12-12-2019, 11:53 PM
বিদিশার মোবাইলটা খুলতেই আমি বিভিন্ন মেসেজ app খুলে দেখতে লাগলাম বিদিশার সাথে জাভেদের কোনো জায়গায় কথা বাত্রা হয়েছে কিনা । whatsapp খুলতেই recent conversation এ বিদিশার সাথে জাভেদের কথোপকথন গুলো দেখতে পেলাম । আমি অন্য ঘরে গিয়ে টেনে টেনে বিদিশার আর জাভেদের পুরোনো কথোপকথন দেখতে শুরু করলাম । যা বুঝলাম রোজ জাভেদের সাথে বিদিশার কথোপকথন চলছে আমার পিছনে আমার এখানে আসার পর থেকে । বিদিশার রোজ খোঁজ খবর নেয় জাভেদ সেটা বুঝতে অসুবিধা হলো না । বার বার এক কথা বলে গেছে আমার বৌটাকে যে সে আমার বৌয়ের সাথে দেখা করতে চায় এবং ক্রমাগত বিদিশা এর উত্তরে না বলেছে , বার বার মনে করে দিয়েছে জাভেদের মুখের প্রতিজ্ঞার কথা । কিন্তু কিছুদিন আগে জাভেদ দেখলাম বেশ নাছোড়বান্দা হয়ে পড়েছিলো বিদিশার সাথে দেখা করার জন্য । বিদিশা প্রথমে না বলছিলো । তাতে জাভেদ বিদিশাকে লিখে বসলো -' জানো বিদিশা তোমার সাথে কাটানো দিনগুলো। ..আমার জীবনের সবার থেকে স্বরণীয় দিন ছিলো ।'
বিদিশা একটা smily দিয়ে লিখেছিলো -' সেটা আমারও ছিল জাভেদ ।...আমার খুব কষ্ট হতো জানো তো। .কিন্তু সেটাও ভালো লাগতো '
জাভেদ তাতে উত্তর দিয়েছিলো - 'তাহলে কেন দেখা করবে না জানু । .. তোমাকে আমি আরো কষ্ট দেবো ।...তুমি জানো আমি পুরো পাল্টে গেছি '
বিদিশা তাতে লিখেছিলো - ' জাভেদ সোনা আমার তো ভালো লাগে তোমার কাছে কষ্ট পেতে ।'
জাভেদ - ' জানু তোমায় আমি কষ্ট দেবো এবং তার সাথে আমি খুব আদরও করবো। ..এতো আদর করবো। ..যেটা তোমার গান্ডু পতি টা তোমায় করেনি ।'
জাভেদের ওই কথায় বিদিশা রাগী এক emoji দিয়ে লিখেছে দেখলাম - ' তোমায় বার বার বলেছি জাভেদ। ..তুমি ওকে গান্ডু বলবে না। ..আমার ভালো লাগে না ।'
জাভেদ এক কান উঠ বস করা এক বাঁদরের emoji দিয়ে লিখেছে - ' ভুল হয়ে গেছে জানু। ..আর হবে না। ..'
বিদিশা লিখেছিলো -' তুমি পাল্টাবে না জাভেদ। ..'
জাভেদ - ' জানো জানু। ..সব সময়ে তুমি আমার চোখের সামনে ভাসো। ..জানি না কি হয়েছে আমার। ...তোমার কি একবারও আমার কথা মনে হয়ে না '
বিদিশা -'হবে না। ..খুব রাগ হয়ে। ..তুমি যে কি খাওয়াতে আমাকে ওই কইদিন জানি না। ...আমার বর বেচারা হাফিয়ে ওঠে আমাকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে। ..'
জাভেদ - ' আমি আছি তো। ..আমি ঠান্ডা করবো তোমায় ...'
বিদিশা - ' তোমার কাছে একদম এই সব নয়। ..নিজে তো আসবে না। ..বন্ধুদের নিয়ে চলে আসো। ..'
জাভেদ - ' আর আমি ওই ভুল করবো না জানু। ..তুমি তো জানো জানু। ..সেই রাতে কি ঘটেছিলো। ..'
বিদিশা - ' ওরা কি পুলিশের কাছে গেছিলো ..যে ভাবে তুমি মারলে দেখলাম। ..আমার তো সব কিছু মনে পড়ছে না...পুরো আবছা আবছা মনে আছে। ...সেদিনও তো আমাকে ওই জিনিস টা খাইয়েছিল '
জাভেদ - 'ওই রাতের কথা ছাড়ো। ...আর আমি কোনোদিন তোমাকে এরকম হেনস্থা করবো না জানু। ...আমার তো ইচ্ছে করে তোমাকে তোমার স্বামীর কাছ থেকে তুলে নিয়ে আমার কাছে রাখবো ।'
বিদিশা একটা হাসির emoji দিয়ে লিখলো - 'পাগল কোথাকারের। ....তোমায় একটা কথা বলার ছিলো জাভেদ ।'
জাভেদ -' বোলো জানু। ...'
বিদিশা -' আমি প্রেগন্যান্ট। ..'
জাভেদ অনেক গুলো আনন্দের emoji দিয়ে লিখলো -' এটা কি সত্যি জানু। ..তোমার পেটে আমার বাচ্চা ।'
বিদিশা -' হা। ...তোমার বাচ্চা আমার পেটে। ..কিন্তু আমি আর অর্জুন ভেবেছি। ...ওই বাচ্চাকে abortion করাবো ।'
জাভেদ - ' কেন জানু। ..এরকম করবে কেন ?....আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন নষ্ট করে দিও না জানু। ...'
বিদিশা - ' জাভেদ। ..তোমায় আমি আগেও বলেছি। ..আমি শুধু অর্জুনকে ভালোবাসি। ..শারীরিক ভাবে আমি তোমার কাছ থেকে যা পাই। ..তা হয়তো অর্জুন কোনোদিনও দিতে পারবে না আমায় । ..সেদিন রাতে অর্জুন যদি আমাকে ওই জায়গায় নিয়ে না যেত। ..তোমার থেকে পাওয়া ওই যন্ত্রনা আর সুখ থেকে আমি চিরকাল বঞ্চিত থাকতাম। ..কিন্তু এর মধ্যে না আছে কোনো সামাজিক সম্পর্ক আর না আছে ভালোবাসা। ...তুমি ব্যাপারটা বোঝো জাভেদ। ...তোমার বাচ্চা আমি জন্ম দিতে পারবো না। ...অর্জুনের মনের অবস্থাটা বোঝো। ...'
জাভেদ - ' আমার সাথে তো একবার দেখা করো। ..তুমি কি সত্যি আমায় ক্ষমা করো নি জানু। ..'
বিদিশা - ' আমি তোমার সাথে কোনো জায়গায় একা দেখা করবো না ।'
জাভেদ - ' তুমি কি সত্যি আমায় ভয় পাও জানু। ..'
বিদিশা -'জানি না জাভেদ। ...কিন্তু এই weekend এ আমি অর্জুন আর মেয়ের সাথে শপিং করতে যাবো। ..তুমি যদি আস্তে পারো। ..আমি সুযোগ বুঝে দেখা করবো ।'
জাভেদ - 'এটুকু সময়তে কি হবে জানু। ....'
বিদিশা - ' আমি অর্জুনকে ঠকাতে চাই না। ...'
জাভেদ -' ঠিক আছে জানু। ...'
এরপর বুঝতে পারলাম বিদিশা আমায় মিথ্যে কথা বলেছিলো । জাভেদ যে ওখানে আসবে তা বিদিশা আগেই জানতো । আমি পরের কথোপকথন গুলো পড়ে চললাম । সেদিনের দেখার পর জাভেদ আবার বিদিশাকে পিং করেছিলো । বিদিশার জাভেদের 'Hi ' দেখেই সঙ্গে সঙ্গে লিখেছে দেখলাম - ' তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে জাভেদ ?...ওরকম ভাবে কি দরকার ছিল অর্জুনের সামনে আস্তে। ...'
জাভেদ - ' আমি খেয়াল করিনি তোমরা বেড়োচ্ছিলে ।'
বিদিশা - ' তুমি অদ্ভুত জাভেদ। ..প্রথমে আমার সাথে দেখা করার জন্য নিজের নতুন গার্ল ফ্রেন্ডকে নিয়ে এসছো আর তারপর ওকে দাঁড় করিয়ে আমার সাথে দেখা করতে এলে। ...আর তারপর বেড়ানোর সময় অর্জুনের সামনে এলে। ..এবং অর্জুনের সামনে কি বললে। ...আমি তোমার এক্স গার্ল ফ্রেন্ড। ..seriously !!!'
জাভেদ - ' তুমি গার্ল ফ্রেন্ড না তো কি। ... এতো আদরের সাথে আমার টা চুষে দিলে সেদিন । ..গার্ল ফ্রেন্ড না হলে এতো আদরের সাথে কেউ চুষে দেয় ।'
বিদিশা - ' তুমিও তো কম আবদার করছিলে না। ..ভাগ্যিস কেউ টের পায়নি। ...কিন্তু জানো তো জাভেদ। ..ব্যাপারটা খুব adventurous ছিল। ...ওই কাপড় try করার জায়গায়। ..আমরা ওই সব করছিলাম ।'
জাভেদ - ' আমার সাথে থাকলে আরো ওরকম adventure হবে ।'
বিদিশা - ' সেতো দেখছি। ...এই adventure করতে গিয়ে তোমার পাল্লায় পড়েছি। ..আরো করলে আবার কে জুটবে কে জানে ।'
জাভেদ - ' আমি ওই গান্ডুটার মতো না...তোমাকে শুধু আমার রাখবো ।'
বিদিশা -'আবার ওকে গান্ডু বলছো। ...'
জাভেদ - ' গান্ডু নয়তো কি। ... আমার কথা ভেবে দেখো জানু। ..আমার রাগ হয়ে না যখন দেখি ওরকম চুতিয়া তোমার মতো সুন্দরীর কাছে সব সময়ে পাশে থাকে। ...তোমার শরীরের গন্ধ রোজ পায়ে আর আমি ছটফট করি তোমার ওই গন্ধ পাওয়ার জন্য ।'
বিদিশা - ' মিথ্যুক। ...নতুন এক গার্ল ফ্রেন্ড জুটিয়ে ফেলেছো। ...আর নিজেকে অর্জুনের সাথে তুলনা করছো। ..অর্জুন কোনোদিনও এরকম করতো না ।'
জাভেদ - ' জানু। ..তুমি জানো আমার সবসময় একজনকে দরকার। ..তুমি শুধু একবার বোলো। ..আমি anna কে ছেড়ে শুধু তোমার হয়ে থাকবো ।...'
বিদিশা একটা আনন্দের emoji দিয়ে লিখেছিলো - ' তাহলে তুমি বলছো আমি তোমর নতুন প্রেমিকার থেকে ভালো অনেক। ..'
জাভেদ - 'ওর সাথে তোমার তুলনা হয়ে না। ..জানু '
বিদিশা - ' তাহলে anna কে তুমি ঠকাতে পারবে আমার জন্য '
জাভেদ আনন্দের emoji দিয়ে জিজ্ঞেস করলো - ' তাহলে তুমি আমার সাথে দেখা করতে রাজি জানু। ..'
বিদিশা - ' তুমি anna কে cheat করতে পারলে। ..আমি কেন পারবো না অর্জুনকে cheat করতে। ..'
জাভেদ আনন্দের emoji দিয়ে ভড়িয়ে দিলো বিদিশার ওই লেখার নিচে । বিদিশার ওই লেখা গুলো পড়ে আমার মনটা পুনরায় ভেঙে গেলো । দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বাকি লেখা গুলো তাড়াতাড়ি করে পড়লাম । বিদিশার এক সেমিনারের জন্য লন্ডন যাওয়ার কথা ছিলো এই আগামী সপ্তাহে , সেই সময় জাভেদের সাথে হোটেলে দেখা করার কথা লিখতে দেখলাম বিদিশাকে ।
বিদিশার সাথে জাভেদের কথোপকথন পরে মনের দিক থেকে আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না । নিজের সুন্দরী বৌকে জাভেদের কাছে চিরকালের মতো হারিয়ে ফেলেছি ভাবতেই বুক আবার কাঁপতে লাগলো । এক রাতের মজার এতো বড়ো সাজা আমায় পেতে হবে আমার পরিকল্পনার বাইরে ছিলো । জাভেদের কাছ থেকে এতো অত্যাচার , নির্মম রুখ্য ব্যবহার পেয়ে বিদিশার এরকম এক আচরণ হবে সেটা আমি মেনে নিতে পারছিলাম না । বিদিশা কি সত্যি ভুলে গেছিলো সেই রাতের কথা ? জাভেদ কিভাবে তার বন্ধুদের দেখে ওর গ্যাংব্যাং করেছিলো ।
ভেতর থেকে আমি মানতে পারছিলাম না আমারে স্ত্রী বিদিশা এরকম করবে । মনের ভেতরে কেমন যেন এক আশার আলো তাও জেগে ছিলো , ওদের মধ্যে এই কথোপকথন বাস্তবে আসল রূপে ঘটবে না সেটার ও সম্ভব না ওড়াতে পারছিলাম না । কিন্তু নিজের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য আমি নির্ণয় নিলাম বিদিশার পিছু করবো আমি ? দেখতে চাইছিলাম এর শেষ কোথায় হয়।
যেদিন বিদিশার সেমিনারের জন্য যাওয়ার কথা ছিলো লন্ডন , সেদিন আমি বিদিশাকে না জানিয়ে অফিসে ছুটি নিলাম । বিদিশা সকালে বেড়িয়ে গেলে , মেয়েকে সুধা বৌদির বাড়িতে রেখে দুপুরের ট্রেন ধরে লন্ডন এলাম । আমি বিদিশার থাকার হোটেলে আরেকটা রুম বুক করলাম । বিদিশাকে ভাবছিলাম জিজ্ঞেস করবো কোন রুমে সে উঠেছে কিন্তু সাহস পেলাম না । হোটেলের দালানে একটা কোনে দাঁড়িয়ে রইলাম । অপেখ্যা করতে লাগলাম সেমিনার পর কখন আমার বৌ এই হোটেলে উঠবে । বিকালের দিকে বিদিশাকে দেখলাম ওর বাকি কলিগদের সাথে স্যুট পড়া অবস্থায় হোটেলে ঢুকতে । আমি একটা কোন দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে লাগলাম বিদিশা ওর এক বান্ধবীর সাথে হাসতে হাসতে কথা বলছিলো এবং হোটেলের লিফ্ট এর দিকে চলে যেতে দেখলাম । আমি অপেখ্যা করতে লাগলাম জাভেদের আসার জন্য , বুঝতে পারছিলাম না জাভেদ কি আগেই চলে এসেছে এবং বিদিশার রুমে অপেখ্যা করছে বিদিশার জন্য । বুঝতে পারছিলাম না কি করে জানবো সত্যি বিদিশা আমার পিছনে জাভেদের সাথে সময় কাটাচ্ছে কিনা । কোনো কিছু উপায় না পেয়ে বিদিশাকে ফোন করে বসলাম । বিদিশা জিজ্ঞেস করলো -' কি হয়েছে ফোন করলে ?'
আমি বললাম - ' না তোমার সেমিনার কেমন হলো জিজ্ঞেস করার জন্য ফোন করলাম ।'
বিদিশা - 'ঠিক ঠাক। ..'
আমি জিজ্ঞেস করলাম - 'তুমি কোথায় ?'
বিদিশা - ' এই হোটেলে পৌছালাম ?'
আমি জিজ্ঞেস করলাম - 'হোটেলে ভালো রুম দিয়েছে ।'
বিদিশা বলল - ' হা। ...'
আমি -' কোন ফ্লোরে ?'
বিদিশা হাসতে হাসতে বলতে লাগলো - ' শুনে কি করবে। ..তুমি তো আসছো না ।'
আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম - ' না না। ...এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম ' এবং কথা ঘুড়িয়ে বললাম - ' তুমি খাবে কোথায় ?...বাইরে খেতে যাবে ?'
বিদিশা - ' না না। ..হোটেলে রাতের ডিনার টা করবো ।...এখানে তো ফ্রি। ..'
আমি - ' আচ্ছা। ...তাহলে খেয়ে নাও। ..তুমি নিশ্চয় খুব ক্লান্ত খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো ..'
বিদিশা - ' হা একটু পড়ে খেতে নামবো। ..মেয়ে কি করছে ?'
আমি - ' ও ঠিক আছে। ..তুমি ওখানে সাবধানে থেকো পড়ি সোনা। ..'
বিদিশা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল -' ওই ঘটনার পর তুমি দেখছি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো। ..এই বুদ্ধি যদি তোমার আগে আসতো অর্জুন ।'
আমি কথাটি শুনে কিছু উত্তর দিতে পারলাম না । বিদিশা শেষে বলল - ' ঠিক আছে। ..এখন রাখছি। ..পরে কথা হবে ।'
বিদিশার কাছ থেকে রুম নাম্বার টা জানতে পারলাম না । বুঝতে পারলাম না জাভেদ আগে থেকে বিদিশার সাথে ওই রুমে রয়েছে কিনা । রাতে ডিনারের সময় হোটেলের রেস্টুরেন্ট এ দূরে একটা জায়গায় বসে নজর রাখতে লাগলাম । কিছুক্ষন পর বিদিশাকে একজন বান্ধবীর সাথে হোটেলের রেস্টুরেন্ট এ ঢুকতে দেখলাম। আমি মাথা নিচু করে খাওয়ার ভান করতে লাগলাম আর আর চোখে বিদিশার উপর নজর রাখতে লাগলাম ।আসে পাশে কোথাও জাভেদকে দেখতে পেলাম না , জাভেদ যদি সত্যি সত্যি বিদিশার সাথে থাকলে তাহলে খাওয়ার সময় তো আসতো । মনে মনে খুশি হলাম কিন্তু তাও অপেখ্যা করতে লাগলাম । বিদিশা খেয়ে দেয়ে ওই বান্ধবীর সাথে উপড়ে চলে গেলো ।মনে মনে সান্তনা পেলাম জাভেদ বিদিশার সাথে নেই , হোটেলের রিসেপশনের এলাকায় একটা কোনে আমি তাও অপেখ্যা করতে লাগলো । প্রায় এক ঘন্টা অপেখ্যা করে যখন জাভেদকে আসতে দেখলাম না , তখন উঠে লিফ্টের কাছে গেলাম । নিচে দাঁড়ানো লিফ্ট ঢুকতেই আওয়াজ পেলাম পাশের লিফ্ট টা নিচে নামার । আমার লিফটের দরজাটা বন্ধ হতে যাচ্ছিলো এমন সময় দেখলাম পাশ দিয়ে বিদিশা বেড়িয়ে গেলো । লিফ্ট টা কোনোরকম ভাবে সুইচ টিপে উপরে ওঠা থেকে বন্ধ করলাম । লিফ্ট থেকে বেড়িয়ে দেখলাম বিদিশা হোটেলের দরজা থেকে বেরোচ্ছে , গায়ে এক কোট ঝোলানো বড়ো , ভেতরে এক পার্টিতে পড়ার চক চকে টপ । সেদিন শপিং করতে গিয়ে বিদিশা এটা কিনেছিলো তাই বুঝতে বেশি দেরী হলো না । আমি আসতে আসতে বিদিশার পিছু পিছু হোটেল থেকে বেড়ালাম আর বাইরে বিদিশাকে খুঁজতে লাগলাম । বিদিশাকে দেখতে পেলাম এবং যার সাথে বিদিশাকে দেখলাম তাকেও চিনতে পারলাম । বিদিশা অন্ধকার এক রাস্তায় জাভেদকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো এবং জাভেদ দেখলাম বিদিশার মাথা চেপে ধরে বিদিশার মুখ খানা উপর করে বিদিশার ঠোঁটখানা চুষছিলো উন্মাদের মতো । বিদিশাও নিজেকে পুরোপুরি সপে দিয়েছিলো জাভেদের কাছে । দুজনে একে অপরকে দীর্ঘক্ষণ চুমি খাওয়ার পর একে ওপরের হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হেটে যেতে লাগলো । হোটেলের থেকে কিছুটা দূরে একটা Night ক্লাব এ ঢুকতে দেখলাম দুজনকে । আমিও ওই নাইট ক্লাবে ঢুকলাম । ভিড়ের মধ্যে খুঁজতে লাগলাম নিজের স্ত্রী আর জাভেদকে এবং শেষ পর্যন্ত খুঁজেও পেলাম দুজনকে । একে ওপরকে জড়িয়ে ধরে ওই ক্লাবে বাজানো সঙ্গীতের সাথে তাল মিলিয়ে দুজনে নাচ করছিলো । জাভেদ নিজের হাত খানা দিয়ে দেখলাম বিদিশার সাড়া শরীরে বোলাচ্ছিলো । বিদিশা আর জাভেদের পরনে কোট টা ছিলো না । বিদিশা সেদিনের কেনা পার্টি টপ টা পড়েছিলো আর জাভেদ আমাদের বাড়িতে পড়ে আসা একই রকম দেখতে হাত কাটা গেঞ্চি পড়ে ছিলো । বিদিশা দেখছিলাম নাচতে নাচতে জাভেদের পেশী বহুল হাতের উপর নিজের নরম হাত খানা বোলাচ্ছিলো । কিছুক্ষন এরকম ভাবে নাচতে নাচতে দুজনে আরো কাছে এসে প্রবল আবেগের সাথে একে ওপরের ঠোঁট চুষলো । বিদিশা কম যাচ্ছিলো না আজ রাতে , জাভেদের মোটা ঠোঁট খানা নিজের মুখে নিয়ে চুষতে বেশ ভালো রকম মজা পাচ্ছিলো । আমি আর বেশিক্ষন ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না । সোজা বেড়িয়ে এসে হোটেলে চলে এলাম । মনে মনে জানতাম এ সব কিছুর জন্য দায়ী আমি , কিন্তু মনের ভেতর টা খালি হয়ে গেছিলো । ঘরে ঢুকেই বিছানায় শুয়ে পড়লাম , কতক্ষন শুয়ে ছিলাম জানি না । হটাৎ আমার মোবাইলটা বেজে উঠলো , দেখলাম বিদিশা আমাকে ফোন করেছে । সাহস করে ফোনটা ধরলাম - ' হা বিদিশা। ...এতো রাতে ফোন করছো। ..ঘুমাও নি ।'
বিদিশা - ' নাটক করো না অর্জুন। ..আমি জানি তুমি এই হোটেলে আছো। ....আমি রুম নাম্বার ৪০৫ তোমার অপেখ্যা করছি । চটপট চলে এসো। ..'
আমি - ' কিন্তু। ...'
বিদিশা - ' তুমি কি ভাবছো এতদিন ধরে তোমার সাথে আমি ঘর করেছি অর্জুন। ..তুমি যতই লুকিয়ে লুকিয়ে নজর দাও আমার নজর তো এড়াতে পারবে না ।...এসো আমার রুমে '
বিদিশা একটা smily দিয়ে লিখেছিলো -' সেটা আমারও ছিল জাভেদ ।...আমার খুব কষ্ট হতো জানো তো। .কিন্তু সেটাও ভালো লাগতো '
জাভেদ তাতে উত্তর দিয়েছিলো - 'তাহলে কেন দেখা করবে না জানু । .. তোমাকে আমি আরো কষ্ট দেবো ।...তুমি জানো আমি পুরো পাল্টে গেছি '
বিদিশা তাতে লিখেছিলো - ' জাভেদ সোনা আমার তো ভালো লাগে তোমার কাছে কষ্ট পেতে ।'
জাভেদ - ' জানু তোমায় আমি কষ্ট দেবো এবং তার সাথে আমি খুব আদরও করবো। ..এতো আদর করবো। ..যেটা তোমার গান্ডু পতি টা তোমায় করেনি ।'
জাভেদের ওই কথায় বিদিশা রাগী এক emoji দিয়ে লিখেছে দেখলাম - ' তোমায় বার বার বলেছি জাভেদ। ..তুমি ওকে গান্ডু বলবে না। ..আমার ভালো লাগে না ।'
জাভেদ এক কান উঠ বস করা এক বাঁদরের emoji দিয়ে লিখেছে - ' ভুল হয়ে গেছে জানু। ..আর হবে না। ..'
বিদিশা লিখেছিলো -' তুমি পাল্টাবে না জাভেদ। ..'
জাভেদ - ' জানো জানু। ..সব সময়ে তুমি আমার চোখের সামনে ভাসো। ..জানি না কি হয়েছে আমার। ...তোমার কি একবারও আমার কথা মনে হয়ে না '
বিদিশা -'হবে না। ..খুব রাগ হয়ে। ..তুমি যে কি খাওয়াতে আমাকে ওই কইদিন জানি না। ...আমার বর বেচারা হাফিয়ে ওঠে আমাকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে। ..'
জাভেদ - ' আমি আছি তো। ..আমি ঠান্ডা করবো তোমায় ...'
বিদিশা - ' তোমার কাছে একদম এই সব নয়। ..নিজে তো আসবে না। ..বন্ধুদের নিয়ে চলে আসো। ..'
জাভেদ - ' আর আমি ওই ভুল করবো না জানু। ..তুমি তো জানো জানু। ..সেই রাতে কি ঘটেছিলো। ..'
বিদিশা - ' ওরা কি পুলিশের কাছে গেছিলো ..যে ভাবে তুমি মারলে দেখলাম। ..আমার তো সব কিছু মনে পড়ছে না...পুরো আবছা আবছা মনে আছে। ...সেদিনও তো আমাকে ওই জিনিস টা খাইয়েছিল '
জাভেদ - 'ওই রাতের কথা ছাড়ো। ...আর আমি কোনোদিন তোমাকে এরকম হেনস্থা করবো না জানু। ...আমার তো ইচ্ছে করে তোমাকে তোমার স্বামীর কাছ থেকে তুলে নিয়ে আমার কাছে রাখবো ।'
বিদিশা একটা হাসির emoji দিয়ে লিখলো - 'পাগল কোথাকারের। ....তোমায় একটা কথা বলার ছিলো জাভেদ ।'
জাভেদ -' বোলো জানু। ...'
বিদিশা -' আমি প্রেগন্যান্ট। ..'
জাভেদ অনেক গুলো আনন্দের emoji দিয়ে লিখলো -' এটা কি সত্যি জানু। ..তোমার পেটে আমার বাচ্চা ।'
বিদিশা -' হা। ...তোমার বাচ্চা আমার পেটে। ..কিন্তু আমি আর অর্জুন ভেবেছি। ...ওই বাচ্চাকে abortion করাবো ।'
জাভেদ - ' কেন জানু। ..এরকম করবে কেন ?....আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন নষ্ট করে দিও না জানু। ...'
বিদিশা - ' জাভেদ। ..তোমায় আমি আগেও বলেছি। ..আমি শুধু অর্জুনকে ভালোবাসি। ..শারীরিক ভাবে আমি তোমার কাছ থেকে যা পাই। ..তা হয়তো অর্জুন কোনোদিনও দিতে পারবে না আমায় । ..সেদিন রাতে অর্জুন যদি আমাকে ওই জায়গায় নিয়ে না যেত। ..তোমার থেকে পাওয়া ওই যন্ত্রনা আর সুখ থেকে আমি চিরকাল বঞ্চিত থাকতাম। ..কিন্তু এর মধ্যে না আছে কোনো সামাজিক সম্পর্ক আর না আছে ভালোবাসা। ...তুমি ব্যাপারটা বোঝো জাভেদ। ...তোমার বাচ্চা আমি জন্ম দিতে পারবো না। ...অর্জুনের মনের অবস্থাটা বোঝো। ...'
জাভেদ - ' আমার সাথে তো একবার দেখা করো। ..তুমি কি সত্যি আমায় ক্ষমা করো নি জানু। ..'
বিদিশা - ' আমি তোমার সাথে কোনো জায়গায় একা দেখা করবো না ।'
জাভেদ - ' তুমি কি সত্যি আমায় ভয় পাও জানু। ..'
বিদিশা -'জানি না জাভেদ। ...কিন্তু এই weekend এ আমি অর্জুন আর মেয়ের সাথে শপিং করতে যাবো। ..তুমি যদি আস্তে পারো। ..আমি সুযোগ বুঝে দেখা করবো ।'
জাভেদ - 'এটুকু সময়তে কি হবে জানু। ....'
বিদিশা - ' আমি অর্জুনকে ঠকাতে চাই না। ...'
জাভেদ -' ঠিক আছে জানু। ...'
এরপর বুঝতে পারলাম বিদিশা আমায় মিথ্যে কথা বলেছিলো । জাভেদ যে ওখানে আসবে তা বিদিশা আগেই জানতো । আমি পরের কথোপকথন গুলো পড়ে চললাম । সেদিনের দেখার পর জাভেদ আবার বিদিশাকে পিং করেছিলো । বিদিশার জাভেদের 'Hi ' দেখেই সঙ্গে সঙ্গে লিখেছে দেখলাম - ' তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে জাভেদ ?...ওরকম ভাবে কি দরকার ছিল অর্জুনের সামনে আস্তে। ...'
জাভেদ - ' আমি খেয়াল করিনি তোমরা বেড়োচ্ছিলে ।'
বিদিশা - ' তুমি অদ্ভুত জাভেদ। ..প্রথমে আমার সাথে দেখা করার জন্য নিজের নতুন গার্ল ফ্রেন্ডকে নিয়ে এসছো আর তারপর ওকে দাঁড় করিয়ে আমার সাথে দেখা করতে এলে। ...আর তারপর বেড়ানোর সময় অর্জুনের সামনে এলে। ..এবং অর্জুনের সামনে কি বললে। ...আমি তোমার এক্স গার্ল ফ্রেন্ড। ..seriously !!!'
জাভেদ - ' তুমি গার্ল ফ্রেন্ড না তো কি। ... এতো আদরের সাথে আমার টা চুষে দিলে সেদিন । ..গার্ল ফ্রেন্ড না হলে এতো আদরের সাথে কেউ চুষে দেয় ।'
বিদিশা - ' তুমিও তো কম আবদার করছিলে না। ..ভাগ্যিস কেউ টের পায়নি। ...কিন্তু জানো তো জাভেদ। ..ব্যাপারটা খুব adventurous ছিল। ...ওই কাপড় try করার জায়গায়। ..আমরা ওই সব করছিলাম ।'
জাভেদ - ' আমার সাথে থাকলে আরো ওরকম adventure হবে ।'
বিদিশা - ' সেতো দেখছি। ...এই adventure করতে গিয়ে তোমার পাল্লায় পড়েছি। ..আরো করলে আবার কে জুটবে কে জানে ।'
জাভেদ - ' আমি ওই গান্ডুটার মতো না...তোমাকে শুধু আমার রাখবো ।'
বিদিশা -'আবার ওকে গান্ডু বলছো। ...'
জাভেদ - ' গান্ডু নয়তো কি। ... আমার কথা ভেবে দেখো জানু। ..আমার রাগ হয়ে না যখন দেখি ওরকম চুতিয়া তোমার মতো সুন্দরীর কাছে সব সময়ে পাশে থাকে। ...তোমার শরীরের গন্ধ রোজ পায়ে আর আমি ছটফট করি তোমার ওই গন্ধ পাওয়ার জন্য ।'
বিদিশা - ' মিথ্যুক। ...নতুন এক গার্ল ফ্রেন্ড জুটিয়ে ফেলেছো। ...আর নিজেকে অর্জুনের সাথে তুলনা করছো। ..অর্জুন কোনোদিনও এরকম করতো না ।'
জাভেদ - ' জানু। ..তুমি জানো আমার সবসময় একজনকে দরকার। ..তুমি শুধু একবার বোলো। ..আমি anna কে ছেড়ে শুধু তোমার হয়ে থাকবো ।...'
বিদিশা একটা আনন্দের emoji দিয়ে লিখেছিলো - ' তাহলে তুমি বলছো আমি তোমর নতুন প্রেমিকার থেকে ভালো অনেক। ..'
জাভেদ - 'ওর সাথে তোমার তুলনা হয়ে না। ..জানু '
বিদিশা - ' তাহলে anna কে তুমি ঠকাতে পারবে আমার জন্য '
জাভেদ আনন্দের emoji দিয়ে জিজ্ঞেস করলো - ' তাহলে তুমি আমার সাথে দেখা করতে রাজি জানু। ..'
বিদিশা - ' তুমি anna কে cheat করতে পারলে। ..আমি কেন পারবো না অর্জুনকে cheat করতে। ..'
জাভেদ আনন্দের emoji দিয়ে ভড়িয়ে দিলো বিদিশার ওই লেখার নিচে । বিদিশার ওই লেখা গুলো পড়ে আমার মনটা পুনরায় ভেঙে গেলো । দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বাকি লেখা গুলো তাড়াতাড়ি করে পড়লাম । বিদিশার এক সেমিনারের জন্য লন্ডন যাওয়ার কথা ছিলো এই আগামী সপ্তাহে , সেই সময় জাভেদের সাথে হোটেলে দেখা করার কথা লিখতে দেখলাম বিদিশাকে ।
বিদিশার সাথে জাভেদের কথোপকথন পরে মনের দিক থেকে আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না । নিজের সুন্দরী বৌকে জাভেদের কাছে চিরকালের মতো হারিয়ে ফেলেছি ভাবতেই বুক আবার কাঁপতে লাগলো । এক রাতের মজার এতো বড়ো সাজা আমায় পেতে হবে আমার পরিকল্পনার বাইরে ছিলো । জাভেদের কাছ থেকে এতো অত্যাচার , নির্মম রুখ্য ব্যবহার পেয়ে বিদিশার এরকম এক আচরণ হবে সেটা আমি মেনে নিতে পারছিলাম না । বিদিশা কি সত্যি ভুলে গেছিলো সেই রাতের কথা ? জাভেদ কিভাবে তার বন্ধুদের দেখে ওর গ্যাংব্যাং করেছিলো ।
ভেতর থেকে আমি মানতে পারছিলাম না আমারে স্ত্রী বিদিশা এরকম করবে । মনের ভেতরে কেমন যেন এক আশার আলো তাও জেগে ছিলো , ওদের মধ্যে এই কথোপকথন বাস্তবে আসল রূপে ঘটবে না সেটার ও সম্ভব না ওড়াতে পারছিলাম না । কিন্তু নিজের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য আমি নির্ণয় নিলাম বিদিশার পিছু করবো আমি ? দেখতে চাইছিলাম এর শেষ কোথায় হয়।
যেদিন বিদিশার সেমিনারের জন্য যাওয়ার কথা ছিলো লন্ডন , সেদিন আমি বিদিশাকে না জানিয়ে অফিসে ছুটি নিলাম । বিদিশা সকালে বেড়িয়ে গেলে , মেয়েকে সুধা বৌদির বাড়িতে রেখে দুপুরের ট্রেন ধরে লন্ডন এলাম । আমি বিদিশার থাকার হোটেলে আরেকটা রুম বুক করলাম । বিদিশাকে ভাবছিলাম জিজ্ঞেস করবো কোন রুমে সে উঠেছে কিন্তু সাহস পেলাম না । হোটেলের দালানে একটা কোনে দাঁড়িয়ে রইলাম । অপেখ্যা করতে লাগলাম সেমিনার পর কখন আমার বৌ এই হোটেলে উঠবে । বিকালের দিকে বিদিশাকে দেখলাম ওর বাকি কলিগদের সাথে স্যুট পড়া অবস্থায় হোটেলে ঢুকতে । আমি একটা কোন দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে লাগলাম বিদিশা ওর এক বান্ধবীর সাথে হাসতে হাসতে কথা বলছিলো এবং হোটেলের লিফ্ট এর দিকে চলে যেতে দেখলাম । আমি অপেখ্যা করতে লাগলাম জাভেদের আসার জন্য , বুঝতে পারছিলাম না জাভেদ কি আগেই চলে এসেছে এবং বিদিশার রুমে অপেখ্যা করছে বিদিশার জন্য । বুঝতে পারছিলাম না কি করে জানবো সত্যি বিদিশা আমার পিছনে জাভেদের সাথে সময় কাটাচ্ছে কিনা । কোনো কিছু উপায় না পেয়ে বিদিশাকে ফোন করে বসলাম । বিদিশা জিজ্ঞেস করলো -' কি হয়েছে ফোন করলে ?'
আমি বললাম - ' না তোমার সেমিনার কেমন হলো জিজ্ঞেস করার জন্য ফোন করলাম ।'
বিদিশা - 'ঠিক ঠাক। ..'
আমি জিজ্ঞেস করলাম - 'তুমি কোথায় ?'
বিদিশা - ' এই হোটেলে পৌছালাম ?'
আমি জিজ্ঞেস করলাম - 'হোটেলে ভালো রুম দিয়েছে ।'
বিদিশা বলল - ' হা। ...'
আমি -' কোন ফ্লোরে ?'
বিদিশা হাসতে হাসতে বলতে লাগলো - ' শুনে কি করবে। ..তুমি তো আসছো না ।'
আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম - ' না না। ...এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম ' এবং কথা ঘুড়িয়ে বললাম - ' তুমি খাবে কোথায় ?...বাইরে খেতে যাবে ?'
বিদিশা - ' না না। ..হোটেলে রাতের ডিনার টা করবো ।...এখানে তো ফ্রি। ..'
আমি - ' আচ্ছা। ...তাহলে খেয়ে নাও। ..তুমি নিশ্চয় খুব ক্লান্ত খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো ..'
বিদিশা - ' হা একটু পড়ে খেতে নামবো। ..মেয়ে কি করছে ?'
আমি - ' ও ঠিক আছে। ..তুমি ওখানে সাবধানে থেকো পড়ি সোনা। ..'
বিদিশা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল -' ওই ঘটনার পর তুমি দেখছি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো। ..এই বুদ্ধি যদি তোমার আগে আসতো অর্জুন ।'
আমি কথাটি শুনে কিছু উত্তর দিতে পারলাম না । বিদিশা শেষে বলল - ' ঠিক আছে। ..এখন রাখছি। ..পরে কথা হবে ।'
বিদিশার কাছ থেকে রুম নাম্বার টা জানতে পারলাম না । বুঝতে পারলাম না জাভেদ আগে থেকে বিদিশার সাথে ওই রুমে রয়েছে কিনা । রাতে ডিনারের সময় হোটেলের রেস্টুরেন্ট এ দূরে একটা জায়গায় বসে নজর রাখতে লাগলাম । কিছুক্ষন পর বিদিশাকে একজন বান্ধবীর সাথে হোটেলের রেস্টুরেন্ট এ ঢুকতে দেখলাম। আমি মাথা নিচু করে খাওয়ার ভান করতে লাগলাম আর আর চোখে বিদিশার উপর নজর রাখতে লাগলাম ।আসে পাশে কোথাও জাভেদকে দেখতে পেলাম না , জাভেদ যদি সত্যি সত্যি বিদিশার সাথে থাকলে তাহলে খাওয়ার সময় তো আসতো । মনে মনে খুশি হলাম কিন্তু তাও অপেখ্যা করতে লাগলাম । বিদিশা খেয়ে দেয়ে ওই বান্ধবীর সাথে উপড়ে চলে গেলো ।মনে মনে সান্তনা পেলাম জাভেদ বিদিশার সাথে নেই , হোটেলের রিসেপশনের এলাকায় একটা কোনে আমি তাও অপেখ্যা করতে লাগলো । প্রায় এক ঘন্টা অপেখ্যা করে যখন জাভেদকে আসতে দেখলাম না , তখন উঠে লিফ্টের কাছে গেলাম । নিচে দাঁড়ানো লিফ্ট ঢুকতেই আওয়াজ পেলাম পাশের লিফ্ট টা নিচে নামার । আমার লিফটের দরজাটা বন্ধ হতে যাচ্ছিলো এমন সময় দেখলাম পাশ দিয়ে বিদিশা বেড়িয়ে গেলো । লিফ্ট টা কোনোরকম ভাবে সুইচ টিপে উপরে ওঠা থেকে বন্ধ করলাম । লিফ্ট থেকে বেড়িয়ে দেখলাম বিদিশা হোটেলের দরজা থেকে বেরোচ্ছে , গায়ে এক কোট ঝোলানো বড়ো , ভেতরে এক পার্টিতে পড়ার চক চকে টপ । সেদিন শপিং করতে গিয়ে বিদিশা এটা কিনেছিলো তাই বুঝতে বেশি দেরী হলো না । আমি আসতে আসতে বিদিশার পিছু পিছু হোটেল থেকে বেড়ালাম আর বাইরে বিদিশাকে খুঁজতে লাগলাম । বিদিশাকে দেখতে পেলাম এবং যার সাথে বিদিশাকে দেখলাম তাকেও চিনতে পারলাম । বিদিশা অন্ধকার এক রাস্তায় জাভেদকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো এবং জাভেদ দেখলাম বিদিশার মাথা চেপে ধরে বিদিশার মুখ খানা উপর করে বিদিশার ঠোঁটখানা চুষছিলো উন্মাদের মতো । বিদিশাও নিজেকে পুরোপুরি সপে দিয়েছিলো জাভেদের কাছে । দুজনে একে অপরকে দীর্ঘক্ষণ চুমি খাওয়ার পর একে ওপরের হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হেটে যেতে লাগলো । হোটেলের থেকে কিছুটা দূরে একটা Night ক্লাব এ ঢুকতে দেখলাম দুজনকে । আমিও ওই নাইট ক্লাবে ঢুকলাম । ভিড়ের মধ্যে খুঁজতে লাগলাম নিজের স্ত্রী আর জাভেদকে এবং শেষ পর্যন্ত খুঁজেও পেলাম দুজনকে । একে ওপরকে জড়িয়ে ধরে ওই ক্লাবে বাজানো সঙ্গীতের সাথে তাল মিলিয়ে দুজনে নাচ করছিলো । জাভেদ নিজের হাত খানা দিয়ে দেখলাম বিদিশার সাড়া শরীরে বোলাচ্ছিলো । বিদিশা আর জাভেদের পরনে কোট টা ছিলো না । বিদিশা সেদিনের কেনা পার্টি টপ টা পড়েছিলো আর জাভেদ আমাদের বাড়িতে পড়ে আসা একই রকম দেখতে হাত কাটা গেঞ্চি পড়ে ছিলো । বিদিশা দেখছিলাম নাচতে নাচতে জাভেদের পেশী বহুল হাতের উপর নিজের নরম হাত খানা বোলাচ্ছিলো । কিছুক্ষন এরকম ভাবে নাচতে নাচতে দুজনে আরো কাছে এসে প্রবল আবেগের সাথে একে ওপরের ঠোঁট চুষলো । বিদিশা কম যাচ্ছিলো না আজ রাতে , জাভেদের মোটা ঠোঁট খানা নিজের মুখে নিয়ে চুষতে বেশ ভালো রকম মজা পাচ্ছিলো । আমি আর বেশিক্ষন ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না । সোজা বেড়িয়ে এসে হোটেলে চলে এলাম । মনে মনে জানতাম এ সব কিছুর জন্য দায়ী আমি , কিন্তু মনের ভেতর টা খালি হয়ে গেছিলো । ঘরে ঢুকেই বিছানায় শুয়ে পড়লাম , কতক্ষন শুয়ে ছিলাম জানি না । হটাৎ আমার মোবাইলটা বেজে উঠলো , দেখলাম বিদিশা আমাকে ফোন করেছে । সাহস করে ফোনটা ধরলাম - ' হা বিদিশা। ...এতো রাতে ফোন করছো। ..ঘুমাও নি ।'
বিদিশা - ' নাটক করো না অর্জুন। ..আমি জানি তুমি এই হোটেলে আছো। ....আমি রুম নাম্বার ৪০৫ তোমার অপেখ্যা করছি । চটপট চলে এসো। ..'
আমি - ' কিন্তু। ...'
বিদিশা - ' তুমি কি ভাবছো এতদিন ধরে তোমার সাথে আমি ঘর করেছি অর্জুন। ..তুমি যতই লুকিয়ে লুকিয়ে নজর দাও আমার নজর তো এড়াতে পারবে না ।...এসো আমার রুমে '