12-12-2019, 08:01 PM
ডাঃ সুধীর রাও - মায়িল (৪৬)
পরের মাসে মায়িল চলে আসে সুধীরের
বাড়িতে। নিচের একটা ঘরে ওর চেম্বার বানায়। যা যা
যন্ত্রপাতি দরকার সেগুলো মায়িল বাবার কাছ থেকে
নেয়। সুধীর এতে আপত্তি করছিলো।
মায়িল – বাবা এইসব তোমাকে যৌতুক হিসাবে দিচ্ছে না
সুধীর – তবে কি হিসাবে দিচ্ছে!
মায়িল – এই সব বাবা গ্রামের মানুষের জন্যে দিচ্ছে
সুধীর – তবে ঠিক আছে। তোমার ডাক্তার খানার
নাম দেবে ভাস্কর চিকিৎসালয়।
মায়িল – ঠিক আছে তাই হবে
মায়িল থাকতে শুরু করার দুমাস পরে ডাক্তারি পরীক্ষার
ফলাফল বের হয় আর মায়িল ডাক্তারের সার্টিফিকেট
পায়। মায়িল আগে নিজের বাড়ি যায়। ও বাবাকে
আগেই সব বলে রেখেছিল আর ডাঃ ভাস্করও
কোন আপত্তি করেন নি। মায়িল বাবাকে নিয়ে
সুধীরের গ্রামে যায়। কঞ্জরি দেবী আর
গণেশ রাও কি করবে না করবে ভেবে পায় না।
সেদিন বিকালে ডাঃ ভাস্কর পুজা করে মায়িলের
চিকিৎসালয়ের উদ্বোধন করেন। সবার অনুরোধে
উনি এক রাত থেকে যান সুধীরদের বাড়িতে।
ডাঃ ভাস্কর – আপনাদের গ্রাম খুব সুন্দর
গণেশ রাও – আপনার আমাদের এখানে থাকতে খুব
অসুবিধা হবে
মায়িল – বাবার কোন অসুবিধা হবে না।
ডাঃ ভাস্কর – আমার কাছে সব সময় টাকা পয়সা ছিল না।
এক সময় আমিও সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেই
ছিলাম।
গণেশ রাও - কিন্তু এখন তো আর অভ্যেস নেই!
ডাঃ ভাস্কর – দেখুন দাদা মানুষ যেমন একবার সাঁতার
শিখলে কোনদিন ভুলে যায় না। সেইরকমই যে
একবার মধ্যবিত্ত থেকেছে সেও কোনদিন
সেই জীবন ভুলে যায় না। আসলে আমরাই সহজ
সরল ভাবে থাকতে চাই না। আমার বাকি জীবনটা
এখানে কাটাতেও কোন অসুবিধা হবে না। কিন্তু
আমার সো কল্ড প্রফেশন, আমার কমিটমেন্ট,
আমার টাকা রোজগার করারা নেশা আমাকে এখানে
বেশী দিন থাকতে দেবে না।
গণেশ রাও - আপনার কথা শুনে খুব ভালো লাগছে।
কিন্তু আপনি কি কোন কিছুর জন্যে অনুতপ্ত?
ডাঃ ভাস্কর – দেখুন আমরা যারা মানুষ, জীবনে কিছু না
কিছু ভুল করি আর তার জন্যে অনুতপ্ত হই। আমি খুব
বেশী ভুল করিনি তবে অনেক ঠিক কাজ করিনি।
গণেশ রাও - সেটা আবার কিরকম হল?
ডাঃ ভাস্কর – ডাক্তারের জীবনের মুল মন্ত্র হওয়া
উচিত মানুষের সেবা করা। আমি খুব একটা করিনি।
গণেশ রাও - কিন্তু আপনি অনেক বিখ্যাত ডাক্তার আর
খুব ভালো ডাক্তার।
ডাঃ ভাস্কর – লোকে তাই বলে, কিন্তু আমি নিজে
তো জানি আমি আসলে কি।
গণেশ রাও - আপনি আসলে কি?
ডাঃ ভাস্কর – আমার চিকিৎসার লক্ষ্য সবসময় ছিল
কিভাবে আমার নাম হবে আর পয়সা হবে। যেখানে
আমার লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল মানুষ বাঁচানো।
গণেশ রাও - অনেক মানুষই আপনার চিকিৎসায় বেঁচে
গেছেন।
ডাঃ ভাস্কর – আমি ওদের সমস্যা যত বড় করে
দেখিয়েছি অনেক সময়েই সেটা কোন বড়
সমস্যা ছিল না। আর আমি তো টাকা নিয়ে চিকিৎসা
করেছি।
গণেশ রাও - কেউ বলেনি একজন ডাক্তারকে বিনা
পয়সায় চিকিৎসা করতে হবে। আর তাহলে ডাক্তার
খাবে কি?
ডাঃ ভাস্কর - তা হলেও, যে চিকিৎসার জন্যে ১০ টাকা
নেওয়া উচিত আমি সেখানে ১০০ টাকা নিয়েছি। তাই
খারাপ লাগে।
গণেশ রাও - আপনি মহান তাই এই কথা ভাবছেন বা
বলছেন।
ডাঃ ভাস্কর – প্রায় সব ডাক্তারই এটা ভাবে। হয়ত বলে
না। তবে কি জানেন আদর্শের থেকে টাকার মজা
অনেকগুন বেশী। তাই আমরা সেই টাকার
পেছনে দৌড়ই।
গণেশ রাও - তো এবার কিছু করুণ যাতে শুধু আপনার
মনের শান্তি হয়।
ডাঃ ভাস্কর – আমি যদি মাঝে মাঝে আপনার এখানে
আসি আপনাদের কোন আপত্তি হবে?
গণেশ রাও - না না সেকি কথা, আপনার যেদিন খুশী
যতদিন খুশী এখানে এসে থাকবেন।
মায়িল – বাবা তুমি মাসে একদিন এসে আমার সাথে
এখানকার রুগী দেখে যেও
ডাঃ ভাস্কর – হ্যাঁ হ্যাঁ সেটা করতেই পারি। আর এখানে
চিকিৎসা করে আমি কোন পারিশ্রমিক নেবো না।
গণেশ রাও – তবে তো খুব ভালো হয়। গ্রামের
লোকেদের ভালো হবে আর আমাদেরও খুব
ভালো লাগবে
পরের মাসে মায়িল চলে আসে সুধীরের
বাড়িতে। নিচের একটা ঘরে ওর চেম্বার বানায়। যা যা
যন্ত্রপাতি দরকার সেগুলো মায়িল বাবার কাছ থেকে
নেয়। সুধীর এতে আপত্তি করছিলো।
মায়িল – বাবা এইসব তোমাকে যৌতুক হিসাবে দিচ্ছে না
সুধীর – তবে কি হিসাবে দিচ্ছে!
মায়িল – এই সব বাবা গ্রামের মানুষের জন্যে দিচ্ছে
সুধীর – তবে ঠিক আছে। তোমার ডাক্তার খানার
নাম দেবে ভাস্কর চিকিৎসালয়।
মায়িল – ঠিক আছে তাই হবে
মায়িল থাকতে শুরু করার দুমাস পরে ডাক্তারি পরীক্ষার
ফলাফল বের হয় আর মায়িল ডাক্তারের সার্টিফিকেট
পায়। মায়িল আগে নিজের বাড়ি যায়। ও বাবাকে
আগেই সব বলে রেখেছিল আর ডাঃ ভাস্করও
কোন আপত্তি করেন নি। মায়িল বাবাকে নিয়ে
সুধীরের গ্রামে যায়। কঞ্জরি দেবী আর
গণেশ রাও কি করবে না করবে ভেবে পায় না।
সেদিন বিকালে ডাঃ ভাস্কর পুজা করে মায়িলের
চিকিৎসালয়ের উদ্বোধন করেন। সবার অনুরোধে
উনি এক রাত থেকে যান সুধীরদের বাড়িতে।
ডাঃ ভাস্কর – আপনাদের গ্রাম খুব সুন্দর
গণেশ রাও – আপনার আমাদের এখানে থাকতে খুব
অসুবিধা হবে
মায়িল – বাবার কোন অসুবিধা হবে না।
ডাঃ ভাস্কর – আমার কাছে সব সময় টাকা পয়সা ছিল না।
এক সময় আমিও সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেই
ছিলাম।
গণেশ রাও - কিন্তু এখন তো আর অভ্যেস নেই!
ডাঃ ভাস্কর – দেখুন দাদা মানুষ যেমন একবার সাঁতার
শিখলে কোনদিন ভুলে যায় না। সেইরকমই যে
একবার মধ্যবিত্ত থেকেছে সেও কোনদিন
সেই জীবন ভুলে যায় না। আসলে আমরাই সহজ
সরল ভাবে থাকতে চাই না। আমার বাকি জীবনটা
এখানে কাটাতেও কোন অসুবিধা হবে না। কিন্তু
আমার সো কল্ড প্রফেশন, আমার কমিটমেন্ট,
আমার টাকা রোজগার করারা নেশা আমাকে এখানে
বেশী দিন থাকতে দেবে না।
গণেশ রাও - আপনার কথা শুনে খুব ভালো লাগছে।
কিন্তু আপনি কি কোন কিছুর জন্যে অনুতপ্ত?
ডাঃ ভাস্কর – দেখুন আমরা যারা মানুষ, জীবনে কিছু না
কিছু ভুল করি আর তার জন্যে অনুতপ্ত হই। আমি খুব
বেশী ভুল করিনি তবে অনেক ঠিক কাজ করিনি।
গণেশ রাও - সেটা আবার কিরকম হল?
ডাঃ ভাস্কর – ডাক্তারের জীবনের মুল মন্ত্র হওয়া
উচিত মানুষের সেবা করা। আমি খুব একটা করিনি।
গণেশ রাও - কিন্তু আপনি অনেক বিখ্যাত ডাক্তার আর
খুব ভালো ডাক্তার।
ডাঃ ভাস্কর – লোকে তাই বলে, কিন্তু আমি নিজে
তো জানি আমি আসলে কি।
গণেশ রাও - আপনি আসলে কি?
ডাঃ ভাস্কর – আমার চিকিৎসার লক্ষ্য সবসময় ছিল
কিভাবে আমার নাম হবে আর পয়সা হবে। যেখানে
আমার লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল মানুষ বাঁচানো।
গণেশ রাও - অনেক মানুষই আপনার চিকিৎসায় বেঁচে
গেছেন।
ডাঃ ভাস্কর – আমি ওদের সমস্যা যত বড় করে
দেখিয়েছি অনেক সময়েই সেটা কোন বড়
সমস্যা ছিল না। আর আমি তো টাকা নিয়ে চিকিৎসা
করেছি।
গণেশ রাও - কেউ বলেনি একজন ডাক্তারকে বিনা
পয়সায় চিকিৎসা করতে হবে। আর তাহলে ডাক্তার
খাবে কি?
ডাঃ ভাস্কর - তা হলেও, যে চিকিৎসার জন্যে ১০ টাকা
নেওয়া উচিত আমি সেখানে ১০০ টাকা নিয়েছি। তাই
খারাপ লাগে।
গণেশ রাও - আপনি মহান তাই এই কথা ভাবছেন বা
বলছেন।
ডাঃ ভাস্কর – প্রায় সব ডাক্তারই এটা ভাবে। হয়ত বলে
না। তবে কি জানেন আদর্শের থেকে টাকার মজা
অনেকগুন বেশী। তাই আমরা সেই টাকার
পেছনে দৌড়ই।
গণেশ রাও - তো এবার কিছু করুণ যাতে শুধু আপনার
মনের শান্তি হয়।
ডাঃ ভাস্কর – আমি যদি মাঝে মাঝে আপনার এখানে
আসি আপনাদের কোন আপত্তি হবে?
গণেশ রাও - না না সেকি কথা, আপনার যেদিন খুশী
যতদিন খুশী এখানে এসে থাকবেন।
মায়িল – বাবা তুমি মাসে একদিন এসে আমার সাথে
এখানকার রুগী দেখে যেও
ডাঃ ভাস্কর – হ্যাঁ হ্যাঁ সেটা করতেই পারি। আর এখানে
চিকিৎসা করে আমি কোন পারিশ্রমিক নেবো না।
গণেশ রাও – তবে তো খুব ভালো হয়। গ্রামের
লোকেদের ভালো হবে আর আমাদেরও খুব
ভালো লাগবে