সুধীরকে তখন ছাদে যেতে মানা
করে। আগে ওকে বাবা মায়ের সৎকার করতে
বলে। সুধীর সে কথা মানতে চায় না। ও আগে
ওর নিজের মত করে ঘটনাটা বুঝতে চায়। ও
একাই ছাদে চলে যায়। মায়িল আর অখিল ওর
পেছন পেছন যায়। নিখিল নীচেই সানি আর
মানির সাথে বসে থাকে। সানি আর মানি
দুজনেই অঝোর ধারে কেঁদে যাচ্ছিলো।
নিখিল ওদেরকে ছেড়ে যেতে ভরসা
পাচ্ছিলো না। সবার অলক্ষ্যে আরেকজন
নীরবে এক কোনায় বসে ছিল – সে হল
সুধীরের ছোট কাকি – কিন্নরী।
নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন –
চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়
আজিকে যে রাজাধিরাজ কাল সে ভিক্ষা
চায়
মায়িল আর সুধীর দুজনের মনের অবস্থা এই
গানের মত। তিন ঘণ্টা আগেই সব কিছুই ঠিক
ছিল। মায়িল বিয়ে করে সংসার করার স্বপ্ন
দেখছিল। সুধীর ডাক্তারী পাস করে
বরাবরের জন্যে গ্রামে আসার স্বপ্ন
দেখছিল। আর এখন সব ফাঁকা। এক ঘণ্টা মত
সময় লাগে সুধীরের নিজেকে সামলে নিতে।
সব আত্মীয় স্বজনেরা এসে ওদের সান্তনা
দেয়। এরপর পুলিশ আসে, ওদের নিয়ম মত
জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিছু সময় পরে ওরা
এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করে চলে
যায়। তারপর সুধীর মায়িলের কাছে আবার সব
কিছু বিশদ শুনতে চায়।
মায়িল কেঁদে কেঁদে বলে ও ওই কথা আর
বলতে পারবে না।
মায়িল – ওই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের কথা আমি
ভাবতেই পারছি না। আমার শুধু মনে হচ্ছে
কেন আমি আগে গিয়ে ওই পাইপটা ধরলাম
না। তাহলে বাবা মা বেঁচে থাকতো।
সুধীর – তুমি আগে পাইপটা ধরলে আমি
তোমাদের তিনজনকেই হারাতাম। কিন্তু
আমার এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে
না।
মায়িল – পুলিশ দেখে তো দুর্ঘটনাই বলল।
সুধীর – পুলিশ কি জানে বা বোঝে! ওরা শুধু
নিয়ম রক্ষা করতে এসেছিলো। আমার
পিসিকেই সন্দেহ হচ্ছে
মায়িল – সেই সকাল থেকে পিসি এখন পর্যন্ত
বাড়িতেই নেই।
সুধীর – কোথায় গেছে পিসি?
মায়িল – ভোর বেলা পিসি আর পিসে
কোথাও বেড়াতে গেছে।
সুধীর – চল তো ছাদে আর একবার গিয়ে দেখি
মায়িল – আমি যেতে পারবো না। আমার ভয়
লাগছে আবার দুঃখও লাগছে।
বাকি সবাই সুধীরকে তখন ছাদে যেতে মানা
করে। আগে ওকে বাবা মায়ের সৎকার করতে
বলে। সুধীর সে কথা মানতে চায় না। ও আগে
ওর নিজের মত করে ঘটনাটা বুঝতে চায়। ও
একাই ছাদে চলে যায়। মায়িল আর অখিল ওর
পেছন পেছন যায়। নিখিল নীচেই সানি আর
মানির সাথে বসে থাকে। সানি আর মানি
দুজনেই অঝোর ধারে কেঁদে যাচ্ছিলো।
নিখিল ওদেরকে ছেড়ে যেতে ভরসা
পাচ্ছিলো না। সবার অলক্ষ্যে আরেকজন
নীরবে এক কোনায় বসে ছিল – সে হল
সুধীরের ছোট কাকি – কিন্নরী।